নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রাতের শেষে ভোর আসিবে সেই আশাতেই রই, দিনের শেষে খুঁজে ফিরি শান্তি গেল কৈ?

মোহাম্মদ ইমরান হোসাইন

অসামাজিক মানব

মোহাম্মদ ইমরান হোসাইন › বিস্তারিত পোস্টঃ

অণুগল্প: ধংসস্তুপ

২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৯:০৩

সোলাইমান এর বাড়ি কাবুল শহরের এক
গলিতে। নিম্ন মধ্যবিত্ত হলেও তাঁদের
সুখি পরিবার। কাচা ইটের তৈরী
বাড়িটিতে ওরা চারটা প্রানী থাকে।
সোলাইমান, তার স্ত্রী সাইমা,
সোলাইমান
এর বাবা তোহফা ও একমাত্র মেয়ে
সাইদা। খুব আদুরে মেয়ে সাইদা। বয়স
মাত্র সাত বছর। সাইদার মায়া মাখা
পবিত্র চেহারা যে কোনো পাষাণ
মনকেও গলিয়ে ফেলে। ছোট ছোট পায়ে
ও বাবার সাথে হেটে বেড়ায় পুরো কাবুল
শহর। বাবাই ওর সবচেয়ে প্রিয় বন্ধু।
ছোট মেয়েটার সাথে খেলতে গিয়ে নিজেই
যেন ছোট হয়ে যায় সোলাইমান। বাবা
মেয়ের এই অকৃত্তিম ভালোবাসা যেন
ধূলির ধরায় স্বর্গের প্রতিচ্ছবি।
: বাবা, তুমি আমাকে সবসময় এভাবে
আদর করবেতো!
পিচ্চি মেয়েটার মুখে এমন প্রশ্ন শুনে
কিছুটা অবক হয় সোলাইমান। তার চোখ
জোড়া ভিজে উঠে। মেয়েকে বুকে জড়িয়ে
ধরে সোলাইমান। তারপর মেয়ের ললাটে
একটা চুম্বন এঁকে দিয়ে বল- হুম মা,
সব সময় এভাবে আদর করব।
সোলাইমান এর চোখ থেকে কয়েক ফোঁটা
জল বেরিয়ে আসে। আকস্মাত্ বাবার
এতটা আবেগ দেখে কিছুটা বিস্মিত হয়
সাইদা। তার চোখ জোড়াও ছল ছল করে
উঠে।
.
কাবুল শহরের নতুন এক ভোর। নতুন
দিনের সূর্যোদয়। নামায পড়ে ঘরে
ফিরেছে সোলাইমান। সাইদা তখনো
ঘুমাচ্ছে। সাইমা রান্না ঘরে চুলায়
আগুন
দিতে ব্যাস্ত। সুলাইমান ও তার বাবা
দু'জনেই বেড়িয়েছে ব্যাবসার কাজে।
বাড়ি থেকে খুব একটা দূরে যায় নি
তাঁরা। হঠাত্ই আকাশ থেকে ভেসে আছে
প্রচন্ড রকম ইন্জিনের শব্দ।
চারদিকে মানুষের শোরগোল পড়ে যায়।
অতঃপর বিকট একটা শব্দ! তারপর
সবাই চুপচাপ। মূহর্তের জন্য সব কিছু
যেন স্তব্ধ হয় যায়।
সোলাইমানের ঘরটা বিধ্বস্থ হয়ে পড়ে
আছে। সেদিকেই ছুটে চলছে সবাই।
সোলাইমানও চলল। রান্না ঘরে
জ্ঞানহীন ভাবে পড়ে আছে সাইমা।
সাইদা! মেয়ের কথা মনে পড়তেই পাগল
প্রায় হয়ে যায় সোলাইমান।
ধংসস্তুপের
উপর দিয়ে ছুটে চলে সে। খাটের
উপরেই শুয়ে আছে সাইদা। তবে সে দেহে
প্রাণ নেই। তার পুরোটা শরীর ঝলসে
গেছে। বিধ্বস্ত দেয়ালের খানিকটা
ঢেকে রেখেছে তাকে।
সে দৃশ্য দেখে সুলাইমান নির্বাক হয়ে
যায়। তার হাত পা অবশ হয়ে আসে।
লুটিয়ে পড়ে সে ধংসস্তুপের উপরই।
তার মেয়েটা আর কখনো তার আদর
পেতে চাইবে না। ছোট ছোট পায়ে তার
সাথে ঘুরে-বেড়াবে না কাবুলের অলি-
গলি। আর কখনো সাইদা কিছু বলবে
না। নিশ্চুপ সে। চির দিনের জন্য
নিশ্চুপ!

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.