নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

হিমু হবার ইচ্ছে আমার নেই, ইমু হয়েই না হয় থাকলাম।হরহামেসা খরচ হওয়া বড় নোটটগুলি না হয় হতে পারলাম না, হৃদয় নামক মাটির ব্যাংকে না হয় জমা হলাম কিছু খুচরো পয়সা হয়ে।

ন্যানো ব্লগার ইমু

ঘর পোড়া গরু হয়েও সিঁদুরে মেঘকেই ভালবাসি।।

ন্যানো ব্লগার ইমু › বিস্তারিত পোস্টঃ

"গণতন্ত্রের সূতিকাগার ও ভাসমান যৌনতা"

১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৯:৪০

হুমায়ুন আহমেদের অনেক বইয়ে অনেক জায়গাতেই প্রসঙ্গক্রমে রমনা পার্ক এবং সংসদ ভবনের পাশের রাস্তা, সারোয়ার্দী উদ্যান, জিয়া উদ্যানের কথা উঠে এসেছে। যেখানে উল্লেখিত হয়েছে রাস্তার যৌনকর্মীদের ভাসমান জীবনের খন্ডচিত্র। মূলত বইগুলি পড়ে অনেকটাই আগ্রহ জন্মেছিল সত্যি কি এই জায়গাগুলিতে এমন কিছু ঘটে থাকে? তাছাড়া পত্র-পত্রিকাতেও মাঝে মাঝে প্রতিবেদন চোখে পড়ে এই সমস্ত এলাকাগুলির নাম। বাস্তবতাকে পরখ করতে গিয়েছিলাম সেই সারোয়ার্দী উদ্যানে, যেখানে জন্ম নিয়েছিল বাঙ্গালি জাতির নবজাগরন।



কিছুদিন আগের কথা। ছোট বোনের বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা দেবার জন্য ওর সাথে ছোটাছুটি করতে হচ্ছিল। সেই সুবাদে বেশ কয়েকদিন ঢাকায় ছোটাছুটি করতে হয়েছে। ওর পরীক্ষা দেয়ানো ছাড়া আমার হাতে তেমন কোন কাজ ছিল না। তাই বিকেল হলে চাচার বাসায় বসে থেকে বিরক্ত না হয়ে বেরিয়ে পরতাম ঢাকাস্থ বন্ধুদের সাথে দেখা করতে। সেদিন বিকেলে এক বন্ধুকে ফোন দিতেই বললো সারোয়ার্দী উদ্যানে আয়, গল্প করি। ভাবলাম ভালোই হবে তাহলে, উদ্যানটাও দেখা হবে, সংসদ ভবনটাও দেখা হবে। যথারীতি সন্ধ্যা নামার আগ দিয়ে দু'জনের দেখা হল। দু'জন ভিতরে ঢুকতেই পাবলিক প্লেসে অশ্লীল কর্মে লিপ্ত অনেককেই দেখতে পেলাম। বন্ধুকে জিজ্ঞেস করতেই বললো "তুই ও করবি নাকি কিছু? ইচ্ছে হলে বল।" তখনি বিস্তারিত শুনলাম ওর কাছে। এর মাঝে যারা এসব কর্মে লিপ্ত, তাদের ৮০ ভাগই যৌনকর্মী। আমরা ভিতরে ঢুকতেই দিনের আলো কমে আসছিল। দিনের আলো কমে যাবার সাথে সাথেই যেন উদ্যানটি আরো যৌবনা হয়ে উঠতে লাগল। কোথা থেকে যেন দলে দলে মেয়েরা ঘুরতে শুরু করল। অন্ধকারের মাঝে দিয়ে যেতেই শরীরের সাথে ঘেসে ঘেসে কিছু মেয়ে চলে যেতে লাগল, একটু অসাবধানতাবসত চলতে গেলেই হয়তো ধাক্কা লেগে যাবে।



