নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

হিমু হবার ইচ্ছে আমার নেই, ইমু হয়েই না হয় থাকলাম।হরহামেসা খরচ হওয়া বড় নোটটগুলি না হয় হতে পারলাম না, হৃদয় নামক মাটির ব্যাংকে না হয় জমা হলাম কিছু খুচরো পয়সা হয়ে।

ন্যানো ব্লগার ইমু

ঘর পোড়া গরু হয়েও সিঁদুরে মেঘকেই ভালবাসি।।

ন্যানো ব্লগার ইমু › বিস্তারিত পোস্টঃ

"বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ঃ সংকটাপন্ন শিক্ষাব্যবস্থা, অনিশ্চিত ছাত্রজীবন"

১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৯:৪৬

১।

দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে উচ্চ শিক্ষা গ্রহনের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ হিসেবে বিবেচনা করা হলেও আজ দেশের নবীনতম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে আত্মপ্রকাশ করা উত্তরবঙ্গের প্রবেশমুখে অবস্থিত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠালগ্ন হতেই নানা সমস্যার সম্মুখীন হয়ে চলছে। বিভিন্ন সরকারের আমলে প্রতিশ্রুতিস্বরুপ উত্তরবঙ্গের দ্বারপ্রান্ত রংপুরে একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে ওঠার কথা থাকলেও অবশেষে ২০০৮ সালের ১২ অক্টোবর তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান ড. ফখরুদ্দীন আহমদ তার বাস্তবায়ন ঘটান। প্রতিষ্ঠালগ্নে প্রতিষ্ঠানটি রংপুর টিচার্স্ ট্রেনিং কলেজের কয়েকটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে প্রায় ৩০০ জন শিক্ষার্থী, ৬ টি বিভাগ, ৩ টি অনুষদ ১২ জন শিক্ষক এবং অল্প কিছু সংখ্যক কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়ে যাত্রা শুরু করলেও ক্রমেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির বিভাগ, অনুষদ, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা কর্মচারী বেড়ে যেতে লাগলে স্থায়ী ক্যাম্পাসের প্রয়োজন পরে। যার ফলশ্রুতিতে ২০১০ সালে তৎকালীন ও বর্তমান সরকার প্রধান দেশনেত্রী শেখ হাসিনা কারমাইকেল কলেজের জমি অধিগ্রহনপূর্বক স্থায়ী ক্যাম্পাসের উদ্ভোদন করেন। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটির জন্মলগ্ন হতেই নানা রকম অনিয়ম, অব্যববস্থাপনার অভিযোগ উঠেই চলছে। যার ক্রমাগত ধারা আজও বিদ্যমান। যার ফলাফলস্বরূপ আজও অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি করে যাচ্ছে বিভিন্ন মহল। যেখানে শিক্ষা ব্যবস্থাকে একটি দেশের উন্নয়নের মেরুদন্ড হিসেবে বিবেচনা করা হয়, সেখানে আমাদের উচ্চ শিক্ষার অন্যতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ক্রমেই মেরুদন্ডহীন হয়ে পরছে। নানা অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা, আর সামাজিক ও রাজনৈতিক কোন্দলে শিক্ষার মানদন্ড ক্রমশ্র নিম্নমুখী হয়ে পরছে।



