নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব,ইইই প্রকৌশলী। মতিঝিল আইডিয়াল, ঢাকা কলেজ, বুয়েট এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র।টেলিকমিউনিকেশন এক্সপার্ট। Sustainable development activist, writer of technology and infrastructural aspects of socio economy.

এক নিরুদ্দেশ পথিক

সমাজের প্রতিটি ছোট বড় সমস্যার প্রকৃতি নির্ধারণ করা, আমাদের আচার ব্যবহার, সমাজের প্রচলিত কৃষ্টি কালচার, সৃষ্টিশীলতা, চারিত্রিক উদারতা এবং বক্রতা, অপরাধ প্রবৃত্তি, অপরাধ সঙ্ঘঠনের ধাঁচ ইত্যাদির স্থানীয় জ্ঞানের আলোকে সমাজের সমস্যার সমাধান বাতলে দেয়াই অগ্রসর নাগরিকের দায়িত্ব। বাংলাদেশে দুর্নীতি রোধ, প্রাতিষ্ঠানিক শুদ্ধিকরন এবং টেকনোলজির কার্যকরীতার সাথে স্থানীয় অপরাধের জ্ঞান কে সমন্বয় ঘটিয়ে দেশের ছোট বড় সমস্যা সমাধান এর জন্য লিখা লিখি করি। আমার নির্দিষ্ট দৃষ্টিভঙ্গি আছে কিন্তু দলীয় সীমাবদ্ধতা নেই বলেই মনে করি, চোর কে চোর বলার সৎ সাহস আমার আছে বলেই বিশ্বাস করি। রাষ্ট্রের অনৈতিক কাঠামোকে এবং দুর্নীতিবাজদের সবাইকে তীক্ষ্ণ ভাবে চ্যালেঞ্জ করার চেষ্টা করি। রাষ্ট্র কে চ্যালেঞ্জ করতে চাই প্রতিটি অক্ষমতার আর অজ্ঞতার জন্য, তবে আঘাত নয়। ব্যক্তিগত ভাবে নাগরিকের জীবনমান উন্নয়ন কে দেশের ঐক্যের ভিত্তিমূল মনে করি। ডাটাবেইজ এবং টেকনোলজি বেইজড পলিসি দিয়ে সমস্যা সমাধানের প্রোপজাল দেবার চেষ্টা করি। আমি মূলত সাস্টেইন এবল ডেভেলপমেন্ট (টেকসই উন্নয়ন) এর নিরিখে- অবকাঠামো উন্নয়ন এবং ডিজাইন ত্রুটি, কৃষি শিক্ষা খাতে কারিগরি ব্যবস্থাপনা ভিত্তিক সংস্কার, জলবায়ু পরিবর্তন, মাইক্রো ইকনমিক ব্যাপার গুলো, ফিনান্সিয়াল মাইগ্রেশন এইসব ক্রিটিক্যাল ব্যাপার নিয়ে লিখার চেষ্টা করি। মাঝে মাঝে চোরকে চোর বলার জন্য দুর্নিতি নিয়ে লিখি। পেশাঃ প্রকৌশলী, টেকনিক্যাল আর্কিটেক্ট, ভোডাফোন।

এক নিরুদ্দেশ পথিক › বিস্তারিত পোস্টঃ

কোটা সংস্কার আন্দোলনে কর্মসংস্থান উপ্লভধির শুরু,শেষ কিসে?

২৩ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ৮:৪০

বোধ ও বিবেকসম্পন্ন একটি স্বাধীন সমাজে অনির্দিষ্টকালের জন্য মেধা ও যোগ্যতার স্বীকৃতির বিপরীতে মেধাহীন পঙ্গুত্ব তৈরির ‘কোটা ব্যবস্থা’ নামক প্রণোদনা চলতে দেয়া যায় না। দেশটি তার স্বাধীনতার ৪৮তম বছরে পদার্পণ করতে চলেছে।

