নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব,ইইই প্রকৌশলী। মতিঝিল আইডিয়াল, ঢাকা কলেজ, বুয়েট এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র।টেলিকমিউনিকেশন এক্সপার্ট। Sustainable development activist, writer of technology and infrastructural aspects of socio economy.

এক নিরুদ্দেশ পথিক

সমাজের প্রতিটি ছোট বড় সমস্যার প্রকৃতি নির্ধারণ করা, আমাদের আচার ব্যবহার, সমাজের প্রচলিত কৃষ্টি কালচার, সৃষ্টিশীলতা, চারিত্রিক উদারতা এবং বক্রতা, অপরাধ প্রবৃত্তি, অপরাধ সঙ্ঘঠনের ধাঁচ ইত্যাদির স্থানীয় জ্ঞানের আলোকে সমাজের সমস্যার সমাধান বাতলে দেয়াই অগ্রসর নাগরিকের দায়িত্ব। বাংলাদেশে দুর্নীতি রোধ, প্রাতিষ্ঠানিক শুদ্ধিকরন এবং টেকনোলজির কার্যকরীতার সাথে স্থানীয় অপরাধের জ্ঞান কে সমন্বয় ঘটিয়ে দেশের ছোট বড় সমস্যা সমাধান এর জন্য লিখা লিখি করি। আমার নির্দিষ্ট দৃষ্টিভঙ্গি আছে কিন্তু দলীয় সীমাবদ্ধতা নেই বলেই মনে করি, চোর কে চোর বলার সৎ সাহস আমার আছে বলেই বিশ্বাস করি। রাষ্ট্রের অনৈতিক কাঠামোকে এবং দুর্নীতিবাজদের সবাইকে তীক্ষ্ণ ভাবে চ্যালেঞ্জ করার চেষ্টা করি। রাষ্ট্র কে চ্যালেঞ্জ করতে চাই প্রতিটি অক্ষমতার আর অজ্ঞতার জন্য, তবে আঘাত নয়। ব্যক্তিগত ভাবে নাগরিকের জীবনমান উন্নয়ন কে দেশের ঐক্যের ভিত্তিমূল মনে করি। ডাটাবেইজ এবং টেকনোলজি বেইজড পলিসি দিয়ে সমস্যা সমাধানের প্রোপজাল দেবার চেষ্টা করি। আমি মূলত সাস্টেইন এবল ডেভেলপমেন্ট (টেকসই উন্নয়ন) এর নিরিখে- অবকাঠামো উন্নয়ন এবং ডিজাইন ত্রুটি, কৃষি শিক্ষা খাতে কারিগরি ব্যবস্থাপনা ভিত্তিক সংস্কার, জলবায়ু পরিবর্তন, মাইক্রো ইকনমিক ব্যাপার গুলো, ফিনান্সিয়াল মাইগ্রেশন এইসব ক্রিটিক্যাল ব্যাপার নিয়ে লিখার চেষ্টা করি। মাঝে মাঝে চোরকে চোর বলার জন্য দুর্নিতি নিয়ে লিখি। পেশাঃ প্রকৌশলী, টেকনিক্যাল আর্কিটেক্ট, ভোডাফোন।

এক নিরুদ্দেশ পথিক › বিস্তারিত পোস্টঃ

মশা ব্যাঙ ও বৃষ্টির কথা!

