নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আকাশে আকাশে যাবে জ্বলে, নক্ষত্র অনেক রাত আরও

এনামুল রেজা

আমাকে খোঁজনা তুমি বহুদিন, কতোদিন আমিও তোমাকে..

এনামুল রেজা › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্প | রমিজের শীতল অগ্নিকান্ড

০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:১৪



আমার একটা চোখ কানা হল কিভাবে, ঘটনাটা কি শুনবেন?

খুবই মজার ঘটনা। কিন্তু যাকেই বলি, আনন্দ পাওয়ার বদলে সে দুঃখ পায়। দুঃখিত হয়। বিষাদের তোপে তাদের চেহারা হয়ে যায় খানিকটা ওই রকম! মানে বুঝলেন না? ওই যে জবাই করার আগমুহুর্তে গরুর চেহারাটা যেমন দেখায় তেমন। অথচ ঘটনাটা মজার। সেটা সে কবে ঘটে গেছে। তারপরো তো দিব্যি আমার দিন চলে যাচ্ছে। আমাকে দেখে কি আপনার মনে হচ্ছেনা, আমি একজন সুখি মানুষ?

মিরপুর ১২ নম্বরের ত’ব্লকে আমার বসবাস। কিন্ত বিধাতার অমোঘ বিধান কে খন্ডাবে বলেন? নিজের বাসায় কখনো একটু শান্তি মতো থাকা হয়ে ওঠেনা! সেই স্বস্তার আমলে লাখটাকা দেনমোহর দিয়ে বিয়ে করা বউ আছে ঘরে। ভদ্রমহিলা তার দুচক্ষে আমায় দেখতে পারলে তো! অথচ আমি তাকে খুব মায়াভরা দৃষ্টি নিয়েই দেখবার চেষ্টা করি। দুচোখে তাকাতে পারিনা। এটা কি আমার অপরাধ? আমার একটা চোখ তো কানাই। এবং শুরুতেই বলেছি, সেই গল্পটা আপনাকে শুনানোর বড় ইচ্ছা রাখি আমি।

এই যে মহল্লার মাথায় কাউসারের চায়ের দোকানে বসে আছি এখন। অন্তত পাঁচবার বলেছি চা দিতে এক কাপ। চিনি কম দিয়ে। বেশি চিনি দিয়ে চা কি খাওয়া যায়? মানুষ চিনি বেশি দিয়ে খাবে শরবত। সেটাই তো নিয়ম। কাউসার ব্যাটার দিকে দেখেন? তার হাবভাব দেখে মনে হচ্ছে, এ তল্লাটে তার মত ব্যাস্ত চা’অলা আর দুটো নেই! আমার পরে এসেছে, এমন দুজন কাস্টমারকেও সে চা দিয়ে দিল। সিগারেট দিল। এমনকি জাতীয় বাজেটে সিগারেটের বাক্সপ্রতি কটাকা দাম বেড়েছে, তাই নিয়ে তর্কাতর্কিও করে ফেললো! অথচ শালার হাভাতে, আমার দিকে খেয়াল নাই। আবার কি বলল শুনেছেন?
-দাড়ান কাহা, আপনার সা’ডা আলাদা কইরা বানায়া দিতেসি..
গলা না চড়িয়ে উপায় আছে বলেন? -ওই বেটা, আলাদা কইরা মানে কি? বিশ মিনিট লাগায়া দিলি এক কাপ চা বানাতে!
কাউসার উদাস স্বরে বলল- বিশ মিনিট একখান সুমায় হইলো কানা’দা?
এ্যাঁ? মাথাটা চড়ে গেল মুহুর্তে। কানা দা? কাউসার কি আমাকে কানা দা বলল? একটু আগেই না কাহা কাহা বলে ডাকছিল?
-ওই হাইয়ার পো, তুই আমারে কি কয়া ডাকদিলি?

ভয় পেয়েছে দেখেছেন? কাউসার ব্যটা ভয় পেয়েছে। কেমন সিঁটিয়ে যাওয়া গলায় কথা বলছে দেখেন!
-কাহা রাইগা গেলেন হঠাৎ? এই যে আপনের সা রেডি হইয়া গেসে....
গলার কর্কশ ভাবটা কোত্থেকে আসলো কে জানে?
-তুই একটু আগে আমারে কি কইয়া ডাকদিলি কাউসার?
-আপনারে? আপনারে কাহা সাড়া আর কি কমু কন তো? ঠান্ডা হইয়া বইসা সা’ডা খান। হ্যারপর কন কেমন হইলো..