৫৬ শতাংশ কোটা কয়েক হাজার তরুণের জন্য সংরক্ষিত রেখে (যেখানেও আবার তদবির, ঘুষ ও দুর্নীতির যোগ রয়েছে) বাকি লাখ লাখ তরুণকে ৪৪ শতাংশের জন্য প্রতিযোগিতায় ঠেলে দেয়াকে পদে পদে বিভেদ সৃষ্টিকারী অন্যায্য রাষ্ট্রীয় আচরণেরই দর্পণ। কোটাধারীরা স্বল্প কিংবা অতি নিম্ন মেধাবী হয়েও সরকারি চাকরিতে এসে রাষ্ট্র পরিকল্পনা ও পরিচালনার দূরদর্শিতার ব্যাপারগুলোকে বিষিয়ে দিচ্ছে। একাত্তরের বুদ্ধিজীবী হত্যা ও অগ্রসর নাগরিকের দেশত্যাগে সৃষ্ট শূন্যতাকে কাজে লাগিয়ে একদল অযোগ্য, চাটুকার ও অসত্ লোকে ভরে গেছে বাংলাদেশের লোকপ্রশাসন। ৪৭টি বছর অতিক্রান্ত হয়ে গেলেও এ হীনতাকে বছর বছর শুধু সংহতই করা হয়েছে, ফলে কোটা খেয়ে ফেলেছে মোট সক্ষমতার ৫৬ শতাংশ, কী জঘন্য এক রাষ্ট্রীয় কর্মসংস্থান প্রক্রিয়া!

কথা হচ্ছে, দেশের পশ্চাত্পদ লোকালয়গুলোকে, প্রাকৃতিক কারণে পিছিয়ে পড়া নাগরিককে রাষ্ট্র কীভাবে সুরক্ষা দেবে? হ্যাঁ, সেখানে কিছু টাইম ডিফাইন্ড অতি সীমিত কোটা থাকতে পারে। এ সময়ের মধ্যে রাষ্ট্রকে পিছিয়ে পড়া অঞ্চলে অর্থনীতি সচল করার এবং কর্মসংস্থান তৈরির স্থায়ী কাঠামো তৈরি করতে হবে। পিছিয়ে পড়া নাগরিককে অক্ষম না ভেবে তার বিশেষ স্কিল ডেভেলপের বিশেষ স্কুল তৈরি করতে হবে, তাকেও তার সীমিত সক্ষমতার আলোকে সরকারি ও বেসরকারি সব ক্ষেত্রের চাকরি বণ্টনে আনার চর্চা তৈরি করতে হবে, এর চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে সমাজে দৃষ্টি, বুদ্ধি কিংবা শারীরিক প্রতিবন্ধীর মানবিক মর্যাদা তৈরির স্পেস তৈরি করতে হবে। তবে স্বাধীন দেশের জন্ম অবধি পুরো ৪৭ বছর ধরে পশ্চাত্পদতার কথা বলে কোটা চলতে থাকলে বুঝতে হবে রাষ্ট্র আসলে এ পিছিয়ে পড়া অঞ্চল বা নাগরিককে বোধগম্য সুরক্ষা দিয়ে কার্যকর কাঠামো তৈরি করতে হয় নির্লিপ্ত অথবা অক্ষম কিংবা এ ব্যাপারটা ডিল করার জ্ঞান ও প্রজ্ঞা তার নেই। বরং কোটা ব্যবস্থাকে এক্সপ্লয়েট করে সে দুর্বৃত্ত রাজনৈতিক প্রশাসনকে লুটের যোগে ব্যতিব্যস্ত রাখতে সচল।

একজন কোটা সংস্কার অ্যাক্টিভিস্ট লিখেছেন, ‘কোটা পৃথিবীর সব দেশেই বিদ্যমান, তবে কোথাও এটা চিরস্থায়ী নয়। কোটা সাধারণত হয় ১০-১৫ বছরের জন্য সমাজে পিছিয়ে পড়া বিশেষ কোনো জনগোষ্ঠীর জন্য, যেমন— ভারতে ১৫ বছরের জন্য দলিত সম্প্রদায়ের কোটা এখন বিদ্যমান, যুক্তরাষ্ট্রে মোট ১০ বছর রেড ইন্ডিয়ানদের জন্য ২ শতাংশ কোটা বিদ্যমান ছিল। সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোনো দেশেই ১৫ শতাংশের ওপর কোটা বিদ্যমান নেই, যেখানে আমাদের দেশে ৫৬ শতাংশই কোটায় চলে যায়, যা ৪৮ বছর ধরে চলমান! ভাবা যায়?’

