নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বল বীর চির উন্নত মম শির !

শাহারিয়ার ইমন

শাহারিয়ার ইমন › বিস্তারিত পোস্টঃ

পুলিশ কোন চ্যাটের বাল ?

০২ রা আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৩:৪৫



শিরোনামটা একটু অশ্লীল ,প্রথমেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি । আর একটি কথা পুলিশ বাহিনীর ওপর আমার ব্যক্তিগত ক্ষোভ নেই ।তাদের ওপর একতরফা দোষ দেয়ারও সুযোগ নেই ।তারা সরকারের নুন গায় ,সরকারের গুনত গেতেই হবে ।


কোন ন্যায় আন্দোলন গেলেই সাধারন শিক্ষার্থী ,জনগনদের ওপর হায়েনার মত হিংস্রতা নিয়ে হাজির হয় এদেশের পেটুয়া পুলিশ বাহিনী । শামসুর রাহমানের বিখ্যাত লাইনটি ''উদ্ভট উটের পিঠে চলছে স্বদেশ'' কে এখন বলা যায় "পেটুয়া পুলিশের পিঠে চলছে স্বদেশ ''।
এটা তো সবারই জানা আওয়ামী লীগ প্রথম ক্ষমতায় এসে পুলিশ বাহিনীতে ব্যাপক হারে গোপালগঞ্জের লোকবল নিয়োগ করে ।


কিছু দিন আগে বিশ্বের নতুন পাঁচটি স্বৈরতান্ত্রিক দেশের তালিকায় বাংলাদেশকে অন্তর্ভুক্ত করেছে জার্মানির গবেষণা প্রতিষ্ঠান বেরটেলসমান স্টিফটুং। এক গবেষণা প্রতিবেদনে প্রতিষ্ঠানটি উল্লেখ করে, বাংলাদেশ এখন স্বৈরশাসনের অধীন এবং সেখানে এখন গণতন্ত্রের ন্যূনতম মানদন্ড পর্যন্ত মানা হচ্ছে না।


নির্বাচনে একছত্র আধিপত্য বিস্তার করে ক্ষমতায় আসা এই সরকার জনগনের কোন নায্য দাবিটি মেনে নিয়েছে ২০০৯ সাল থেকে আমার জানা নেই । "মেরুদন্ডবিহীন বিরোধী দল , চাটুকারি সুশীল সমাজ , ঘুমে থাকা দেশের অধিকাংশ জনগন " এই দেশের শেষ পরিণতি
কোথায় গিয়ে থামবে সেটা দেখা এখন সময়ের অপেক্ষা মাত্র ।

১৯৫২ সালে ছাত্ররা নায্য দাবিতে রাজপথে নেমেছিল ,তাদের ওপর পাকিস্তানি পুলিশরা লাঠি চার্জ ,গুলি ছুঁড়েছিল । এখনও তো ছাত্ররা নায্য দাবি নিয়ে রাজপথে নামলে পুলিশ লাঠিচার্জ করে ,গুলি ছোঁড়ে ,থানায় আটকিয়ে রিমান্ডে ঠোকায় । পার্থক্যটা শুধু এটুকু তখন সরাসরি জীবন দিয়েছিল কয়েকজন ,এখন আস্তে আস্তে দুর্ভোগ পেয়ে জীবন শেষ হচ্ছে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ।

কিছুদিন আগে ঘটে যাওয়া কোটা আন্দোলনকারীদের ওপর পুলিশ ও ছাত্রলীগ দিয়ে যেভাবে হামলা করে আন্দোলনা নস্যাৎ না করতেও পেরেও স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীর পল্টিবাজি ভেলকি দেখিয়ে আন্দোলন থামানোর কৌশল বেশ অবাক করার মত ছিল । তখন ভার্সিটির ছাত্র-ছাত্রদের পাশে ভুক্তভোগী কিছু অভিভাবক এগিয়ে আসছিল । সারদেশের জনগন নির্বাক ছিল । মিডিয়া বাফার ভূমিকা পালন করছিল মাত্র ,আন্দোলনের খুব অল্প পরিমান কভার করছিল । এই নিয়ে লিখতে গেলে আর শেষ হবেনা ।


