নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব,ইইই প্রকৌশলী। মতিঝিল আইডিয়াল, ঢাকা কলেজ, বুয়েট এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র।টেলিকমিউনিকেশন এক্সপার্ট। Sustainable development activist, writer of technology and infrastructural aspects of socio economy.

এক নিরুদ্দেশ পথিক

সমাজের প্রতিটি ছোট বড় সমস্যার প্রকৃতি নির্ধারণ করা, আমাদের আচার ব্যবহার, সমাজের প্রচলিত কৃষ্টি কালচার, সৃষ্টিশীলতা, চারিত্রিক উদারতা এবং বক্রতা, অপরাধ প্রবৃত্তি, অপরাধ সঙ্ঘঠনের ধাঁচ ইত্যাদির স্থানীয় জ্ঞানের আলোকে সমাজের সমস্যার সমাধান বাতলে দেয়াই অগ্রসর নাগরিকের দায়িত্ব। বাংলাদেশে দুর্নীতি রোধ, প্রাতিষ্ঠানিক শুদ্ধিকরন এবং টেকনোলজির কার্যকরীতার সাথে স্থানীয় অপরাধের জ্ঞান কে সমন্বয় ঘটিয়ে দেশের ছোট বড় সমস্যা সমাধান এর জন্য লিখা লিখি করি। আমার নির্দিষ্ট দৃষ্টিভঙ্গি আছে কিন্তু দলীয় সীমাবদ্ধতা নেই বলেই মনে করি, চোর কে চোর বলার সৎ সাহস আমার আছে বলেই বিশ্বাস করি। রাষ্ট্রের অনৈতিক কাঠামোকে এবং দুর্নীতিবাজদের সবাইকে তীক্ষ্ণ ভাবে চ্যালেঞ্জ করার চেষ্টা করি। রাষ্ট্র কে চ্যালেঞ্জ করতে চাই প্রতিটি অক্ষমতার আর অজ্ঞতার জন্য, তবে আঘাত নয়। ব্যক্তিগত ভাবে নাগরিকের জীবনমান উন্নয়ন কে দেশের ঐক্যের ভিত্তিমূল মনে করি। ডাটাবেইজ এবং টেকনোলজি বেইজড পলিসি দিয়ে সমস্যা সমাধানের প্রোপজাল দেবার চেষ্টা করি। আমি মূলত সাস্টেইন এবল ডেভেলপমেন্ট (টেকসই উন্নয়ন) এর নিরিখে- অবকাঠামো উন্নয়ন এবং ডিজাইন ত্রুটি, কৃষি শিক্ষা খাতে কারিগরি ব্যবস্থাপনা ভিত্তিক সংস্কার, জলবায়ু পরিবর্তন, মাইক্রো ইকনমিক ব্যাপার গুলো, ফিনান্সিয়াল মাইগ্রেশন এইসব ক্রিটিক্যাল ব্যাপার নিয়ে লিখার চেষ্টা করি। মাঝে মাঝে চোরকে চোর বলার জন্য দুর্নিতি নিয়ে লিখি। পেশাঃ প্রকৌশলী, টেকনিক্যাল আর্কিটেক্ট, ভোডাফোন।

এক নিরুদ্দেশ পথিক › বিস্তারিত পোস্টঃ

মাতৃভাষা বাংলার একাডেমিক ও প্রাতিষ্ঠানিক বিকাশ

০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ৮:০০

আধুনিক সময়ে বাংলা বিপননের ভাষা, ব্যাপক ভিত্তিতে সাংবাদিকতার ভাষা, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ভাষা, খুব সীমিত কিছু পর্যায়ে কর্পোরেট ভাষা, শিক্ষার প্রাথমিক স্তর গুলোর ভাষা, শিল্পের অধুনা রূপগুলোর স্থানীয় বিকাশের ভাষা এবং স্থানীয় প্রশাসনের ভাষা হওয়ায় এর বিকাশ, প্রসার ও ধারণ অব্যহত ভাবেই বর্ধমান। ভাষাকে প্রানময় বলে ধরে নিলে এই ভাষা অবশ্যই জীবিত এবং সতেজ। বিশ্ব ব্যাপী প্রায় ৩০ কোটি মানুষের চলনে বলনে ছন্দ ও রুচির সাথে বাংলা মিশে আছে। বাংলা ভাষার জন্য দুই বাংলার এবং বিশেষ ভাবে বাংলাদেশের মানুষের আদি ও অক্রিত্তিম প্রানের টান এই মধু সুধাময় ভাষাটিকে চির সঞ্চালিত রাখবে তা সকল সংশয়ের আবকাশ মুক্ত বলাই চলে। পৃথিবীর সপ্তম বৃহৎ ভাষা বাংলা একটি বৃহৎ জনগোষ্ঠীর জীবন ও জীবিকা নির্বাহের ভাষা। এর সচলতার অন্যতম কারন এটাই।

তবে নৃতাত্ত্বিকভাবে বাংলাদেশে একজনও ইংরেজি ও হিন্দি ভাষাভাষি না থাকলেও আমাদের এই প্রানের ভাষাকে ইংরেজি ও হিন্দির সাথে পাল্লা দিতে হচ্ছে। বাংলাদেশের আদালত ও সংবিধান এর প্রধান ভাষা এখনও ইংরেজি, বাংলা এর আনুবাদ সংস্করণ। আদালতের রায় লিখিত হয় ইংরেজিতেই। অন্যদিকে হিন্দি বিনোদনের ভাষা, বিকৃত কথ্য বাংলায় এর অনুপ্রবেশ লক্ষণীয়। তাই বাস্তবিক অর্থে বাংলা হিন্দির সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের ব্যাপক শিকার।

অন্যদিকে বাংলা এখনও বিজ্ঞান ও ব্যবসায় উচ্চ শিক্ষার কিংবা কারিগরি জ্ঞানের ভাষা হিসেবে আবির্ভূত হতে পারেনি, আসলে বলা উচিত আমরা এখন উচ্চ শিক্ষার ভাষা হিসেবে বাংলাকে মর্যাদা দিতে পারিনি। বলা হয়ে থাকে অপরের ভাষায় শিল্প সাহিত্য বা দর্শন কিংবা ধর্মতত্ব পড়ে যেমন আধ্যাত্বিক পর্যায়ে পৌঁছানো যায়না, ঠিক তেমনি অন্য ভাষায় বিজ্ঞান চর্চা করেও এর উৎকর্ষে উঠা যায় না। এর জন্য চাই আগে নিজের ভাষার জ্ঞান-বিজ্ঞানের হাতেখড়ি। আমাদের বিদ্যাপীঠ সমূহ বলতে গেলে সামান্য কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া এখনও কিছু চৌকশ কর্পোরেট নির্বাহী কিংবা সেকেলে প্রশাসনের গতানুগতিক মানের আমলা তৈরির কাজই করে যাচ্ছে, এর পিছনে যে ভাষাগত বাঁধার মনস্তাত্ত্বিক দিকটি রয়েছে তা অনালোচিত। জীবিকার খাতিরে আমাদের মেধাবীরা ইংরেজিকেই বেশি প্রাধান্য দিচ্ছেন বা দিতে হচ্ছে, বিস্তৃত গ্রামীণ মধ্যবিত্ত আরব বিশ্বে গিয়ে আরবিকে কর্মসংস্থানের ভাষা হিসেবে আয়ত্ব করেছেন। সমসাময়িক বিশ্ব ব্যবস্থার সাথে তাল মিলাতে গিয়ে এই প্রতিযোগিতা দিন দিন হয়ে পড়ছে অসম, এতে বাংলা পিছিয়ে পড়ছে যার প্রভাব এখনই পশ্চিম বাংলায় দৃশ্যমান, পূর্ব বাংলায় এই প্রভাব অনুমেয়।