২।

এক বুক ভর্তি আশা দ'ুচোখ ভর্তি স্বপ্ন নিয়ে নিয়ে রংপুরে এসেছিলাম। নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবো, নতুন ক্যাম্পাস, নতুন ভবন, নতুন ক্লাস রুম, নতুন চেয়ার-টেবিল, সদ্য শিক্ষাজীবন শেষ করে শিক্ষকতায় প্রবেশ করা শিক্ষক সব কিছু মিলিয়ে অন্যরকম এক মজা আর ভালোলাগা কাজ করতো সবসময়। প্রথম দিকের ব্যাচের শিক্ষর্থী হবো আমরা। ক্যাম্পাসটাকে আমরা আমাদের মতো করে গড়িয়ে নিবো। যদিও জানতাম নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক সীমাবদ্ধতা থাকবে। হয়তোবা প্রথমেই হলে সিট পাবো না কিংবা পরিপূর্ন মেডিকেল সুবিধা পাবো না কিংবা পরিবহন সংকট থাকবে; বাসে দাড়িয়ে থেকে যেতে হবে অথবা ক্লাস শেষ করে ক্লাসরুম ফাকা করে দিতে হবে এইসব মেনে নিয়েছিলাম। পরিবারের বড়দের যেমন কিছুটা উৎসর্গ করতে হয় ঠিক তেমনটাই না হয় আমরাও করলাম প্রথম দিকের ছাত্র হয়ে। সবকিছুই তো ঠিকঠাক চলছিল। কিন্তু আজ এ অবস্থা কেন? বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির প্রথম বছর কাটতে না কাটতেই শুনলাম যে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি নাকি মহাদুর্নিতিবাজ। সে নাকি বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নের এবং অবৈধ নিয়োগ প্রকিয়ার মাধ্যমে যাবতীয় অর্থ আত্নসাৎ করে বসে আছে। যে করেই হোক তাকে বিতাড়িত করতে হবে। সুতরাং সবাই উঠে পরে লাগলাম। এবং এক পর্যায়ে আমরা সার্থক হলাম। জলিলীয় যুগের অবসান হলো। ভেবেছিলাম ক্যাম্পাস তো এখন দুর্নীতির রাহুর গ্রাস থেকে মুক্ত, তাহলে তো এখন আমরা অনাবিল সুন্দর একটা ক্যাম্পাস পাচ্ছি। হ্যা। অবশ্যই তা পেয়েছি। সপ্তাহে দুইদিন করে ছুটি তো আর দূর্নীতিবাজ ভিসি এনে দিতে পারেনি। সপ্তাহে ৫ দিন ক্লাস, কি যে মজা। জীবনানন্দ দাশ ঠিকই লিখেছিলেন। আসলে কেউ-ই- কথা রাখে না। আর ক্ষমতা জিনিসটার সৃষ্টি সম্ভবত তার অপব্যাবহারের জন্য। যাই হোক, আমি আমাদের বর্তমান ভিসি স্যারকেও কোন দোষ দিচ্ছি না। কারন উনার কি করার আছে? দূর্নীতিবাজ ভিসি ক্ষমতা হস্তান্তরের পর উনি তো শুরু করেছিলেন মাত্র ৬৫ টাকা ব্যাংক ব্যালান্স নিয়ে। এই ব্যালান্স নিয়ে যে তিনি এতো বড় একটা প্রতিষ্ঠান চালিয়ে যাচ্ছেন তা পুরোই অকল্পনিয়। ৬৫ টাকা ব্যালান্স নিয়ে আজকের দিনে কি আর করা যায়? কয়েকবার তালা লাগানোর পর তার মধ্য থেকে তিনি যে একটা এ্যাম্বুলেন্সের ব্যাবস্থা করেছেন এই তো অনেক বেশী। যেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ৩৭২ কোটি টাকার বার্ষিক অর্থ পরিকল্পনা করতে হয়, সেখানে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়কে ৬৫ টাকার হিসেবের কাহিনি বার বার পুনরাবৃত্তি হয়।

ইউজিসির ৪০ তম বার্ষিক প্রতিবেদনে বাংলাদেশের ৩৩ টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালের শিক্ষার্থীদের মাথাপিছু সরকারের ব্যয় পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যাচ্ছে যে মাথাপিছু ব্যয়ের তালিকায় সর্বনিম্ন পর্যায়ে রয়েছে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়। কেন আমরা অবহেলিত, কেন আমাদের ইউজিসি থেকে বরাদ্দ করা হয় না, তা স্বয়ং ইউজিসি, ভিসি মহোদয় আর উপরওয়ালাই ভালো বলতে পারবেন। বেরোবি'র শিক্ষার্থীদের জন্য মাথাপিছু ১২২৪১.৫০ টাকা ইউজিসি বরাদ্দ করেছেন যা বাকি আটটি সাধারন ক্যাটেগরির বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে তুলনা করলে ২-১২ গুন পর্যন্ত কম।



৩।

বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারনত ছাত্র রাজনীতি কিংবা ছাত্র রাজনীতির কারনে ক্যাম্পাস বন্ধ কিংবা সেশন জটের মতো ঘটনা ঘটে থাকবে এটাই এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আমাদের বেরোবি'র বেলায় ঘটনাটি তার উল্টো। আজ আমাদের যে পিছিয়ে পরা এর জন্য কাকে দায়ী করবো? ছাত্র সংগঠনকে নাকি শিক্ষক সংগঠনকে? কেউ কি বলতে পারবেন যে ছাত্রদের জন্য ক্যাম্পাসে কতদিন ক্লাস পরীক্ষা বন্ধ থেকেছে? আর শিক্ষকদের জন্য তা কতদিন?