০৭ ই মে, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:১৯


ঘটনাক্রমে মনে পড়া! সম্ভবত স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণীর গণিত বইয়ের ঐকিক নিয়ম অথবা গড় বিষয়ক অধ্যায়ে একটা প্রশ্নে উল্লেখ ছিল ১৯৮২-৮৩ অর্থবছরে বাংলাদেশ ব্যাঙ্গের ঠ্যাং বিক্রি করে কত কোটি আয় করেছে! এত বছর পর মনে পড়লো অংকটার কথা! স্মৃতিতে ভেসে উঠে সন্ধ্যার পরে বা ভোরে ফাঁদ দিয়ে ব্যাঙ ধরার দৃশ্য গুলো, যা আমি গ্রামে দেখেছি। ব্যাঙ ধরার অতি সহজ কৈশল্টা খুব মজার বিষয় ছিল তখন! অথচ এটা একটা অপরিকল্পিত নন টেকসই কাজ ছিল। ব্যাঙ বাণিজ্যিক ভাবে চাষ করে বিক্রি করলে সমস্যা ছিল না, সেটা করলেই ভাল হত। তা না করে প্রাকৃতিক ভাবে বেঁচে থাকা ব্যাঙ নাই করা হয়েছে।

১। ব্যাঙের ঠ্যাং বিক্রি করে পর্যাপ্ত ব্যাঙ মারা শেষে প্রাকৃতিক খাদ্য চক্র থেকে একটি স্তর নষ্ট করা হয়েছে। রাসায়নিক পতঙ্গ ও বালাই নাশকে উপকারী পতঙ্গ সহ নির্বিচারে নষ্ট হয়েছে প্রাকৃতিক খাদ্য চক্রের ভারসাম্য। মাছ চাষের বাণিজ্যিক মডেলে পানির নিন্ম মধ্য ও উচ্চ স্তরের খাদ্য চক্র ভিত্তিক প্রাকৃতিক চাষ হারিয়েছে। পাতলা পলিথিনকে জেলি ফিস ভেবে খেয়ে মরেছে প্রায় শত ভাগ প্রাকৃতিক কচ্চপ। ইন্ডাস্ট্রিয়াল পানি দুষণ ও রাসায়নিক চাষের মডেলের বহু স্তরের ইফেকটে বহু পতঙ্গ ভোজী পাখিও মারা পড়েছে। এভাবে ভিন্ন ভিন্ন কারণে প্রাকৃতিক খাদ্য চক্রে ছেদ পড়েছে।

২। ঢাকার লেইক গুলো বিচ্ছিন্ন, জলপ্রবাহ নেই। সুয়ারেজ ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল বর্জ্য মিলে লেইকের পানি আবর্জনা তুল্য, দুর্ঘন্ধময়। অপ্রবাহমান স্থীর ময়লা পানি মশক প্রজননের জন্য অতি উপযুক্ত!

৩। লেইকের নোংরা ও বিষাক্ত পানিতে মাছ নেই, ফলে মশার ডিম খাওয়ার কেউ নেই, না ব্যাঙ, না মাছ!

৪। ঢাকার এখনও অদখলকৃত খাল ও পুকুর গুলো ময়লার ভাগাড়, মশক প্রজননের জন্য অতি উপযুক্ত!

৫। এখনও উন্মুক্ত পদ্ধতিতে ময়লা সংগ্রহ করা হয়, ডাম্পিং উন্মুক্ত যা মশক প্রজননের জন্য অতি উপযুক্ত!

৬। বাড়ি গুলোর তিন দিক উচ্চ ওয়ালে বেষ্টিত, মাঝের ফাঁকে সুয়ারেজের লাইন, স্যাঁতসেঁতে। অল্প কিছু ব্যাতিক্রম ছাড়া দুই বাড়ির দেয়াল বেষ্টিত এই ফাঁকা স্থান আবর্জনার স্তূপে ঢাকা থাকে। মশক প্রজননের জন্য অতি উপযুক্ত!

৭। রাজধানীর রাস্তার ড্রেন যেখানে সেখানে ভাঙা ও উন্মুক্ত। সেখানে ময়লা জমে তৈরি হয় নিয়মিত জলাবদ্ধতা যা মশার প্রজনন ক্ষেত্র!

