নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শব্দকবিতা : শব্দেই দৃশ্য, শব্দেই অনুভূতি [email protected]

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই

দুঃখের কবিতাই শ্রেষ্ঠ কবিতা। ভালোবাসা হলো দুঃখ, এক ঘরে কবিতা ও নারী।

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই › বিস্তারিত পোস্টঃ

রীতু আরাশিগে (দ্বিতীয় পর্ব)

২৪ শে আগস্ট, ২০১৮ সকাল ১০:১৪

প্রথম পর্ব এখানে

বাংলাদেশে ফেরত আসার দিন কলম্বো বিমানবন্দরে যাওয়ার প্রাক্কালে কিছুটা পথ ঘুরে মাতুগামা উপশহরে আসা হলো আরাশিগেকে উপহারটা দেয়ার জন্য। কিন্তু আরাশিগের টেলিফোন বুথ তখনো খোলা হয় নি। আশেপাশের দোকানপাটও বন্ধ ছিল। কিছুক্ষণ দিগ্বিদিক পায়চারি করার পর জনৈক পথচারীকে জিজ্ঞাসা করতেই জানা গেলো যে, এখানে আজ ছুটির দিন। মেজরের মন খুব বেদনার্ত হয়ে ওঠে। একটা পথ অবশ্য আছে, এর আগে মেজর সামিরাকে সাথে নিয়ে এখানে এসেছিলেন; তাঁর মাধ্যমে উপহারটা আরাশিগের কাছে পৌঁছে দেয়া যেতে পারে। এই ভেবে বিমানবন্দরের দিকে যাত্রা শুরু করেন।
বিমান বন্দরের পথে যেতে যেতে মেজরের মনে পড়লো, আজও আরাশিগের নাম সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেলো না। শেষবার যখন মেজর সামিরাকে সঙ্গে নিয়ে এসেছিলেন তখন কত কথা হলো মেয়েটার সঙ্গে, অথচ তার নামটাই শুধু জিজ্ঞাসা করা হলো না। আরাশিগে নামটি তাঁর মনের ভেতরে এতখানিই গেঁথেছিল যে তার সাথে কথা বলার সময় মেজরের মনেই হয় নি— তিনি মেয়েটির নাম জানেন না। সেদিন ক্যাম্পে ফেরত যাবার পর থেকেই মেয়েটির নাম জানার জন্য তাঁর মনের ব্যাকুলতা ক্রমশ বাড়ছিল। তিনি অবশ্য ধরেই নিয়েছিলেন যে ওর নাম আরাশিগে হওয়াটা খুবই সম্ভব— এমনকি টেলিফোন বুথের নাম যদি আরাশিগেও হয়, তাহলেও ধরে নেয়া যায় যে আরাশিগের নামের উপরেই টেলিফোন বুথের নামকরণ করা হয়েছে।
ক্যাম্প থেকে একই কনভয় যোগে সোজা রাস্তায় অন্য সবাই বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে রওনা হলেও কেবল মেজর এজাজের জন্য আলাদা একটি জিপ বরাদ্দ করা হয়েছিল। এখানে আরাশিগে নামক তাঁর একটি মেয়ে আছে এ কথাটি অনেকে জানতে পেরেছিলেন; বিদায়ের দিন সেই মেয়েটির সাথে তাঁর সাক্ষাৎ হোক কর্তৃপক্ষের এই অতিমানবিক সৌজন্যবোধ জাগ্রত হওয়ার ফলে মেজর এজাজ মাতুগামা শহরে যাওয়ার একটা দুর্লভ সুযোগ লাভ করেছিলেন। আরাশিগের সাথে তাঁর দেখা হলো না, অধিকন্তু পথিমধ্যে একটা উটকো ঝামেলায় পড়তে হলো; জিপ গাড়ির পেছনের একটি চাকা বার্স্ট হয়ে গেছে। ওটি বদলাতে প্রায় মিনিট বিশেকের মতো সময় চলে গেলো।

