নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব,ইইই প্রকৌশলী। মতিঝিল আইডিয়াল, ঢাকা কলেজ, বুয়েট এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র।টেলিকমিউনিকেশন এক্সপার্ট। Sustainable development activist, writer of technology and infrastructural aspects of socio economy.

এক নিরুদ্দেশ পথিক

সমাজের প্রতিটি ছোট বড় সমস্যার প্রকৃতি নির্ধারণ করা, আমাদের আচার ব্যবহার, সমাজের প্রচলিত কৃষ্টি কালচার, সৃষ্টিশীলতা, চারিত্রিক উদারতা এবং বক্রতা, অপরাধ প্রবৃত্তি, অপরাধ সঙ্ঘঠনের ধাঁচ ইত্যাদির স্থানীয় জ্ঞানের আলোকে সমাজের সমস্যার সমাধান বাতলে দেয়াই অগ্রসর নাগরিকের দায়িত্ব। বাংলাদেশে দুর্নীতি রোধ, প্রাতিষ্ঠানিক শুদ্ধিকরন এবং টেকনোলজির কার্যকরীতার সাথে স্থানীয় অপরাধের জ্ঞান কে সমন্বয় ঘটিয়ে দেশের ছোট বড় সমস্যা সমাধান এর জন্য লিখা লিখি করি। আমার নির্দিষ্ট দৃষ্টিভঙ্গি আছে কিন্তু দলীয় সীমাবদ্ধতা নেই বলেই মনে করি, চোর কে চোর বলার সৎ সাহস আমার আছে বলেই বিশ্বাস করি। রাষ্ট্রের অনৈতিক কাঠামোকে এবং দুর্নীতিবাজদের সবাইকে তীক্ষ্ণ ভাবে চ্যালেঞ্জ করার চেষ্টা করি। রাষ্ট্র কে চ্যালেঞ্জ করতে চাই প্রতিটি অক্ষমতার আর অজ্ঞতার জন্য, তবে আঘাত নয়। ব্যক্তিগত ভাবে নাগরিকের জীবনমান উন্নয়ন কে দেশের ঐক্যের ভিত্তিমূল মনে করি। ডাটাবেইজ এবং টেকনোলজি বেইজড পলিসি দিয়ে সমস্যা সমাধানের প্রোপজাল দেবার চেষ্টা করি। আমি মূলত সাস্টেইন এবল ডেভেলপমেন্ট (টেকসই উন্নয়ন) এর নিরিখে- অবকাঠামো উন্নয়ন এবং ডিজাইন ত্রুটি, কৃষি শিক্ষা খাতে কারিগরি ব্যবস্থাপনা ভিত্তিক সংস্কার, জলবায়ু পরিবর্তন, মাইক্রো ইকনমিক ব্যাপার গুলো, ফিনান্সিয়াল মাইগ্রেশন এইসব ক্রিটিক্যাল ব্যাপার নিয়ে লিখার চেষ্টা করি। মাঝে মাঝে চোরকে চোর বলার জন্য দুর্নিতি নিয়ে লিখি। পেশাঃ প্রকৌশলী, টেকনিক্যাল আর্কিটেক্ট, ভোডাফোন।

এক নিরুদ্দেশ পথিক › বিস্তারিত পোস্টঃ

মাতৃভাষা বাংলার বিকাশ ও উৎকর্ষ

২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:০৫

আধুনিক সময়ে বাংলা বিপননের ভাষা, ব্যাপক ভিত্তিতে সাংবাদিকতার ভাষা, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ভাষা, খুব সীমিত কিছু পর্যায়ে কর্পোরেট ভাষা, শিক্ষার প্রাথমিক স্তর গুলোর ভাষা, শিল্পের অধুনা রূপগুলোর ভাষা, স্থানীয় প্রশাসনের ভাষা হওয়ায় এর বিকাশ, প্রসার এবং ধারণ অব্যহত ভাবেই বর্ধমান। ভাষাকে প্রানময় বলে ধরে নিলে এই ভাষা অবশ্যই জীবিত এবং সতেজ। বিশ্ব ব্যাপী প্রায় ৩০ কোটি মানুষের চলনে বলনে ছন্দ ও রুচির সাথে বাংলা মিশে আছে। বাংলা ভাষার বিকাশে একুশের ভুমিকা শুধু প্রতীকী হয়েই পড়ে থাকেনি বরং প্রায়োগিক দিক থেকে যথেষ্ট কার্যকর হয়ে আবির্ভূত হয়েছে একুশ। বাংলার প্রতি পূর্ব বাংলা বা বাংলাদেশের মানুষের এই আদি ও অক্রিত্তিম প্রানের টান এই মধু সুধাময় ভাষাটিকে চির সঞ্চালিত রাখবে তা সকল সংশয়ের আবকাশ মুক্ত বলাই চলে। বাংলা একটি বৃহৎ জনগোষ্ঠীর জীবন ও জীবিকার ভাষা। এর সচলতার অন্যতম কারন এটাই।