৮। নাগরিক সুযোগ পেলেই চিপা চাপা থেকে শুরু করে যেখানে সেখানে সে কোন ধরণের ময়লা ফেলে। আমাদের দরিদ্র মানসিকতারই যথাযথ আফটার ম্যাথে মশারা দলে দলে পথেঘাটে ডিম ছড়াবার সুযোগ পায়।


সুতরাং দুটি সিটি কর্পোরেশন, ১০টি মশক নিধন অঞ্চল, প্রায় ৬শ মশা মারা কেরানী,হস্তচালিত ও স্বয়ংক্রিয় মিলে ১৫৯৩ টি মশক নিধন মেশিন (উল্লেখ্য, এর অর্ধেকই নষ্ট!) এবং প্রায় ৪৫ কোটি টাকার বাৎসরিক মশক নিধন বাজেট, সব মিলেও কেন কাজ হচ্ছে না। (সংখ্যা সোর্স, বাংলা ট্রিবিউন, লিংকে)।

ইজ ইট এ সারপ্রাইজ! নট এট অল!!!

এত মশা আগে কেউ কখনও দেখেনি! বাচ্চাদের পড়া শুনা, ঘুমানো থেকে শুরু করে ঘরে বাইরের সব কিছু যন্ত্রণাময় হয়ে উঠেছে! ডেঙ্গু, চিকুঙ্গুনিয়া সহ মশা বাহিত রোগে নগরজীবন বিপর্যস্ত!

এমতাবস্থায়-
১। অতি বৃষ্টিই মশার ডিম দূর কারার একমাত্র আশির্বাদ! তথাপি রাজধানীর এলাকা গুলোর প্রায় স্থায়ী জলাবদ্ধা, ড্রেন বদ্ধতা, বৃষ্টির পরের দীর্ঘ জলাবদ্ধতা, নির্মাণের ধীরতায় তৈরি গর্ত কেন্দিক জলাবদ্ধতা, ময়লার ডাম্পিং এগুলা অভিশাপ হয়ে আছে।

২। ঢাকার লেইক গুলো কানেকট করে লেইকের পানিতে মধ্যমানের কৃত্তিম স্রোত তৈরির সুযোগ আছে। (এরকম একটা মডেল নিয়ে আমি কিছু প্রাথমিক কাজ করেছি)। এতে করে আন্তঃ সংযুক্ত লেইকের স্থানে স্থানে ঘন মিহি জালের ফিল্টার দিয়ে মশক ও ডিম নষ্ট করা যাবে। এর বাইরে, রাজধানীর ভূমিতে পানির ফিল্টারিং বাড়াতেও জলাধার বাড়ানো এবং লেইক গুলো কানেক্ট করা দরকার।

৩। রাজধানীর বাড়ি গুলোর মডেল পরিবর্তন করে এমন করা যায় যেখানে নিচ তলা বাধ্যতামূলক ভাবে উন্মুক্ত থাকবে। একটি ব্লকের সব গুলো বাড়ির নিচতলা প্রাচীর হীন হবে, একটি বিশাল উন্মুক্ত পার্কিং, বাচ্চাদের খেলার যায়গা হিসেবে আবির্ভুত হবে। এর মাটির নিচে পানির ট্যাংক ও সুয়ারেইজ ট্যাংকের পাশাপাশি বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ স্টোরেইজ কিংবা সুয়ারেজ পানি রিসাইকেলের প্ল্যান্ট করা যাবে। ভবিষ্যতে নগরকে বাসযোগ্য করতে এগুলা লাগবে। বর্তমানে, শুধু দেয়ালের কারণে মশার ঔষধ সব যায়গায় পৌঁছে না। আর দেয়াল গুলোর মাঝের যায়গা মশক প্রজনন কেন্দ্র।

৪। মশা নিধনের জন্য যে স্প্রে করা হয়, তা জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতির, এমনকি কয়েলেও ক্ষতি। বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের এবং কেমিক্যাল এক্সপার্টদের উন্নত বিকল্প নিয়ে আসা দরকার।

৫। বর্জ্য ও ড্রেনেইজ (বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে আমার একটা সিরিজ আলোচনা বণিক বার্তা ছাপিয়েছে) এবং ময়লা স্থির পানির লেইক ব্যবস্থাপনা উন্নত না হলে, আশু কোন সমাধান নাই!


