নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নাস্তিকরা বঁদড়ামি করবো আর আমি নিশ্চিন্তে বেহেশতে চইলা যাওয়ার ধান্দা করমু ! কক্ষনো না, বরং আমি এই কুলাংগার গুলারে জাহান্নাম পর্যন্ত ধাওয়া করমু, ওগো লগে জাহান্নামে ঢুকমু, ওগো আগুনের চাপাতি দিয়া কুপামু.......এর পরে আমার কইলজা ঠান্ডা হইবো।

চেংকু প্যাঁক

চেংকু প্যাঁক › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাংলাদেশ প্যারাডক্স

০৫ ই আগস্ট, ২০১৭ রাত ১০:৪৭

শেয়ার মার্কেট বাবলের সময়ে আমি অনেক উদ্যোগী তরুনদেরকে দেখেছি যারা মনে করতো দিনে দশটার সময়ে ঘুম থেকে জেগে, নাস্তা করে একটা বেন্সন টানতে টানতে একটা ব্রোকারেজ হাউজের এসি রুমে ঢুকে- স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থেকে কিছু মানুষের সাথে ফোনে কথা বলে, কিছু গুজব এবং স্পেকুলেশানের উপরে ভিত্তি করে কিছু শেয়ার ট্রেডিং করে দুইটায় বাসায় ফিরে একটা ভাতঘুম দিয়ে - ট্রেডিং এর প্রফিট থেকে মাসে- ২০/৩০/৫০ হাজার বা যার যা চাহিদা সেই রকম শেয়ার ভাঙ্গিয়ে তা দিয়ে সংসার চালিয়ে- দিনের শেষে পোর্টফোলিওর ভ্যালু হিসাব করে- সুখ নিদ্রায় শান্তিতে এক জীবন কাটিয়ে দেয়া যাবে।

মার্কেটটা এমন অস্বাভাবিক ভাবে ফুলে উঠেছিল যে সকল রকমের কারেকশানের পরেও, ভুল সিদ্ধান্ত, সঠিক সিদ্ধান্ত যাই নিতো মাসের শেষে পোর্টফলিও এর ভ্যালু কারো কমতো না -বাড়তো।

আমাকে অনেকেই বলেছে, আমার যা পোর্টফোলিও আছে তা দিয়ে ট্রেডিং করে সারা জীবন কেটে যাবে।

সেই সময় আমি সিটি ব্যাংকে। সিটি ব্যাংক তখন নতুন ব্রোকারেজ হাউজ করেছে। সেই হাউজের প্রধান পরিচালক আমাকে হিসেব দেখিয়েছিল যে, ভ্যালু অনেক কমে আসলেও তাদের দেয়া লোণ সিকিউরড। কারন শেয়ার ভ্যালু একটা লেভেলে নামার পরে হাউজ অটোমেটিক শেয়ার বেচে লোণের টাকা রিকাভার করে নেবে- ফলে ইনভেস্টরের রিস্ক থাকলেও হাউজের রিস্ক নাই ।

আমি প্রশ্ন করেছিলাম, যদি যেই লেভেলে থাকলে আপনারা সেল করবেন বলতেছেন- সেই লেভেল থেকে নিচে নামে ? তখন কি হবে?

হেসে উড়িয়ে বলেছিল- ধুর। সেইটা কেন হবে।

কিন্ত হইছিল। বাংলাদেশের ইতিহাসের সব চেয়ে বড় প্রতারণায় গ্রামে গ্রঞ্জে ব্রোকারেজ হাউজ করে -মধ্যবিত্ত এবং উচ্চবিত্তের টাকা একটা প্রতারণাপূর্ণ মার্কেটে ঢোকানো হয়েছিল।

আমি তখন অনেককেই সতর্ক করতাম।কারন, ব্যবসা ,বানিজ্যে, চাকুরীর অল্প অভিজ্ঞতা যা হয়েছিল তাতে আমি পরিষ্কার ছিলাম- বাংলাদেশে কোন কোম্পানি এমন প্রফিট করছেনা যে তার ফলে, লাভের থেকে ১০০ গুন বা ১০০০ গুন বেশী কোম্পানির মার্কেট ভ্যালু হতে পারে। এইটাকে পিই বলে মার্কেটের লোক জন।

