নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আকাশে আকাশে যাবে জ্বলে, নক্ষত্র অনেক রাত আরও

এনামুল রেজা

আমাকে খোঁজনা তুমি বহুদিন, কতোদিন আমিও তোমাকে..

এনামুল রেজা › বিস্তারিত পোস্টঃ

দুটি প্যারাবল

২৪ শে এপ্রিল, ২০১৪ বিকাল ৪:২০

রাত্রির সুবাতাস



আমার বসবাস মায়ার সমুদ্রে।

রিকশায় মায়ের হাত ধরে বসে থাকা স্কুল ফিরত শিশুটির দিকে তাকালে মায়া লেগে যায়। কিংবা ভরদুপুরে কোন রিকশাঅলা গভীর মনযোগে চায়ে ডুবিয়ে পাউরুটি খায়, ক্ষুধা নিবৃত্তির সেই দৃশ্যও এক মনোরম মায়া। রাতে বাসায় ফিরে দেখি কাজের বুয়ার ছোট্ট মেয়েটা মায়ের পাশে বসে চুপচাপ মিটিমিটি হাসতে থাকে। ওই হাসি দেখলেও মায়ার তোড়ে চোখে পানি চলে আসে!



ওদিন রাত একটার দিকে প্রেস ক্লাব ছাড়িয়ে হেঁটে যাচ্ছি। ফকিরাপুল যাবো। দেখি ওভার ব্রিজের সিঁড়ির তলায় মনের সুখে সিগারেটে টান মারছে এক বৃদ্ধ। তার পাশেই ছালা বিছিয়ে গুটিশুটি মেরে শুয়ে আছে ন’দশ বছরের একটি বালক। হয়তো বৃদ্ধের নাতি। দিনের শেষে এই আয়েশী ভঙ্গিতে সিগারেটের ধোঁয়া ছাড়ার মাঝেই হয়তো ওই বৃদ্ধের সমস্ত আনন্দ!

ওটা দেখেও মায়া লেগে গেল।



রাত দুপুরে তেমন তো বের হওয়া হয়না, এতোটা গভীর রাতে! বিখ্যাত বাইতুল মুকাররমের অপর পাশ দিয়ে আমি হাঁটছি। চারপাঁচজন মেয়েকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলাম। মুখে চুনের মতো করে পাউডার লাগানো, ঠোঁটের গাড়ো লিপস্টিক স্ট্রিটল্যাম্পের আলোতেও প্রকট।

ওদের ছাড়িয়ে এগিয়ে যেতেই পিছন থেকে কেউ ফোড়ন কাটলো- এত ব্যাস্ততা কিসের?



ওদের জন্যও কেন মায়া লাগে? সেদিন ওদের বলতে ইচ্ছে করছিল, আমার কোন ব্যাস্ততা নেই। শুধু জগতের সকল ব্যাস্ততা তোমাদের ঘিরে থাকুক, এ ছাড়া অন্য কোন প্রার্থনাও নেই। কথাগুলো ওদের বলা হয়নি। কোনদিন হবেওনা হয়তোবা!





অসীম কুমার



অসীম কুমার আমার বন্ধু ছিল। শৈশবের বন্ধু। একসাথে প্রাইমারি পড়েছি আমরা। হাই স্কুলেও এক বছর। তারপর অসীম কুমার নেই হয়ে গেল।



অসীম কুমারের খুব স্বপ্ন ছিল সে যখন বড় হবে, নিয়মিত ক্লিন শেভ করবে। দিনে দুবার করে। যাতে তাকে সিনেমার নায়কদের মত লাগে। শৈশবে আমরা ভাবতাম, নিয়মিত শেভ করলে চেহারা নায়কদের মত হয়ে যায়। এমন সুন্দর যে মেয়েরা দেখামত্রই প্রেমে পড়ে যাবে!



এখন অসীম কেমন দেখতে হয়েছে আমি জানি। কোথায় আছে তাও জানি। শুধু সে হারিয়ে গেছে আমার জীবন থেকে। অবশ্য শেভ করার ব্যপারটা সে আজও ঠিক রেখেছে।



এই শেষবার যখন তার সাথে দেখা, জিজ্ঞেস করেছিলাম- দোস্ত তুই এখন কবার শেভ করিস প্রতিদিন?

অসীম একগাল হেসে জবাব দিয়েছিল- তা দিনে বিশ-পঁচিশবার তো হবেই!!



অবাক হবার কিছু নেই। আমার সেই শৈশবের বন্ধুটি আজ বড় হয়ে নাপিত হয়েছে। ঈদ বা পুজোর দিনগুলোয় তাকে এমনকি দিনে ৫০ বারও শেভ করতে হয়!

দীর্ঘদিন হয়েছে, আমার বিস্মিত হবার ক্ষমতা লুপ্ত প্রায়। তবু যখন শৈশবের কথা ভাবি, এখনও বিস্মিত হই।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ১০:২২

জাহাঙ্গীর.আলম বলেছেন: ভাল লিখেছেন ৷

২| ২৮ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ৮:৩৬

এনামুল রেজা বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.