নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব,ইইই প্রকৌশলী। মতিঝিল আইডিয়াল, ঢাকা কলেজ, বুয়েট এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র।টেলিকমিউনিকেশন এক্সপার্ট। Sustainable development activist, writer of technology and infrastructural aspects of socio economy.

এক নিরুদ্দেশ পথিক

সমাজের প্রতিটি ছোট বড় সমস্যার প্রকৃতি নির্ধারণ করা, আমাদের আচার ব্যবহার, সমাজের প্রচলিত কৃষ্টি কালচার, সৃষ্টিশীলতা, চারিত্রিক উদারতা এবং বক্রতা, অপরাধ প্রবৃত্তি, অপরাধ সঙ্ঘঠনের ধাঁচ ইত্যাদির স্থানীয় জ্ঞানের আলোকে সমাজের সমস্যার সমাধান বাতলে দেয়াই অগ্রসর নাগরিকের দায়িত্ব। বাংলাদেশে দুর্নীতি রোধ, প্রাতিষ্ঠানিক শুদ্ধিকরন এবং টেকনোলজির কার্যকরীতার সাথে স্থানীয় অপরাধের জ্ঞান কে সমন্বয় ঘটিয়ে দেশের ছোট বড় সমস্যা সমাধান এর জন্য লিখা লিখি করি। আমার নির্দিষ্ট দৃষ্টিভঙ্গি আছে কিন্তু দলীয় সীমাবদ্ধতা নেই বলেই মনে করি, চোর কে চোর বলার সৎ সাহস আমার আছে বলেই বিশ্বাস করি। রাষ্ট্রের অনৈতিক কাঠামোকে এবং দুর্নীতিবাজদের সবাইকে তীক্ষ্ণ ভাবে চ্যালেঞ্জ করার চেষ্টা করি। রাষ্ট্র কে চ্যালেঞ্জ করতে চাই প্রতিটি অক্ষমতার আর অজ্ঞতার জন্য, তবে আঘাত নয়। ব্যক্তিগত ভাবে নাগরিকের জীবনমান উন্নয়ন কে দেশের ঐক্যের ভিত্তিমূল মনে করি। ডাটাবেইজ এবং টেকনোলজি বেইজড পলিসি দিয়ে সমস্যা সমাধানের প্রোপজাল দেবার চেষ্টা করি। আমি মূলত সাস্টেইন এবল ডেভেলপমেন্ট (টেকসই উন্নয়ন) এর নিরিখে- অবকাঠামো উন্নয়ন এবং ডিজাইন ত্রুটি, কৃষি শিক্ষা খাতে কারিগরি ব্যবস্থাপনা ভিত্তিক সংস্কার, জলবায়ু পরিবর্তন, মাইক্রো ইকনমিক ব্যাপার গুলো, ফিনান্সিয়াল মাইগ্রেশন এইসব ক্রিটিক্যাল ব্যাপার নিয়ে লিখার চেষ্টা করি। মাঝে মাঝে চোরকে চোর বলার জন্য দুর্নিতি নিয়ে লিখি। পেশাঃ প্রকৌশলী, টেকনিক্যাল আর্কিটেক্ট, ভোডাফোন।

এক নিরুদ্দেশ পথিক › বিস্তারিত পোস্টঃ

তৈরি পোশাক শিল্প ভাবনাঃ বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের নন টেকসই খাতকে উন্নয়নশীল বা মধ্যবিত্ত বাংলাদেশ কতটা ও কিভাবে এগিয়ে নিবে?

০৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৯:০৯

তৈরি পোশাক শিল্প নির্ভর বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের নন টেকসই খাতকে উন্নয়নশীল বা মধ্যবিত্ত বাংলাদেশ কতটা এগিয়ে নিবে?
প্রেক্ষাপটঃ
-------------
-প্রায় ৪০ লক্ষ নাগরিক শ্রমঘন কাজে দীর্ঘ মেয়াদে নিয়োজিত।
-শ্রমিকদের দৈনিক শ্রম ঘন্টা অনির্ধারিত এবং অতি দীর্ঘ (প্রায় ১২ থেকে ১৪ ঘন্টা)।
-মাসিক বা বাৎসরিক পেইড লিভ নেই।
-স্বাস্থ্য ভাতা নেই।
-পোশাক শিল্পে শ্রমিকের চাকুরী নিরাপত্তা নেই।
-কর্মজীবি পিতা মাতা দীর্ঘ সময়ে কাজে থাকেন বলে বাচ্চার লালন পালনের বিকল্প নেই।
-নূন্যতম মজুরি বলে শ্রমিক ঠকানোর একটা অবিচার চালু হয়েছে, এই মজুরি শহরে বাঁচার মত মজুরি কিনা তা যাচাইয়ের কোন সিস্টেম নেই।
-ফলে লাখে লাখে গার্মেন্টস দেশের ডেটাবেইজে চাকুরীজীবি হয়েও আসলে বস্তিবাসী, যাঁদের কোন ধরনের নাগরিক সুবিধা নেই। উপরন্তু রাজনৈতিক চাঁদাবাজি দখল-পুনঃ দখল চক্রে পড়ে এবং বহুতল ভবন নির্মাণকে কেন্দ্র করে নিয়মিত বিরতিতে আগুন লাগান হয় বস্তিতে। সহায় সম্বল হীন প্রান্তিকজন বছরে দু-এক বার নিঃস্ব হয় এই প্রক্রিয়ায়।

