নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমাকে খোঁজনা তুমি বহুদিন, কতোদিন আমিও তোমাকে..
১
এখন কী নিয়ে লেখা যায়?
কবিতা?
কবিতা নিয়ে কী কথা লিখবো? আমি তো কবি নই।
কবিতা নিয়ে লিখবে সেজন্য কবি হওয়া তো জরুরী না।
তাহলে কী জরুরী?
নিজের সাথে কথোপকথন হঠাৎ থমকে গেল। কেও বেল টিপেছে। আমি খাতা কলম ফেলে দরোজা খুলতে উঠলাম।
স্বভাবের এ দিকটা খানিক স্বাভাবিক আমার। দরোজা খোলার আগে কে এসেছে ওপাশে জানতে চাই। এই মুহূর্তে গলা খানিক উচ্চমার্গ্যে তুলে জিজ্ঞেস করলাম- কে?
ওপাশ থেকে খুব নরম স্বরে কেউ জবাব দিল- আমি।
আমিটা কে ভাই?
ওপাশ থেকে সেই নরম স্বরের পুনরাবৃত্তি হল। আমি, আমি মিলু।
সামান্য ভাবনায় পড়লাম। মিলু? মিলু কে? এই নামের কাওকে কি চিনি? নাহ, মনে পড়ছেনা তো!
গলা চড়িয়েই বললাম, দুঃখিত ভাই। আপনাকে চিনতে পারছিনা। ভুল বাসায় এসেছেন।
ওপাশ থেকে সেই নরম স্বর এবার খানিকটা গম্ভির হল- আমি ভুল বাসায় আসিনি রতন।
অবাক হয়ে দরোজা খুললাম ।
২
শাদা খদ্দরের পাঞ্জাবী-পাজামা পরা লোকটাকে কি আমি চিনি? এত চেনা কেন লাগছে? এ মুহুর্তে আমার ড্রইং রুমের সোফায় বসে আছে লোকটি। হাতে চায়ের কাপ। ভেবে বসার কারণ নেই, আমি খুব অতিথিপরায়ন একজন মানুষ। অনাহূত অচেনা অতিথি ঘরে প্রবেশ করেই আমার সোফায় এসে বসেছেন। বিনয়ের তোয়াক্কা না করেই বলে উঠেছেন- আমায় চা খাওয়াতে পারেন এক কাপ?
চা ফ্লাস্কে ভরাই ছিল। এক কাপ ঢেলে তার হাতে দিতে আমার তেমন সমস্যা হয়নি।
তিনি ছোট ছোট চুমুক দিচ্ছেন চায়ের কাপে। চোখের দৃষ্টি নিচের দিকে।
হঠাৎ চমকে উঠলাম। আমার সামনে যেই ব্যাক্তিটি বসা তাকে আমি চিনি! আশ্চর্য্য এও সম্ভব? আমি সারাদিনের বেশির ভাগ সময় যার জগতে ডুবে থাকি, আমার চেতনা জুড়ে যে মানুষটির সৃষ্টি নাড়া দিতে থাকে নিশিদিন!
জীবনানন্দ!
৩
অবাক ভাবটা বেশিক্ষন থাকেনি। জীবনানন্দ আমার সামনে বসে আছেন, যেন এটি খুব স্বাভাবিক ব্যাপার। তার চোখ দুটো আসলেই বড়ো গভীর। শোভনার চোখ কি এই চোখের চেয়ে বেশি সুন্দর ছিল? তিনি বলে উঠলেন- তুমি অবাক হলে নাকি রতন?
অবাক হয়েছি। এটা সম্ভব? আপনি আমার রুমে বসে আছেন!
জীবন বাবু বললেন এটা অসম্ভব না। অসম্ভব হলে আমি তোমার সামনে বসে আছি কিভাবে?
আচ্ছা, সেটাইতো।
আমি কেন এসেছি জানতে চাওনা?