৪।

নতুন ভিসি স্যার যোগদানের পরপরই প্রেস ব্রিফিং-এ বলেছিলেন সেশনজট কমাতে ৪ মাসে সেমিস্টার শেষ করার কথা এবং বিভিন্ন সংকট নিরশনে আপ্রান চেষ্টা করে যাবেন। কথাগুলো শুনে কবির কথাগুলির কথা মনে পরেছিলো- "মেঘ দেখে কেউ করিস নে ভয়, আড়ালে তার সূর্য হাসে......" ভেবেছিলাম মেঘের পর এই বুঝি চকচকে সোনা ঝড়া রোদের দেখা পেলাম। কিন্তু কই সে প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন? ক্রমেই তো দেখছি সে সংকট আরো ঘনীভূত হলে চলেছে। লোক মুখে শোনা যায় ভিসি স্যার নাকি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য বিরামহীন কাজ করে চলেছেন। জানি না উনি কোথায় কাজ করছেন। তবে এটা মানি উনি একজন অত্যান্ত দূরদৃষ্টি সম্পন্ন মানুষ। উনার এই অভ্যন্তরীন দূরদৃষ্টির কারনেই বোধহয় উনার বাহ্যিক বিচক্ষণতা হারিয়ে ফেলেছেন। উনি তাই হয়তো বুঝতে পারছেন না ছাত্রদের সমস্যা কোথায়, কি জন্য এরা চেঁচামেচি করে? উনি যদি ইউজিসি'র একজন সম্মানিত সদস্য হয়েও যদি আমাদের স্বার্থ আদায়ে ব্যর্থ হন তবে উনি আমাদের অভিভাবক হিসেবেও ব্যর্থ বলে বিবেচিত। যাই হোক দীর্ঘ দিন পর আবার কিছু জনবল নিয়োগ হয়েছে। কিন্তু যে কয়েকজন শিক্ষক নিয়োগ হয়েছে তা কি আমাদের চাহিদা পূরনের জন্য যথেষ্ঠ? যতদূর জানি তাতে যা নিয়োগ হচ্ছে তার প্রায় সমপরিমান শিক্ষক উচ্চসিক্ষার জন্য ছুটিতে গিয়েছেন। ফলাফল তো সেই শূণ্যের কাছাকাছিই রইলো। কিন্তু আনুপাতিক হারে তো শক্ষার্থীর পরিমান ক্রমেই বেড়ে চলছে। আমাদের লাভ কি হলো তাতে? সপ্তাহে দুইদিন করে ঘুম? আমাদের শিক্ষকগন আর কতো অক্লান্ত পরিশ্রম করবে বলেন? একজন শিক্ষক আর কতটাই চাপ নিতে পারে? তারাও তো মানুষ। তাদেরও তো একটু বিশ্রাম দিতে হবে। তাই বলে শিক্ষক নিয়োগ না দিয়ে যদি সপ্তাহে দুইদিন ছুটি দিয়ে থাকেন এবং এতে যদি শিক্ষকদের বিশ্রামের কথা ভাবেন এবং ৪ মাসে সেমিস্টার শেষ করার কথা ভাবেন তাহলে তো চিন্তাটা ভালোই। এই চিন্তাকে সাধুবাদ জা!তি স্বপ্ন (দিবা) নিয়ে এগিয়ে চলছি। জানি না এই অগ্রসরতার শেষ কোথায়। আদৌকি আমরা আমাদের কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে পৌছাতে পারবো? আর পারলে তা কবে? আরো কত বছর লাগতে পারে? যেখানে ভিসি মহোদয় গত ১৮ মাসে ২৪০ দিন ছুটিতে থেকেছেন, তাহলে কিভাবে এই ক্যাম্পাস সংকট কাটিয়ে উঠবে? সব ফাইলপত্র যদি ঢাকাতে গিয়েই ঠিক করে আসতে হয়, তাহলে উপাচার্যের দপ্তর রংপুরে না হয়ে ঢাকাতেই হওয়া উত্তম।