যা হোক, সন্ধ্যা নামতেই জিয়া উদ্যানে গেলাম। জিয়ার মাজার শরীফ পাড় হতেই পুরো উদ্যানের মাঝে মাঝে নিয়ন বাতি জ্বরে উঠল। একটু এগুতেই একজন মহিলা এসে বলল, "মামা বসবা না?" কথাগুলি বুঝতে পারলাম না। তার জবাব না দিয়েই আমরা দু'জন চলে আসলাম। পরে আমার বন্ধু কথাটির মানে বুঝিয়ে বললো। তখন নিজেকে খুবই লজ্জিত লাগলো যে, একজন মহিলা আমাকে এই কথাগুলি কিভাবে বললো? ভিতরে এসব দেখে কেমন যেন দম বন্ধ হয়ে আসতেছিল। তাই সন্ধ্যা ৭ টার দিক বের হয়ে আসলাম ভিতরে থেকে। সংসদ ভবনের উত্তর পার্শ্বের রাস্তায় দাড়িয়ে দু'জন একটু প্রানভরে নিশ্বাস নিলাম। তারপর আমার বন্ধু বললো চল এবার হাটি, হেটে হেটে রাস্তার পাশে কি হচ্ছে সেটা দেখাই। জিয়া উদ্যান আর সংসদ ভবনের রাস্তার মাঝে লেকটির পাশের বসার জায়গাতে রাত নামা সত্ত্বেও অনেক জুটি দেখতে পেলাম যারা অশালীন ভঙ্গিতে বসে আসে। প্রথমে তাদেরকে দেখে মনে হলো যে তারা হয়তো বেড়াতে এসেছে। কিন্তু ক্রমেই রাত নামতে বুঝতে পারলাম যে এখানের কাহিনিটা ভিন্ন। কিছু মহিলা দাড়িয়ে আছে বোরকা পড়ে, কেউ কেউ আবার আবেদনময়ী ভঙ্গিতে দাড়িয়ে রয়েছে। লক্ষণীয় যে, সন্ধ্যা বেলা একজন মহিলাকে দেখে ভেবেছিলাম উনারা হয়তো বেড়াতে এসেছেন। সাথে যে পুরুষটিকে দেখেছিলাম সেটা হয়তো উনার স্বামী আর ৪-৫ বছরের পিচ্চি মেয়েটা উনাদের সন্তান। কিন্তু রাত ৮:৩০ টার দিকে মহিলাটিকে আবারো সেই একই স্থানে দেখতে পেলাম অন্য এক যুবকের সাথে, শুধু পরিবর্তিত হয়নি পিচ্চি মেয়েটা। সবচেয়ে যে বিষয়টি বুকে এসে বিধলো সেটা ঐ পিচ্চি মেয়েটার কর্মকান্ড। ও হয়তো বুঝতে পারছে ওর মা কি করছে, মা যখন নতুন নতুন মানুষের সাথে লেকের পাড়ে অশালীন কাজ করছে, তখন মেয়েটি ওর মায়ের সাথে গা লাগিয়ে বসে আছে, হয়তোবা একটা সময় মেয়েটিও বুঝবে ওর মায়ের দুঃখটা, ততদিনে হয়তো মেয়েটিও মায়ের মতো লেকের পাড়ে খদ্দের ধরতে ব্যস্ত।



যা হোক, সেদিন রাত ১০ টা পর্যন্ত ছিলাম সেখানে। সংসদ ভবন এলাকার রাস্তায় গাড়ি পার্কিং নিষেধ। তাই ঐ রাস্তায় মানুষের আনাগোনাও একটু কম। দুই একটা গাড়ি দেখলাম অবৈধভাবে স্ট্যান্ড করে দাড়িয়ে আছে, যার মাঝে থেকে আমরা থাকাকালীন সময়েই কয়েকজনকে মহিলাকে বের হয়ে আসতে দেখলাম। এগুলোই হয়তো সংসদ ভবন এলাকার "জাম্পিং কার"। আরেকটা বিষয় লক্ষনীয়, যে সকল পুরুষদের দেখলাম এই কাজে লিপ্ত তার বেশীরভাগই হবে একটু বয়স্ক, যারা কৌশর আর যৌবন পাড় করে পূর্ণাঙ্গ জীবনে পা রেখেছেন। হয়তোবা তাদের বেশীরভাগই বিবাহিত। ঘরে বউ রেখে এসে সস্তায় রাস্তার পাশে এই যৌনক্রীয়া চালিয়ে যাচ্ছেন। কেউ কেউ আবার এখানে এসে ভাড়া করে নিয়ে যাচ্ছেন হয়তো কোন আবাসিক হোটেলে কিংবা রফিকের ফ্লাটে। নেশা, ড্রাগের কথা না হয় আজ না-ই বা বললাম।