তাছাড়া বাংলাদেশে লোকাল কর্পোরেট গুলোর মালিকদের একজনকেও দেখি নাই যার সামান্য ট্যাক্স দেয়ার মেন্টালিটি আছে। সবাই ঠিক তত টুকুই ট্যাকস দেয় যত টুকু দিলে, এনবিআর ডিস্টার্ব করবেনা। তাই জানতাম, একাউন্ট ম্যানিপুলেশান করে লাভ দেখিয়ে হাজার কোটি টাকা কামানো সুযোগ কোন পরিচালকই ছাড়বেনা ।

ফলে মার্কেটে যে জাস্ট একাউন্ট ম্যানপুলেশান করে লাভ দেখানো হচ্ছে, সেইটা আমি কমন সেন্স দিয়েই বুঝতাম। নিজে শুধু মার্কেট থেকে দূরে থাকি নাই সবাইকে নিষেধ করতাম। আমাকে নিয়ে বন্ধু মহলে হাসা হাসিও হইতো।

এক কর্মজীবী বন্ধু- যে বেতনের টাকার এগেন্সেটে লোণ নেয়া ছাড়াও বাবা মায়ের সেভিংস সহ সব কিছুই মার্কেটে নিয়ে এসেছিল আর অফিসের ফাকে ফাকে কমপিউটারে ট্রেডিং করতো- সে আমাকে মুচকি হেসে বলেছিল-

বন্ধু, তুই মানা করছিস ঠিক আছে। কিন্ত, আমি তো টাকা কামাচ্ছি?

এমন পারকেক্ট ওয়ান লাইনের উত্তেরের কোন জবাব ছিল না। তব্দা খেয়ে চুপ মেরে গেছিলাম।

শেয়ার মার্কেট এবং এমএলএম কিভাবে সেই সময়ে পুরো দেশের মধ্যবিত্ত এবং উচ্চবিত্তের সেভিংসকে খেয়ে ফেলেছে সেইটা আমরা অনেকেই নিজের চোখে দেখেছি।

নিষেধ সত্ত্বেও আমার আম্মা আমাকে না বলে, এমএলএমে ২ লাখ ধরা খেয়েছে, এই দুক্ষ আমার এখনো যায় নাই।

কিন্ত, আমরা অনেকে যেইটা চোখে দেখি নাই তা হচ্ছে আধুনিক ক্যাপিটাল মার্কেটের ইতিহাসে সব চেয়ে প্রতারণা পূর্ণ এই স্ক্যামের ফলে শুধু মাত্র অসংখ্য তরুনের অবাস্তব স্বপ্ন ধ্বংস হয়ে নাই এইটা আমাদের উদ্যকতা সংস্কৃতিকেও ধ্বংস করে দিয়েছে। যার ফলাফল এখন আমাদের গারমেন্ট ইন্ডাস্ট্রিতে সহ পুরো ইনভেস্টমেন্টে পড়েছে।

কারন শেয়ার মার্কেট থেকে মানুষের দুই তিন বছর অস্বাভাবিক প্রফিট করার অভ্যাসে অনেককের প্রফিট পারসেপ্সান এমন জায়গায় গিয়েছে যে বছরে ১০০ টাকা খাটিয়ে বছর শেষে ১০ টাকা বা ইন্টেরেস্ট রেট থেকে ১% বেশী লাভ হলেও যে ভালো ব্যবসা সেইটা মানুষের মন থেকে চলে গ্যাছে। অথচ সারা পৃথিবীতে মানুষ এই হিসেব দিয়ে ব্যবসা করে। কারন কম্পটিটিভ ওপেন মার্কেটে কোন ব্য
বসাতেই বেশী দিন ক্রিম খাওয়া যায়না, কমপিটিশান চলে আসে।

