নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যুক্তির মাঝেই সমাধান খুঁজি।

উড়ন্ত বাসনা

জীবন কে ভালবাসি।

উড়ন্ত বাসনা › বিস্তারিত পোস্টঃ

কী ভাবে কাটাবেন পবিত্র মাহে রমজানের দিনগুলো

১৩ ই জুন, ২০১৬ সকাল ১১:০৫

শ্রেষ্ঠতম মাস রমজান মাস। রহমত,বরকত ও মাগফিরাতের পয়গাম নিয়ে এলো আবার ফিরে এ মহামহিমান্বিত মাসটি। রমজান মাসের প্রতিটি মুহূর্তকে যেন কাজে লাগানো যায়, সে প্রচেষ্টা চালানো উচিত। কেননা এ মাস আমলের মাস। ইবাদতের মাস। ইবাদাতের ফলাফলও বেশি বেশি। সওয়াবের মাত্রাও দ্বিগুণ থেকে সত্তর গুণ পর্যন্ত। এটি ইবাদতের বসন্তকাল। প্রত্যেক নবী ও তাদের উম্মতের জন্য রোজা ফরজ ছিলো, উম্মতে মুহাম্মদ সা. গণ একমাস রোজা পেয়েছেন, এটা ভাগ্যের বিষয়। মানুষের সারা বছরের নানান দোষ-ত্রুটি,চুত্যি-বিচ্যুতির ক্ষমার মাস এ রমজান। এখানে রমজানের বিশেষ কিছু আমল উল্লেখ করা হলো, মুসলীম উম্মাহর জন্য যা অতীব জরুরী।

কোরআন খতম ও তিলাওয়াত : রমজানে যেহেতু প্রতিটি ইবাদতের সওয়াব ৭০ গুণ বাড়িয়ে দেওয়া হয়, তাই এ মাসে যথাসাধ্য বেশি বেশি কোরআন তেলাওয়াত করা প্রত্যেক মুসলিমের জন্য আবশ্যক। মহানবী (সা.) বলেছেন : ‘রোজা ও কোরআন কিয়ামতের দিন মানুষের জন্য সুপারিশ করবে...।’ (আহমাদ : হাদিস ৬৬২৬)

সদকা বা দান : প্রখ্যাত সাহাবি আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস বলেন : ‘মহানবী (সা.) ছিলেন মানুষের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দানশীল। আর রমজানে তাঁর বদান্যতা আরো বেড়ে যেত।’ (মুসলিম : হাদিস ৩২০৮) । এমাসে যত বেশি দান করা হবে ততবেশি সাওয়াবের অংশীদার হওয়া যাবে। দান করতে হবে গোপণে। ডান হাতে দান করলে যাতে বাম হাত টের না পায়।

রোজাদারদের ইফতার করানো : রোজাদারকে ইফতার করালে রোজাদারের মতো রোজার সওয়াব পাওয়া যায়। মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো রোজা পালনকারীকে (রোজাদারকে) ইফতার করাবে, সে রোজা পালনকারীর অনুরূপ সওয়াব লাভ করবে। এতে রোজা পালনকারীর সওয়াব থেকে বিন্দুমাত্র হ্রাস করা হবে না।’ (আহমদ : হাদিস ২২৩০২)

তওবা ও ইস্তেগফার করা : সর্বদা তওবা করা ওয়াজিব, বিশেষ করে এ মাসে তো বটেই। এ মাসে তওবার অনুকূল অবস্থা বিরাজ করে। শয়তানকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করা হয়, জাহান্নাম থেকে মানুষকে মুক্তি দেওয়া হয়। মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি রমজান মাস পেয়েও তার পাপ ক্ষমা করাতে পারেনি, তার নাক ধুলায় ধূসরিত হোক।’ (জামেউল উসুল : হাদিস ১৪১০)

অধিক হারে নেক আমল করা : রমজান মাসে অধিক হারে নেক আমল করতে চেষ্টা করা প্রত্যেক মুসলিম নর-নারীর জন্য একান্ত আবশ্যক, বিশেষ করে রমজানের শেষ দশকে। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন : ‘যখন রমজানের শেষ দশক এসে যেত, রাসুলুল্লাহ (সা.) তখন রাত্রি জাগরণ করতেন, পরিবারবর্গকে নিদ্রা থেকে জাগিয়ে দিতেন, লুঙ্গি শক্ত ও ভালো করে বেঁধে (প্রস্তুতি গ্রহণ) নিতেন।’ (মুসলিম : হাদিস ১১৭৪)

একে অন্যকে কোরআন শোনানো : রমজান মাসে একজন অপরজনকে কোরআন শোনানো একটি উত্তম আমল। এটিকে দাওর বলা হয়। ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, জিব্রাইল (আ.) রমজানে প্রতিরাতে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতেন এবং রাসুল (সা.) তাঁকে কোরআন শোনাতেন। (বুখারি : হাদিস ১৯০২)

রোজা রাখা : ইসলামের পাঁচটি রুকনের একটি রুকন হলো রোজা। আর রমজান মাসে রোজা রাখা ফরজ। মহান আল্লাহ বলেন, ‘সুতরাং তোমাদের মধ্যে যে মাসটিতে উপস্থিত হবে, সে যেন তাতে রোজা পালন করে।’ (সুরা বাকারা : আয়াত : ১৮৫)

