নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ঈশ্বর পটল তুলছে - নীৎসে/নীশে/নিৎচা

উদাসী স্বপ্ন

রক্তের নেশা খুব খারাপ জিনিস, রক্তের পাপ ছাড়ে না কাউকে, এমনকি অনাগত শিশুর রক্তের হিসাবও দিতে হয় এক সময়। গালাগাল,থ্রেট বা রিদ্দা করতে চাইলে এখানে যোগাযোগ করতে পারেন: [email protected]

উদাসী স্বপ্ন › বিস্তারিত পোস্টঃ

মাঝরাইতে গুটুর গুটুর

৩০ শে মে, ২০১৫ ভোর ৪:১৭

১.

: দোস্ত, দেশে তো ধর্ষনের মহামারী শুরু হইয়া গেলো। সেদিন একখান কাহিনী পড়লাম, শার্লক হোমের বাপরে আনলেও এইডার ফয়সালা হইতো না।
: কি কাহিনী?
: কাহিনী হইলো এক পাহাড়ী মাইয়া লইয়া। ১৮ বছর ধইরা তার ধর্ষন মামলা চলতাছে। তার লাশের খুজ পাওয়া যায় নাই। তার মানে সে যদি বাইচা থাকে..... বুইজ্জা লও।
: কাহিনীডা কি কইবা তো।
: কাহিনী হইলো পাহাড়ী এক মাইয়া, নেতা নেতা ভাব। তো হঠাৎ একদিন তারে পাওয়া গেলো না। পরে পুলিশের কাছে গেলো, অনেক ছানবিন হইলো। কিন্তু কোনো হদিস নাই। পরে মাইয়ার ভাই কয়েকজনের নাম উল্লেখ করলো। এর মধ্যে একজন কইলো সে নাকি দুপুর বেলা মাইয়ারে পুরা উলঙ্গ আর রক্তাক্ত অবস্থায় একটা গাছের সাথে বান্ধা দেখছে। সে মাইয়ার কাছে যাইতে গেলে দেখে এলাকার আরো তিন পোলা সামনে আগাইতেছে। পরে সেই সাক্ষ্মী আবারও গাছে লুকায়। লুকায় দেখে মাইয়ারে দড়ি দিয়া খুলতে খুলতে খুব খারাপ কথা কইতাছিলো আর বুঝা গেলো তারে ঘরের ভিতর নিয়া আরও কয়েক দফা ধর্ষন করবো। পোলা গুলা প্রভাব শালী হওনে সে ডরে আগায় নাই। তার দুইদিন পর সে ঐ জায়গায় আবার গেলে দেখে ঘরে কেউ নাই, ঐ মাইয়াও নাই ঐ পোলাগুলাও নাই। তয় মেঝেতে রক্ত দেখছে।
: তাইলে তো হইয়াই গেলো। এই নিয়া ১৮ বছর গেলো কেমনে? কেসে তো প্রত্যক্ষ দর্শী আছে।
: আর হুনোই না। ওসি লইলো কেস। ওসি তদন্তকারী অফিসাররে পাঠাইলো ঐ বাড়িতে, মেঝে তে গিয়া রক্তের দাগ দেখে। রিপোর্ট লেখে। কিন্তু আসামীর নাম অজ্ঞাত কারনে লেখে নাই। এর কয়েক মাস পর তদন্ত কারী অফিসার স হ ওসি বদলি হইয়া ভালো জায়গায় চইলা যায়। নতুন অফিসার সাব প্রথম থিকা তদন্ত শুরু করে। কোর্টে এদিকে ডেট দেয়। কিন্তু মাইয়ার ভাই তদন্তকারী অফিসারের সেই রিপোর্ট প্রত্যাখ্যান করে।
: কয় কি? বাঘের বাচ্চা!
