নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ফারদীন নিশ্চিন্ত

ফারদীন নিশ্চিন্ত

আমি কে? যেদিন এই প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যাবে সেদিন পৃথিবীতে আর একটাও রহস্য অবশিষ্ট থাকবে না।

ফারদীন নিশ্চিন্ত › বিস্তারিত পোস্টঃ

আগন্তুক বৃদ্ধটি

২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:৪৩

বিকেলের দিকে বাজারে গেলাম।

অনেকদিন ধরে বাজারে যাই না। তাই হাঠাত্‍ মনে হলো আজ একটু বাজারে যাওয়া দরকার।

আমাদের বাড়ি থেকে বাজার বেশি দুরে না। হেটে গেলে ছয় সাত মিনিটের পথ।



সাইকেল নামক যন্ত্রটি থাকার কারণে আজকাল কোথাও হেটে যেতে ইচ্ছে করে না। তাই সাইকেল নিয়ে বের হলাম।

জোরে জোরে প্যাডেল মারতে মারতে বাজারে রওনা হলাম।

বাজারে গিয়ে বন্ধু বান্ধব কাউকে পেলাম না। পেলে জমিয়ে একটু আড্ডা মারা যেত। আজকাল বোধহয় ওরা কেউ তেমন একটা বাজারে আসেনা।



দাদির জন্য ওষুধ কেনার জন্য ডাক্তারের দোকানে। গিয়ে দেখি ডাক্তার নাই।

"ডাক্তার গেলো কই?"

একজন বলল, "বাথরুমে গেছে। এখনই আইসা পড়ব"



আমি অপেক্ষা করতে লাগলাম। কিন্তু ডাক্তারের বাথরুমের কাজ তখনো শেষ হলো না।



অবশেষে বিরক্ত হয়ে আমি চলে এলাম।





মাথাটা গেলো সত্যি সত্যি গরম হয়ে। গরম মাথা নিয়ে সাইকেল নিয়ে বাজারের মধ্যে পাক খেতে লাগলাম।



আমাদের এখানে আবার ফ্রি পত্রিকা পড়ার সিষ্টেম আছে। দেয়াল জুড়ে প্রতিদিন পত্রিকা লাগানো হয় আর দাড়িয়ে দাড়িয়ে সেখান থেকে সবাই পত্রিকা পড়ে।



আজকের পত্রিকাটা আমার পড়া হয়নি। তাই দাড়িয়ে দাড়িয়ে পত্রিকার হেডলাইনগুলো পড়তে লাগলাম।



আজকের পত্রিকায় হিন্দিসিনেমার বেশ জনপ্রিয় এক অভিনেত্রির ছবি ছাপা হয়েছে। অভিনেত্রী ক্যামেরার দিকে পিঠ দিয়ে দাড়িয়ে আছেন। তার অনাবৃত পিঠ বেশ কোমল দেখাচ্ছে।

ছবিটা খুব বড় করে ছাপা হয়েছে। আজ এই আজ এই অভিনেত্রীর জন্মদিন। আমি খবরটা মন দিয়ে পড়তে শুরু করলাম।



আমার কধে কারো হাতের মৃদু স্পর্শে আমি চমকে ওঠলাম। তাকিয়ে দেখি এক বৃদ্ধ দাড়িয়ে আছে।

আমার দিকে তাকিয়ে বৃদ্ধ একটু মৃদু হেসে বলল, নাম কি তোমার?

আমি তখন আমার নাম বললাম।

- বাহ! বেশ ভাল নাম।

- জ্বি।

- নামের অর্থ জান?

- জ্বি না।

- পত্রিকার দিকে তাকিযে এতখন কি করছিলে?



এবার আমি খুব বিরক্ত হলাম। একটু ঝাঝালো কন্ঠে জবাব দিলাম



- তা দিয়ে আপনার কি দরকার?

- রাগ করছো কেনো। তোমাকে আমি কিছু কথা বলতে চাই।

- কি বলতে চান বলুন।

- হারাম কাজ থেকে আমাদের সবার বিরত থাকা উতিত।

- তো?

- এতক্ষন ধরে তুমি একটা বেগানা, বেহায়া, শয়তান মেয়েলোকের উলঙ্গ পিঠের দিকে তাকিয়ে আছো। এটা হারাম। তোমার এখন তওবা করা উচিত।



এবার আমি বেশ রেগে গেলাম।



- কি বলতে চান আপনি?

- রেগে যাচ্ছ কেন বাবাজি। আমি যে কথাগুলো বললাম তা অতি উত্তম খাটি কথা।

- অপনার কথা মানতে গেলে তো দেখছি পত্রিকা পড়া বাদ দিতে হবে।

- হ্যা, বাদ দিতে হবে। কারন পত্রিকা পড়া হারাম।

- কি বলছেন এসব?

- যা বলছি, ঠিকই বলছি। যে দেশের পত্রিকায় নারীর উলঙ্গ পিঠের ছবি পাতার অর্ধেকটা জুড়ে ছাপানো হয় সে দেশের পত্রিকা পড়া মুসলিমদের জন্য হারাম।

- অপনি নিশ্চই পত্রিকায় ছাপানো ছবিটার দিকে তাকিয়েছেন।

- পত্রিকা পড়া অনেক আগেই বাদ দিয়েছি বাবাজি। তবে আজ হঠাত্‍ মনে হলো দেশের কি অবস্থা জানা দরকার। ছবিটার দিকে হঠাত্‍ চোখ পড়ে গেল। পাপ আমার হয়েছে তওবা অবশ্যই করব। তবে কোনদিন আর পত্রিকা পড়ব না।





বৃদ্ধ আরো কিছু বলতে চচ্ছিল কিন্তু আমি আর কিছু শুনতে চাচ্ছিলাভ না। তাই সরে আসলাম।

মনে মনে ভাবলাম, ক্যামেরার সামনে এই উলঙ্গ পিঠ নিয়ে দাড়াতে এই জনপ্রিয় এই অভিনেত্রী লজ্জাবোধ করেনি। ছবি তুলতে ক্যামেরাম্যান অস্বস্তিবোধ করেনি। পত্রিকার সম্পাদক এক বিবস্ত্র নারীর ছবি একটা মুসলিম দেশের পত্রিকায় ছাপাতে দ্বিধাবোধ করেনি। তবে ছবির দিকে তাকাতে আমার কিসের দ্বিধা?

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১২:৩৩

রাজীব নুর বলেছেন: ভালো লিখেছেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.