গাড়ির চাকা পাংচার হওয়ায় বিমানবন্দরে পৌঁছুতে বিলম্ব হচ্ছিল এবং সঙ্গী শ্রীলংকান অফিসারসহ মেজরের মনে টেনশন বাড়তে থাকে। বিমানবন্দরে পৌঁছে দেখেন যাবতীয় ফর্মালিটি সম্পন্ন করে অত্যন্ত দুশ্চিন্তাগ্রস্ত অবস্থায় কনভয়ের চিফ কোর্ডিনেটিং কর্নেল তাঁর জন্য অপেক্ষা করছেন। তাঁকে দেখেই অফিসারের মুখাবয়ব উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। সামনে এগিয়ে এসে সহাস্যে জিজ্ঞাসা করেন, ‘হ্যালো মেজর, আশা করি আপনার কন্যার সাথে শেষ সাক্ষাৎটি খুব মধুময় হয়েছে।’
‘দুঃখিত কর্নেল, তার দেখা মেলে নি। তার দোকান বন্ধ ছিল, ঐ মার্কেটে আজ পূর্ণ ছুটির দিন কিনা।’
‘ওউফ, ভেরি স্যাড।’ এ অবস্থায় তাঁর প্রতি কর্নেলের অপ্রসন্ন অভিব্যক্তির পরিবর্তে অসাধারণ সৌজন্য প্রকাশে বাংলাদেশি মেজর খুব মুগ্ধ হলেন। কিন্তু সময় খুবই সংক্ষিপ্ত, সঙ্গী জোয়ানরা ধরাধরি করে ব্যস্তভাবে তাঁর মালামাল নামাচ্ছেন, মেজর নিজেও তাঁদের সাথে যোগ দিলেন।
বিমান উড্ডয়নের একটু পরই মেজরের মনে পড়লো যে ভুলবশত এবং ব্যস্ততার কারণে আরাশিগের জন্য কেনা উপহারটা মেজর সামিরার কাছে হস্তান্তর করা হয় নি; ওটা তাঁর সঙ্গেই চলে এসেছে।

এর পরের বছরখানেক সময় খুব হাসি-আনন্দে কেটে যেতে লাগলো মেজর পরিবারে। প্রথম-প্রথম খুব বিচ্ছিন্নভাবে তাঁদের আলোচনায় আরাশিগের নাম উচ্চারিত হতো। এরপর আরাশিগে তাঁদের আলোচনায় এমনই একটা স্থান জুড়ে নিল যে মনে হতে পারে আরাশিগে এই পরিবারেরই একটা অতি আদরণীয় কন্যা, যে তার পিতামাতা ও কনিষ্ঠ ভাইবোনকে ছেড়ে দ্বীপদেশীয় শ্রীলংকায় প্রবাসী হয়েছে। আরাশিগের জন্য কেনা ঝলমলে পোশাকের প্যাকেটটা একদিন খোলা হয়েছিল। শখ করে রীতুকে যখন পরানো হলো তখন সে খুশিতে আত্মহারা হয়ে গেলো। আরাশিগে যদিও বয়সে তার চেয়ে বারোবছরের বড়ো, কিন্তু তার শারীরিক কোষ বৃদ্ধির হার আরাশিগের চেয়ে বেশি এবং তজ্জন্য পরবর্তী বছর তিনেকের মধ্যেই সে আরাশিগের সমান শারীরিক গঠন অর্জন করতে সক্ষম হবে বলেই মেজর মনে করলেন।
রীতুকে পরানোর পর পোশাকটি পুনরায় প্যাকেটবন্দি করে রাখা হয়েছে। শ্রীলংকা থেকে প্রতি বছর অসংখ্য সেনা অফিসার বাংলাদেশে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে আসেন। এমনকি বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিতেও কমিশন লাভের জন্য বহু শ্রীলংকান জেন্টলম্যান ক্যাডেট প্রশিক্ষণরত আছেন। তাঁদের যে কোনো একজনের মাধ্যমে এই প্যাকেটটি শ্রীলংকায় মেজর সামিরার কাছে পাঠিয়ে দেয়া হবে। তিনি অবশ্যই আরাশিগের কাছে ওটি পৌঁছে দেবার ব্যবস্থা করবেন।
কিন্তু বিভিন্ন ব্যস্ততার দরুণ অতি সহসাই কোনো শ্রীলংকান সেনাসদস্যের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হলো না। ঠিক এমন সময়ে মেজর পরিবারে এক বিষাদময় ও হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটলো। এবং পরবর্তী দু বছর সময়টাতে সৃষ্টি হলো তাঁদের পরিবারের করুণতম ইতিহাস।


