নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব,ইইই প্রকৌশলী। মতিঝিল আইডিয়াল, ঢাকা কলেজ, বুয়েট এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র।টেলিকমিউনিকেশন এক্সপার্ট। Sustainable development activist, writer of technology and infrastructural aspects of socio economy.

এক নিরুদ্দেশ পথিক

সমাজের প্রতিটি ছোট বড় সমস্যার প্রকৃতি নির্ধারণ করা, আমাদের আচার ব্যবহার, সমাজের প্রচলিত কৃষ্টি কালচার, সৃষ্টিশীলতা, চারিত্রিক উদারতা এবং বক্রতা, অপরাধ প্রবৃত্তি, অপরাধ সঙ্ঘঠনের ধাঁচ ইত্যাদির স্থানীয় জ্ঞানের আলোকে সমাজের সমস্যার সমাধান বাতলে দেয়াই অগ্রসর নাগরিকের দায়িত্ব। বাংলাদেশে দুর্নীতি রোধ, প্রাতিষ্ঠানিক শুদ্ধিকরন এবং টেকনোলজির কার্যকরীতার সাথে স্থানীয় অপরাধের জ্ঞান কে সমন্বয় ঘটিয়ে দেশের ছোট বড় সমস্যা সমাধান এর জন্য লিখা লিখি করি। আমার নির্দিষ্ট দৃষ্টিভঙ্গি আছে কিন্তু দলীয় সীমাবদ্ধতা নেই বলেই মনে করি, চোর কে চোর বলার সৎ সাহস আমার আছে বলেই বিশ্বাস করি। রাষ্ট্রের অনৈতিক কাঠামোকে এবং দুর্নীতিবাজদের সবাইকে তীক্ষ্ণ ভাবে চ্যালেঞ্জ করার চেষ্টা করি। রাষ্ট্র কে চ্যালেঞ্জ করতে চাই প্রতিটি অক্ষমতার আর অজ্ঞতার জন্য, তবে আঘাত নয়। ব্যক্তিগত ভাবে নাগরিকের জীবনমান উন্নয়ন কে দেশের ঐক্যের ভিত্তিমূল মনে করি। ডাটাবেইজ এবং টেকনোলজি বেইজড পলিসি দিয়ে সমস্যা সমাধানের প্রোপজাল দেবার চেষ্টা করি। আমি মূলত সাস্টেইন এবল ডেভেলপমেন্ট (টেকসই উন্নয়ন) এর নিরিখে- অবকাঠামো উন্নয়ন এবং ডিজাইন ত্রুটি, কৃষি শিক্ষা খাতে কারিগরি ব্যবস্থাপনা ভিত্তিক সংস্কার, জলবায়ু পরিবর্তন, মাইক্রো ইকনমিক ব্যাপার গুলো, ফিনান্সিয়াল মাইগ্রেশন এইসব ক্রিটিক্যাল ব্যাপার নিয়ে লিখার চেষ্টা করি। মাঝে মাঝে চোরকে চোর বলার জন্য দুর্নিতি নিয়ে লিখি। পেশাঃ প্রকৌশলী, টেকনিক্যাল আর্কিটেক্ট, ভোডাফোন।

এক নিরুদ্দেশ পথিক › বিস্তারিত পোস্টঃ

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের বাস্তব কাজ ও কল্পনাবিলাস

১৬ ই মে, ২০১৮ বিকাল ৪:০৮

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ নিয়ে সরকারি মহল থেকে পর্যাপ্ত তথ্য প্রদান এবং সেসব তথ্য যাচাই-বাছাইয়ের উপযুক্ত পরিসর না থাকায় এ বিষয়ে অনেক বিতর্ক হয়েছে। বিভ্রান্তিও হয়েছে। বিশেষ করে প্রথম বাংলাদেশি কৃত্রিম উপগ্রহ বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১-এর (বিএস-১) কাজ নিয়ে কিছু বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। ভিন্ন ভিন্ন স্যাটেলাইটের ভিন্ন ভিন্ন কাজ সম্পর্কে ধারণা না থাকায় অনেক বিএস-১ দিয়ে সব ধরনের স্যাটেলাইটের কাজ করাতে চেয়েছেন। যোগাযোগের কাজের জন্য বানানো স্যাটেলাইট শুধু যোগাযোগের কাজই করবে। আবহাওয়া পূর্বাভাস, ভূতাত্ত্বিক জরিপ, ছবি তোলা, মানচিত্র তৈরি, জলবায়ু পরিবর্তনের সমীক্ষা ইত্যাকার কাজগুলো ভিন্ন ভিন্ন স্যাটেলাইট দিয়ে করানো হয়। এই পরিপ্রেক্ষিতে কারিগরি দিক থেকে বিএস-১ সক্ষমতার দিকগুলো নিয়ে আলোচনার প্রয়াস পাচ্ছি।

