নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব,ইইই প্রকৌশলী। মতিঝিল আইডিয়াল, ঢাকা কলেজ, বুয়েট এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র।টেলিকমিউনিকেশন এক্সপার্ট। Sustainable development activist, writer of technology and infrastructural aspects of socio economy.

এক নিরুদ্দেশ পথিক

সমাজের প্রতিটি ছোট বড় সমস্যার প্রকৃতি নির্ধারণ করা, আমাদের আচার ব্যবহার, সমাজের প্রচলিত কৃষ্টি কালচার, সৃষ্টিশীলতা, চারিত্রিক উদারতা এবং বক্রতা, অপরাধ প্রবৃত্তি, অপরাধ সঙ্ঘঠনের ধাঁচ ইত্যাদির স্থানীয় জ্ঞানের আলোকে সমাজের সমস্যার সমাধান বাতলে দেয়াই অগ্রসর নাগরিকের দায়িত্ব। বাংলাদেশে দুর্নীতি রোধ, প্রাতিষ্ঠানিক শুদ্ধিকরন এবং টেকনোলজির কার্যকরীতার সাথে স্থানীয় অপরাধের জ্ঞান কে সমন্বয় ঘটিয়ে দেশের ছোট বড় সমস্যা সমাধান এর জন্য লিখা লিখি করি। আমার নির্দিষ্ট দৃষ্টিভঙ্গি আছে কিন্তু দলীয় সীমাবদ্ধতা নেই বলেই মনে করি, চোর কে চোর বলার সৎ সাহস আমার আছে বলেই বিশ্বাস করি। রাষ্ট্রের অনৈতিক কাঠামোকে এবং দুর্নীতিবাজদের সবাইকে তীক্ষ্ণ ভাবে চ্যালেঞ্জ করার চেষ্টা করি। রাষ্ট্র কে চ্যালেঞ্জ করতে চাই প্রতিটি অক্ষমতার আর অজ্ঞতার জন্য, তবে আঘাত নয়। ব্যক্তিগত ভাবে নাগরিকের জীবনমান উন্নয়ন কে দেশের ঐক্যের ভিত্তিমূল মনে করি। ডাটাবেইজ এবং টেকনোলজি বেইজড পলিসি দিয়ে সমস্যা সমাধানের প্রোপজাল দেবার চেষ্টা করি। আমি মূলত সাস্টেইন এবল ডেভেলপমেন্ট (টেকসই উন্নয়ন) এর নিরিখে- অবকাঠামো উন্নয়ন এবং ডিজাইন ত্রুটি, কৃষি শিক্ষা খাতে কারিগরি ব্যবস্থাপনা ভিত্তিক সংস্কার, জলবায়ু পরিবর্তন, মাইক্রো ইকনমিক ব্যাপার গুলো, ফিনান্সিয়াল মাইগ্রেশন এইসব ক্রিটিক্যাল ব্যাপার নিয়ে লিখার চেষ্টা করি। মাঝে মাঝে চোরকে চোর বলার জন্য দুর্নিতি নিয়ে লিখি। পেশাঃ প্রকৌশলী, টেকনিক্যাল আর্কিটেক্ট, ভোডাফোন।

এক নিরুদ্দেশ পথিক › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাংলাদেশ ব-দ্বীপ মহাপরিকল্পনা (বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান) এবং নাগরিক প্রত্যাশা

৩০ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ৩:৪৯

(এই লিখাটি বাংলাদেশ চিন্তকদের অবশ্য পাঠ্য। শুধু রিডিং পড়ার জন্য নয়, লিখার থীম এবং কন্টেন্ট অনুধাবন করার চেষ্টা করুন প্লিজ। আশা করি দীর্ঘ লিখাটি ওর্থ রিডিং হিসেবেই পাবেন।)

আন্তর্জাতিক নদী কৃত্য দিবস-২০১৬ উপলক্ষে ১৩ মার্চ এক সংবাদ সম্মেলনে ‘বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন’ (বাপা) ও ‘জাতীয় নদী রক্ষা আন্দোলন’ সংস্থা দুটি ​থেকে জানানো হয় (রেফারেন্স নং-২)​, ‘দেশের বিশেষজ্ঞদের যুক্ত না করে শুধু বিদেশী বিশেষজ্ঞদের নিয়ে তৈরি করা হচ্ছে ব-দ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০। এ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে তা দেশের নদীগুলোর জন্য নতুন অশনিসংকেত হিসেবে দেখা দেবে। ষাটের দশকে সবুজ বিপ্লবের নামে ভুল পরিকল্পনায় দেশে ​​উপকূলীয় বেড়িবাঁধ তৈরি করা হয়েছিল। ওই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের পর দেশের বেশির ভাগ উপকূলীয় নদী আজ মৃত্যুর প্রহর গুনছে। এখন আবারো বিদেশী বিশেষজ্ঞনির্ভর ব-দ্বীপ পরিকল্পনা (ডেল্টা প্ল্যান) নিয়ে এগোচ্ছে সরকার। নেদারল্যান্ডসের ব-দ্বীপের আদলে করা ওই পরিকল্পনা বাংলাদেশের জন্য কখনই বাস্তবসম্মত হবে না। বরং দেশের যে নদীগুলো কোনোমতে টিকে আছে, তা চিরতরে ধ্বংস হয়ে যাবে।’

​এরই পরিপ্রেক্ষিতে ​ বাংলাদেশ পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের ​​জ্যেষ্ঠ সচিব​ জনাব​​ ​শামসুল আলম​ ​বাংলাদেশ ব-দ্বীপ পরিকল্পনা​র কিছু কৌশলগত ​দিক বণিক বার্তায় ((রেফারেন্স নং-১) আলোচনা করেছেন যা অবশ্যই সাধুবাদ পাওয়ার দাবি রাখে। পানি ব্যবস্থাপনায় ডাচদের অভিজ্ঞতা অদ্বিতীয়​ বর্ননা করে ​জ্যেষ্ঠ সচিব​ ​​​ব-দ্বীপ পরিকল্পনা​কে​ সম্পূর্ণরূপে বাংলাদেশের নিজস্ব​ বলে উল্লেখ করে বলেছেন যে সম্পূর্ণ দেশীয় বিশেষজ্ঞ কর্তৃক এর খসড়া প্রণীত হচ্ছে​। বিস্তারিত বর্ননায় বলা হয়েছে- ​ব-দ্বীপ পরিকল্পনার মূল উদ্দেশ্য হলো, প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রভাব হ্রাস করে জলবায়ু পরিবর্তন বিবেচনায় রেখে কৃষি, পানিসম্পদ, ভূমি, শিল্প, বনায়ন, মত্স্যসম্পদ প্রভৃতিকে গুরুত্ব প্রদানপূর্বক সংশ্লিষ্ট সব অংশীজনের অংশগ্রহণের মাধ্যমে সুষ্ঠু পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা, খাদ্যনিরাপত্তা ও টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে ধাপে ধাপে বাস্তবায়নযোগ্য একটি সমন্বিত দীর্ঘমেয়াদি (৫০ থেকে ১০০ বছর) মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন এবং তা বাস্তবায়নের কর্মকৌশল নির্ধারণ করা।​ ​ব-দ্বীপ পরিকল্পনার সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যগুলো হচ্ছে​- ১. বন্যা ও জলবায়ু পরিবর্তন-সম্পর্কিত বিপর্যয় থেকে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা; ২. পানি ব্যবহারে অধিকতর দক্ষতা ও পানির পর্যাপ্ততা বৃদ্ধি করা; ৩. সমন্বিত ও টেকসই নদী ও নদী মোহনা ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা; ৪. জলাভূমি ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং তাদের যথোপযুক্ত ব্যবহার নিশ্চিত করা; ৫. অন্তঃ ও আন্তঃদেশীয় পানিসম্পদের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার জন্য কার্যকর প্রতিষ্ঠান ও ন্যায়সঙ্গত সুশাসন গড়ে তোলা এবং​ ​৬. ভূমি ও পানিসম্পদের সর্বোত্তম সমন্বিত ব্যবহার নিশ্চিত করা​।

উপরোক্ত ৬ টি বিষয়ের প্রতিটিতে দেশের সাকজেক্ট ম্যাটার এক্সপার্ট এবং নদী অববাহিকা এবং উপকূলীয় জসাধারনের ​এর লভধ জ্ঞানকে (ব্যাপক সার্ভে ভিত্তিক) মহাপরিকল্পনায় সমন্বিত করার চরম প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। এই বিষয় গুলোকে দেশে ইন্টেলেকচূয়াল ডিবেট হিসেবে উন্মুক্ত করে মহাপরিকল্পনায় ইনপুট নেয়াও সময়ের দাবী। ​আলোচনায় প্রবেশ করছি বাপার অভিযোগ দিয়ে।​উপকূলীয় বেড়িবাঁধ দিয়ে নদী হত্যার যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা নিরেট সত্য তবে বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান ​নিয়ে বিশেষ পয়েন্ট ​নির্ভর সমালোচনা কাম্য ছিল বাপার কাছে। তবে নাগরিক এবং নাগরিক সংঘঠনকে তথ্য সরবারহের বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের দায় থেকে যায়। বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান এর উপর প্রকাশিত দলিল কিংবা নাগরিক আলোচনার পরিসর উন্মুক্ত করা হয়নি।

নেদারল্যান্ডস এবং বাংলাদেশের ডেল্টার সাদৃশ্য অসাদৃশ্য
নদীমাতৃক হলেও নেদারল্যান্ডস এবং বাংলাদেশের কৃষি ভিত্তিক জীবনধারা ব্যাপক ভিন্ন। নেদারল্যান্ডস উপকূলে বিস্তৃত ম্যানগ্রোভ নেই, বিস্তৃত উপকূল​ অসংখ্য ড্যাম ও ডাইক দিয়ে বেঁধে ফেলা হয়েছে। এই ডাইক​গুলো​​ দিয়ে সাগর থেকে ভুমি উদ্ধার করা হয়েছে যা দেশটির মোট আয়তনের তিন ভাগের এক ভাগ প্রায়, অর্থাৎ দেশটির ১/৩ ভাগ সমূদ্র সমতলের নীচে! ডাইকগুলো সমতলে​ লোনা পানির আগ্রাসন এবং​ স্থায়ী​ বন্যা প্রতিবন্ধক।​ এখানে ধান চাষ একেবারেই হয় না, খাদ্যাভ্যাস স্বল্প পানি নির্ভর কৃষি জাত গম ভূট্রা যব আলু দুধজাতীয় পণ্য (চীজ এন্ড ব্রেড) ইত্যাদি নির্ভর। দেশটির বিস্তৃত মধ্যাঞ্চল শুধুই গবাদি পশুর সুবিশাল চারণভূমি।পুরো​ দেশের​ সমতলই আর্টিফিশিয়াল ক্যানেল নেটোয়ার্ক এর আওতায় এনে স্বল্প পানি নির্ভর কৃষি জাতের ফলন করা হয়ে, এই অগভীর ক্যানেল গুলোতে উইন্ডমিল ভিত্তিক সাধু পানি প্রবাহ সঞ্চালিত হয়। উল্লেখ্য শীতকালীন দেশ হওয়ায় বছরে​ ​একটি মাত্র আউটডোর ফলন সম্ভভ এদেশের মাঠে। তবে এখানে বছরব্যাপী বহুবিধ সবজির ফলন হয় বিশালাকায় গ্রীন হাউজে।


