নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

হিমু হবার ইচ্ছে আমার নেই, ইমু হয়েই না হয় থাকলাম।হরহামেসা খরচ হওয়া বড় নোটটগুলি না হয় হতে পারলাম না, হৃদয় নামক মাটির ব্যাংকে না হয় জমা হলাম কিছু খুচরো পয়সা হয়ে।

ন্যানো ব্লগার ইমু

ঘর পোড়া গরু হয়েও সিঁদুরে মেঘকেই ভালবাসি।।

ন্যানো ব্লগার ইমু › বিস্তারিত পোস্টঃ

"বনসাই চাষ ও বেরোবি মিথষ্ক্রিয়া"

২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৩৭

(জানি এই প্রসঙ্গহীন, ভিত্তিহীন লেখনিটা তেমন কেউ-ই পড়বে না, তারপরেও কেন যেন খুব লিখতে ইচ্ছে করছে, তাই লিখছি। বেরোবির সিলি ম্যাটার নিয়ে পড়া আর জীবন থেকে কিছু মূহূর্ত হারানো এখন সমান।)

সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে ক্যাম্পাস থেকে মাইকে চিৎকার চেঁচামেচি শুনতে পাচ্ছিলাম রুম থেকেই। রুম থেকে বের হয়েই দেখা হলো আমাদের ভার্সিটেতই জার্নালিজমে পড়া এক ছোট ভাইয়ের সাথে। বললাম "ক্যাম্পাসে যাওনি? ক্যাম্পাস এখন পুরো উত্তাল। আর তুমি রুমে? যাও সংবাদ সংগ্রহ করো, রিপোর্ট লিখ" প্রতিউত্তুরে ছোট ভাই বললো - "ভাইয়া এক বিষয় নিয়ে মানুষ আর কত লেখা দেখবে? মানুষের অনীহা চলে এসেছে বেরোবি'র উপরে। লেখলে দেখা যাবে কেউ পড়েনি, ফেসবুকে পোষ্ট দিলে কোন লাইক, কমেন্ট পড়েনি। লিখলে আমার শুধু প্রাকটিস করা হবে, এই পর্যন্তই শুধু।"

আমাদের বর্তমানের রুটিনের অন্তভুক্ত যে ক্লাস পরীক্ষা নেই, সুতরাং ক্যাম্পাসে না গিয়ে রুমে থাকাটাই উত্তম। শুধু শুধু হেটে ক্যালরি নষ্ট করে ফাকা ক্লাসরুম, চিৎকার-চেচামেচি, অভাব, সংকট, শিক্ষক-উপাচার্যের নোংরা রাজনীতি দেখতে ভালো লাগে না। তারচেয়ে বরং আব্বার পাঠানো টাকা খেয়ে আর ঘুমিয়ে শরীর-স্বাস্থ্য মজবুত করি।

দীর্ঘ ৪ মাস হলো বাড়ি যাই না। কেন যেন আর বাড়ি যেতে ইচ্ছা করে না। গেলেই প্রশ্ন করবে আর কতদিন আছে তোর? বাবা-মা দুইজন-ই অশিক্ষিত। তাই যা বুঝাই সেটা বুঝে। বলি যে রাজনৈতিক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু সমস্যা থাকায় ৪ বছরে শেষ হবে না, আরো ৬ মাস বেশি লাগবে। এতোদিন অনেক মিথ্যা কথা বলে ফেলেছি গুরুজনদের সাথে। আর কেন যেন বলতে ইচ্ছা করে না। বাড়ি থেকে ফোন দিলেও কথা বলতে ইচ্ছা করে না। যখনি জিজ্ঞেস করবে, "আর কতদিন?" তখনি তো মুখটা চুপসে যাবে। তারচেয়ে বরং মেসের বদ্ধ কুটিরে পড়ে থাকাই উত্তম। কেউ দেখতেও আসে না কেমন আছি, কিংবা কি করছি। খাই-না খাই আমার মেস-ই ভালো। তবে সেটা আর কতদিন সেটা এখন সময়ের অপেক্ষা মাত্র। ৪-৪.৫ বছর পাড় হলেই তো বাবা বলবেন আর পাড়ছি না বাবা, এখন তুই কিছু কর। বাবার ও তো বয়স বাড়ছে, ছোট ভাই-বোন আছে। ওরাও পড়াশুনা করে, ওদের লেখা পড়ার খরচ চালাতে হয় এই একজন কৃষকেই।

যেখানে স্বপ্ন দেখতাম আমি অনার্স শেষ করে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের হয়ে যাব, তখন ছোট বোনটা বিশ্ববিদ্যালয়ে হয়তো প্রবেশ করবে। ছোট ভাই-বোনের পড়ালেখার খরচ তখন আমি-ই চালাতে পারব। কিন্তু আশায় গুড়ে-বালি। ছোট বোনটাকে এবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করিয়ে দিলাম। হয়তোবা ৩.৫ বছরেই ওর অনার্স শেষ হয়ে যাবে। ছোট ভাইটাও এতদিনে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করবে। কিন্তু তখনো আমার অনার্স শেষ হবে কিনা সন্দেহ। আর শেষ হলেও কি চাকুরীর বাজারে গিয়ে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম, যশ, খ্যাতি আর ঐতিহ্য আর লেখাপড়ার মান বিবেচনা করে কোন প্রতিষ্ঠান আমাদের নিয়োগ দিবে কিনা সন্দেহ। এএমতাবস্থায় একজন প্রান্তিক কৃষককেই তার তিন ছেলেমেয়ের যাবতীয় খরচ নির্বাহের চাপ সামলাতে হবে তার সামান্য পুজি দিয়ে।

