নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

হিমু হবার ইচ্ছে আমার নেই, ইমু হয়েই না হয় থাকলাম।হরহামেসা খরচ হওয়া বড় নোটটগুলি না হয় হতে পারলাম না, হৃদয় নামক মাটির ব্যাংকে না হয় জমা হলাম কিছু খুচরো পয়সা হয়ে।

ন্যানো ব্লগার ইমু

ঘর পোড়া গরু হয়েও সিঁদুরে মেঘকেই ভালবাসি।।

ন্যানো ব্লগার ইমু › বিস্তারিত পোস্টঃ

"বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কালো রাত্রিঃ একজন ইমু যখন সচক্ষে প্রত্যক্ষদর্শী"

০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১১:৩৩

গল্প নয়। একটু বাস্তব ঘটনা বলি আজ। হয়তো অনেকেই অনেক মতাদর্শী হতে পারেন। কারন বেরোবিতে তো দল, মতেই শেষ নেই। এই ন্যাক্কারজনক ঘটনা বলতে ইচ্ছা করছে না, নিজেকে খুবই ছোট আর লজ্জিত লাগছে। গতকাল রাতে ঘটে যাওয়া কাহিনিটা নিশ্চয় কোন গর্ব করে বলার মতো কিছু নয়। তারপরেও সত্যটা জানাতে লিখলাম। যেহুতু আমি একজন সচক্ষে প্রত্যাক্ষদর্শী তাই না শেয়ার করে পারছি না।

