নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এক ভদ্রলোকের কথা কল্পনা করুন যিনি শহরে চাকুরী করেন। গ্রামে তার কয়েক বিঘা জমি আছে। বছরে পাচ হাজার টাকা দেওয়ার শর্তে ভদ্রলোক সেই জমিগুলো একজন গরীব চাষাকে দিয়েছেন চাষ করার জন্য। ভদ্রলোক শহরে এতটাই ব্যাস্ত থাকেন যে, বছরে একবারও গ্রামে সশরীরে হাজীর হওয়া তার পক্ষে সম্ভব হয়না। বছরান্তরে চাষা নিজে শহরে এসে পাওনা টাকাটা পরিশোধ করে যায়। সবকিছু ঠিকঠাকই ছিল হঠাৎ ঘটে বিপত্তি। কয়েক বছর চাষাকে টাকা পরিশোধ করতে আসতে দেখা যায়না। ঘটনা কি জানার জন্য শত অপারগতা সত্বেও বাধ্য হয়ে ভদ্রলোককে গ্রামমুখো হতেই হল। গ্রামে যাওয়ার পরই তিনি বুঝতে পারলেন আসল ঘটনা কি। এতদিনে চাষা জমিটা দখল করার প্রায় সব রাস্তা পাকা করে ফেলেছে কেবল দলিল নেই এই যা। বছরে যে পাচ হাজার টাকা ভদ্রলোকের জন্য বরাদ্দ ছিল সেটা খরচ করেছে গ্রামের লোকদের পিছনে। তার জমিতে যা চাষ হয় গ্রামের কয়েকঘর লোক তা থেকে পর্যাপ্ত পরিমান পায়। কিন্তু বেচারা শহুরে লোকটা জমির মালিক হওয়া সত্বেও সব কিছু থেকে বঞ্চিত থেকে যায়। ভদ্রলোক চাষার নিকট পাওনা টাকা চাইতেই সে চেচিয়ে বলে
কিসের টাকা ?
গ্রামের অন্য সবার সাথে কথা বলেও সুবিধা হলনা। তাদের একই কথা
বেচারা গরীব মানুষটা তো শান্তিতেই করে কর্মে খাচ্ছে কেন বাপু তুমি এখন এসে ফিতনা ফাসাদ সৃষ্টি করছো ?
এহেনো করুন পরিস্থিতিতে ভদ্রলোকের অতল সমুদ্রে তলিয়ে যাওয়ার মত অবস্থা হল। হঠাৎ দেখা গেল একজন বয়স্ক সম্মানিত ব্যাক্তি সেই পথ দিয়েই দ্রুত পায়ে কোথাও যাচ্ছেন। তাকে দেখেই উপস্থিত সবাই তড়ি ঘড়ি করে উচু স্বরে সালাম দেয়। ভাব সাব দেখে মনে হল তিনি এগ্রামের সর্বমান্য ব্যক্তি। ভদ্রলোক শেষ চেষ্টা হিসাবে তাকেই সব কিছু খুলে বললেন। সর্বমান্য ব্যাক্তিটি গনতন্ত্রমনা ছিলেন। সব শুনে তিনি কিছুক্ষন নিরব থাকলেন। আশপাশেও পিন পতন নিরবতা বিরাজমান ছিল। বোঝাই যাচ্ছে আগন্তুক যে রায় দেবেন তাই গ্রহন যোগ্য হবে। বেশ কিছুক্ষন চিন্তা গবেষনা করে গ্রাম্য ভদ্রলোকটি মুখ তুলে চিবিয়ে চিবিয়ে বললেন
-এ গ্রামের বেশিরভাগ লোক যার পক্ষে রায় দেয় জমিটি তারই হস্তগত হবে।
এধরনের বিচার শুনে শহুরে ভদ্রলোকটি তো আকাশ থেকে পড়লেন। চোখ কপালে তুলে বললেন,
আমার নিকট তো দলিল প্রমান রয়েছে ভোটাভুটি করতে যাবো কেন
©somewhere in net ltd.