অর্থনীতি নিয়ে আমার মূল আগ্রহ এবং মাইক্রো লেভেলে মার্কেট, প্রডাক্ট, প্রাইসকে বোঝার চেষ্টা মূলত এই সময় এবং শেয়ার মার্কেট পতনের পরেই। কারন, আমি এখনো মনে করি- বাংলাদেশের অরথিনিতি এনার্জি ব্যবহার, প্রপার্টি মার্কেট, জমির দাম, বেকারত্ব, রিটেল মার্কেট, ব্যাঙ্কিং সেক্টরে মুনাফা, ব্যাংকে, ইন্টেরেস্ট রেটের বৃদ্ধি এবং কমা, সঞ্চয়পত্রে ডেপোজিট – সহ অনেক সেক্টরেই মার্কেট থেকে যে সব সিগ্নাল পাওয়া যায় এবং তার থেকে যে প্যাটার্ন দাড় করানো যায় তার সাথে শেয়ার বাবল ফোলা, সেইটা বারস্ট হওয়া, তারপরে রিসেশান এবং রিকাভারির গ্রাফের প্যাটার্নের পরিষ্কার মিল আছে ।

যে কারণে, আমরা বলি বর্তমানে বাংলাদেশের জিডিপি ভুয়া ডাটা দিয়ে তৈরি তার প্রধান কারন- এই শেয়ার মার্কেটের উঠা এবং নামার ফলে অর্থনীতিতে বাবল হওয়া এবং বারস্ট হওয়া এবং রিকাভারির প্যাটার্নটা জিডিপি ডাটায় রিফ্লেক্টেড হয় নাই।

এই আলোচনাটার করলাম , গত কালের প্রথম আলোর গারমেন্ট ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে রিপোর্টটায় যেখানে উদ্যোক্তারা বলেছেন একটা জায়গায় এসে পোশাক খাত থেমে গ্যাছে- সেই রিপোর্টটার প্রেক্ষাপটে।

বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের একটা গবেষণা থেকে প্রাপ্ত ডাটায় এই রিপোর্ট বলছে ১৯৯০ সাল থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে ২০১০ থেকে ১৫ সালেই প্রথম পোশাক শিল্পে প্রতি বছর কর্মসংস্থানের প্রবৃদ্ধি ১% এ নেমে এসেছে।
অথচ, তার আগে ২০০৫ ২০১০ সালের মধ্যে প্রতিবছর ১১% প্রবৃদ্ধি হয়েছে কর্ম সংস্থানের। এবং তার আগে ১৯৯০ সাল থেকে পোশাক খাতে কর্ম সংস্থানের এমন ভয়াবহ প্রবৃদ্ধি দেখা যায় না। ৯০ সালের দিকে যেখানে প্রতি বছর, ৩০% এর মত কর্ম সংস্থানের বাৎসরিক প্রবৃদ্ধি হতে সেইটা ২০১০ সালে এসে ১% কেন নেমে আসবে সেইটা খুব বড় একটা প্রশ্ন।

অথচ, বাংলাদেশের অর্থনীতির সব চেয়ে বড় ক্রেডিট যেইটা দেয়া হয় যে গ্লোবাল ক্রেডিট ক্রাঞ্চ যেইটার ফলে বিশ্ব অর্থনীতিতে ধাক্কা লেগেছিল, এবং যার ফলে পোশাক শিল্পে কর্ম সংস্থান কমার কথা সেইটা ২০০৮ সালে হয়েছিল।

টেকনিক্যালি ২০১১ থেকে ২০১৫ পিরিয়ডটা ছিল গ্লোবাল মার্কেটের রিকভারি পিরিয়ড। ফলে এই সময়ে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের প্রতি বছর কর্মসংস্থান কমার কোন কারন নাই। রানা প্লাজার ঘটনাও ২০১৪ সালে যার ইম্প্যাক্ট ২০১৪-২০১৫ সাল পরবে। ফলে রানা প্লাজা দিয়েও এইটা কর্ম সংস্থান হ্রাসের ধারাকে ব্যখা করা যায়না।

কেন ২০১০ সাল থেকে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পে কর্ম সংস্থান কমে ১% এ চলে আসবে তার সব চেয়ে লজিকাল কারন, শেয়ার মার্কেট ।
কারন এই ২০১০ সালেই শেয়ার মার্কেট বাবলের সর্বোচ্চ স্ফিতি ছিল এবং যেই সময় সকল ইন্ডাস্ট্রি থেকে ক্যাপিটাল শেয়ার গিয়ে ঢালা হয়েছে।

