নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বল বীর চির উন্নত মম শির !

শাহারিয়ার ইমন

শাহারিয়ার ইমন › বিস্তারিত পোস্টঃ

অটোফেজি ও রোযা

২১ শে মে, ২০১৮ দুপুর ১:৩৯




ছবি ; অটোফেজি নিয়ে গবেষনা করছেন বিজ্ঞানি ওহশোমি

২০১৬ সালে চিকিৎসা বিজ্ঞানে বছর নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন জাপানের অটোফেজি গবেষক ইয়োশিনোরি ওহশোমি। জীবদেহ কেমন করে ত্রুটিপূর্ণ কোষ ধ্বংস করে নিজের সুরক্ষা করে এবং কোষ কীভাবে নিজের আবর্জনা প্রক্রিয়াজাত করে সুস্থ থাকে, সেই রহস্য বের করার কারণে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন এ বিজ্ঞানী। বিজ্ঞানের ভাষায় এ প্রক্রিয়াকে বলা হয় অটোফেজি। আর যে জিনটি এই অটোফেজি প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে সেটি শনাক্ত করেছিলেন টোকিও ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির এ অধ্যাপক।

১৯৬০ সালে বিজ্ঞানীরা প্রথম দেখতে পান, কোষ কীভাবে নিজের ভেতরে একটি বস্তার মতো ঝিল্লি তৈরি করে নিজের আবর্জনা বা ক্ষতিগ্রস্ত উপাদানকে তার ভেতরে আটকে ফেলে। বেলজিয়ামের বিজ্ঞানী ক্রিস্টিয়ান ডে ১৯৭৪ সালে এ লাইসোজম আবিষ্কারের কারণে চিকিৎসা বিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন। তবে সেখানে ঠিক কী ঘটে সেটা তখন বিজ্ঞানীদের জানা ছিল না। বিজ্ঞানী ইয়োশিনোরি ওহশোমি পৃথিবীতে সর্ব প্রথম অটোফেজি নিয়ে কাজ শুরু করেন। তিনি লক্ষ্য করেন লাইসোজম শুধু দেহের আবর্জনা বা ক্ষতিগ্রস্ত উপাদান জমা করে রাখে না। এটা রিসাইক্লিং চেম্বার বা নবায়নযোগ্য শক্তিব্যবস্থা হিসেবে কাজ করে নতুন উপাদান/কোষ তৈরি করে।

ইউশিনোরি দেখিয়েছেন, কোষেরা নিজেরাই নিজেদের বর্জিতাংশ বা আবর্জনাকে আটকায়। এরপর সেখান থেকে উপকারী উপাদানগুলোকে ছেঁকে আলাদা করে ফেলে। তারপর ওই দরকারি উপাদানগুলো দিয়ে উৎপাদন করে শক্তি কিংবা গড়ে তোলে নতুন নতুন অনেক কোষ। এ মহৎ কাজ তাঁকে ২০১৬ সালে নোবেল পুরস্কার এনে দিয়েছে।

অটোফেজি প্রক্রিয়াটি আসলে কি? অটোফেজি শব্দটি এসেছে গ্রিক শব্দ অটো ও ফাজেইন থেকে। বাংলায় এর অর্থ হচ্ছে—আত্ম ভক্ষণ বা নিজেকে খেয়ে ফেলা। বিষয়টি শুনতে ভয়ানক হলেও এটা শরীরের জন্য খুবই উপকারী। কেননা এটা শরীরের অভ্যন্তরীণ অঙ্গসমূহকে পরিষ্কার করার একটা প্রক্রিয়া, যা সম্পন্ন হয় কোষীয় পর্যায়ে। শরীরের বিভিন্ন কাজ করার জন্য প্রতিনিয়ত প্রোটিন তৈরি হয় এবং প্রোটিনের কাজটি সঠিকভাবে সম্পন্ন করার জন্য প্রোটিনের গঠনটি অ্যামিনো অ্যাসিড দ্বারা ত্রিমাত্রিক হতে হয়। যদি ত্রিমাত্রিক না হয় তবে প্রোটিনটি শরীরের জন্য ক্ষতিকারক হতে ও নানা রোগের সৃষ্টি করবে।

সহজভাবে যদি বলি- আমাদের ঘরে যেমন ডাস্টবিন থাকে ,অথবা আমাদের কম্পিউটারে যেমন রিসাইকেল বিন থাকে , তেমনি আমাদের শরীরের প্রতিটি কোষের মাঝেও একটি করে ডাস্টবিন আছে ।সারা বছর শরীরের কোষগুলো খুব ব্যস্ত থাকার কারণে ,ডাস্টবিন পরিষ্কার করার সময় পায় না ।ফলে ,কোষগুলোতে অনেক আবর্জনা ও ময়লা জমে যায় ।শরীরের কোষগুলো যদি নিয়মিততাদের ডাস্টবিন পরিষ্কার করতে না পারে ,তাহলে কোষগুলো একসময় নিষ্ক্রিয় হয়ে শরীরে বিভিন্ন প্রকারের রোগের উৎপন্ন করে । ক্যান্সার বা ডায়াবেটিসেরমতন অনেক বড় বড় রোগেরশুরু হয় এখান থেকেই ।

