নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আকাশে আকাশে যাবে জ্বলে, নক্ষত্র অনেক রাত আরও

এনামুল রেজা

আমাকে খোঁজনা তুমি বহুদিন, কতোদিন আমিও তোমাকে..

এনামুল রেজা › বিস্তারিত পোস্টঃ

আনসার দ্যা কোয়েশ্চেন?

২৮ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ৮:২৭

সহকর্মী রুমি ভাই একদিন আমাকে প্রশ্ন করেছিলেন। অত্যন্ত স্বাভাবিক আর অদ্ভুত ছিল প্রশ্নটা। শাফকাত সাহেব, কখনও কি বোঝার চেষ্টা করেন, নিদারুন বাস্তবতা জিনিসটা আসলে কি?



রুমি ভাই এর মাথায় সমস্যা আছে সামান্য। আমাদের গোটা অফিস পাড়ায় সুবিদিত ব্যপার। আচমকা এটা ওটা বলেন। উল্টা পাল্টা কাজ করেন। ছোট্ট একটা ঘটনা বলি আপনাদের। একদিন লাঞ্চ আওয়ারে আমি অবাক হয়ে দেখলাম- এক কাপ ধুমায়িত গরম কফি নিয়ে রুমি ভাই তার ডেস্কটপ কে খাওয়াচ্ছেন! ব্যপারটা পরিস্কার হলনা তাইতো? রিতিমত স্ক্রু-ড্রাইভার দিয়ে সিপিইউ এর ঢাকনা খুলে কফি ঢালছিলেন তিনি। আমি হৈহৈ করে উঠলাম। লোকজন জড়ো হয়ে গেল। সবার উতসুক প্রশ্নের জবাব রুমি ভাই তখন দিলেন একরাশ বিরক্তি নিয়ে। “আরে আজব তো! একটা সাধারন ব্যপারেও বুঝ নেই আপনাদের। সারাদিন কাজ করে আমরা টায়ার্ড হই, চা-কফি খেয়ে রিফ্রেশমেণ্ট করি। বেচারা কম্পিউটার কি দোষ করলো? সারাদিন সে আমাদের চেয়ে কম তো খাটুনি খাটেনা। এ যদি মানুষ হত, আমাদের ভয়ে নির্ঘাত শহর ছাড়তো। যন্ত্র বলে সামান্য কফিপান সে নির্বিঘ্নে করতে পারবেনা? জ্বালাতন করবেন আপনারা?



এটা দুঃখের বিষয় ডেস্কটপ কখনও বলেনা, আমাকে কফি পান করাও। রিফ্রেশমেন্ট চাই বলে দাবিও জানাতে তাকে শোনা যায়নি আজ পর্যন্ত। রুমি ভাই’র এই অনুল্লেখিত দাবি পুরণের অপচেষ্টার দরুণই হয়ত তার ডেস্কটপ বেচারা গিয়েছিল বিগড়ে একদম। শাস্তি স্বরুপ অফিস রুমি ভাই এর সে মাসের বেতন থেকে টাকা কেটে নতুন কম্পিউটার রিপ্লেস করে দিয়েছিল তার ডেস্কে। আরও কত হাঙ্গামা।

এই বেতাল রুমি ভাই যখন আমাকে কোন কারণ ছাড়াই এক ভরদুপুরে প্রশ্ন করে বসলেন নিদারুণ বাস্তবতা কি? তাতক্ষণিক ভাবে আমি কোন জবাব দিতে পারলাম না। তবে আমি ভাবনায় পড়ে গিয়েছিলাম।



আচ্ছা আমার কাছে কোনটা নিদারুণ বাস্তব? দীর্ঘ একমাস ধরে পড়ে আছি নিজের ঘরে। নিজের বিছানাটা ছেড়ে কারও সাহায্য বিনা উঠতে পারিনা। প্রাকৃতিক বিশেষ কর্মটাও বিছানার সাথে ব্যবস্থা করা বিশেষ যায়গায় সারতে হয়। ঘরের বাইরে বের হতে পারিনা কতদিন! আমার বউকে আজকাল অবাক হয়ে দেখি। প্রথম প্রথম খুব রাগারাগি করতো ব্যপারটা নিয়ে। যতদিন যাচ্ছে আমি বুঝতে পারছি, শিফা মেয়েটা ঠিক অতটা মন্দ নয়, যতটা আমি ভাবতাম বিয়ের প্রথম দিকে। সত্যিই বড়ো ভালবাসে আমাকে। সেই ভালবাসা প্রকাশিত হয়না সবসময়। যত দিন যাচ্ছে, ক্রমবৃদ্ধিহারে তার মুটকি হয়ে যাওয়াটাকে তাই আজকাল মনে হয় স্বাভাবিক। হোক মুটকি। যার ঘরে বউ হবে মুটকি, তার ঘরের ততো শোভা। ঘর জোড়া বউ থাকলো! মন্দ ব্যপার না। তবে কি এটাই আমার নিদারুণ বাস্তব?



রুমি ভাই একদিনও দেখতে আসলেননা আমাকে। নইলে তাকে জিজ্ঞেস করা যেত।



আজ থেকে মাস খানিক আগে কর্মচঞ্চলতা কিংবা শৈথিল্যের ভিড়ে ডোবা এক বিকেলের কথা। অফিস থেকে বাসায় ফিরছিলাম। ফার্মগেট এলাকা থেকে বাসে করে মিরপুরে নিজের বাসায় চলেছি। শেওড়া পাড়ার কাছাকাছি এসে বাসের কন্ডাক্টার ছেলেটার সাথে এক মধ্যবয়সি যাত্রির হাতাহাতি লেগে গেল। অবশ্যই ভাড়া নিয়ে। চৌদ্দ-পনেরো বছর বয়সি কন্ডাক্টর কে দেখলাম দশ বারোজন যাত্রি মিলে পেটানো শুরু করেছেন। বাস থেমে গেছে। কন্ডাক্টর ছেলেটা কে বাস থেকে ছুঁড়ে ফেলা হল। বাস স্টান্ডে দাঁড়িয়ে থাকা লোকজনও ছোটো ছেলেটার দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে এমন অবস্থা। আমার মনে হল এই ছেলেটা তো গণপিটুনি তে মারা পড়বে আজ! ভাবলাম, তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করাটা কি এ মুহুর্তে আমার জন্য ফরজ নয়?

মূমুর্ষূ অবস্থায় নিজেকে হাঁসপাতালের বেডে আবিষ্কার করেছিলাম সেদিন। শেওড়া পাড়া এলাকাটা নাকি পরিবহণ শ্রমীকদের আখড়া। ঠিক কি কারণে জানিনা, গণপিটুনির শীকারদের মধ্যে অন্যতম ছিলাম আমি! এটি কি গভীর কোন রহস্য? আমার জানা নেই।



আশার কথা, খানিক আগে রুমি ভাই আমাকে দেখতে এসেছেন। রহস্য ভেদ করতে না পারলেও একটা জিনিস আমি তো জেনে গেছি। রুমি ভাই এর প্রশ্নের দস্তুর মতন একটা জবাব এখন আমি দিতে পারব। কি বলেন?

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ৯:২২

উড়োজাহাজ বলেছেন: ইহাও নিদারুন বাস্তবতা!

২৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ বিকাল ৪:২০

এনামুল রেজা বলেছেন: হাহাহা.. ঠিক বলেছেন। ধন্যবাদ জানবেন...

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.