সেহরি খাওয়া : হাদিসে এসেছে, ‘সেহরি হলো বরকতময় খাবার। তাই কখনো সেহরি খাওয়া বাদ দিয়ো না। এক ঢোঁক পানি পান করে হলেও সেহরি খেয়ে নাও। কেননা সেহরির খাবার গ্রহণকারীকে আল্লাহ তাআলা ও তাঁর ফেরেশতারা স্মরণ করে থাকেন।’ (মুসনাদে আহমাদ : হাদিস ১১১০১)

ইফতার করা : সময় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইফতার করা বিরাট ফজিলতপূর্ণ আমল। এতে কোনো বিলম্ব না করা। কেননা হাদিসে এসেছে, ‘যে ব্যক্তি রোজা পালন করবে, সে যেন খেজুর দিয়ে ইফতার করে, খেজুর না পেলে পানি দিয়ে ইফতার করবে। কেননা পানি হলো অধিক পবিত্র।’ (সুনানে আবু দাউদ : হাদিস নম্বর ২৩৫৭)

কল্যাণকর কাজ বেশি বেশি করা : এ মাসে একটি ভালো কাজ অন্য মাসের চেয়ে অনেক বেশি উত্তম। সে জন্য যথাসম্ভব বেশি বেশি ভালো কাজ করতে হবে। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) বলেছেন : ‘এ মাসের প্রতিরাতে একজন ঘোষণাকারী এই বলে আহ্বান করতে থাকে যে হে কল্যাণের অনুসন্ধানকারী, তুমি আরো অগ্রসর হও! হে অসৎ কাজের পথিক, তোমরা অন্যায় পথে চলা বন্ধ করো। (তুমি কি জানো?) এ মাসের প্রতিরাতে আল্লাহ তাআলা কত লোককে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিয়ে থাকেন।’ (তিরমিজি : হাদিস ৬৮৪)

তাকওয়া অর্জন করা : তাকওয়া এমন একটি গুণ, যা বান্দাকে আল্লাহর ভয়ে যাবতীয় পাপ কাজ থেকে বিরত রাখে এবং তাঁর আদেশ মানতে বাধ্য করে। আর রমজান মাস তাকওয়া নামক গুণটি অর্জন করার এক বিশেষ মৌসুম। কোরআনে এসেছে, ‘হে ইমানদারগণ! তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেমন ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর, যাতে করে তোমরা এর মাধ্যমে তাকওয়া অবলম্বন করতে পারো।’ (সুরা বাকারা, আয়াত ১৮৩)

ইতিকাফ : হজরত ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন : ‘মহানবী (সা.) রমজানের শেষ দশকে ইতিকাফ করতেন।’ (মুসলিম : হাদিস ১১৭১)

ওমরাহ আদায় : রমজানে একটি ওমরা আদায় করলে অন্য মাসে ৭০টি ওমরাহ করার সওয়াব হয়। তাই এ মাসে ওমরাহ আদায় করাটাও অনেক বড় সওয়াবের কাজ। এ প্রসঙ্গে এক বর্ণনায় এসেছে, মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘রমজান মাসে ওমরাহ আদায় আমার সঙ্গে হজ আদায়ের সমতুল্য।’ (মাজমাউল কাবির : হাদিস ৭২২, জামেউল আহাদিস : হাদিস ১৪৩৭৯)

লাইলাতুল কদর তালাশ করা : রমজান মাসে এমন একটি রাত রয়েছে, যা হাজার মাসের চেয়ে উত্তম। আল কোরআনের ঘোষণা, ‘কদরের রাত হাজার মাসের চেয়েও উত্তম।’ (সুরা কদর, আয়াত ৪) রাসুল (সা.) বলেছেন : ‘যে ব্যক্তি ইমান ও সওয়াব পাওয়ার আশায় ইবাদত করবে, তাকে আগের সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে।’ (বুখারি : হাদিস ৩৫)

ফিতরা আদায় করা : এ মাসে রোজার ত্রুটিবিচ্যুতি পূরণার্থে ফিতরাহ দেওয়া আবশ্যক। ইবনে ওমর (রা.) বলেন : মহানবী (সা.) ঈদের সালাত আদায়ের আগে ফিতরাহ আদায় করার আদেশ দিয়েছেন। (বুখারি : হাদিস ১৫০৩)। সামর্থবানদের জন্য ফিতরা আদায় করা ওয়াজিব। সদ্য ভূমিষ্ট শিশুরও ফিতরা আদায় করতে হয়। পরিবারের মাথাপিছু প্রত্যেক সদস্যরই ফিতরা আছে।

যাকাত আদায় করা: প্রত্যেক সামর্থবানদের ওপর যাকাত আদায় করা ফরজ। যাকাত অস্বীকারকারী কাফের। বছরের যে কোন মুহূর্তেই যাকাত আদায় করা যায় তবে রমযানে আদায় করা বহুগুণে সওয়াব। যাকাত সম্পর্কে কুরআনে আল্লাহ্ ৮২ বারের অধিক বলেছেন। যাকাত দান বা অনুদান নয় এটি গরীবের হক। সূরা তওবায় যাকাতের বিভিন্ন খাতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই জুন, ২০১৬ দুপুর ১২:২০

প্রন্তিক বাঙ্গালী বলেছেন: রমজান মাসে এমন গুরুত্বপূর্ণ লেখার জন্য লেখক কে ধন্যবাদ। রোযা ভাঙ্গার কারন ও কুসংস্কার নিয়ে নিয়ে কিছু লেখবেন আশা করি।

২| ১৪ ই জুন, ২০১৬ দুপুর ২:১৮

উড়ন্ত বাসনা বলেছেন: অবশ্যই....।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.