গার্মেন্টস শ্রমিকের এক রুম ঘরে বহু মানুষের জীবন -
-----------------------------------------------------------------

বস্তির এক রুমের ঘরে চার-ছয় বা তারও বেশি সদস্য নিয়ে বসবাস করেন একটি পুর্ণ পরিবার। আবাসন সুবিধা বলতে যা বুঝায় তার কিছুই এখানে নেই, নেই স্বাস্থ্য সুবিধা,নেই সঠিক ইউটিলিটি সুবিধা যেমন গ্যাস,খাবার পানির সঠিক বন্দোবস্ত, নেই টয়লেট ও স্যানিটেশন সুবিধা, বর্ষায় জলাবদ্ধতা ও হাটু পানি নিত্য চিত্র। পরিষ্কার পানির জন্য, রান্না ও ধোঁয়া মোছার জন্য, গ্যাসের জন্য, টয়লেট এবং গোছলের জন্য বস্তিবাসীর দীর্ঘ লাইনে অপেক্ষায় থাকাই নিয়তি।

ফলে এই ঘর গুলো স্বাস্থ্য কর তো নয়ই, বরং এখান থেকে সুশিক্ষিত কিংবা স্বশিক্ষিত নাগরিক তুলে আনাও অসম্ভব। এই পরিবেশে থাকা কারো প্রতিষ্ঠানগত শিক্ষার মানুষিক অবকাশ নেই, নেই মেধা ও মনন তৈরির সুযোগ। উপরন্তু বস্তি মদ জুয়া চোরাচালান রাজনৈতিক অপরাধ ও অন্য সব সামাজিক অপরাধ ও অবৈধ ব্যাবসার আখড়া।

আমরা স্পষ্টতই দেখতে পাচ্ছে নব্বই এর দশকে শিক্ষা উপবৃত্তি শুরু হলে শিক্ষায় অংশগ্রহন বাড়তে শুরু করে, তথাপি যে সুনির্দিস্ট কিছু কারণে শুহুরে প্রান্তিক পরিবারের শিক্ষার্থীদের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের সার্টিফিকেশন স্তরই পার হচ্ছে না তার মধ্যে এই আবাসন অন্যতম। আসলে বস্তিতে পড়াশুনার কোন সুযোগই নেই। এই বোধ রাষ্ট্রকে জাগ্রত করতে হবে।


তৈরি পোশাক শিল্পের নন টেকসই দিকগুলো -
----------------------------------------------------------
১। গার্মেন্টস শিল্প দীর্ঘ মেয়াদে নাগরিককে বঞ্চিত করে রাখার চক্রাকার শিকল
প্রায় ৪০ লক্ষ নাগরিক শ্রমঘন কাজে অতি নিন্ম মজুরিতে দীর্ঘ মেয়াদে নিয়োজিত রাখলে হয়ত কিছু মানুষের জীবন ক্ষুধার তাড়নাকে পরাজিত করে বেঁচে থাকবে। কিন্তু এই সুবিধাহীন নিন্ম মজুরির মনবেতর কর্ম জীবন দীর্ঘ মেয়াদে নাগরিককে টেকসই উপার্জন, টেকসই স্বাস্থ্য সেবা এবং উচ্চ শিক্ষার আওতায় আনতে অপারগ, ফলে গার্মেন্সট আসলে একটি বিশাল নাগরিক শ্রেণীকে অতি নীচ ও হীন শ্রম স্তরে রেখে দিবার অচ্ছেদ্য শিকল, অর্থাৎ এখানে যারা শ্রম দিবে তাঁদের মজুরি ও জীবন মান এমনই নীচু হবে যে, কায়িক শ্রমঘন শ্রমিকের সন্তানাদিও শ্রমঘন শ্রমিক হতে বাধ্য হবে। বিস্তৃত নাগরিকের এই ধরনের নিন্ম মান জীবন রাষ্ট্রের উন্নয়নশীল কিংবা মধ্যবিত্ত মর্যাদায় উত্তোরণের সাথে সরাসরি সাংঘর্ষিক। মর্যাদাহীনতার এমন জীবন জিইয়ে রাখা রাষ্ট্র গঠনের মৌলিক উদ্দেশ্যের পরিপন্থী।

বিপরীতে রাষ্ট্র কিভাবে পোশাক শিল্প শ্রমিক ও বস্তিবাসীদের সন্তানদের মানসম্পন্ন শিক্ষায় ধাবিত করে উন্নততর কর্মাসংস্থানের জন্য তৈরি করবে তার একটা মাইগ্রেশন পথ তৈরি করা দরকার।