গত পরশু অর্থনীতি বিভাগের ১ম ব্যাচের ছাত্র শাহজাহান ভাই বেরোবির সংকট নিরসনে হয়তো একটু আবেগের বশেই ঘোষনা দিয়ে ফেললেন যে একাই আমরন অনশনে নামবেন তিনি। ব্যাক্তিগতভাবে পরিচয় থাকায় উনাকে আমি আগে থেকেই চিনতাম এবং বড় ভাই হিসেবে শ্রদ্ধা করতাম। উনার কর্মসূচি অনুযায়ী যথারীতি গতকাল বিকেল ৪ টায় উনি অনশনে বসে পড়লেন। বিকেলে ক্যাম্পাসে ঘুরতে যাবার সুবাদে উনার কর্মসূচি পর্যবেক্ষণ করে সন্ধ্যায় রুমে আসলাম। উনার সাথে বিকেলে অনেক কয়েকজনকে দেখে মনে একটু আশার সন্চ্ঞার জাগল। ভাবলাম এবার হয়তো কিছু একটা হতে যাচ্ছে। রাত ৮ টার দিকে ফোন পেলাম যে, শাহজাহান ভাইকে নাকি কিছু বহিরাগত লোক এসে প্রক্টরিয়াল বডির সামনে ক্যাম্পাস ত্যাগের হুমকি দিয়েছেন। আগ্রহবশত ক্যাম্পাসে ছুটে গেলাম। গিয়ে বিস্তারিত জানলাম যে, প্রক্টরিয়াল বডি লিখিত অনুমতি দেয়া সত্ত্বেও এখন আর নিরাপত্তাজনিত কোন দায়ভার গ্রহন করতে চাচ্ছেন না। আমি যাবার পরপরই বেরোবি'র পুলিশ ফাড়ির এস.আই শফিক সাহেব এসে সেই একই কথা শাহজাহান ভাইকে জানিয়ে গেলেন। যেহুতু নিরাপত্তার প্রশ্নটা রয়েই গেল, তাই অনেক শিক্ষার্থীই ক্যাম্পাসে রাত্রি যাপনে একটু দ্বিমত প্রকাশ করলেন। কিন্তু শাহজাহান ভাই তার সিদ্ধান্তে অনড় রইলেন। এমনিতেই বেরোবি'র সমার্থক শব্দ "নাটক" বলা হয়ে থাকে, তাই আর তিনি কোন নাটকীয়তা নয়, জীবনের ঝুকি নিয়েই তার সিদ্ধান্তে অটুট থাকলেন। যথারীতি রাত্রি যাপনের ব্যাবস্থা করা হতে লাগল। নিজজের বিবেকে বড় বেশী বাধা দিল যে একজন নীরিহ মানুষকে ফেলে কিভাবে যাই? আমার জানা মতে সে তো কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গেও যুক্ত নয়, কিংবা কোন শিক্ষক সংগঠনের মুখপাত্র নয়। তবে কেন লোকটা একা রাত্রিযাপন করবে? হয়তো এই আদর্শ আমাদের আরো কিছু অসাধান শিক্ষার্থী (সাধারন শিক্ষার্থী বললাম না কেন তা হয়তো বলে বুঝাতে হবে না) শাহজাহান ভাইয়ের নিরাপত্তাজনিত কারনেই হোক, আর বড় ভাইয়ের প্রতি শ্রদ্ধাবোধের কারনেই হোক তার সাথে থাকতে সহমত প্রকাশ করলাম। যেহুতু শীতের রাত্রি। সেহুতু খোলা মাঠে কাটাতে ভারি কাপড়ের প্রয়োজন আছে। সেই প্রয়োজনবোধের তাগিদেই অনেকে মেসে গিয়ে লেপ, কম্বল, কাথা, বালিস আনতে গেল। তখন রাত্রি প্রায় ১২ টা। অনেকেই মেসে গিয়ে কাপড় আনতে যাওয়ায় সংখ্যায় আমরা কম ছিলাম। আমরা হয়তো কেউ ফেসবুক, কেউ গল্প করতেছিলাম। আমাদের দুই সহকারী প্রক্টর, এসআই শফিকসহ ৪-৫ জন কনস্টেবল ক্যাম্পাসের মসজিদের নিকট রওনা দিল। ঠিক তার ২ মিনিট পর মূল ফটকের দিকে তাকাতেই কিছু অকথ্য গালিসহকারে আমাদের দিকে কিছু অপরিচিত মুখ তেড়ে আসতে লাগল। পরিস্থিতি অনুমান করে প্রানপণ দৌড় শুরু করলাম। কারন আমরা ৮-১০ জন তাদের ৪০-৫০ জনের কাছে কিছুই না। অল্প-বেশী সবাই আহত হয়ে প্রসাশনিক ভবনের ছাদে আত্মগোপন করলাম। আমাদের কেউ কেউ টিচার্স্ ডরমেটরীর দিকে দৌড়ে গেলে চিৎকার চেঁচামেচি শুনে মোস্তাফিজুর রহমান রিপন স্যার এবং তরিকুল ইসলাম স্যার বের হয়ে এসে কেচি গেট খুলে ছাত্রদের ভিতরে ঢুকিয়ে নেন। তারপর বাধা দেয়ায় উনাদের দু'জনকে বেদম মারধর করেন। যেহুতু আমরা কয়েকজন প্রসাশনিক ভবনের ছাদে অবস্থান করছিলাম, তাই ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে যা যা ঘটছিল তার সবটাই আমাদের নজর এড়িয়ে যেতে পারছিল না। পুলিশ চুপচাপ দাড়িয়ে থেকে শুধু অযথাই বাশি ফুকে যাচ্ছেন। কিংবা মন্চ ভাঙ্গা সবই। যখন গ্লাসগুলো ভাংগতে থাকেন, তখন পুলিশ শুধু বলে "ঐ ওগুলা ভাঙ্গিস না।" বন্ধুদের ফোন দিয়ে উদ্দার করতে বললেও পুলিশ তাদের ভিতরে প্রবেশ করতে দিচ্ছে না। এদিকে শুনতে আমরা উদ্ধার পাবার পূর্বেই শুনতে পেলাম সংবাদ মাধ্যমে এসেছে "জনৈক শিক্ষকের ডরমেটরীতে হামলা, ১ পুলিশ আহত।" কিছুই করার নেই। মিডিয়া বলে কথা। যে খাতটি সবচেয়ে পক্ষপাত দোষে দুষ্ট। কি নিয়ে কি হলো, আর সেটাকে কোন খাতে প্রবাহিত করা হলো। আরেকটি কথা না বললেই নয়, ছাদ থেকে এসআই জনাব শফিক সাহেবের কন্ঠে ভেসে আসছিল - "বর্তমান দেশের যে পরিস্থিতি, তাতে এগুলাকে ধরে আইএস জঙ্গি হিসেবে চালিয়ে দেয়া উচিৎ।" হায়রে!! আমরন অনশন!! একজন গেল সমস্যা সমাধান করার জন্য সমঝোতা করতে, হয়ে গেল আইএস জঙ্গি। যাই হোক পরবর্তীতে বড় ভাই, বন্ধুরা সংগঠিত হয়ে আমাদেরকে উদ্ধার করে নিয়ে হাসপাতালে প্ররন করে, যেখানে সবাই কমবেশী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। কিছু প্রাথমিক চিকিৎসায় সবাই মুক্তি পেলেও শাহজাহান ভাই, এবং শিক্ষকদ্বয়েরর অবস্থা গুরুতর। এই ছিলো ওহি যুগের রাতের অন্ধকারে অহি নাযিলের কাহিনি। মিথ্যা বলেছি কিংবা আমার কথাগুলো পক্ষপাত দোষে দুষ্ট কিনা সেটা আমরা কয়েকজন আর উপরওয়ালাই বেশী ভালো করে জানেন। কি আর করার আছে আমাদের? তার চেয়ে বরং নীল, লাল, হলুদ, কমলা, আসমানী দলের সাপোর্ট নিয়ে আন্দোলন করাটাই কি ভালো ছিলো না? ব্যাক্তিগত কিছু স্বার্থও হাসিল হতো, কিছু মানুষের সুপাত্র হিসেবেও বিবেচনা হতো, আর অন্ততপক্ষে জান হাতে নিয়ে মৃত্যুদৌড় দিতে হতো না। যা হোক "ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা চাই" কিংবা "প্রসাশন নিরব কেন?" এসব শ্লোগান দিতে চাচ্ছি না। আর এর সাথে কারা জড়িত বা জড়িত থাকতে পাড়ে আশা করি সেটা বোঝার বয়স আমাদের সবারই হয়েছে। এখন বাকিটুকু বেরোবিয়ানদের বিবেকের নিকট ছেড়ে দিলাম।।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১১:৫৩

