নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শব্দকবিতা : শব্দেই দৃশ্য, শব্দেই অনুভূতি [email protected]

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই

দুঃখের কবিতাই শ্রেষ্ঠ কবিতা। ভালোবাসা হলো দুঃখ, এক ঘরে কবিতা ও নারী।

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্পকণিকা : একটি শাদা কবুতর

০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১:০২

ধাপারি খালের মুখে আড়িয়াল বিলে আমাদের একটুকরো বোরো জমি ছিল। একবার ধান কাটা শেষ হলে রোদ পড়ার পর আমি আর নীশু খেতের আইলে গিয়ে দাঁড়ালাম। অমনি কোথা থেকে উড়ে এলো একঝাঁক লম্বা ঠোঁট ও পা-ওয়ালা সারস পাখি। ওরা গজ-ঢঙে হাঁটছিল আর মাটির বুক থেকে ধানের দানা কুড়িয়ে খাচ্ছিল। মাঝে মাঝে আনন্দিত চোখে আমাদের দেখছিল।

সোনার জমিনে থোকা থোকা শাদা বিন্দুর মতো সারস পাখিরা বিচরণ করছিল। আমি আর নীশু খুব অবাক হয়ে ওদের দেখছিলাম। হঠাৎ, চোখের পলকে সারসগুলো ঘুঘু হয়ে গেলো। ঘুট-ঘুট-ঘুট্টস শব্দে ওরা ধান খুঁটতে লাগলো। আমাদের চোখ বিস্ময়ে ছানাবড়া হতে থাকে। আমরা একে অপরের দিকে তাকিয়ে বিমূঢ় হয়ে যাই।

এবং হঠাৎই ডানা ঝাড়া দিয়ে সবগুলো ঘুঘু একসঙ্গে উড়ে গেল এবং আমাদের মাথার উপর দিয়ে একপাক ঘুরে আবার মাটিতে নেমে এলো। এ কী দেখছি আমরা! স্বপ্ন নয় তো? সারা খেত জুড়ে বাক-বাকুম করে চরে বেড়াচ্ছে একঝাঁক শাদা কবুতর।

দেখতে দেখতে খুব মধুর সুরে ওরা গান গেয়ে উঠলো এবং গান গাইতে গাইতে উড়ে গেল আর আমাদের সামনে একটি সুন্দর পালক রেখে গেলো। আমি উবু হয়ে পালকটি হাতে তুলে নিই। পালকটিতে অমরাবতীর সুগন্ধি মাখানো ছিল। আমি নীশুর চুলে পালকটি গুঁজে দিলাম। নীশু স্বর্গীয় হাসিতে আমার বুক ভরে দিল।
সন্ধ্যার কিছু আগে আমরা বাড়ির দিকে পথ ধরলাম। আমি আগে, ছোটো ছোটো পায়ে নীশু আমার পেছনে হাঁটছিল। ও কখনো আমার হাত ধরে হাঁটে; আমি কখনো-বা পেছনে তাকিয়ে নীশুকে দেখছিলাম। নীশু আমার আদরের ছোটোবোন।

একবার পেছনে তাকিয়ে দেখি নীশু নেই।
নীশু!
নীশু!
আমি নীশুকে ডাকতে থাকি। চারদিকে তাকাই। কোথাও নীশু নেই।
আচানক আকাশ থেকে নীশুর মাথায় গুঁজে দেয়া শাদা পালকটি আমার সামনে ঝরে পড়ে; আমি উর্ধ্বে তাকিয়ে দেখি একটি শাদা কবুতর উড়ে যাচ্ছে, দূর অসীমের দিকে।
পালকটি তুলে নিয়ে আমি বুকের গভীরে গেঁথে রাখি।

৫ জুলাই ২০১৬

-------------------------

ফুটনোট

এসব গল্পকণিকায় পাঠকেরা কোনো অর্থ খুঁজে পাবেন না; আদতে কোনো সিরিয়াস বা হাল্কা ভাবার্থ সন্নিবিষ্ট করে এগুলো লেখা হচ্ছে না; মাথায় যা আসে তাই লেখা। তবে, লেখক নিশ্চয়ই কিছু একটা উদ্দেশ্যকে সামনে রেখেই এসব লিখছে।

মন্তব্য ৯ টি রেটিং +৬/-০

মন্তব্য (৯) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ২:১১

সুমন কর বলেছেন: দিলেন তো, শেষে এসে মনটা খারাপ করে !!