২। পোশাক শিল্প বাংলাদেশের নদী দূষণের অন্যতম প্রধান হাতিয়ার।
ঔপনিবেশিক ইউরোপীয় শিল্পের পরিবেশ অবান্ধব খাত গুলোকে (যেমন পোশাক ও চামড়া শিল্প অন্যতম) তৃতীয় বিশ্বের দেশে পাঠিয়ে ইউরোপের নদী ও পানি রক্ষার উদ্যোগ নেয়া হয়। এরই ধারাবাহিকতায় অন্য কিছু ঘনবসতিপূর্ণ দেশের মত বাংলাদেশ বিশ্বের দর্জিবাড়ি হয়ে উঠে।

পোশাক শিল্পের ডায়িং সরাসরি অশোধিত অবস্থায় বাংলাদেশের নদ নদীতে উন্মুক্ত করে দেশের জল স্থল প্রাণ প্রকৃতি বিষিয়ে দেয়া হয়েছে।গবেষণায় দেখা যাচ্ছে শীতলক্ষ্যার পানিতে প্রাণঘাতী ভারী ধাতু সহ প্রায় ৬০ রকমের বিষাক্ত পদার্থ পাওয়া যাচ্ছে। যেহেতু দেশ আর্থিক স্বচ্চলতায় পৌঁছানোর প্রান্তে এসেছে, তাই এই শিল্পের মাইগ্রেশন পথ নির্ধারণ জরুরী।

রানা প্লাজা ট্রাজেডির পরে বাংলাদেশ "হাই এন্ড" পোশাক বাজার হারিয়ে ফেলেছে প্রায়। জিন্স ছাড়া উন্নত পোশাকে এখন আর "মেইড ইন বাংলাদেশ" দেখা যায় না বললেই চলে। আমি নিজে এই সার্ভেটা করি মাঝে মাঝে। এই বাজার ভারত, ভিয়েতনাম, ফিলিপাইন, শ্রীলংকা, তুরস্ক,মিয়ান্মার নিয়ে গেছে। বাংলাদেশ এখন শুধু কিছু মধ্য এবং মূলত নিন্ম মান তৈরি পোশাকে নেতৃত্ব দিচ্ছে।

শীতলক্ষ্যার দুপাড়ের পাট সুতা ও বস্ত্র কলের আইয়ুব খান জামানার বাইরেও শুধু তৈরি পোশাক শিল্পে বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা ৩০ বছরের বেশি। তিন দশকের বেশি অভিজ্ঞতা নিয়ে একটি দেশের নিন্ম মান কাপড়ের ব্যবসা চালিয়ে যাওয়া বড়ই হীন পর্যায়ের অর্জন।

নিন্ম মান পোশাকের ডায়িং শিল্প চরম পর্যায়ের ইরেস্পন্সিবল। এই ইন্ডাস্ট্রির অশোধিত বর্জ্য আমার নদী পানি ও ফসলী ভূমি নষ্টে ব্যাপক ভূমিকা রাখছে।


প্রাণ ও প্রকৃতিকে যাচ্ছে তাই ভাবে ধংস করে সস্তা দামে পোশাক তৈরির যে নির্লজ্জ্বতা তাকে কিভাবে আর্থিক ও পরিবেশ গত ভাবে টেকসই শিল্পে রূপান্তর করা যায় তার কার্যকর ও পরিবেশগত দায়বদ্ধতা নির্ভর কৌশল প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে।

৩ক। একটি উন্নয়নশীল কিংবা মধ্যবিত্ত দেশ দীর্ঘমেয়াদে তার নাগরিককে আন স্কিল্ড শ্রমিকে রেখে দিতে পারে না, বরং আর্থিক সক্ষমতা বৃদ্ধির সাথে সাথে তাকে এই বিশাল আন স্কিল্ড শ্রমিক কিভাবে স্কিল্ড শ্রমিকে পরিণত হতে পারে তার রূপান্তর কৌশল নির্ধারণ করেতে হবে। দিন যত আগাবে দেশের ভিতরে ও বাইরে আন স্কিল্ড শ্রমিকের প্রয়োজনীয়তা ফুরাবে।

৩খ। দ্রুত উৎপাদন ও তাৎক্ষণিক ডেলিভারি নিশ্চিত করতে, শ্রমিক বিদ্রোহ থেকে বাঁচতে আগামীর পোশাক শিল্প রোবটিক অপারেশনে যাবে প্রায় পুরোপুরি। এমতাবস্থায় আগামীর চাহিদাকে সামনে রেখে মানবসম্পদ উন্নয়নের পোশাক শিল্প ক্যাটাগরি ভিত্তিক কোন টেকসই প্রোগ্রাম দেখছি না আমরা রাষ্ট্রের তরফ থেকে। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয় সিলেবাসও ভবিশ্য উচ্চ কারিগরি ও ইন্ডাস্ট্রি অরিয়েন্ডেড মানব সম্পদ চাহিদাকে টার্গেট করে রূপান্তরিত করা হচ্ছে না। এমতাবস্থায় "একমুখী" অটোমেশন বিপ্লবে নন টেকসই কাজ, পুনঃ পুনঃ করতে হয় এমন আন স্কিল্ড ও সেমি স্কিল্ড কাজ সমূহের শ্রম বাজার বাংলাদেশ স্বাভাবিক ভাবে হারিয়ে বসবে। একদিকে বিদেশী কারিগরি মানব সম্পদ সহ অটোমেশন মেশিনারি আসবে বাইরে থেকে, অন্যদিকে অটোমেশন সাপোর্ট ও অপারেশনে স্থানীয় সক্ষমতার মানব সম্পদের অনুপস্থিতিও দেশের কর্মসংস্থানকে পশ্চাৎ মূখী করে তুলবে।