আমার জানা মতে বেশ কিছু উঠতি গারমেন্ট ফ্যাক্টরিও তাদের পূর্বের ক্রেডিট হিস্টোরি ব্যবহার করে ব্যাংক থেকে লোণ নিয়ে ফ্যক্টরিকে অবহেলা করে শেয়ার মার্কেটে টাকা খাটিয়েছে এবং পরিশ্রম না করে টাকা কামানোর লোভে সেই সব উদ্যক্তাদের অনেকেই ধ্বংস হয়ে গ্যাছে। নাম দিতে পারবো না, এই ধরনের দুইটা গল্প শুনেছিলাম।

এই কোম্পানি গুলো গার্মেন্টস মার্কেট থেকে ক্যাপিটাল সরিয়ে না আনলে, এখন হয়তো আরও বড় প্রতিষ্ঠান হতো। ফলে এই মিড সাইজড প্রতিষ্ঠান গুলো আর গ্রো করতে পারে নাই।

যে সব লারজ গ্রুপ ভালো করছে যেমন অপেক্স, নাসা, স্ট্যান্ডার্ড, এশিয়ান বা আরও অনেক গ্রুপ তাদের বড় ক্রেডিট শেয়ার টাকা না খাটানোর লোভ সামলানো।

কিন্ত গার্মেন্টস থেকে যে সব মিড সাইজড ছোট প্রতিষ্ঠান শেয়ার টাকা এনেছে তারা হয় ধ্বংস হয়েছে নয় কোন মতে টিকে আছে বা রিকাভার করেছে চার পাঁচ বছরের চেষ্টায়। কেউ ফুল রিকাবার করেছে কোন পারসিয়াল। কিন্ত কেউ ধাক্কা সবাই খেয়েছে।

এইটা ছাড়াও এই সময়ে, ইন্টেরেস্ট বেড়ে যাওয়া, জমি দাম বেড়ে যাওয়া এর সব কিছুই গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রিকে হিট করেছে।

কিন্ত শেয়ার মার্কেট স্ক্যামের সব চেয়ে বড় ধাক্কা হলো মার্কেট স্কামে যে সব তরুন নষ্ট হয়েছে, যে সব তরুনের পুজি নষ্ট হয়েছে এই তরুনরাই হয়তো গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রিতে আসতো। কেউ টিকে থাকতো। কেউ ঝরে যেত। এই ঝরে যাওয়া টিকে থাকার প্রসেসেই হয়তো ১০০ জনের মধ্যে ১০ জন দাড়িয়ে যেত তারাই হয়তো আরো ১০ হাজার জনের কর্ম সংস্থান করতো। কিন্ত বাবা জমি মায়ের গহনা ভাইয়ের সেভিংস সব কিছু শেয়ার নষ্ট করে তারা তাদের উদ্যক্তা হওয়ার সকল সম্ভাবনা নষ্ট করেছে।

এবং বাজার অর্থনীতিতে আপনার যদি টাকা না থাকে তবে, আপনি মানুষই না উদ্যক্তা অনেক দুরের জিনিষ।

একই সাথে গ্যাস এবং বিদ্যুতের সমস্যাতো আছেই। কিন্ত একটা প্রধান ইস্যু এই পুজি ধ্বংস হয়ে যাওয়া।

এগেন আমরা বাংলাদেশের গার্মেন্টসের গ্রোথ নিয়ে আলোচনা করছিনা। কারন, এই পিরিয়ডে ওভার অল গার্মেন্টস গ্রো করেছে। ছোট কোম্পানি হারিয়ে গিয়েও ওভার অল গ্রোথের কারন এক , বড় কোম্পানি গুলো ভালো করেছে, প্রায় সবাই ক্যাপাসিটি বারিয়েছে। দুই, মার্কেটে একটা স্বাভাবিক ইনভ্লেশান আছে যেইটাতে একই পরিমান এক্সপোর্টও প্রতি বছর গ্রোথ হবে।

কিন্ত, আমরা রিপোর্ট দেখেছে ২০১০ থেকে ২০১৫ পিরিয়ে বাংলাদেশে নাম্বার অফ ফ্যাক্টরি কমে এসেছে। এই মুহূর্তে মেমরিতে নাই কোথাও পড়েছিলাম যে এই সময়ে বাংলাদেশে টোটাল গারমেন্ট ইন্ডাস্ট্রির সংখ্যা কিন্ত সংখ্যাটা ৪০০০ থেকে প্রায় ৩১০০ তে নেমে এসেছে। সংখ্যাটা এদিক সেদিক হতে পারে, কারো কাছে লিঙ্ক টা থাকলে দিয়েন।