বিএস-১-এর রাজস্ব আয়ের সম্ভাবনাকে সামনে রেখে হওয়া আলোচনাগুলোয় ট্রান্সপন্ডার বিক্রির ব্যাপারটির বহুল ব্যবহার লক্ষণীয়। প্রথমেই ট্রান্সপন্ডার সম্পর্কে খানিকটা জেনে নিই।

যোগাযোগে ট্রান্সিভার, রিপিটার ও ট্রান্সপন্ডার
ট্রান্সপন্ডার (ট্রান্সমিটার-রিস্পন্ডার) কোনো উৎস থেকে সংকেত গ্রহণ করে এবং তাকে অ্যাম্পলিফাই বা বিবর্ধন করে আবার এমনভাবে ফেরত পাঠায় যাতে বহুসংখ্যক গ্রাহক ওই সংকেত বা সিগন্যাল গ্রহণ করতে পারে। ট্রান্সপন্ডার অনেকটা টিভি বা রেডিওর রিলে স্টেশনের মতো, যারা একই সঙ্গে বহু চ্যানেল সম্প্রচার করে। স্যাটেলাইট কমিউনিকেশনে একটি ট্রান্সপন্ডার এক গুচ্ছ ভূ থেকে উপগ্রহে আপ লিংক তরঙ্গপথ গ্রহণ করে পৃথিবীর দিকে ডাউন লিংকে তাদের অপর আরেক গুচ্ছ ভিন্ন ফ্রিকোয়েন্সি সেট সম্প্রচার করে। কী কাজ দেওয়া হচ্ছে, তার ওপর নির্ভর করে ট্রান্সপন্ডার বিবিধ রকমের কাজ যুগপৎ করতে পারে। যেমন: লোকেশন সার্ভিস, দূরত্ব পরিমাপের মতো কাজ।

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১-এর কারিগরি বৈশিষ্ট্য
বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের কারিগরি নকশা তৈরি, প্রস্তুতকরণ, পরীক্ষা এবং কক্ষপথে উৎক্ষেপণের দায়িত্বে ছিল ‘থ্যালেস এলেনিয়া স্পেস’ কোম্পানি। এর আয়ুষ্কাল ১৫ বছর এবং মূল কাজ হলো টিভি সম্প্রচার, ভিস্যাট ও ডিটিএইচ।

বিএস-১ স্যাটেলাইটটি ২৬টি কে-ইউ ব্যান্ড এবং ১৪টি সি ব্যান্ড ট্রান্সপন্ডার সজ্জিত হয়েছে ১১৯ দশমিক ১ পূর্ব দ্রাঘিমার কক্ষপথের অবস্থান থেকে। কে-ইউ ব্যান্ডের আওতায় রয়েছে বাংলাদেশ, বঙ্গোপসাগরে তার জলসীমাসহ ভারত, নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কা, ফিলিপাইন ও ইন্দোনেশিয়া অঞ্চল। সি ব্যান্ডেরও আওতায় থাকবে এই সমুদয় অঞ্চল। উল্লেখ্য, যেহেতু বাংলাদেশ ৯০ দশমিক ৪ দ্রাঘিমাংশে অবস্থান করছে, তাই ১১৯ দশমিক ২ পূর্ব দ্রাঘিমার কক্ষপথে থাকা ভূ-স্থির উপগ্রহের (জিওস্টেশনারি স্যাটেলাইট) সবচেয়ে অনুকূল আওতায় (অপটিমাম কভারেজ) বাংলাদেশের স্থল ও জলসীমা পড়ছে না; বরং এর খুব উচ্চমান সুবিধা পাবে ইন্দো-ফিলিপিনো অঞ্চল।

থ্যালিস বলছে, ইন অরবিট টেস্ট (আইওটি) সম্পন্ন হওয়া সাপেক্ষে বিএস-১ নিম্নোক্ত প্রান্তিক সেবাগুলো দিতে পারবে:

