নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শব্দকবিতা : শব্দেই দৃশ্য, শব্দেই অনুভূতি [email protected]

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই

দুঃখের কবিতাই শ্রেষ্ঠ কবিতা। ভালোবাসা হলো দুঃখ, এক ঘরে কবিতা ও নারী।

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই › বিস্তারিত পোস্টঃ

বুড্ডার মাথা

২৫ শে আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৫:২৫

আস্তে আস্তে ভেজানো দরজাটা সামান্য ফাঁক করে ভেতরে মাথা ঢুকিয়ে উঁকি দিল বুড্ডা। মনা ভেতরে টেবিল ল্যাম্পের কাছে নুয়ে পড়ে গভীর মনোযোগে পড়ছে। ওর ফার্স্ট টার্ম পরীক্ষা চলছে।
বুড্ডা বিড়ালের মতো নরম নরম পা ফেলে সামনে এগোয়। মনার চেয়ার ঘেঁষে দাঁড়ায়। মনা টের পেয়ে ঘাড় না ঘুরিয়েই বলে, ভাগ, এখন ডিস্টার্ব করবি না।
বুড্ডা খুব ডিস্টার্ব করে। এজন্য বেশিরভাগ সময়ই মনা ঘরে ছিটকিনি লাগিয়ে পড়তে বসে। এতে বুড্ডার খুব রাগ হয়। মাঝে মাঝে বাইরে থেকে খুব জোরে দরজা ধাক্কায়, থাপ্পড় মারে, কখনো দরজার গায়ে লাত্থি মারে। তাতে শব্দ আরো বেশি হয়।
মনার কথায় কোনো কাজ হলো না। বুড্ডা আরো কাছে গিয়ে ওর গায়ের সাথে গা লেপ্টে দাঁড়ায়। ঘাড়ের উপর থেকে আলগোছে চুল সরিয়ে সেখানে চুমু খায়। লালায় ভিজে যায় জায়গাটা। মনার খুব ঘৃণা লাগে। কিন্তু বুড্ডাকে ফেরানো যায় না। চুমু খাওয়া ওর ছোটোবেলার অভ্যাস। ওর যখন সবে দু বছর বয়স, একবার এক বাসায় বেড়াতে গেলো ওরা। ও-বাসায়ও ওর মতো আরেকটা বাচ্চা ছিল। সেই বাচ্চার সামনে বুড্ডাকে নামিয়ে দেয়া হলো। বুড্ডা বাচ্চাটির সামনে গিয়ে বসলো, তারপর একটু এগিয়ে গিয়ে একদিকে কাত হয়ে বাচ্চাটাকে সুন্দর একটা চুমো খেলো। ঘরভর্তি লোকজন অবাক। সেই প্রথম বুড্ডার চুমো খাওয়া।
মনা বললো, বললাম না ডিস্টার্ব করবি না?
আমি এখন খেলবো। বুড্ডা গম্ভীর গলায় বলে। কিন্তু মনা আপন মনে পড়তেই থাকে। বুড্ডার জেদ চেপে যায়। সে আগের মতোই চুল সরিয়ে ঘাড়ের সেই জায়গাটাতে জোরসে একটা কামড় বসিয়ে দেয়, আর মনা 'আহ!' চিৎকারে হাত দিয়ে বুড্ডাকে একঝটিকায় সরাতে গেলেই সে ঝাটকা খেয়ে দড়াম করে মেঝেতে পড়ে যায়, আর গলা ফাটিয়ে কান্না জুড়ে দেয়। 'আহহা আহহা' করতে করতে বুড্ডাকে কোলে তুলে, মাথায় হাত বুলিয়ে আদর করতে করতে পাশের রুমে গিয়ে ল্যাপটপে গেইমস খেলতে বসলো দু ভাইবোন। মনার কালকের পরীক্ষাটা তাহলে মাটিই হলো বলতে হয়। কিন্তু বুড্ডার যে মাথা ফাটে নি, আপাতত সেটাই একটা বড়ো সান্ত্বনা।

২২ এপ্রিল ২০১৮

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৫:৪৩

চাঁদগাজী বলেছেন:


বুড্ডা কোন এলাকার শব্দ?