লেখকের উদ্দেশ্য আশা করি পাঠক'রা বুঝতে পারবে। +।

০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৫:০৩

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: লেখকের উদ্দেশ্য বুঝুক আর নাই বুঝুক, নিজেরা তো অবশই একটা কিছু বুঝবেন। কিছু যদি নাই বোঝেন, তাহলে এটা একটা আবোল তাবোল লেখা তা তো বুঝবেন।

কিন্তু এ লেখাটার ভেতর একটা করুণ ইতিহাস লুকিয়ে আছে।

ধন্যবাদ সুমন ভাই।

২| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ২:৪৪

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



এটি লেখকের একান্ত আপন মনের কোন এক কঠিন ভাবনা; পাঠক যার যার মতো এর হিসেব মেলাতে ব্যস্ত হয়ে পড়বেন৷আমিও নিজের মতো করে কিছু একটা ভাবলাম, হয়তো লেখকের ভাবনার সাথে তা নাও মিলতে পারে৷তবুও ভাবনাটি তো পেলাম৷

৩| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৭:০৫

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: গল্পকনিকা বোধহয় একেই বলে । কল্পনার আকাশে ডানামেলে উড়ে বেড়ায়। কখনও সামনে সারস রূপো একদল মানুষ, যারা পক্ষী কুলের শ্রেষ্ঠ শিকারির মত মনুষ্য সমাজেরও শিকারির ভূমিকা নেয়। আবার ওরা ঘুঘুর মধুর কণ্ঠের মত আমাদের মন ভুলিয়ে দেয় । প্রিয়আত্মীয় স্বজনকে নিয়ে যখন আশার স্বপ্ন দেখি তখন আনার তাদেরকে শান্তির দূত হিসাবে সামনে পাই। বেলাশেষে যখন উপলব্ধি করি আমি যে একা সেই একাই আছি। আমাদের আসা - যাওয়াটা তাই একবিন্দুতে মিলে যায়।।

৪| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৭:৫৬

স্বপ্নীল ফিরোজ বলেছেন:
আপনার লেখা কবিতা আমার ভালো লাগে।
আপনার মতো আমিও দোহারের নাগরিক।
শুভ কামনা।

৫| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:৩০

রাজীব নুর বলেছেন: আমি তো বিক্রমপুরের পোলা কিন্তু ধাপারি খালটা চিনতে পারছি না।

৬| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:০৬

খসরু ওয়াহিদ বলেছেন: ভাইয়া,ধাপারি খালের একমাথা মনে হয় ইছামতিতে পড়ছে, তবে শুরু হইছে কোথা থেকে বলতে পারি না, আর গুগল ম্যাপে এই খালের লোকেশন নাই , মনে হয় কেউ এড করে নাই। আমাকে ম্যাপ দিলে আমি গুগলকে মেইল করতাম, দয়া করে জানাবেন আশা করি। ধন্যবাদ।

০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:১১

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ধাপারি (ধাপাইরা) খালের উৎসমুখ পদ্মানদী। ঘাড়মোড়া গ্রামের ভেতর দিয়ে এই খাল আড়িয়াল বিলে পড়েছে। সম্ভবত ১৯৯১ সালের দিকে হলের বাজারের ওখানে ধাপারি খালের উপর বাঁধ নির্মাণ করা হয়। আমার জানামতে, জয়পাড়া ও দোহার খাল ছাড়া দোহার উপজেলার সবগুলো খালের উপর দিয়েই বাঁধ দেয়া হয়েছে বন্যা নিয়ন্ত্রণ পরিকল্পনার অংশ হিসাবে। এগুলো বর্ষাকালে খুব ভয়াবহ আকার ধারণ করতো, খালের দুইপাড় ভেঙে মানুষের ঘরবাড়ি বিলীন হতো। বাঁধ দেয়ার ফলে সেই প্রকোপ এখন আর নেই। ধাপারি খাল ছিল সবচেয়ে ভয়ঙ্কর।

তুমি স্যাটেলাইট ভিউতে হলের বাজার থেকে ট্র্যাক করে আড়িয়াল বিলের দিকে যাও। ম্যাপে নাম নেই। কোনো এক জায়গায় গিয়ে খালের অস্তিত্ব বোঝা যায় না, মনে হয় ভরাট হয়ে গেছে।

৭| ০৩ রা অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১:৫০

মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: অনেক সুন্দর লিখনী গল্পটি দারুণ লেগেছে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.