নৃতাত্ত্বিকভাবে বাংলাদেশে একজনও ইংরেজি ও হিন্দি ভাষাভাষি না থাকলেও আমাদের এই প্রানের ভাষাকে ইংরেজি ও হিন্দির সাথে পাল্লা দিতে হচ্ছে। বাংলাদেশের আদালত ও সংবিধান এর প্রধান ভাষা এখনও ইংরেজি, বাংলা এর আনুবাদ সংস্করণ। আদালতের রায় লিখিত হয় ইংরেজিতেই। অন্যদিকে হিন্দি বিনোদনের ভাষা, বিকৃত কথ্য বাংলায় এর অনুপ্রবেশ লক্ষণীয়। তাই বাস্তবিক অর্থে বাংলা হিন্দির সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের ব্যাপক শিকার।

অন্যদিকে বাংলা এখনও বিজ্ঞান ও ব্যবসায় উচ্চ শিক্ষার কিংবা কারিগরি জ্ঞানের ভাষা হিসেবে আবির্ভূত হতে পারেনি, আসলে বলা উচিত আমরা এখন উচ্চ শিক্ষার ভাষা হিসেবে বাংলাকে মর্যাদা দিতে পারিনি। বলা হয়ে থাকে অপরের ভাষায় শিল্প সাহিত্য বা দর্শন কিংবা ধর্মতত্ব পড়ে যেমন আধ্যাত্বিক পর্যায়ে পৌঁছানো যায়না, ঠিক তেমনি অন্য ভাষায় বিজ্ঞান চর্চা করেও এর উৎকর্ষে উঠা যায় না। এর জন্য চাই আগে নিজের ভাষার জ্ঞান-বিজ্ঞানের হাতেখড়ি। আমাদের বিদ্যাপীঠ সমূহ বলতে গেলে সামান্য কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া এখনও কিছু চৌকশ কর্পোরেট নির্বাহী কিংবা সেকেলে প্রশাসনের গতানুগতিক মানের আমলা তৈরির কাজই করে যাচ্ছে। জীবিকার খাতিরে আমাদের মেধাবীরা ইংরেজিকেই বেশি প্রাধান্য দিচ্ছেন বা দিতে হচ্ছে, বিস্তৃত গ্রামীণ মধ্যবিত্ত আরব বিশ্বে গিয়ে আরবিকে কর্মসংস্থানের ভাষা হিসেবে আয়ত্ব করেছেন। সমসাময়িক বিশ্ব ব্যবস্থার সাথে তাল মিলাতে গিয়ে এই প্রতিযোগিতা দিন দিন হয়ে পড়ছে অসম, এতে বাংলা পিছিয়ে পড়ছে যার প্রভাব এখনই পশ্চিম বাংলায় দৃশ্যমান, পূর্ব বাংলায় এই প্রভাব অনুমেয়।


অতি অদূরদর্শী হয়ে আমরা অগ্রসর বাঙালীরা প্রান প্রিয় ভাষাকে উচ্চ শিক্ষা এবং জীবিকা নির্বাহের ভাষা হিসেবে দূরে ঠেলে রেখে শুধু মাত্র প্রান্তিক আর অনগ্রসর কায়িক শ্রমজীবী মানুষের পেশাগত ভাষা হিসেবে রেখেই ঢের তৃপ্তি পাচ্ছি।

মাতৃভাষা বাংলার একাডেমিক ও প্রাতিষ্ঠানিক বিকাশ এবং জ্ঞান বিজ্ঞান এর জগতে এর উতকর্ষে আমরা কতটুকু চিন্তাশীল, আন্তরিক আর দ্বায়িত্বশীল তা ভাবার কথা সময় বার বার আমাদের বিবেক নাড়া দিয়ে যাচ্ছে। একুশ এই বার্তা নিয়ে ব্যক্তি ও সমাজের কাছে হাজির হয় প্রতি বছর।
জ্ঞান চর্চা ও গবেষণায় ভাষা হিসেবে বাংলার সীমাবদ্ধতার বাইরেও কিছু দিক নিয়ে মনোযোগী হওয়া দরকার। বাংলার ব্যাপক বাণিজ্যিক ও রাজনৈতিক বিকাশ কিছু কিছু ক্ষেত্রে এতই উত্তেজনাকর ভাবে আবির্ভূত হয়েছে যে ভাষার মান সংরক্ষণে এর অপধারার লাগাম টেনে ধরা নিতান্তই জরুরি মনে করছি ।অধুনা রাজনীতির আর বিনোদন শিল্পের বিকৃত বাংলা এর মৌলিকতাকে চ্যালেঞ্জ করছে বললে বাড়াবাড়ি হবে না বোধ হয়।এতে বাংলার শৈল্পিক আবেদন যে দিন দিন বিসৃত ও মলিন হচ্ছে তা নির্দ্বিধায় বালা যায়। আজকের বাংলা একদিকে যেমন যশোর ও নদীয়া জেলার সাধু বাংলা নয়, তেমনি কথ্য বাংলার শিল্পিত রূপটিও নয়। ভাষার প্রয়োগ উদাসীনতার এই কদর্য দিক একদিকে যেমন ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক ভাষা গুলোকে চ্যালেঞ্জ করছে আজ ঠিক তেমনি এটি মূল বাংলার শৈল্পিক দিকটিকেও একদিন হেয় করে বসবে।


