নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আল্লাহপাক বলেন \"ঐ ব্যক্তির কথার চেয়ে ভাল কথা কার হতে পারে যে মানুষকে আল্লাহর পথে ডাকে এবং নেক আমল করে এবং বলে যে নিশ্চয়ই আমি মুসলমানদের মধ্যে একজন।\"(আল-কোরআন)

ইলিয়াস বিডি

আমি এক মুসাফির

ইলিয়াস বিডি › বিস্তারিত পোস্টঃ

মুজাকারা ।।। মাওলানা সাদ(দাঃবাঃ) ।।। বয়ান থেকে নসীহত ।।। দ্বায়ীর সিফাত ◘ পর্ব-৪

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৪৫


মাওলানা সাদ (দাঃবাঃ) বলেন>>>

মেরে দোস্ত,
হযরত ওমর রা. এর জামানায় এক মেয়ের যেনা হয়ে গেল। যেনার কারণে তার কুমারীত্ব শেষ হয়ে গেল। যখন ঐ মেয়ের বিবাহের প্রস্তাব এলো তখন মেয়ের পক্ষ চিন্তা করল, আমাদের মেয়ের মধ্যে তো একটা দোষ আছে। যেহেতু বিবাহ একটা মোয়ামালা তাই ছেলে পক্ষকে জানিয়ে দেয়া দরকার। বিবাহ হলে হবে, না হলে যা হবার তাই হবে। তখন ঐ মেয়ের পক্ষ হযরত ওমর রা. কে এ ব্যাপারে জানার জন্য জিজ্ঞেস করল, আমরা কি ছেলে পক্ষকে মেয়ের কোনো দোষ থাকলে বলে দিব? হযরত ওমর রা. বললেন, তোমরা ঐ মেয়র বিবাহ এভাবে দাও যেভাবে এক কুমারী মেয়ের বিবাহ দিয়ে থাক। যদি তার দোষের কথা ছেলে পক্ষকে বলো, তা হলে এমন শাস্তি দিব যে, দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে সারা দেশের জন্য।

এটা আমাদের জন্য রাস্তা, নিজ চোখে দেখা বস্তুকেও অস্বীকার করো। নিজ মোয়াশারাকে পাক রাখ, অন্যের কমজোড়ি দেখ না । ভূলের ভালো ব্যাখ্যা কর। সাথীদের কম জোড়ী সত্ত্বেও তাদের থেকে কাজ নাও। কেটে দিও না। আমাদের এখানে কাটার প্রশ্নই আসে না। কারণ এ কাজ থেকে কেউ অব্যহতি পেতে পারে না। এ কাজে অবসর নেই। এ কাজে মা’যুর হতে পারে, কিন্তু মা’যুল হতে পারে না। অর্থাৎ ওজর থাকতে পারে কিন্তু অবসর নেই, অপসারন নেই। একজনের ওজর থাকতে পারে, কাজে জুড়তে পারে না, যেমন, অসুস্থ, বৃদ্ধ। কিন্তু কাউকে মা’যুল অর্থাৎ অপসারন করা নেই। কেননা, আমাদের এটা কোনো কোম্পানী নয়।

আমাদের এটা কোনো জামাতও নয়। হযরত ইলিয়াস রহ. বলতেন, জামাত শব্দটিই বিভেদ সৃষ্টি করে। যে, আমার অমুক জামাত, তোমার আরেক জামাত। না, আমাদের এ কাজ কোন জামাতের (দলের) নয়। এটা অমুক দল, এটা অমুক দল। আমাদের নাম তো উম্মত; উম্মতী হয়ে কাজ করো। সাথীদের উপর আস্থা রাখ। সাথীদের কম জোড়ী সত্ত্বেও তাদেরকে কাজে ব্যবহার করো।

ইজতেমায়িয়াতের জন্য আরেকটি হুকুম হলো, নিজ সাথীদের সাথে মাশোওয়ারা করো। সব কমজোড়ির মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি হলো মশওয়ারার কমজোড়ি (দুর্বলতা)। সব মতভেদ মশওয়ারার কম জোড়ির (দুর্বলতার) কারণে।

সাথীদের সাথে মশওয়ারা করো। মশওয়ারার চেয়ে উঁচু কোনো ইজতেমায়ী আমল নেই। কেননা, মশওয়ারা উম্মতকে নিয়ে চলার আমল। নবীকে হুকুম করা হয়েছে মশওয়ারা করার জন্য। অথচ হাদিসে এসেছে, হুজুর সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মশওয়ারা প্রয়োজন নেই। কেননা, আল্লাহ এবং তার রসুল সা: মশওয়ারার উর্দ্ধে বা মশওয়ারার অমুখাপেক্ষী। কেননা আল্লাহ গায়েব জানেন আর নবী তো আল্লাহর কাছে জিজ্ঞেস করতে পারেন, সুতরাং তাদের উভয়ের মশওয়ারার প্রয়োজন নেই। এরপরও নবীকে মশওয়ারার হুকুম করা হয়েছে।