: এইজন্য আবারও প্রথম থিকা তদন্ত। কিন্তু এর মধ্যে চইলা গেলো ৪ বছর। ততদিনে ঐ বাড়ী ভাইঙ্গা পাকা দালান হইলো। আশেপাশে আরও সেটেলার বাসা বানাইলো। বছর ঘুরতেই ঐখানে রাস্তা হইলো এখন তো পুরা বাজার বইসা গেছে। যাই হোউক বছর ঘুরতে সেই তদন্ত কারী কর্মকর্তা তিনজনের নাম উল্লেখ কইরা রিপোর্ট বানাইলো। কিন্তু কোর্টে জমা দেওনের আগেই আবার বদলি। নতুন অফিসার আইসা আবারও তদন্ত করলো। আর বছর খানি ঘুরলো। এরপর কেস কোর্টে উঠলো। বছর ৩-৪ এইভাবে আরও গেলো। এখন রিপোর্টে যেই সাক্ষীর নাম আছিলো সে মাঝে মাঝে একটু মদ খাইতো, চুরি চামারীর অভ্যাস আছিলো। তো বিপক্ষ উকিল সেইটা ধইরা তারে ধরাশায়ী করলো। এখন পাহাড়ী মানুষ, কখনো কি খায়, কি করে তার কি কোনো ঠিক আছে। বাকী দুইজন সাক্ষী যারা ঐ মাইয়ারে উঠাইতে দেখছিলো তারাও এতদিন পর কনফুজ খাইয়া গেলো। গেলো সেগুলাও বাদ। তাইলে সাক্ষী যদি বাদই হইয়া যায় কেস থাকে কেমনে?
: কেস তো দেখতাছি পুরা উল্টায় গেছে।
: এদিকে জজসাবো পরিবর্তন হইলো। আবারও নতুন বেন্ঞ্চ না কি কয় তা বইলো।প্রথম থিকা আবারও সেই পুরান সাক্ষীগো ডাকাইলো। হঠাৎ রাস্ট্রপক্ষ একখান কুশ্চেন করলো। কুশ্চেন হইলো তিনপর যখন রক্তের দাগ মেঝেতে পইড়া ছিলো তখন মেঝেটা দেখতে কেমুন ছিলো। সাক্ষী আমতা আমতা কইরা কইলো মেঝে মাটির ছিলো। ঐ ঘরে মাঝে মাঝেই সে মদের বোতল রাখতে যাইতো। কিন্তু সেইদিন রক্তের দাগ যখন দেখছে তখন মেঝে উচানিচা ছিলো মনে হয়। কিছু নতুন মাটি দেখছে। তখন উকিল কইলো আশার আলো পাওয়া গেছে। যদি মাইরা ফেলানো হয় তাইলে নিশ্চয়ই মেঝেতে পুতা হইছে। কোর্ট নির্দেশ দিলো শাবল লইয়া খুড়তে। পুলিশ তদন্ত কারী অফিসার লোকজন নিয়া তারপরের দিনই গেলো মাটি খুড়তে কিন্তু গিয়া দেখে চক্ষু চড়কগাছ। সেই খানে ২ তলা দালান। সামনে পাকা রাস্তা। পুরাই এলাহী কান্ডকারখানার বাজার। অখন পাকা বাড়ির মেঝে খুইড়া কেমনে কি বাইর করবো? ফাউন্ডেশনও হইয়া গেছে। এদিকে চাক্ষুস সাক্ষী যদিও টালামাটাল তবুও তার সাক্ষ্যর সাথে কাহিনী মিলে তারেও ফেলা যায় না।
: এতো ডাইলেমার মধ্যে পইড়া গেলাম।
: এদিকে কোনো এক অদৃশ্য শক্তি বার বার ওসি আর তদন্তকারী কর্মকর্তা বদলী করে ওদিকে মানবাধিকার সংগঠন সরকাররে দৌড়ের উপর রাখছে। সরকার না পারে ফেলতে না পারে গিলতে। ওদিকে জজ সাবরাও ঢোক গিলে এমন কেস লইয়া আমি কি করিবো!
: তো কথার মোড়াল কি?
: কথার মোড়াল হইলো দেশে আর ন্যায়বিচার নাই। রাস্তায় কোনো মাইয়া পছন্দ হইছে, তো উঠায় লাও, জায়গা মতো লইয়া আকাম কুকাম কইরা লাশ গুম করো, তোমারে কেউ ফুলের টোকাও দিতে পারবো না। বরং ঐ আকাম থিকা তুমি যেই জোশ পাইবা ঐডা কামে লাগাইয়া মন্ত্রী মিনিস্টার হইয়া যাইতে পারবা। আর একবার মন্ত্রি মিনিস্টার হইলে ডেইলী রাইতে ডিকটিং ডিসটিং!
: তো দোস্ত ক্ষুধা লাগছে। লও কাবাব খাইয়া আসি।
: ধুর! ডেইলি কাবাব খাইতে ভালা লাগে না। লও টাকো খাই!

