নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নাস্তিকরা বঁদড়ামি করবো আর আমি নিশ্চিন্তে বেহেশতে চইলা যাওয়ার ধান্দা করমু ! কক্ষনো না, বরং আমি এই কুলাংগার গুলারে জাহান্নাম পর্যন্ত ধাওয়া করমু, ওগো লগে জাহান্নামে ঢুকমু, ওগো আগুনের চাপাতি দিয়া কুপামু.......এর পরে আমার কইলজা ঠান্ডা হইবো।

চেংকু প্যাঁক

চেংকু প্যাঁক › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রোপ্যাগান্ডার সেকালঃ ভাগ্যিস ফেইসবুক ছিলনা !

২১ শে জুন, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৫৯


এই যে বিজেপি-আরএসএস ও অন্যান্য উগ্র হিন্দুত্ববাদী দলগুলো প্রোপ্যাগান্ডা চালাচ্ছে, মুসলিম বিদ্বেষকে উস্কে দিচ্ছে, এটা কিন্তু নতুন নয়। এটা তাঁদের অতীতের ধারাবাহিকতা। কিন্তু দুর্ভাগ্য বা সুভাগ্য যাই বলি, সেসময় ফেইসবুক ছিলনা।ফলে হাতে না ধরা পরার চান্স ছিলনা। কিন্তু মিথ্যা তো মিথ্যাই, সেটা প্রকাশ পাবেই। উদাহরণ দেই।
১৯৪৬ সালের মার্চ-মে মাসে ভারতে ব্রিটিশ সরকারের ক্যাবিনেট মিশন চেয়েছিল ভারতকে ঐক্যবদ্ধ রেখে সকল সমস্যার সমাধান করার।ক্যাবিনেট মিশনের শর্ত অনুসারে মুসলিম লীগ তখন পর্যন্ত ঐক্যবদ্ধ ভারতের প্রস্তাব মেনে নিয়েছিল। কিন্তু নেহেরু ও কংগ্রেস সেই প্রস্তাব মেনে নিয়েও পরে প্রত্যাখ্যান করে।(১)
এই ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় মুসলিম লীগ সারা ভারতে ইংরেজ সরকারের বিরুদ্ধে হরতালের আহবান জানায়। যা ঐতিহাসিক ’ডাইরেক্ট অ্যাকশন ডে’ হিসেবে পরিচিত, পালিত হয় ১৯৪৬ সালের ১৬ ই আগষ্ট। এই দিনকে উপলক্ষ্য করে হিন্দুরা বেশ সাংগঠনিক প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিল। (২)
নুরুল কবীর লিখেন; ''১৯৪৬ সালের ১৬ আগস্ট কলকাতায় ভয়াবহ সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়লে কমপক্ষে ৫ হাজার জন নিহত হয় এবং আহত হয় আরো ১৫ হাজার। হতাহতদের বেশিরভাগই ছিল মুসলমান। এটি ছিল কলকাতার মুসলমানদের বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃতভাবে আয়োজিত একটি সহিংস ঘটনা। কলকাতার এই ভয়াবহ সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সম্পর্কিত সব গবেষণাই প্রাথমিকভাবে হিন্দু মহাসভা ও কংগ্রেসকে দোষী সাব্যস্ত করে। অন্যদিকে দাঙ্গার জন্য মুসলিম লীগ নেতৃত্বের একটি অংশকে দায়ী করে হিন্দু মহাসভা ও কংগ্রেস। (৩)
এই ঘটনাকে সাপ্রেস করার সুযোগ খুঁজছিল কেউ কেউ। সুযোগ পেয়েও গেল। ''কলকাতার হত্যাকান্ড পূর্ববাংলায় ব্যপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে।কামরুদ্দিন আহমেদ লিখেছেন,‘২৯ আগস্ট নোয়াখালীতে এক হিন্দু-বিরোধী দাঙ্গায় একজন স্থানীয় হিন্দু জমিদারের পরিবারসহ ছিয়াশি জন হিন্দুকে হত্যা করা হয়েছে’। নোয়াখালীতে হিন্দুদের ওপর হামলা কয়েকদিন অব্যাহত ছিল যার ফলে আরও অনেক হিন্দুর মৃত্যু হয়।