১. ডিটিএইচ (ডিরেক্ট টু হোম)-মাল্টিপ্লেক্সড ডিজিটাল টেলিভিশন, রেডিও এবং সংশ্লিষ্ট ডেটা, যা সরাসরি খুব ছোট রেডিও অ্যানটেনাগুলোয় সরবরাহ করবে।
২. ভিডিও ডিস্ট্রিবিউশন-মাল্টিপ্লেক্সড ডিজিটাল টেলিভিশন, রেডিও এবং সংশ্লিষ্ট ডেটা, যা মধ্যমান রেডিও অ্যানটেনাগুলোয় সরবরাহ করবে।
৩. ভিস্যাট প্রাইভেট নেটওয়ার্ক-ভয়েস, ডেটা এবং ইন্টারনেট সার্ভিসযুক্ত প্রাইভেট নেটওয়ার্ক সরবরাহ করবে, যা ব্যাংক, গ্যাস স্টেশন ইত্যাদিতে মধ্যমান রেডিও অ্যানটেনার মাধ্যমে সরবরাহ করবে।
৪. ব্রডব্যান্ড-রিমোট অ্যান্ড ইউজারকে (ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান) উচ্চগতির ইন্টারনেট সুবিধা দেবে।
৫. কমিউনিকেশন ট্রাংক-ওয়াইড ব্যান্ড উচ্চ ক্ষমতার পয়েন্ট টু পয়েন্ট ডেটা সার্ভিস সরবরাহ করবে।

উল্লেখ্য, উপরিউক্ত ৪ ও ৫ নম্বর সেবার জন্য আলাদা একটি স্যাটেলাইট ফোন অপারেটর তৈরি করার প্রয়োজন পড়বে। এর ইউজার টার্মিনাল (যাকে আমরা মোবাইল বলি) ল্যাপটপ সাইজের বা তারও বড় হয়ে থাকে। বেশ কয়েকটি বৈশ্বিক কোম্পানি মাত্র তিন বা চারটি স্যাটেলাইট দিয়ে সারা পৃথিবীতে এই জরুরি সেবা দিয়ে থাকে, সাধারণত দুর্যোগপূর্ণ কিংবা প্রত্যন্ত এলাকায় যা কাজে লাগে। ভূমিকম্প, সুনামি এমনকি প্রলয়ংকরী ঝড় ও বন্যার সময়ে বৈশ্বিক ত্রাণ সংস্থাগুলোকে এসব স্যাট ফোন ব্যবহার করতে দেখা যায়। তবে যেহেতু বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট একটি জিওস্টেশনারি অরবিট স্যাটেলাইট (ব্যবহারকারী থেকে প্রায় ৩৫ হাজার ৭৮৬ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থান করে) তাই এর ভয়েস ও ডেটা কমিউনিকেশনে উল্লেখযোগ্য মাত্রায় সময়ের পার্থক্য (ল্যাটেন্সি বা ডিলে) থাকে, যা দিয়ে উচ্চ ভয়েস ও ডেটা ধারণক্ষমতার স্বাভাবিক বাণিজ্যিক টেরেস্ট্রিয়াল টেলিসেবা দেওয়া যায় না। লো আর্থ অরবিট বা লিও স্যাটেলাইটের তুলনায় এখানে ব্যান্ডউইথ বেশি থাকলেও উচ্চ ল্যাটেন্সির কারণে ৬০ থেকে ৫১২ কেবিপিএসের টেকসই সেবাদান সম্ভব। ফলে বলতে পারি, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট মূলত ডিজিটাল টিভি ব্রডকাস্টিং, রেডিও ব্রডকাস্টিং এবং ভি-স্যাট স্যাটেলাইট। অর্থাৎ বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট একটি যোগাযোগ উপগ্রহ, যা দিয়ে কিছু শর্ত পূরণ সাপেক্ষে সীমিত পরিসরে জরুরি টেলিকম সেবাও দেওয়া যাবে।