কাউসার অন্য কাস্টমারের দিকে মনোযোগ দিয়েছে আবার। আমারই মনে হয় শুনতে ভুলটুল হয়েছিল। সে আমাকে কাহা বলেই ডেকেছে। হঠাৎ এমন অদ্ভুত সম্বোধনটা ভুল কিভাবে শুনি বলেন দেখি? কানা দা!

কানা দা বলে কিন্তু একজন আমাকে ডাকতো। খুবই আদরের ছিল সে ডাকটা। রমা! আহা, কি চমৎকার সব দিনই না আমি কাটিয়েছি রমার সাথে। নরেণ দা’র নিঃসন্তান বউটার সময় কাটতো একটা সন্তানের আক্ষেপে আক্ষেপে! আমাদের শ্রীসদাস লেনের বাসাটার দু’ঘর পরেই থাকতো রমারা। একদিন ভর সন্ধ্যায় আমরা এলাকার সমস্ত লোক ওদের বাসায় হাজির হয়ে দৃশ্যটা দেখেছিলাম।

ঠিক কোন কারণ আমাদের তখন কি জানা ছিল? নরেণ দা’র বাসার দু-কামরার একটার সিলিংফ্যানের সাথে ঝুলছিল রমার লাশটা! আমরা হাহা করে উঠেছিলাম সবাই। রমার রুপের খ্যাতি সুগন্ধের মতো ভুরভুর করে বেড়াতো এলাকাজুড়ে। মৃত্যু এসে সেই খ্যাতিকে বদলে দিল আফসোসে। মহল্লার জলীল খাঁ থেকে ক্যান্টিনের শরিফ মিয়া কে না চাইতো রমাকে? আমরাও কি কম ভেবেছি তাকে সেসব দিনগুলোয়?

রমা কেন ঝুলে পড়েছিল? সন্তানহীনতার আক্ষেপে? নরেণ দা ততোদিনে নিয়মিত পাঁড় মাতাল। রাতগুলো তার কাটতে শুরু করেছিল বাজে পাড়ায়। রাস্তায় সে উলটে পড়ে থাকলে ভোর বেলা বমিসর্বস্ব দেহটার দিকে কেউ এগুতোনা। রমাকে কাছ থেকে একটু অনুভব করা যাবে, এই ভরসায় কতদিন ওই কাজ করেছি আমি! নরেন দা’কে তুলে ধরে ওর ঘরে নিয়ে তুলেছি। রমা ব্যস্ত হয়ে এগিয়ে আসতো। কানা দা, কানা দা এই.. ওই মাতাল টার জন্য নিজের গা ময়লা কল্লে!

গলায় ফাঁস নেবার পরেই কিন্ত আমার সাথে রমার সম্পর্কটার শুরু হল। ভ্রু কুঁচকে উঠছে দেখি আপনার। উৎপাটাং কিছু কি আমি বলছি নাকি? সন্ধ্যাবেলা ছিল। তামাক সরিয়ে ফেলা সিগারেটের খোলসে সবে মাত্র গুড়ো করা গাঁজাটুকু ঢুকিয়েছি। গাঁজার নিওম জানেন তো? অর্ধেক পরিমাণ তামাকের সাথে অর্ধেক পরিমাণ গাঁজা। ভালমতো সেটা হাতের তালুতে নিয়ে ডলতে হয়। যাকগে, ওসব নিয়ম কানুন জেনে আপনার কাজ নেই। তো ধরেন, আগুন ধরিয়ে শুধু টানার অপেক্ষা। এমন সময় একটা করুণ মেয়েলি কন্ঠস্বর আমায় চমকে দিল। -কানা দা, ও কানা দা..