"নিরাপদ সড়ক আন্দোলন " এটা নতুন ইস্যু নয় । দেশের প্রতিটি জনগনের জীবন এর সাথে জড়িত । বিখ্যাত চলচ্চিত্রকার ''তারেক মাসুদ" সড়ক দূর্ঘটনায় মারা যাবার পর মিডিয়া কিছুদিন এই ইস্যুটি নিয়ে বেশ নাচানাচি করছিল ।নিসেষ করে চ্যানেল আই । পরে সব থেমে গেছে ।অভিনেতা ইলিয়াস কাঞ্চনের স্ত্রী সড়ক দূর্ঘটনায় মারা যাবার পর তিনি নিজে একা একাই "নিরাপদ সড়ক চাই" আন্দোলন করে আসছেন কয়েক বছর ধরে । জনগন ,মিডিয়া ,সরকার কেউ তার পাশে দাঁড়ায়নি । বেশি হলে সুশীল দের নিয়ে টিভি চ্যানেলগুলোতে টকশো নামক শোবিজে অকার্যকরী কথা আউড়ানো ছাড়া কারো কোন টনক নড়েনি ।


বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির পরিসংখ্যান অনুসারে, ২০১৭ সালে আগের বছরের চেয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় ২২ শতাংশ প্রাণহানি বেড়েছে।নিরাপদ সড়ক চাই নামে একটি সংগঠনের তথ্যানুসারে ২০১৭ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানি হয়েছে ৫ হাজার ৬৪৫ জনের। সংস্থাটির হিসাবে, ২০১৬ সালের চেয়ে দেড় হাজার মৃত্যু বেড়েছে ২০১৭ সালে। - বিবিসি বাংলা ।


প্রথম আলোতে



বাংলাদেশ হেলথ ইনজুরি সার্ভে-২০১৬ (বিএইচআইএস)' শিরোনামে এই জরিপ পরিচালনা করা হয়৷ প্রকল্পের পরিচালক ফারুক আহমেদ ভুইয়া ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমরা দুর্ঘটনায় এবং আঘাতে মৃত্যু নিয়ে এই জরিপ চালিয়েছি৷ তাতে দেখা যায়, প্রতি বছর বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় ২৩ হাজার ১৬৬ জন নিহত হন৷ আর তাতে প্রতিদিন গড়ে নিহতের সংখ্যা ৬৪ জন৷''।


এরকম প্রতিদবেদন খুঁজলে বহু তথ্য পাওয়া যাবে । সঠিক আসলে কতজন মারা যায় সেটা বলা দুষ্কর ।সরকারের আওতায় যেসব পরিসংখ্যান হয় সেগুলো অবশ্যই ত্রুটিযুক্ত । হিসাবের বাহিরে যেগুলো হয় ,তার তো খবর কেউ রাখিনা । প্রত্যন্ত অঞ্চলের খবর পত্রিকাতেও আসেনা ।

যেভাবে সড়ক দূর্ঘটনায় মানুষ মারা যাচ্ছে ,আপনি আমি যে কেউ যখন তখন গাড়ির তলে চাপা পড়তে পারি । আমি একবার সড়ক দূর্ঘটনার কবলে পরে আমার ডান হাতের হাড্ডি ভেঙে গেছিল ,ভাগ্য ভাল অল্পের জন্য বেচেঁ গিয়েছিলাম । গ্রামের রাস্তায় নছিমনে চরছিলাম । এখনো আমাদের গ্রামে নছিমন চলে ,বাস চলে ,হোন্ডা চলে ।যাদের কারোরই ড্রাইভিং লাইন্সেস নাই ,গাড়ির লাইন্সেস নাই । থানায় একটা চাঁদা জমা দিতে হয় ।আবার কারো তাও লাগেনা ,চেয়ারম্যান বা গ্রামের মোড়লের লোক হলে ।আমাদের গ্রামের ওই রাস্তায় অন্তত বছরে ২-৫ জন স্পট ডেড হয় ,আহত হয় অনেক বেশি ।১০-১২ বছরের শিশুরাও ধেরাচ্ছে নসিমন ,হুন্ডা চালায় ।
এই সমস্ত খবর কখনো সংবাদ পত্রে আসেনা । দেশের প্রতিটি গ্রামেই এই অবস্থা হলফ করে বলতে পারি ।