অন্যদিকে মুক্তিযোদ্ধা কোটা নামে আরেকটি জালিয়াতি শুরু হয়েছে। শুরু হয়েছে মুক্তি সনদ এবং মুক্তি কোটার চূড়ান্ত অপপ্রয়োগ। অর্থনৈতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক বৈষম্যে ভোগা দেশকে একদল মুক্তিসেনা মেধাহীন প্রশাসন দিয়ে রিপ্লেস করতে স্বাধীন করেননি, ৪৭ বছর পরও যদি এ বোধ না জন্মায়, তবে স্বাধীনতা অকার্যকর। মুক্তিযোদ্ধাদের সামাজিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক সম্মান দিয়ে সম্মানিত করতে হবে, দ্বিতীয় কোনো পন্থায় নয়। হ্যাঁ অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের জন্য প্রয়োজন মাফিক আর্থিক সহায়তা দেয়াকে কার্যকর করা একটি বিকল্প, তাও এটা চূড়ান্তভাবে সাধারণ নাগরিকের সুরক্ষা হীনতাকেই (পেনশন কিংবা রেশন কিংবা মানসম্পন্ন বয়স্ক ভাতা ইত্যাদির অনুপস্থিতিকে) নির্দেশ করে। নাতি-পুতিকে কোটায় চাকরি দেয়া কোনো মতেই বিকল্প হতে পারে না। এ দুর্বৃত্তপনার অবসান চাই।

যদি ধরে নিই, বাংলাদেশে প্রতি বছর আনুমানিক ১৭-২০ লাখ চাকরিপ্রার্থী শ্রমবাজারে উন্মুক্ত হচ্ছেন (পাস করা, ঝরে পড়া, ফেল করা, পিছিয়ে পড়া সবাই মিলে)। এ অতি উচ্চ সংখ্যার বিপরীতে বাংলাদেশ সরকার অনূর্ধ্ব ৩৫ হাজার নাগরিককে বছরে চাকরি দিচ্ছে (যদিও এ সংখ্যা অতি বর্ধিত)। অর্থাত্ সরকার বার্ষিক মোট প্রয়োজন ১৭ লাখের মাত্র ২ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশের নিয়োগ দাতা। বাকি নাগরিক যাচ্ছে কোথায়? বেসরকারি খাত, অপ্রাতিষ্ঠানিক খাত কিংবা কৃষিতে!!! বুঝতে পারছেন! একটি অক্ষম সরকারি নিয়োগ যন্ত্রের বিপরীতে বাংলাদেশের বেসরকারি খাত ও কৃষি কী পরিমাণ সক্ষম!! কিংবা কী পরিমাণ নাগরিক বছর বছর বেকারত্বের বোঝা নিয়ে শুধু হাঁটছেন?

উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় ২০ লাখ ৩১ হাজার ৮৮৯ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করছে। এর মধ্যে ১০ লাখ ২৩ হাজার ২১২ জন ছাত্র ও ১০ লাখ ৮ হাজার ৬৮৭ জন ছাত্রী রয়েছে। (এসএসসিতে ১৬ লাখ ২৭ হাজার ৩৭৮ জন, মাদ্রাসা বোর্ডের অধীন ২ লাখ ৮৯ হাজার ৭৫২ জন এবং কারিগরিতে ১ লাখ ১৪ হাজার ৭৬৯ জন, এছাড়া বিদেশে ৪৫৮ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করছে)। ২০১৭ সালে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় মোট ১৭ লাখ ৮৬ হাজার ৬১৩ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়েছিল। গত বছরের চেয়ে এবার পরীক্ষার্থী বেড়েছে ২ লাখ ৪৫ হাজার ২৮৬ জন।

ধারণা করা হয়, বর্তমান বাংলাদেশে প্রায় ৬০ লাখের অধিক শিক্ষিত যুবক আনুষ্ঠানিকভাবে কর্মহীন। জরিপ বলছে, প্রায় ৪৭ শতাংশ উচ্চশিক্ষিত যুবক বেকার।