অন্যদিকে বাংলাদেশের বিস্তীর্ন উপকুল ম্যানগ্রোভ (সুন্দরবন) বেষ্টিত যা টাইডাল ওয়েভ নির্ভর এক মহা প্রাণের আঁধার, যা একদিকে প্রাকৃতিক কর্ম সংস্থানের আঁধার অন্যদিকে ভারত মহাসাগরীয় দুর্যোগ এবং জলোচ্ছ্বাস থেকে বাংলাদেশ রক্ষাকবচ। সুতরাং শাখা প্রশাখার ন্যায় নদির জালবেস্টিত এই উপকূলীয় অঞ্চলে কোন রকমের নদী শাসন এবং পানি ব্যবস্থাপনার মহা ম্যান মেইড পরিকল্পনা অগ্রহনযোগ্য। তবে ম্যানগ্রোভ ছাড়া বাকি নদী অববাহিকায় ডাচ অভিজ্ঞতা বাস্তবায়ন করা যায় যেখানে ড্যাম এবং ডাইক ভিত্তিক স্থায়ী বন্যা নিয়ন্ত্রনের কাজের শুধু পাইলট ভিত্তিক পরিকল্পনা নিয়ে আগানো যায়। তবে সাধু পানির ব্যবহার নিশ্চিতে ক্যানেল নেটোয়ের্কের জ্ঞান ট্র্যান্সফার করা গুরুত্বপূর্ন হতে পারে যদিও খাল খনন কর্মসূচী বাংলাদেশে একেবারেই নতুন নয়, দরকার ভিশন নির্ভর বাস্তবায়ন। এর বাইরে বলতে হয়, বাংলাদেশে গড় বায়ু প্রবাহ নেদারল্যান্ডস এর তুলনায় খুবই কম বিধায় এখানে উইন্ড মিল নির্ভর পানি পানি প্রবাহ পরিকল্পনা কাজ করবে না। বাতাসের গতিবেগের সঙ্গে কিউবিক রিলেশনে বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয় বলে আমাদের উইন্ড এনার্জির ভবিষ্যাৎ আসলেই নাজুক।তবে বাংলাদেশের সেচে সৌর বিদ্যুৎ খুবই সম্ভাবনাময়। উপরন্তু বিস্তৃত সমভূমি শুধু গবাদি পশুর চারণ ভূমির জন্য ছেড়ে দিবার ডাচ পরিকল্পনা বাংলাদেশের জন্য নিছকই উচ্চাভিলাষ। উল্লেখ্য বাংলাদেশ নেদারল্যান্ডস এর তুলনায় কমপক্ষে ১২ গুন ঘনবসতিপূর্ন!


নেদারল্যান্ডস এর জীল্যান্ড এর নিচের দিকে খুব ছোট ছোট কিছু ম্যানগ্রোভ ফরেস্টকে (পুরপুরি ম্যানগ্রোভ বলা যায় না)বাঁচাতে দেশেটির এই কর্নারে বাঁধ দেয়া হয়নি। যদিও ন্যাচারাল বনগুলো পুরোপুরি টিকানো যায়নি কারন আপ স্ট্রীমের মিঠা পানির ফ্লো নিয়ন্ত্রিত। (মনে রাখতে হবে গঙ্গা -কপোতাক্ষ সেচ প্রকল্পের কারনে হিমালয়ের মিঠা পানি শুকনো মৌসুমে খুলনা-সাতখিরার নদনদী হয়ে সুন্দরবন বিধৌত করে না। পানি সেচে ডাইভার্ট হয়ে যাচ্ছে)। সুন্দরবন বাঁচাতে আমাদের এরকম কিছু করা লাগবে অর্থাৎ বরগুনা-পটুয়াখালীর পশ্চিম এবং পূর্বকে আলাদা করে সুন্দরবনের দিকে কোন ধরনের ম্যান মেইড ম্যানিপুলেশন করা যাবে না। আর বরগুনা থেকে চট্রগ্রামের দিকে মহাপরিকল্পনার আবকাঠামো পরিকল্পনা নেয়া যায় (নদীর মোহনায় স্লুইস কন্ট্রল্ড ড্যাম আউটার সীতে ডাইক)। বরগুনা-পটুয়াখালীর কথা উদাহরণ হিসেবে বলা হয়েছে, একচূয়াল লাইন সমীক্ষা করে বের করতে হবে।

মোহনায় একাধিক বাঁধ এবং মহীসোপানের শুরুর দিকে ডাইক থাকায় নেদারল্যান্ডস এর নদনদী মৎস্য শূন্য প্রায়। এখানে নদী ভিত্তিক মৎস্য চাষ কোন পেশা নয়, নাগরিকদের কেউই নদীতে মাছধরে জীবিকা চালান না। নির্দিষ্ট ফি সহ বাৎসরিক লাইসেন্স নেয়া লাগে নদীতে শখের বসে মাছ ধরতেও, এই কাজটি কিছু ধনী লোকের হবি। সুতরাং বাংলাদেশের ব্যাপক মৎস্যজীবী মানুষের জীবনধারার বাস্তবতায় এটা একটা চরম ব্যাতিক্রম যা ডেল্টা পরিকল্পনার তাদের ডেল্টা প্ল্যানের আউটকাম এবং আমাদের ডেল্টা প্ল্যানের অপরিহার্য্য ইনপুট।



হাজার বছরে অর্জিত স্থানীয় জ্ঞানকে আধুনিক পরিকল্পনায় সমন্বিত করুন ​​

নদীমাতৃক বাংলাদেশে নদী এবং খালের পাড়ে শহর বন্দর এবং হাট বাজার বসে উঠেছে শতাব্দী প্রাচীন নৌপথ ভিত্তিক মাস ট্রাস্নপোর্টেশন এর কারনে যা সভ্যতার অত্যন্ত যৌক্তিক অধ্যায়। কিন্তু পরবর্তিতে সড়ক পথ করার সময় দেখা যায় ঠিক নদী বা খালের একটি কূল ব্লক করে রাস্তা বানানো হয়েছে (কথিত মাটি প্রাপ্তির সুবিধার জন্য) কিন্তু এতে চাষের জমিতে পলি পতনে​ চরম​ প্রতিবন্ধকতা দেখা দিয়েছে, বিপরীতে পলি পতন জনিত উর্বরতা ত্বরান্বিত করতে সঠিক সময়ে ওয়াটার পাসের জন্য​ প্রবাহ নির্ভর ডেটা বেইজড ডাইমেনশন করে​ পর্যাপ্ত কাল্ভার্ট, ব্রিজ কিংবা স্লুইস গেইটের বন্দবস্ত করা হয়নি​ কখনই​। অথবা বর্ষা পরবর্তি জলাবদ্ধতা কিংবা ফসল কাটা নতুন ফসলের জন্য জমি প্রস্তুতে দ্রুত পানি সরানোর বিবেচনা ব্রিজ কাল্ভার্ট ডিজাইন এবং ডাইমেনশনে আনা হয়নি। কাচা পাকা রাস্তা করা হয়েছে কিন্তু সেই এলাকার কয়েক যুগে হওয়া বন্যা গুলোর পানির উচ্চতা কেমন ছিল তার গড় মেজারমেন্ট নেয়া হয়নি, ফলে এই ২০১৫ সালের বন্যাতেও​ অনেক​ গ্রামের ভিতরের সব রাস্তা এবং গ্রামের মূল রাস্তাটির​ অনেক অংশের উপর​ই​ পানি উঠতে দেখেছি, অথচ পাশেরই শত বছরের পুরানো রেলসড়ক বন্যা মুক্ত।​ উপরন্তু মাটি ভরেটের রাস্তার বেইজে​ কনক্রিট​ সাপোর্ট না রাখায় প্রতি বছর বর্ষা এবং বন্যা পরবর্তি সময়ে ভেঙ্গে যাওয়া অংশে মাটি ফেলে মেরামত করা লাগে​ বছর বছর​।​ পলি পতনের জন্য নদীর বা খালের দুই কূল উন্মুক্ত রেখে দুই স্রোত ধারার মাঝের ভুমিতে নতুন খাল খনন করে রাস্তা বানানোর ডিজাইন কোথাও চখে পড়ে না যা বাড়তি পানি প্রবাহের এবং শুকনা মৌসুমে পানি ধারনের বন্দবস্ত করতে পারতো।​ এর বাইরে রয়েছে অতিকায় নদী অববাহিকায় বালু এবং সিমেন্টের ছোট ছোট বস্তা​ ফেলার হাস্যকর নদী শাসন কিংবা শহর রক্ষা ব্যবস্থাপনা।বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে কিংবা নদী অববাহিকায় নেই কোন সাধু পানি পুনঃ সঞ্চালনের পরিকল্পিত ক্যানেল নেটোয়ার্ক। অর্জন বলতে তিস্তা, কপোতাক্ষ সেচ প্রকল্পের মত ২-৩টি বৃহৎ সেচ ব্যবস্থাপনা যা প্রতিবেশী দেশের অন্যায্য পানি প্রত্যাহারে অকেজো হয়ে উঠছে। কিন্তু বিস্তৃত সমতলে চাষাবাদের জন্য সাধু পানি পুনঃ ব্যবহারের কোন সমন্বিত ক্যানেল নেটোয়ার্ক নেই। এগুলো এক একটি​ পানি ব্যবস্থাপনার​ ডিজাইন গ্যাপ নির্দেশক যা আমরা হয় ধরতে পারিনি অথবা দুর্নিতি পরায়নতার কারনে বাস্তবায়ন করিনি​। এগুলো আমাদেরই ডিজাইন ত্রুটি, তবে ডেল্টা প্ল্যানের টেকসই ডিজাইনে এই ​উত্তরাধিকার​ প্রাপ্ত ​ পরিকল্পনা গ্যাপ গুলোর অঞ্চল ভিত্তিক ইনপুট দেয়া দরকার।অন্যথায় ডেল্টা পরিকল্পনা দিয়ে আমাদের বন্যা পানি ও সেচ এবং অবকাঠামো ব্যবস্থাপনায় টেকসই প্রযুক্তি ইনক্লুড করার ভীশন অর্জিত হবে না। ​​


জলবায়ু পরিবর্তন, ঋতু বৈচিত্রের ক্রমবর্ধমান ভারসাম্যহীনতা, অনিয়মিত বৃষ্টি (অতিবৃষ্টি কিংবা অনাবৃষ্টি),​ বন্যা, শক্তিমান দেশ সমূহের তৈরী ফারাক্কা রূপী মরণফাঁদ, আন্তর্জাতিক নদ নদীর পানি প্রত্যাহার ও প্রবাহ পথের পরিবর্তন , উৎস থেকে প্রাকৃতিক পানি প্রবাহ হ্রাস, পলি পতন আর কূলের ভাঙ্গন জনিত নাব্যতা হ্রাস, অতিমাত্রায় ব্যবহারের কারণে ভূগর্ভস্থ প্রাকৃতিক পানির উৎসের গভীরতা বৃদ্ধি, সর্বোপরি সমতলের সাধু পানি অঞ্চলে সাগরের লবণাক্ত পানির আগ্রাসন ইত্যাদি ইত্যাদি বহুবিধ কারণে বাংলাদেশের কৃষক দিন দিন পানি হারা​ কিংবা অনাকাঙ্ক্ষিত পানি আগ্রাসনে​ পড়ছেন।​​স্যালাইন পেনিট্রেশন এর কারনে উপকূলীয় কৃষির স্বাভাবিক ক্যালেন্ডার বাঁধা গ্রস্ত হচ্ছে, সমস্যায় পড়ছে ফলনের জাত এবং বীজ ব্যবস্থাপনার সূক্ষ্ম ব্যাপার গুলো। এর বাইরে রয়েছে চাষাবাদের রাসায়নিক আগ্রাসন জনিত স্থানীয় ফলন জাতের বিলোপ। ফলে বীজ ব্যবস্থাপনা প্রাকৃতিক ক্যালামিটির বিপরীতে ন্যাচারাল রেজিস্টেন্স হারিয়ে রাসায়নিক সার কীটনাশাক ছাত্রাক নাশক হয়ে পড়ছে যা মাটি এবং পানিকে বিষিয়ে কৃষি জমি এবং সাধু পানির অণুজীব ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিচ্ছে, জমি দিন দিন অনুর্বর হচ্ছে। পরিবর্তিত জলবায়ুর অনিরাপদ বিশ্বে খাদ্য নিরাপত্তার ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ গুলো মোকাবেলায়​ বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যানকে কৃষি এবং খাদ্য নিরাপত্তার এই বিষয় গুলোকে অ্যাড্রেস করতে হবে।