বহুবিধ কাজে ব্যবহৃত নানাবিধ কৃত্রিম উপগ্রহ
কৃত্রিম সম্প্রচার ও যোগাযোগ উপগ্রহের বাইরেও নানাবিধ স্যাটেলাইট রয়েছে, যা মহাশূন্য দর্শন (স্পেস অবজারভেশন, এস্ট্রনমি), আবহাওয়া পরিমাপ (ওয়েদার অ্যান্ড এটমোস্ফেরিক স্ট্যাডি), বিশেষ বিশেষ গবেষণা, বিশেষায়িত টেলিযোগাযোগ, নেভিগেশন, সার্চ অ্যান্ড রেস্কিউ, রিমোট সেন্সিং ইত্যাদি বিশেষ বিশেষ কাজে নিয়োজিত রয়েছে। তবে কথা হচ্ছে, এর জন্য ওই বিশেষ কৃত্রিম উপগ্রহকে বিশেষ বিশেষ হার্ডওয়্যারে সজ্জিত করা হয়। যোগাযোগ স্যাটেলাইটে যেমন থাকে ট্রান্সপন্ডার, তেমনি আবহাওয়া উপগ্রহগুলোয় পে লোড হিসাবে থাকে রেডিও মিটার (রেডিয়েশন মাপার যন্ত্র), স্কেটারোমিটার (পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে অবস্থিত বিভিন্ন গ্যাস, যেমন: কার্বন ডাই-অক্সাইড, ওজোন, নাইট্রাস অক্সাইড ইত্যাদি পরিমাপক), লাইটিং ইমেজার (বিদ্যুৎ চমকানো মনিটর করা) ইত্যাদি। এ ছাড়া গবেষণাকাজে নিয়োজিত উপগ্রহে স্পেকট্রেমিটার (তড়িৎ চুম্বকীয় তরঙ্গ স্ট্যাডি মনিটর করা), আলটিমিটার (উচ্চতা ও স্পেস ডিসট্যান্স মাপা) ইত্যাদি নামক বিভিন্ন ধরনের মনিটরিং যন্ত্র ও ক্যামেরা থাকে।

যেহেতু বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইটে শুধু ট্রান্সপন্ডার নামক যন্ত্র আছে এবং এর বাইরে ওপরে বর্ণিত অন্য কোনো যন্ত্র বা ক্যামেরা নেই, তাই এটা মূলত ডিজিটাল টিভি ব্রডকাস্টিং, রেডিও ব্রডকাস্টিং এবং একটি যোগাযোগ স্যাটেলাইট। আশা করি, এই পর্যায়ে এসে বিভ্রান্তির কিছুটা অবসান হবে এবং বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১-কে জড়িয়ে রচিত কল্পকথা ছড়ানোর অতি উৎসাহী ব্যাপারগুলো কমে আসবে।


অন্যায্য প্রত্যাশার চাপ কিংবা অতি উৎসাহী প্রচারণা!
১. বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ বাংলাদেশে ডিরেক্ট টু হোম (ডিটিএইচ) সেবায় ব্যাপক মাত্রা যোগ করবে। দেশে এখনো কেব্‌ল টিভির জয়জয়কার, এখানে স্যাটেলাইট টিভি বা ডিশ টিভির ব্যবসা ব্যাপকভাবে উন্মুক্ত হয়নি। যেহেতু কেব্‌ল টিভি শত শত কিংবা হাজার মাইলের কেব্‌ল ওয়্যার লাইন টেনে করা হয়, তাই নগরীর রাস্তার ওভার হেড কিংবা আন্ডারগ্রাউন্ড স্পেস ম্যানেজমেন্টে এটা প্রশাসনিক দিক থেকে জঞ্জালপূর্ণ, তাই কেব্‌ল সম্প্রচার বন্ধ হওয়া জরুরি।

যেহেতু বাংলাদেশ ৯০ দশমিক ৪ দ্রাঘিমাংশে অবস্থান করছে, তাই ১১৯ দশমিক ২ পূর্ব দ্রাঘিমার অর্বিটাল পজিশনে থাকা জিওস্টেশনারি স্যাটেলাইটের (ভূ-স্থির উপগ্রহ) অনুকূল আওতায় বাংলাদেশের স্থল ও জলসীমা থাকছে না। ফলে বাংলাদেশি টিভি সম্প্রচারকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিশেষভাবে বৃষ্টি, কুয়াশা এবং ঝড়-বাদলের সময়ে সম্প্রচার কোয়ালিটি পাইলট করে প্রমাণ করে দেখানোর একটা বাধ্যবাধকতা থেকে গেছে। অন্যদিকে, যেহেতু বর্তমানে টিভি স্টেশনগুলো ইতিমধ্যেই বাইরের স্যাটেলাইট সম্প্রচার কোম্পানির সঙ্গে দীর্ঘ মেয়াদে চুক্তিবদ্ধ এবং টিভিগুলোর সঞ্চালনের সমুদয় কারিগরি যন্ত্রপাতি ডিটিএইচ পদ্ধতির নয়, তাই এখনই তাদের ওপর বিএস-১-এর ওপর নির্ভরশীল হওয়ার প্রত্যাশাও অন্যায্য।