রাত অনেক হয়েছে। জিনিসগুলো দেখে মাথাটা কেমন যেন করছিল। বিশেষত, পিচ্চি মেয়েটি এবং তার মায়ের কাহিনিটা দেখার পর থেকে। রাস্তা ধরে হেটে এসে মেইন রোডে এসে বাসে উঠলাম। বিকেল থেকেই ঝিরিঝিরি বৃষ্টি হচ্ছিল। বাসের খোলা জানালাটা দিয়ে মাথা বের করে দিয়ে বাতাস খাচ্ছিলাম আর ভাবছিলাম, এই তো সেই সারোয়ার্দী উদ্যান যেটা অতীতে রেসকোর্স ময়দান নামে পরিচিত ছিল তাই না? যেখানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান দিয়েছিলেন ৭ই মার্চে অবিনাশী ভাষন, যে ডাকে সাড়া দিয়েছিল লাখো বাঙ্গালী। এইখানে থেকেই তো এসেছিল মুক্তির ডাক। আর এই যে, জিয়া উদ্যান, এরই মাঝে তো শুয়ে আছে মুক্তিযুদ্ধের সময়ে জেড ফোর্সের প্রধান এবং অন্যতম সেক্টর কমান্ডার জিয়াউর রহমান। এই সেই সারোয়ার্দী উদ্যান, যেখানে থেকে উদ্ভোদয় ঘটেছিল গণতন্ত্র। আর এইতো জিয়া উদ্যানের পাশের এই সুদর্শন ভবনটি যেটা বাংলাদেশের সংসদ ভবন। যেখানে থেকে পরিচালিত হয় বাংলাদেশের রাষ্ট্র ও সরকার ব্যাবস্থা। লুই আই কান-এর স্থাপত্যটি-ই বাংলাদেশের গণতন্ত্রের প্রাণকেন্দ্র। আর এই গণতন্ত্রের সূতিকাগার ও সংসদীয় গণতন্ত্রের প্রাণকেন্দ্রের মাঝেই গড়ে উঠেছে যৌনতার এক আদিম খেলা। লজ্জা! লজ্জা! লজ্জা!!

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৯:৫৪

এ কে এম রেজাউল করিম বলেছেন:
পড়লাম, আর কি-ই-বা মন্তব্য করবো ।
আপনি দেশবাসীদের এ দুখজনক বিষয় অবহিত কলেন ।

দেশের সকল মানুষদের সুভ বুদ্ধি উদয় হোক এবং আল্লাহ সবাইকে হিদায়েদ করুন কামনা করি ।

২| ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৯:৫৫

আজমান আন্দালিব বলেছেন: সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পাশে সংসদ ভবন কোথায় পেলেন?

১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১২:২৭

ন্যানো ব্লগার ইমু বলেছেন: দুঃখিত। ভূলবশত স্থানের নামটি গুলিয়ে গিয়েছিল। ভুলটি ধরিয়ে দেবার জন্য ধন্যবাদ। সংশোধন করা হয়েছে। ভালো থাকবেন।।

৩| ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১০:১৮

হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
এটিও পড়ুন Please read-

মানবজমিনের জঘন্য রিপোর্টিং, একট ডেটিং স্পট কে বলা হল বেশ্যালয়

৪| ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১:৪৯

রােশদ সুলতান তপু বলেছেন: আমার কমেন্টটা মুছে ফেলা হয়েছে। বলেছিলাম জায়গাটার নাম ঠিক করে লিখতে- জায়গাটার নাম হবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান- সারোয়ার্দী নয়। এটুকু শ্রদ্ধাবোধ থাকাটা জরুরী।

আর ঢাকাকে নতুন করে চিনতে হলো লেখকের কাছে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.