মাতৃভাষা বাংলার বিকাশ ও উৎকর্ষ তরাত্বিত করতে ভাষাকে সমৃদ্ধ করার ব্যাপক দুরদর্শী পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং কার্যকর কিছু পদক্ষেপ নেয়া দরকার। এর কিছু সীমিত পরিসরে আলোচনায় আনছি-

ক। বাংলায় পাঠ্যবই, শিক্ষা সহায়িকা বই, বিষয় ভিত্তিক মানসম্পন্ন বই প্রকাশের পদক্ষেপ নেয়া
১। দেশ বিদেশের হাজার হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যাপনারত স্কুল কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার সবগুলো ডিসিপ্লিনে প্রথিতযশা শিক্ষকগণের প্রোফাইল তৈরি করে, উনাদেরকে নিজ নিজ বিষয়ে লভদ্ধ জ্ঞান, অভিজ্ঞতা এবং আধুনিক জ্ঞানের সমন্বয়ে একাধিক পুস্তক প্রণয়নের আমন্ত্রণ জানানো। এইকাজ একটা সুবিশাল কর্মযজ্ঞ যার জন্য সত্যিকারের জ্ঞানী শিক্ষকের প্রোফাইল তৈরি করতে হবে, উনাদের পুস্তক লিখে নিজেদের রিপ্রডিউস এর গুরুত্ব বুঝাতে হবে, বই লিখায় নিরস্তর উৎসাহ দিতে হবে।

২।স্কুল কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার সবগুলো ডিসিপ্লিনে প্রথিতযশা শিক্ষকগণের সমন্বয়ে উচ্চ মান পর্যালোচনা পরিষদ তৈরি করতে হবে, বই লিখার পর পর্যালোচনা পরিষদ কর্তিক রিভিউ তৈরি করে সেটা আবার লিখকের মাধ্যমে ঠিক করে নিয়ে চূড়ান্ত পাণ্ডুলিপি তৈরি করার কাজ গুলো নিবিড় তত্ববধানে যত্নসহকারে এবং অতি গুরুত্বদিয়ে করতে হবে।
৩। বই সময় মত প্রকাশ এবং দেশ-বিদেশের সকল প্রতিষ্ঠানে সার্কুলেশনের এমনকি বিপণনের উদ্যোগ নিতে হবে। বই প্রকাশের দেখভাল এবং খরচ বাংলা একাডেমি করবে। সরকার এই মৌলিক বিষয়ে উচ্চ ক্ষমতার সমন্বয়কারী দল গঠন করবে এবং যথাসময়ে অর্থ বরাদ্দ দিবে।

এর মাধ্যমে বাংলা ভাষাভাসি জ্ঞানীদের জ্ঞান রি-প্রডিউস করা হবে যাতে উনাদের অবর্তমানেও আমরা তাঁদের লভদ্ধ একাডেমিক জ্ঞান এর সঠিক ব্যবহার করতে পারি।

খ। বিদেশি ভাষার পাঠ্যবই, শিক্ষা সহায়িকা বই, বিষয় ভিত্তিক মানসম্পন্ন বই বাংলায় অনুবাদের ব্যাপক পদক্ষেপ নেয়া

১। দেশে এবং বিদেশে স্কুল কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার সবগুলো ডিসিপ্লিনে সেসকল মান্সম্পন্ন বিদেশী পাঠ্যবই পড়ানো হয়, বিশ্বের নামকরা সব বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন নামকরা লিখকের উচ্চ মান বই পড়ানো হয় সেসবের বিশদ তালিকা তৈরি করে সর্বশেষ ভার্শনকে অনুবাদের ব্যবস্থা করা।
২। এখানে সরাসরি আন্তর্জাতিক পর্যায়ের টেক্সট বুক প্রকাশকের সাথে বাংলা একাডেমীর ফ্রেইমোয়ার্ক তৈরি হবে। সরকারের আনুকূল্যে একাডেমি এই খাতে অর্থায়ন করবে। বিশ্ববিদ্যালয় সহ সংশ্লিষ্ট ফ্যাকাল্টির সাথে কমিউনিকেশন স্ট্যাব্লিশ করবে।


গ। প্রচলিত বাংলা শিক্ষা দান পদ্ধতিকে পরিবর্তন করা সময়ের দাবি

আমাদের স্কুল সমূহে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণিতে ১০০ নম্বরের বাংলা, ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত ২০০ নম্বরের বাংলা প্রথম এবং দ্বিতীয় পত্র পড়ানো হচ্ছে। কিন্তু এত দীর্ঘ বাংলা পাঠ্যক্রম থাকা সত্বেও সাধরনের কথোপকথন এবং লিখায় ভাষার মার্জিত কিংবা প্রমিত রুপটির চুড়ান্ত অনুপুস্থিতি অতি বিস্ময়ের ব্যাপার। এর কারন শিক্ষাদান পদ্ধতিটির চূড়ান্ত অকার্জকরিতা।