বিপরীতে যেহেতু খুব উচ্চমান কভারেজ পাওয়া যাবে ইন্দো-ফিলিপিনো টেরিটরিতে, নবগঠিত বাংলাদেশ কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেডকে (বিসিএসসিএল) ওই অঞ্চলে সম্ভাব্য গ্রাহক-ক্রেতা খুঁজতে হবে দ্রুত। অন্যান্য দেশে সাধারণ একটি যোগাযোগ উপগ্রহ উৎক্ষেপণের আগেই এই ধরনের বাণিজ্যিক বন্দোবস্ত করে রাখা হয়। আমাদের বেলায় সেটা ঘটেনি।

পাশাপাশি বিএস-১ ‘ভিস্যাট’ভিত্তিক প্রাইভেট নেটওয়ার্ক তৈরির পথ উন্মুক্ত করবে। এটা ভয়েস, ডেটা ও ইন্টারনেট সার্ভিসযুক্ত প্রাইভেট নেটওয়ার্ক তৈরির পথ উন্মুক্ত করবে, যা বাংলাদেশের ব্যাংক, গ্যাস স্টেশন, বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রি ইত্যাদিতে অনুপস্থিত। আমরা আশা করব, বিসিএসসিএল দেশে ও দেশের বাইরে ফার ইস্টার্ন ইন্দো-ফিলিপিনো জোনে রাজস্ব আয়ের ভিস্যাট-কেন্দ্রিক এই নতুন দিকও সন্ধান করে দেখবে।


২. প্রলয়ংকরী দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বিশেষ করে মর্মন্তুদ বন্যা, ঝড় বা সিডরের মতো পরিস্থিতি মোকাবিলায়, কিংবা ভূমিকম্প পরিস্থিতিতে কীভাবে ত্রাণ ও উদ্ধারকর্মীদের যোগাযোগের জন্য বিএস-১-কেন্দ্রিক স্যাটেলাইট ইউজার অ্যান্ড টার্মিনাল ফোন বা ল্যাপটপ কাজে লাগানো যায়, তা নিয়ে আলোচনা হতে পারে। যেহেতু বৈশ্বিক কোম্পানিগুলো ইতিমধ্যেই স্থাপিত বিশেষ কৃত্রিম উপগ্রহ দিয়ে এই সার্ভিস দিচ্ছে, তাই সেখান থেকে খরচ সীমিত রেখে পর্যাপ্তসংখ্যক স্যাট ফোন বা স্যাট টার্মিনাল কেনা যেতে পারে (হাইতি, ক্রাইস্ট চার্চ, সিচুয়ানে কিংবা ইতালিতে এই কোম্পানিগুলো কাজ করেছে)। অন্যদিকে, এই কাজের জন্য বাংলাদেশের বাহিনীগুলোর ওয়াকিটকি সার্ভিসও ব্যবহার করা যেতে পারে। এর বাইরে টেলিকমের ইমার্জেন্সি সার্ভিস প্রভিশনের কাজও বাকি আছে। তাই অপ্রয়োজনীয় খরচের লাগাম টেনে সাশ্রয়ী এবং টেকসই সমাধানই কাম্য।

৩. বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট দিয়ে ছবি তোলা, ইমেজ প্রসেসিং, বন্যা পরিস্থিতি পরিমাপ, পানির উচ্চতা নির্ণয়, আবহাওয়া পূর্বাভাস, দূরত্ব পরিমাপ, নদীর নাব্যতা ও গতিপথ পর্যবেক্ষণ, জলাভূমির সংকোচন-প্রসারণ, রাস্তাঘাটের নিপুণ ডিজিটাল মানচিত্র, আর্থ অবজারভেটরি কিংবা জলবায়ু পরিবর্তনসংক্রান্ত কাজগুলো করা যাবে না। এর জন্য ভিন্ন ভিন্ন বিশেষায়িত কৃত্রিম উপগ্রহ রয়েছে।


আজ ১৬ই মে ২০১৮, দৈনিক প্রথম আলো অনলাইনে প্রকাশিত।
বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের বাস্তব কাজ ও কল্পনাবিলাস

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই মে, ২০১৮ বিকাল ৪:১৮

চাঁদগাজী বলেছেন:


উহা কি সময়োপযোগী স্যাটেলাইট, নাকি হোজ্জার "রিফারবিশড" গাধা?