কেন এই পিরিয়ডে ফ্যাক্টরি কমবে ?
আগেই বলেছি, শেয়ার মারকেটে ক্যাপিটাল হারানোর কারণে মিড সাইজড কোম্পানি ডাউন সাইজ করেছে, ফলে তার পর্যাপ্ত গ্রোথ হয়নি।

এবং নতুন উদ্যকতা আসেনি কারন যাদের পরিবারের হাতে টাকা থাকার কারণে তার উদ্যকতা হওয়ার সুযোগ ছিল, কয়েক দশকে কামানো পরিবারের এক্সেস ক্যাপিটাল মার্কেট খেয়েফেলার কারণে, তার আর উদ্যক্তা হওয়া সম্ভব হয় নাই ।

তার পরেও গ্রোথ হয়েছে। তারপরেও নতুন কোম্পানি আসে নি তা নয়। এসেছে, নইলে ওভারঅল গ্রোথ হতো না।

কিন্ত শেয়ার কোম্পানি একটা পুরো জেনারেশানের উইল পাওয়ার, ক্যাপিটাল, মানসিকতা ধ্বংস করে দিয়েছে। যা না হলে, আমাদের পোশাক শিল্প অনেক নতুন উদ্যোক্তা পেত।

যে মানুষটা শেয়ারে টাকা হারিয়ে আত্মহত্যা করেছে অথবা একটা ছোট চাকুরীতে অপুন জীবন কাটাচ্ছে- সেই মানুষের ভেতরেই হয়তো
ছিল ভবিস্যতের আনিসুর রহমান সিনহা বা একজন ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন ছিল-যাকে মার্কেট ধ্বংস করে দিয়েছে।

এই গুলোর রেজাল্ট এখন দেখা যাচ্ছে। যার ফলে, ২০১০ থেকে ২০১৫ সালে বাংলাদেশের সব চেয়ে সম্ভাবনাময় ইন্ডাস্ট্রিতে কর্ম সংস্থান বৃদ্ধির হার মাত্র ৫ বছরে ১১% থেকে ১% এ নেমে এসেছে।

বাংলাদেশকে নিয়ে অসীম আশার সম্ভাবনা ছিল, তার ধ্বংসের ভিত্তিভুমি রচিত হয়েছিল- ২০১১ সালের শেয়ার মার্কেট স্ক্যামে।

এই পতন, চোখে দেখা যায় কিন্ত ডাটায় দেখা যায়না। এই যে চোখে দেখা এবং ডাটার গ্যাপ- এর নাম বাংলাদেশ প্যারাডক্স।

কার্টেসি: জিয়া হাসান

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই আগস্ট, ২০১৭ রাত ১১:৩৭

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: প্রথম প্যারা (বেন্সন ছাড়া) পুরোটাই আমার সাথে মিলে যায়। বাকী বিশ্লেষণ ঠিক আছে...

২| ০৬ ই আগস্ট, ২০১৭ রাত ১:০৫

হানিফঢাকা বলেছেন: পুরাই নস্টালজিক করে দিলেন। ২০১০ এর শেয়ার মার্কেটের ধ্বস সম্পর্কে আমার চেয়ে ভাল কে জানে?

"শেয়ার মার্কেট বাবলের সময়ে আমি অনেক উদ্যোগী তরুনদেরকে দেখেছি যারা ......"
- ঐ গুলি উদ্যগী ছিল না, ছিল প্রচন্ড লোভী আর ছাগল। জুয়ার বোর্ডের মত- টাকা ঢাললেই টাকা আসে- এইটা ছিল কনসেপ্ট। এই শেয়ার মার্কেট তথাকথিত এই সব উদ্দ্যেগী তরুণদের জীবন সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দিয়েছে। তারা মনে করত মার্কেট শুধু উঠবেই আর উঠবে। কোনদিন নামবেনা। লোভের শাস্তি তারা পাচ্ছে।