দেখা যাচ্ছে একজন শিক্ষার্থী প্রাথমিক থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্জন্ত স্কুল কলেজ এবং পাবলিক পরীক্ষা মিলে মোট শুধু বাংলায় ৫৭০০ নম্বরের উপর শুধু লিখিত পরীক্ষায় অবতীর্ন হন, যা সম্পুর্ন আনুষ্ঠানিক।(১ম,২য় এবং বার্ষিক পরীক্ষা মিলে প্রাথমিকে ১০০*৩*৫=১৫০০, উচ্চ বিদ্যালয়ে ২০০*৩*৫=৩০০০, কলেজে ২০০*৩*২=১২০০ নম্বর)। তথাপি বাংলার লিখিত রুপে এই শিখার্থীগণ নূন্যতম পারদর্শীতা নিয়ে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা স্তর পার করতে পারছেন না।


সব শ্রেণীতেই বাংলা প্রথম পত্রে কিছু কবিতা এবং গল্প পড়ানো হয় যা আসলে হাস্যকর পর্যায়ের, এইসব সহায়িকা বইয়ে থাকাই শ্রেয় যা বিদ্যালয়ের পাঠাগারে উন্মুক্ত পাঠের জন্য থাকার কথা। অন্যদিকে বাংলা দ্বিতীয় পত্রে সাধারণ থেকে শুরু করে অন্তত্য জটিল পর্যায়ের ব্যাকরণ শিখতে বাধ্য করা হয়, পরীক্ষা নির্ভর পাঠ্য ক্রমের বাধ্যবাধকতার কারনে।

সময়ের প্রয়োজনে ইংরেজি সহ জ্ঞান বিজ্ঞানে উন্নত ভাষা সমূহ শিক্ষার জন্য অতি কার্জকরি পঠন, লিখন, শ্রবণ এবং বলন পদ্ধতি ডেভেলপ করেছে (উদাহরণ স্বরূপ- আই ই এল টি এস বা স্কুলের ভাষা শিক্ষার জন্য পঠন, লিখন, শ্রবণ এবং বলন ইত্যাদির পাঠ্যবই কিংবা সফটওয়্যার)। ভাষা বিজ্ঞানীদের ডিজাইন করা এই সব ভাষা পাঠ্যক্রমের কার্জকরিতা যুগ যুগ ধরে প্রমাণিত যার মাধ্যমে বিদেশি শিক্ষার্থীদের আকৃষ্ট করা পরিকল্পনা সমূহ ফলপ্রসু হয়েছে। শিক্ষাদান (একাডেমিক) এবং যোগাযোগের (কমিউনিকেশনের) জন্য বিশেষ বিশেষ পাঠ্যক্রম ভিত্তিক অফলাইন কিংবা অনলাইন ভাষা শিক্ষার মডিউল ডেভেলপ না করে আমরা এখনও সেই অকার্জকর গৎবাঁধা পদ্ধতিতেই ভাষা শিক্ষা নিয়ে ব্যস্ত আছি।

সব শ্রেণীতেই অতিরিক্ত বিষয় হিসেবে বাংলা শিক্ষার্থীকে চাপে রাখছে, সময়ের সাথে যার কোন কার্যকরিতা দেখা যাচ্ছে না। মাতৃভাষায় একাডেমিক পারদর্শিতা যেখানে প্রাথমিক এবং মাধ্যমিকের শুধু ৪-৫টি শিক্ষা বর্ষেই আসার কথা ছিল সেখানে ১০টি শিক্ষা বর্ষে পড়ানোর পরেও আমাদের শিক্ষার্থীরা তা রপ্ত করতে পারছেনা। কারন পুঁথি নির্ভর পরীক্ষা ভিত্তিক মানহীন হাস্যকর পাঠ্যক্রম।

ঘ। মাতৃভাষার সাথে কর্মমূখী ভাষার সমন্বয় এবং ভাষা শিক্ষার প্রচলিত মডেলের কার্যকরিতা।
ইংরেজিতে শিক্ষা দিবার জন্য ইনফাস্ট্রাকচার গঠনের ভুলভাল চেষ্টা ২০০ বছরের বেশি সময় ধরে চললেও সেটা তৃণ মূল পর্জায়ে ব্যাপক সাফল্য পায়নি, স্থানীয় আচার ব্যবহার এবং সংস্কৃতি, মানুষের জীবনধারা কম্ফোর্ট জোনে রেখেই নিজের শিক্ষণ ব্যবস্থা ডেভেলপ করতে হবে। অন্য কোন কপি পেস্ট মডেল যে ফল আনছে না তা দৃশ্যমান।আধুনিক শিক্ষার উৎসস্থল ইউরোপের প্রায় প্রতিটি ছোট বড় জাতি মাতৃ ভাষায় শিক্ষা লাভ করে। আপনি অবাক হবেন মাত্র ১৫ মিলিয়ন মানুষের ডাচ জাতির ভাষার গল্প শুনে, গণিত পদার্থ রসায়ন চিকিৎসা জীববিজ্ঞান আর্কিটেকচার ব্যবসা এবং শিল্প কলার হেন কোন বিভাগ নেই যার পাঠ্য বই ডাচে রচিত, অনুদিত বা প্রকাশিত হয়নি এবং যা লোকাল ভাষায় স্কুলে পড়ান হয় না। মাত্র ৫ মিলিয়নের ছোট্ট দেশ নরওয়ের শিক্ষার সবকিছু নরওয়েজিয়ান ভাষায়।একই চিত্র জাপানেরও।কিন্তু উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায় থেকে ২য় বা ৩য় ভাষা শিক্ষার অপশনাল থাকায় এই নেশনগুলোর কোনটই আন্তর্জিক ভাষা ইংরেজিতে পিছিয়ে পড়েনি।