৫।

আমাদের অনেকেই যারা বিভিন্ন অনলাইন নিউজ পোর্টাল, ব্লগ কিংবা সোসাল মিডিয়ার সংগে সংযুক্ত থাকি, তারা খুব সহজেই পরখ করতে পারি যখন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে কোন নিউজ এ সকল মিডিয়াতে যায় তখন নিউজটি পড়ার পর পাঠকের প্রদত্ত মন্তব্যটির মাধ্যমে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান কোথায়। যখন কোন একজন ব্যক্তি এ রকম কিছু মন্তব্য করে, যেমনঃ "বিশ্ববিদালয়টি টিকে আছে কেমন করে? অচিরেই বন্ধ করে দেওয়া হোক" কিংবা "যদি কেউ চোর, ভন্ড আর বাটপার দেখতে চাও তবে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে যাও।" এ ধরনের কমেন্ট পড়ার পর সহজেই বুঝতে পারি বেগম রোকেয়ার শিক্ষক-শিক্ষার্থী হিসেবে আমার অবস্থান কোথায়। কিছুদিন আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মোটামুটিভাবে অফিশিয়ালি স্বীকৃত ফেসবুক পেজে একটি নিবন্ধ পোষ্ট করেছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েরই একজন ছাত্র। সেখানে তিনি উল্লেখ করেন বেরোবি'র এক শিক্ষার্থীর কথা এবং সেখানে তিনি বেরোবি'র শিক্ষার্থীর জানার গভীরতা এবং পড়াশুনার মান নিয়ে তাচ্ছিল্যতা প্রকাশ করেন। হয়তোবা আমাদের অনেকেই তার প্রতিবাদ করেছিল কমেন্টের মাধ্যমে। কিন্তু শাক দিয়ে কি মাছ ঢাকা যায়? নিবন্ধটাই তো সবাই পড়বে এবং আমাদের মান সম্পর্কে সকলে অবগত হবে। মন্তব্যবের মাধ্যমে করা প্রতিবাদ কয়জনই বা পড়তে যাবে?



৬।

গত কয়েকদিন আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান হালচাল নিয়ে একটা প্রবন্ধ লিখেছিলাম। সেটি অনলাইন নিউজ পোর্টালে প্রকাশিত হলে প্রবন্ধটি দেখে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়েরই এক শিক্ষার্থী, যে সম্ভবত ফেসবুকের বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কিত একটা পেজের এডমিন অথকা কোন অনলাইন নিউজ এর প্রতিনিধি, আমাকে ইনবক্সে বললো "ভাই সামনে ভর্তি পরীক্ষা। একটু পজিটিভ কিছু পোষ্ট দিন। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে যেন নতুন যারা ভর্তি পরীক্ষা দিতে আসবে তাদের যেন আমাদের অবস্থান সম্পর্কে ইতিবাচক ধারনা জন্মায়।" প্রতিউত্তুরে তাকে বললাম "ভাই তুমি যা বলছো তা অবশ্যই ঠিক। তবে তার আগে বলো আমার যেগুলো বলছি সেগুলো কি মিথ্যা কিংবা যুক্তিসংগত না?" নতুন যারা আসতে আগ্রহী তাদেরকে মিথ্যা আশ্বাস দেই কেমনে? কেমনে এই মিথ্যাগুলি বলি যে, আমরা হলে থাকি, আমাদের কোন সমস্যা নাই, আমাদের যাতায়াত ব্যাবস্থা ভালো, ক্যাফেটেরিয়া আছে, ১০ এমবিপিএস এর ওয়াই-ফাই সুবিধা আছে, অত্যাধনিক ল্যাবরেটরী আছে, জিমনেশিয়াম আছে, সে্টডিয়াম আছে ইত্যাদি ইত্যাদি? যারা আসতে আগ্রহী তারা সত্যটাই জেনে আসুক। সেটাই ভালো নয় কি? আমি বলছি না যে আমি এখানে অধ্যয়ন করে অসন্তুষ্ট কিংবা উত্তেজিত। আমি তো আর হাভার্ডে কিংবা এমআইটি-তে চান্স পাইনি যে সবকিছু সিস্টেমেটিক ওয়েতে চলবে। সুতরাং, এইটুকু আমাকে মেনেই নিতে হবে। বাংলাদেশ দুঃর্নীতিতে শীর্ষস্থানীয় অন্যতম দেশ, তাই বলে তো মুখ বুজে সবটুকু সহ্য করতে পারি না। আমি আমার প্রাপ্যটুকু পেতে চাই।