। যে কোন ধরণের চাকুরী সুবিধাহীন নিন্ম মজুরির পোশাক শিল্প শ্রম বাংলাদেশের উচ্চ আয় বৈষম্য জিইয়ে রাখছে এবং বর্ধিত করছে।

৫। পোশাক শিল্প শ্রমিক পায়ে হেঁটে কর্মস্থলে আসা যাওয়া করেন। ফলে এই বিস্তৃত নাগরিকের দৈনন্দিন কমিউটেশন ডেটা নগর পরিবহণ চাহিদা কিংবা গ্রোথে সমন্বিত নয়। এতে করে ঢাকা সহ বড় শহর গুলোর গণ পরবহন চাহিদা ঠিক কি তা আমাদের নগর প্রশাসন ও সরকার জানে না। ফলে মেট্রোর মত আধুনিক গণ পরিবহণের সক্ষমতা যে ভবিষ্যতের বাস্তবতা ও চাহিদাকে ধারণ করতে পারবে না, সেটা হলফ করে ব্লা যায়।

৬। পোশাক শিল্প উৎপাদন কয়েক দশক পরেও শুধু রপ্তানীমুখী থেকে গেছে। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ পোশাক এখনও আমদানি নির্ভর। সুতরাং এই শিল্প ভিত্তিক অর্থনীতিকে টেকসই বলা যায় না।

৭। নিন্ম মজুরীর মানহীন অবহেলার জীবন দীর্ঘমেয়াদে সমাজকে অপরাধ প্রবণতা থেকে মুক্ত করতে সহায়ক নয়।


৮। রপ্তানীমূখী পোশাক খাত তিন দশক পরেও শতভাগ শুল্ক রেয়াত দিয়ে সিংহ ভাগ কাঁচামাল বিদেশ থেকে আমদানি করছে। এত দীর্ঘ সময়ের পরিসরে কিভাবে সিংহ ভাগ কাঁচালাম ও কাঁচামাল সংশ্লিষ্ট উৎপাদন কিভাবে দেশেই হবে, এই রোডম্যাপ তৈরি হয়নি। অন্যদিকে পোশাক খাতে দেশীয় স্কিল্ড মানব সম্পদ তৈরির অবকাঠামোও তৈরি করা যায়নি। ফলে পোশাক খাতে ভারতীয় স্কিল্ড শ্রমিকের আধিক্য দৃশ্যমান। ফলে কাঁচামাল ও স্কিল্ড মানব সম্পদের দিক থেকেও পোশাক শিল্প টেকইস অর্জন পায়নি।

দেখা যাচ্ছে দেশের মোট বাৎসরিক রপ্তানী আয় ২১ বিলিয়ন ডলারের বিপিরীতে শুধু চট্রগ্রাম বন্দরেই শুল্ক লোকসান হচ্ছে ৩.৫ বিলয়ন ডলার। সবগুলো বন্দরের হিসেব যুক্ত হলে দেখা যাবে আনুমানিক ৫ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ মোট রপ্তানী আয়ের প্রায় ২৫% শুধু প্রণোদনাই। এদিকে এই আগাম শুল্ক রেয়াতে গঠিত বণ্ডেড কমিশন অফিসে বন্ডেড প্রতিষ্ঠান ও বন্ডেড ওয়্যার হাউজ গুলো মিথ্যা তথ্য দিয়ে রপ্তানীমূখী পণ্যের কাঁচামালের বাইরেও যাবতীয় ক্যাটাগরির পণ্য আমদানি করে খোলা বাজারে চোরাচালান ও বিক্রি করে। ফলে নন বন্ডেড এবং ক্ষুদ্র আমদানীকারক ক্ষতি গ্রস্ত হচ্ছে। এর আরেকটি সরাসরি বিপদ হচ্ছে, দেশীয় পণ্য উৎপাদনকারীরা অনৈতিক প্রাইস ওয়ারে পড়ে বাজার হারাচ্ছেন, শুল্ক মুক্ত বিদেশী পণ্য দামের সাথে দেশীয় উৎপাদন খরচের সামঞ্জস্য রাখতে পারছে না এবং মধ্য ও ক্ষুদ্র বিনিয়োগ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

আজকের ইউরোপীয় আমেরিকান ক্রেতা তুলনামূলক কম দামে (কোন কোন ক্ষেত্রে কিছুটা কম মানেরও) যে "মেইড ইন বাংলাদেশ" পোশাক কিনছেন, তার প্রতিটি পিস আমাদের মাটি পানি ও পরিবেশ বিষিয়ে দিতে ভূমিকা রাখছে। এর কাঁচামাল, মেশিনারিজ, কারিগরি সাপোর্ট ও সিংহ ভাগ স্কিল্ড শ্রমিক বাইরে থেকে আসছে। শুধু "শ্রমঘন" কাজে অনৈতিক পরিবেশ ও মজুরিতে নিরন্তর খেঁটে যাচ্ছে কিছু বাংলাদেশী শ্রমিক। প্রাণ ও প্রকৃতি বিষিয়ে দিয়ে, অভ্যন্তরীণ উৎপাদনকে ও স্কিল্ড কর্মসংস্থানকে ক্ষতি গ্রস্ত করা শুল্ক হীন কাঁচামাল আমদানির মডেল জারি রেখে, ধনী ও গরীবের বর্ধিত আয় বৈষম্য জারি রেখে, বিস্তৃত নাগরিককে এই মানবেতর জীবনের বাঁধা খাপে আটকিয়ে তৈরি পোশাকের গৎবাঁধা মডেলকে আর কত এগিয়ে নিবে আগামীর মধ্যবিত্ত বাংলাদেশ?