অতি অদূরদর্শী হয়ে আমরা অগ্রসর বাঙালীরা প্রান প্রিয় ভাষাকে উচ্চ শিক্ষা এবং জীবিকা নির্বাহের ভাষা হিসেবে দূরে ঠেলে রেখে শুধু মাত্র প্রান্তিক আর অনগ্রসর কায়িক শ্রমজীবী মানুষের পেশাগত ভাষা হিসেবে রেখেই ঢের তৃপ্তি পাচ্ছি।

মাতৃভাষা বাংলার একাডেমিক ও প্রাতিষ্ঠানিক বিকাশ এবং জ্ঞান বিজ্ঞান এর জগতে এর উতকর্ষে আমরা কতটুকু চিন্তাশীল, আন্তরিক আর দ্বায়িত্বশীল তা ভাবার কথা সময় বার বার আমাদের বিবেক নাড়া দিয়ে যাচ্ছে। একুশ এই বার্তা নিয়ে ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও সমাজের কাছে হাজির হয় প্রতি বছর।


জ্ঞান চর্চা ও গবেষণায় ভাষা হিসেবে বাংলার সীমাবদ্ধতার বাইরেও কিছু দিক নিয়ে মনোযোগী হওয়া দরকার। বাংলার ব্যাপক বাণিজ্যিক ও রাজনৈতিক বিকাশ কিছু কিছু ক্ষেত্রে এতই উত্তেজনাকর ভাবে আবির্ভূত হয়েছে যে ভাষার মান সংরক্ষণে এর অপধারার লাগাম টেনে ধরা নিতান্তই জরুরি মনে করছি ।অধুনা রাজনীতির আর বিনোদন শিল্পের বিকৃত বাংলা এর মৌলিকতাকে চ্যালেঞ্জ করছে বললে বাড়াবাড়ি হবে না বোধ হয়।এতে বাংলার শৈল্পিক আবেদন যে দিন দিন বিসৃত ও মলিন হচ্ছে তা নির্দ্বিধায় বালা যায়। আজকের বাংলা একদিকে যেমন যশোর ও নদীয়া জেলার সাধু বাংলা নয়, তেমনি কথ্য বাংলার শিল্পিত রূপটিও নয়। ভাষার প্রয়োগ উদাসীনতার কদর্য দিক গুলো একদিকে যেমন ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক ভাষা গুলোকে চ্যালেঞ্জ করছে আজ ঠিক তেমনি এটি বাংলার শৈল্পিক দিকটিকেও একদিন হেয় করে বসবে।


মাতৃভাষা বাংলার বিকাশ ও উৎকর্ষ তরাত্বিত করতে ভাষাকে সমৃদ্ধ করার ব্যাপক দুরদর্শী পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং কার্যকর কিছু পদক্ষেপ নেয়া দরকার। এর কিছু সীমিত পরিসরে আলোচনায় আনছি-
ক। মাতৃভাষা বাংলার একাডেমিক ও প্রাতিষ্ঠানিক বিকাশে- প্রচলিত বাংলা শিক্ষা দান পদ্ধতিকে পরিবর্তন করা দরকার!


আমাদের স্কুল সমূহে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণিতে ১০০ নম্বরের বাংলা, ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত ২০০ নম্বরের পরীক্ষার বিপরীতে বাংলা প্রথম এবং দ্বিতীয় পত্র পড়ানো হচ্ছে। কিন্তু এত দীর্ঘ বাংলা পাঠ্যক্রম থাকা সত্বেও সাধরনের কথোপকথন এবং লিখায় ভাষার মার্জিত কিংবা প্রমিত রুপটির চুড়ান্ত অনুপুস্থিতি অতি বিস্ময়ের ব্যাপার। এর কারন শিক্ষাদান পদ্ধতিটির চূড়ান্ত অকার্জকরিতা।
দেখা যাচ্ছে একজন শিক্ষার্থী প্রাথমিক থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্জন্ত স্কুল কলেজ এবং পাবলিক পরীক্ষা মিলে মোট শুধু বাংলায় ৫৭০০ নম্বরের উপর শুধু লিখিত পরীক্ষায় অবতীর্ন হন, যা সম্পুর্ন আনুষ্ঠানিক।(১ম,২য় এবং বার্ষিক/পাবলিক পরীক্ষা মিলে প্রাথমিকে ১০০*৩*৫=১৫০০, উচ্চ বিদ্যালয়ে ২০০*৩*৫=৩০০০, কলেজে ২০০*৩*২=১২০০ নম্বর)। তথাপি বাংলার লিখিত রুপে এই শিখার্থীগণ নূন্যতম পারদর্শীতা নিয়ে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা স্তর পার করতে পারছেন না।

সব শ্রেণীতেই বাংলা প্রথম পত্রে কিছু কবিতা এবং গল্প পড়ানো হয় নৈতিকতা শিখানোর জন্য যা আসলে সংস্কারে আনা দরকার। আদতে নৈতিকতা এবং মূল্যবোধ সমাজের চিন্তা ও চর্চা এবং পরিবারিক মূল্যবোধ থেকে আসার কথা, তা না এসে থাকলে সেটা নিয়ে কাজ করার মৌলিক পরিকল্পনা দরকার। তবে এইসব কবিতা গল্প অবশ্যই সহায়িকা হিসেবে থাকাই শ্রেয় যা বিদ্যালয়ের পাঠাগারে উন্মুক্ত পাঠের জন্য থাকবে। শিক্ষকগণ সময়ে সময়ে প্রাসঙ্গিক ক্লাস কথনে কিংবা পাঠচক্র করে এথিকস এবং ভ্যালূ নিয়ে তাগাদা দিবেন। অন্যদিকে বাংলা দ্বিতীয় পত্রে সাধারণ থেকে শুরু করে অন্তত্য জটিল পর্যায়ের ব্যাকরণ শিখতে বাধ্য করা হয়, পরীক্ষা নির্ভর পাঠ্য ক্রমের বাধ্যবাধকতার কারনে।

অকার্যকর পাঠ্যক্রমের বিপিরীতে এসে পঠন, লিখন, শ্রবণ, বলন, উপস্থাপন এবং যোগাযোগ এই ৬টি স্কিল সেটের বিপরীতে বাংলার একাডেমিক পাঠ্যক্রম ডেভেলপ করা দরকার যা মাধ্যমিকেই সমাপ্ত হবে। উচ্চ মাধ্যমিককে অপ্রয়োজনীয় বিষয়ের ভারমুক্ত করে শুধু বিশ্ববিদ্যালয় ফাউন্ডেশনের অনুকূলে এডভান্স পাঠ্যক্রম দিয়ে সাজানো দরকার যাতে স্নাতকের ১ম বর্ষে ফাউন্ডেশন কোর্স নিতে না হয়।
উচ্চ মাধ্যমিক একটা উচ্চ ধাপ, যেখান থেকে লাইফ স্কিল ডেভেলোপ শুরু করা দরকার, কর্মসংস্থান বিষয়ক শিক্ষা ক্রমকে এখানে ফোকাসে আনার শুরু দরকার, দরকার এক একটা রিসোর্স্কে সাব্জেক্ট ম্যাটার এক্সপার্ট বানানোর প্রক্রিয়া শুরু চেষ্টা।