১৬ ই মে, ২০১৮ বিকাল ৫:৪৬

এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: দেখা যাক ইটাকে ইউজেবল করা যায় কিনা?
৭/৮ বছরে টাকা তোলার যে কথা বলা হয়েছে তাতে দৈনিক ৫০-৫৫ লক্ষ রেভেনিউ আয় করা লাগবে।

২| ১৬ ই মে, ২০১৮ বিকাল ৫:৪১

এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: পৃথিবীর সব দেশই যারা যোগাযোগ স্যাটেলাইট উড়িয়েছে প্রত্যেকেই প্রথম স্যাটেলাইট নিজের অক্ষরেখায় বা তার খুব কাছাকাছি উড়িয়েছে যাতে অপটিমাম কভারেইজ পাওয়া যায়া কেননা দুর্যোগপুর্ণ আবহাওয়া বিবেচনায় নিজ ভূখণ্ডকে কভার করা জিওষ্টেশনারী ধরণের কৃত্তিম উপগ্রহ খুবই দরকারি। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে যা হয়েছে তা হতে পারে খুবই দুর্ভাগ্য বশত অথবা হতে পারে কারিগরি দুরদর্শিতা এবং সেই সাথে সমন্বিত খুব শক্তিশালী কূটনৈতিক তৎপরতার অভাবে।

বাংলাদেশ অবস্থান করছে ৯০.৩৩৯ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমা রেখায়, সে হিসেবে বাংলাদেশ অবস্থান বা এর আশেপাশেই স্যাটেলাইট পাওয়ার কথা, তবে এটাও বিবেচনায় আনতে হবে যে, সঠিক সময়ে আমরা অর্বিটাল পজিশন বুকিং দিয়েছি কিনা। দেখা যাচ্ছে আমাদের অনেক দেরি হয়ে গেছে। দেশে যখন এক ঝাঁক স্যাটেলাইট টিভির লাইসেন্স দেয়া হচ্ছিল এবং তারা বিদেশী স্যাটেলাইটের ট্রান্সপন্ডার ভাড়ার জন্য অনুমতি নিয়েছে তখনই আসলে অর্বিটাল পজিশন বুকিং করে রাখা দরকার ছিল ভবিষ্যতের চাহিদাকে আগেই আঁচ করে। সেই দুরদর্শিতা আমরা দেখাতে পারিনি। সময়ের কাজ সময়ে না করলে এবং কারিগরি ব্যবস্থাপনা দুরদর্শিতার সাথে না করলে আমাদেরকে নানান ভাবে পিছিয়ে পড়তে হবে।

৮৮-৯১ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমা রেখায় রাশিয়ার দুটি ও ভারতেরটি সহ মোট চারটি স্যাটেলাইট রয়েছে। এখন তাই এখানে স্থান পাওয়া সম্ভব না। কিন্তু ৮৬-৮৮ ডিগ্রি খালি থাকার পরও মহাকাশ সংস্থা আইটিইউ বাংলাদেশকে স্লট দেয়নি। এই ক্ষেত্রে কারিগরি পর্যায়ের চ্যানেল তৈরি, ব্যবস্থাপনার দুরদর্শিতা এবং সেখানে খুব শক্তিশালী কূটনৈতিক তৎপরতা সমন্বিত করা দরকার ছিল।