ভড়কে গিয়েছিলাম বুঝলেন। গাঁজা টেনে পারলাম না, তার আগেই নেশা চড়ে যাওয়া অতিপ্রাকৃত কিনা বলেন? ভড়কানো গলাতেই বললাম ক্কে, ডাকে কে?..
করুণ নারীকন্ঠটিকে এবার আমুদে শোনালো। সেকি ঠাকুর পো, আমারে চিনতে পাললে না? আমি রমা গো..
রমা বউদি?
হুঁ।

আমার শরীর ঠান্ডা হবার জন্যে এটুকুই যথেষ্ট ছিলো। কাঁপা হাতে আগুন জালিয়ে গাঁজা ভরা সিগারেটটা ধরালাম আমি। টান লাগালাম কষে একটা। প্রথম টান এতটা কষে দেওয়া তো ঠিক না। কাশির প্রচন্ড দমকে খানিক আগে শুনতে পাওয়া রমার কন্ঠ ভুলে যেতে না যেতেই ধোঁয়ার ওপাশে দেখতে পেলাম ছায়ামূর্তিটাকে। এবার আপনি নির্ঘাত ঠাওরাচ্ছেন গাঁজাখোরের গুলপট্টি শুরু হল তাইনা? নারে ভাই, গুলপট্টি মারার লোক আমি না। ওই ব্যাটা চা‘অলা কাউসারকেই জিজ্ঞেস করে দেখতে পারেন।

ওটা রমাই দাড়িয়ে ছিল। আমি কাঁপা স্বরে বললাম- গতকালই যে ফাঁসি নিলে গলায় তুমি?
রমা বলল- নিলামই বা ফাঁসি। ওতেই কি মানুষ পর হয়ে যায় নাকি? সেই যে ওদিনের ওই দুপুরটার কথা ভুলে যাওনিতো ঠাকুরপো? ওদিনের পর আর তো এলেনা..তাই তোমার কাছে চলে এলাম!
এ্যাঁ? আমার কাছে এসেছ মানে কি? মরা মানুষ একটা জ্যান্ত মানুষের কাছে কিভাবে আসতে পারে?
রমা বলল- পারে। অন্তরের টান থাকলে পারে বুঝলেনা? সেসব দিনগুলোর কথা কি ভুলে যাওয়া যায় বলো? কি মায়া করেইনা নরেণটাকে তুমি ঘরে পৌছে দিতে..কিন্তু সেই যে সেই দুপুরটার পরে তুমি আসাই বন্ধ করে দিলে আমাদের বাসায়..কানা দা এত পাষান কেন তুমি?

হ্যাঁ, তা সে এক দুপুরই ছিল বটে। শহরের দুপুরগুলো কোনদিনই ঘুঘুডাকা ছিলনা, থাকেনা। তবু দুপুর হল দুপুরের মতই নিশ্চুপ আর মগ্ন একটা সময়। শুধু রমা বৌদি ঘরে একলা ছিল। কি এক অমোঘটানে নেশাগ্রস্থের মতোন ওদের ঘরে গিয়ে ঢুকেছিলাম আমি। বলেছিলাম -বৌদি পানি খাব।

আমাকে দেখে সেযে খুব অবাক হয়েছে, এমন কিন্তু মনে হলোনা জানেন? ওকি জানতো, এমন করেই আমি এক ভরদুপুরে তার দুয়ারে এসে দাঁড়াবো? তৃষ্ণা মেটাবার করুণ আর্তি জানাবো? রমা নিঃশ্বাস দুরত্বে ছিল। তার গায়ের ঘ্রাণের মাদকতা আমায় ডুবিয়ে দিচ্ছিল। কিংবা তার দেহের যে কম্পন আমি টের পাচ্ছিলাম, কিভাবে পাচ্ছিলাম? নাহ, রমার দিকে হাত বাড়ানোর সাহস সেদিন আমায় কেউ দেয়নি। তার দেয়া গ্লাসভর্তি পানিটা এক চুমুকে শেষ করে শুধু বলতে পেরেছিলাম -বৌদি আসি কেমন? খুব গলা কেঁপেছিল আমার ওটুকু বলতে গিয়ে!

রমা প্রতিরাতে আসতে লাগলো জানেন? ঠিক রাত দশটার দিকে। মহল্লায় তখনো চায়ের দোকানে হিন্দি গান বাজতো। দুরের মসজিদে বা রাস্তা জড়ো করে কোথাও ওয়াজ মাহফিল হত। এর মাঝেই আমাদের বাড়ির দোতলার ছাদে রমার সাথে এগিয়ে যাচ্ছিল আমার সম্পর্ক.. আহা রমা, আমার রমা বৌদি! আমি কিন্তু আর ভয়টয় পেতাম না। অন্তরের টানে এক অবলা রমণী তার কানা’দার কাছে আসবে রোজ রাতে। আর তার কানা’দার ভয় পেলে চলবে নাকি?