যে ছেলে-মেয়ে স্কুলের পাশাপাশি পিতা মাতার কৃষি কাজে এবং ঘরের কাজে সহায়তা করে, তাকে আপনি বিদেশি ভাষায় বিজ্ঞান শিক্ষা দিতে বাধ্য করতে পারেন না, এটা একটা মনোগত বাঁধা দাঁড়া করিয়ে দেয়। তাঁর ব্রেইন বাংলা টু ইংরেজি এবং ইংরেজি টু বাংলা দ্বৈত রুপান্তরে ব্যস্ত থাকে, উপরন্তু না বুঝার ভয়ে আচ্ছন্ন থাকে। সাইকোলজিস্টগণ এর বেশি ভালো ব্যাখ্যা দিতে পারবেন। প্রতিটি বাক্যই যদি কনভার্শন প্রসেসে আসে তাইলে ইন্নোভেশন আর ক্রিয়েটিভিট আশা করা যায় না বরং শিক্ষা ভীতি আসে।এই সমস্যা বিশ্ববিদ্যালয়েও আছে, প্রচুর বিদেশী ভাষার রেফারেন্স পড়ার চর্চা আমাদের হয়ে উঠেনি একারনেই।ফলে কন্সেপচুয়াল ডেভেলপমেন্ট বড্ড দেরিতে আসে, আমরা দেখছি আন্ডার গ্যাজুয়েশনে তেমন মানসম্পন্ন গবেষণা কাজ হয়ই না। তাই হয় আপনাকে স্ট্রং ইংরেজি শিক্ষার স্ট্রাকচার ডেভেলপ করতে হবে যা ২০০ বছরের প্রচেষ্টায়ও পুরোপুরি সফল হতে পারেনি, অন্যথায় আপনাকে বাংলা ভিত্তিক বিকল্প সহ কার্যকর সমন্বয়ের কথা ভাবতে হবে। এর বাইরে বাংলা ভাষা সমৃদ্ধ করার তাগিদ এবং দায়বদ্ধতাও রয়েছে।

এখানে দুটি বিষয়-এক,উচ্চ স্তর পর্যন্ত মাতৃভাষাকে পরিপুর্ন ভাবে সমৃদ্ধ করে বিকল্প তৈরি করা যা পড়া, গণিত বিজ্ঞান এবং কারিগরি কন্সেপ্ট ডেভেলপ, গবেষণা এবং আবিষ্কারকে উৎসাহিত করবে। যা শিক্ষাকে সহজ, ভীতি মূক্ত এবং কোম্ফোর্ট জোনে নিয়ে আসবে।এর সাথে দ্বিতীয় ভাষা হিসেবে স্কুলে ইংরেজি শিখানোর সংঘর্ষ নেই একেবারেই যা কর্মমূখী শিক্ষার অবাশ্যকীয় উপাদান।অর্থাৎ শিক্ষাকে সহজতর, বোধগম্য এবং শিক্ষণ পদ্ধতি দ্রুত করতে মাতৃভাষার ব্যাপ্তি বিশালাকায় থাকবে, একই সাথে কর্মসংস্থানের বিকাশে বিদেশী ভাষা হিসেবে ইংরেজির সহাবস্থান থাকবে একটি কার্যকর সমন্বয়ের মাধ্যমে। ২য় বিষয় হোল- মাতৃভাষার বাইরে ২য় ভাষাতে উচ্চ শিক্ষার এন্ড টু এন্ড মডেল। বাংলাদেশের গ্রামীণ পরিবেশে এই মডেল ব্যর্থ হয়েছে গত ২০০ বছরের প্রচেষ্টার পরেও, উপরন্তু বিদেশী ভাষায় শিক্ষাদান শিক্ষার মৌলিক ডেভেলপমেন্ট নিয়ে আসে না। সুতরাং এটা টেকসই ডেভেলপমেন্ট এর কন্টেক্সট এ চূড়ান্ত সমাধান হয়ে উঠবে না।

