নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমাকে খোঁজনা তুমি বহুদিন, কতোদিন আমিও তোমাকে..
মাঝে মাঝে কিছু বিকেল আসে একরাশ বিষন্নতা নিয়ে। কেউ কেউ অবশ্য চিরদিন বলে এসেছে, বিকেল বেলার সময় অনন্তকাল ধরেই বিষন্ন। আজ থেকে বহুদিন আগের কথা বলতে ইচ্ছে করছে কেনো জানিনা। হয়তো এখনকার কথাগুলোয় গল্পহীনতার প্রাচুর্য্য বারংবার অতীতে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। যাবেই তো। স্রোতের টানে না ভেঁসে উল্টো দিকে যাবার চেষ্টা যে করেছে আজন্ম, অতীত ছাড়া তার কাছে অন্য গল্প কিভাবে থাকবে?
মাথার ভিতর এমুহুর্তে কেউ চিৎকার করছে। কি বলছো তুমি? কি বলছো এসব? দিনরাত্রি একাকার করে বলে এসেছো অতীত হলো অতীত। ভবিষ্যৎ যেহেতু তোমার জানা নেই, সুতরাং ওটা ভাববার মতো গুরুত্ব জীবন বয়ে বেড়ায় না। তুমি বর্তমানের মানুষ। ঠিক যে মুহুর্তটার শ্বাস-প্রশ্বাসে তোমার হৃৎপিণ্ড কেঁপে কেঁপে উঠছে, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ওই মুহুর্তটাই। জগতের আর সকল কিছু অর্থহীন। সেই তুমিই কিভাবে বলতে পারো, বর্তমান গল্পহীন তাই অতীতে আশ্রয় নিতে হবে?
মনের সাথে মনের অন্তর্দ্বন্দে কে যুদ্ধ করছেনা প্রতিটা মুহুর্তে? আমি করছি, তুমি করো, তোমরা করছো। আবার একদল গলা ফেড়ে মনের কানে চেঁচিয়ে যায়। নিজের মাঝে ডুব দিয়েই কি এ ক্ষুদ্র জীবন পার করে দেওয়া যায়না? নিজের মাঝে মোহিত হয়ে, নিজেকে সবচেয়ে বেশি ভালবেসে? সুতরাং জিজ্ঞেস করতে বাধ্য হই আমি। নিজেকে ভালোবেসে? নার্সিসাসের মতো?
অতঃপর আমার ব্রেইনের বড় পর্দায় জীবন্ত হয়ে ওঠে নার্সিসাসের কিংবদন্তি।
এক তরুণ যুবক নার্সিসাস। সারাদিন এসে তাকিয়ে থাকতো হ্রদের স্বচ্ছ স্ফটিক পানির দিকে। আয়নাহীন সে যুগে মানুষ নিজের সৌন্দর্য্য হয়তো ওই জলের ছায়াতেই দেখে নিতো। আর নার্সিসাস জানতো সে হলো এই পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর মানুষ। তাই, সেতো সারা দিন নিজের চেহারার দিকে তাকিয়ে থাকবেই। হ্রদের টলটলে পানিতে নিজের অপূর্ব প্রতিবিম্বের দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে এক সময় নিজের প্রেমেই পড়ে গেলো সেই অপার্থিব যুবক। আর একদিন সকালে নিজের প্রতিবিম্বকে আলিঙ্গনে বাঁধতে ঝাঁপ দিলো সেই হ্রদের সুগভীর জলে। সাঁতার না জানা নার্সিসাস অতঃপর তার সমগ্র সৌন্দর্য্য নিয়ে তলিয়ে গেলো জলের অতলে।
হ্রদের তীরবর্তী যে যায়গায় সে ডুবে গেলো, সেখান থেকে জন্ম নিলো এক অপূর্ব সুন্দর ফুল। যে ফুলের নাম হলো নার্সিসাস।
অথচ এখানে কেনো নার্সিসাসের কিংবদন্তি শেষ হলোনা? হ্রদের চারপাশে যে বিপুল বনভূমি, তার অধিশ্বরী দেবী ছুটে আসলেন। হ্রদের পাড়ে দাঁড়িয়ে বিপুল দুঃখে আপ্লুত হলেন। আহারে! এত সুন্দর এক যুবক এভাবে হারিয়ে গেলো? অথচ তিনি কোনদিন নিজ চোখে দেখেননি তাকে। আর দেখতেও পাবেননা কোনদিন!