(ঢাকার রাস্তায় মশক প্রজনন ক্ষেত্রের ছবি, গার্ডিয়ান)

মন্তব্য ১৬ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (১৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই মে, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৩০

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: ছোট বেলায় আমাদেরএলাকায় রাতে অনেক মানুষ ব্যাংক ধরে নিয়ে যেত।

০৮ ই মে, ২০১৮ দুপুর ১:৪৮

এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: হ্যা আমার বেশ মজা লাগত। অথচ এটা একটা অপরিকল্পিত নন টেকসই কাজ ছিল। ব্যাঙ বাণিজ্যিক ভাবে চাষ করে বিক্রি করলে সমস্যা ছিল না, সেটা করলেই ভাল হত। তা না করে প্রাকৃতিক ভাবে বেঁচে থাকা ব্যাঙ নাই করা হয়েছে।

২| ০৭ ই মে, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৩২

আল আমিন সেতু বলেছেন: গোটা ঢাকায় যেন মশক প্রজননের প্রিয়ভূমি। মাঝেমাঝে ভাবি আমরা কি ঢাকায় থাকি নাকি মশারা বসবাস করে আর তাদের দয়ায় আমরা ও বসবাস করি।

০৮ ই মে, ২০১৮ দুপুর ১:৫১

এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: গোটা ঢাকায় যেন মশক প্রজননের প্রিয়ভূমি।

তারা আর দয়া করে কই, লোকে তো চিকুন গুনিয়া আর ডেঙ্গুতে ভুগছে। চিন্তা করুণ কিভাবে স্বাস্থ্য ব্যয় বাড়ছে।

৩| ০৭ ই মে, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৪২

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: হায় যাদের ভাবার কথা তারা যদি এমন ভাবতে পারতো!!!

এক অন্ধকার সময়ের হাতছানি চারপাশে!
মাঝে মাঝৈ আপনার পোস্ট গুলো বাতিঘরের মতো স্বপ্নের মরিচিকা আলো জ্বালায় :(

তবুও স্বপ্নেরা বেঁচে থাক। কোন একদিন সত্যি হবে বলে।

+++++++

০৮ ই মে, ২০১৮ দুপুর ১:৫২

এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: তবুও স্বপ্নেরা বেঁচে থাক। কোন একদিন সত্যি হবে বলে।

৪| ০৭ ই মে, ২০১৮ রাত ৮:১৩

শাহ আজিজ বলেছেন: রাষ্ট্রব্যাবস্থা আমাদের বাধ্য করেছে ঢাকায় বসবাস করতে । প্রথম কারন পেশাভিত্তিক আয়, বাচ্চাদের উচ্চ শ্রেনিতে পড়াশুনায় বাড়তি সাপোর্ট বিশেষ করে ইংলিশ মিডিয়ামে । এভাবেই লক্ষ মানুষ ঢাকায় এসে গেছে কারন এখানে ব্যাবসা ভালো হয়, কিছু একটা করার উপায় আছে। জেলা শহর নিয়ে সরকারের কোন মাথা ব্যাথা নেই , আছে ভোটের সময় । বিকেন্দ্রিকরনে সরকারের কাপুনি দিয়ে জ্বর ওঠে কারন তাতে ক্ষমতা হাতে থাকে না। আর এভাবেই ঢাকা সংকুচিত হয়েছে বাছ বিচারহিন দালান নির্মাণে। কেউ জায়গা ছাড়েনি এতটুকু , আপনি বলছেন নিচতলা খালি রাখতে? ওটা ভরেছে মিনি ফ্লাটে । ৬০ টাকা বাঁচানো আর সাহেবের অনিহা ময়লার বালতি টেনে নিচে নামাতে তাই পস এরিয়াতেও দেখবেন দুই দালানের মাঝে রান্নাঘরের ছাইপাশ দিয়ে ভরা। ওখানে মশার নিরাপদ বিচরন ভুমি । যাবেন কোথায় এইসব বস্তির লোকেদের আনন্দ নিভিয়ে। এরাই আরবে ড্রেন সাফ করে , বাড়ির ময়লা দূরে বক্সে ফেলে আসে। আইন মেনে চলার সংস্কৃতি চর্চা করলে আমরাও প্রথম বিশ্বের কাতারে যেতে পারি । আপনার উপরের আলাপ আমরা নিত্যদিন চর্চা করি কিন্তু আমরা উপায়হীন একদল ধাঙ্গড়ের হাতে ব্যাবস্থাপনা সপে দিয়ে। এরা মানুষের বাচ্চা নয়।