ঙ। শিক্ষার সফটওয়্যার ডিজাইন, ব্যাকরণ এর এপ্লিক্যাশন ডেভেলপ এবং শিশু শিক্ষার ক্রিয়েটিভ এপ ডেভেলপ কাজ
বাংলা একাডেমিকে শুধুমাত্র বাৎসরিক মেলা আয়োজন, কিছু নন একাডেমিক বই সম্পাদনা এবং পারিভাষিক শব্দ খোঁজার প্রয়োজনীয় বা অপ্রয়োজনীয় কাজে বছর পার করলে চলবে না, কিভাবে বাংলা ভাষাকে ব্যবসা বিজ্ঞান ও গবেষণার জগতে উৎকর্ষময় করা যায়, আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির যুগে অন্য ভাষার আধিপত্য ছাপিয়ে টিকিয়ে রাখা যায় এবং ক্রমবিকশিত করা যায় সেই দিকে মনযোগী হতে হবে।

দেশের তথ্য প্রযুক্তিবিদ আর এপ্লিক্যাশন ডেভেলপার (বিশেষ করে বাংলা শিক্ষার সফটওয়্যার ডিজাইন, ব্যাকরণ এর এপ্লিক্যাশন ডেভেলপ এবং শিশু শিক্ষার ক্রিয়েটিভ এপ ডেভেলপ কাজে), প্রোগ্রামারদের একই প্ল্যাটফর্মে নিয়ে আসার জন্য বাংলা একাডেমির কাজ করতে হবে। ডেভেলপারদের কাজের স্বীকৃতি দেয়া, কিছু ক্ষেত্রে মৌলিক কাজের পারিশ্রমিক দেয়াও দরকার। মৌলিক কাজের বিপণন করা এবং এসব কাজের সমন্বয়ে বাংলা একাডেমির উদ্যোগ এবং তদারকি দরকার।

বাংলায় মান্সম্পন্ন একাডেমিক বই দুষ্প্রাপ্য। একাডেমিক বই প্রকাশে বাংলা একাডেমির কোন খেয়ালই নেই। অথচ সাবজেক্ট ম্যাটার এক্সপার্টদের দিয়ে বই লিখিয়ে উনাদের লভধ অভিজ্ঞতা এবং জ্ঞানকে পরবর্তি প্রজন্মের জন্য রি-প্রডিউস করে যাওয়া, নাগরিকের সাথে সেসব বইয়ের পরিচয় করিয়ে দেয়া বাংলা একাডেমির জন্য একটা দায়বদ্ধতার বিষয় হওয়া উচিৎ।

বাংলা একাডেমী সহ দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় গুলো আর শিক্ষানুরাগী অগ্রসর নাগরিকবৃন্দ প্রানের ভাষার উতকর্ষে নিবেদিত হবে এটাই প্রত্যাশা।



বাংলায় উচ্চ শিক্ষাদান প্রস্তুতির পরিকল্পনা নেয়াই বোধ করি অমর একুশের সত্যিকারের তাগাদা।
শহীদ মিনারের ফুলেল সৌন্দর্জকে ছাপিয়ে উঠুক বাংলা শিক্ষাদানের বুদ্ধি ব্রিত্তিক সৌন্দর্জ।

বাংলা ভাষা এবং বাংলাদেশ এগিয়ে যাক!

মন্তব্য ১৭ টি রেটিং +৬/-০

মন্তব্য (১৭) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:০৬

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: অনন্য, গুরুত্বপূর্ন দারুন দিকনির্দেশনা মূলক একটা ব্লগ।

দর্শন কিংবা ধর্মতত্ব পড়ে যেমন আধ্যাত্বিক পর্যায়ে পৌঁছানো যায়না, ঠিক তেমনি অন্য ভাষায় বিজ্ঞান চর্চা করেও এর উৎকর্ষে উঠা যায় না। এর জন্য চাই আগে নিজের ভাষার জ্ঞান-বিজ্ঞানের হাতেখড়ি। আমাদের বিদ্যাপীঠ সমূহ বলতে গেলে সামান্য কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া এখনও কিছু চৌকশ কর্পোরেট নির্বাহী কিংবা সেকেলে প্রশাসনের গতানুগতিক মানের আমলা তৈরির কাজই করে যাচ্ছে। জীবিকার খাতিরে আমাদের মেধাবীরা ইংরেজিকেই বেশি প্রাধান্য দিচ্ছেন বা দিতে হচ্ছে, বিস্তৃত গ্রামীণ মধ্যবিত্ত আরব বিশ্বে গিয়ে আরবিকে কর্মসংস্থানের ভাষা হিসেবে আয়ত্ব করেছেন। সমসাময়িক বিশ্ব ব্যবস্থার সাথে তাল মিলাতে গিয়ে এই প্রতিযোগিতা দিন দিন হয়ে পড়ছে অসম, ....