৭।

বেরোবির এক শিক্ষার্থী তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তার টাইমলাইনে লিখেছে "পুরাতন ভিসি স্যার নাকি দুঃর্নীতিবাজ ছিলেন তাই আন্দোলন করে পদত্যাগ করাতে বাধ্য করা হল। নতুন ভিসি স্যার এক বছর পাড় হতে না হতেই তিনি নিজেই পদত্যাগ হতে বাধ্য হচ্ছেন। আসলে সমস্যাটা কোথায়? উনি কি অতিরিক্ত সৎ, নিষ্ঠাবান, নাকি দুঃর্নীতিতে একাই একশ?" সত্যি আমি নিজেও জানি না ব্যাপারটা কি, আর কোথায় গিয়ে সমস্যাটা জটলা পাকিয়েছে? আমিও অন্য দশজন শিক্ষার্থীর মতো আম শিক্ষার্থী। সুতরাং আমারো বিষয়টা সম্পর্কে অবগত থাকার কথা নয়। তবে আমার যা মনে হয়, প্রত্যেকেই নিজ নিজ স্বার্থ হাসিলে উদ্দত, কেউই ছাড় দিতে রাজি নন। তাই হয়তো সার্বিকভাবে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। যদি উনি সৎ, আদর্শবান আর একনিষ্ঠ-ই হয়ে থাকেন তবে কিভাবে ফাইনান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে আবু জাফর মোঃ ইমরান নামক কেলেঙ্কারী ঘটলো? বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ তো আর বাসের হেলপার কিংবা হোটেলবয় নিয়োগের মতো সহজলভ্য নয়, যে চাইলেই যাচাই বাছাই ছাড়া নিয়োগ হয়ে যায়। বাসের হেলপার কিংবা হোটেলবয় নিয়োগের ক্ষেত্রেও কতৃপক্ষ কিছু রেফারেন্স নিংে তাকে যাচাই বাছাই করে নিয়োগ প্রদান করে থাকেন। তবে কিভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট এভাবে নিয়োগ প্রদান করলেন সেটাও বিবেচ্য বিষয়।



৮।

প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির মাঝেই এই নবীনতম বিশ্ববিদ্যালয় ছয়টি বছর পেরিয়ে ৭ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে পা দিল কয়েকটি মাসে আগে। যা কিছু প্রতি এবং অবকাঠামোগত উন্নয়ন তার প্রায় নব্বই ভাগই শুরু করে গিয়েছিলেন তৎকালীন দুঃর্নীতিবাজ ভিসি স্যার আব্দুল জলিলের আমলেই। অবকাঠামোগত উন্নয়নের যা কিছু হবার তা পূর্ববর্তী আমলেই হয়েছে। অবকাঠামোগত উন্নয়নের ক্ষেত্রে বলতে গেলে নতুন ভিসি স্যার ড. এ কে এম নূর-উন-নবী যে কিছুই করেননি সেটা বললে ভুল হবে। অবশ্যই তিনি বেশ কিছু উন্নয়ন সাধন করেছেন। তার মধ্যে অন্যতম কিছু কাজ না বললেই নয়, যেমনঃ তার আমলেই বেরোবিতে স্মৃতিস্তম্ভেরর ভিত্তিপ্রস্থর হয়েছে, যেটার কাজ তিনটি পিলার দাড় করিয়ে রাখা পর্যন্তই আপাতত বছর খানিকের মতো হলো স্থগিত রয়েছে। ১ কোটি ৩৪ লক্ষ টাকা বাজেটের পিলারটি যে কবে তার সম্পূর্ন রূপ পাবে, কবে তার সম্পূর্ন কাজ সম্পন্ন হবে তা এখন সময়ের অপেক্ষা মাত্র। প্রকৌশল অনুষদের ল্যাব স্থাপন আজ দীর্ঘ কয়েক মাস যাবৎ হবার পথেই। বরাদ্দ হয়েই যাচ্ছে, কিন্তু স্থাপন আর হচ্ছে না।



৯।

বর্তমান ক্যাম্টাস পরিস্থিতি এবং পূর্ব আন্দোলন পরিস্থিতি বিবেচনা করলে দেখা যায় যে, আন্দোলগুলি শুধুমাত্র একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। শিক্ষক সংগঠন এবং উপাচার্য মহোদয় যতদিন কাম্পাসের প্রতি উদাসীন না হয়ে কাম্পাসের দিকে মনযোগ ফিরিয়ে আনবেন এবং তিন পক্ষের মাঝে সুষ্ঠু সমাধান এবং সমঝোতা আসবে না, ততদিন বেরোবি তার শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরে পাবে না। পরিশেষে একটি কথা বলতে চাই বেরোবির উদ্ভত সমস্যা থেকে উত্তরনের একটাই পথ রয়েছে। সেই পথটা হচ্ছে সমঝোতা। সেটা ছাত্র, শিক্ষক, উপাচার্য সকলের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। সকলের স্বার্থ বিবেচনা করেই সকলের উচিৎ একটু আত্মত্যাগ। একগুয়েমিত্ব নয়, সমঝোতার মাধ্যমে ক্যাম্পাসের সার্বিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল করুন। সবার সর্বাত্মক সহযোগীতা, সহমর্মিতা, সহনশীলতা, আর আত্মত্যাগ-ই পারে উত্তরবঙ্গের শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়কে বাচাতে।



তথ্যসূত্রঃ http://­bangladeshpress.com/­news/view/67791

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.