২৫ শে আগস্ট, ২০১৮ রাত ৮:৩২

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: বুড্ডা শব্দটি আমি কোন কোন জায়গায় শুনেছি মনে নেই। বাংলাদেশে বিটিভি আমলে 'কোন কাননের ফুল' নামক এক সিরিয়ালে ছোটো একটা মেয়ের নাম বুড্ডা ছিল। বুড্ডা বাচ্চা অর্থে আদর করে ডাকার জন্য ব্যবহৃত হতে দেখেছি। পুরান ঢাকায় মনে হয় বেশি ব্যবহৃত। বুদ্ধুকেও (বোকা) হয়ত বুড্ডা বলা হয়ে থাকতে পারে।

এ ব্যাপারে আপনার কী ধারণা?

২| ২৫ শে আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৫:৪৪

বাকপ্রবাস বলেছেন: বেশী খেললে ও চুমু খেলে বান্দর হয়ে যাবে, মাইরের উপর রাখতে হবে হা হা হা

২৫ শে আগস্ট, ২০১৮ রাত ৮:৩৪

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: হাহাহাহাহা। ঠিকই বলেছেন। বেশি মাইর খাইয়া আবার রিয়্যাকশন আরো ডেনজারাসও হইতে পারে :(

৩| ২৫ শে আগস্ট, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:২৮

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: গল্পটা নামের সাথে সুবিচার করেনি। বুড্ডার মা কোথায়?

২৫ শে আগস্ট, ২০১৮ রাত ৮:৩৬

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: বুড্ডার মা এইমাত্র রান্নাঘর থেকে বেরিয়ে স্টার জলসায় গেলেন।

৪| ২৬ শে আগস্ট, ২০১৮ রাত ১২:২২

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: চিরকালীন ভাই বোনের ব্যাপার

২৭ শে আগস্ট, ২০১৮ সকাল ১১:৪৫

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ঠিক বলেছেন। ধন্যবাদ।

৫| ২৬ শে আগস্ট, ২০১৮ ভোর ৬:১৪

সোহানী বলেছেন: হুম.............

২৭ শে আগস্ট, ২০১৮ সকাল ১১:৪৫

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: জি

৬| ২৭ শে আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৪:৫৪

রাজীব নুর বলেছেন: বৌদ্ধ থেকে বুড্ডা নয় তো?

২৮ শে আগস্ট, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:২৩

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: না

৭| ২৭ শে আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৪:৫৭

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন: লেখক সাব, একটা অনুরোধ - লেখক রা গল্প ফাঁদে প্রিয় করে তুলে একটা চরিত্র, তারপর সেই চরিত্রের সাথে হয় দুঃখগাথা, আমি চাইবো আমাদের বুড্ডার সাথে এমন যেনো কিছু না হয় - আগাম সাবধান বাণী । মনে রাখবেন ।

বুড্ডার প্রতি রইলো অনেক অনেক ভালোবাসা ও হাওয়াই মিঠাই ।


২৮ শে আগস্ট, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:২৮

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: বাসায় সাড়ে তিন বছরের একটা ভাতিজি ছিল। খুব বিরক্ত করতো। লাফ দিয়ে কাঁধে চড়তো, ল্যাপটপের উপর থাপড়াতো, মোবাইল আছাড় দিত। আমি ব্যস্ত থাকতাম ব্লগিঙে :( বিরক্ত হয়ে মাঝে মাঝেই ধমক দিতাম। ধমক খেয়ে কাঁদতে কাঁদতে চলে যেত। আবার যথাসময়ে ধীরে ধীরে ঘরে আসতো। আমি আড়চোখে দেখতাম ও দরজায় পর্দায় ঝুলে আমার দিকে তাকাচ্ছে আমার ইশারার আশায়। কিন্তু আমি তাকাতাম না। ও আস্তে আস্তে আমার কাছে আসতো। শরীরে লেপ্টে যেত। আমার রিসপন্স না পেয়ে সে পিঠে খামচি দিত। ঘাড়ে কামড় বসিয়ে দিত। মাথার চুল টানতো। ও চাইতো ওর সাথে যেন আমি খেলা করি। কিন্তু আমার রাগ ভাঙানোর ছিল ওর নানান কৌশল। ওটাই ওর মাথা। বুড্ডার মাথা- বুড্ডার বুদ্ধি বা কৌশল।

ধন্যবাদ ঠাকুর সাহেব।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.