সাহিত্য বোধ তো দুরের কথা ১২টি একডেমিক ধাপের পরেও মানুষের সাধারণ কথনে, লিখনে ও যোগাযোগে বাংলার যে কদর্য রূপ বিস্তৃত হচ্ছে সেটা নিয়েই আমি শঙ্কিত। স্কিল সেট ভিত্তিক ভাষা শিক্ষা ক্রমও মানবিক-দার্শনিক-আধ্যাত্বিক বিকাশ করতে পারে, সেটা নির্ভর করে কতটা গবেষণা লভদ্ধ, উচ্চমান ও দূরদৃষ্টি সম্পপন্ন পাঠ্যক্রম তৈরি হবে এবং কোন পদ্ধতিতে সেটা পঠিত হবে তার সমূদয় মাস্টার প্ল্যানের উপর অর্থাৎ সাব্জেক্টিভলি কিভাবে মূল্যবোধ সমাজে পেনিট্রেইট করতে হবে তার সিস্টেম্যাটিক একাডেমিক এপ্রোচের উপর।

সময়ের প্রয়োজনে ইংরেজি সহ জ্ঞান বিজ্ঞানে উন্নত ভাষা সমূহ শিক্ষার জন্য অতি কার্জকরি পঠন, লিখন, শ্রবণ এবং বলন পদ্ধতি ডেভেলপ করেছে (উদাহরণ স্বরূপ- আইইএলটিএস বা স্কুলের ভাষা শিক্ষার জন্য পঠন, লিখন, শ্রবণ এবং বলন ইত্যাদির পাঠ্যবই কিংবা সফটওয়্যার)। ভাষা বিজ্ঞানী ও মনস্তত্ত্ববিদগণের ডিজাইন করা এই সব ভাষা পাঠ্যক্রমের কার্জকরিতা যুগ যুগ ধরে প্রমাণিত যার মাধ্যমে বিদেশি শিক্ষার্থীদেরও আকৃষ্ট করা পরিকল্পনা সমূহ ফলপ্রসু হয়েছে। শিক্ষাদান (একাডেমিক) এবং যোগাযোগের (কমিউনিকেশনের) জন্য বিশেষ বিশেষ পাঠ্যক্রম ভিত্তিক অফলাইন কিংবা অনলাইন ভাষা শিক্ষার মডিউল ডেভেলপ না করে আমরা এখনও সেই অকার্জকর গৎবাঁধা পদ্ধতিতেই ভাষা শিক্ষা নিয়ে ব্যস্ত আছি।

সব শ্রেণীতেই অতিরিক্ত বিষয় হিসেবে বাংলা শিক্ষার্থীকে চাপে রাখছে অথচ সময়ের সাথে এই শিক্ষার কোন কার্যকরিতা দেখা যাচ্ছে না। মাতৃভাষায় একাডেমিক পারদর্শিতা যেখানে প্রাথমিক এবং মাধ্যমিকের শিক্ষা বর্ষ গুলোতেই আসার কথা ছিল সেখানে ১২টি শিক্ষা বর্ষে পড়ানোর পরেও আমাদের শিক্ষার্থীরা ভাষার শিল্পিত রূপ ও মননশীলতা রপ্ত করতে পারছেন না। এর অন্যতম কারন পুঁথি নির্ভর পরীক্ষা ভিত্তিক মানহীন পাঠ্যক্রম যা কোন বৈজ্ঞানিক গবেষণা কিংবা মনস্তাত্বিক সার্ভের আদলে তৈরি করা হয়নি।

খ। বাংলায় পাঠ্যবই, শিক্ষা সহায়িকা বই, বিষয় ভিত্তিক মানসম্পন্ন বই প্রকাশের পদক্ষেপ নেয়া।
১। দেশ বিদেশের হাজার হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যাপনারত স্কুল কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার সবগুলো ডিসিপ্লিনে প্রথিতযশা ও উচ্চমান শিক্ষকগণের প্রোফাইল তৈরি করে, উনাদেরকে নিজ নিজ বিষয়ে লভদ্ধ জ্ঞান, অভিজ্ঞতা এবং আধুনিক জ্ঞানের সমন্বয়ে একাধিক পুস্তক প্রণয়নের আমন্ত্রণ জানানো। এইকাজ একটা সুবিশাল কর্মযজ্ঞ যার জন্য সত্যিকারের জ্ঞানী শিক্ষকের প্রোফাইল তৈরি করতে হবে, উনাদের পুস্তক লিখে নিজেদের রিপ্রডিউস এর গুরুত্ব বুঝাতে হবে, বই লিখায় নিরস্তর উৎসাহ দিতে হবে।
এনসিটিবিটি'র মূল বইয়ের একই পাঠ্যক্রমে উচ্চমান কন্টেন্ট এবং তার অনুমোদন সাপেক্ষে একাধিক রেফারেন্স বই নিশ্চিত করা গেলে ১টি মাত্র পাঠ্য বই ও তাতে প্রদত্ত প্রশ্নপত্র কেন্দ্রিক পুঁথি নির্ভরতা কাটিয়ে উঠবে।

২।স্কুল কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার সবগুলো ডিসিপ্লিনে প্রথিতযশা শিক্ষকগণের সমন্বয়ে উচ্চ মান পর্যালোচনা পরিষদ তৈরি করতে হবে, বই লিখার পর পর্যালোচনা পরিষদ কর্তিক রিভিউ তৈরি করে সেটা আবার লিখকের মাধ্যমে ঠিক করে নিয়ে চূড়ান্ত পাণ্ডুলিপি তৈরি করার কাজ গুলো নিবিড় তত্ববধানে যত্নসহকারে এবং অতি গুরুত্বদিয়ে করতে হবে।

৩। বই সময় মত প্রকাশ এবং দেশ-বিদেশের সকল প্রতিষ্ঠানে সার্কুলেশনের এমনকি বিপণনের উদ্যোগ নিতে হবে। বই প্রকাশের দেখভাল এবং খরচ বাংলা একাডেমি করবে। সরকার এই মৌলিক বিষয়ে উচ্চ ক্ষমতার সমন্বয়কারী দল গঠন করবে এবং যথাসময়ে অর্থ বরাদ্দ দিবে।
এর মাধ্যমে বাংলা ভাষাভাসি জ্ঞানীদের জ্ঞান রি-প্রডিউস করা হবে যাতে উনাদের অবর্তমানেও আমরা তাঁদের লভদ্ধ একাডেমিক জ্ঞান এর সঠিক ব্যবহার করতে পারি।


৪। বিদেশি ভাষার পাঠ্যবই, শিক্ষা সহায়িকা বই, বিষয় ভিত্তিক মানসম্পন্ন বই বাংলায় অনুবাদের ব্যাপক পদক্ষেপ নেয়া
৪-১। দেশে এবং বিদেশে স্কুল কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার সবগুলো ডিসিপ্লিনে সেসকল মান্সম্পন্ন বিদেশী পাঠ্যবই পড়ানো হয়, বিশ্বের নামকরা সব বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন নামকরা লিখকের উচ্চ মান বই পড়ানো হয় সেসবের বিশদ তালিকা তৈরি করে সর্বশেষ ভার্শনকে অনুবাদের ব্যবস্থা করা।
৪-২। এখানে সরাসরি আন্তর্জাতিক পর্যায়ের টেক্সট বুক প্রকাশকের সাথে বাংলা একাডেমীর ফ্রেইমোয়ার্ক তৈরি করতে হবে। সরকারের আনুকূল্যে একাডেমি এই খাতে অর্থায়ন করবে। বিশ্ববিদ্যালয় সহ সংশ্লিষ্ট ফ্যাকাল্টির সাথে কমিউনিকেশন স্ট্যাব্লিশ করতে হবে।