​উপকূলীয় খাদ্য নিরাপত্তায় ​এখন থেকেই বহুবিদ পরিকল্পনা হাতে নেয়া জরুরী হয়ে দাঁড়িয়েছে​, আলোচ্য বিষয়ের শুধু একটি মাত্র হতে পারে এমন যে "আমরা আমাদের খাদ্যাভ্যাস কে ধীরে ধীরে কিন্তু কার্যকর ভাবে পরিবর্তন করব যেখানে পানি নির্ভরতা ধীরে ধীরে কমে আসে"​। ধান চাষ অতিমাত্রায় পানি নির্ভর​ যাতে স্থির কিংবা বদ্ধ পানি আবাশ্যক। এটাই প্রধান সমস্যা।​। সুতরাং ভাত প্রধান জাতি সমূহ খাদ্য নিরাপত্তার অন্যতম শিকার হবে। ​আজ থেকে ৫০ বৎসর পর এত বিপুল পরিমাণ ধান উৎপাদনের পানি আসবে কোথা থেকে? সেই সময়ের চাহিদার একটা ট্রেন্ড বের করা সম্ভভ হলেও জমির ক্রমবর্ধমান অনুর্বরতা, নদীর এবং ভূগর্ভস্থ পানির স্তর হ্রাস এবং কেমিক্যাল নির্ভরতার কারনে উৎপাদন কেমন হবে সেই ট্রেন্ড বের করা অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে!​ ধান চাষে​​ সাধু পানি ব্যবস্থাপনার এই দিকটি অবহেলিত থাকলে দীর্ঘ ​মেয়াদে বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান উপকূলীয় স্যানিটেশন এবং আবাসন উন্নয়ন ছাড়া খাদ্য নিরাপত্তায় খুব বেশি উপকার দিবে না।

মহাপরিকল্পনার বিভিন্ন তথ্য এবং প্রেজেন্টেশনে দেখা গিয়েছে সেখানে উপকূলীয় শহর রক্ষা, অবকাঠামো, নগর ড্রেনেজ, স্যানিটেশন, নদী শাসন, ল্যান্ড ক্লেইম অনেক বেশি প্রাধান্য পেয়েছে। অতি অবাক করা বিষয় হচ্ছে এর প্রতিটিই একটি নগর পরিকল্পনার অপরিহার্য্য অংশ যা ব্রিটিশ আমল থেকেই বাংলাদেশের জেলা, বিভাগ, সিটি এবং পৌর কর্পরেশনের কার্যতালিকাধীন। উপরন্তু এই বিষয় গুলো জলবায়ু তহবিলের প্রকল্পেও রাখা হয়েছে। আমরা চাই এই সাধারণ নগর ব্যবস্থাপনার রুটিন ওয়ার্ক স্কোপের পুনরাবৃত্তি ক্রিয়েটিভ পরিকল্পনায় রাখা না হোক, দুর্নিতির আরেকটি উৎস সৃষ্টি করা না হোক। সহজ কথায় আমরা চাই ডাচ টিমকে সঠিক ইনপুট দেয়া হোক-অতীতের ডিজাইন ত্রুটির, বাস্তবায়ন ভুলের, স্থানীয় দুর্নিতিজনিত মানহীন কাজের, বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার, রিসোর্স স্বল্পতার এবং সেই সাথে আগামীর সম্ভাবনার যা আমাদের কৃষি, খাদ্য নিরাপত্তা, পানিসম্পদ, ভূমি, শিল্প, বনায়ন, মত্স্যসম্পদ ​ব্যবস্থাপনাকে টেকসই করে তুলবে।

উপকূলীয় এবং নদী তীরবর্তী এলাকা দুর্যোগ প্রবণ। সেখানে এনার্জি পরিকল্পনা রিনিউএবল (যেমন সোলার বেইজড কমিউনিটি গ্রীড) হওয়া বাঞ্ছনীয়। উপরন্তু নদীর মোহনা এবং উপকূলে ছোট ছোট বহু ডেল্টার জাল থাকে যা ল্যান্ড কানেক্টেড না। যেমন মেহেন্দিগঞ্জ, ভোলার আসে পাশের দ্বীপ, নিঝুম দ্বীপ, হাতিয়া এগুলা ওয়াটার লকড। তাই এখানে হয় পাওয়ার ট্রান্সমিশন থাকে না, অথবা ঘুর্নিঝড় বা জলোচ্ছ্বাসে ক্ষতিগ্রস্ত হবার সমূহ সম্ভাবনা থাকে। অথবা লোড কম থাকায় পাওয়ার ট্রান্সমিশন এন্ড ডিস্ট্রিবিউশন এবং মেইন্টেনেন্স বিজনেস কেইস দাঁড়া করায় না। একই ভাবে গ্যাস ট্রান্সমিশন করার বিজনেস কেইস হয় না। আবার দুর্যোগ পুর্ন সময়ে এগুলো পুনঃ স্থাপন করা খুব কষ্টলি, সময় সাপেক্ষ। এর উপর রয়েছে এসব এলাকার মানুষের নিন্ম ক্রয় ক্ষমতা। এই বিষয় গুলো ডেল্টা প্ল্যানের ইনপুটে সমন্বিত দেখতে চাই আমরা।

ডেল্টা প্ল্যান নিয়ে​ নাগরিক স্বার্থের দিক হিসেবে​ খুব আগ্রহের বিষয় গুলো​ নিন্মরূপ।


০১। কিভাবে জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ গুলোকে​ স্থানীয় মৎস্য ও কৃষিজীবী মানুষের জীবন ধারার সাথে​ সমন্বয় করা​র প্ল্যান করা হচ্ছে। স্থানীয় মানুষের জীবন ধারার​ কোন কোন ভ্যালূ গুলোকে ডেল্টা প্ল্যানের টেকসই উন্নয়নে রাখা হবে? ​
০২। ​উপকূলীয় ভৌত ​অবকাঠামো​ (শহর রক্ষা বাঁধ, সড়ক, রাস্তা, বাজার, আবাসন, স্যানিটেশন, স্কুল, মসজিদ ইত্যাদি)​,​ বিদ্যুৎ, জ্বালানীর টেকসই পরিকল্পনা কেমন?
​০৩। উপকূলীয় কৃষি, জীবন ধারা-জীবিকা, স্বাস্থ্য​, টেকসই গৃহায়ন​, গবাদি পশুর লালন, কৃষকের ইনহেরিটেড বীজ স্বত্ব এইসব​ ইন্টেলেকচূয়াল প্রপার্টি রক্ষাকে ডেল্টা প্ল্যানে বিবেচনায় আনা হয়েছে কিনা? ​
০​৪​। কিভাবে স্যালাইন সহনীয় কৃষি ফসল, সার বীজ ব্যবস্থাপনা নিয়ে ভাবা হচ্ছে এবং বর্তমানের উপকূলীয় কৃষি সাইকেলকে কিভাবে ইভল্ভ করা হবে সেটা​র পরিকল্পনা কি কি? ​
০​৫​। শহর রক্ষা, ড্যাম, বন্য নিয়ন্ত্রনের ইন ফস্ট্রাকচারাল কাজ গুলূতে কিভাবে রিনিউএবল এনার্জি সোর্সের সমন্বয় আনা হবে (টাইডাল এনার্জি, ঊইন্ড এনার্জি কিংবা সোলার), যাতে ন্যাচারাল এনার্জি সাইকেল দিয়েই পানি ব্যবস্থাপনার কাজ গুলো, উপকূলীয় মানুষের জ্বালানী চাহিদা গুলো মিটানো যায়!
০​৬​। সাগরের ল্যান্ড ক্লেইম এর পদ্ধতি, মূলনীতি​ কেমন? ল্যান্ড ক্লেইম এর সাথে উপকূলীয় জীবনধারায় অভ্যস্থ মানুষকে (বিশেষত মৎস্য জীবী) কিভাবে স্থলভাগের অভ্যন্তরীণ জীবন ধারায় কর্মসংস্থানের প্রেক্ষাপটে আত্বীকরন করা হবে?
০​৭​। সুন্দরবন কে রক্ষা করার প্ল্যান আছে কি না? সুন্দরবনের জিও ডাইভার্সিটির ভবিষ্যৎ নিয়ে কি পরিকল্পনা?​ ম্যানগ্রোভ এর জন্য অত্যাবশ্যকীয় জোয়ার ভাটার টাইডাল সাইকেল সংরক্ষণ এর পরিকল্পনা কি? ​
০​৮​। সুন্দরবনে জীবিকা নির্বাহী লোকদের বিকল্প কর্ম সংস্থানের পরিকল্পনা কি কি?
​০৯। বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান নদী রক্ষার রক্ষা কবচ কিনা? বাঁধ- ডাইক দিয়ে ল্যান্ড ক্লেইম নদী হত্যার হাতিয়ার। এর বিপরীতে নদীর নিয়মিত প্রবাহ রক্ষায় কি কি পরিকল্পনা রয়েছে।
১০। বর্ষায় ভারত বড় বড় আন্তর্জাতিক নদীগুলোর উজানে​ দেয়া ​বাঁধের স্লুইস গেট ছেড়ে দিয়ে অতি স্বল্প সময়ে ফ্ল্যাশ ফ্ল্যাড তৈরি​ করে, দীর্ঘস্থায়ী​ বন্যা পরিস্থিতি তৈরি করে কিংবা বিদ্যমান বন্যা পরিস্থিতির চরম অবনতি করে। এই অতিশয় হীনমান্য প্রবনতা এবং ফসল ধ্বংসের যে অর্থনৈতিক অবিচার, তার সাথে ডাইক - বাঁধ দেয়া ভিত্তিক ল্যান্ড ক্লেইম প্লকল্প যোগ হলে দেশের বর্ষা কালীন ফলনে এক অশনি সংকেত নেমে আস্তে পারে। ডেল্টা প্ল্যানে এই মৌসুমী বৃষ্টিপাত এবং ভারতের ছেড়ে দেয়া পানির প্রবাহকে কিভাবে সমন্বিত করে দেশের বর্ষা কালীন ফলন এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা ঠিক রাখা হবে তার বিস্তারিত পরিকল্পনা জানা দরকার। ​



১১। যুগ যুগ ধরে বালুর বস্তা নির্ভর হাস্যকর নদীশাসনের ফলহীন চেস্টার বিপরীতে নদী ভাঙন রোধের টেকসই এবং সাশ্রয়ী ফলদায়ক বিকল্প কি কি?
১২। ডেল্টা প্ল্যান ডাচ টেকনোলোজি কিভাবে স্থানীয় প্রকৌশলী আর পরিকল্পনাবিদদের ট্র্যান্সফার করবে তা যথাযথ ডিফাইন করছে কি? আদৌ এধরনের ট্র্যান্সফার উইন্ডো আছে কিনা?ডেল্টা গবেষণার ফ্রেইমোয়ার্ক কেমন করা হচ্ছে? নগর ব্যবস্থাপনা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, উপকূলীয় ব্যবস্থাপনা, জমবায়ু পরিবর্তন ফান্ডেড প্রজেক্ট এগুলোর সাথে ডেল্টা প্ল্যানের এনগেইজমেন্ট কিংবা ডিমারকেশন এর পরিসর কেমন এবং কোথায়?

১৩। ইলিশের মত সাগরের মৎস্য জাতের প্রজননের ধারাবাহিকতা কিভাবে বজায় রাখা হবে, যেখানে মাছটি শুধু ডিম ছাড়তে স্রোতের বিপরীতে নদির মিঠা পানিতে আসে? অন্যদিকে উর্বর প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র গুলো (যেমন হালদা নদী, কর্নফুলীর মোহনা, পাথরঘাটা, মেঘনার মোহনা) রক্ষায় পরিকল্পিত ও বাস্তবসম্মত পরিকল্পনা গ্রহণ এবং সেটাকে কিভাবে ডেল্টা পরিকল্পনায় ইন্টিগ্রেটেড করা হবে?

বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান যদি উপরোক্ত বিষয়াদিকে সমন্বিত না করে উপকূলীয় শহর কেন্দ্রিক আবাসন ব্যবস্থাপনা এবং ল্যান্ড ক্লেইম​ ভিত্তিক​ আবাসন বাড়ানোর পরিকল্পনা নিয়ে​ অগ্রসর হয়, তাহলে এই প্ল্যান আমাদের কোন কাজেই আসবে না। বরং এটা ম্যানগ্রোভ বন, নদী, উপকূলীয় ফলন সহ আমাদের জীবন এবং কৃষি ব্যবস্থার ব্যাল্যান্সকে ধ্বংস করবে যা আমরা চাই না।

বঙ্গোপসাগরের বিস্তীর্ন মহীসোপান শেলো (বঙ্গোপসাগরে মেঘনা মোহনার গড় গভীরতা মাত্র ১৫-১৮ ফুট),এমনিতেই ভাটার সময় জেগে উঠে বিশাল আকারের সব চর ও ডুবো চর।বলা হচ্ছে হাতিয়া-নিঝুমদ্বীপ-ধামারচর এবং ধুলা-চরমোন্তাজ- চরকুকরি মুকরি ক্রস ড্যমের মাধ্যমে মূল স্থলভূমির সঙ্গে নির্বিচ্ছিন্নভাবে সংযুক্ত করা যাবে মাত্র দশ বছরের মধ্যেই। সেই সাথে এই এলাকায় তেল- গ্যাস প্রাপ্তির সম্ভাবনাও অনেক। অন্তত ৩৩ হাজার বর্গমাইল আয়তনের অবিচ্ছিন্ন ভূমি পাওয়া যাবার সম্ভাবনা আছে। এমতাবস্থায় ভয় হচ্ছে ডাচ টেকনোলজির উতকর্ষে ড্যাম এন্ড ডাইক ভিত্তিক এই ল্যান্ড ক্লেইমের প্রকল্পই রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ হয়ে উঠবে, রমরমা জমি ও আবাসন ব্যবসা হবে কিন্তু সুন্দরবন, প্রাণ বৈচিত্র্য, সেচ, কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তা এবং উপকূলীয় অন্যান্য ব্যবস্থাপনা আনফোকাসড হয়ে যাবে!

যেমনটা মাননীয় সচিব জনাব​​ ​শামসুল আলম​ ব্যাখ্যা করেছেন,​ ​​​​ব-দ্বীপ পরিকল্পনার মূল উদ্দেশ্য হলো, প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রভাব হ্রাস করে জলবায়ু পরিবর্তন বিবেচনায় রেখে ​​কৃষি, পানিসম্পদ, ভূমি, শিল্প, বনায়ন, মত্স্যসম্পদ প্রভৃতিকে গুরুত্ব প্রদানপূর্বক সংশ্লিষ্ট সব অংশীজনের অংশগ্রহণের মাধ্যমে সুষ্ঠু পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা, খাদ্যনিরাপত্তা ও টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে ধাপে ধাপে বাস্তবায়নযোগ্য একটি সমন্বিত দীর্ঘমেয়াদি (৫০ থেকে ১০০ বছর) মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন এবং তা বাস্তবায়নের কর্মকৌশল নির্ধারণ করা।​


আমরা চাই সরকার এবং পরিকল্পনা কমিশন এই বিষয়ে উন্মুক্ত এক্সপার্ট বিতর্কের আয়োজন করুক। মহাপরিকল্পনার প্রত্যেকটি দিক বিস্তারিত প্রকাশ করুক। নদী ভাঙনের ভুক্তভোগী, নদী অব্বাহিকার কৃষক এবং উপকূলীয় জীবনধারার মানুষের ব্যাপক সার্ভে লভধ জ্ঞান মহাপরিকল্পনাকে সমৃদ্ধ করুক, ডেল্টা প্ল্যান বিভিন্ন ইন্সটিটুটের থিউরেটিক্যাল ডিজাইন না হয়ে বাস্তবিক ইনপুট সর্বস্ব হোক। দেশীয় ডেল্টা পরিকল্পনাবিদদের ঘন ঘন নেদারল্যান্ডস ভিজিট না করে বরং ডাচ এক্সপার্টদের নিয়ে আমাদের উপকূলীয় এলাকা সমূহে, পদ্মা-মেঘনা-যমুনার অববাহিকায় দীর্ঘ মেয়াদী ভিজিট করা দরকার, প্রয়োজন আমাদের নদিতে বিভিন্ন ঋতুতে পানি প্রবাহ, বন্যা, নদী ভাঙন, খরা, আমাদের সেচ ব্যবস্থা, বীজ এবং ফসল ব্যবস্থা, কৃষি সাইকেল, আমাদের উপকূলীয় কৃষি এবং মৎস্য ভিত্তিক জীবনধারা নিবিড়ভাবে অনুধাবন করে প্ল্যানিং ইনপুট নেয়া (এই ইনপুটকে কম্প্রেহেন্সিভ এনভায়রনমেন্টাল সার্ভে,ইকোনোমিক সার্ভে, এগ্রিকালচারাল সার্ভে দিয়ে কভার করতে হবে) যার সাথে ডাচ টেকনোলজির সমন্বয় করা যায়। বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান নিয়ে আমাদের অনেক আশা ভরসা।ওয়াটার ম্যানেজমেন্ট এর মৌলিক অবকাঠামোতে আমাদের বলার মত কোন অর্জন নেই!এই একটা প্ল্যান ঠিক মত হোক, এই প্রত্যাশা করছি বাংলাদেশ এবং নেদারল্যান্ডস এর ডেল্টা পরিকল্পনাবিদদের কাছে।
বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান উচ্চমান হোক, বাংলাদেশ এগিয়ে যাক!


​বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান উচ্চমান হোক,
বাংলাদেশ এগিয়ে যাক! ​​





জনগুরুত্ব বিবেচনায় এই লিখার বিস্তারিত ভার্শন দৈনিক বণিক বার্তায় ২৮ এবং ২৯ এপ্রিল উপ্সম্পাদকীয়তে প্রকাশিত হয়েছে।
বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান ২১০০ ঘিরে নাগরিক প্রত্যাশা
বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান ২১০০ ঘিরে নাগরিক প্রত্যাশা


রেফারেন্সঃ
১। পানি ব্যবস্থাপনায় সমন্বিত একটি দেশজ মহাপরিকল্পনা
২। বদ্বীপ পরিকল্পনা নদীর জন্য অশনিসংকেত
৩। বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান অফিসিয়াল সাইট
৪। বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান প্রেজেন্টেশন
৫। প্রেজেন্টেশন
৬। Holland's Barriers to The Sea

মন্তব্য ৩১ টি রেটিং +১০/-০

মন্তব্য (৩১) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে মার্চ, ২০১৬ সকাল ৯:৫৮

মোস্তফা কামাল পলাশ বলেছেন:

পোষ্ট দেওয়ার ৬ ঘণ্টা পার হইয়া গেল একটাও মন্তব্য নাই। আমি নিশ্চিত যে এই পোষ্ট লিখতে আপনার কমপক্ষে ৭ দিন লেগেছে ১৫ দিন ও লাগতে পারে।

এটাকে ব্লগ পোষ্ট না বলে বলা যেতে পারে বাংলা ভাষায় বৈজ্ঞানিক গবেষণা প্রবন্ধ। পোষ্টে সাথে দ্বিমত পোষণ করার কোন অংশই খুঁজে পেলাম না।

নেদারল্যান্ড পৃথিবীতে পানিসম্পদ গবেষণা ও ব্যবস্থাপনায় ১ নম্বর। কয়েকদিন পূর্বে একটা প্রবন্ধ পরে জানতে পারলাম যে ২০০৫ সালে হ্যারিকেন ক্যাটরিনা (সালমান খানের সাবেক প্রেমিকা ক্যাটরিনা না) এর পরে আমেরিকার আর্মি কর্পস অফ ইঞ্জিনিয়ার তাদের উপকূলীয় ব্যবস্থাপনার জন্য নেদারল্যান্ডের দ্বারস্থ হয়। এর পরে লুইজিয়ানায় যে প্রটেকশন বাঁধ বানানো হয় তার উপদেষ্টা হিসাবে কাজ করে নেদারল্যান্ডের বিশেষজ্ঞরা।

গতবছর নেদারল্যান্ডের ডেল্ফট বিশ্ববিদ্যালয় একটা গবেষণাগার চালু করেছে সামুদ্রিক ঢেউ এর শক্তি পরীক্ষার জন্য যেটা পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে উঁচু কৃত্রিম ঢেউ তৈরি করতে পারবে।

আপনার সাথে সম্মত নেদারল্যান্ডকে সরাসরি অনুকরণ করে আমাদের উপকূলীয় এলাকায় কিছু বানালে সেটা হলও খিলগাঁও ফ্লাই ওভারের মতো যেটি বানানো হয়েছে আমেরিকার ডিজাইন অনুসারে। এখন ভাঙ্গে আবার বানাতে হবে কারণ আমেরিকায় গাড়ির স্টিয়ারিং বাম দিকে আর আমাদের দেশের ডান দিকে।

আমি নিশ্চিত নেদারল্যান্ডের প্রকৌশলীদের পর্যাপ্ত তথ্য সরবরাহ করলে ও কাজে স্বাধীনতা প্রদান করলে তারা নিজেদের অর্জিত জ্ঞানের সর্বোত্তম প্রয়োগ নিশ্চিত করবে। কিন্তু সমস্যা হলও আমাদের দেশের আমলা ও রাজনৈতিক নেতাদের হস্তক্ষেপ।

উপকূলীয় এলাকার বাস্তুসংস্থান খুবই সেনসিটিভ। যদি এই প্রকল্পে কোন ভুল হয় তবে যে ক্ষতিটা হবে তা হবে অপূরণীয়। আমাদের দেশের আর একটা সমস্যা হলও আমরা স্টেক হোল্ডারদের মতামতকে গুরুত্ব দেই না। ফলে প্রকল্পের আউট-কাম নির্ভর করে ক্রিকেট খেলার টস এর মতো। প্রকল্প সফল ও হতে পারে বিফলও হতে পারে।

আপনাকে ধন্যবাদ।

৩০ শে মার্চ, ২০১৬ দুপুর ২:৩৮

এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: পলাশ ভাই, প্রথমেই পড়ার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ।

লিখাটি একাডেমিক বিশ্লেষণের আদলে লিখেছি, আমাদের প্রাণ বৈচিত্র্য, মানুষের জীবন ধারা, কৃষির সাস্টেইনএবিলিটির বিষয়গুলো ইনপুটে নেয়ার তাগিদ দিয়েছি। এখানে হাই লেভেলে তুলনামূলক স্ট্যাডী করেছি, যেটাকে আরো বর্ধিত করা যায়। তবে এটুকু লিখতেই অনেক সময় লেগেছে।

"আমি নিশ্চিত নেদারল্যান্ডের প্রকৌশলীদের পর্যাপ্ত তথ্য সরবরাহ করলে ও কাজে স্বাধীনতা প্রদান করলে তারা নিজেদের অর্জিত জ্ঞানের সর্বোত্তম প্রয়োগ নিশ্চিত করবে।"

হ্যাঁ আমি এটাই চাই, মহা পরিকল্পনার সাফল্য নির্ভর করছে ব্যাপক মাত্রার মানসম্পন্ন ডিজাইন ইনপুট। এই কালচার বাংলাদেশে একেবারেই নেই। বাইরের ডিজাইনার রা আসেন, রাইট ইনপুট না পেয়ে নিজেদের মত করে কিছু করে দিয়ে যান যা আদতে টেকসই হয়ে উঠে না। আমি নিজে একজন টেকনিক্যাল ডিজাইনার, এই পেইনটা খুব বুঝি, যখন কোন আফ্রিকান নেটোয়ার্ক ডিজাইনে বসি, ডেটাবেইজ না থাকলে ডিফল্ট ভ্যালূতে ডিজাইন করতে হয়। কিন্তু নেটয়ার্ক এর বিষয় টেকনিক্যাল তাই কিছু কাজ করে। কিন্তু ডেল্টা প্ল্যান হোল এগেইন্সট ন্যাচার প্ল্যান বা বলতে পারি ম্যানূপুলেশন ইন ন্যাচারাল সাইকেলস- তাই এখানে রাইট ইনপুট ছাড়া ফল আনা ডিফিকাল্ট।