তৈরি পোশাক শিল্পকে টেকসই করার কিছু দিক

আমাদের সরকার, ব্যবসায়ী ও প্রশাসনকে ভাবনায় আনতে হবে কিভাবে পোশাক শিল্পকে টেকসই করা যায়। এখানে কয়েকটা বিষয়ের আলোচনা এনেছি যার সম্ভাব্যতা যাচাই এর জন্য সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ মতামত দরকার। এই ধরণের বিষয়গুলো নাগরিক বিতর্ক এবং দেশের বৈদেশিক মুদ্রা আহরণের স্ট্রাটেজি সংশ্লিষ্ট হওয়ায় পাবলিক ডোমেইন আলোচনায় আসার দাবী রাখে।
১। যে কোন ইন্টারমিডিয়েট স্টেইজ কিংবা একেবারে র কাঁচালাম দেশে উৎপাদনের ৫০% টার্গেট নিতে হবে। একটা নির্দিস্ট সময়ে ২৫%, পরবর্তি সময় টার্গেটে ৫০% এ উন্নীত করতে হবে।

২। কাঁচামাল আমদানিতে আগাম শুল্ক রেয়াত দেয়া যাবে না, কাঁচামাল আমদানি, পোশাক উৎপাদন ও প্রকৃত বিক্রির পেমেন্ট বাংলাদেশের ব্যাংকে আসা সাপেক্ষে সকল ট্রেড ও ফাইনান্সিয়াল ডেটা ম্যাপিং ও এনালাইসিস সাপেক্ষে অটোমেটেড সফটওয়্যার সিস্টেমে শুল্ক রেয়াত রপ্তানি পরবর্তিতে দিতে হবে। এতে শুল্ক জালিয়াতি এবং কাঁচামালের নাম করে অন্য সকল পণ্য আমদানির জালিয়াতি থামানো যাবে।

৩। ডায়িং ও বর্জ্য শোধন নির্ভর হাই এন্ড প্রোডাক্ট উৎপাদনের টার্গেট নিতে হবে। ধীরে ধীরে যেন তেন ভাবে তৈরি, নিন্ম মান ও লোয়ার এন্ড প্রোডাক্ট থেকে সরতে হবে। যেহেতু চায়না আরএমজি আউট সোর্স করা শুরু করেছে তাই তাদের হাই এন্ড প্রোডাক্ট কে টার্গেট করে আগানো যায়।

৪। গার্মেন্টস শ্রমিকের ফিউচার স্কিল ডীমান্ড বের করতে হবে। যেহেতু অটোমেশন এবং রোবোটিক প্রোডাকশন শুরু হয়ে গেছে তাই নন স্কিল্ড ও সেমি স্কিল্ড শ্রমিকের বিপিরীতে কি কি স্কিল সেটের মানবসম্পদ লাগবে তা ফোরকাস্ট করে এর সাথে বিশ্ববিদ্যালয় কোর্স ডিফাইন করতে হবে।

৫। ১ম ধাপে পোশাক শিল্পে এক জন শ্রমিক দৈনিক সর্বোচ্চ ১০ ঘন্টার বেশি কাজ করতে পারবেন না এই বাধ্যবাধক নিয়ম করতে হবে। ২য় ধাপে এটাকে নামিয়ে ৮ ঘন্টা করতে হবে। মানুষের ওয়ার্ক লাইফ ব্যালান্স আনা এবং অতি নিন্ম সংখ্যক শ্রমিক দিয়ে বেশি কাজ করিয়ে নিবার ট্রেন্ড রহিত করে ব্যাপক কর্ম সংস্থানের সুযোগ তৈরি করতে হবে। এটা অন্য সকল শিল্পের জন্যও প্রযোজ্য।

৬। অশোধিত ডাইয়িং বর্জ্য নদীতে উন্মুক্ত করা যাবে না। প্রতিটি ফ্যাক্টরি থেকে বর্জ্য পরিমাণে শোধন কস্ট নিয়ে কেন্দ্রীয় শোধনাগার তৈরি করা লাগবে। উচ্চ মান শোধিত বর্জ্যই শুধু নদীতে উন্মুক্ত করতে হবে।

৭। এতে প্রাইস নেগসিয়েশন পাওয়ার বাড়াবে। পোশাকের দামের সাথে এনভায়রনমেন্ট কস্ট জুড়ে দিয়ে বারগেইন বাড়াতে হবে।

মন্তব্য ১৫ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (১৫) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৯:৩৩

ডঃ এম এ আলী বলেছেন: ধন্যবাদ মুল্যবান লেখাটির জন্য ।
সময় অভাবে এখন বিস্তারিত মন্তব্য দিতে পারলামনা ,
আপাতত প্রিয়তে নিয়ে গেলাম ।
পরে সময় নিয়ে আবার আসব ।

অনেক অনেক শুভেচ্ছা রইল ।

০৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৯:৪৪

এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: মাই প্লেজার।
ভালো থাকবেন ভাইয়া!