তাঁর ব্রেইন বাংলা টু ইংরেজি এবং ইংরেজি টু বাংলা দ্বৈত রুপান্তরে ব্যস্ত থাকে, উপরন্তু না বুঝার ভয়ে আচ্ছন্ন থাকে। সাইকোলজিস্টগণ এর বেশি ভালো ব্যাখ্যা দিতে পারবেন। প্রতিটি বাক্যই যদি কনভার্শন প্রসেসে আসে তাইলে ইন্নোভেশন আর ক্রিয়েটিভিট আশা করা যায় না বরং শিক্ষা ভীতি আসে।

দারুন সব পয়েন্ট যা বাস্তব তাই তুলে ধরেছেন সহজ ভাবে।

বাংলায় উচ্চ শিক্ষাদান প্রস্তুতির পরিকল্পনা নেয়াই বোধ করি অমর একুশের সত্যিকারের তাগাদা।

শহীদ মিনারের ফুলেল সৌন্দর্যকে ছাপিয়ে উঠুক বাংলা শিক্ষাদানের বুদ্ধি ব্রিত্তিক সৌন্দর্য। পূর্ন সহমত।

+++++++++++++++++++++++++++++++

২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:৩১

এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: লিখাটিতে আমি একাডেমিক ব্যাপারটি গুরুত্ব দিয়েছি এবং প্রাসঙ্গিক কিছু ব্যাপার আলোচানায় এনেছি। এর বাইরে আমার আরেকটি উপ্লভদ্ধি আছে, এখানে আলোচনা করিনি। সেটা হচ্ছে-

১। বাংলার প্রধান প্রধান আঞ্চলিক ভাষাগুলোকে স্ট্রাকচারে নিয়ে আসা। মানে- গবেষণা করলে দেখা যাবে চট্রগ্রাম, নোয়াখালী, বরিশাল, উত্তরাঞ্চল, সিলেট এইসব প্রধান প্রধান ডায়ালেক্ট গুলোরও কিছু নিয়ম আছে সেগুলোর ব্যাকরণ তৈরি করা, ফরমালাইজড করে ফেলা।
২। সিলেটের ডায়ালেক্টের বর্নমালাও কিন্তু ছিল, সেটা ডকুমেন্টেড করা দরকার হারিয়ে যাবার আগেই।
৩। উপজাতীয় ভাষা রক্ষার গুরুত্ব বুঝাও আমাদের দরকার। এগুলো এই অঞ্চলে মানব সভ্যতার নির্দেশক।


পড়ার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ।

২| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:৩২

কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:



এই লেখাটা দেশের কর্তৃপক্ষের সদয় দৃষ্টিতে আসা উচিত।

২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১:৩৫

এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: বহুদিনের কাটা মোছার ভুলভাল চেষ্টার ফসল এই লিখা।
কর্তৃপক্ষের সদয় দৃষ্টিতে আসলে ভালই হয়!

আন্তরিক ধন্যবাদ সহ!

৩| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:৫২

অগ্নি সারথি বলেছেন: মাতৃভাষা বাংলার প্রাঠিস্থানিক বিকাশ এবং জ্ঞান বিজ্ঞান এর জগতে এর উতকর্ষে আমরা কতটুকু চিন্তাশীল, আন্তরিক আর দ্বায়িত্বশীল তা ভাবার কথা সময় বার বার আমাদের বিবেকের নাড়া দিয়ে যাচ্ছে। একুশ এই বার্তা নিয়ে ব্যক্তি ও সমাজের কাছে হাজির হয় প্রতি বছর।

পুরোটাই অসাধারন লিখেছেন ভাই। এর বেশি আর কিছু লিখতে পারলাম না।

২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:০৯

এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: আন্তরিক ধন্যবাদ সহ শুভেচ্ছা জানবেন!

৪| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ২:৪৮

এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: পঠন, বলন, শ্রবণ, লিখন ভিত্তিক এপ্টিচুড ডেভেলপমেন্ট সংশ্লিষ্ট পাঠ্য বই এবং সফটওয়্যার ডিজাইন
- নিয়ে আরো কিছু লাইন এড করার ইচ্ছা আছে। সময় করে এড করে নিবো ইনশাআল্লাহ্‌।

৫| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:১৫

রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: সুচিন্তিত পোস্টে প্লাস। মাতৃভাষা দিবসের শুভেচ্ছা রইলো।

২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:১০

এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: আন্তরিক ধন্যবাদ সহ শুভেচ্ছা জানবেন!

৬| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:০৮

চাঁদগাজী বলেছেন:



বাংলা ভাষাকে জাতির উন্নয়নের অংশ করার জন্য, জাতির প্রানের ভাষা হিসেবে টিকিয়ে রাখার জন্য, শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করার জন্য, জ্ঞান চর্চা ও গবেষণায় ভাষা হিসেবে, সর্বোপরি হিন্দির আক্রমণ থেকে রক্ষার জন্য, আপনি যেভাবে ভেবেছেন, বলেছেন, তা অতুলনীয়।

আপনার চিন্তাগুলো কার্যকরী করার দরকার।

২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:০৪

এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: মাঝে মাঝে ভাবি, শুধু ভাবলে বা লিখলে হবে না। চিন্তাগুলো কার্যকরী করার জন্যও কাজ করতে হবে।

মাঠে নামতে হবে, মাঠে তো অনেকেই আছে, কাজ তো হচ্ছে না। তবে মাঠে নামার ইন্টেলেকচুয়াল ফ্রেইমোয়ার্ক নিয়ে আলোচনা করতে হবে। ছোট ছোট ইন্সটিটিউশনাল চেঞ্জ আনতে সেই ইন্সটিটুট ভিত্তিক মুভমেন্ট করা যায়।

আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

৭| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:৪৫

গেম চেঞ্জার বলেছেন: বাংলায় উচ্চ শিক্ষাদান প্রস্তুতির পরিকল্পনা নেয়াই বোধ করি অমর একুশের সত্যিকারের তাগাদা।

এই ব্যাপারটা আমার মাথার মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে সে-ই অনার্স ১ম বর্ষের দিনগুলো থেকেই। কিন্তু যারা করবেন, তাদের নাড়াচাড়া তো দেখছি না।

২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:৫৯

এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: বাংলায় উচ্চ শিক্ষাদান প্রস্তুতির পরিকল্পনা নিয়ে বলছি, বাস্তবায়ন তো পরের কথা।

১। আমার মনে হয়, ৫০০ থেকে ১০০০ ছাত্র জনতা ক্রমাগত আন্দোলন করলে কিছু ফল আস্তে পারে।
২। প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছু ক্লাসিক শিক্ষক রয়েছেন, যারা খুব নিবেদিত, থিসিস গবেষণায় জড়িত। সব সময় ভাবি, বাংলা একাডেমী যদি উনাদের গিয়ে বলত, স্যার আপনার লভধ জ্ঞান অভিজ্ঞতা দিয়ে পঠিত বিষয় গুলোতে পাঠ্য বইয়ের আদলে বই লিখেন, নিজেকে রি-প্রডিউস করে জান। মহৎ প্রাণ সব হারিয়ে যাচ্ছে। অবহেলায়, অনাদরে।

৮| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:০৭

গেম চেঞ্জার বলেছেন: আপনি যে দুটো পরিকল্পনার কথা বললেন, সেটা ফলপ্রসু হওয়ার কথা। এটা নিয়ে বিস্তর চিন্তা করা উচিত। জাতিগত সৌকর্য ও গৌরবের সাথে এই ব্যাপারটা জড়িত।
এই দেখুন না, স্পেন/ফ্রান্স/জার্মানী নিজেদের জাতিগত সমৃদ্ধি বজায় রাখতে কি করছে? কিংবা চেক/রাশিয়া/চীন?

এরা সবাই শিক্ষার সব জায়গায় নিজেদের ভাষাকে সযত্নে লালন করছে। যা দরকার তা অনুবাদ করে নিচ্ছে। এমনকি বাইরের কেউ পড়তে আসলে তাকে বাধ্যতামুলক ভাষা শিখে আসতে হচ্ছে।

অথচ আমাদের দেশে?? জাতিগত দেউলিয়াত্ব যে কতটা ব্যাপক পরিমাণে আমাদের মধ্যে রয়ে গেছে সেটা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিতে হবে না। আমরা কতটা স্থুল চিন্তাধারার বুদ্ধিজীবী লালন করি সেটা সত্যিই মাঝে মাঝে অবাক করার মতো। :(

২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:১৮

এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: হ্যাঁ ভাই, ভাষা নিয়ে কাজ করার ইন্টেলেকচুয়াল ফ্রেইমোয়ার্ক নিয়ে আলোচনা করতে হবে আমাদের এইসব নাগরিক ফোরামে। ছোট ছোট ইন্সটিটিউশনাল চেঞ্জ আনতে সেই ইন্সটিটুট ভিত্তিক মুভমেন্ট করা যায়। ব্যাপক ছাত্র নাগরিক সচেতনতা ভিত্তিক ইন্টেলেকচুয়াল মুভমেন্ট।

প্রথম পর্জায়ে তিন ধাপে তিনটি মৌলিক কাজঃ
প্রথম ধাপে- দেশীয় প্রথিতযশা শিখকদের দিয়ে একাডেমিক বই রচনা (উচ্চ শিক্ষার সকল ডিসিপ্লিনে)।
দ্বিতীয় ধাপে- সকল প্রয়োজনীয় মান্সম্পন্ন দেশ বিদেশের বই অনুবাদ। (উচ্চ শিক্ষার সকল ডিসিপ্লিনে)।
তৃতীয় ধাপে- পঠন, বলন, শ্রবণ, লিখন ভিত্তিক এপ্টিচুড ডেভেলপমেন্ট সংশ্লিষ্ট পাঠ্য বই এবং সফটওয়্যার ডিজাইন, এগুলোই স্কুলে পড়ানো হবে। গত বাঁধা বাংলা প্রথম এবং দ্বিতীয় পত্রের মত নয়।


বার বার পাঠ্য বই বলছি, কারন সাধারণ বই এর চেয়ে পাঠ্য বই এর স্ট্রাকচারাল ডিফ্রেন্স!

৯| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:৩৯

অগ্নি সারথি বলেছেন: শহীদ মিনারের ফুলেল সৌন্দর্জকে ছাপিয়ে উঠুক বাংলা শিক্ষাদানের বুদ্ধি ব্রিত্তিক সৌন্দর্জ।

বাংলা ভাষা এবং বাংলাদেশ এগিয়ে যাক!

২৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:৪৫

এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: বাংলা ভাষা এবং বাংলাদেশ এগিয়ে যাক!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.