বাপের ঠিকাদারির ব্যবসাটা তখন জমজমাট। আমার তাই পেটের চিন্তা সে যুগে করতে হতনা। আজো হয় নাকি? এর মাঝে কত কি যে ঘটে গেল! শ্রীস দাস লেনের বাসাটা বেচে দিয়ে বাবা মিরপুরে বাড়ি কিনলেন। আমরা সবাই বলতে মা-বাবা আর আমি। উঠলাম গিয়ে এই এখনকার ত’ব্লকের বাসায়। দুঃখের ব্যপার জানেন, নতুন বাসায় আসার পর রমা আর আসেনি কোনদিন। কানা’দা বলেও আর কেউ কখনো আমাকে ডাকেনি। অথচ খুব জানতে ইচ্ছে হয় আজো, আত্মহত্যা কেন সে করেছিল? ওতো কখনো আমাকে বলেনি!

বাপ মরলে ব্যবসা আমার হাতে আসলো। আসাই স্বাভাবিক। বাপের মতোই খারাপ লোক হওয়ায় ব্যবসায় টিকে গেলাম। পুরান ঢাকার এক চকচকে মেয়ে দেখে বিয়ে করলাম, মায়ের এক দুঃসম্পর্কের বোনঝিকে। মরা হাতির দাম লাখটাকা বলে একটা কথা আছেনা? একচোখ কানা পুরুষেরো দাম মেলা। যদি তার হাতে অনেক টাকা থাকে। মায়ের ওই বোনঝি তখন ষোড়সী মাত্র। আর ওই যে বললাম- রিতিমতো চকচকে! বিয়ের দশ বছরের মাথায় দেখা গেল, তিনপুত্র আর দুই কন্যা আমাকে আব্বা আব্বা বলে ডাকছে হররোজ!

তবে জানেন, ছেলেমেয়েগুলো সবকটা তাদের মায়ের দলে চলে গেছে। একটু চোখ ফোটার পর থেকেই আমাকে তারা বিষ ভাবতে শিখে গিয়েছিল। চক্রান্ত বুঝলেন না? সব দোষ মায়ের ওই চকচকে বোনঝির। ছেলেমেয়েগুলো অকারণ খারাপ লোক আর উন্মাদ ভাবতো আমাকে, আজো ভাবে। তাদের সাথে খারাপেরটা কি করেছি আমি? দুহাতে আমার কামানো টাকা উড়িয়ে কি তাদের সোনার অঙ্গ ভরে ওঠেনি? কোন শখটা তাদের অপূর্ণ রেখেছি আমি? অবশ্য মায়ের ওই বোনঝি মানে বউটাকে মাঝেসাঝে বেধড়ক পিটাতাম। নইলে শান্তি লাগতোনা। ছেলেমেয়েগুলোকে বাপের কাছ ঘেঁষতে দিবিনা মারই তো খাবি মাগী! এইটা খারাপ কাজ হল?

এখন আবার খুব দেমাগ বেড়েছে বউয়ের! ছেলেমেয়েরা বড় হয়ে গেছে না? আমি নিজের বাপের কেনা বাসায় থাকার যায়গা পাইনা, রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াতে হয়। বোঝেন অবস্থা!

আচ্ছা, আমার নামটা কি আপনাকে বলেছি?

লেখকের জবানীঃ

রমিজ আলীর সাথে আমার প্রথম দেখা হয় মিরপুর বারোর সি ব্লকে। কাউসারের চায়ের টংএ। সে দীর্ঘক্ষণ ধরেই এক কাপ চায়ের জন্য ফরমায়েশ দিয়ে যাচ্ছিল! কিন্তু চাঅলা কাউসার ভ্রুক্ষেপও করছিলনা। রমিজ বারবার বলছিল, আমাকে দেখে কি পাগল ভাবছেন আপনি?

তার জীবনের অদ্ভুত গল্প সে সবাইকেই শুনিয়ে বেড়ায়। সেসব শোনার পর হতাশায় আমার চোয়াল ঝুলে পড়েছিল। হতাশ হবার মতোই গল্প!