আমার এলাকায় একটা স্বনামধন্য প্রাইভেট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে। যার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক একদা বলেছিলেন, "গরীব মানুষের পড়াশুনা নাই।" যেহুতু আমার বাবার সেই সামর্থ্য ছিল না যে তার ছেলেকে সেই স্কুল এন্ড কলেজে পড়ানোর, সেহুতু সারাজীবন সরকারি স্কুল এন্ড কলেজে অধ্যয়ন করেই আজ এই সরকারি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে পড়ার যোগ্যতা অর্জন করতে হয়েছে। উত্তরবঙ্গের এই সরকারি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে যারা অধ্যয়ন করে, তাদের ৯৫ ভাগই মধ্যবিত্ত, নিম্নমধ্যবিত্ত কিংবা গরীব পরিবার গতে আগত। এলিট ফ্যামিলি থেকে আগত শিক্ষার্থী হয়তো কমই আছে যাদের সেশনজটের মতো চাপ সহ্য করার মতো ক্ষমতা রয়েছে কিংবা ক্রেডিট ট্রান্সফার করে বহিঃবিশ্বের হাভার্ড অথবা এমআইটিতে পড়ার মতো সামর্থ্য আছে। হয়তো এটাকে মনে হতে পারে জনৈক ইমরান নামক বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া শিক্ষার্থীর ব্যাক্তিগত সমস্যা, যার মূল কারন সেশনজট। যদি তাই মনে হয় তবে জরিপ করলে দেখা যাবে বর্তমান বেরোবিতে অধ্যয়নরত ৬০০০ শিক্ষার্থীর মধ্যে সবারই এই জাতীয় কিছু কাহিনি খুজে পাওয়া যাবে। সুতরাং একজন ইমরানকে মূল্যয়ন না করে, সমগ্র বেরোবির শিক্ষার্থীদের মূল্যয়ন করাটাই শ্রেয়।

"বনসাই।" শব্দটির সাথে আমরা প্রান্তিক শ্রেনীর মানুষ খুব বেশী পরিচিত না হলেও অভিজাত শ্রেনীর মানুষজন একটু বেশিই পরিচিত। আমার বাবা হয়তো বনসাই শব্দটি জানেন-ই না, তবে অভিজাত শ্রেনীতে বনসাই অনেক বেশি সমাদৃত। একটা ৫০ বছরের বট গাছকে বাচিয়ে রেখে ১ ফুট উচ্চতা দেয়াটাই অভিজাত শ্রেনীর আনন্দ বা শখের বিষয়। হয়তোবা এই জন্যই আমাদেরকে বনসাই বানিয়ে বেশ মজা পাচ্ছেন উনারা। বনসাইরা কখনো বেড়ে উঠতে পারে না, তারা ডালপালা গজিয়ে পথিককে ছাড়া দিতে পারে না, ঝড়-বাদল থেকে পরিবেশকে রক্ষা করতে পারে না, তারা শুধু শখের বা খেলার বস্তু হয়েই থাকতে পারে। আমরা বেরোবির বনসাই। আমাদের কোন স্বপ্ন থাকতে পারে না, আমাদের ভবিষ্যৎ থাকতে পারে না।।

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১১:৫৭

মু. মিজানুর রহমান মিজান (এম. আর. এম.) বলেছেন: প্রসঙ্গহীন লেখাটা খুব সুন্দর

৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ২:০৬

ন্যানো ব্লগার ইমু বলেছেন: ধন্যবাদ ভাইয়া। :)

২| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১২:৫০

ডি মুন বলেছেন: লেখাটা মোটেই অপ্রাসঙ্গিক মনে হয় নি আমার কাছে।

চমৎকার লেখা।
আসলে নোংরা রাজনীতির ঘেরাটোপে পড়ে আমাদের অনেক শিক্ষার্থীর জীবনই বিপর্যস্ত। জানিনা এই অবস্থার উত্তোরণ কবে হবে!!!

ভালো থাকুন।
আপনার লেখা ভালো লাগল
শুভেচ্ছা।

৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ২:১২

ন্যানো ব্লগার ইমু বলেছেন: এভাবেই হয়তো বিশ্ববিদালয় পড়ুয়াদের স্বপ্নের অপমৃত্যু ঘটে, যা এখন আমি বাস্তবতার সহিত পরখ করে চলছি।

যাই হোক ভাইয়া আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ। ভালো থাকুন :)

৩| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১:০২

তাহের অন্তরা বলেছেন: লেখাটিকে অপ্রাসঙ্গিক কেন বলছেন ভাইয়া।আমরা সবাই আসলে তাদের জন্য বনসাই। কিন্তু তারা জানে না আমাদের নিয়ে ছিনিমিনি খেলার পরিণতি কতটা অস্বাভাবিক হতে পারে।

৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ২:১৪

ন্যানো ব্লগার ইমু বলেছেন: একান্তই ব্যাক্তিগত কিছু তথ্যের ভিত্তিতে লেখা তো, তাই অপ্রাসঙ্গিক বলে আখ্যা দিয়েছি।

যা হোক জানিনা কবে এই বনসাইকরন প্রকৃিয়া থেকে উত্তরন পাবো। :(

৪| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৫ ভোর ৬:৫২

তাহের অন্তরা বলেছেন: আশা করি খুব শীঘ্রই :D :D :D :D :D :D

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.