২| ০৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১০:১১

আহমেদ জী এস বলেছেন: এক নিরুদ্দেশ পথিক ,




অনেক আলোচনার দাবী রাখে লেখাটি ।
দেশে এসডিজির ( সাসটেইনেব্যল ডেভেলপমেন্ট গোল ) মতো কতো "গোল"ই তো আছে , গরম গরম বক্তৃতা আছে । তাপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে বসে গোলটেবিল বৈঠকও আছে কিন্তু সেখানে কি আমাদের গার্মেন্টস খাতটির খেটে খাওয়া মানুষদের কথা আছে ? থাকলে কতোখানি আছে ? এসব কিছুই জানা নেই । ডঃ এম এ আলীর বিস্তারিত লেখার অপেক্ষায় রইলুম ।

০৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১১:৩৮

এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: ভাইয়ার বক্তব্যের প্রেক্ষিতে আলোচনায় ফিরবো ইনশাল্লাহ।

৩| ০৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১১:০৯

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: পোশাক শ্রমিকরা এখন ভালো বেতন পাচ্ছে। তবে সেই বেতনে রাজধানীতে চলা বা পরিবার নিয়ে চলতে পারে কিনা সেটা নিশ্চয়ই মালিক বা সরকার দেখবে না। একজন গার্মেন্টস-এর মেয়ে যে বেতন পায় তার চেয়ে কম বেতনে একজন মাস্টার্স পাস ছেলের চাকুরি জীবন শুরু হয়। পোশাক শ্রমিকদের বেতন বাড়াতে গেলে যে ব্যবসার ক্ষতি হতে পারে বা স্বল্প পারিশ্রমিক লেবারের কারণে কাজ অন্য দেশে চলে যেতে পারে সেটাও মাথায় রাখতে হবে। এখন আপনি হয়তো বলবেন, মালিকরা অনেক লাভ করে। কিন্তু সেটা মালিকের ইনভেস্ট ও কৌশলের সুফল। দেশে আরো অনেক খাত আছে যেখানে আরো কম মজুরিতে শ্রমিকদের কাজ করতে হয়। তাই শুধু পোশাক শ্রমিকদের বেতন ও জীবনমান বাড়ানোর কথা না বলে সার্বিকভাবে নিম্নবিত্তদের জন্য একটা উপায় বের করা উচিত...

০৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১১:৪২

এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: ১। প্রথমেই বলবো আমি শিল্প ও কর্মসংস্থানের ট্রান্সফর্মেশন প্রক্রিয়া নিয়ে কথা বলছি, যেখানে আমি বলতে চাই ২০২৪ এ বাংলাদেশ যখন মধ্যবিত্ত দেশের মর্যাদা পাবে তখন এই আন স্কিল্ড শ্রম ও তার ব্যাপ্তি, এই শ্রম ঘন শিল্প মডেলের ভবিষ্যৎ কি। অর্থাৎ আমি ভবিশ্যেতের দরকারি রূপান্তর প্রক্রিয়ার মডেল যেন এখনই ভাবনায় প্রাধান্য পাই সেই আলোচনা টেনে বলেছি, বর্তমানের তৈরি পোশাক শিল্প ভবিষ্যৎ বিবেচনায় টেকসই নয়।

২। মজুরি ভালো পান কথাটা আমি ভিন্ন ভাবে ব্যাখ্যা করি।

১২ থেকে ১৪ ঘণ্টা ডিউটি করে উনি ৭ থেকে ১০ হাজার টাকা পাচ্ছেন, যেখানে শুধু ৮ ঘন্টা পরিশ্রম করেও (যা মানবিক ও স্টান্ডার্ড) এই মজুরিতে নগরীতে চলা যায় না।

অন্য একটি দিক হচ্ছে, গার্মেন্টসে সর্বচ্চ ১০ ঘন্টার ডিউটি নিশ্চিত করা গেলে সেখানে আরো কর্ম সংস্থান বাড়ানো যায়। ১৫ থেকে ২৫%।

৩। রানা প্লাজা ট্রাজেডির বাংলাদেশ "হাই এন্ড" পোশাক বাজার হারিয়ে ফেলেছে প্রায়। জিন্স ছাড়া উন্নত পোশাকে এখন আর "মেইড ইন বাংলাদেশ" দেখা যায় না বললেই চলে। আমি নিজে এই সার্ভেটা করি মাঝে মাঝে। এই বাজার ভারত, মিয়ান্মার, ভিয়েতনাম, ফিলিপাইন,শ্রীলংকা নিয়ে গেছে। বাংলাদেশ এখন শুধু কিছু মধ্য এবং মূলত নিন্ম মান পোশাকে নেতৃত্ব দিচ্ছে।