৮০ সালের ডিসেম্বরের রাত ছিল। বাসায় ফেরার পথে কিছু দুর্বৃত্তের হাতে পড়ে রমিজ। ওরা তাকে একরকম ধরেই নিয়ে যায়। যায়গাটা ছিল একটা বিহারি ক্যাম্প। এবং সেখানে এক বেঁটেমতো লোক ধারালো এক চাকু দিয়ে তার বাম চোখটা উপড়ে নেয়। ব্যবসায়িক শত্রুতার কারণে ওসব ভাড়াটে খুনেগুলোকে লেলিয়ে দিয়েছিল রমিজের বাপের প্রতিপক্ষ। সে ঘটনার পর নাকি টানা ১৭ দিন হাসপাতালে কাটাতে হয়েছিল তাকে!

আজন্ম মমতার কাঙ্গাল রমিজ চিরদিন ছিল মমতার সন্ধ্যানে। কিন্তু এই মহাপৃথিবী কারো কারো কাছে আজীবন বড় বেশি কঠিন। রমিজ আলীর সাথে আর কখনো আমার দেখা হয়নি। এই বৃদ্ধের শেষ দিনগুলিতে চির মঙ্গলময় তারপ্রতি একটু করুণা বর্ষণ করুন, এটুকুই আমার প্রার্থনা!
---------------------------

অতঃপর এনামুল রেজা
দৈনিক ইনকিলাবের সাহিত্য সাময়িকি

মন্তব্য ২২ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (২২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৪:০২

হাসান মাহবুব বলেছেন: গল্পটা হঠাৎ করেই শেষ হয়ে গেলো। কোন পরিণতি পেলো না।

০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৫:০৪

এনামুল রেজা বলেছেন: পরিণতিহীনতাই হয়তো একটা আস্ত গল্প।

ধন্যবাদ হাসান ভাই। :)

২| ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৫:৪৩

মনিরা সুলতানা বলেছেন: থাকে কিছু মানুষ চিরকাল মমতার কাঙাল ...

লেখায় ভাললাগা ।।

০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৫:৫৩

এনামুল রেজা বলেছেন: আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন আপা।

শুভকামনা।

৩| ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৪৯

দীপংকর চন্দ বলেছেন: লেখার বাঁকবদলগুলো বেশ উপভোগ্য!

অনিঃশেষ শুভকামনা জানবেন ভাই।

ভালো থাকবেন। অনেক। সবসময়।

০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৫৯

এনামুল রেজা বলেছেন: পাঠ ও প্রতিক্রিয়ার জন্য দিপংকর ভাইকে অনেক ধন্যবাদ।

শুভকামনা জানবেন। ভাল থাকা হোক।

৪| ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১০:২৯

দিশেহারা রাজপুত্র বলেছেন: বেশ আগ্রহ নিয়েই পড়লাম।
আগ্রহটা ছিল শেষ অবধি।

তবে শেষটা যেন শেষ হলো না।

ভালো থাকবেন।

০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১১:৪০

এনামুল রেজা বলেছেন: ওর পরে আর লিখতে ইচ্ছে গেলনা। ভাবলাম দেই শেষ করে।

ভাল থাকা হোক। শুভেচ্ছা। :)