বাংলাদেশের শ্রমঘন বেসরকারি শিল্প ও গার্মেন্টস খাতে কর্মঘণ্টা অতি দীর্ঘ, কাজের পরিবেশ নাজুক, ছুটি নেই। নেই ওয়ার্ক লাইফ ব্যালান্স। নেই বার্ষিক ছুটি, স্বাস্থ্য বীমা কিংবা অবকাশ ভাতা। নেই ট্রান্সপোর্টেশন ভাতা কিংবা সন্তানের শিক্ষা ভাতা, নেই আবাসন ফ্যাসিলিটি। কর্মহীন যুবকের দীর্ঘ চাকরি খোঁজার ক্লান্তি, সেটা যাচাইয়ের প্রতীক্ষা করে না, সে শুধু এন্ট্রান্স চায়। চায় শর্তহীন জব অ্যাকসেস। ছয়টি ওপেনিংয়ের বিপরীতে পড়ে ৮৬ হাজার আবেদনপত্র, চাকরি তাই সোনার হরিণ। ১৫ শতাংশ শিল্প শ্রমিক বস্তিবাসী, অফিস ট্রান্সপোর্টেশন পদযুগল। বেসরকারি স্কিল্ড ও সেমি স্কিল্ড জব মাত্রই অন্যূন ১২-১৪-১৬ ঘণ্টা ডিউটি। বিস্তৃত নিম্নমধ্যবৃত্তের আবাসন ঘিঞ্জিঘর।

তাই মেধাবী তরুণের উপলব্ধির পরিধিতে ব্যাপক পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। আজকের তরুণ রাষ্ট্রের সঙ্গে কী কী বোঝাপড়া চায় এবং কী কী দাবি তার করা উচিত, তাকে বোধগম্য ও সংজ্ঞায়িত করা জরুরি। শুধু ২ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ চাকরিদাতার মেধার মূল্যায়ন নাকি বাকি বিশাল ওয়ার্ক স্পেসে মানসম্পন্ন কাজের পরিবেশ ও কাজের ফ্যাসিলিটির নিশ্চয়তা। সে কি ন্যূনতম বেতন চাইবে নাকি নগরে বাঁচার উপযোগী পারিশ্রমিক দাবি করবে। সর্বোচ্চ ১০ কর্মঘণ্টার মানবিক শ্রমজীবনের বাধ্যবাধকতা দাবি তোলাও চাই। অমানবিক শ্রমঘণ্টার অবসান বেসরকারি খাতে অন্তত ২৫ শতাংশ নতুন কর্মসংস্থান তৈরি করবে— সে উপলব্ধির জমিন তৈরি করতে হবে তাকে, শুধু বিসিএস কোটা আন্দোলনে এলে বিস্তৃত কোনো প্রাপ্তি নেই।

প্রতিভাবান ও সম্ভাব্য তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য অনুকূল ব্যাংকিং প্রভিশন, প্রশাসনিক রেজিস্ট্রেশনের ঝামেলাহীন ওয়ানস্টপ পয়েন্ট, সহজিয়া আয়কর পেপার ওয়ার্কস, চাঁদাবাজি ও ঘুষ মুক্ত ব্যবসা শুরুর অনুকূল অবকাঠামো তৈরির উপাদানগুলো তরুণদের আন্দোলনের নেগোসিয়েশন পয়েন্ট হিসেবে আনতে হবে। একজন উদ্যমী তরুণ কেন একজন উদোক্তা হয়ে উঠতে পারছেন না, তার সব অবকাঠামোগত প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ বাধাগুলো চিহ্নিত করে এর বিপরীতে কৌশলগত কর্মসূচি প্রণয়নই আজ ও আগামীর প্রধান দাবি হওয়া চাই।

আজকের তরুণকে চ্যালেঞ্জ ছুড়তে হবে কেন স্থানীয় রিসোর্স (এক্সপার্ট) থাকা সত্ত্বেও ম্যানেজমেন্টের পদে, ইঞ্জিনিয়ারিং কিংবা প্রডাকশন ফ্লোরে গণহারে বিদেশী নিয়োগ হচ্ছে? কেন বিদেশী ওপেনিংয়ের প্রাক পর্যায়ে স্থানীয় লোকবলের সক্ষমতা যাচাইয়ের প্রক্রিয়া মানা হয় না? স্থানীয় স্কিল তৈরির ব্যবসায়িক, ইন্ডাস্ট্রিয়াল কিংবা প্রকৌশল অবকাঠামো ও ইন্টারফেসগুলো তৈরি কেন হচ্ছে না।

অর্থাত্ দেশে কর্মসংস্থানকে টেকসই ও দীর্ঘমেয়াদের জন্য স্থিতিশীল করতে তরুণকে দূরদর্শিতা নিয়ে ভাবনায় বসতে হবে এবং এ উপলব্ধিগুলোকে নিয়মতান্ত্রিকভাবে সামাজিক আন্দোলনে রূপ দিতে হবে। নাগরিকবান্ধব, জনস্বার্থ অনুকূল কল্যাণ রাষ্ট্র গঠনের চিন্তাকে সমাজে ছড়িয়ে দিতে হবে।


