নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আল্লাহপাক বলেন \"ঐ ব্যক্তির কথার চেয়ে ভাল কথা কার হতে পারে যে মানুষকে আল্লাহর পথে ডাকে এবং নেক আমল করে এবং বলে যে নিশ্চয়ই আমি মুসলমানদের মধ্যে একজন।\"(আল-কোরআন)

ইলিয়াস বিডি

আমি এক মুসাফির

ইলিয়াস বিডি › বিস্তারিত পোস্টঃ

মুজাকারা ।।। মাওঃ আহাম্মদ লাট (দাঃবাঃ) ।।। বয়ান থেকে নসীহত - পর্ব ২

২৯ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ৮:১৫



মাওঃ আহাম্মদ লাট (দাঃবাঃ) বলেন

যখন আমাদের প্রত্যেক ব্যক্তি, আমাদের ব্যবসায়ি, আমাদের মজদুর, আমাদের চাকরিজীবী, আমাদের কারখানাওয়ালা, আমাদের ধনী-গরীব, শিক্ষিত-অশিক্ষিত সবাই হুজুর (সাঃ) এর কথাকে নিয়ে চলবে, সর্ব প্রথম নিজের ঘরে হুজুর (সাঃ) এর অনুকরণের মধ্য দিয়ে, হযরত ইসমাঈল (আঃ) কে আল্লাহ তায়ালা ঘরওয়ালার জন্য নবী করে পাঠিয়েছিলেন। যে ব্যক্তি নিজ ঘরে মুহাম্মাদ (সাঃ) এর মেহনতকে চালাবে সে যেন ইসমাঈলী নূরকে লাভ করবে মুহাম্মদী মোহরের সাথে।

যে ব্যক্তি নিজের শহরকে মুহাম্মাদ (সাঃ) ওয়ালী মেহনতের ময়দান বানাবে, কিছু নবীকে একটা শহরের জন্য পাঠানো হয়েছিল, যে তার পুরা শহরকে, প্রত্যেক গলি, প্রত্যেক মহল্লা,প্রত্যেক ঘর, প্রত্যেক ব্যক্তিকে নিজের মেহনতের ময়দান বানাবে, তাকে আল্লাহ তা’আলা শোয়েবী নূর দান করবেন মুহাম্মদী মোহরের সাথে।

আর যে ব্যক্তি পুরা দেশকে নিজের মেহনতের ময়দান বানাবে, অনেক নবীকে আল্লাহ তা’আলা একটা পুরা দেশের নবী করে পাঠিয়েছিলেন। যেমন হযরত মূসা ও হারুন (আঃ) এবং অন্যান্য আরো যারা আম্বিয়ায়ে বনী ইসরাঈল এসেছেন, যে ব্যক্তি পুরা দেশকে নিজের মেহনতের ময়দান বানাবে, দেশের একেকটা বিভাগ, বিভাগের প্রত্যেকটা জেলা, জেলার প্রতিটা থানা, থানার প্রতিটি ইউনিয়ন , ইউনিয়নের মধ্যে যত গ্রাম আছে, গ্রামের কোন মহল্লা, কোন ঘর, কোন মানুষ এই মেহনত থেকে দূরে না থাকে, যে ব্যক্তি এভাবে নিজের মেহনতের ময়দান বানাবে, আল্লাহ তাকে মূসায়ী নূর দান করবেন মোহাম্মাদী মোহরের সাথে।

যে নিজের কওম, নিজের এলাকাকে মেহনতের ময়দান বানাবে, আল্লাহ তা’আলা হযরত নূহ আলাইহিস সালামকে তার কওমের কাছেই নবী হিসেবে পাঠিয়েছিলেন, যে তার কওমকে নিজের মেহনতের ময়দান বানাবে, আর মুহাম্মাদী দাওয়াতকে চালাবে, ঈমানের দাওয়াত দেয়া হলো, তালীমের হালকা, আল্লাহর জিকির, খুশু খুযু ওয়ালা নামায, প্রত্যেকে প্রত্যেকের হককে জানে ও তা আদায় করে, আর একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি ছাড়া অন্য কোন উদ্দেশ্য না থাকে, যে এর জন্যে মেহনত করল নিজ কওমের মধ্যে, আল্লাহ তাআলা তাকে নূহয়ী নূর দান করবেন মোহাম্মাদী মোহরের সাথে।