এখানে আপনি কাকে দোষ দিবেন ? জনগণকে ? দেশেত আইন আছে ।কয়েকশো টাকা মাসিক চাঁদার জন্য গ্রামের প্রতিটি মানুষের জীবনকে হুমকিতে ফেলছে পুলিশ নামক পশুরা । পশু বলার চেয়ে ভাল শব্দ খুঁজে পেলাম না ।


দুই বাসের চাপায় পরা রাজীবের নির্মম মৃত্যু ,হানিফ বাসের যাত্রী পায়েলকে চেহারা থেতলিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা ইতিমধ্যে আমরা ভুলে গেছি । গত রবিবার বিমানবন্দর সড়কে কুর্মিটোলায় জাবালে নূর গাড়ির চাপায় নিহত হয় স্কুল ছাত্রী দিয়া খানম ও আব্দুল করিম । আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয় ১২-১৫ জন । গাড়ি ওভারটেকিং করার সময় রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর বাস উঠিয়ে দেয় ড্রাইভার ।
পুলিশ ,মিডিয়া এটাকে নিছক দুর্ঘটনা বললেও ,এটা প্রত্যক্ষ হত্যকান্ড । শোনা যাচ্ছে দুইজন নয় আরো বেশি মারা গেছে ,এই ব্যাপারে আমি নিশ্চিত নই ।


প্রায় এক মাস আগে হবে আমি তখন ঢাকায় । ঢাকা কমার্স কলেজের এক শিক্ষার্থীর ওপর দিয়ে বাস চালিয়ে যায়,সাথে সাথে মৃত্যু ,ঐদিন মিরপুর ১০ থেকে মিরপর ১ পর্যন্ত বাস চলাচল বন্ধ ছিল ছাত্রছাত্রীদের অবরোধের জন্য ।আমি নিজে পায়ে হেঁটে মিরপুর ১০ থেকে ১ এ গিয়েছিলাম । ঐদিন শিক্ষকেরাও রাস্তায় নেমেছিল । বিচার কি হয়েছিল ঠিক জানা নেই ।



সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে কুর্মিটোলায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত শিক্ষার্থীদের কথা বলে নৌমন্ত্রীর কাছে প্রশ্ন করলে হা হা করে হেসে মন্ত্রী পাল্টা প্রশ্ন করেন, ‘এটার সঙ্গে কি এটা রিলেটেড?’

তারপর বেশ কিছুক্ষণ হেসেই বিষয়টা উড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলেও সাংবাদিকদের তোপের মুখে নৌমন্ত্রী বলেন, ‘আমি শুধু এটুৃকু বলতে চাই, যে যতটুকু অপরাধ করবে সে সেভাবেই শাস্তি পাবে।’

কতটুকু বিকৃত মানসিকতা আর মাদকতায় থাকলে একজন মন্ত্রীর কাছ থেকে দেশ এরকম প্রতিক্রিয়া পেতে পারে তা আমার জানা নেই ।

দেশে প্রতিনিয়ত সড়ক দুর্ঘটনা হয় ,তার বিচার হয়না । বেশি হলে ড্রাইভারকে আটকিয়ে কিছু জরিমানা করে ৬মাস থেকে ১ বছরের জেল । জেল থেকে বেরয়ে আগের চেয়েও ভয়ংকয় হয়ে ওঠে তারা ।

সুষ্ঠ বিচার পেতে ,নৌ-মন্ত্রির পদত্যাগ ও ''নিরাপদ সড়ক চাই '' এই উদ্দেশ্য নিয়ে ঢাকাসহ সারাদেশে রবিবার থেকে আন্দোলন অবরোধ চালাচ্ছে স্কুল ও কলেজের ছাত্রছাত্রীরা । প্রথম দিকে পুলিশ তাদের ওপর লাঠিচার্জ করে । কতটা পশু ও নির্মম হলে স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশ হাত ওঠায় ভাবুন একবার ।
প্রমান ;







এরপরে আন্দোলন আরো বেগবান হয় । পুলিশের ওপর ধিক্কার জানিয়ে নানারকম প্ল্যাকার্ড হাতে রাস্তায় নামে শিক্ষার্থীরা ।