তাহলে কি তরুণরা কোটাপ্রথা মুক্তির আন্দোলন করবে না? অবশ্যই করবে। বরং সফল হতে হলে আন্দোলনকে এ রকমই ন্যারো স্কোপে রেখে দাবি আদায়ের নিয়মতান্ত্রিক সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে অবিরত। এক ধাপের সাফল্যকে পরবর্তী ধাপে উত্তরণ করে কৌশলগতভাবে নতুন আন্দোলন শুরু করতে হবে। চূড়ান্ত ও টেকসই কর্মসংস্থানের অবকাঠামো তৈরি না হওয়া পর্যন্ত এ প্রাণান্ত চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। অন্যথায় শুধু কোটা আন্দোলন আদতে কর্মসংস্থান তৈরির বড় কোনো পরিসরই তৈরি করতে পারবে না। কারণ মোট কর্মসংস্থান চাহিদার বিপরীতে চাকরিদাতা হিসেবে সরকারি খাত নিতান্তই নগণ্য, গৌণ। সরকারকে বেসরকারি খাতে মানবিক শ্রম ও বাঁচার উপযোগী মজুরি বাস্তবায়ন করতে বাধ্য করাতে হবে, আইডিয়া নিয়ে রাস্তায় ঘোরা উদ্যমী তরুণকে উদ্যোক্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার ব্যাংকিং ও প্রশাসনিক প্রসেস বাস্তবায়নে বাধ্য করাতে হবে। তবেই চূড়ান্ত ও কাঙ্ক্ষিত সফলতা আসবে, যা উন্নত জীবনমান ও ওয়ার্ক লাইফ ব্যালান্স হিসেবে বাস্তব রূপ পাবে।

তরুণদের আজকের আন্দোলনের ভিত টেকসই ও ভবিষ্যত্মুখী হয়ে উঠুক, মানসম্পন্ন চাকরি জীবন ও ন্যূনতম চাকরি সুবিধাদি আদায়ের বোধ এবং প্রত্যয় গড়ে উঠুক। তারুণ্য এগিয়ে যাক। ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ডের সুবিধা রাষ্ট্রের স্তরে স্তরে সঞ্চারিত হোক। মেধা ব্যবস্থাপনা সেন্সিবল হোক। বাংলাদেশ এগিয়ে যাক!

মন্তব্য ১৯ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (১৯) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ৮:৫০

মো: নিজাম উদ্দিন মন্ডল বলেছেন: সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোনো দেশেই ১৫ শতাংশের ওপর কোটা বিদ্যমান নেই
দারুন একটা বিষয় জানলাম।
ভাল থাকুন।

২৩ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ৯:২১

এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: এই ১০ বা ১৫ শতাংশও কিন্তু সাময়িক। কোটা দেয়াই হয় কিছু সময় নিবার জন্য যাতে এই সময়ের মধ্যে ঐ পিছিয়ে পড়া এলাকা বা সমাজ বা সম্প্রদায়কে টেকসই অবকাঠামোতে আনা যায়।

কিন্তু বাংলাদেশে কোটা প্রথা থামার কোন কথা নাই বার্তা নাই.।কোটা চলছে ৪৭ বছর ধরে.।সব পাগল ছাগলের ব্যবস্থাপনা.।।

২| ২৩ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ৮:৫৩

সোহানী বলেছেন: চমৎকার লিখা।

সত্যিকারের দেশের মঙ্গল চাইলে সরকার অনেক আগেই এ কোটা ফোটা উঠিয়ে দিতো। কিন্তু অভাগা দেশে কেউই দেশের মঙ্গল চায় না, সবাই নিজের মঙ্গল চায়। তাই সব অপদার্থরা চাকরী পায়।

কোটা প্রথাও সংস্কার এখন সময়ের দাবী।

২৩ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ৯:৩৩

এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: কোটা প্রথাও সংস্কার এখন সময়ের দাবী। আমি আরো দুটা অসামাঞ্জস্যের উদাহরণ দেই-