০৮ ই মে, ২০১৮ দুপুর ২:১০

এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: ক্ষমতার নগর বিকেন্দ্রীকরণ

১। অথরেটেরিয়ান শাসনের এক দালানে কেন্দ্রীভূত ক্ষমতার বলয় কেন্দ্রীভূত নগরায়ন পছন্দ করে। এতে দু একটা নগর নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলেই ক্ষমতা নিশ্চিত রাখা যায়। বাকি নগর স্রেফ গ্রামের আধুনিক এক্সটেনশন! এর অন্য কারণ হল, দেশের সমূদয় প্রশাসনিক কার্যক্রম মূলত ঢাকায় কেন্দ্রীভূত করা ঘুষ ও লুট নিয়ন্ত্রণ ও বরাদ্দ করণ সহজ করে, তদবির, টেন্ডারবাজি ও নিয়োগ বাণিজ্য ওয়ান স্টপ করে। ফলে কেন্দ্রীভূত ক্ষমতায়ন আদতে একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, এতে এককেন্দ্রিক ক্ষমতার কাঠামোয় কেন্দ্রিভুত সহজ লুট ও স্বৈরাচারী শাসন সুনিশ্চিত করা হয়েছে। হ্যাঁ সব গুলো সরকারই তাই করেছে। এতে একে দোষ দিয়ে অন্যকে হিরো বানানোর সুযোগ নেই।

২। সরকারি ও বাণিজ্যিক ব্যাংক, বীমা, মোবাইল কোম্পানি, রেডিও, টিভি স্টেশন, হাসপাতাল, চেইন শপ, পত্রিকা, স্কুল ইত্যাদি যেসব যেসব ক্ষেত্রে সরকারি লাইসেন্স, ছাড়পত্র কিংবা অনুমোদনের প্রয়োজন সেখানে সহজ ভাবেই বিকেন্দ্রীকরণ এডমিনিস্ট্রেশন করা যায়। লাইসেন্সের শর্ত হিসেবেই দৈব চয়নে কোম্পানিকে ৬ টি বড় শহর থেকে (ঢাকা চট্রগ্রাম সিলেট খুলনা রাজশাহী ও বরিশাল) অপারেইট করার শর্ত দেয়া যায়। শুধু দরকার ৩ টি জিনিস-
ক। সেখানে উন্নত আবাসনের ফেসিলিটি তৈরি যা টুক টাক আছে। খুব দরকার সেখানে সিকিউরিটি এন্সিইউর করা।

খ। উন্নত স্কুল করা, এটা সরকারি বেসরকারি উভয় উপায়েই করা সম্ভব। ইংলিশ স্কুল গুলোকে শর্ত দেয়া যায় তাদের প্রতিটাকে অন্তত তিনটা সিটি থেকে অপারেইট করতে হবে। পাশাপাশি ক্যাডেট কলেজের আদলে সরকারই স্কুল করতে পারে। আর বিশ্ববিদ্যালয় এমনিতেই আছে বিভাগীয় শহরে। ব্যবসা ও কর্ম সংস্থান গেলে সেখানে উচ্চ মান শিক্ষকও যাবেন, বরং বিদেশে পিএইচডি করা গণ সেগুলোকে প্রেফার করবেন শুধু পরিবেশের কারণে।