কয়েকটা অশ্লীল ভাষায় পুলিশের বিরুদ্ধে প্ল্যাকার্ড ও ছিল ,সেগুলো আপলোড দেইনি । অশ্লীলতা এখানে প্রতিবাদের ভাষা হিসেবে কেন নেয়া হয়েছে জানিনা ,তবে অশ্লীল ভাষায় সাহিত্য রচনা করে পুরষ্কৃত হলে । দেশের বেহাল অবস্থায় অশ্লীল কথায় প্রতিবাদ করে আন্দোলন জোরদার হলে তাদের দোষ আমি দেখিনা , তাছাড়া তার এখনো শিশু তাদের এত দোষ ত্রুটি ধরলে চলবেনা । তারা আন্দোলন করে সরকারের টনক নড়িয়েছে এটাই মুখ্য বিষয় । আমাদের দেশের পাবলিক গুলা আসলে মূল নিলজ্জহীন । বাচ্চাদের রাস্তায় পাঠিয়ে নিজেরা বাসায় আরাম করছে , অফিস করছে ।ওদিকে তাদেরকে পুলিস পেটাচ্ছে ,গাড়ি চাপা দিচ্ছে ,শ্রমিক-মজুর-ড্রাইভাররা সুযোগ পেলে মারছে সেদিকে তাদের খেয়াল নেই । আর কত অত্যাচার নিগ্রহ সহ্য করবে এদেশের নিলজ্জ আম-জনতা ।

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত স্কউল-কলেজের ছাত্র ছাত্রীরা ঢাকাসহ প্রধান প্রধান অনেক গুলো শহরে অবরোধ করছে এখনো । যদিও শিক্ষামন্ত্রী ভয় পেয়ে গতকাল আজকে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছেন ।দিয়ে কোন লাভ হয়নি । শিক্ষার্থীরা লাইন্সেস চেক করছে সকল যানবাহ্নের,ট্রাফিক নিয়ন্ত্রন করছে । এমনকি মন্ত্রী ,পুলিশ ,মিডিয়ার গাড়ি ও গাড়ির ড্রাইভারের লাইন্সেস চেক করছে ।
পুলিস এখন আর তাদের ওপর হাত তুলছেনা ।কিন্তু গাড়ি চাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে কয়েক যায়গায় ।

শ্রমিক-মজুররা শিক্ষার্থীদের কয়েক জায়গায় মারধোর করেছে ।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অবরোধ তুলে দেওয়ার ঘোষনা দিয়েছেন ,র‍্যাব জাবালে নূর গাড়ির মালিক ও ঐ গাড়ির ড্রাইভারকে আটক করেছে । জাবালে নূরের রোদ পারমিট বাতিল করা হয়েছে । স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী তাদের বিচার হবার কথা দিয়েছেন (কতদিনে হবে তা বলেননি ) ।সড়কের জন্য সংসদে নতুন আইন পাশ করা হবে যাতে তাৎক্ষনিক সড়ক দূর্ঘটনার বিচার হয় (দীর্ঘ প্রসেস আর কোটা আন্দোলনে সংসদে দেয়া প্রধান মন্ত্রীর ব্যক্তবের মতই ) । নৌমন্ত্রী দুঃখিত হয়েছেন এবং ক্ষমা চেয়েছেন ।তার পদত্যাগের কোন খবর আসেনি ।

সরকার চেষ্টা করছে কোনভাবে প্রতিশ্রুতি দিয়ে এই আন্দোলনকে বাঞ্চাল করতে । দেখা যাক শিক্ষার্থীরা কতদূর তাদের দম ধরে রাখতে পারে । আর নির্লজ্জ এ জাতিকে কতটুকু শেখাতে পারে ।

শেষে একটা কথা মনে পরল ,এখন পর্যন্ত কোন সুশীল সমাজ এগিয়ে আসেনি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সাহাযার্থে ।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৪:৪৫

স্বপ্ন লোকের চাবি বলেছেন: শেষে একটা কথা মনে পরল ,এখন পর্যন্ত কোন সুশীল সমাজ এগিয়ে আসেনি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সাহাযার্থ---
চাকরি থাকবে না .............................

০২ রা আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৪:৫১

শাহারিয়ার ইমন বলেছেন: চাটুকারিতাও একটা চাকরি বটে

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.