বাংলাদেশ এরপর চেষ্টা করে ১০২ ডিগ্রিতে। সেখানে রাশিয়া, অষ্ট্রেলিয়া এবং গ্যালির ভাষ্যমতে বাংলাদেশের বন্ধু ফ্রান্সসহ বেশ কয়েকটি দেশ আপত্তি জানায়। তাদের আপত্তি ছিল বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট তাদের সম্প্রচারে বিঘ্ন ঘটাবে। দুবার ধাক্কা খেয়ে বাংলাদেশ চেষ্টা করে ৬৯ ডিগ্রিতে। বিধি বাম এখানেও একই আপত্তি নিয়ে চীন, সিঙ্গাপুর,মালেশিয়া সহ আরো কয়েকটি দেশ। জনাব জয়নাল আবেদীন নামে একজন রিসার্চার বলছেন, "হিসেব করে দেখা গেছে স্যাটেলাইটের মালিক ৪০ দেশের মধ্যে ২০ দেশ সরাসরি বাংলাদেশের ব্যাপারে আপত্তি জানিয়েছিল"। এই প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সবশেষে স্থান পায় ১১৯.১ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমা রেখায়, তাই ব্যবসায়িক দিক থেকে প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে হচ্ছে ৯০,৪ ডিগ্রির বাংলাদেশকে ১১৯.১ ডিগ্রির স্যাটেলাইট কতটা নিখুঁতভাবে কাভার করবে? এবং তা বাংলাদেশের ভিতরে দুর্যোগপুর্ণ আবহাওয়া বিবেচনায় উচ্চমান ডিটিএইচ কিংবা ভিস্যাট ব্যবসার অনুকূল কিনা? এবং আমাদের বিজনেইস কেইস সফল হবে কিনা? আমি আশা করি সম্পুর্ণ কারিগরি দৃষ্টিকোণ থেকে বিসিএসসিএল কিছু পাইলট সম্প্রচারের ব্যবস্থা করে এই ইমপ্যাক্ট এনালাইজ করবে।

৩| ১৬ ই মে, ২০১৮ বিকাল ৫:৪২

রাজীব নুর বলেছেন: আর কিছু দিন যাক। তারপর সব দিনের আলোর মতো পরিস্কার হবে।

৪| ১৬ ই মে, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:০০

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: দেখি কলাবাগান ও হাসান কালবৈশাখী কী বলেন...

৫| ১৬ ই মে, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৩৬

নায়লা রহমান বলেছেন: হুম তাদের জন্য যারা জানেন না স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১ এর কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য

৬| ১৬ ই মে, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৫৪

কলাবাগান১ বলেছেন: খাম্বা বিজ্ঞানী দের কাছে যখন বিনা পয়সায় সাবমেরিন ক্যাবল দিতে চেয়েছিল তখনও এটার উপকারিতার চেয়ে বায়বীয় অপকারিতা নিয়েও বাদ দিয়েছিল। এখন যারা রাজাকারদের গাড়ীতে পতাকা দেখতে অভ্যস্হ, তারা স্যাটেলাইটের গায়ে পতাকা দেখলেই স্যাটেলাইট কি করতে পারবে না তা নিয়ে লেগে পড়ে কিন্তু কি করতে পারবে তা নিয়ে মাথা ব্যাথা নাই। এক স্যাটেলাইটে যদি সব কাজ হয়ে যেত, ভারত ৮৮ টা স্যাটেলাইট পাঠাত না...
খাম্বা ওয়ালাদের আসল জ্বলা কোথাও সেটা সবাই বুঝে বিশেষ করে গতকাল খুলনার লোকজন বুঝিয়ে দিয়েছে.. রগ কাটার মিথ্যা গুজব ছড়ানো লোক জন আবার গর্ত থেকে বের হচ্ছে দরবেশ নাকি এটার মালিক!!!!) ..।প্রমান দিক যে দরবেশ এটার মালিক।

সমুদ্র বিজয়ের সময় ও অনেক খাম্বা ওয়ালারা নানান ব্লিশেষন করে এটা কে অসার প্রমান করতে চেয়েছিল...।বাংলাদেশের মোট আয়তন এই শেখে বেটির হাত ধরেই হয়েছে (ভারত থেকে জমি উদ্ধার) ...এখন এখানেও বলুন সেটা বাংলাদেশের লস!!!

কোন দেশ তার স্যাটেলাইট থেকে ক্যাশ কত টাকা/ডলার লাভ করে তার হিসাব টা যদি চাদে সাঈদী দেখতে পারা লোকজন বলতেন..।

১৭ ই মে, ২০১৮ বিকাল ৫:৪০

এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: একটি তথ্য ও উপাত্ত নির্ভর টেকনিক্যাল আর্টিক্যালে আপনি যে উচ্চ মান প্রতিক্রিয়া পয়দা করেছেন তার জন্য জাতি আপনার মত বিগ শট ব্লগারের নিকট কৃতজ্ঞ থাকবে।

