নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বল বীর চির উন্নত মম শির !

শাহারিয়ার ইমন

শাহারিয়ার ইমন › বিস্তারিত পোস্টঃ

মহামারী; প্রকৃতির প্রতিশোধ।

২৮ শে মার্চ, ২০২০ রাত ১২:৪৫



১৬৫ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ১৮০ খ্রিষ্টাব্দে রোমে স্মল পক্স মহামারিতে বহু মানুষ মারা যায়, রাজপরিবারের সদস্যরাও এর প্রকোপ থেকে বাঁচেনি। বিখ্যাত রোমান সম্রাট মার্কাস অরেলিয়াসের ভাই লুইসিয়াস ভেরাসের মারা গিয়েছিলেন। ২৫০ খ্রিষ্টাব্দে সাইপ্রিয়ানের প্লেগ মহামারী রোমান সাম্রাজ্যকে দুর্বল করে দেয়।

এর পর, পঞ্চম শতাব্দীতে একদিকে যুদ্ধ অন্যদিকে এই মহামারি পরাক্রমশালী পশ্চিম রোমান সাম্রাজ্যকেই শেষ করে দেয়। আবার ষষ্ঠ শতাব্দীর প্রথমভাগে সালে রোমান সাম্রাজ্যেও পূর্ব অংশের সম্রাট জাস্টিনিয়ান ওয়ান, রোমান সাম্রাজ্যকে আবার আগের মত প্রতাপশালী অবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে যাবার চেষ্টা করেন, বিউবনিক প্লেগ মহামারিতে তাঁর মৃত্যু সেই সম্ভাবনাকেও শেষ করে দেয়। পরবর্তী দুই শতাব্দীতে বিউবনিক প্লেগে প্রায় ৫ কোটি মানুষ মারা যায়, যা তৎকালীন জনসংখ্যার ২৬ শতাংশ।

১৩৫০ খ্রিষ্টাব্দের দিকে ‘দি ব্ল্যাক ডেথ’ বলে পরিচিত প্লেগ মহামারি পৃথিবীর জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশের মৃত্যুর কারণ হয়। এই রোগ সম্ভবত এশিয়ায় উৎপত্তি হয় এবং পরবর্তীতে ইউরোপে ছড়িয়ে পড়ে।

পঞ্চদশ শতাব্দীর শেষভাগে, ক্যারিবিয়ান দীপপুঞ্জে স্প্যানিশ বণিকেরা নিয়ে আসে ভয়ংকর স্মলপক্স, বিউবনিক প্লেগ ও হামের মত জীবাণু। ইউরোপিয়ানরা এইসব রোগ প্রতিরোধী হলেও ক্যারিবিয়ানের মানুষের শরীরে এই রোগের প্রতিরোধ করার ক্ষমতা ছিলো না। এর ফলে প্রায় ৯০ ভাগ আদিবাসী জনগোষ্ঠী এইসব রোগে মৃত্যুবরণ করে। উপনিবেশিক শক্তি গোটা আমেরিকা মহাদেশে শুধু তরবারি দিয়েই হত্যা করে নি, রোগ বালাই নিয়ে এসেও মানুষের মৃত্যুর কারণ হয়েছে।

১৫২০ সালে ইউরোপিয়ানদের সাথে আসা একজন আফ্রিকান দাস স্মলপক্স নিয়ে আসলে গোটা এজটেক সাম্রাজ্যে ছড়িয়ে পড়ে এই মহামারি। সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে ষোড়শ ও সপ্তদশ শতাব্দীতে ইউরোপিয়ানদের বয়ে আনা জীবাণুর কারণে আমেরিকা মহাদেশে প্রায় ৫ কোটি ৬০ লাখ মানুষ মৃত্যুবরণ করে। আদিবাসীদের এই গণহারে মৃত্যু গোটা আমেরিকা মহাদেশে ইউরোপিয়ানদের আধিপত্য করার সুযোগ করে দেয়।

