নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার সম্পের্ক যে দিন কিছু জানতে পারবো সে দিন অবশ্যই লিখবো!

মাগুর

স্বীয় স্বত্ত্বার সহিত সত্যের সন্ধানে সর্বদা সচেষ্ট

মাগুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

আপনি কি তাদের কান্না শুনতে পাচ্ছেন?

০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৩:৪২

অনেক দু:খ আর লজ্জা নিয়ে আজ পোস্টটি লিখতে বসলাম। আপনি কি শুনতে পাচ্ছেন তাদের গুমরে ওঠা আর্তনাদ? তাদের কান্না? অনুভব করতে পারছেন তাদের বুক ভরা হাহাকার, কষ্ট গুলোকে? আপনার কানে কি একবারো যায়নি তাদের আর্ত চিতকার? তাদের শরীরের যন্ত্রণা গুলোও কি আপনার হৃদয়ে একটুও আঁচড় কাটেনি? বুঝতে পারছেন না আমি কার কথা বলছি?



আমি সেই সব অসহায় নারীদের কথা বলছি যারা মানুষরূপী কিছু হায়েনার লালসার শিকার। যাদের শরীর আজ ক্ষত-বিক্ষত সমাজের কিছু কীটের আক্রমনে, যাকে এক কথায় প্রকাশ করতে চাইলে বাংলা শব্দের ভান্ডার থেকে কঠিনতম শব্দ “ধর্ষণ” কে বেছে নিতে হয়। তারা আমাদের বোন, আমাদের মেয়ে, আমাদেরই প্রিয়জন। তারা আজ নিরাপদ নয় আমাদেরই মাঝে! কেন? কে দেবে এই প্রশ্নের জবাব? আর কিইবা এই ধর্ষণের প্রতিকার? কি দিয়ে দেবেন আপনি তাদেরকে সান্তনা? কিভাবে মুছে ফেলবেন তাদের দু:সহ স্মৃতিগুলোকে? তাদের দু:স্বপ্ন গুলোকে? তাদের শরীরে দাগ হয়তো মুছে যাবে, কিন্তু মনের দাগ মুছবে কি? হাজারো সমস্যায় জর্জরিত এই দেশে কোন সমস্যা নিয়ে কখন, কার কাছে, কি ভাবে প্রতিবাদ জানাবো সেটা বুঝতেই তো দিন চলে যায়। এত কিছুর মাঝে ধর্ষণের শিকার মেয়ে গুলোকে নিয়ে ভাবার মতো সময় কি আপনাদের আছে? থাকলে পড়তে থাকুন লেখাটি....



প্রশ্ন : ১: আইনের ভাষায় ধর্ষণ কি ?

উত্তর : ধর্ষণ হলো কোন পুরুষ বিবাহ বন্ধন ছাড়া ষোল বছরের অধিক বয়সের কোন নারীর সাথে তার সম্মতি ছাড়া বা ভীতি প্রদর্শন বা প্রতারণামূলকভাবে তার সম্মতি আদায় করে; অথবা ষোল বছরের কম বয়সের কোন নারীর সাথে তার সম্মতিসহ বা সম্মতি ছাড়া যৌন সঙ্গম করা।

সূত্র: জাতীয় ই-তথ্যকোষ



আইনের ভাষায় ধর্ষণের সংজ্ঞা পড়ে কে কি বুঝলেন জানি না! চার পা বধে মাটিতে ঠেসে চেপে ধরে গরু জবাই করার মতো নির্মম দৃশ্য তো আপনাদের প্রায় সবাই দেখেছেন। এখন আর একটি দৃশ্য চিন্তা করে দেখুন, নির্জন কোন জায়গায় অসহায় একটি মেয়েকে কিছু নরপশু তাদের লালসা পূরণের জন্য মুখ চেপে ধরে পালাক্রমে শারীরিক অত্যাচার চালিয়ে যাচ্ছে, ক্ষত-বিক্ষত করছে মেয়েটির দৃর্বল শরীর-মন! তারা বুঝতেও চাইছে না মেয়েটির পক্ষে এত অত্যাচার সহ্য করা সম্ভব না। মেয়েটিও বুঝতে পারছেনা তার সাথে কি হচ্ছে! কেন হচ্ছে! তার অপরাধটাই বা কি! এই দৃশ্যটি কি গরু জবাই করার চেয়েও নির্মম না? আর যদি এখনো আপনি বুঝতে না পারেন তাহলে ঐ মেয়েটির জায়গায় কল্পনা করুন আপনার বোনকে অথবা আপনার মেয়েকে, আপনার প্রতিবেশী কেউ হলেও হবে।