দেখ, আমাদের ইজতেমায়িয়াত তখনই শেষ হয়, যখন উমুরসমুহ সাথীদের থেকে লুকানো হয়। লুকানো কেন হয়? এই জন্য যে জানলে অমুকে অমুকে বিরোধীতা করবে। তারা এদের লোক। তাই এদের থেকে লুকাও। ওদিকে তারাও পৃথক এক জামাত বানিয়ে নিল। এসো আমরা ভিন্ন রায়ওয়ালারা জমা হই। তখন দোড় পয়দা হবে।

এই জন্য মশওয়ারাকে ইজতিমায়িয়াতের উপর আনো। মশোয়ারার চেয়ে বড় কোনো ইজতিমায়ী কাজ নেই। এই জন্য আল্লাহ তা’লা কুর’আন পাকে মশোয়ারাকে নামাজে সাথে জুড়েছেন। কেননা, উভয় কাজ ইজতেমায়ী, নামাজ ও মাশওয়ারা। নামাজের চেয়ে বড় কোন রুকন নেই ইসলামে আর মশাওয়ারার চেয়ে বড় কোন আমল নেই দাওয়াতের কাজে। দাওয়াত ও ইবাদতের বড় বড় ২টি আমর সুরায়ে শুরার মধ্যে এসেছে। েখানে বলা হয়েছে- এবং আমি যে রিজিক দিয়েছি তা থেকে খরচ করে।

এতে উদ্দেশ্য হলো, যধি মাশোয়ারা সহি হয় এবং যদি মাশোয়ারা অনুযায়ীই চলবে তবে সাথীদের যোগ্যতার সঠিক ব্যবহার হবে।

এ জন্য মশওয়ারাকে ইজতিমায়ি বানাও। ইজতেমায়ী এটা নয় যে, ৫ জন মিলে একটা সিদ্ধান্ত করে নিল, ৬ষ্ঠ কারো আর এর খবর নেই। আর এটাও একটা গুরুত্বপূর্ণ কথা যে, যে বিষয়ে যে সংশ্লিষ্ট তার সাথে সেই বিষয়ে মশওয়ারা হবে। এমন নয় যে, সব মশওয়ারা সবার সাথে করতে হবে। এটা একটা উসুলী কথা। আমি নিজ থেকে একথা বলছি না বরং আমি হযরতের কথা নকল করছি।

মাওলানা ইউসুফ সাহেব রহ: বলতেন, সব বিষয়ের সম্পর্ক সবার সাথে নয়। যে বিষয় আপনার সাথে সম্পর্কিত নয় সে বিষয়ের মশওয়ারা আপনার সাথে হবে না। সাথীদের থেকে রায় নেয়ার এহতেমাম করো। যে, মশওয়ারা ইজতেমায়ী আমল তাকে ইজতেমায়ী বানাও।

মশোয়ারা ইজতেমায়ী হওয়ার ২ শর্ত:
১. যতদুর সম্ভব নিজ তাকাযা কুরাবনি করে মশওয়ারাতে অংশ গ্রহণ করো; চাই যতই কষ্ট হোক না কেন। এক ব্যক্তির সাথে ইমাম সাহেবের ঝগড়া হলো কোনো ব্যাপারে। তাই বলে কি নামাজ ছেড়ে দিবে ? এটা কি সম্ভব? ঝগড়া ঝগড়ার জায়গায়। তাই বলে তো নামাজ ছাড়া যাবে না। ঝগড়া ইমামের সাথে, নামাজের সাথে নয়। ঠিক তেমনি মাশওয়ারাওলাদের কারো সাথে বিতর্ক হলো তাই বলে কি মশাওয়ারা ছেড়ে দিব? আমার মসজিদ, আমার নামাজ তো আমাকে পড়তে হবে। এমন কি রুকু সেজদায় তাকে অনুসরণও করতে হবে। এমন না যে, ঝগড়ার কারণে আমি পৃথক রুকু বা সেজদা করব। তেমনি আমাদের মশওয়ারাওলাদের সাথে ঝগড়া হয়েছে বলে মাশওয়ারাও ছাড়া যাবে না, অনুসরণও ছাড়া যাবে না।

যদি আমার রায় মানা হয় তাহলে ইস্তেগফার করব আর যদি মানা না হয় তাহলো শোকর করব। সবর না, অনেকে বলে সবর করো। না এটা সবরের মাকাম না। একটা কথা মনে রাখবে, যে ব্যক্তি নিজ রায়ের উপর (না মানা হলে) সবর করবে সে পেরেশান হবে। কারণ এটাতো শোকরের মাকাম।