১। ধরুন একটা ছেলে বা মেয়ে বুয়েটে উপজাতীয় কোটায় চান্স পেল (সেখানে উপজাতীয় কোটা আছে)। এই একই ছেলে বা মেয়ে ইঞ্জিনিয়ার হয়ে আবারো সিভিল সার্ভিসে ঢুকতে কোটার সুবিধা পাবে। তাইলে ব্যাপারটা কি দাঁড়ালো, দুই বার অন্য কাউকে মেধা ভিত্তিক প্রতিযোগিতায় ঠকানো হল, অর্থাৎ ২ বার রাষ্ট্র কনফ্লিক্ট অফ ইন্টারেস্ট তৈরি করলো।

অথচ দরকার ছিল এরকম-
১০ বছর উপজাতীয় কোটা থাকবে, এই সময়ের মধ্যে উপজাতীয় অধ্যুষিত অঞ্চলে প্রকৌশল শিক্ষার অবকাঠামো এবং সেই ভাবে কর্মসংস্থান অবকাঠামো (প্রণোদনা দিয়ে বেসরকারি বিজনেস সেখানে যাবে, সরকার দুরদর্শী ইনফাস্ট্রাকচার মেনেজমেন্ট করবে)। তারপর কোটা উঠে যাবে।

২। একজন শিখার্থী শুধু জীবনে একবার কোটা সুবিধার প্রয়োগ নিয়ে সুবিধা নিতে পারবেন। ১৭ থেক ২০ লক্ষ ছেলে মেয়ে একটি ব্যাচে থাকে, এখন আপনি একই ছেলে বা মেয়েকে মুক্তি কোটায় স্কুলে ঢুকালেন, আবার কলেজে, আবার বিশ্ববিদ্যালয়ে আবার চাকুরিতে। বিশাল আবদার। বাকিরা মুড়ি খাবে? অথচ এই একজনকে বার বার কোটা দিবার মানে হচ্ছে তার আসলে কোন ডেভেলপমেন্ট হচ্ছে না বরং তাকে বার বার তুলে দিতে হচ্ছে অন্যদের ঠিকিয়ে। সুতরাং এই পুরো সিস্টেম টেকসই না।

এর সংস্কার নিন্তাতই দরকার।

২৬ শে মার্চ, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৪৩

এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: আরো একটি অসামাঞ্জস্যের উদাহরণ হোল- মুক্তি কোটা নিজেই-

দেশের কোটা সুবিধায় শহীদ মুক্তিযোদ্ধার চেয়ে জীবিত মুক্তিযোদ্ধার সর্বেসর্বা বিচরণ। শহীদ মুক্তিযোদ্ধারা যেহেতু তদবির করতে বেঁচে নেই তাই উনাদার পরিবারের সদস্যদের উপস্তিতি প্রায় নেই বললেই চলে মুক্তি কোটায়। অন্যদিক জীবিত বৈধ ও অবৈধ মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের একক বিচরণ লিস্ট, এই লিস্ট এ অবৈধ রা দিন দিন ভারি হচ্ছে, তাদের তদবির দিন দিন কলুষিত করছে মুক্তি কোটার লিস্ট। ফলে মুক্তি কোটার চুড়ান্ত অপপ্রয়োগ হচ্ছে।

৩| ২৩ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ৮:৫৪

গোলাম রাব্বি রকি বলেছেন: কোটা সংস্কার নিয়ে বেশ কয়েকটা টকশো দেখলাম । সব গুলো টকশোতেই দেখি শুধু জেলা কোটা , নারী কোটা , আদিবাসী কোটা এসব নিয়ে আলোচনা করে , কমানোর কথা বলে । কিন্তু যে মুক্তিযুদ্ধ কোটা ৩০ শতাংশ কোটা দখল করে আছে ৫৬ শতাংশের মাঝে সেই কোটা নিয়ে তারা টু শব্দ করেন না !! এক টকশোতে এক আলোচক বলেই ফেললেন মুক্তিযুদ্ধ খুবই স্পর্শকাতর বিষয় !! কি আশ্চর্য আমাদের দেশের শাসক শ্রেণী মুক্তিযুদ্ধ কে স্পর্শকাতর বানিয়ে তুলল !! কোথায় কোথায় চেতনা ভুলণ্ঠিত হয় ! প্রধানমন্ত্রীও সুন্দর করে বলে দিলেন মুক্তিযুদ্ধ কোটা বহাল থাকবে ! থাকুক, তবে সেটা ৩০ শতাংশ থেকে ১০ বা ১৫ তে নিয়ে আসা যায় না ? সেটাই কি যৌক্তিক নয় ?? অবশ্য আমাদের দেশ যৌক্তিকতার ধার ধারে না , এখানে সবাই শক্তের ভক্ত আর নরমের যম ...