বঙ্গোপসাগরের বিস্তীর্ন মহীসোপান শেলো (বঙ্গোপসাগরে মেঘনা মোহনার গড় গভীরতা মাত্র ১৫ ফুট),এমনিতেই ভাটার সময় জেগে উঠে বিশাল আকারের সব চর ও ডুবো চর। হাতিয়া-নিঝুমদ্বীপ-ধামারচর এবং ধুলা-চরমোন্তাজ- চরকুকরি মুকরি ক্রস ড্যমের মাধ্যমে মূল স্থলভূমির সঙ্গে নির্বিচ্ছিন্নভাবে সংযুক্ত করা যাবে মাত্র দশ বছরের মধ্যেই। সেই সাথে এই এলাকায় তেল- গ্যাস প্রাপ্তির সম্ভাবনাও অনেক। অন্তত ৩৩ হাজার বর্গমাইল আয়তনের অবিচ্ছিন্ন ভূমি পাওয়া যাবে।

আমার ভয় কি জানেন? ডাচ টেকনোলজিতে ড্যাম এন্ড ডাইক ভিত্তিক এই ল্যান্ড ক্লেইমের প্রকল্পই রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ হয়ে উঠবে, রমরমা জমি ও আবাসন ব্যবসা হবে কিন্তু সুন্দরবন, প্রাণ বৈচিত্র্য, কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তা এবং উপকূলীয় অন্যান্য ব্যবস্থাপনা আনফোকাসড হয়ে যাবে! আশা করি সেরকমটা যাতে না হয়। তবে আশা দেখি না যখন দেখি বরিশাল সিটি কর্পোরেশান এবং এলজিইডির লোকেরা ইতিমধ্যেই প্রকল্পের ফান্ডে ডাচদের শোকেস সম্পূর্ন ক্যানেল ট্রাস্নপোর্ট গ্রার খিওথর্ন ভিজিট করা শুরু করেছেন।

২| ৩০ শে মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৩:১৭

কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: ঠিক যে বিষয়গুলো নিয়ে লেখা দরকার, সেই বিষয়গুলোতেই আপনি নিয়মিত লিখে আমাদেরকে সচেতন করে যাচ্ছে। আমি আগেও বলেছি, আপনার আর পলাশ ভাইয়ের কিছু লেখা মন্ত্রনায়লয়ের লোকদের পড়তে বাধ্য করা উচিত।

০১ লা এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৪:২৮

এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান আমার খুব আগ্রহের বিষয়, এই নিয়ে আমি নিজে নেদারল্যান্ডস এর হেগে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসে মান্যবর রাষ্ট্র দূতের সাথে ২ বার বিস্তারিত কথা বলেছি। এই লিখার লিংকটাও রাষ্ট্রদূত কে পাঠিয়েছি। ইচ্ছা আছে আরো কাটছাট করে উনাকে ফর্মাল চিঠি আকারে রেজিস্ট্রি পোস্টে পাঠাবো।

ইচ্ছা আছে, বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান নিয়ে ড আইনূন নিশাত স্যার এর সাথে আলোচনা করবো, স্যারের একটা সাক্ষাৎকার নিব!

আপনাদের নিরন্তর উৎসাহ প্রেরনা যোগায়। বাংলাদেশের বেসিক ইনফ্রাস্ট্রাকচার নিয়ে কাজ করার আছে অনেক, এই বোধ তাড়িয়ে বেড়ায় সবসময়। তাই টুক টাক লিখি।

আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন।

৩| ৩০ শে মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৩:৩৯

নেক্সাস বলেছেন: দারুন পোষ্ট। ভৌগলিক অবস্থান, জনসংখ্যা ও নানাবিধ দিক থেকে বিশ্বের অন্যন্য দেশের সাথে বাংলাদেশের বিস্তর ফারাক রয়েছে। যার ফলে উন্নত বিশ্বের অনেক থিউরি বাংলাদেশের বেলায় প্রযোজ্য হয়না। উন্নত বিশ্বের থিউরি এডপট না করে আমাদের উচিৎ উন্নত বিশ্বের জ্ঞান কে মাথায় রেখে আমাদের নিজস্ব গবেষণা উন্নত করা। আমাদের জলবায়ু, আমাদের মাটি, আমাদের জীব বৈচিত্র এবং আমাদের দেশের মানুষের বাস্তবিক অভিজ্ঞতার পরম্পরা কে বিবেচনায় এনে আমাদের কে আমেদের জন্যই পরিকল্পনা করতে হবে। তবে তখনই যে কোন প্রকল্প বাস্তবিক অর্থে এদেশের মানুষের কাজে আসবে। পোষ্ট টি আলোচনায় রাখা হোক।

৩০ শে মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৩:৫৭

এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: উন্নত বিশ্বের থিউরি এডপট না করে আমাদের উচিৎ উন্নত বিশ্বের জ্ঞান কে মাথায় রেখে আমাদের নিজস্ব গবেষণা উন্নত করা। আমাদের জলবায়ু, আমাদের মাটি, আমাদের জীব বৈচিত্র এবং আমাদের দেশের মানুষের বাস্তবিক অভিজ্ঞতার পরম্পরা কে বিবেচনায় এনে আমাদের কে আমেদের জন্যই পরিকল্পনা করতে হবে। তবে তখনই যে কোন প্রকল্প বাস্তবিক অর্থে এদেশের মানুষের কাজে আসবে।

খুব সুন্দর করে বলেছেন।

বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান ২১০০ এ ডেল্টায়িক বাংলাদেশের আশা এবং আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন দেখতে চাই। তা আসুক ডিজাইন ফেইজে থাকা বর্তমানের প্ল্যানিং কার্যক্রমেই!

৪| ৩০ শে মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৩:৪৫

তন্ময় ফেরদৌস বলেছেন: গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোকপাত করার জন্য লেখক কে ধন্যবাদ। নেটে একটু পড়াশুনা করছি। তারপরে বিস্তারিত কমেন্ট করবো।

৩০ শে মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৩:৫৮

এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: অপেক্ষায় রইলাম। বিস্তারিত জানাবেন প্লিজ!

৫| ৩০ শে মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৪:২৭

অলওয়েজ ড্রিম বলেছেন: আপনার প্রতিটা পোস্টই মহাগুরুত্বপূর্ণ।

আমি মনেকরি আমাদের সমস্যা আমাদেরই সমাধান করতে হবে। বিদেশি বিশেষজ্ঞরা আমাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে প্রযুক্তিগত পরামর্শ দিতে পারেন কিন্তু পরিকল্পনা করতে হবে আমাদেরকেই। আমাদের প্রয়োজন আমরাই অনুভব করতে পারব অন্যরা সেটা কখনোই আমাদের মতো করে অনুভব করতে পারবে না।

৩০ শে মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৫:০০

এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: আমি মনেকরি আমাদের সমস্যা আমাদেরই সমাধান করতে হবে। বিদেশি বিশেষজ্ঞরা আমাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে প্রযুক্তিগত পরামর্শ দিতে পারেন কিন্তু পরিকল্পনা করতে হবে আমাদেরকেই। আমাদের প্রয়োজন আমরাই অনুভব করতে পারব অন্যরা সেটা কখনোই আমাদের মতো করে অনুভব করতে পারবে না।

মনের কথা বলেছেন।

এই জনপদের জীবন ধারায় অভ্যস্ত মানুষ প্রাক্রিতিক কৃষি, মৎস্য, বনায়ন সহ জীবন ধারন এবং কর্ম সংস্থানের প্রয়োজনীয় এলিমেন্ট গুলো ভালো জানেন। তাই এই সাইকেল গুলোকে যখন আমরা ম্যানিপুলেইট করবো তখন আমাদেরকে তার সাস্টেইনেবল রূপটি বেছে নিতে হবে অন্ত্যন্ত সযতনে ঠিক সঠিক স্থানীয় জ্ঞানের আলোকে। এখানে চরম থিউরটিক্যাল নলেজ ফলপ্রসু না।

চাইলেই বাঁধ দিয়ে স্যালাইন পেনিট্রেশন বন্ধ করে ফেললাম আর বিস্তৃত কৃষি ভিত্তিক ফলন ব্যবস্থা উন্নত বিশ্বের আদলে পরিবর্তন হয়ে যাবে কিংবা খাদ্যাভ্যাস রূপান্তর হতে থাকবে ব্যাপারটা এরকম নয়। হ্যাঁ পানি স্বল্প ফলনের জাতে কৃষককে ফিরাতে কিছু দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা আন্তেই হবে তবে তাতে ব্যক্তি কৃষকে সেই পরিবর্তন প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত রেখেই।

এই ম্যাসেজটিই পরিকল্পনাবিদদের কাছে পৌঁছানো জরুরি। তাই বার বার বলছি থিউরিটিক্যাল নলেজ, নেদারল্যান্ডস ভিজিট ভিত্তিক একচেটিয়া পরিকল্পনা না করে আমি চাই ডেল্টা পরিকল্পনা বিদেরা বাংলাদেশের বিস্তৃত উপকূলীয় এবং নদী অববাহিকার জীবনধারায় অভ্যস্ত মানুষের জীবন সংগ্রাম, বিভিন্ন ঋতুতে নদী এবং পানির সাইকেল গুলো, ভাঙন, বন্যা, ফসলের আবর্তন, খরা, এগুলো খুব কাছ থেকে দেখুক দীর্ঘ মেয়াদে, তার পর সেখান থেকে ডিজাইন ইনপুট তুলে আনুক। তবেই হবে একটি টেকসই পরিকল্পনা, এভাবে প্ল্যান করলেই বাস্তবায়ন শুরুর পর ঘন ঘন পরিবর্তন করতে হবে না।

৬| ৩০ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ৮:১০

গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: অতীতে গৃহীত অনেক বৃহৎ পরিকল্পনায় পরিকল্পকদের দূরদৃষ্টির পরিচয় পাওয়া যায়নি । ব-দ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০ এর মত সুরুর প্রসারী পরিকল্পনায় মানুষের জীবন ধারার সাথে​ সমন্বয় সাধন অত্যাবশ্যক । অন্যথায় এটা হবে নিজেদের হাতে নিজেদের মৃত্যু ফাঁদ তৈরির সমতুল্য ।

পরিশ্রমী, তথ্যবহুল ও চিন্তাশীলদের জন্য চিন্তার খোরাক সৃষ্টিকারী চমৎকার পোস্টের জন্য লিখক কে অসংখ্য ধন্যবাদ ।

৩০ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ১১:৫৮

এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: অতীতে গৃহীত অনেক বৃহৎ পরিকল্পনায় পরিকল্পকদের দূরদৃষ্টির পরিচয় পাওয়া যায়নি । ব-দ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০ এর মত সুরুর প্রসারী পরিকল্পনায় মানুষের জীবন ধারার সাথে​ সমন্বয় সাধন অত্যাবশ্যক ।

বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান নিয়ে অনেক আশা ভরসা। আমি চাই বাংলাদেশের পরিকল্পনা বিদেরা এই একটা প্ল্যান ঠিক মত করুক। মৌলিক অবকাঠামোতে আমাদের বলার মত কোন অর্জন নেই!