গ। শিক্ষার জন্য এপ্লিকেশন ডেভেলপ।
দেশের তথ্য প্রযুক্তিবিদ আর এপ্লিক্যাশন ডেভেলপার (বিশেষ করে ইন্ডিভিজুয়াল ক্লাস ও কোর্স কন্টেন্টের আদলে ইন্টার্যাক্টিভ সফটওয়্যার ডেভেলপ, বিভিন্ন লেভেলের বাংলা শিক্ষার সফটওয়্যার ডিজাইন (পঠন, লিখন, শ্রবণ, বলন, উপস্থাপন এবং যোগাযোগ এই ৬টি স্কিল সেটের বিপরীতে), ব্যাকরণ এর এপ্লিক্যাশন ডেভেলপ এবং বাংলায় শিশু শিক্ষার ক্রিয়েটিভ এপ ডেভেলপ), প্রোগ্রামারদের একই প্ল্যাটফর্মে নিয়ে আসার জন্য বাংলা একাডেমির কাজ করতে হবে। ডেভেলপারদের কাজের স্বীকৃতি দেয়া, কিছু ক্ষেত্রে মৌলিক কাজের পারিশ্রমিক দেয়াও দরকার।

উল্লেখ্য প্রথম বারের মত প্রথম শ্রেনীর বাংলা বইকে ইলার্নিং এর জন্য ভিডিও প্রেজেন্টেশনে আনা হয়েছে আমাদের আইসিটি এবং ব্রাকের যৌথ প্রযোজনায়, এটা খুবই গুতুত্বপূর্ণ একটা শুরু। পুরো বইটিকে ১ ঘন্টা ৪৫ মিনিটের একটি একক ভিডিওতে (https://www.youtube.com/watch?v=DvY4mSUiSTs) আনা হয়েছে যাকে আরো বেশি কাস্টমাইজড করা যায়, ক্লাস ভিত্তিক লেকচার মডিউল করা যায়, আনা যায় ইন্টারেকটিভ লার্নিং মডিউল এবং ইন্টারেকটিভ টুলস সমৃদ্ধ পিসি ও মোবাইল এপ্লিকেশন। তবে এটাও খেয়ালে রাখতে হবে যে বিস্তৃত গ্রামীণ শিক্ষা অবকাঠামোতে এটা ব্যবহারের অবকাঠামো এখনও তৈরি করা হয়নি। (লিখকের নিজ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এখনও বিদ্যুতের সুবিধাই পৌঁছেনি,ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের জন্য নেই একটি ফ্যানও, আর এইখানে আমি শিক্ষার আনন্দময় উপস্থাপন নিয়ে কথা বলছি!) এই অবকাঠামো পরিকল্পনাগুলো তৈরি হতে বড্ড বেশি দেরি হয়ে যাচ্ছে।

ঘ। মাতৃভাষার সাথে কর্মমূখী ভাষার সমন্বয় এবং ভাষা শিক্ষার প্রচলিত মডেলের কার্যকরিতা।
ইংরেজিতে শিক্ষা দিবার জন্য ইনফাস্ট্রাকচার গঠনের ভুলভাল চেষ্টা ২০০ বছরের বেশি সময় ধরে চললেও সেটা তৃণ মূল পর্জায়ে ব্যাপক সাফল্য পায়নি, স্থানীয় আচার ব্যবহার এবং সংস্কৃতি, মানুষের জীবনধারা কম্ফোর্ট জোনে রেখেই নিজের শিক্ষণ ব্যবস্থা ডেভেলপ করতে হবে। অন্য কোন কপি পেস্ট মডেল যে ফল আনছে না তা দৃশ্যমান।আধুনিক শিক্ষার উৎসস্থল ইউরোপের প্রায় প্রতিটি ছোট বড় জাতি মাতৃ ভাষায় শিক্ষা লাভ করে। মাত্র কয়েক মিলিয়ন মানুষের ইউরোপীয় দেশ সমূহের ভাষায় গণিত পদার্থ রসায়ন চিকিৎসা জীববিজ্ঞান আর্কিটেকচার ব্যবসা এবং শিল্প কলার হেন কোন বিভাগ নেই যার পাঠ্য বই ডাচে রচিত, অনুদিত বা প্রকাশিত হয়নি এবং যা লোকাল ভাষায় স্কুলে পড়ান হয় না। একই চিত্র চীন জাপানেরও। কিন্তু মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায় থেকে ২য় এমনকি ৩য় ভাষা শিক্ষা অপশনাল থাকায় এই নেশনগুলোর কোনটই আন্তর্জিক ভাষা ইংরেজিতে পিছিয়ে পড়েনি।

যে ছেলে-মেয়ে স্কুলের পাশাপাশি পিতা মাতার কৃষি কাজে এবং ঘরের কাজে সহায়তা করে, তাকে আপনি বিদেশি ভাষায় বিজ্ঞান শিক্ষা দিতে বাধ্য করতে পারেন না, এটা একটা মনোগত বাঁধা দাঁড়া করিয়ে দেয়। তাঁর ব্রেইন বাংলা টু ইংরেজি এবং ইংরেজি টু বাংলা দ্বৈত রুপান্তরে ব্যস্ত থাকে, উপরন্তু না বুঝার ভয়ে আচ্ছন্ন থাকে। প্রতিটি বাক্যই যদি কনভার্শন প্রসেসে আসে তাইলে ইন্নোভেশন আর ক্রিয়েটিভিট আশা করা যায় না বরং শিক্ষা ভীতি আসে।সাইকোলজিস্টগণ এর বেশি ভালো ব্যাখ্যা দিতে পারবেন। এই সমস্যা বিশ্ববিদ্যালয়েও আছে, প্রচুর বিদেশী ভাষার রেফারেন্স পড়ার চর্চা আমাদের হয়ে উঠেনি একারনেই।ফলে কন্সেপচুয়াল ডেভেলপমেন্ট বড্ড দেরিতে আসে, আমরা দেখছি আন্ডার গ্যাজুয়েশনে তেমন মানসম্পন্ন গবেষণা কাজ হয়ই না। তাই হয় আপনাকে স্ট্রং ইংরেজি শিক্ষার স্ট্রাকচার ডেভেলপ করতে হবে যা ২০০ বছরের প্রচেষ্টায়ও পুরোপুরি সফল হতে পারেনি, অন্যথায় আপনাকে বাংলা ভিত্তিক বিকল্প সহ ইংরেজি-বাংলার কার্যকর সমন্বয়ের কথা ভাবতে হবে। এর বাইরে উচ্চ শিক্ষায় বাংলা ভাষা সমৃদ্ধ করার তাগিদ এবং দায়বদ্ধতাও রয়েছে।

বাংলা একাডেমিকে শুধুমাত্র বাৎসরিক মেলা আয়োজন, কিছু নন একাডেমিক বই সম্পাদনা এবং পারিভাষিক শব্দ খোঁজার প্রয়োজনীয় বা অপ্রয়োজনীয় কাজে বছর পার করলে চলবে না, কিভাবে বাংলা ভাষাকে ব্যবসা বিজ্ঞান ও গবেষণার জগতে উৎকর্ষময় করা যায়, আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির যুগে অন্য ভাষার আধিপত্য ছাপিয়ে টিকিয়ে রাখা যায় এবং ক্রমবিকশিত করা যায় সেই দিকে মনযোগী হতে হবে।বাংলায় উচ্চ শিক্ষাদান প্রস্তুতির পরিকল্পনা নেয়াই বোধ করি অমর একুশের সত্যিকারের তাগাদা।শহীদ মিনারের ফুলেল সৌন্দর্জকে ছাপিয়ে উঠুক বাংলা শিক্ষাদানের বুদ্ধি ব্রিত্তিক সৌন্দর্জ।

বাংলা ভাষা এবং বাংলাদেশ এগিয়ে যাক!