২৩ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ৯:৩৫

এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: আমাদের দেশ বুদ্ধি, প্রজ্ঞা, বিবেক, দুরদর্শিতা ও যৌক্তিকতার ধার ধারে না। কিসে নিজের ভালো হবে তা যদি কেউ না বুঝে তাইলে এই রকম অন্যায় কাঠামোরই জয়জয়কার হতে বাধ্য।

৪| ২৩ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ৯:৫৬

রাজীব নুর বলেছেন: কোন কোটাই থাকাই উচিত নয়। এমন কি জাতীয় সংসদের মহিলা কোটাও বিলুপ্ত করা দরকার। কোটা একটাই সেটা মেধা কোটা। আসলে বাঁকা পথে চাকুরী বা শিক্ষার সুযোগ নিয়ে এরা হয়তো দেশের সহজ সরল মানুষকে বেকুব বানিয়ে জীবন কাটিয়ে দিতে পারে, কিন্তু বর্তমান বিশ্বায়নের যুগে দেশের গন্ডির বাইরে এই সকল নিম্নমানের প্রোডাক্ট কখনই প্রতিযোগিতায় ঠিকতে পারে না এবং দেশকে সম্মানজনকভাবে রিপ্রেজেন্ট করতে পারে না। একটি মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের কেহ বিপদে পড়লে সাহায্য করা যায়; কিন্তু গড়ে কোটার দরকার নেই। গুণী লোকেরা চাকুরী সৃষ্টি করার কথা ভাবে। কোথা নিয়ে ভেবে সময় নষ্ট করে না।

২৬ শে মার্চ, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৩৩

এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: কোটা একটাই সেটা মেধা কোটা। আসলে বাঁকা পথে চাকুরী বা শিক্ষার সুযোগ নিয়ে এরা হয়তো দেশের সহজ সরল মানুষকে বেকুব বানিয়ে জীবন কাটিয়ে দিতে পারে, কিন্তু বর্তমান বিশ্বায়নের যুগে দেশের গন্ডির বাইরে এই সকল নিম্নমানের প্রোডাক্ট কখনই প্রতিযোগিতায় ঠিকতে পারে না এবং দেশকে সম্মানজনকভাবে রিপ্রেজেন্ট করতে পারে না। একটি মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের কেহ বিপদে পড়লে সাহায্য করা যায়; কিন্তু গড়ে কোটার দরকার নেই। গুণী লোকেরা চাকুরী সৃষ্টি করার কথা ভাবে। কোথা নিয়ে ভেবে সময় নষ্ট করে না।

কিউডস রাজীব ভাই!!

৫| ২৩ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ১০:৪৯

রোদ্দূর মিছিল বলেছেন: *উপলব্ধি।

২৬ শে মার্চ, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৩৩

এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ, আমার বানান ভুল অনেক বেশি!

৬| ২৪ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ১:০০

আখেনাটেন বলেছেন: জাতির কিসে ভালো হবে কিসে মন্দ হবে এইটুকু না বোঝার কিছু নেই? এবং তেনারা সবই বোঝেন। কিন্তু মানেন না। কেন মানেন না সে এক বিশাল রহস্য? হয়ত ভাবেন ভোট কমবে। শেষে না গদিটা যায়। এই গদি আর ক্ষমতার নিদারূণ লোভ জাতি হিসেবে যে আমাদের যুগ যুগ ধরে অন্ধকার খাদেই ডুবিয়ে রাখছে এ নিয়ে তেনাদের ভাবনার সময়ও নেই।

তারা ভাবছেন আমরা তো দশ ধাপ এগিয়েছি। এটি উন্নতি না। বাচ্চারা ঢোল বাজাও। কিন্তু এই অসৎ লোকদের কে বোঝাবে যে একই সময়ে অন্যরা পঞ্চাশ ধাপ এগিয়ে গেছে।

এই কোটা (বিশেষ ক্ষেত্রে ছাড়া যা আপনি সুন্দরভাবে ব্যাখ্যা দিয়েছেন) যে একটি জাতির জন্য অভিশাপ তা এদের উন্নত মস্তিষ্কে কে ঢুকাবে?