২.

: তো দোস্ত কি খবর? সেইদিনকার কাহিনী তো শেষ করলা না।
:কুন কাহিনী?
: ঐযে পাহাড়ী মাইয়া গাছে বাইন্ধা, তারপর লাশ উধাও।
: ওহো, এরপর আর কি হইবো, কোর্ট এই ১৮ বছরে ১৫-২০ টা ডেট দিছে। কোনো এক অদৃশ্য শক্তি বারবার তদন্তকারী অফিসার, কখনো জজ সাব কখনো ওসি পরিবর্তন কইরা কেস পিছায়, ওদিকে সরকাররে বিভিন্ন মানবাধিকার এবং পাহাড়ি সংগঠন গুলা দৌড়ের উপর রাখছে। সরকার না পারে কেস খান গিলতে না উগলাইতে। মাইয়ার বড় ভাই বুইড়া হইয়া গেছে, সাক্ষীগুলান কেডায় কই আছে না মইরা গেছে আল্লা জানে। ডাকলে আহে না, আইলে কথা কয় না। হুনো, দেশে গিয়া রাস্তায় কোনো মাইয়া পছন্দ হইলো সোজা উঠায় লইয়া আকাম কইরা গুম কইরা দিবা। দেখবা কেউ কিছু কইতে পারবো না। ধরতেই পারবো না। ফাওতালে যেই জোশ পাইবা সেই জোশে ইলেকশনে খাড়াইয়া মন্ত্রি মিনিস্টার হইয়া যাইতে পারবা। তারপর ডেইলি রাইতে ডিকটিং ডিসটিং।
: কিন্তু যেই তিন আসামীর নাম উঠছিলো তারা কৈ?
: একটায় নাকি মালয়েশিয়ায় গেছে গা আরেকটা সৌদীতে ভালাই পাত্তী কামায়। আরেকটা হুনছি নাকি কাউন্সিলর হইছে। কয়দিন আগে পাহাড়ী সংগঠনের লগে সেটেলারগো গ্যান্জ্ঞাম হইছিলো তার নেতৃত্বে ঐ পোলায় আছিলো। এলাকার প্রভাবশালী নেতা, একডাকে নাকি এলাকার পোলাপান হাজির। যেই পুলাপান কুটিকালে স্কুলে গিয়া যেই ম্যাডামের কাছে পড়ালেখা শিখলো সেই ম্যাডামের ধর্ষক আর খুনির লিগা আজকা সেইসব পুলাপান জান দিয়া দেয়, মারামারি করে। আল্লার বিচার কই গেছে? পুলাপানও কি করবো? বেকার সব, দুইটা কাচা টাকা পাইলে রাইতের বেলা বার্মিজ মদ আর গাজা খাইতে পারে, এইডাতেই খুশী। কার ঠ্যাকা পড়ছে ১৮ বছর আগে কুন মাইয়ার কি হইছে সেইটা নিয়া ভাবনের।
: দোস্ত, মুডটা নষ্ট হইয়া গেলো। লও আজকা বারে যাই।
: লও, দুইটা টান দিয়া আসি!


(এই লেখার প্রতিটা ঘটনা কল্পনাপ্রসূত। দুজন মদ্যোপ বন্ধুর কথোপকথনে সত্য খোজা বোকামী, তাই নয় কি?)

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ৩১ শে মে, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:০৮

সাদিকনাফ বলেছেন: পাহাড়ী এক সামান্য কাউন্সিলর আর আর সামান্য দুই ছেলের যদি এতো পাওয়ার হয় তাইলে শহরের কাউন্সিলরদের পাওয়ার কেমন হতে পারে?

২৮ শে জুন, ২০১৫ ভোর ৫:৪৬

উদাসী স্বপ্ন বলেছেন: সমস্যা এটা না, সমস্যা হলো বিচারিক ব্যাবস্থা আর এসব সংখ্যালঘুদের কাছে ন্যাবিচার প্রাপ্তির স হজলভ্যতা।


কপাল ভালো সংখ্যালঘু হয়ে জন্মাইনি, যদি জন্মাতাম, তাহলে উষ্টা খেতে খেতে একসময় দেশদ্রোহী জাতিদ্রোহী হয়ে যেতাম!

২| ১৫ ই মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৫:৫০

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: আপনার এই লেখাটা গতকাল পড়লাম। এই কেসটার হয়ত কোনোদিন মীমাংসাই হবে না। নতুন নতুন বদলীর অর্ডার আসবে খালি!!!

১৫ ই মার্চ, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:১৪

উদাসী স্বপ্ন বলেছেন: আমাদের দেশে পার্বত্য অন্চ্ঞল গুলো হলো সরকারী সেনাবাহিনী আর পুলিশদের পিকনিকের জায়গা। তারা পিকনিকে যায় দুই চারটা শিকার, বাড়ীর বৌ রেখে একটু বিরানী খাওয়ার কামনা, তাও যদি ফ্রী আর স্বাদে অতুলনীয় হয় এসবের জন্যই। তার সাথে যোগ দেয় সংখ্যালঘু শিকারে পারদর্শী মুসলমান বাঙ্গালী সেটেলার।

তবে এসব পাহাড়ীদেরও কন্ঠ আছে, সভ্যতা আছে, নিজস্ব শিক্ষা আর উন্নত আচার আছে। কেউ কেউ গর্জে ওঠে। যারা গর্জে ওঠে তাদের পরিনতি এটাই হয়।

মনে পড়ে পূর্ব পাকিস্থান থাকার সময় আমাদেরও এরকম হয়েছিলো। আমাদের কস্টের বিনিময়ে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছিলাম আর পাকিস্থান দিনে দিনে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। পরিনতি কি আমাদের সেটা হবে?

৩| ১৫ ই মার্চ, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:১৭

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: শিরোনাম দেখে ভাবলাম :P :-B
দেখি B:-/ :-&

১৫ ই মার্চ, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:২৬

উদাসী স্বপ্ন বলেছেন: দেইখা খুশী হইছেন?

আপনে খুশী হইলেই খুশী! কারন খুশী হওন ছাড়া আমাগো কিছু করনের নাই। দেশ পরিবর্তনে আমরা বড়ই অক্ষম!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.