১৬৬৫ সালের দিকে ‘দি গ্রেট প্লেগ অব লন্ডন’-এ লন্ডনের জনসংখ্যার ২০ শতাংশ মৃত্যুবরণ করে। এছাড়া, ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের বিস্তারের সাথে সাথে সৈনিকদের মাধ্যমে ভারতবর্ষে কলেরা ছড়িয়ে পড়ে। ভারতবর্ষ ছাড়াও স্পেন, আফ্রিকা, ইন্দোনেশিয়া, চীন, জাপান, ইতালি, জার্মানি ও আমেরিকায় দেড়শ বছরের মধ্যে প্রায় দেড় কোটি মানুষ কলেরায় মারা যায়। ১৮৫৫ সালের দিকে চীন, হংকং ও ভারতে প্রায় দেড় কোটি মানুষ প্লেগে মারা ভুগে যায়।

১৭২০ সাল ; প্ল্রেগ

১৭২০ সালে ফ্রান্সের মার্সেইতে প্রাদুর্ভাব ঘটেছিল প্লেগ রোগের। এই শহরে সে সময় মাত্র দু বছরের ব্যবধানে মৃত্যু হয় প্রায় ৫০ হাজার মানুষের। সারা বিশ্বের সে সময় প্রায় ১০ লক্ষ মানুষের প্রাণ কেড়েছিল প্লেগ।

১৮২০ সাল ; কলেরা

১৮২০ সালে মহামারি ছিল কলেরা। এই কলেরায় মূলত আর্থিকভাবে দুর্বল মানুষের মৃত্যুর হার সবচেয়ে বেশি ছিল। ভারতীয় উপমহাদেশে বসবাসকারী ইউরোপিয়ানদের উপর সে সময় কলেরা খুব বেশি প্রভাব ফেলতে পারেনি। মূলত বন্যার পর পানিবাহিত পেটের অসুখে সে সময় প্রাণ হারান হাজার হাজার মানুষ।


স্প্যানিশ ফ্লু: ১৯১৮ সাল

এই মহামারিতে বিশ্বব্যাপী প্রায় পাঁচ কোটি মানুষের মৃত্যু হয়। ধারণা করা হয়, স্প্যানিশ ফ্লুর উৎপত্তিস্থল ছিল চীনে। চীনা শ্রমিকদের মাধ্যমে তা কানাডা হয়ে ইউরোপে ছড়িয়ে পড়ে। ১৯১৮ সালের শুরুর দিকে এই ফ্লু উত্তর আমেরিকায় দেখা দেয় এবং পরে ইউরোপে ছড়ায়। স্পেনের মাদ্রিদে মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়ার পর এর নাম হয় ‘স্প্যানিশ ফ্লু’। ১৯১৯ সালের গ্রীষ্মে এই রোগের প্রকোপ কমে আসে। সালফা ড্রাগস ও পেনিসিলিন তখনো আবিষ্কৃত না হওয়ায় স্প্যানিশ ফ্লু অত্যন্ত প্রাণঘাতী রূপে দেখা দিয়েছিল। স্পেনের মোট ৮০ লাখ মানুষ এই ফ্লুতে আক্রান্ত হয়। বিশ্বব্যাপী আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৫০ কোটি।

এশিয়ান ফ্লু: ১৯৫৭ সাল

হংকং থেকে এই রোগ চীনে ছড়িয়ে পড়ে। পরে তা ছয় মাসের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র হয়ে যুক্তরাজ্যে ব্যাপকভাবে ছড়ায়। এ কারণে প্রায় ১৪ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়ে। ১৯৫৮ সালের শুরুর দিকে এশিয়ান ফ্লু দ্বিতীয়বারের মতো মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়ে। ওই সময় এশিয়ান ফ্লুতে বিশ্বব্যাপী প্রায় ১১ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই মারা গিয়েছিল ১ লাখ ১৬ হাজার মানুষ। পরে ভ্যাকসিন দিয়ে ওই মহামারি প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়েছিল।

এইচআইভি/এইডস: ১৯৮১ সাল

১৯৮১ সালে এইডস প্রথমবারের মতো শনাক্ত করা সম্ভব হয়। রোগ শনাক্তের পর থেকে এ পর্যন্ত এইডসে বিশ্বব্যাপী সাড়ে তিন কোটি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

করোনাভাইরাস ২০১৯

একবিংশ শতাব্দীতে এসে মহামারি আকার ধারণ করেছে করোনাভাইরাস। এখন পর্যন্ত সারা বিশ্বে মৃত্যুর সংখ্যা প্রায় ২৭০০০। আক্রান্ত লাখ লাখ মানুষ। পুরো বিশ্বজুড়ে যার আতংক এখন বিরাজমান। মৃত্যু সংখা কত গিয়ে পোঁছায় কে জানে।

তথ্যসূত্র ও ছবি ; ইন্টারনেট



মন্তব্য ১১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে মার্চ, ২০২০ রাত ১২:৫৯

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

মহামারী; প্রকৃতির প্রতিশোধ।
এ কথা সহজে কেউ মানতে চায়না,
মানতে চায়না!!