মানুষ যখন খালি পেটে থাকে , তখন শরীরের কোষগুলো অনেকটা বেকার হয়ে পড়ে ।কিন্তু তারা তো আর আমাদের
মত অলস হয়ে বসে থাকে না , তাই প্রতিটি কোষ তার ভিতরের আবর্জনা ও ময়লাগুলো পরিষ্কার করতে শুরু করে দেয় ।
কোষগুলোর আমাদের মতন আবর্জনা ফেলার জায়গা নেই বলে তারা নিজের আবর্জনা নিজেই খেয়ে ফেলে
মুসলামানদের দীর্ঘ একমাস রোযা পালন অটোফেজির একটি উৎকৃষ্ট উদাহরন ।




এক গবেষণায় দেখা গেছে, ৩০% প্রোটিন সঠিকভাবে সংশ্লেষ হতে পারে না ফলে এদের ধ্বংস করা, শরীর থেকে বের করে দেওয়া কিংবা অন্য উপায়ে কাজে লাগানো জরুরি। কেননা শরীরে এরা থাকলে বিভিন্ন রোগের সৃষ্টি হবে। প্রশ্ন হলো, কীভাবে ক্ষতিকারক প্রোটিনকে কাজে লাগানো যায়? আমাদের দেহ অটোফেজির মাধ্যমে এদের কাজে লাগায়।

অটোফেজি প্রক্রিয়াটি আমাদের শরীরকে কার্যকরী করে রাখে, দুর্বল অঙ্গাণু থেকে মুক্তি দেয় এবং ক্যানসার কোষ ধ্বংস করে। শরীরে এ প্রক্রিয়া অনুপস্থিত থাকলে ক্যানসার কিংবা নানাবিধ স্নায়বিক রোগ হতে পারে। নোবেল কমিটির মতে, ইয়োশিনোরির গবেষণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেননা ক্যানসার থেকে শুরু করে নানাবিধ স্নায়বিক রোগগুলোর (যেমন ডেমনেশিয়া, পারকিনসন্স) ক্ষেত্রে শরীরে কী ধরনের পরিবর্তন হয় তা বুঝতে তার গবেষণাটি সহায়তা করে। এককথায় বলা যায়, অটোফেজি রোগ প্রতিরোধ করে এবং আমাদের যৌবন ধরে রাখতে সহায়তা করে।


তথ্যসূত্র ও ফটো ;
প্রথম আলো , গুগল , নিয়ন আলো (প্রথম ফটো ) ।

মন্তব্য ১৫ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১৫) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে মে, ২০১৮ দুপুর ১:৫১

কাইকর বলেছেন: ধন্যবাদ। জানতে পারলাম কিছু।

২২ শে মে, ২০১৮ দুপুর ১২:৩৩

শাহারিয়ার ইমন বলেছেন: স্বাগতম কাইকর ভাই

২| ২১ শে মে, ২০১৮ দুপুর ১:৫১

নীল মনি বলেছেন: সুন্দর পোস্ট :)

২২ শে মে, ২০১৮ দুপুর ১২:৩৩

শাহারিয়ার ইমন বলেছেন: ধন্যবাদ নীল মনি

৩| ২১ শে মে, ২০১৮ দুপুর ২:০৭

আশমএরশাদ বলেছেন: অটোফেজি আর রোজা এক জিনিস না। অটোফেজিতে পানি খাওয়া লাগে একটা সিস্টেমের মধ্যে দিয়ে গেলে তখন কাজ করে মাত্র।

২২ শে মে, ২০১৮ দুপুর ১২:৩৩

শাহারিয়ার ইমন বলেছেন: আমি বলেছি রোযা অটোফেজির একটি উদাহরন

৪| ২১ শে মে, ২০১৮ বিকাল ৪:০৭

রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।

২২ শে মে, ২০১৮ দুপুর ১২:৩৪

শাহারিয়ার ইমন বলেছেন: আপনার কমেন্ট অবধারিত জানতাম নুর ভাই ।

৫| ২১ শে মে, ২০১৮ বিকাল ৪:০৮

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: বাহা! সুন্দর একটি পোষ্ট, লাইকও দিয়েছি ইমন ভাই। অটোফেজি সম্পর্কে জেনে ভাল লাগলো।

শুভ কামনা রইল।

২২ শে মে, ২০১৮ দুপুর ১২:৩৫

শাহারিয়ার ইমন বলেছেন: আপনাদের কিছু জানাতে পেরে আমিও আনন্দিত

৬| ২১ শে মে, ২০১৮ বিকাল ৫:২১

শামচুল হক বলেছেন: অটোফেজি সম্পর্কে জেনে ভাল লাগলো।

২২ শে মে, ২০১৮ দুপুর ১২:৩৫

শাহারিয়ার ইমন বলেছেন: ধন্যবাদ সামছুল ভাই

৭| ২৮ শে মে, ২০১৮ রাত ১১:১৪

চাঁদগাজী বলেছেন:


অটোফেজী ভাবনাই জাপানীদের দীর্গায়ু করছে।

৮| ২৮ শে মে, ২০১৮ রাত ১১:৪৬

মেঘনা পাড়ের ছেলে বলেছেন: অটোফেজি এবং রোজা সম্পুর্ন ভিন্ন জিনিষ

১৭ ই জুলাই, ২০১৮ রাত ৮:০০

শাহারিয়ার ইমন বলেছেন: বিস্তারিত বলুন প্লিজ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.