অনেক অনেক ধন্যবাদ, গিয়াস ভাই।

৭| ৩০ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ৯:৫৭

পুলহ বলেছেন: আমি ঠিক বুঝে থাকলে এই মহাপরিকল্পনা তো সামগ্রিক ব-দ্বীপটাকে নিয়েই... আপনার লেখায় মনে হোল উপকূলীয় অঞ্চলটাকে আলাদাভাবে ফোকাস করেছেন। বণিক বার্তার লেখাটা থেকে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের একটা জেনারালাইজড কনসার্ন সম্পর্কে জানতে পেরেছি, সে হিসেবে আশা করা যায় কাগজে কলমে অন্ততঃ সুন্দরবন ও তার জীববৈচিত্র্যের ব্যাপারটাও পরিকল্পনা প্রণয়নের সময় মাথায় থাকবে (অবশ্য যদি ততদিন সুন্দরবন টিকে থাকে; রামপালের কারণে ধ্বংস হয়ে না যায়)

শামসুল আলম স্যারের লেখাটা থেকেই আপনার পোস্টের সাথে প্রাসঙ্গিক একটা বিষয় উদ্ধৃত করছিঃ 'বাংলাদেশ ব-দ্বীপ পরিকল্পনা সম্পূর্ণরূপে বাংলাদেশের নিজস্ব মহাপরিকল্পনা। সম্পূর্ণ দেশীয় বিশেষজ্ঞ কর্তৃক এর খসড়া প্রণীত হচ্ছে। পানি ব্যবস্থাপনায় ডাচদের অভিজ্ঞতা অদ্বিতীয়। তাদের অভিজ্ঞতা ও কারিগরি সহযোগিতা আমাদের নিজস্ব প্রেক্ষাপটে উপযোগী প্রমাণিত হলেই গ্রহণ করা হবে...'
"....ন্যাচারাল এনার্জি সাইকেল দিয়েই পানি ব্যবস্থাপনার কাজ গুলো, উপকূলীয় মানুষের জ্বালানী চাহিদা গুলো মিটানো যায়! "-- আইডিয়াটা অন্যরকম মনে হয়েছে। এ বিষয়ে একটা ফিজিবিলিটি স্টাডি করা যেতেই পারে।

তবে আসলে সমস্যাটা কি জানেন ভাই ? সমস্যাটা হইলো আমাদের এক্সপার্টদের কথা ইমপ্লিমেন্টেশনের সময় শোনা হবে কি হবে না- এইটা। এসটিপি একটা খুব ভালো উদাহরণ এক্ষেত্রে। আমার জানামতে পরিকল্পনাটা যথেষ্ট স্মার্ট ছিলো- কিন্তু ইমপ্লিমেন্টেশন সেই এক্সপার্টদের দেয়া প্ল্যান/ সাজেশন অনুযায়ী হয় নাই। ফলাফল- ঢাকা শহরের যানজট সেই তিমিরেই রয়া যাইতেছে...
বরাবরের মতই তথ্যবহুল এবং চমৎকার একটা পোস্ট।
অসংখ্য ধন্যবাদ পরিশ্রমী লেখাটার জন্য । ভালো থাকবেন !

৩০ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ১১:৫২

এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: ১। মহাপরিকল্পনা তো সামগ্রিক ব-দ্বীপটাকে নিয়েই... আপনার লেখায় মনে হোল উপকূলীয় অঞ্চলটাকে আলাদাভাবে ফোকাস করেছেন।

মূল পরিকল্পনাতেও উপকূলীয় এলাকা এবং নদী অববাহিকা ফোকাস পাবে। আমি নদী অববাহিকার কথা কম বলেছি, এখানে আরেকটু কাজ করা যায়! ধন্যবাদ!

তবে আপনি যখন নদীর মোহনায় ড্যাম দিবেন তখন অভ্যন্তর ভাগের পানি মিশ্র থেকে মিঠা হবে, ফলনের সাইকেল কিছুটা দেশের অভ্যন্তরের সমতলের কাছাকাছি হবে। খুলনা বাগেরহাট আর সাতক্ষীরার স্বল্প বা মাঝারি পানির কৃষি চক্রকে কিভাবে ইভল্ভড হবে তার তথ্য নেই আমার কাছে। হয়ত আরো অনেক অপেক্ষা করার আছে।

২। বাংলাদেশ ব-দ্বীপ পরিকল্পনা সম্পূর্ণরূপে বাংলাদেশের নিজস্ব মহাপরিকল্পনা। সম্পূর্ণ দেশীয় বিশেষজ্ঞ কর্তৃক এর খসড়া প্রণীত হচ্ছে।

উনার কথাটা খুব আস্থায় নিতে পারছিনা। সম্মান সহ নিচ্ছি শুধু। ইতিমধ্যেই ২ টি ইঞ্জিনিয়ারিং টীম সম্পর্কে জানি যারা ডাচ প্রকল্প ভিজিটের নামে নেদারল্যান্ডস এসেছেন ঘুরাঘুরি করতে, নিয়মিতই নাকি আসছে এরকম টীম। দেখুন দরকার ডাচ এক্সপার্ট দের নিয়ে আমাদের উপকূলীয় এলাকা, পদ্মা-মেঘনা-যমুনার অববাহিকায় দীর্ঘ মেয়াদী ভিজিট করা, আমাদের নদিতে বিভিন্ন ঋতুতে প্রবাহ, বন্যা, নদী ভাঙন এবং খরা এগুলো দেখে প্ল্যানিং ইনপুট নেয়া, যার সাথে ডাচ টেকনোলজির সমন্বয় করা যায়।

ডাচরা রিস্পন্সিবল নেশন, আশা করি তারা সুন্দরবন ক্ষতির কারন সৃষ্টি করবে না, কিন্তু ভয় পলিটিক্যালি মটিভেটেড নির্বিচার ল্যান্ড ক্লেইম প্রজেক্ট।

৩। "....ন্যাচারাল এনার্জি সাইকেল দিয়েই পানি ব্যবস্থাপনার কাজ গুলো, উপকূলীয় মানুষের জ্বালানী চাহিদা গুলো মিটানো যায়! "

এটা ইলাবোরেট করা যেত! বড় হয়ে যায় পোষ্ট। এখানে কিছু বলি,

উপকূলীয় এবং নদী তীরবর্তী এলাকা দুর্যোগ প্রবণ। সেখানে এনার্জি পরিকল্পনা রিনিউএবল হওয়া বাঞ্ছনীয়। উপরন্তু নদীর মোহনা এবং উপকূলে ছোট ছোট বহু ডেল্টার জাল থাকে যা সড়ক পথে কানেক্টেড না। যেমন মেহেন্দিগঞ্জ, ভোলার আসে পাশের দ্বীপ, নিঝুম দ্বীপ, হাতিয়া এগুলা ওয়াটার লকড। তাই এখানে হয় পাওয়ার ট্রান্সমিশন থাকে না, অথবা ঘুর্নিঝড় বা জলোচ্ছ্বাসে ক্ষতিগ্রস্ত হবার সমূহ সম্ভাবনা থাকে। অথবা লোড কম থাকায় পাওয়ার ট্রান্সমিশন এন্ড ডিস্ট্রিবিউশন এবং মেইন্টেনেন্স বিজনেস কেইস দাঁড়া করায় না। একই ভাবে গ্যাস ট্রান্সমিশনও থাকার বিজনেস কেইস হয় না। আবার দুর্যোগ পুর্ন সময়ে এগুলো পুনঃ স্থাপন করা মুশকিল, খুব কষ্টলি। এর উপর রয়েছে এসব এলাকার ক্রয় ক্ষমতা।

তাই দরকার এসব ছোট ছোট দ্বীপে রিনিউএবল এনার্জি ভিত্তিক ছোট ছোট কমিউনিটি গ্রীড। বাংলাদেশের জন্য এটা সোলার, বায়ু নয় একেবারেই।

নেদারল্যান্ডস এ সব খানেই উইন্ডমিল ভিত্তিক স্থায়ী ক্যানেল নেটোয়ার্ক ভিত্তিক সেচ প্রকল্প রয়েছে। আমি চাই ক্যানেল এবং সোলার ভিত্তিক সেচ কাঠামো পরিকল্পনা যা পুরো বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়বে। কিন্তু এটা কথার কথা না, খুব এক্সপেন্সিভ ইন্সটালেশন হবে। কিন্তু আল্টেমেটলি করতেই হবে। বর্শা মৌসুমের মিঠা পানি গড়িয়ে যাতে না দিয়ে সংরক্ষণ এবং সঞ্চালনে কার্যকর কিছু করতেই হবে। নাইলে সমূহ বিপদ। উন্মুক্ত সারফেইস ওয়াটার তো নদিতে একেবারেই নেই!


বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান নিয়ে অনেক আশা ভরসা। আমি চাই বাংলাদেশের পরিকল্পনা বিদেরা এই একটা প্ল্যান ঠিক মত করুক। মৌলিক অবকাঠামোতে আমাদের বলার মত কোন অর্জন নেই!

উচ্চমান মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ জানবেন।

৮| ৩১ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ১:৪৯

উদাসী স্বপ্ন বলেছেন: লেখাটা পুরোটা পড়লাম। অনেকে বলেন কমেন্ট নাই কেন? এর কারন হতে পারে সূচনা বক্তব্য কোনদিকে যাচ্ছে যেটা বোধগম্য নয়। যদিও লেখক নীচে রেফারেন্স দিয়েছেন যেগুলো দিয়েছেন সেগুলোর ফারহানা আহমেদের পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনটা পড়লে বোঝা যায় আসলে পোস্টের টপিকটা কত বিশাল। লেখক যখন লিখেছেনই এই গুরুত্বপূর্ন ব্যাপারটা নিয়ে তার উচিত ছিলো কয়েকটা খন্ডে লেখা। তাহলে একটা প্রানবন্ত আলোচনা হতে পারতো।

আমি যতটুকু পড়তে পেরেছি: ফারহানা আহমেদের পয়েন্টে যতটুকু বুঝলাম এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে পিএইচডির থিসিসের কথা বলা হয়েছে এবং বনিকবার্তার সাক্ষাতকারে দেখলাম থিসিসের সংখ্যা ১৯ টা। এই ১৯ টি থিসি পেপার নিয়ে তারা একটা জ্ঞান ভান্ডার গড়তে চায় যেটা একটা হাস্যস্পদ ব্যাপার কারন পুরো একটা দেশের সম্পূর্ন পানি ব্যাবস্থাপনা বাংলাদেশে স্বাধীনতার ৪৫ বছর পর মাত্র ১৯ টা থিসিস। আরও একটা ব্যাপার দেখলাম সুপেয় পানির মডেল টঙ্গিতে। পুরো একটা দেশের জন্য মাত্র ১ টা মডেল! আমি এর সমালোচনা করছি এর জন্য যে গ্লোবাল য়ার্মিং আর গ্রীন হাউস এফেক্টের ব্যাপক প্রচারনায় যতটুকু আমরা বুঝি আগামী কয়েক দশক পর বরফ যখন সব গলে যাবে, বাংলাদেশের চিহ্নটুকু থাকবে কি না সন্দেহ।
সেখানে আমাদের লোকাল গবেষনার এই হাল? যদিও পোস্টের একটা অংশে লোকাল বিশেষজ্ঞদের কাজে লাগানোর কথা বলা হয়েছে। আমি যতদূর জানি বাংলাদেশের একমাত্র নদী গবেষনা কেন্দ্র যেটি ফরিদপুরে বিশাল এলাকাজুড়ে অবস্থিত তার পাশে বয়ে চলা কুমার নদীতে এখন মানুষ প্রায় হেটেই পার হতে পারে।
এরপরের যে স্টাডি গুলো দেখানো হলো তা বেশিরিভাগই ঢাকা শহরে বণ্যার কি প্রভাব বিভিন্ন সালে সেটার তথ্য দেয়া হয়েছে। আমি জানি না তারা পুরো দেশের তথ্য সংগ্রহ করেছে কিনা, অবশ্য করারই কথা, এগুলো নিয়ে আরো বিস্তারিত আলোচনা করা দরকার ছিলো। এটা খোজার জন্য আমি গেলাম সরকারের ৭ বছর মেয়াদী প্লান পড়তে। সেখানে উপকূলীয় বাধের ব্যাপারে ঠিক কিভাবে এগুনো হবে সেটার তেমন একটা তথ্য নেই।

আমার প্রশ্ন:

১) সূচনা মন্তব্যে " ​ব-দ্বীপ পরিকল্পনার সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যগুলো" এর একটা জায়গায় আন্তঃ রাস্ট্রিয় নদী সমূহের পানির হিস্যার ব্যাপারটা এসেছে। কথা হলো সাম্প্রতিক ভারতীয় একটা পত্রিকায় দেখলাম তারা গঙ্গার পানি এতো ব্যাব হার করছে যে ফারাক্কাতে পানিবিদ্যুৎ উতপাদনের পানি টুকু তাদের থাকে না। তার ওপর স্বাধীনতার ৪৫ বছরের পর সব ধরনের সরকারকেই দেখলাম। যারা বড় বড় আন্দোলনের কথা বলে তারা কোনো চুক্তিই কতে পারেনি, যারা বন্ধুত্ব আর মুক্তিযুদ্ধের কথা বলে তারা চুক্তি করেছে কিন্তু পানির হিস্যা আনতে পারেনি। তারপরে এই তথাকথিত বন্ধু রাস্ট্র টিপাই মুখি বাধ বানিয়ে পুরো সিলেটকেও মরুভূমি করতে চাইছে। সেক্ষেত্রে আমাদের নদী গুলোতো এমনিতেই মরে যাচ্ছে, তাহলে এই প্রজেক্টের বাস্তবমুখী টার্গেট কি? আর উপকূলীয় নদীগুলোতে যে লবনাক্ততার সমস্যা প্রকট সেগুলোর ব্যাপারে কি কোনো নির্দেশনা আছে?