পনর বছর পরের কথা।
শ্রীলংকান সরকারের আমন্ত্রণে শ্রীলংকায় এসেছেন মেজর জেনারেল এজাজ রহমান চৌধুরি। এদেশে এখনো তামিল টাইগারদের সাথে কেন্দ্রীয় সরকারের কোনো সমঝোতা প্রতিষ্ঠিত হতে পারে নি। বাংলাদেশে পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতীয়দের সাথে সফল শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন পৃথিবীর ইতিহাসে একটা উল্লেখযোগ্য ঘটনা। এল.টি.টি.ই.দের সাথে কীভাবে সমঝোতা প্রতিষ্ঠিত করা যায় সে ব্যাপারে কলম্বোয় একটি সিম্পোজিয়ম অনুষ্ঠিত হবে। নরওয়ে, ভারত, আমেরিকা ও বাংলাদেশসহ পৃথিবীর প্রায় দশটি দেশের প্রতিনিধিগণ এই সিম্পোজিয়মে অংশগ্রহণের জন্য আমন্ত্রিত হয়েছেন। বাংলাদেশের উপরও একটি বিশেষ কেইস স্টাডি থাকবে যাতে মেজর জেনারেল এজাজ রহমান চৌধুরি তাঁর বিশেষজ্ঞ মতামত উপস্থাপন করবেন।
তিনদিনব্যাপী সিম্পোজিয়মের প্রাত্যহিক কর্মসূচিতে কোনো ফুরসত নেই। ইতোমধ্যে তিনি মেজর সামিরার অনুসন্ধান করেছেন। পনর বছর আগের কথা, তাঁরও এতদিনে মেজর জেনারেল হয়ে যাওয়ার কথা, নিদেনপক্ষে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল। বয়স ও চাকরির ক্ষেত্রে অবশ্য সামিরা এজাজ রহামন চৌধুরির চেয়ে জ্যেষ্ঠ ছিলেন। সে হিসেবে এমনও হতে পারে যে এতদিনে তিনি অবসর গ্রহণ করেছেন।
মেজর সামিরার খোঁজ নিতে কর্তৃপক্ষ প্রচুর তৎপরতা প্রদর্শন করলেন। একই নামে আরো বহু অফিসার আছেন। কোন মেজর সামিরা পনর বছর আগে কুকুলেগংগায় বহুজাতিক সামরিক শান্তিরক্ষী প্রশিক্ষণে দায়িত্ব পালন করেছিলেন তার হদিশ মিললো না।
সিম্পোজিয়মে এক কর্নেলের সাথে আলাপ প্রসঙ্গে মেজর সামিরার কথা তুলতেই তিনি উজ্জ্বল হয়ে বলে উঠলেন, হ্যাঁ, তিনি মেজর সামিরাকে চিনেন। এ কর্নেল ঐ সময় ক্যাপ্টেন ছিলেন, তাঁর নাম কালনা; মেজর সামিরার অধীনে থেকেই তিনি সামরিক মহড়ায় অংশগ্রহণ করেছিলেন। তবে দুঃখের বিষয়টি হচ্ছে মহড়ার পরের বছরই মেজর সামিরা জাফনায় এক দুর্ধ্বর্ষ যুদ্ধের সময় বুকে গুলিবিদ্ধ হয়ে যুদ্ধক্ষেত্রে প্রাণ হারান।
জেনারেলের মন খারাপ হয়। একজন পুরোনো বন্ধুর পনর বছর আগেকার স্মৃতি মনে করার চেষ্টা করলেন। সেসব এখন কেবলই দুঃখ দিয়ে যায়।
তৃতীয় দিন সকাল এগারোটায় সিম্পোজিয়মের সমাপনী অধিবেশন শেষ হলো। একই দিন রাত দশটায় জেনারেলের ফিরতি ফ্লাইট। বাসস্থান থেকে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা নাগাদ বের হয়ে যেতে হবে, তার আগের সাত-আট ঘণ্টা সময় সম্পূর্ণ তাঁর নিজস্ব, পুরোটা সময় তাঁর অখণ্ড অবসর।
কিন্তু প্রকৃত অর্থেই তা অখণ্ড অবসর ছিল না। দেশ থেকেই তিনি কিছু পরিকল্পনা করে এসেছেন। এতটুকু নিজস্ব সময় হাতে পেলেই তিনি সেই পরিকল্পনা মতো কাজটি করতে বেরোবেন— কলম্বো শহর থেকে সড়কপথে প্রায় আড়াই ঘণ্টা যাত্রার পর সেই মাতুগামা উপশহরে যাবেন, পনর বছর আগে সেখানে তিনি তাঁর আরাশিগেকে দেখে গেছেন, তাকে পুনর্বার আরেক নজর দেখবার জন্য সেই কতকাল থেকে তাঁর বুকটা অবিরাম হাহাকার করছে।