কিন্তু আমরা না মূসা (আঃ) এর উম্মত, না নূহ (আঃ) এর উম্মত, না হযরত শুয়াইব (আঃ) এর উম্মত। আমরা তো আলমী নবীর উম্মত। শুরু করব নিজের জাত থেকে, ঘর থেকে, গলি থেকে, মসজিদ থেকে। এজন্যই তো বলা হয়, কাজ কাজ, কাজ, কাজ। আরে কাজ শুধু কথা বাড়ানোর নাম নয়, কাজ শুধু কথা বলার দ্বারা হয় না বরং প্রত্যেকে নিজের মসজিদের উমুমি গাস্ত করে, প্রত্যেকে নিজের মসজিদের ২য় গাস্ত করে, প্রত্যেক ব্যক্তি মাসে ৩ দিন সময় দেয়, আর ভাই ৩ দিন এই ভাবে নয় যে, মসজিদে গিয়ে বিছানায় পড়ে গেলাম আর মুসল্লিরা এসে ডেকে তুলল- ‘ও জামাতওয়ালারা ওঠ, নামাজের সময় হয়ে গেছে।’ প্রতিদিনের দুই গাস্ত, দুই তালীম, মসজিদে একটা আর নিজ ঘরে একটা, রোজানা মাশোয়ারা আর প্রত্যেক মসজিদে পাঁচ কাজ আর এই আড়াই ঘন্টার মেহনত তো বাচ্চাকে মক্তবে পাঠানোর মত। এই চারমাস লাগাও, চিল্লা দাও, ৩ দিনে যাও, তালীমে এসো, মাশোয়ারাতে বস,জিকির করে নাও, কুরআনের পারা পড়ে নাও, এসব বাচ্চাকে যেমন নাকি মক্তবে পাঠানো। ঐ পর্যন্ত বাচ্চা উ-হু, আ-হা, আমি আজ যাবো না, আজ ভালো লাগছে না এই সব করে। আর তাকে বুঝানো হয়, ‘আহা তোমাকে চকলেট দেয়া হবে,’ তো তাকে চকলেটের বড় প্যাকেট দেখিয়ে পাঠানো হয়। এইসব মেহনত তো এই চকলেট দেখানো কথার মত।

আল্লাহ করুক, আল্লাহ করুক, আল্লাহ করুক। এই মেহনতের স্বাদ একবার আস্বাদন কর। জীবন বিলিয়ে দেয়া হবে আল্লাহর রাস্তায়, জীবন বাজি লাগছে, আর ভিতর থেকে বেরিয়ে আসছে, “ফুযতু ওয়া রাব্বিল কা’বা।” কা’বার রবের কসম, আমি সফলকাম হয়ে গেছি। হযরত হারাম বিন মুলহাম (রাঃ) কে কাফের বর্শা মারল, আর এমনভাবে মারল যে ওপার দিয়ে বের হয়ে গেল। জীবনের শেষ নিঃশ্বাস, আর নিজের চোখে নিজের মৃত্যুকে দেখছেন আর কছম খেয়ে বলছেন, কাবার রবের কছম, আমি কামিয়াব হয়ে গেছি। যিনি এই জীবন দিয়েছিলেন, তার জন্যেই তা বিলিয়ে দিলাম।

এই জন্য মাওলানা ইউসুফ সাহেব (রহঃ) বলেছেন, ‘দায়ীর হায়াত ইসলামের হায়াত। দায়ীর মওত, সেটাও ইসলামের হায়াত।’ তো বর্শা মারার পরে সাহাবীর কথা শুনে ঐ কাফির হতবাক হয়ে গেল। এ মারা গেল, বিবি তো এর বিধবা হলো, বাচ্চা এর এতীম হলো, রক্ত এর প্রবাহিত হল, আর কছম খেয়ে বলছে, সে কামিয়াব হয়েছে! জ্বী হা! যিনি এই জীবন দিয়েছিলেন, যিনি ঈমান দিয়েছিলেন, যিনি মুহাম্মাদ (সাঃ) এর কালেমা পড়িয়েছিলেন, যিনি সৃষ্টি করেছিলেন, যিনি এই মেহনতের জিম্মাদারি দিয়েছিল, এই জিম্মাদারি পুরা করতে করতে মৃত্যুবরণ করা, এটাই হলো চুড়ান্ত কামিয়াবী।

আর তুমি কিসের পিছনে পড়ে আছ? মাটির টুকরার পিছনে দৌড়াচ্ছো? পজিশন আর যোগ্যতা বানানোর পিছনে লেগে আছো? এটা কোন সফলতা নয়। বরং যে কাজের জন্য তুমি দুনিয়াতে এসেছো, সেই কাজ করতে করতে দুনিয়া থেকে যাওয়া, এটাই হলো সফলতার মুকুট। যখন ঐ কাফের এটা শুনল, তো সে বলল, ‘আচ্ছা, এর নাম তাহলে কামিয়াবি!’

এভাবে দাওয়াত দিলের মধ্যে পৌঁছে যায়। এই জন্য দাওয়াত শুধু কথার নাম নয়। বরং এটা ক্ষয়ক্ষতি বরদাস্ত করার নাম, এটা মোজাহাদার কাজ, এখানে আগে চলতে চলতে বিভিন্ন অবস্থা আসে।


টঙ্গী এজতেমা ২০১৪
১ম পর্ব/ বাদ মাগরীব বয়ান।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.