মন্তব্য ১৮ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (১৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ৮:১০

চাঁদগাজী বলেছেন:


অনুসরণযোগ্য আলোচনা, দরকারী বিষয়।

০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৪:৩৪

এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: আলোচনাটা শুরু করাই গেল না যে! লিখাটি যে এখনও পাঠকের প্রত্যাশায়!
বেশ কিছু টপিক টাচ করে মূল কন্টেন্টে ফোকাসড থেকেছি। স্পেসিফিক আইটেমে মতামত কিংবা ভাবনা শেয়ার করলে ভাল হয়।

ভালো থাকবেন।

২| ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ৮:১৩

আহমেদ জী এস বলেছেন: এক নিরুদ্দেশ পথিক ,




আপনার এমন চমৎকার লেখায় যে সারবস্তুটি ফুঁটে উঠেছে তা হলো, বাংলাভাষা তার যোগ্যতার আসনটি পায়নি ক্রমবিকাশের ধারার পথ ধরে চলেনি বলে । এ প্রসঙ্গে আপনার প্রস্তাবনাসমূহ প্রশংসার দাবী রাখে ।
বৃহৎ পরিসরে আলোচনার সুযোগ ( বিশেষ করে সময় ) নেই বলে , মোটা দাগে বলি -----
শিক্ষার প্রয়োগেই যতো গলদ । আর শিক্ষাদান পদ্ধতি এখন প্রশ্নপত্রের কয়েকটি প্রশ্নের উত্তরদানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ । একটি বইয়ের দু'তিনটে গল্প বা কবিতা বা প্রবন্ধ পড়িয়েই শিক্ষকরা ক্ষান্ত দেন "সিলেবাস" নামক একটি উদ্ভট পদ্ধতির কারনে । বাকী সব অপঠিত, অপ্রয়োজনীয় হয়ে পড়ে থাকে । তা'হলে যতো ভালো বই-ই ( শিক্ষাবান্ধব ) পাঠ্য তালিকায় থাকুক না কেন , তার প্রয়োজনটা কি ?
আমার চরম অভিজ্ঞতা থেকে বলি , এখনকার ছেলে মেয়েদের কোনও একটি বিষয়ে বাংলায় দু'লাইন রচনা লিখতে দিন । পারবেনা । সরাসরি তারা বলে দেবে , এসব তারা পড়েনি , জানেনা । বাংলায় একটি বাক্য গুছিয়ে লিখতে পারেনা, বলতে পারেনা । কারন ? তাদের সৃজনীশক্তিকে শিশুকালেই "সিলেবাস" নামক হাতুড়ির খানিকটা অংশ দিয়ে পিটিয়ে ভোঁতা করে দেয়া হয়েছে । আর শিক্ষকরাও তেমন । ধরি মাছ না ছুঁই পানি ষ্টাইলে দিন পার করছেন । প্রাথমিক স্তরে ব্যতিক্রম বাদে অযোগ্য শিক্ষাদান কর্মী ( শিক্ষক বলিনি ) দিয়েই ভরপুর । তারা কি করছেন ? প্রচলিত প্রশ্নপত্রের ( এম,সি,কিউ) উত্তর দিয়ে যাতে ছাত্রছাত্রীরা পাশ করতে পারে, শুধু সে'কটা লাইনই পড়াচ্ছেন ( শেখাচ্ছেন না ) । এখন না হয় "সৃজনশীল" শব্দটি যোগ হয়েছে । এই সৃজনশীলতা ত্রিশ বছর আগে ছিল একদমই "স্বাভাবিক" কিছু । খেয়াল করে থাকবেন হয়তো , এই কারনেই প্রবীন শিক্ষকবৃন্দ এখনও আমাদের নমস্য । হালের শিক্ষকবৃন্দের সে প্রজ্ঞা নেই । তারা গত বিশ পঁচিশ বছরের বিধ্বংসী ও অন্তঃসার শূন্য শিক্ষা ব্যবস্থার আউটপুট ।

তাই বলছিলুম, গালভরা শব্দে সাজিয়ে আধুনিক শিক্ষা প্রকরণের যতো কথাই বলা হোক, যে ধারনার বা পদ্ধতির শিক্ষাদানই প্রবর্তিত হোক না কেন , যিনি শেখাবেন তার উৎকর্ষ বিধান করতে হবে সবার আগে এবং আগে এবং আগে .........

০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ১:৩২

এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: গালভরা শব্দে সাজিয়ে আধুনিক শিক্ষা প্রকরণের যতো কথাই বলা হোক, যে ধারনার বা পদ্ধতির শিক্ষাদানই প্রবর্তিত হোক না কেন , যিনি শেখাবেন তার উৎকর্ষ বিধান করতে হবে সবার আগে এবং আগে এবং আগে

মানহীন শিক্ষক শিক্ষা ব্যবস্থায় "মান" আনার ক্ষেত্রে প্রধান বাঁধা, মান বলছি, "উচ্চ মান" সুদূরপরাহত। লক্ষ লক্ষ শিখার্থীর মাঝে যারা খুব বেশি ভালো করছেন তাঁরা এক্সসেপশন। বাকি লক্ষ লক্ষ মেধাবী মুখ রাষ্ট্রের প্রতারণার শিকার।

মানসম্পন্ন পাঠ্যক্রমের অনুপুস্থিতিতে মানসম্পন্ন শিক্ষক হতে পারতেন আলোর দিশারী। কিন্তু কিভাবে? ২ টা উদাহরণ দেই-
১। ১৯৯৫-১৯৯৬ সালে থেকে পদার্থ, রসায়ন ও জীববিজ্ঞানে নতুন সিলেবাস পরিকল্পনা ও প্রণয়ন শুরু হয় এবং এস এস সি ১৯৯৮ থেকে তা পাবলিক পরীক্ষায় আসে। আমি এতে আশার আলো দেখেছিলাম, খুব ভালো লেগেছিল নতুন সিলেবাস।

কিন্তু দেখেন এই সিলেবাস পড়ানোর জন্য মানসম্পন্ন শিক্ষক ছিল না দেশের ৭৫% এর বেশি মাধ্যমিকে (বোধ করি, এর বেশিও হতে পারে)।

ফলে কিছুটা উচ্চ মান সিলেবাস পেয়েও ছেলে মেয়ে গুলো তার সুফল নিতে পারেনি।

২। সম্প্রতি কমিউনিকেশন ইংলিশ চালু হয়েছে যা আমার ভালো লেগেছে, কিন্তু এটা পড়ানোর জন্য শিক্ষক নেই।

অর্থাৎ শিক্ষককে মান সম্পন্ন করতে, ট্রেনিং দিতে কিংবা কারিকুলাম অনুযায়ী যোগ্য করে তুলতে কোন পরিকল্পনা নাই। হ্যাঁ টিচার্স ট্রেইনিং কলেজ আছে, সেখানে আসলে মুড অফ এডুকেশন নিয়ে আলোচনা হয়, ক্লাস লেকচারে কন্টেন্ট বা কন্টেন্টের বাইরেও উচ্চ মান সম্পন্ন কথা বার্তা বলার ক্ষমতা রাখেন কিনা শিক্ষক তা নিয়ে কোন মাথাব্যাথা নেই কারো।