ফলে প্রাইস কমাতে প্রাণ ও পরিবেশ বেশি ক্ষতি গ্রস্ত হচ্ছে।

৪। উন্নয়নশীল মনোনয়ন এবং মধ্যবিত্ত হবার শর্তের কারণে কাজের মান ও পরিবেশ নিশ্চিতের দাবী বাড়বে।

৫। আমার মতে মালিকদের শর্ট টার্ম প্রফিট ভাবনা তাঁদেরকে ব্যবসা থেকেই টার্মিনেইট করে দিবে। সুতরাং এই নিন্ম মজুরীর আন স্কিল্ড শ্রমিক নির্ভর কৌশল তাঁদের দিন দিন ব্যাক ফায়ার করছে।

৪| ০৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১১:৪৫

প্রামানিক বলেছেন: গুরুত্বপূর্ণ লেখা।

৫| ০৬ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১২:৪৬

সোহানী বলেছেন: ভালো লাগলো বিষয়টি আলোচনায় নিয়ে এসেছেন বলে। আর চমৎ্রকার বিশ্লেষন ও প্রশংসার দাবীদার।

এটি এমন একটি খাত যা নিয়ে সরকারী পর্যায়ে অসম্ভব মনোযোগ প্রয়োজন। এবং প্রয়োজনে একটি আলাদা মন্ত্রনালয়ের দাবী রাখি। কারন দেশের বড় একটি বৈদেশিক আয়ের খাসই নয় দেশীয় অনেক খাত ও এ শিল্পের সাথে জড়িত।

অগের মন্তব্যে বলেছেন, "৩। রানা প্লাজা ট্রাজেডির বাংলাদেশ "হাই এন্ড" পোশাক বাজার হারিয়ে ফেলেছে প্রায়। জিন্স ছাড়া উন্নত পোশাকে এখন আর "মেইড ইন বাংলাদেশ" দেখা যায় না বললেই চলে। আমি নিজে এই সার্ভেটা করি মাঝে মাঝে। এই বাজার ভারত, মিয়ান্মার, ভিয়েতনাম, ফিলিপাইন,শ্রীলংকা নিয়ে গেছে। বাংলাদেশ এখন শুধু কিছু মধ্য এবং মূলত নিন্ম মান পোশাকে নেতৃত্ব দিচ্ছে। /"

শতভাগ সহমত।

আগে বিভিন্ন দেশের মার্কেটের দামী পোষাকের দোকানে ঢুকলে মেইড ইন বাংলাদেশ দেখা পেতাম কিন্তু এখন পাই না। মেইড ইন ইন্ডিয়া কিংবা ভিতেনাম বা চায়না। তারা তখন সে অস্থিরতার সময়ের সুযোগ নিয়েছে বা বলা যায় অস্থিরতাকে কাজে লাগিয়েছে।

আমি জানি না সরকার এর আদৈা কোন চিন্তাধারা আছে কিনা। মনে হয় নেই কারন এখনো পর্যন্ত তেমন কোন উদ্যোগ চোখে পড়েনি।

০৬ ই এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ১:২৭

এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

আমাদের সরকার, ব্যবসায়ী ও প্রশাসনকে ভাবনায় আনতে হবে কিভাবে পোশাক শিল্পকে টেকসই করা যায়। আমি কিছু দিক ভাবে রেখেছি তবে তার সম্ভাব্যতা যাচাই করিনি, এর জন্য সংশ্লিষ্ট এক্সপার্ট অপেনিয়ন নিতে হবে।