কিন্তু মাতুগামা আর আগের মতো নেই। ছোটো উপশহরটি এখন চারদিকে বহুদূর পর্যন্ত সম্প্রসারিত হয়েছে। অত্যাধুকি অট্টালিকা গড়ে উঠেছে, সারি সারি বিলাশবহুল অ্যাপার্টমেন্ট, ফ্যাশনেবল দোকানপাট, রাস্তাঘাট— সবকিছু বদলে গেছে ও উন্নত হয়েছে।
আরাশিগের টেলিফোন বুথটি ঠিক কোন জায়গায় ছিল তা ঠাওর করা গেলো না। সেদিনের আরাশিগেকে আজও এখানে অবিকল সেদিনের মতোই পাবেন— তিনি আদৌ এতখানি আশা করেন নি। অবশ্য তার টেলিফোন বুথটিও যে খুঁজে পাওয়া যাবে এ ব্যাপারেও তিনি সুনিশ্চিত ছিলেন না। তবে একটা ব্যাপারে তিনি খুব আত্মবিশ্বাসী হয়েছিলেন, আরাশিগে তাঁকে দেখামাত্রই চিনতে পারবে— কখনো কোথাও এ রকম হয় কিনা বা হয়েছে কিনা তা তিনি জানেন না— হয়ত আরাশিগেও তাঁকে দেখার জন্য অন্তপ্রাণ হয়ে উঠেছিল— সেই পনর বছর আগের দেখা, কিন্তু তাঁকে দেখামাত্রই সে টেলিফোন বুথ থেকে লাফিয়ে ছুটে এসে বাবার বুকে ঝাঁপিয়ে পড়বে— জেনারেল ভাবতেন।
প্রায় ঘণ্টাখানেক খোঁজাখুঁজির পর ক্ষুদ্র একটা তথ্য পাওয়া গেলো— বহুদিন আগে শহরের মাঝামাঝি স্থানে বেশ কয়েকটা টেলিফোন বুথ ছিল, যার একটির নাম ছিল ‘আরাশিগে টেলিফোন সেন্টার’।
কিন্তু শহরের মাঝামাঝি জায়গা, পনর বছর আগে যা উপশহরের প্রান্ত থেকেও কিছুটা দূরে অবস্থিত ছিল, আজ বড়ো বড়ো দালানকোঠায় ভরে গেছে।
এমন কি হতে পারে না যে এসব দালানের একটির মালিক আরাশিগে নিজে? সময় তো বদলায়, যে কারোরই।
কিন্তু আরাশিগের সন্ধান মিললো না।

(আগামী পর্বে সমাপ্য)

২০ জুন ২০০৪

***

'কালের চিহ্ন', একুশে বইমেলা ২০১৬

***

বাকি অংশ কেউ পড়তে চাইলে প্লিজ নীচের লিংক থেকে ডাউনলোড করে সরাসরি ১০৭ নম্বর পৃষ্ঠায় চলে যান।