২) নেদারল্যান্ডের যে সামুদ্রিক বাধের রেফারেন্স দিলেন, এই ভারী ভারী কথার ফাকে এটা অস্পষ্ট থেকে গেছে। আসলে উপকূলীয় জৈব বৈচিত্র‌্ও যদি রক্ষা করতে চাই তাহলে আপনারা কোনটা কিভাবে চান? উপকূলীয় বাধ না সমুদ্রের মাঝখানে বাঁধ? এটা নিয়ে কি আমাদের নদী বিশেষজ্ঞ গন বিশাল (?) গবেষনা করছেন?

৩) আপনারা বললেন আমাদের স্থানীয় বিশেষজ্ঞদের বিশাল তথ্য ভান্ডার, এটা কতটুকু বিশাল? এগুলো কি জন সাধারনের জনয় উন্মুক্ত? এগুলোর অবস্থান কোথায়?

৪) বাংলাদেশ ডেল্টা প্লান প্রজেক্টের জন্য কোনো সমন্বিত ফ্রেমওয়ার্ক কি ঠিক করাহইছে নাকি এখনো চলমান? বাংলাদেশে পানি ব্যাবস্থাপনার জন্য যে সুবিশাল একটা প্রজেক্ট এগুলো যদি একটা প্রজেক্টে অন্তর্ভূক্ত না করে ভাগে ভাগে কোনো প্রজেক্ট কি করা যেতো না?

৫) উপকূলীয় বাস্তুসংস্থান সাথে উপকূলীয় ভূমির অস্তিত্ব রক্ষা স হ প্রতিটি ব্যাপারের প্রায় সবগুলোকে অন্তর্ভূক্ত করে প্রতিটা লক্ষ্য কি অর্জন করা সম্ভব? কেউ এই লক্ষ্য অর্জন করতে পেরেছে এতো সুবিশাল পরিসরে?

৬) আমরা যদি উপকূলীয় অন্ঞ্চলে যে বিকল্প বিদ্যুতের ব্যাবস্থার কথা বলছি, ভোলায় যে বায়ুবিদ্যুতের প্লান্ট টি ছিলো ওটা কি রক্ষা করা গেছে? ওটা কি চলমান এখনো? আর এই বাংলাদেশ ডেল্টা প্রজেক্টের চোখে দেখা যায় সেই প্রগ্রেস কতখানি?

যাই হোক, সময়োপযোগী পোস্ট!

৩১ শে মার্চ, ২০১৬ সকাল ১১:১৯

এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: প্রথমেই আন্তরিক ধন্যবাদ সময় ইনভেস্ট করার জন্য। এটা সুবিশাল টপিক, একটা দীর্ঘ নাগরিক আলোচনার শুরু মাত্র। যখন বেশি থেকে বেশি তথ্য সরবারহ পাব তখন আলোচনা এগিয়ে নিব অবশ্যই।

ডেল্টা প্ল্যান আসলেই বিশাল। এখানে পুরো দেশের ডেল্টা ম্যানেজমেন্ট এর ছোট ছোট দিক গুলো উঠে আসার কথা। বন্যা নিয়ন্ত্রণ, সেচ, নদী ভাঙন, উপকূলীয় ব্যবস্থাপনা, কৃষির উতকর্শ এমনকি নদী খাল কেন্দ্রিক গ্রামীণ রাস্তা তৈরির কি কি টেকনোলজি ভিত্তিক ইমপ্লিমেন্টেশন উন্নয়ন হলে এই অবকাঠামো সম্পর্কিত কাজগুলো টেকসই হয়ে উঠবে তাই ডেল্টা প্ল্যানকে কভার করতে হবে, এর বাইরে ল্যান্ড ক্লেইম থাকতে পারে তবে সেটা সবচেয়ে কম গুরুত্বপুর্ন হেবং কম ফোকাস হওয়া দরকার।

ফারহানা আহমেদের প্রেজেন্টেশনে উনি অনেক অনেক পয়েন্ট তুলেছেন, কিন্তু উনি সাধারণ নগর ব্যবস্থাপনার রুটিন ওয়ার্ক, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল আধিদপ্তর, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার কাজ, জলবায়ু পরিবর্তন সম্পৃক্ত সবকিছু ডেল্টা প্ল্যান প্যাকেজে ডুকিয়ে দিতে চান। এখানে রাইট এনগেইজমেন্ট যেমন থাকবে তেমনি রাইট ডিমার্কেশনো থাকতে হবে।

<যেমন বাংলাদেশের নগরে ফ্ল্যাশ হবার কারন এখনও জলবায়ু পরিবর্ত্ন নয়, কারন আমাদের হীনতা, রাইট ড্রেনেজ বাস্তবায়ন না করা, ড্রেনেজ প্রজেক্ট থেকে চূরি করা আর ড্রেন মেইন্টেইন না করা। এভাবে বহু ব্যাপার যা আমাদের সরকার এবং স্থানীয় প্রশাসনের করার কথা তা এখন ডেল্টা প্ল্যান এবং জলবায়ু তহবিলের প্রজেক্টে ডুকানোর কথা বলা হচ্ছে। এগুলো টাকা খাওয়ার মচ্ছব।

<সাপোর্ট বেইজ ছাড়া আমরা বছরের পর বছর গ্রামের রাস্তায় মাটি ফেলবো -বন্যায় তা ধ্বসে যাবে,
<নিজেরদের দুরদর্শিতার কারনে একটা ভালো ডেনেজ ব্যবস্থাপনা করতে ব্যর্থ হব আর দুর্নিতি পরায়নতার কারনে দায়সারা কিছু নগর জলাবদ্ধতা স্রিটি করবো
<নিজেরা সেচের জন্য দেশের উত্তর মধ্য কিংবা দক্ষিণ সব অঞ্চলেই প্রাকৃতিক প্রবাহের উপর করবো, অথচ বর্ষার বিস্তীর্ন জলরাশি সাধারণ ক্যানেল নেটোয়ার্ক দিয়ে এবং আর্টিফিশয়াল ফ্লো দিয়ে প্রবাহ রাখার কোন ভিশন নিব না .।

এই রকমের অযোগ্যতা আর লজ্জা জনক ম্যানেজমেন্ট এই ২০১৬ তে এসেও যদি দেখি আর তা বেদেশিদের সমাধান করতে বলি তাইলে তো "সর্বাঙ্গে ব্যাথা, ঔষধ দিব কোথা"। তাই থিসিস ওয়ার্ক নিয়ে আমি সন্দিহান, আমাদের থিসিস করতে হবে ঠিক কি কি টেকসই ডেভেলপমেন্ট কোথায় কোথায় লাগবে, মানুষের কৃষি এবং মৎস্য চাষ ভিত্তিক জীবনধারা কিভাবে রূপান্তর ঘটানো হবে, এগুলো করতে হবে মানুষের কাছা কাছি থেকে।

যাই হোক প্রশ্ন গুলোতে ফিরি-

১। সেক্ষেত্রে আমাদের নদী গুলোতো এমনিতেই মরে যাচ্ছে, তাহলে এই প্রজেক্টের বাস্তবমুখী টার্গেট কি? আর উপকূলীয় নদীগুলোতে যে লবনাক্ততার সমস্যা প্রকট সেগুলোর ব্যাপারে কি কোনো নির্দেশনা আছে?

এই প্রশ্নগুলোর উত্তর পেতেই পরিকল্পনা কমিশনকে এক্সপার্ট ডিবেটের আহ্বান জানাচ্ছি। বাংলাদেশে প্রজেক্ট প্ল্যানিং ফেইজ শেষ হবার আগে কি করা হচ্ছে তার ইনফো শেয়ারের কালচার নেই, পরে বলা হয় এখন কিছু করার নেই। এখান থেকে বেরিয়ে আসার জন্য আমাকে আপনাকে লড়তে হবে আরো।

৩) আপনারা বললেন আমাদের স্থানীয় বিশেষজ্ঞদের বিশাল তথ্য ভান্ডার, এটা কতটুকু বিশাল? এগুলো কি জন সাধারনের জনয় উন্মুক্ত? এগুলোর অবস্থান কোথায়?

এটা কিন্তু আমি একেবারেই বলি নাই, খেয়াল করুন। আমাদের বের করতে হবে ঠিক কি কি টেকসই ডেভেলপমেন্ট কোথায় কোথায় লাগবে, মানুষের কৃষি এবং মৎস্য চাষ ভিত্তিক জীবনধারা কিভাবে রূপান্তর ঘটানো হবে, এগুলো করতে হবে স্থানীয় মানুষের খুব কাছা কাছি থেকে। ব্যাপক ভিত্তিক এবং দীর্ঘ মেয়াদী সার্ভের কথা বলছিিবার বার।

আমাদের বিশেষজ্ঞদের ক্যাপাবিলিটি কি তা তো আমরা নদী ভাঙ্গায় বালুর বস্তা ফেলায়, রাস্তা তৈরিতে দেখতে পাচ্ছি। ফরিদপুরের মধুখালির কুমার "খালের" পাড়ের নদী গবেষণার সেই ছোট টেস্ট স্যান্ড বেড এর আউটপুট নিয়ে আমি সন্দিহান। ড। রশীদ হলের পিছনে অবিস্থিত বুয়েটের পানি গবেষণা ইন্সটিটুটের আউটপুট কি আমি জানি না। কার্জকর কিছু থাকলে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে তার ইনপ্লিমেন্টেশন দেখতে পেতাম। উনারা হয়ত বলবেন, সরকার তাঁদের কথা শুনেন না।

তবে কি কাজ হচ্ছে, ভালো বা মন্দ তার ইনপুট ফেইজ কত বিশাল ব্যাপক তা ট্রান্সপারেন্ট করতে আপনাকে প্রত্যেক ইন্সটিটিট এবং এক্সপার্ট কে সাথে নিতেই হবে।

২। আসলে উপকূলীয় জৈব বৈচিত্র‌্ও যদি রক্ষা করতে চাই তাহলে আপনারা কোনটা কিভাবে চান? উপকূলীয় বাধ না সমুদ্রের মাঝখানে বাঁধ? এটা নিয়ে কি আমাদের নদী বিশেষজ্ঞ গন বিশাল (?) গবেষনা করছেন?

এটাই আমার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন প্রশ্ন মনে হয়েছে-
নেদারল্যান্ডস এর সাউথ - ইস্টে ব্রেডার নিচে একটা ছোট ফরেস্টকে (এটাকে পুরপুরি ম্যানগ্রোভ বলা যায় না) বাচাতে তারা দেশের এই কর্নারে বাঁধ দেয় নি।

সুন্দরবন বাচাতে আমাদের একই কাজ করা লাগবে। অর্থাৎ বরগুনা-পটুয়াখালীর পশ্চিম এবং পূর্বকে আলাদা করে সুন্দরবনের দিকে কোন ধরনের ম্যান মেইড ম্যানিপুলেশন করা যাবে না। আর বরগুনা থেকে চট্রগ্রামের দিকে উপকূলীয় ল্যান্ড ক্লেইম বাঁধ, নদীর মোহনায় বাঁধ ২ তাই করতে হবে। ডাইক এবং ড্যাম এগুলো ইন্ডিপেন্ডেন্ট স্থাপনা নয়, অনেকগুলো প্যারালাল হয়, আউটার সীতে ডাইক হবে, নদীর মোহনায় সুইস কন্ট্রল্ড ড্যাম হবে! এক্সপার্ট্রা ভালো ব্যাখ্যা দিতে পারবেন।


৪) সেপ্টেম্বরে প্ল্যান চুড়ান্ত হবে বলে জানি, মনে হচ্ছে বড্ড তাড়াতাড়ি হচ্ছে!
৫। মাষ্টার প্ল্যানে নির্দেশনা থাকতে হবে। ইমপ্লিমেন্টেশন নিয়ে তো চুরি, লূটপাটের হতাশা আছেই!
৬। বায়ু প্ল্যান্ট পাইলট ব্যর্থ, পাইলট উইন্ড মিলের পাখা ঘুরে না। বাংলাদেশের উইন্ড ফিউচার নাজুক!