শিক্ষা সংস্কার আলোচনা শুরু ইচ্ছা ছিল আমার, শুরুও করেছিলাম।

মেধা ভিত্তিক নিয়োগ, ভৌত শিক্ষা অবকাঠামো (এখনও আমরা শিক্ষা অবকাঠমো বলতে স্কুলের দালান এবং ক্লাসের চেয়ার টেবিলেই পড়ে আছি), কারিগরি শিক্ষা অবকাঠামো, শিক্ষা দান অবকাঠামো, গবেষণা অবকাঠামো, পাঠ্যক্রম এর মান এবং বিন্যাস, শিক্ষার স্তরে স্তরে ভ্যালূ এডিশন, শিক্ষক মূল্যায়ন, শিক্ষকের ট্রেনিং এন্ড ডেভেলপমেন্ট, শিক্ষার মান অডিট, রিসার্চ ও ইন্ডাস্ট্রি ভেদে শিক্ষার স্তর ডিফাইন ইত্যাদি ইত্যাদি বহুবিধ ডাইমেশনের যে সমন্বয় তা থরোলি ও ইঙ্কলুসিভ্লি ডিফাইন হয় নি, ফলে এইসব কর্ম পরিকল্পনায়ও আসেনি। আউটকাম তো দেখতেই পাচ্ছি।


৩| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ১২:৫৩

অন্ধবিন্দু বলেছেন:




ভাষার বিশ্বায়ন, ফিউশন, বিবর্তন এবং ভাষিক বিনিময়ের মধ্যদিয়ে ভাষার কাণ্ডজ্ঞান চৈতন্যে ভাষার সৃজন-প্রক্রিয়া প্রবহমান থাকে। ভাষার রক্তমাংসে নিজস্ব কৃষ্টি-সংস্কৃতির সাথে অন্যের(প্রাদেশিক, ভৌগলিক বা বিদ্যায়তনিক) সংস্কৃতির প্রচলিত মিশ্রণ, এতে স্ব-রূপে অঙ্গীভূত রাখতে সাহায্য করবে। নৃবিজ্ঞানের পর্যবেক্ষণে আমি এমনটাই আশা করে থাকি।

হ্যাঁ! আপনার লেখায় যথার্থই ব্যাখ্যা করেছেন সাংস্কৃতিক আগ্রাসন ও ভাষাগত বাঁধার মনস্তাত্ত্বিক দিকটি। পণ্ডিত মহাশয় ভাষাবিদগণ এ-নিয়ে ব্যাপক গবেষণা করেছেন। সেসব আমরা সভাসেমিনারে বইপত্রে নিত্যপ্রত্যক্ষ হই। সংস্কৃতির নমুনা ও উপাত্ত দেখে সহজেই সমালোচনায় আসা যায় যে, প্রতিযোগিতা দিন দিন সত্যই তীব্র অসম হয়ে পড়ছে। বিশেষকরে ইংরেজি ভাষার অতিবৃহৎ জ্ঞানভাণ্ডারের সাথে রোজকার জীবন-যাপন ও চর্চাপ্রয়োগের উদ্দীপনায় অবিচ্ছেদ্য যে-সম্পর্ক গড়ে ওঠেছে তার সাথে মাতৃভাষা পেরে উঠছে কই!

আপনি বাংলার শৈল্পিক দিকটির কথা আলোচনায় এনেছেন চমৎকার। কিন্তু স্বজাতির দীনতা দুর্বলতা ও জাতীয় জীবনের মানসপ্রকৃতি, একে শৈল্পিক রাখার আত্মশক্তিটিকে-যে অবস্থার গুণে ভাষাশক্তিতে রূপান্তরিত করতে বেশ অনাগ্রহী ভূমিকায়।

শিক্ষাদান পদ্ধতির চূড়ান্ত অকার্যকরী হয়ে পড়ছে, তা প্রায় প্রমাণিত। সে কেবল ভাষাতেই নয়, সমষ্টি-জ্ঞানেও।

আপনার উপস্থাপিত প্রতিটি প্রস্তাব-দর্শনাদি সমর্থনযোগ্য। বাংলাদেশের শিক্ষামন্ত্রণালয় এবং সংশ্লিষ্টগণ এ-নিয়ে কাজও করে আসছে। শিক্ষানীতি ও শিক্ষাব্যবস্থায় পরিবর্তন আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু দৃশ্যমান উন্নতির বদলে, অতলে যেনো আরও বড় বিকার ঘটে বসেছে। শিক্ষাব্যবস্থার সংস্কার করার নীতিগুলো আমরা প্রণয়ন করতে পারলেও চলমান ব্যবস্থার ওপর তার কার্যকর প্রয়োগ বারবার বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। কি কারণ!

বিশাল পরিসরে আলোচনার বিষয়, সময় করে আপনার লেখাটিতে আবারও আসার ইচ্ছে রাখছি। ধন্যবাদ আপনাকে।

০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ১:১৫

এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন:
অনেক গুলো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় স্পর্শ করেছেন।

১। ​ভাষার বিশ্বায়ন, ফিউশন, বিবর্তন এবং ভাষিক বিনিময়ের মধ্যদিয়ে ভাষার কাণ্ডজ্ঞান চৈতন্যে ভাষার সৃজন-প্রক্রিয়া প্রবহমান থাকে। ভাষার রক্তমাংসে নিজস্ব কৃষ্টি-সংস্কৃতির সাথে অন্যের(প্রাদেশিক, ভৌগলিক বা বিদ্যায়তনিক) সংস্কৃতির প্রচলিত মিশ্রণ, এতে স্ব-রূপে অঙ্গীভূত রাখতে সাহায্য করবে। নৃবিজ্ঞানের পর্যবেক্ষণে আমি এমনটাই আশা করে থাকি।
- খুব সুন্দর করে বলেছেন, খুব ভালো লেগেছে।

২। ​সংস্কৃতির নমুনা ও উপাত্ত দেখে সহজেই সমালোচনায় আসা যায় যে, প্রতিযোগিতা দিন দিন সত্যই তীব্র অসম হয়ে পড়ছে। বিশেষকরে ইংরেজি ভাষার অতিবৃহৎ জ্ঞানভাণ্ডারের সাথে রোজকার জীবন-যাপন ও চর্চাপ্রয়োগের উদ্দীপনায় অবিচ্ছেদ্য যে-সম্পর্ক গড়ে ওঠেছে তার সাথে মাতৃভাষা পেরে উঠছে কই!

বাংলা যদি তার নিজস্ব ভাষাভাষী জনসাধারণের অগ্রসর ও স্বচ্চল অংশের বিনোদন, উচ্চ শিক্ষা, গবেষণা, থিসিস-জার্নাল, প্রফেশন (চাকুরি-কর্ম ক্ষেত্র), উচ্চ পর্যায়ের ব্যবসার ভাষা হয়ে উঠতে না পারে (আমরা তা করতে ব্যর্থ হই) তাহলে ভয়ের যথেষ্ট কারণ রয়েছে।

যেখানে নিজ ভাষা ভাষীর অগ্রসর অংশ, অর্থনৈতিক ও শিক্ষা বিষয়ক কর্মকান্ডের মাধ্যমে বাংলার বিশ্বায়ন ঘটার কথা সেখানে বাংলা বিশ্বায়নের মোকাবেলায় ইন্টেলেকচুয়াল এলেমেন্ট গুলোতে পিছিয়ে পড়বে এটা মানা যায় না।

৩। কিন্তু স্বজাতির দীনতা দুর্বলতা ও জাতীয় জীবনের মানসপ্রকৃতি, একে শৈল্পিক রাখার আত্মশক্তিটিকে-যে অবস্থার গুণে ভাষাশক্তিতে রূপান্তরিত করতে বেশ অনাগ্রহী ভূমিকায়।

৪। শিক্ষাদান পদ্ধতির চূড়ান্ত অকার্যকরী হয়ে পড়ছে, তা প্রায় প্রমাণিত। সে কেবল ভাষাতেই নয়, সমষ্টি-জ্ঞানেও।