৫| ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১১:৪৯

বিদ্রোহী বাঙালি বলেছেন: একটু ভিন্নতার স্বাদ পেলাম গল্পে। গল্পের প্রথম অংশের রমিজের জবানীতেই মোটামুটি গল্পটা উঠে এসেছে। শেষ অংশে লেখকের জবানীতে মূলত রমিজের প্রতি লেখকের এক ধরণের সহানুভূতি। বাস্তব ঘটনা কিনা জানি না। তবে গল্পের ধরণ দেখে অনেকটা বাস্তব বলেই মনে হল।
গল্পের নামকরণের হেতু খোঁজার অনেক চেষ্টা করলাম কিন্তু যুতসই কোন কিছু দাঁড়া করাতে পাড়লাম না। তবে আমার ধারণা রমার প্রতি রমিজের যে ভালোবাসা ছিল সেটাই রমার মৃত্যুর পর তার বিবাহিত জীবনে বিরাট প্রভাব ফেলে। যার কারণে সংসার জীবনে না পেয়েছে বউয়ের ভালোবাসা আর না পেয়েছে সন্তানদের ভালোবাসা। সংসার জীবনের রমার উপস্থিতিই যেন এখানে শীতল অগ্নিকান্ড।
গল্পে আরও একটা ব্যাপার উঠে এসেছে। সেটা হল ব্যবসায়িক প্রতিদ্বন্দ্বীদের মধ্যে একটা হিংসাত্মক মনোভাব। যার শিকার হয়ে রমিজ তার একটা চোখ হারায়। চোখ হারিয়ে যেন সে সমাজেও মানুষের অবহেলার শিকার হতে থাকে। তাই চা'য়ালা পর্যন্ত তাকে কানা দা বলে ডাকার সাহস পায়।
কেন জানি আমার কাছে মনে হল পুরো গল্পটা উত্তম পুরুষে লিখলে আরও বেশী সুখপাঠ্য হতো। তারপরও ভালো লেগেছে রেজা। ভালো থেকো। নিরন্তর শুভ কামনা রইলো।

০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১১:৫৯

এনামুল রেজা বলেছেন: গল্পটা আর দশটা গল্পের মত নিয়মনীতি মেনে হয়নি, আমি আনন্দের সাথেই মেনে নিচ্ছি।
লিখবার সময় ইচ্ছা ছিলো, একটা চিত্রকলার মত হোক লেখাটা। একজন মানুষের বিষাদের তেলরঙ যাকে বলে। আরও নানান যায়গা থেকে গল্পটার ফিডব্যাক ছিলো এই প্রশ্নটা- ভাই, বাস্তব ঘটোনা নাকি?

সবখানে যা বলি, এখানেও একই কথা। রমিজের শীতল অগ্নিকান্ড আমার লেখা এক হাজার বা বারোতেরো শত শব্দের একটা গল্পমাত্র। কিন্তু অজস্র রমিজেরা বাস্তবেই আমাদের চারপাশে ঘুরে বেড়ায়, বুকের ভিতর অজস্র কান্নার, নিয়তির কাছে পরাজয়ের গল্প নিয়ে।
তাদের অগ্নিকান্ডটাও শীতল, ওটা অন্তর্দাহ। খালি চোখে দেখা যায়না।
আমি কিন্তু গল্পটা উত্তম পুরুষেই লিখেছি ঘাসফুল ভাই। জাস্ট জবানী দুটি। রমিজ আর লেখক নিজে।

বরাবরের মত চমৎকার মন্তব্য পেয়ে আনন্দ লাগছে। শুভকামনা জানবেন। ভাল থাকা হোক।

৬| ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১১:৫৮

মহামহোপাধ্যায় বলেছেন: গল্পটা ভালো লাগছিলো। কিন্তু সমাপ্তিটা কেমন যেন হঠাৎ হয়ে গেল :(



ভালো থাকুন। শুভেচ্ছা :)

১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১২:০৭

এনামুল রেজা বলেছেন: রমিজের গল্প আসলে অটোটুকুই।
বাকিটুকু বিষাদের মহাকাব্য, লিখতে ইচ্ছে যায়নি আর। :(

কিংবা হয়তো এইটুকুই আসল গল্প, বাকিটা বিলম্বিত কিছু..

পাঠ ও প্রতিক্রিয়ার জন্য ধন্যবাদ জানবেন।

৭| ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১২:০৬

বিদ্রোহী বাঙালি বলেছেন: আমি রমিজের জবানীটাকেই মূলত ইঙ্গিত করেছি। আর ঐ অংশটা উত্তম পুরুষে লেখা নাকি নামপুরুষে লেখা? কারণ ঐ অংশের পুরো অংশটা রমিজের জবানীতেই লেখা হয়েছে। তারমানে কি নামপুরুষে লেখা হল না?
নাকি আমি নিজেই উত্তম পুরুষ আর নামপুরুষ গুলিয়ে ফেলছি? :(

১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১২:০৯

এনামুল রেজা বলেছেন: নিজের মুখে কেউ গল্প শুনালেই আমি যদ্দুর জানি, সেটা উত্তম পুরুষ। আমাদের দুজনের কেউ একজন নির্ঘাত গুলিয়েছে। :D