কি? ক্ষেপে গেলেন নাকি আমার উপর? কল্পনা করতে পারছেন না? কষ্ট হচ্ছে? মাথার ভেতর যন্ত্রণা শুরু হয়ে গেছে? নাকি আপনার সুশীল মন কল্পনায় আনতেই চাচ্ছে না আপনার কোন আপনজনের ধর্ষণের ঘটনাটি? এটা স্বাভাবিক। কারো পক্ষেই সম্ভব না এধরণের কোন কিছু কল্পনা করা বা সহ্য করা। আর আমার পক্ষেও সম্ভব হয়নি, হচ্ছে না। তাই তো আপনাদের কাছে এলাম। তাহলে এবার ভেবে দেখুন সেই সব মেয়ের কথা যারা ধর্ষণ নামক বিভীষিকার শিকার হয়েছে, তাদের কি অবস্থা? ভেবে দেখুন টাঙ্গাইলের সেই মেয়েটির কথা, সাভারের সেই মেয়েটির কথা, ভেবে দেখুন সেই সব নারীদের কথা যাদেরকে এই নির্যাতনের ভেতর দিয়ে যেতে হয়েছে। যেটা আমাদের কল্পনা করতেও কষ্ট হচ্ছে, সেই অসহায় মেয়ে গুলোকে সেটা সহ্য করতে হয়েছে। ধর্ষণ যে শুধু তার সতীত্ব কেড়ে নিয়েছে তা নয়, কেড়ে নিয়েছে তার স্বত্বাকে, তার ছোট ছোট স্বপ্নগুলোকে, তার আনন্দ আর হাসি গুলোকে, তার বেঁচে থাকার প্রেরণাকে। কোন ভাবেই তাদের সে ক্ষতি আর পূরণ করা যাবে না।



সাম্রতিক একটি ধর্ষণের ঘটনায় পুরো ভারতে মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছে, এমনকি মন্ত্রীরাও রাজপথে নেমে বিচার চাইছে, চাইছে শক্ত আইন। আর আমাদের মিডিয়াও নানা রকম মাসালা লাগিয়ে ২৪ ঘন্টা সে খবর নিয়ে ব্যবসা করছে। কিন্তু আমাদের দেশের কোন মেয়ের ধর্ষিতা হওয়ার প্রতিবাদ যেন হাতে গোনা কয়েকটা মানববন্ধন, ফেসবুক-ব্লগের কিছু পোস্ট, সুশীলদের দেশ গেলো, দেশ গেলো হাহাকার আর ধর্ম ব্যবসায়ীদের ফতোয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ! কেন? একাত্তরের স্বাধীণতা যুদ্ধে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী বাংলাদেশের মেরুদন্ড ভেঙে দেওয়ার জন্য যে ঘৃণ্য এবং কলংকিত কাজ গুলো করেছিলো তার মধ্যে ধর্ষণ অন্যতম। অবশ্য আমাদের বীর মুক্তিযোদ্ধারা মাত্র ৯ মাসের যুদ্ধে তাদেরকে পরাজিত করে দেশ থেকে বিতাড়িত করেছিলো। কিন্তু এই ২০১৩ সালে যখন দেখি মানুষরূপী কোন হায়েনা আবারো সেই ঘৃণ্য পিশাচদের মতো আমাদের মা-বোনদের ইজ্জতের উপর হামলা করছে তখন ধিক্কার দিই নিজেকে। আমি আর কোন ধর্ষিতা নারীর আর্তনাদ শুনতে চাই না, আমি আর কারো স্বপ্ন ভেঙে যাওয়া দেখতে চাই না। চাই না আর কারো জীবন নষ্ট হওয়া দেখতে। আর তাই আমরা Lend a hand -এর বন্ধুরা আগামী ৭ জানুয়ারী ২০১৩ বিকাল ০৩:৩০টায় জাতীয় প্রেস ক্লাব, ঢাকায় যাচ্ছি প্রতিবাদ জানাতে। আপনিও চলে আসুন। এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে চাইলে এখানে ক্লিক করুন: বিস্তারিত

এছাড়াও যোগাযোগ করতে পারেন এই নাম্বারে: 01717484442 (শোয়াইব)





লেখাটি পড়ে যদি সেই সব অসহায় মেয়েদের জন্য আপনার মনে এতটুকু সহানুভূতি জাগে তাহলে তাদের পাশে এসে দাঁড়ান। আপনাদের উপস্থিতী এই প্রতিবাদকে আরো দৃঢ় করে তুলবে, শক্তি যোগাবে সেই সব হিংস্র নরপশুদের শাস্তির ব্যবস্থা করতে। যারা হয়তো কোন একদিন আমার আপনার পরিবারের উপর হামলে পড়তে পারে......। আর যারা ঢাকায় আসতে পারছেন না তারা নিজ নিজ এলাকায় প্রতিবাদ গড়ে তুলুন।



***আপনারা যে যেখানে প্রতিবাদ করছেন আমরা সবার সাথে আছি। আপনাদের যে কোন প্রতিবাদ কর্মসূচীর কথা আমাদেরকে জানান। আমরা সাথে সাথে এই পোস্টটি আপডেট করে দিব। মনে রাখবেন, “দশের লাঠি, একের বোঝা” আর আমরা সেই দশের লাঠি গুলোকে একত্রিত করে দেশের বোঝাগুলোকে দূর করবো।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.