মন্তব্যের পরবর্তী অংশ আলাদা এবং বিশদভাবে আলোচনার দাবি রাখে। আপনি সংক্ষেপে অনেক কিছুরই ইঙ্গিত দিয়েছেন।

৫। শিক্ষানীতি ও শিক্ষাব্যবস্থায় পরিবর্তন আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু দৃশ্যমান উন্নতির বদলে, অতলে যেনো আরও বড় বিকার ঘটে বসেছে।


ক। শিক্ষায় অনগ্রসর জাতি গণ্য ধরে শিক্ষা ব্যবস্থা সাজানোর যে সুচিন্তিত ও দুরদর্শী "ভীশন" দরকার ছিল সেটা কখনই আমাদের ছিল না। শিক্ষা প্রশাসনের লোকদের যোগ্যতা যার পর নাই নিন্ম এবং পশ্চাৎ পদ। স্বাধীনতার পরে দেশের সেরা সেরা শিক্ষিত গনের হত্যা এবং দেশ ত্যাগের পরে একদল চাটুকার এবং উচ্ছিষ্ট ভোগী ও ভোগের আশা লেজুড়বৃত্তি করা লোকের মাধ্যমে চালিত হচ্ছে দেশের সামগ্রিক প্রশাসন, শিক্ষা ও ইন্সটিটিউশনাল ব্যাকবোন।

খ। মেধা ভিত্তিক নিয়োগ, ভৌত শিক্ষা অবকাঠামো (এখনও আমরা শিক্ষা অবকাঠমো বলতে স্কুলের দালান এবং ক্লাসের চেয়ার টেবিলেই পড়ে আছি), কারিগরি শিক্ষা অবকাঠামো, শিক্ষা দান অবকাঠামো, গবেষণা অবকাঠামো, পাঠ্যক্রম এর মান এবং বিন্যাস, শিক্ষার স্তরে স্তরে ভ্যালূ এডিশন, শিক্ষক মূল্যায়ন, শিক্ষকের ট্রেনিং এন্ড ডেভেলপমেন্ট, শিক্ষার মান অডিট, রিসার্চ ও ইন্ডাস্ট্রি ভেদে শিক্ষার স্তর ডিফাইন ইত্যাদি ইত্যাদি বহুবিধ ডাইমেশনের যে সমন্বয় তা থরোলি ও ইঙ্কলুসিভ্লি ডিফাইন হয় নি, ফলে এইসব কর্ম পরিকল্পনায়ও আসেনি। আউটকাম তো দেখতেই পাচ্ছি।

গ। আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে শিক্ষা খাতে একটি দেশের মোট জাতীয় আয়ের (জিডিপি) ৬ শতাংশ বা জাতীয় বাজেটের ২০ শতাংশ বরাদ্দ আদর্শ হিসেবে ধরা হয়। ওই পরিমাণ বরাদ্দ দিতে ২০০০ সালে বিভিন্ন উন্নয়নশীল দেশের সম্মতিতে স্বাক্ষর হয় ‘ডাকার ঘোষণা’। সেনেগালের রাজধানীতে ওই সম্মেলনে বাংলাদেশও উপস্থিত ছিল এবং ‘ডাকার ঘোষণা’য় স্বাক্ষরও করে। কিন্তু বাংলাদেশের জাতীয় বাজেটে শিক্ষা খাতে দিন দিন বরাদ্দ কমছে। অথচ আফ্রিকাসহ পৃথিবীর অনেক দরিদ্র দেশও শিক্ষা খাতের উন্নয়নে বাংলাদেশের চেয়ে বেশি বরাদ্দ দিচ্ছে।

২০১১ সালে শিক্ষার্থী প্রতি মাথাপিছু ব্যয় ছিল ১০০০ টাকারও নিচে যা মূলত শিক্ষা অবকাঠামোর দেখভাল, শিক্ষার্থীদের জন্য প্রয়োজনীয় পাঠ্যপুস্তক, শিক্ষা-সহায়ক উপকরণ সরবরাহ ও সর্বোপরি শিক্ষাক্ষেত্রে নিয়োজিত শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্তচারীর বেতন ইত্যাদি অনুন্নয়ন খাতের অংশ। উচ্চশিক্ষাখাতে অর্থায়নের বিষয়টি আরো অপর্যাপ্ত। বাংলাদেশ মঞ্জুরী কমিশনের তথ্য অনুযায়ী শিক্ষাখাতের সমগ্র ব্যয়ের মাত্র ১১% ব্যয় করা হয় উচ্চশিক্ষা অর্থাৎ বিশ্ববিদ্যালয় খাতে প্রতিবছর, যা জিডিপি’র মাত্র ০.১২%। তাদের হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার গুণগত মান যথাযথ পর্যায়ে উন্নিত করতে হলে তার পরিমান হওয়া উচিত মোট জিডিপি’র ০.৩%। সে অনুযায়ী ২০১০ সালে উচ্চ শিক্ষাখাতে ব্যয়ের প্রয়োজন হতো ২২৪৬ কোটি টাকা (জিডিপি’র ০.৩)%, কিন্তু বাস্তবে ব্যয় হয়েছিলো ৮৯৮ কোটি টাকা যা জিডিপি’র ০.১২%।


গত কয়েক বছর থেকে শিক্ষা বাজেটের স্বল্পতা আড়ালে আনতে এর একে শিক্ষা ও প্রযুক্তি নামে চালিয়ে ভলিউমটা ১৫% এর উপরে দেখানোর চেষ্টা হচ্ছে!

আর বাজেটের উপর আছে চিরায়ত দুর্নীতির মহা আয়োজন।

ঘ। এতকিছুর পরেও আমাদের ছেলে মেয়েরা খুবই ভালো করছে, লক্ষ লক্ষ মূখের ভীড়ে সাস্টেইনেবিলিটির জন্যে লড়ে শত শত শিক্ষার্থী বিশ্বের সব নামকরা বিশ্ববিদ্যালয় ও কর্ম ক্ষেত্রে ছড়িয়ে পড়ছেন। কিন্তু পিছনেও পড়ে আছেন লক্ষে লক্ষে, তাঁদের জন্য দরকার সম্পদ ও সাধ্যের সর্বোচ্চ প্রয়োগ।

৪| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ১২:৫৭

রাতুল_শাহ বলেছেন: সুন্দর পোস্ট,

৫| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১:২৭

রাতুল_শাহ বলেছেন: আহমেদ জী এস ভাই এর মন্তব্যের সাথে সহমত।

বাংলা ভাষা- নিয়ে কথা বলতে গেলে অনেক বিষয় চলে আসে। প্রতিটা যুক্তির বিপরীতে আরেকটি যুক্তি দাঁড়িয়ে যায়।
আমি যখন স্কুলে কলেজে পড়তাম- তখন বাংলা বিষয় থাকলেও ইংরেজীতে গুরুত্ব দিতে হত বেশি। তারপরও আমরা ইংরেজীতে হালকা সুবিধা করতে পারছি না।
এই সমস্যা গুলো হচ্ছে শিক্ষকদের কারণে। বর্তমান সময়ে শিক্ষকতা পেশা গ্রহণ করাটা সবচেয়ে সহজ। এই সাম্প্রতিক কালের শিক্ষকতা পেশার মধ্যে কর্পোরেট কর্পোরেট একটা ভাব চলে এসেছে।