৮| ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১২:১৯

বিদ্রোহী বাঙালি বলেছেন: নিচের অংশটুকু সহব্লগার এ.টি.এম. মোস্তফা কামাল এর ছোটগল্পের ভিতর বাহির পোস্ট থেকে উদ্ধৃত। দেখে নাও।

গল্পের কথক: গল্প লেখা হয় তিন ধরণের ভাষ্যে- উত্তম পুরুষ (গল্পের কোন চরিত্র নিজে গল্পের কথক), মধ্যম পুরুষ (কথক দর্শকের ভূমিকায় অর্থাৎ পাঠক নেমে যান কথকের ভূমিকায়) আর নাম পুরুষ ( লেখক নৈর্ব্যক্তিক দূরত্বে থেকে গল্প বলেন, মনে হবে একজন অজ্ঞাতনামা দর্শক গল্পটির বর্ণনা দিচ্ছেন)।

মধ্যম পুরুষে লেখা গল্পের সংখ্যা কম। উত্তম পুরুষে লেখা গল্পে গল্পের চরিত্রের পক্ষে যতোটা জানা সম্ভব ততোটাই লিখা উচিৎ। এতে বর্ণনায় সীমাবদ্ধতা এসে যায়। নাম পুরুষে গল্প বলায় বর্ণনার পরিসর একটু বাড়ে, লেখক কিছুটা বাড়তি স্বাধীনতা পান। কারণ অজ্ঞাত কথকের পক্ষে বেশি খবর জানা খুব স্বাভাবিক মনে হবে পাঠকের কাছে। লেখক চাইলে আরেকটা কৌশল অবলম্বন করতে পারেন। গল্পের বয়ানে উত্তম পুরুষ আর নাম পুরুষের বর্ণনা মিলিয়ে নিতে পারেন। উত্তম পুরুষে লেখা আরম্ভ করে নাম পুরুষে পরের অংশ বিশেষ বর্ণনা করা। এভাবে বয়ানভঙ্গিও কথক পরিবর্তনের মিশ্রন ব্যবহার করা যেতে পারে। জাপানী লেখক আকুতাগাওয়া রায়ুনোসুকে তাঁর বিখ্যাত গল্প ’রশোমন’-এ কৌশলটি স্বার্থকভাবে ব্যবহার করেছেন (এ গল্প অবলম্বনে আকিরা কুরোশাওয়া বিশ্বখ্যাত ’রশোমন’ চলচ্চিত্রটি নির্মান করেছিলেন)।

১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১২:৩৮

এনামুল রেজা বলেছেন: হুম। ঠিক আছে তাহলে। আমিতো উত্তম পুরুষেই লিখেছি গল্পটা।

রিউনুসুকে আকুতোগাওয়া। আধুনিক জাপানী গল্পের জনক এই মহান গল্পকার আমার পাঠ্যতালিকায় খুব প্রিয় নাম। তার রাশোমন গল্পটার কথা বলি- একটা খুনের বর্ণনা চারজন করেছে চার রকম ভাবে। পাঠককে ঠিক করতে হবে কোন বর্ণনাটা ঠিক বা সত্যি। বিচিত্র গল্প!

গল্পের ওই প্যাটার্ণ আমারও খুব প্রিয়।

৯| ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১:০৫

বিদ্রোহী বাঙালি বলেছেন: তুমিই মনে হচ্ছে ঠিক আছে। আমিই বরং গুলীয়ে ফেলেছিলাম। :(

১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১:২২

এনামুল রেজা বলেছেন: আমরা কত কিছুই তো গুলিয়ে ফেলি ভাইজান। এইটা ব্যাপার না। :D

১০| ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৫৬

শায়মা বলেছেন: মুগ্ধ হলাম ভাইয়া!!


মনটাও খারাপ হলো!!!

১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১:২৭

এনামুল রেজা বলেছেন: ধন্যবাদ জানবেন শায়মা।
লিখতে লিখতে আমার নিজেরও মন খারাপ হয় মাঝেমধ্যে।

ভাল থাকা হোক। শুভকামনা রইলো।

১১| ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১০:৪০

এহসান সাবির বলেছেন: শুভ বসন্ত!

১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১১:৪৫

এনামুল রেজা বলেছেন: শুভ বসন্ত। :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.