গ। উন্নত হাস্পাতাল, এটাও সরকারি বেসরকারি উভয় মডেলেই সম্ভব। স্কয়ার, ল্যাব এইড, এপোলো এদেরকে শর্ত দিতে হবে অন্তত ৩টা মেগা সিটি থেকে অপারেইট করতে হবে, হ্যাঁ পুরোপুরি স্থায়ী ভাবে।

৪। ঢাকায় যেসব সরকারি অফিসের ফিজিক্যাল ফাংশন নেই (নৌ বাহিনী, আনসার ভিডিপি, বন বিভাগ, নৌ পরিবহণ, গ্রাম উন্নয়ন, পোর্ট ব্যবস্থাপনা, গ্রামীণ ব্যাংক ইত্যাদি ইত্যাদির মত সব) তাদের হেড অফিস সহ সকল লিয়াজো অফিস ঢাকা থেকে সরাতে হবে। অন্তঃ মন্ত্রণালয় যোগাযোগ আউটলুকের আদলে সিকিউরড মেইংলিং ব্যবস্থায় করতে হবে, চিঠি চালাচালি উঠিয়ে চিঠিকে ডিজিটাল ট্রান্সফর্মেশনে আনতে হবে, এঙ্ক্রিপ্টেড সিকিউরড ডক ফর্মেটে স্টোরেইজ করতে হবে। কোটি কোটি চিঠির কাগজে দেশের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে, কাগজ আমদানীতে বৈদেশিক মূদ্রা নষ্ট হচ্ছে, অন্যদিকে কাগজের রিসাইকেলে উৎসাহ নেই।

৫। সরকারি অফিসের কাজে লাইভ কনফারেন্স সিস্টেম কাজে লাগিয়ে আন্তঃ মন্ত্রণালয় ফিজিক্যাল মিটিং, রাস্তার জ্যাম, গাড়ির তেল, ওয়ার্ক হাওয়ার ওয়েস্টেইজ কমাতে হবে।

৬। আঞ্চলিক প্রশাসন স্থানীয় সরকারকে ক্ষমতা দান করতে হবে। সাংসদদের স্থানীয় সরকারের ক্ষমতায় নাক গলানো শতভাগ উঠিয়ে দিতে হবে। (এটা আপাতত হচ্ছে না, আর এটা টেকসই করতে ২ স্তরের সংসদ এবং ভোটের % কেন্দ্রিক জন প্রতিনিধিত্বশীল নির্বাচনী ব্যবস্থা গড়তে হবে)। এটা ছাড়াও কিছু ইম্প্রুভমেন্ট আনা যায়। সাংসদদের সমূদয় কাজকে সংসদ ও আইন প্রণয়ন এবং দলীয় ইশ্তেহার ভিত্তিক করতে হবে। এরজন্য রাজনৈতিক দুর্বিত্তপণার বিপরীতে সততা দরকার, যা কিনা এই দেশে মারা পড়েছে।

৭। শুধু সচিব ছাড়া বাদ বাকি সরকারি চাকুরেদের গাড়ী দেয়া বন্ধ করে গণপরিবহন ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা লাগবে।

৮। নগরীর প্রধান বাহন মেট্রো করা লাগবে, তার পরে বাস। মেট্রো করতে দেরি হলে শুধু বাংলাদেশ রেলের লোকাল ট্রেন গুলোকে ঢাকায় সার্কুলার পথ তৈরি করে ঘুরান। যে কোন ভাবেই প্রাইভেট গাড়ি চলাচলে উচ্চ নিয়ন্ত্রণ আরোপ করতে হবে , তবে তা উচ্চমান গণপরিবহন করার পরেই শুধু বোইধতা পাবে হবে। অন্যথায় বিজনেস ও কর্মসংস্থান ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