সেই সময় আমি সিটি ব্যাংকে। সিটি ব্যাংক তখন নতুন ব্রোকারেজ হাউজ করেছে। - না, সেই সময় সিটি ব্যাঙ্ক নতুন ব্রোকারেজ করেনি, তাঁদের ব্রোকারেজ অনেক আগে থেকেই ছিল। ২০০৯ সালে ঐ ব্রোকারেজে নতুন ম্যানেজমেন্ট আসে। ২০১০ সালে সিটি ব্যাঙ্ক মার্চেন্ট ব্যাঙ্কিং চালু করে। ঐটার পুরা সেটাপ থেকে শুরু করে লাইসেন্সের কাজ আমার হাতে করা। আমি ছিলাম ঐটার প্রথম দিকের কাগজে কলমে এমডি।

যে সব লারজ গ্রুপ ভালো করছে যেমন অপেক্স, নাসা, স্ট্যান্ডার্ড, এশিয়ান বা আরও অনেক গ্রুপ তাদের বড় ক্রেডিট শেয়ার টাকা না খাটানোর লোভ সামলানো। - এইখানে নাসা এবং স্ট্যান্ডার্ড গ্রুপের নাম থাকা উচিত না। এরা মার্কেটে ভাল টাকা ইনভেস্ট করেছিল। নাসার মালিকানাধীন এক্সিম ব্যাংক প্রায় ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। এখনো সম্পূর্ণ রিকভার করতে পারেনি।

শেয়ার মার্কেটের এই ইম্প্যাক্ট সমাজের সব ক্ষেত্রেই পড়েছে। এইটার ইম্প্যাক্ট এত বিশাল যা কল্পনা করা সম্ভব না। মানুষ চাকরি হারিয়েছে, ডিভোর্স হয়েছে, আত্নহত্যা করেছে, খুন হয়েছে, সংসার হারিয়েছে, লাইফ স্টাইলের অবমনন হয়েছে, অনেকে লোণের দায় নিয়ে কোন মতে টিকে আছে- এই লোণ সারা জীবনে শোধ করতে পারবে কি না সন্দেহ আছে।

অর্থনীতি নিয়ে আমার মূল আগ্রহ এবং মাইক্রো লেভেলে মার্কেট, প্রডাক্ট, প্রাইসকে বোঝার চেষ্টা মূলত এই সময় এবং শেয়ার মার্কেট পতনের পরেই। কারন, আমি এখনো মনে করি- বাংলাদেশের অরথিনিতি এনার্জি ব্যবহার, প্রপার্টি মার্কেট, জমির দাম, বেকারত্ব, রিটেল মার্কেট, ব্যাঙ্কিং সেক্টরে মুনাফা, ব্যাংকে, ইন্টেরেস্ট রেটের বৃদ্ধি এবং কমা, সঞ্চয়পত্রে ডেপোজিট – সহ অনেক সেক্টরেই মার্কেট থেকে যে সব সিগ্নাল পাওয়া যায় এবং তার থেকে যে প্যাটার্ন দাড় করানো যায় তার সাথে শেয়ার বাবল ফোলা, সেইটা বারস্ট হওয়া, তারপরে রিসেশান এবং রিকাভারির গ্রাফের প্যাটার্নের পরিষ্কার মিল আছে ।

- বাংলাদেশে শেয়ার মার্কেট সংক্রান্ত যে সব প্রফেশনাল আছে তাঁদের বেশিরভাগই সার্টিফিকেটধারী ছাগল। আবার বেশ কিছু জিনিয়াস আছে। যে সব রিলেশনশিপের উপর বেশ করে সিগন্যালের কথা বলছেন, থিওরিটাক্যলি অনেকেই এই গুলি বলে। কিন্তু ঘটনা ঘটার আগে খুব কম মানুষই সিগ্ন্যাল ধরতে পারে। ঘটনা শেষ হয়ে যাওয়ার পরে সবাই সিগ্ন্যাল বুঝে। ২০১০ এ ধসের আগে খুব কম মানুষই এই সিগ্ন্যাল বুঝতে পেরেছিল। অনেক রথিমহারথি (ইন্সটিটিউশন এবং ব্যাক্তি উভয়েই) ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল।

A good artist knows when to stop.

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.