শহরের বাইরে গ্রামের স্কুলের দিকে তাকান- বেশির ভাগ ক্ষেত্রে বাংলা বা ইংরেজীর কোন শিক্ষক নেই। ইতিহাসের শিক্ষক একটু ইংরেজী জানেন, উনি হয়ে যাচ্ছেন ইংরেজী শিক্ষক। ম্যাথের শিক্ষক একটু বাংলা ভালোবাসেন, উনি হয়ে যাচ্ছেন বাংলার শিক্ষক। পুরো হযবরল।

০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ২:০৩

এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: ১। মেধা ভিত্তিক শিক্ষক এবং মানসম্পন্ন নিয়োগ,
২। বাধ্যতামূলক শিক্ষক মূল্যায়ন ব্যবস্থা চালু ,
৩। কোর্স কারিকুলাম ডাইনামিক এবং আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন করা,
৪। দশক ব্যাপী চলমান চোথা নির্ভর মুখস্ত লেকচার এবং প্রশ্নপত্র প্রথা বাতিল,
৫। প্রিপারেশন হীন এবং অনির্ধারিত কন্টেন্ট বেইজড লেকচার প্রথা বন্ধ,
৬। প্রতি ক্ষেত্রে সত্যিকারের সৃজন শীল কুইজ/এনালাইটিক প্রশ্নপত্র চালু,
৭। এক্সটার্নাল টিচার দিয়ে প্রশ্ন করানো,
৮। আন্তঃবিদ্যালয় উত্তর পত্রের মূল্যায়ন চালু ---- করার মত বহু কাজ করার আছে বাংলাদেশে।

হ্যাঁ শিক্ষকদের বিভিন্ন ধরনের কম্ফোর্ট জোন থেকে বের করে আনাও দরকার, সেই সাথে সম্মানিত শিক্ষকদের রুটি-রুজি-সম্মানের ব্যাপার গুলোর ফয়সালাও হওয়া দরকার। শিক্ষক সভ্য দেশে অন্য সকল পেশাজীবীদের চাইতে বেতন এবং সম্মান তুলনামূলক বেশি পান।


অনেক অনেক ধন্যবাদ আলোচনায় আসার জন্য।

৬| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১:৫৫

Mahfuz ahmmed বলেছেন: ভালো লাগলো

০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ২:০৩

এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ।

৭| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ৯:২৫

জেন রসি বলেছেন: ভাষাকে শুধু মাত্র জাতীয়তাবাদী চেতনা দিয়ে রক্ষা করা যাবেনা। যেমন ধরুন উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হতে হলে ইংরেজি জানতেই হবে। আপনিও আপনার পোস্টে সে কথা বলেছেন। আমি যতদূর জানি জাপান কিংবা চীনে ওরা নিজেদের ভাষাতেই সব কিছু শিখে ফেলতে পারছে। আর এই কারনেই ইংরেজি জানাটা তাদের জন্য খুব একটা আবশ্যক না। কিন্তু আমরা আমাদের ভাষাকে সেভাবে সমৃদ্ধ করতে পারিনি। আর এটাই মনে হচ্ছে মূল সমস্যা।

০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৪:৩০

এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: ভাষাকে শুধু মাত্র জাতীয়তাবাদী চেতনা দিয়ে রক্ষা করা যাবেনা। এটাই বাস্তব ও নিরেট কথা। ভাষাকে গবেষণা, প্রযুক্তি, ব্যবসা ও বিনোদনে সমৃদ্ধ করার প্রসেস ডেভেলপ না থাকলে শুধু লোক দেখানো প্রীতি দিয়ে আসলে ভাষা বেশিদূর আগাবে না।

আমরা যখন আমাদের শিক্ষা, কর্মসংস্থান, গবেষণা, বিনোদন এবং ব্যবসার সব অন্য ভাষায় করবো তখন নীরবেই নিজের মাতৃ ভাষা পরাজিত হয়ে যায়। পরবর্তি জেনারেশনের লার্নিং ট্রেন্ড থেকে অনেক কিছু বুঝা যায়, দেশের অগ্রসর উচ্চ- উচ্চ-মধ্য বিত্ত অংশের অনেকেই সরাসরি ইংরেজী মাধ্যমে যাচ্ছে!

ইংরেজী (হাই স্কিল্ড ওয়ার্ক ফোর্স) ও আরবী (লোয়ার স্কিল ওয়ার্ক ফোর্স) মূলত আমাদের দেশের প্রবাসী শ্রমিকের কর্মসংস্থানের ভাষা। ভারত যদি আমাদের জন্য তার পুরোপুরি বন্ধ করে রাখা শ্রম বাজার উন্মুক্ত করতে সম্মত হয়, তবে একাডেমিকে ৩য় বা ৪র্থ ভাষা হিসেবে হিন্দিও আসতে পারে তাতে আমি সমস্যা দেখি না। আমাদের শিক্ষা গবেষণা ফোকাসড নয়, কর্ম সংস্থান ফোকাসড সুতরাং সেখানে কর্ম প্রবাহ ভাষাও সেটাই প্রাধান্য পাবে, এটা ন্যাচারাল। (উল্লেখ্য কর্ম সংস্থান এর সুযোগ না থাকায় আমি সাধারণত হিন্দির পেনেট্রিশন ভালো চোখে দেখি না)।

এখন আলোচনার পরবর্তি ধাপে আসি।

আমাদেরকে আমাদের শ্রম বাজার সেমি স্কিল্ড থেকে হাই স্কিল্ড ডোমেইনে শিফট করতে হবে। এর জন্য বিস্তৃত মধ্যবিত্তকে হাই স্কিল্ড ডোমেইনে ট্রান্সফর্ম করার প্রসেস ডেভেলপ করতে হবে। আমি উচ্চ মধ্য বিত্ত এবং উচ্চ বিত্তকে আলোচনায় আনছি না।

এই খানে আসবে বিস্তৃত গ্রামীণ শিখার্থীদের কথা। এই শ্রেণী শিক্ষায় অবিভাবকের সাহায্য পায় না। এদের ইংরেজি জ্ঞান ধীরে ডেভেলপ করে যার জন্য পারিপার্শ্বিক অবস্থাও জড়িত। এদের জন্য দরকার শিক্ষার মনস্তাত্বিক বাঁধা গুলো সরিয়ে শিক্ষাকে অতি সহজ করে উপস্থানের বিশাল আয়োজন। ফলে এতে এরা স্কিল্ড ডোমেইনের শিক্ষা ফাউন্ডেশন বাংলায় খুব ভালো করে পেয়ে যাবে, আসতে আসতে ইংরেজীর সমন্বয় থাকবে এবং একসময় ইংরেজির পারদর্শীতাকে নিজেরাই টেনে নিবে।

আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

৮| ৩০ শে জুলাই, ২০১৭ বিকাল ৩:৫৮

এ.টি.এম.মোস্তফা কামাল বলেছেন: আপনার ভাবনাটা ভালো লাগলো। আমার পুরনো একটা লেখা শেয়ার করলাম
http://www.somewhereinblog.net/blog/KAMAL5648/30011120

৩১ শে জুলাই, ২০১৭ সকাল ১০:৫৫

এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: ভাইয়া, আমি সময় নিয়ে আপনার লিখায় মন্তব্য করবো।

৯| ৩০ শে জুলাই, ২০১৭ বিকাল ৩:৫৯

এ.টি.এম.মোস্তফা কামাল বলেছেন: Click This Link

১০| ৩০ শে জুলাই, ২০১৭ বিকাল ৪:০৩

এ.টি.এম.মোস্তফা কামাল বলেছেন: Click This Link

১১| ৩০ শে জুলাই, ২০১৭ বিকাল ৪:০৩

এ.টি.এম.মোস্তফা কামাল বলেছেন: সাথে আরেকটা শেয়ার করলাম।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.