হ্যাঁ, জানতে তো চাই। ইভেন আমি খানিক আগে কবিতা নিয়ে লিখতে বসেছিলাম। সেখানে নির্ঘাৎ আপনার কবিতার লাইনেরা ঢুকে পড়তো।
জীবনানন্দ বিমর্ষ কন্ঠে বললেন – আর কবিতা! ওসব আর আসেনা আজকাল।
কবিতা আসেনা? আপনার?
হুঁ। বাস্তবিক আসেনা।
বড়ো মানুষেরা হেঁয়ালি পছন্দ করেন। আমি তাই এড়িয়ে গিয়ে বললাম- আপনি বলতে চাইছিলেন, আমার কাছে কী একটা কাজে এসেছিলেন।
ও আচ্ছা, কী কারণে এসেছিলাম? তেমন গুরুত্বপূর্ণ কিছুনা। তুমি তো কবিতা নিয়ে লিখতে চাচ্ছিলে। ধূসর পান্ডুলিপির একটা কবিতা আছেনা?
কোনটা?
১৩৩৩।
কবি সাহেব,ওটা আমার খুব প্রিয় কবিতা।
সেটা কথা না। বলছিলাম, কবিতাটা আমায় একটু শোনাবে? ২য় স্তবকটা?
৪
জীবনানন্দ এসেছিলেন। চা খেয়ে আবার চলেও গেলেন। আবার কবিতা নিয়ে লিখতে বসেছি। এমন সময় ফোন বেজে উঠলো। মীরার ফোন। হঠাৎ কী মনে হল! আমি ফোনটা ধরলাম না। মীরা কেন আজও আমাকে ফোন করে!
আমি রাইটিং প্যাডের দিকে তাকালাম। কবিতা নিয়ে কিছু লেখা হয়নি সেখানে। লিখেছি ১৩৩৩।
আমারে চাওনা তুমি আজ আর জানি
তোমার শরীর ছানি
মিটায় পিপাসা
কে সে আজ!- আমি এই সমুদ্রের পারে
বসে আছি একা আজ- ঐ দূর নক্ষত্রের কাছে
আজ আর প্রশ্ন নাই- মাঝরাতে ঘুম লেগে আছে
চক্ষে তার- এলোমেলো রয়েছে আকাশ!
কাল আবার জীবনানন্দ আসবে,আমি জানি। মীরাও কি আবার ফোন করবে? ওর ফোনটা আমি আর কোনদিন ধরবোনা।
যে ভালবাসা ১৩৩৩ এ মিটে গেছে,আজ সে শুধুই ধুসর পান্ডুলিপি হয়ে থাক।
---------------
১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:২১
এনামুল রেজা বলেছেন: আন্তরিক ধন্যবাদ পাঠ ও প্রতিক্রিয়ার জন্য।
ভাল থাকা হোক। শুভদুপুর।
২| ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১:১৬
দিশেহারা রাজপুত্র বলেছেন: অনেক ভালো লাগল।
+++
১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:২২
এনামুল রেজা বলেছেন: ধন্যবাদ অশেষ রাজপুত্র ভাই।
শুভদুপুর।
৩| ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১:১৭
হাসান মাহবুব বলেছেন: গল্পটা আরেকটু বিস্তারিত হলে ভালো হতো।
১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:২৩
এনামুল রেজা বলেছেন: হুম, গল্পটা আরেকটু বড় করাই যেত। সেকেন্ড ভার্শন একটা লিখে ফেলবো কিনা ভাবছি।
শুভ দুপুর হামা ভাই।
৪| ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:১৪
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
চমৎকার কথার আয়োজন!
এমন করেই বুঝি গল্প হয়!!
ধন্যবাদ লেগে থাকুন্য।
১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:০৭
এনামুল রেজা বলেছেন: ধন্যবাদ নূর ভাই।
৫| ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:২৬
আরণ্যক রাখাল বলেছেন: অসাধারণ লিখেছেন| ১৩৩৩ কবিতাটা পড়িনি| এবার পড়ে নেব| ধন্যবাদ এত সুন্দর একটা কবিতার খোজ দেয়ার জন্য| গল্পে অনেক ভাললাগা
১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:১১
এনামুল রেজা বলেছেন: পাঠ ও প্রতিক্রিয়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ আরণ্যক রাখাল।
১৩৩৩ পড়ে ফেলুন। কি যে অসাধারণ সব লাইন। কি গভীর এক বিষাদ!