চোখভরা জল নিয়ে দেবি হ্রদের স্বচ্ছ পানির দিকে তাকালেন। অলৌকিক ক্ষমতায় বুঝে নিলেন, ওর সুমিষ্ট জল এখন পরিণত হয়েছে লোনা পানিতে। নার্সিসাসের দুঃখে যে হ্রদও কেঁদেছে। কাঁদতে কাঁদতেই তার বুকে ধরে রাখা পানি হয়ে গেছে লবণাক্ত!
দেবি জিজ্ঞেস করলেন, প্রতিদিনই তো তুমি নার্সিসাসের রুপ উপভোগ করেছো। আর তোমার বুকেই অবশেষে সে হারিয়ে গেছে। হে বিষন্ন জলধি, তুমি কেন কেঁদেছো এভাবে?
হ্রদের জবাব দেবিকে স্তব্ধ করে দিয়েছিলো। সারা পৃথিবীকে থামিয়ে দিয়েছিলো অবাক বিস্ময়ে। কারণ হ্রদ বলেছিলো- আমি কেঁদেছি। কারণ নার্সিসাস যখন আমার জলে তাকিয়ে থাকতো, তার স্বচ্ছ চোখের মণিতে ফুটে উঠতো আমার নিজের সৌন্দর্য্য। আমিও মুগ্ধ হয়ে নিজেরই সৌন্দর্য্য উপভোগ করতাম!
আর কিছু কেনো বলতে ইচ্ছে করছেনা? অতীত-বর্তমান-ভবিষ্যৎ সব একাকার হয়ে যাচ্ছে। তার চুড়ান্ত মুহুর্তে দাঁড়িয়ে আছে বিকেল। একটা বিষন্ন বিকেল। যে বিকেল সবার কানে কানে ফিসফিস করে অদ্ভুত সব কথা বলে যায়। বলে যায়- রাত্রি নামলে পথ হাঁটার কথা। অদৃশ্যে মনের কথা ভাসিয়ে দেবার এক হাজার একটা পদ্ধতি। কিংবা কিছু গল্প নিজের জন্য জমা রাখার নিগুঢ় তত্ত্ব।
আমাদের বুকের গভীরে যে কান আছে, সে কান পেতে সময় অসময়ে ওই গল্প শুনবার চেষ্টা করে যাওয়ার মাঝেও বেঁচে থাকা যায়! মন্দ কি?
৩০ শে আগস্ট, ২০১৪ রাত ১১:৪৭
এনামুল রেজা বলেছেন: হুম, মন্দ নয়..
২| ৩০ শে আগস্ট, ২০১৪ রাত ৮:২২
মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন:
গল্পটা আরও দীর্ঘ হলেও কেউ মানা করতো না
নার্সিসাস নেই, কিন্তু নার্সিসিজম রয়ে গেছে।
এনামুল রেজাকে অনেক দিন পর পেলাম
শুভেচ্ছা!
৩০ শে আগস্ট, ২০১৪ রাত ১১:৪৯
এনামুল রেজা বলেছেন: মানা করা হলেও কে শুনতো?
আপনাকেও শুভেচ্ছা...
৩| ৩১ শে আগস্ট, ২০১৪ সকাল ৯:৫৪
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
ভাল লাগা রইল।
৩১ শে আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ১২:৩৩
এনামুল রেজা বলেছেন: ধন্যবাদ জানবেন ভাই..
©somewhere in net ltd.
১| ৩০ শে আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৫:৩০
অন্ধবিন্দু বলেছেন:
বুকের গভীরে কান পেতে শুনলাম। সত্যিই তো, মন্দ কি !