এই ক্ষত বিক্ষত নগরীকে এখনও কিছুটা হলেও ইম্প্রুভ করার সুযোগ আছে। চাইলে এখনও নাগরিক জীবনের মান বাঁচানো যায়


অফ টপিক-
আপনি কি ভূমিকম্প নিয়ে কাজ করছেন? প্লিজ প্লিজ প্লিজ "ভূমিকম্প প্রস্তুতির​ কারিগরি​ ও প্রশাসনিক দিক সমূহ!​" নামের আমার এই লিখা দেখবেন, মতামত জানাবেন।
ভূমিকম্প প্রস্তুতির​ কারিগরি​ ও প্রশাসনিক দিক সমূহ!​

০৮ ই মে, ২০১৮ দুপুর ২:১১

এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: ভাইয়া, সুচিন্তিত মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ। আপনার সাথে সহমত। আর আমার ব্লগে আসার জন্যও অনেক ধন্যবাদ।

৫| ০৭ ই মে, ২০১৮ রাত ৮:১৮

সমুদ্রচারী বলেছেন: সিটি কর্পোরেশন মশা নিধনের নামে যা করে তা আইওয়াশ ছাড়া আর কিছু না


৬| ০৭ ই মে, ২০১৮ রাত ৮:২৭

আহমেদ জী এস বলেছেন: এক নিরুদ্দেশ পথিক,




এগুলো কোনও সারপ্রাইজ নয় , এ সব আমাদের নিয়তি ।

সহব্লগার শাহ আজিজ এর মন্তব্য আমাদের দরিদ্র মানসিকতারই যথাযথ ছবি । এই দরিদ্র মানসিকতা মশার মতোই পথেঘাটে ডিম ছড়ায় ।


০৮ ই মে, ২০১৮ দুপুর ১:১৪

এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: নাগরিক সুযোগ পেলেই চিপা চাপা থেকে শুরু করে যেখানে সেখানে সে কোন ধরণের ময়লা ফেলে। আমাদের দরিদ্র মানসিকতারই যথাযথ আফটার ম্যাথে মশারা দলে দলে পথেঘাটে ডিম ছড়াবার সুযোগ পায়।

৭| ০৭ ই মে, ২০১৮ রাত ১০:০৬

করুণাধারা বলেছেন: বরাবরের মতই, আপনার দিকনির্দেশনামূলক সুলিখিত পোস্ট।

আপনি যেভাবে ভেবেছেন এর দশভাগের একভাগও ভাবতে পারার ক্ষমতাসম্পন্ন কোনো মানুষ যদি সিটি করপোরেশনে থাকতেন, তাহলে হয়তো মশার সমস্যা থেকে আমরা অনেকটাই মুক্তি পেতাম; কিংবা আপনার লেখাটা যদি তাদের চোখে পড়তো!!

আসলেই, লেকগুলোকে কানেক্ট করতে পারলে পানিতে একটা গতি আসত, পানি আর বদ্ধ থাকতো না মশার বিচরণ ক্ষেত্র হিসেবে। আশাকরি আপনার মডেলটা কার্যকর হবে।

আমার ছোটবেলায় দেখতাম ছুটির দিনে ধানমন্ডি লেকে বহু মানুষ মাছ ধরছেন। আজকাল আর সেটা দেখি না, এর কারণ যে সব মাছের মরে যাওয়া এ কথাটি কখনও মনে হয়নি। আপনি সহজে খাদ্যচক্র বুঝিয়েছেন, ভালো লাগলো।

ভালো থাকুন সবসময়, আর এমন পোস্ট লিখে চলুন।

০৮ ই মে, ২০১৮ দুপুর ১:৫২

এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ, পড়ার আর মন্তব্যের জন্য।

৮| ০৮ ই মে, ২০১৮ সকাল ১০:৫৫

রাজীব নুর বলেছেন: ভালো পোষ্ট।

প্রথম ছবিটা দারুন হয়েছে।

০৮ ই মে, ২০১৮ দুপুর ১:৫৩

এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ রাজীব ভাই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.