০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৫:৪৪

এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: সূচনা বক্তব্য কোনদিকে যাচ্ছে যেটা বোধগম্য নয়, কেন এমনটা মনে হোল আপনার? পুরো বক্তব্যই ওয়েল কানেক্টেড েবং ওয়াটার ম্যানেজমেন্ট রিলেটেড! অপ্রয়োজনীয় কোন কথাই আনা হয়নি।

লিখকের দিক থেকে বলতে হয়,
একসাথে কানেক্টেড বিষয় তুলে আনার সুবিধাটা লিখকের দিক থেকে। সাধারণত এই ধরনের ডীপ ডাইভ আর্টিক্যাল পাবিলশের পরেও বেশ কয়েকদিন একই টপিক এর প্রাসঙ্গিক প্রাসঙ্গিক বিষয়াদি আমার ভাবনায় থাকে। রিভিউ দিতে গিয়ে মিসিং লিংক গুলো ধরা পড়ে, দিন যত গড়াতে থাকে চিন্তায় তত সামঞ্জস্যতা আসে এবং এতে উপর্যুপুরি এডিটে লিখা ম্যাচিউর হয়।

বহু খন্ডে সাজানো যেত, তবে তার জন্য ফলো আপ অনেক বেশি করা লাগে, যেহেতু আমরা পেশায় রাইটার না, তাই সময় বাঁচাতে চাই!

৯| ৩১ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ২:০২

উদাসী স্বপ্ন বলেছেন: উল্লেখ্য, আপনি দেখলাম ইলেক্ট্রিক্যালের, আমিও একই সাবজেক্টের। আমি অবশ্য পানি বিষয়ে অজ্ঞ তবে ফ্লুইড ম্যাকানিক্স নিজে যা পড়েছি ওটাই। তাই আমার প্রশ্ন গুলো একজন সাধারন বাংলাদেশি নাগরিক হিসেবেই করা। প্রশ্নে যদি কোনো উল্টা পাল্টা করে থাকি তাহলে আমি দুঃখিত

৩১ শে মার্চ, ২০১৬ সকাল ১১:২৭

এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: তড়িৎ প্রকৌশলী, আপনার প্রত্যেকটি প্রশ্নকেই স্বাগত জানাই। উত্তর দিবার চেষ্টা করেছি।

দেখুন, আমি ডেল্টা প্ল্যানের খুব পক্ষে, তবে চাই রাইট ইনপুট নিয়ে রাইট প্ল্যান। গৎবাঁধা কিংবা পলিটিক্যালি মটিভেটেড কিছু চাই না। এমন কিছু চাই না যা মানুষকে এমপ্লয়মেন্ট, এগ্রিকালচার থেকে ইকোনোমক্যালি ডিস্প্লেইস করে!

ধন্যবাদ সহ!

০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৫:৪৭

এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: কয়েকটি খুব ভালো প্রশ্ন করেছেন, তবে একটু তাচ্ছিল্ল পূর্ন! একটু আন্তরিক হয়ে করা প্রশ্ন লিখকে এঙ্কারেজ করে!
খেয়াল করবেন খুব সযতনে ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান এবং উন্নয়ন সহযোগী সবার খুঁত ধরা গতানুগতিক সমালোচনা এড়িয়ে চলা হয়েছে।

১০| ৩১ শে মার্চ, ২০১৬ সকাল ১১:৪৩

কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:



সময় উপযোগীতা, পোষ্টের বিষয়বস্তু ও আলোচনার প্রেক্ষিতে পোষ্টটি স্টিকি করা যায় কিনা; কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

এই প্রকল্পটা খুব সেনসিটিভ। সামান্যতম অবিবেচনা বিস্তর ক্ষতির কারণ হতে পারে। আমলাতান্ত্রিক ও রাজনৈতিক জটিলতা কাটিয়ে উঠাই একটা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে এই প্রকল্প বাস্তবায়িত করতে।

আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি নিয়ে লেখার জন্য।

৩১ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ৯:০৪

এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: আন্তরিক ধন্যবাদ!

১১| ০১ লা এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ৯:৪৯

মোস্তফা কামাল পলাশ বলেছেন:
একটা কথা বলতে চাই সব সময় কিন্তু বলা হয় না কি মনে করবেন তাই ভেবে। আপনার একটা পোষ্টে অনেক গুলো বিষয় চলে আসে। সাধারণ ব্লগারদের পক্ষে অনেক বিষয় তার উপর টেকনিকাল ক্যাচ করা অনেক কষ্টকর হয়ে উঠে। বিষয়ের গুরুত্ব বিবেচনা করে আপনি অনেক গুলো সম্পর্কযুক্ত বিষয় এক পোষ্টে যোগ করেন। উচ্চ শিক্ষা বা গবেষণায় নিয়োজিত মানুষ ছাড়া এত ধৈর্য নিয়ে পোষ্ট গুলো পড়তে চাইবে না। কিন্তু মাস পিপল না পড়লে আপনার কষ্ট সার্থক হবে না। তাই পরের বার থেকে পাঠকের গ্রহণ করার ক্ষমতা বিবেচনায় নিবেন আশা করি।

০১ লা এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ১:৪৭

এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: একটা খুব ভাল দিক নির্দেশনা দিয়েছেন। এধরনের লিখা কয়েকটি সিরিজে ভাগ ভাগ করে প্রকাশ করা যায়! এতে সাধারণ পাঠক কম্ফোর্ট ফিল করবেন। রাইট! মুড অফ প্রেজেন্টেশন নিয়ে ভাবতে হবে!

লিখকের কৌফিয়তঃ

একসাথে কানেক্টেড বিষয় তুলে আনার সুবিধাটা লিখকের দিক থেকে। সাধারণত এই ধরনের ডীপ ডাইভ আর্টিক্যাল পাবিলশের পরেও বেশ কয়েকদিন একই টপিক এর প্রাসঙ্গিক প্রাসঙ্গিক বিষয়াদি আমার ভাবনায় থাকে। রিভিউ দিতে গিয়ে মিসিং লিংক গুলো ধরা পড়ে, দিন যত গড়াতে থাকে চিন্তায় তত সামঞ্জস্যতা আসে এবং এতে উপর্যুপুরি এডিটে লিখা ম্যাচিউর হয়।

এর বাইরে একাডেমিক টাইপের এনালাইসিসে আমার ঝোঁক রয়েছে। এই ধরনের লিখা পরবর্তি সময়ে যদি স্টুডেন্ট কিংবা টিচার (একাডেমেশিয়ান) এর কাজে আসে, তাহলেই সেটা আদতে ফলপ্রসু হবে বলে মনে হয়! ক্যারিয়েরের শুরুতেই দেশের বাইরে এক্সপাট্রেইট জব পেয়ে যাওয়ায় পি এইচ ডি করা হয়নি, তাই হতে পারে এটা ব্যক্তিগত গ্যাপ ফিলাপের চেস্টা!

তবে আমার টপিকগুলোতে মনে হয় এমনিতেই সাধারণ পাঠকের আগ্রহ নেই, শুধু মাত্র প্রমটেড পোস্ট সাধারণের মনোযোগ পায়।

এর বাইরে আপনাদের মত অনুসন্ধানী ব্যক্তি ব্লগারগণই খুঁজে নিয়ে পড়েন। এতেই কৃতজ্ঞতা।

১২| ০১ লা এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ১০:৩০

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: বিশাল সমৃদ্ধ এবং দেশ জনতার প্রকৃত কল্যান ভাবনার পোষ্ট!

কিন্তু আমাদের নীতি নির্ধারক এবং রাজনীতিবিদরা এখনো এতটা যোগ্য হয়ে ওঠে নি। তারা কেবলই কমিশন বেইজড হিসাবেই আটকে আছে। আত্মঘাতি এই প্রবণতা থেকে বেরিয়ে আসবে কবে আল্লাহ মালুম।

এতো বিশাল ভাবনার বিষয়। সামান্য যোগাযোগ ব্যভস্থায় ঢাকার চিত্রই এখনো তারা ঠিক করতে পারল না। ভাবুন। মন্ত্রীর পর মন্ত্রী আসে যায়। তারা পৃথিবীর কত কত দেম ঘুরেও বেড়ায়। অথচ যুগপযোগী একটা প্লান করে জনগণকে নিশ্চিন্তে চলার, র্র্টিষ্ট সময়ে গন্তব্যে পৌছার নিশ্চয়তা আজো দিতে পারল না। তারা কি করে এত বিশাল ব্যাপারে এত ব্যাপক ভাবনার গুরুত্ব দেবে তাই ভাবছি।

আপনার জন্য একরাশ শ্রদ্ধাও কৃতজ্ঞতা। নিয়মিত দেশ দশের কল্যানে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন বলে।

০১ লা এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ১:৩৬

এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: অশেষ ধন্যবাদ, নিরন্তর অনুপ্রেরণার জন্য!

১৩| ০৫ ই এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ২:৪২

মুহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেছেন: সময় এবং সুযোগের অভাবে পোস্ট না পড়ে কমেন্টগুলোতে চোখ বুলালা। দেশের জন্য আপনার যে প্রচেষ্টা, সেজন্য সাধুবাদ রইল। :)

০৬ ই এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৩:২২

এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: খুব বড় পোস্ট নয়, একটু পড়ে নিলে খুশি হব। ভালো লাগবে লিখকের!

১৪| ১০ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১:৩৭

উদাসী স্বপ্ন বলেছেন: এই পোস্টটা দেখেন, জলবায়ু তহবিলের টাকা দিয়ে কি মৌজ মাস্তি চলতেছে।

২৯ শে এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১১:৪৭

এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: জলবায়ু তহবিল নিয়ে অনেকদিন আগে লিখেছিলাম। যদিও রিভিউ দেয়া দরকার।

জলবায়ু তহবিল ব্যবস্থাপনাঃ পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন কৌশল, ডিজাইন ত্রুটি এবং দুর্নীতির ছাপ

১৫| ০১ লা মে, ২০১৬ রাত ৩:২১

এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: বণিক বার্তা উপ্সম্পাদকীয়-১ম পর্ব

বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান ২১০০ ঘিরে নাগরিক প্রত্যাশা-১
এখানে ডেল্টাইক বাংলাদেশের পানি ব্যবস্থাপনার সাথে সম্পর্কিত লোকাল ইঞ্জিনিয়ারিং কাজ গুলোর কার্জকরিতাকে (উপকূলীয় বাঁধ, নদীর তীর বরাবর বাধ।রাস্তা, নদী শাসন-শহর রক্ষা বাঁধ- গ্রামীণ রাস্তা তৈরির ধরন, কাল খনন, সারফেইস ওয়াটার ম্যানেজমেন্ট, স্যালাইন ওয়াটার পেনিট্রেশনের বিপরীতে কৃষি ব্যবস্থাপনার গতাগনুগতিক কাজ) অত্যন্ত সহনীয় ভাষায় চ্যালেঞ্জ করে নাগরিক দৃষ্টিকোণ থেকে উন্মুক্ত আলোচনার আহবান জানানো হয়েছে এবং বাংলাদেশ এবং নেদারল্যান্ডস এর বদ্বীপ সাদৃশ্য এবং বৈসাদৃশ্য হাই লেভেলে আলোচনা করা হয়েছে।

বণিক বার্তা উপ্সম্পাদকীয়-২য় পর্ব

বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান ২১০০ ঘিরে নাগরিক প্রত্যাশা -২

দেশের পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনার সাথে জড়িত কিছু মৌলিক ম্যাক্রো এবং মাইক্রো ইকোনমিক অধিকার বিষয়ক প্রশ্ন উপস্থাপন করা হয়েছে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.