কালের চিহ্ন



মন্তব্য ২২ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (২২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে আগস্ট, ২০১৮ সকাল ১০:২৫

সিগন্যাস বলেছেন: একটু আগেই প্রথম পর্ব পড়ে এসেছি । এখন এসে দেখলাম দ্বিতীয় পর্বও পোস্ট করে দিয়েছেন । খুবই আগ্রহ নিয়ে পড়লাম । চমৎকার হয়েছে গল্পটা । বিশেষ করে আরাশিগে চরিত্রটা । চলতে থাকুক

২৪ শে আগস্ট, ২০১৮ সকাল ১০:৩৪

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: প্রথম পোস্টে আপনার কমেন্ট থেকে মনে হয়েছিল ওটা আপনি পড়েন নি। আপনার এ কমেন্ট থেকে ভুল ভাঙলো।

অনেক ধন্যবাদ পড়ার জন্য।

এবং আপনার সর্বশেষ পোস্টে এইমাত্র একটা কমেন্ট করে আসলাম। আপনার মগজ ভালো, হাতটা চালু রাখুন।

শুভেচ্ছা।

২| ২৪ শে আগস্ট, ২০১৮ সকাল ১০:৪৬

সনেট কবি বলেছেন: বেশ ভাল লিখেছেন।

২৪ শে আগস্ট, ২০১৮ সকাল ১১:৪৪

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ধন্যবাদ ফরিদ ভাই।

৩| ২৪ শে আগস্ট, ২০১৮ সকাল ১০:৪৯

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: শুভ সকাল মান্যবরেষু,

শ্রীলংকার টেলিফোনবুথের মালকিন কুড়ি বছরের আরাশিগে একদিকে পরিবারের ভরন পোষন করতে যুদ্ধে আহত চলাফেরায় অসামর্থ্য বাবার চিকিৎসা ও বোনদের পড়াশোনা দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে মনের অজান্তেই এক দায়িত্ববান নাগরিক হয়ে গেছে। যে ইংরেজি জানেনা ঠিকই, মেজর সামিরার মাধ্যমে তার বাংলাদেশি আরেক বাবার হৃদয়ে চিরস্থায়ী স্থানের যে কথা বলেছে তাতে তাঁর সুন্দর হৃদয়বানের পরিচয় মেলে। তাই প্রথমবার তার জন্য কেনা ফ্রকটি সময়ের অভাবে কিমবা গাড়ির চাকা পাংচার হওয়ার কারনে না দিতে পেরে মনের মধ্যে রহমান সাহেব একটি বোঝা যেন বহন করে চলেছেন। পনেরো বছর পরে তাই আবার দ্বীপরাষ্ট্রে গেলে তন্নতন্ন করে খুঁজেও না পেয়ে শেষে একটি বটবৃক্ষ রোপন করে তাতে একটি নেমপ্লেট জাতীয় কিছু ঝুলিয়ে দেওয়ার কথা ভেবেছিলেব। কিন্তু হায়! কথায় বলে, man proposed God disposed , ফেরার সময় সেই চিরকুটটিও সঠিক স্থানে দিতে গেলেন ভূলে। ফেরার ফ্লাইটে বসে আবিষ্কার করলেন, সেটি মেজরের পকেটেই রয়ে গেছে।

এদিকে দেশে ক্যানসার আক্রান্ত হয়ে মেয়ে রীতু মারা গেছে। পুত্রও অ্যকসিডেন্টে মারা গেছে। যেকারনে শ্রীলংকান মেয়ের প্রতি মেজরের মনের পরিবর্তন আরও বেড়ে গেল। এক পালিত কন্যা নিয়েছিলেন, কিন্তু দেশে ফেরার আগে স্ত্রীর মুখে শোনেন সেও চলে গেছে। সন্তান হারা মেজরের মনোজগতে এহেন পরিবর্তন গল্পের প্রতিপাদ্য বিষয়।