আমার রায় অনুযায়ী যদি ফয়সালা হতো তাহলে (এই জিম্মাদরী আমার উপর বর্তাবে) আমাকে জিজ্ঞাসা করা হতো (কেয়ামতে)। কারণ, যত রায় দেয়া হয় খোদার কসম, ঐসব রায় আল্লাহর কাছে লিখা হয়। কুরা’আনে এসেছে, নিশ্চয়ই প্রত্যেকের কান, চোখ, অন্তর জিজ্ঞাসিত হবে। তখন বের হবে কার রায়ে নফছানিয়াত ছিল? কার রায়ে হাছাদ ছিল? কার রায়ে খায়েশ ছিল? কার রায়ে দাওয়াত ছিল? এটা পাক্কা কথা। এজন্য বলা হয়, মশওয়ারাতে বসার আগে আল্লাহর দিকে মতাওজ্জুহ হও। নিজ রায় দেয়ার আগে ভালো করে খেয়ার করো যে আমার রায়ে কোনো খাহেশ নেই তো? এ জন্য সব অবস্থাতে মশওয়ারাতে অংশ গ্রহণ করো। আমাদের মেহনতে ওয়াক আউট (walk out) নেই, এটা তো রাজনীতির কাজ। যে, আমার কথা মানো, তাহলো আসব, নতুবা নয়। না আসলে তুমি ২ কাজ থেকে বঞ্চিত হবে। মনে করবে মশওয়ারাতে না জুড়লে কি হবে? মহল্লার কাজ করব, গাস্ত করব, নিজ মসজিদের মেহনতে জুড়ব, সমস্যা কি যদি আমি মশওয়ারায় না জুড়ি? না, এটা তো আম মানুয়ের জন্য , আমাদের জন্য হলো, যে, মশওয়ারা থেকে কেটে যাবে, সে কাম থেকে সরে যাবে। এজন্য মাশওয়ারাকে ইজতেমায়ী বানাও। হযরত ওমর রা. এর যুগে একজনও যদি মশওয়ারাতে অনুপস্থিত থাতেন তবে ওমর রা. তার ঘরে যেতেন এবং জানতে চাইতেন যে, সে কেন মশওয়ারায়ে এলো না?

মাশওয়ারাকে ইজতেমায়ী বানানোর ২য় বিষয় হলো, সাথীদের থেকে রায় নাও। একা একা ফায়সালা করো না। যেখানেই একাকী ফায়সালা হবে সেখানেই এখতেলাফের সৃষ্টি হবে। সীরাত পড়লে এমনটিই দেখা যায়। যখনই ফায়সালা একা একা (উমুমী মশওয়ারা ছাড়া শুধু ফায়সালের ফয়ালায় হয়েছে) তখনই মত বিরোধ দেখা দিয়েছে। কোনো এক এলাকাওয়ালা, কোনো এক জেলাওয়ালা এসে জিজ্ঞেস করল বা জানতে চাইল, আজ-কাল (এখন) ফায়সাল কে? কেউ বলল অমুকে ফায়সাল। বলল, আচ্ছা, ঠিক আছে, চল ফায়সালকে জিজ্ঞেস করে নেই। তারপর ফায়সালের কাছে গেল। ফায়সাল তখন তাদের বলতে হবে, অমুক সময় আমাদের মশওয়ারাওলা সাথীরাও থাকবেন তখন আসবেন। কুর’আনে এরকমই ইশারা পাওয়া যায়- হে ঈমানদাররা, আল্লাহ এবং তার রাসুলের অনুসরণ করো এবং তাদের, যারা তোমাদের মধ্যে দায়িত্ব প্রাপ্ত (জিম্মাদার)। যদি কোনো বিষয়ে মতভেদ ( ) সৃষ্টি হয় তাহলে বিষয়টি নিয়ে আল্লাহ ও তার রসুলের দিকে ফিরে চল (অর্থাৎ আল্লাহ এবং তার রাসুলের তরিকার উপর মশোয়ারাকে আনো) যদি তোমরা আল্লাহ ও আখিরাতে বিশ্বাসী হও, এটা তোআমাদের জন্য উত্তম এবং সুন্দর তাওয়িল।

জিজ্ঞেস করনেওয়ালা একা, ফায়সালা করনেওয়ালা একা; তখনই এখতেলাফ হবে। যখন নিজ জেলায় গিয়ে কাজ শুরু করবে তখন এখতেলাফ হবে।


চলবে>>>>

তথ্যঃ Click This Link

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.