২৮ শে মার্চ, ২০২০ দুপুর ১:৪৯

শাহারিয়ার ইমন বলেছেন: না মানলেও ফলাফল ভোগ করতে হয়।

২| ২৮ শে মার্চ, ২০২০ রাত ২:১৭

নেওয়াজ আলি বলেছেন: ডায়াবেটিস নিয়ে ডর লাগে

২৮ শে মার্চ, ২০২০ দুপুর ১:৪৯

শাহারিয়ার ইমন বলেছেন: সাবধানে থাকেন আর আল্লাহর নাম নেন

৩| ২৮ শে মার্চ, ২০২০ রাত ২:২৯

অনল চৌধুরী বলেছেন: দেশ-বিদেশের স পাপী মরুক আর বেচে থাকুক ভালো লোকরা,যাদের নিয়ে একটা সভ্য পৃথিবী গড়া যাবে।

২৮ শে মার্চ, ২০২০ দুপুর ১:৫০

শাহারিয়ার ইমন বলেছেন: সৃষ্টিকর্তাই ভাল জানে কি হবে পরবর্তীতে

৪| ২৮ শে মার্চ, ২০২০ রাত ২:২৯

অনল চৌধুরী বলেছেন: দেশ-বিদেশের সব বড় পাপীগুলি মরুক আর বেচে থাকুক ভালো লোকরা,যাদের নিয়ে একটা সভ্য পৃথিবী গড়া যাবে।

৫| ২৮ শে মার্চ, ২০২০ রাত ৩:৪৫

হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
আড়াই কোটি বছর আগে থেকে মানুষ্য আদী প্রজাতি থেক বর্তমান হোমোসেপিয়েন্স পর্যন্ত প্রতিদিন গড়ে ১০ কোটি বিভিন্ন ভাইরাসের আক্রমনের মুখে মানুষ টিকে আছে, প্রথমে কিছু মরেছে, পরে নিজস্ব প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করে নিয়েছে।
বিজ্ঞানীরা কয়েক হাজার ক্ষতিকর ভাইরাসের পরিচয় বের করতে সক্ষম হয়েছে। আবার ৪০ ট্রিলিয়ন বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়ার আবাসস্থল আমাদের পাকস্থলি পরিপাকনালী, রক্তসংবহন চক্রে।
মানবকুল আকাশের দিকে চেয়ে বসে থাকেনি। যেসব ভাইরাস-ব্যাক্টেরিয়ার বিরুদ্ধে নিজস্ব প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করতে পারেনি, তার জন্য তৈরি হয়েছে ভ্যাকসিন।
ব্যাকটেরিয়ার জন্য এন্টিবায়োটিক।
করোনার বিরুদ্ধের যুদ্ধও সফল হবে। ইনশাআল্লা।

২৮ শে মার্চ, ২০২০ দুপুর ১:৫১

শাহারিয়ার ইমন বলেছেন: যত কম মানুষ মারা যায় ততই মংগল

৬| ২৮ শে মার্চ, ২০২০ সকাল ১১:১৮

রাজীব নুর বলেছেন: ১৮ দিনে যদি সত্যিই ৪৮ জন হয় তাহলে অবশ্যই আশার কথা। পরবর্তী ১৪ দিনে যদি সেরকম বৃদ্ধি না ঘটে তাহলে অবশ্যই খুবই সুসংবাদ হবে।

২৮ শে মার্চ, ২০২০ দুপুর ১:৫৪

শাহারিয়ার ইমন বলেছেন: এর বাইরেও থাকতে পারে, সরকার সঠিক তথ্য দেয় কিনা তা নিয়ে ব্যাপক সন্দেহ আছে

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.