কামরুদ্দিন আহমেদ লিখেন যে, ‘এটি ছিল কলকাতা দাঙ্গার সময় পশ্চিমবঙ্গের খিদিরপুরে নোয়াখালীর ডক শ্রমিকদের গণহত্যার দুর্ভাগ্যজনক প্রতিক্রিয়া’। এক্ষেত্রে, সোহরাওয়ার্দী লিখেছেন যে,‘হিন্দুরা মুসলিমদের মসজিদে আক্রমণ করে এবং নামাজরত অবস্থায় ইমাম ও মুয়াজ্জিনসহ (যারা নোয়াখালী জেলা থেকে এসেছিলেন) মুসল্লিদের হত্যা করে, এবং এর ফলে, ‘নোয়াখালীর মুসলমানরা হিন্দুদের গ্রাম আগুনে পুড়িয়ে দেয়, ২৮২ জনকে হত্যা এবং ৪ জন নারীকে অপহরণ করে যার মধ্যে ৩ জনকে পরবর্তীতে উদ্ধার করা হয়েছিল’। (৪)
কলকাতা কেন্দ্রিক প্রোপ্যাগান্ডা মেশিন একটিভ হয়ে উঠল। নুরুল কবির লিখেন; ''কলকাতা ভিত্তিক সাম্প্রদায়িক হিন্দু সংবাদপত্র নোয়াখালীতে ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক হত্যাকান্ডকে এত ফলাও করে এবং ঘটনার সাথে কাল্পনিক গল্প জুরে দিয়ে এমনভাবে প্রকাশ করে যে এর ফলে বিহারের পাটনায় হিন্দুদের দ্বারা ব্যাপক মুসলমান হত্যাকান্ডকে উস্কে দেয়। সোহরাওয়ার্দী তাঁর স্মৃতিকথায় লিখেন: ‘অমৃত বাজার পত্রিকা এবং কংগ্রেসের অন্যান্য পত্রিকাগুলো বঙ্গীয় প্রাদেশিক পরিষদের সম্পাদকের নামে অকস্মাত একটি বিবৃতি ছাপে যে, ৫০,০০০ হিন্দুকে হত্যা করা হয়েছে এবং অগণিত নারীকে অপহরণ করা হয়েছে।
এ খবরে উত্তেজিত হয়ে, যুক্ত প্রদেশের গারমুখতেশ্বারে হিন্দুরা মুসলিমদের লাঞ্ছিত করে এবং গণহত্যা চালায় এবং বিহার প্রদেশের সর্বত্র ১০০,০০০ মুসলমান নারী, পুরুষ ও শিশুকে অবিশ্বাস্য বর্বরতার সঙ্গে হত্যা করা হয়েছে বলে বিশ্বাস করা হয়। চারদিন ধরে বিহারের পল্লী অঞ্চলে হিন্দু দাঙ্গাকারীরা হত্যা, অগ্নি সংযোগ, লুটপাট, ধর্ষণ, মানুষের অঙ্গহানি করার মাধ্যমে ত্রাসের সঞ্চার করেছিল এবং স্পষ্টতই বেশ দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করা হয় যে, এর পেছনে বিহার সরকার ও হিন্দু পুলিশ সদস্যদের মদদ ছিল’।(৫)
সেসময় বিহার থেকে পালিয়ে আসা বিহারীরাই বাংলাদেশের বিহারী।অনেকে তাঁদেরকে পাকিস্তান থেকে আগত মনে করে। যাই হোক।
বাংলাদেশের অনেক মিথ তাঁদের তৈরি করা। একটু ঘাঁটাঘাঁটি করলেই সেসব বেরিয়ে আসে। কিন্তু এই ধরনের প্রোপাগান্ডায় পারদর্শীদের জন্য সোশ্যাল মিডিয়া বিপদ হয়ে দাড়িয়েছে। যে কোন প্রোপ্যাগান্ডার মিথ্যা মানুষ খুব সহজেই ধরে ফেলে। মিথ্যাকে পরাজিত করে। তারা যদি এসব দেখে শেখে, সেটাই কাম্য।
নোটঃ
(১) নেহেরুর কারনেই ‘অখন্ড’ ভারত ভেঙে পাকিস্তান হল, http://www.muldharabd.com/?p=237
(২) কলকাতা দাঙ্গার সাংগঠনিক পটভূমি – প্রফেসর জয়া চ্যাটার্জী, http://www.muldharabd.com/?p=1527
(৩) নুরুল কবির, উপনিবেশবাদ, সাম্প্রদায়িকতা ও বাংলা ভাগ (পর্ব-৮), http://www.muldharabd.com/?p=399
(৪) নুরুল কবির, উপনিবেশবাদ, সাম্প্রদায়িকতা ও বাংলা ভাগ (পর্ব-৯), http://www.muldharabd.com/?p=422
(৫) প্রাগুক্ত

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.