ভারতেও দেখছি কোটা নিয়ে তরুনদের মধ্যে ভীষণ হতাশা। হাজার হাজার ব্রেইন ড্রেইন হচ্ছে এইসব দেশ থেকে এই লোকগুলো কি এসব জানে না। এত কিছুর পরও কে এদের বোঝাবে?

জাতির সূর্যসন্তান মুক্তিযোদ্ধাদের ভালোরকম আর্থিক প্রণোদনা দিতে পারে সরকার। এটা কি বেশি কার্যকরী নয় সেক্ষেত্রে? এখনও খবরে দেখি মুক্তিযোদ্ধা রিক্সাচালক, সবজি বিক্রিওয়ালা, চিকিৎসার অভাবে ধুঁকছে। এগুলো কেন দেখতে হবে স্বাধীনতার অর্ধ শতক পরেও। কারা এই কোটার সুবিধাগুলো ভাগাভাগি করছে। এখানে কার স্বার্থ কাজ করছে?

হালুয়া-রুটির ভাগিদার অনেককে দেখছি এই জিনিসকে সাপোর্ট করতে। অাপসোস।

২৬ শে মার্চ, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৩৬

এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: জবাব হীন!

১। গদি আর ক্ষমতার নিদারূণ লোভ জাতি হিসেবে যে আমাদের যুগ যুগ ধরে অন্ধকার খাদেই ডুবিয়ে রাখছে এ নিয়ে তেনাদের ভাবনার সময়ও নেই। এই অসৎ লোকদের কে বোঝাবে যে একই সময়ে অন্যরা পঞ্চাশ ধাপ এগিয়ে গেছে। এই কোটা যে একটি জাতির জন্য অভিশাপ তা এদের উন্নত মস্তিষ্কে কে ঢুকাবে?
২। জাতির সূর্যসন্তান মুক্তিযোদ্ধাদের ভালোরকম আর্থিক প্রণোদনা দিতে পারে সরকার। এটা কি বেশি কার্যকরী নয় সেক্ষেত্রে? এখনও খবরে দেখি মুক্তিযোদ্ধা রিক্সাচালক, সবজি বিক্রিওয়ালা, চিকিৎসার অভাবে ধুঁকছে। এগুলো কেন দেখতে হবে স্বাধীনতার অর্ধ শতক পরেও।
৩। হালুয়া-রুটির ভাগিদার অনেককে দেখছি এই জিনিসকে সাপোর্ট করতে। অাপসোস।

৭| ২৪ শে মার্চ, ২০১৮ ভোর ৬:৩৩

স্বামী বিশুদ্ধানন্দ বলেছেন: এই আন্দোলনের শেষ হবে আরো কয়েক কোটি বাংলাদেশির মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে দেশান্তরী হওয়ার মধ্য দিয়ে |

২৬ শে মার্চ, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৪৩

এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট।

৮| ২৪ শে মার্চ, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:২৯

প্রজ্জলিত মেশকাত বলেছেন: অসাধারণ লেখা। সহমত সহযোদ্ধা।

২৬ শে মার্চ, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৪৪

এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: আন্তরিক ধন্যবাদ।

৯| ২৬ শে মার্চ, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:০৩

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: তাদের অবস্থা গল্পের ঐ অতি চালাকের মতো!
যে ধার্মিককে চ্যালেঞ্জ করেছে আপনি যদি আমায় বুঝাইতে পারেন- পালের বলদ আপেনর!!
এদিকে গিন্নিতো রেগে মেগে আগুন। ডেকে বলল- মিনসে পাগল হইছ? একটাই বলদ! বুঝায়া নিয়া গেলে আমরা করমু কি?
অতি চালাক ধূর্ত হাসি দিয়ে বলে- দূর পাগল! আমারে বুঝাইব এত সোজা?
সারারাত শেষে সকালে বলমু- কিছূই বুঝি নাই!!

সরকার এই হালে আছে- জেগে ঘুমের ভান ধরে!
রবী ঠাকুরের আধ মরাদের ঘা মারা ছাড়া তারা ঘুমের ভান থেকে জাগবে না!

বরাবরের মতোই ঋদ্ধ পোষ্টটি প্রিয়তে।
+++++

২৭ শে মার্চ, ২০১৮ দুপুর ১:৪৬

এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: আন্তরিক ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.