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: বুঝলাম|এটাই আমাদের দেশে হয়| কেউ একটু প্রতিবাদ করলেই লাঠি ঢুকবে পাঁচায়| কিন্তু তিনি কেন প্রতিবাদে নামলেন,কি কারণে ?এটা একটু পরিষ্কার করে বলুন

০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১২:১০

ন্যানো ব্লগার ইমু বলেছেন: ভাই আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠালগ্নেই ভিসি বিরোধী আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের উদ্ভুদ্ধ করে কিছু শিক্ষক তাদের ব্যক্তিস্বার্থ হাসিল করতে যেভাবে শিক্ষার্থীদের ইমোশন কাজে লাগিয়ে, নিজেদের স্বার্থ হাসিল করেছে তাতে এমন ভাবে শিক্ষার্থীদের ঐক্যবদ্ধ হবার ক্ষমতাটাকে চূর্ণ্বিচূর্ণ করেছে। এক কধায় বললে ইউনিটির মাজা ভেঙ্গে দিয়েছে। বাঘ দেখে বেরোবির পোলাপাইন যতটা ভয় না পায়, তার চেয়ে বেশী ভয় পায় আন্দোলনকে। মুখ বুজে এভাবে আর কতদিন? তাই তিনি একাই ঘোষনা দিয়েছিলেন যে কেউ না আসলে আমিমি একাই থাকবো

২| ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১:৫৪

দ্য েস্লভ বলেছেন: পত্যেক সরকারের প্রধান দায়িত্ব হল সকল ক্যাম্পাস দখল করা। এরপর তাদের এক শ্রেণীর শিক্ষক,ছাত্র গ্রুপ রয়েছে,তারা হল রাজা বাদশা। অথচ শিক্ষাঙ্গন হবে শিক্ষার জন্যে। শিক্ষকরা শিক্ষা দিবেন আর ছাত্ররা শিখবেন। এখানে অবস্থা ভিন্ন। ঘটনা দু:খজনক

৩| ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১২:০৬

অক্টোপাস পল বলেছেন: )বেরোবির জন্য দুঃখ হয়। অথচ এই বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য আন্দোলন করতে গিয়ে পুলিশের লাঠির আঘাত সহ্য করেছিলাম।

ভালো থাকবেন। ভালো রাখবেন আপনাদের ক্যাম্পাস।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.