ভাল থাকা হোক ভাই।
৬| ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ৯:১২
সুমন কর বলেছেন: ভিন্ন রকম চমৎকার একটি লেখা পড়লাম।
৪র্থ ভালো লাগা।
১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:১৭
এনামুল রেজা বলেছেন: সুমন ভাইকে ধন্যবাদ।
চমৎকার মন্তব্যের জন্য ভাললাগা।
শুভকামনা রইলো।
৭| ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১০:০৩
বঙ্গভূমির রঙ্গমেলায় বলেছেন:
গল্পে ভিন্নতা আছে।
ভাল লাগল খুব।
১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:২৬
এনামুল রেজা বলেছেন: ধন্যবাদ জানবেন।
৮| ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১১:১৮
বিদ্রোহী বাঙালি বলেছেন: আজ কি তোমার মধ্যে জীবনানন্দ ভর করেছে নাকি? প্রিয় কবির প্রিয় একটা কবিতাকে ঘিরে গল্প লিখেছে। যদিও বিস্তৃতি কম এবং অনেক কথাই অব্যক্ত রয়ে গেছে, তারপরও ভালো লাগলো লেখার গুণে।
কবিতার যে অংশ বিশেষ তুমি তুলে ধরেছ, তাতে মনে হয় মাঝখানে দুটো পঙক্তি বাদ পড়ে গেছে। মিলিয়ে নিতে পারো।
আমারে চাওনা তুমি আজ আর,- জানি;
তোমার শরীর ছানি
মিটায় পিপাসা
কে সে আজ!- তোমার রক্তের ভালোবাসা
দিয়েছ কাহারে!
কে বা সেই!- আমি এই সমুদ্রের পারে
ব’সে আছি একা আজ,- ওই দূর নক্ষত্রের কাছে
আজ আর প্রশ্ন নাই,- মাঝরাতে ঘুম লেগে আছে
চক্ষে তার!- এলোমেলো রয়েছে আকাশ!
নিরন্তর শুভ কামনা রইলো রেজা। বাসন্তী এর ভালোবাসা দিবসের শুভেচ্ছা জানবে।
১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:৪০
এনামুল রেজা বলেছেন: গল্পটার বিস্তৃতি ইচ্ছে করেই বাড়াইনি। ধরা যাক এটা একটা ধোঁয়ার কুন্ডলী। যেমন জীবনানন্দের কবিতা।
আমাকে প্রতি মুহুর্তেই পেয়ে বসে।
অতি দীর্ঘ কবিতাটার চুম্বক অংশ দিয়েছি। আমার মুখস্থ কবিতা। বহুবার পড়া।
বসন্তের শুভেচ্ছা আপ্নাকেও ঘাসফুল ভাই।
৯| ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৫:৩০
সেলিম আনোয়ার বলেছেন: সুন্দর ।
২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৫:৩৬
এনামুল রেজা বলেছেন: ধন্যবাদ।
১০| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১০:১১
প্রামানিক বলেছেন: চমৎকার লাগল। ধন্যবাদ
২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১:৫৩
এনামুল রেজা বলেছেন: ধন্যবাদ জানবেন শহিদুল প্রামানিক ভাই।
১১| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ৮:৫২
মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন:
সুন্দর হয়েছে। কিন্তু ভেবেছিলাম আরও কিছু আছে।
২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১২:৩১
এনামুল রেজা বলেছেন: আরও কিছু আছে। আই উইশ..
©somewhere in net ltd.
১| ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১:০০
কলমের কালি শেষ বলেছেন: সুন্দর লেখা । ভাল লাগল । লেখায় অন্যরকম আবেশ আছে ! ++++