টাইপোর জন্য ক্ষমাপ্রার্থী।

২৪ শে আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৫:১০

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: চমৎকার! আমি নিজেই কমেন্টটা বেশ কয়েকবার পড়লাম। নিজের লেখার উপর অন্যের মতামত পড়তে যে-কারোরই ভালো লাগে; এবং সেটা যদি প্রশংসাসূচক হয় তবে আনন্দের সীমা থাকে না। সংক্ষেপে খুব চমৎকারভাবে মূল বিষয়টা এখানে তুলে ধরেছেন। গভীর মনোযোগ দিয়ে পড়েছেন। কতখানি সিন্সিয়ার হলে এত মনোযোগ দিয়ে পড়া যায়, তা ভাবছিলাম। সিম্প্‌লি ব্রিলিয়ান্ট। অনেক অনেক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।

৪| ২৪ শে আগস্ট, ২০১৮ সকাল ১০:৫৭

জুনায়েদ বি রাহমান বলেছেন: কাল ডাউনলোড করেছিলাম কিন্তু পড়া হয়নি। এক্ষণি সম্ভবত পড়তে হবে।

২৪ শে আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৫:১১

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ডাউনলোড করার জন্য ধন্যবাদ। মন্তব্য জানতে পারলে খুশি হবো। শুভেচ্ছা।

৫| ২৪ শে আগস্ট, ২০১৮ দুপুর ১২:২৫

বনসাই বলেছেন: বেশ টান আছে আপনার লেখনীতে; ১ম পর্বের শেষের লিংক থেকেই বাকিটা পড়ে নিয়েছি।

বাকি গল্পগুলোও ধীরে ধীরে উপভোগ করার আগ্রহ আছে।

২৪ শে আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৫:১৩

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: বনসাই, প্রথমত আমার ব্লগে আপনাকে স্বাগতম। গল্পটা পড়ে নেয়ার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ। বাকি গল্পগুলোও পড়ার ইচ্ছে প্রকাশ করছেন জেনে খুব খুশি হলাম এবং অনুপ্রাণিত হলাম। অনেক ধন্যবাদ। শুভেছা।

৬| ২৪ শে আগস্ট, ২০১৮ দুপুর ২:২৬

প্যালাগোলাছ বলেছেন: সুন্দর গল্প ।মুগ্ধ হয়ে পড়লাম ।আমার প্রখম মন্তব্য আপনার ব্লগে ।

২৪ শে আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৫:১৯

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: প্যালাগোলাছ, জেনে খুব ভালো লাগলো যে আমার পোস্টেই আপনি প্রথম কমেন্ট করলেন। আপনার ব্লগও ঘুরে আসলাম, কিন্তু ৬ মাস বয়সে আজও কোনো পোস্টও নেই, অন্য কোনো কমেন্ট তো দেনই নি। কারণ কী? যাই হোক শুভেচ্ছা থাকলো। মন্তব্যে অনুপ্রাণিত।

৭| ২৪ শে আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৪:৪১

বাকপ্রবাস বলেছেন: বেশ লাগছ‌ে অপ‌েক্ষায় আছ‌ি

২৪ শে আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৫:২১

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ধন্যবাদ বাকপ্রবাস সাথে থাকার জন্য। শুভেচ্ছা।

৮| ২৪ শে আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৫:২৩

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: শ্রদ্ধেয় মান্যবরেষু,

প্রতিমন্তব্যে আবার আসা। প্রশংসা পেলে সবাই খুশি হয় ঠিকই। কিন্তু আপনার মত প্রতিষ্ঠীত লেখকও যে এতটা প্রশংসা লোভী সেটা জেনে শেষ পর্বে মৃদু সমালোচনা রাখবো বলে ঠিক করেছিলাম, কিন্তু আর করবোনা। যেহেতু গল্পটা আমি পড়েছি কাজেই সদর্থক মন্তব্যই তুলে ধরবো।

অন্তরের বিনম্র শ্রদ্ধা আপনাকে।

২৪ শে আগস্ট, ২০১৮ রাত ৮:৩৬

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: প্রশংসা পেতে ভালোবাসেন না, বা প্রশংসা চান না, এমন মানুষ মনে হয় পৃথিবীতে নেই। আমি খুবই নগণ্য একজনা, এককণা প্রশংসাই আমার জন্য অনেক বড়ো প্রাপ্তি।