এই বিষয়ে আপনার কারিগরি সক্ষমতা থাকলে প্লিজ, ক্যাচাল বাদ দিয়ে কনটেন্ট নিয়ে আলোচনা করে যান।

৭| ১৬ ই মে, ২০১৮ রাত ৯:০৬

করুণাধারা বলেছেন: আকাশ বিজয় সম্পর্কে কিছু অস্পষ্ট ধারণা ছিল, আপনার পোষ্টগুলো পড়ে অনেক কিছু জানতে পারছি। যদিও মনে হচ্ছে এই স্যাটলাইট ঠিক কি কাজে ব্যবহার হবে তা কিছু সময় না গেলে বোঝা যাবেনা। দেখা যাক কি হয়।

আমি অবশ্য আগেই প্রথম আলোতে পড়েছিলাম, এখানে মন্তব্য করলাম। এই পোষ্ট সামুতে আজ দুইবার এসেছে, দুইজন দিয়েছেন ।ভালো লাগলো পড়ে।

ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় তিন জন ছাত্র যদি ন্যানো স্যাটেলাইট বানাতে পারে, তাহলে আমাদের প্রযুক্তিবিদরা কেন স্যাটেলাইট নির্মাণের সময় প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হতে পারলেন না, যাতে ১৫ বছর পরের স্যাটলাইট বিদেশীদের দিয়ে না বানিয়ে তারা নিজেরাই বানাতে পারেন!!

ভালো থাকুন, এক নিরুদ্দেশ পথিক।

১৭ ই মে, ২০১৮ বিকাল ৫:৪২

এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: ন্যানো স্যাটেলাইট টিম এবং আমাদের বিজ্ঞানীদের সর্বোচ্চ সুযোগ দেয়া জরুরি। বেশ কিছু সংস্থা এই নিয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। এই টিমকে নার্চার না করলে দেখা যাবে, অন্যরা আমাদের ছেলের অর্জন নিয়ে বিরাট সাফল্য বাগিয়ে নিচ্ছে।

গুরুত্বপুর্ণ বিষয়টা তুলে ধরার জন্য আন্তরিক কৃতজ্ঞতা।

৮| ১৭ ই মে, ২০১৮ রাত ৯:২৭

সোহানী বলেছেন: চমৎকার বিশ্লেষন। অনেক কিছুই জানলাম বুঝলাম। যাহোক তারপরও মন্দের ভালো যে এমনিতেই হাজার কোটি টাকা ব্যাংক থেকে লোপাট হয় সেখানে মাত্র তিন হাজার কোটির বিনিময়ে একটা কিছুতো পেল, হোক না কোন কাজে লাগবে না। তাতে কি, কিছু লোকের কর্মসংস্থান সহ নতুন কিছুতো পেল।

আর ৬ নং মন্তব্যকারীর একটাই ডায়ালগ প্রতিটি লিখায় দেয়... ১)খাম্বা ২)রাজাকার ৩)গাড়িতে পতাকা ৪) সাইদী ৫)রগকাটা

কন্টেন্ট নিয়ে আলোচনার করার মতো জ্ঞান থাকলেতো একই প্যাচাল সব লিখায় পোস্ট করতো না ;) । সত্যিকারের রাজাকারের সংজ্ঞা কি তা আবার মতিয়া চৈাধুরির কাছ থেকে জানতে হবে।

৯| ১৭ ই মে, ২০১৮ রাত ১০:০৮

রাকু হাসান বলেছেন: বাহ্ খুব মনোযোগ দিয়ে পড়লাম । ভাল লাগলো তথ্যবহুল বিশ্লেষণধর্মী আর্টিকেল পড়ে । এমন একটা লেখা প্রত্যাশা করছিলাম বেশ কয়েক দিন ধলে । পেয়ে গেলাম । বিশেষ ধন্যবাদ আপনার প্রতি শেয়ার করার জন্য।

১০| ১৭ ই মে, ২০১৮ রাত ১১:৩২

থিওরি বলেছেন: প্রচারেই প্রসার। আমরা প্রচারে বিশ্বাসী। তাইতো এতো অপ্প্রচার। সামুর কল্যানে আসল তথ্য গুলো কিছু জানতে পারছি।

১১| ১৭ ই মে, ২০১৮ রাত ১১:৫৯

নায়লা রহমান বলেছেন: বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর কক্ষপথে পৌঁছতে নাকি ৩ দিন সময় লাগবে!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.