১। যে কোন ইন্টারমিডিয়েট বা র কাঁচালাম দেশে উৎপাদনের ৫০% টার্গেট। একটা নির্দিস্ট সময়ে ২৫%, পরবর্তি সময় টার্গেটে ৫০% এ উন্নীত করতে হবে।
২। কাঁচামাল আমদানিতে আগাম শুল্ক রেয়াত দেয়া যাবে না, কাঁচামাল আমদানি, পোশাক উৎপাদন ও প্রকৃত বিক্রির পেমেন্ট বাংলাদেশের ব্যাংকে আসা সাপেক্ষে সকল ট্রেড ও ফাইনান্সিয়াল ডেটা ম্যাপিং ও এনালাইসিস সাপেক্ষে অটোমেটেড সফটওয়্যার সিস্টেমে শুল্ক রেয়াত রপ্তানি পরবর্তিতে দিতে হবে। এতে শুল্ক জালিয়াতি এবং কাঁচামালের নাম করে অন্য সকল পণ্য আমদানির জালিয়াতি থামানো যাবে।
৩। ডায়িং ও বর্জ্য শোধন নির্ভর হাই এন্ড প্রোডাক্ট উৎপাদনের টার্গেট নিতে হবে। ধীরে ধীরে যেন তেন ভাবে তৈরি, নিন্ম মান ও লোয়ার এন্ড প্রোডাক্ট থেকে সরতে হবে। যেহেতু চায়না আর এম জি আউট সোর্স করা শুরু করেছে তাই তাদের হাই এন্ড প্রোডাক্ট কে টার্গেট করে আগানো যায়।
৪। গার্মেন্টস শ্রমিকের ফিউচার স্কিল ডীমান্ড বের করতে হবে। যেহেতু অটোমেশন এবং রোবোটিক প্রোডাকশন শুরু হয়ে গেছে তাই নন স্কিল্ড ও সেমি স্কিল্ড শ্রমিকের বিপিরীতে কি কি স্কিল সেটের মানবসম্পদ লাগবে তা ফোরকাস্ট করে এর সাথে বিশ্ববিদ্যালয় কোর্স ডিফাইন করতে হবে।
৫। ১ম ধাপে পোশাক শিল্পে এক জন শ্রমিক দৈনিক সর্বোচ্চ ১০ ঘন্টার বেশি কাজ করতে পারবেন না এই বাধ্যবাধক নিয়ম করতে হবে। ২য় ধাপে এটাকে নামিয়ে ৮ ঘন্টা করতে হবে। মানুষের ওয়ার্ক লাইফ ব্যালান্স আনা এবং অতি নিন্ম সংখ্যক শ্রমিক দিয়ে বেশি কাজ করিয়ে নিবার ট্রেন্ড রহিত করে ব্যাপক কর্ম সংস্থানের সুযোগ তৈরি করতে হবে। এটা অন্য সকল শিল্পের জন্যও প্রযোজ্য।
৬। অশোধিত ডাইয়িং বর্জ্য নদীতে উন্মুক্ত করা যাবে না। প্রতিটি ফ্যাক্টরি থেকে বর্জ্য পরিমাণে শোধন কস্ট নিয়ে কেন্দ্রীয় শোধনাগার তৈরি করা লাগবে। উচ্চ মান শোধিত বর্জ্যই শুধু নদীতে উন্মুক্ত করতে হবে।
৭। এতে প্রাইস নেগসিয়েশন পাওয়ার বাড়াবে। পোশাকের দামের সাথে এনভায়রনমেন্ট কস্ট জুড়ে দিয়ে বারগেইন বাড়াতে হবে।

আপাতত এগুলাই মাথায় আছে.।.।।। এর বাইরে কোন পয়েন্ট থাকলে লিখবেন প্লিজ।

৬| ০৬ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১:২৩

শাহাদাৎ হোসাইন (সত্যের ছায়া) বলেছেন: পোষ্টটিকে আমি গবেষণার সারমর্ম হিসেবে ধরে নিচ্ছি। ধন্যবাদ আপনার পরিশ্রমের জন্য। অনেক সমস্যা এবং সম্ভাবনা উঠে এসেছে।

০৬ ই এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ২:২৬

এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

৭| ০৬ ই এপ্রিল, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:২৫

সোহানী বলেছেন: শাহাদাৎ ভাই, আপনি যে পয়েন্টগুলো বলেছেন সেগুলো কিন্তু অনেক দূরের পয়েন্ট। কারন এখন আমাদের বাঁচা মরার সময়, এ শিল্পকে টিকিয়ে রাখার সময়। ভারত, মিয়ান্মার, ভিয়েতনাম, ফিলিপাইন, শ্রীলংকা বা চায়না যেভাবে আগ্রাসীভাবে বাজার দখল করছে সেক্ষেত্রে প্রথমে আমাদের আর্ন্তজাতিক বাজার ধরে রাখার চেস্টা করতে হবে। এ সেক্টরের অস্থিরতা কমাতে হবে, সরকারী পৃষ্ঠপোসকতায় এ শিল্পকে আগে টিকাতে হবে........ তারপর আপনার পয়েন্টগুলো ভাবতে হবে। যেভাবে বাজার দখল চলছে তাতে আগামী দশ বছরে এ সেক্টর কোথায় গিয়ে দাঁড়ায় তা দেখার বিষয়। যদি না আমরা কোন সঠিক ব্যবস্থা নেই।

আলোচনা সত্যিই ভালো লাগছে। ভালো থাকুন সবসময়..................

০৯ ই এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৩:০৬

এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: এখন আমাদের বাঁচা মরার সময়, এ শিল্পকে টিকিয়ে রাখার সময়। ভারত, মিয়ান্মার, ভিয়েতনাম, ফিলিপাইন, শ্রীলংকা বা চায়না যেভাবে আগ্রাসীভাবে বাজার দখল করছে সেক্ষেত্রে প্রথমে আমাদের আর্ন্তজাতিক বাজার ধরে রাখার চেস্টা করতে হবে।

ঠিক তাই, আমাদের স্বল্প মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদী টেকসই কৌশল এবং পরিকল্পনা নিয়ে আগাতে হবে।
ব্যবসা বাঁচাতে হবে, শ্রম বান্ধব করতে হবে।
প্রাণ ও পরিবেশ বাঁচাতে হবে।

৮| ১১ ই এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ২:১৫

রাজীব নুর বলেছেন: লেখাটি বেশ ভালো।
আপনি কি এই শিল্পের সাথে জড়িত?

১১ ই এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৩:৩০

এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: নাহ! আমি পেশায় সফটওয়্যার সলিউশন আর্কিটেক্ট, টেলিকমে কাজ করি।

অনেক ধন্যবাদ পড়ার জন্য।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.