তবে, সাহিত্য সমালোচনা আমি পছন্দ করি। যা ছাপা হয়ে গেছে, তা হয়ত আর পালটানো সম্ভব না (যদি না নতুন প্রিন্ট করা হয়), কিন্তু পরের লেখাগুলোতে শান দেয়ার জন্য সেই সমালোচনা অনেক সহায়ক হয়। এই ব্লগে আগে অনেক সমালোচনা হতো, এবং আমি নিজেও করেছি। এখনো কোনো কোনো ব্লগে করি। কিন্তু ব্লগ বা ফেইসবুকের কমন ট্রেন্ড হলো- কেউ কোনো লেখার ত্রুটি অ্যাকসেপ্ট করতে চান না, ক্ষিপ্ত হয়ে উলটো আপনাকে কিছু কথা শুনতে হবে। আমরা লেখা পোস্ট করে ধরেই নিই- সবাই এসে ভূরি ভূরি প্রশংসা করে আমাকে ভাসিয়ে দেবেন। এ কারণে, যারা সমালোচনা ভালোবাসেন, তা থেকে নিজের ইম্প্রুভমেন্ট চান, তাদের সাথে এ কাজ করতে আগ্রহী। আমার লেখা সমালোচনা করতে হলে ওটা খুব মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে। এত কষ্ট করে পড়ে একটা দীর্ঘ কমেন্ট লিখলেন, অনেক প্রশংসার কথার মধ্যে দু-এক্টা নেগেটিভ কথা দেখেই আমি তেড়ে উঠলাম, দু চারটা কটু কথাও শোনালাম- আপনার এসব শোনার কি কোনো দরকার আছে?

আপনাকে ধন্যবাদ দিয়ে শেষ করা যাবে না।

ভালো থাকবেন।

৯| ২৪ শে আগস্ট, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:২৫

জুনায়েদ বি রাহমান বলেছেন: জেনারেলের জন্য মনটা খারাপ হয়ে গেলো। তবে লেখার ধারাবাহিক বর্ণনা বিরামহীন পড়ে শেষ করতে বেশ সহায়ক ছিলো। পুরু বইটা পড়বো ইনশাআল্লাহ।

২৪ শে আগস্ট, ২০১৮ রাত ৮:২৩

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: লেখার ধারাবাহিক বর্ণনা বিরামহীন পড়ে শেষ করতে বেশ সহায়ক ছিলো। খুবই ইন্সপায়ারিং। অনেক ভালো লাগছে পুরো বইটা পড়ার জন্য আপনার আগ্রহ দেখে।

ভালো থাকবেন। ধন্যবাদ।

১০| ২৪ শে আগস্ট, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৪০

নীলপরি বলেছেন: একেবারে মেগাসিরিয়ালের মতো কী হয় অবস্থায় এপিসোড ক্লোজ করলেন ।

লেখাটা খুব ভালো লাগছে । আবারো পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম । :)

২৪ শে আগস্ট, ২০১৮ রাত ৮:২১

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: হয়ত কাকতালীয়ভাবে মেগাসিরিয়ালের মতো হয়ে গেছে। বড়ো গল্পটাকে মোটামুটি ৩ ভাগে ভাগ করেছি। কোথায় রাখলে সাস্পেন্স হবে তা ভাবি নি :)

যাই হোক, লেখাটা আপনার ভালো লাগছে জেনে ভালো লাগলো। ধন্যবাদ নীল্পরি।

১১| ২৭ শে আগস্ট, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:১৯

রাজীব নুর বলেছেন: আপনার পোষ্ট গুলো বুঝতে আমার বেশ বেগ পেতে হয়।

২৭ শে আগস্ট, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৫৮

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: এর কারণ হলো, আপনি ৩য় পর্ব আগে পড়েছেন। এরপর ১ম পর্ব বা ২য় পর্ব এবং সবশেষে ২য় বা ১ম পর্ব :) দাঁড়ান, এর পরে দেখি আপনার জন্য বিশেষভাবে পোস্ট দেয়ার ব্যবস্থা করা যায় কিনা :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.