নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যুক্তির মাঝেই সমাধান খুঁজি।

উড়ন্ত বাসনা

জীবন কে ভালবাসি।

উড়ন্ত বাসনা › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইসলামে কোরআন ও হাদিসের আলোকে ‍মায়ের সম্মান

১৪ ই জুন, ২০১৬ দুপুর ২:২৩

আমাদের সবার কাছে সবচেয়ে মধুর প্রিয় যে শব্দটি সেটি হল ‘মা’। সাময়িক মোহ,সাময়িক দামী বা অন্য কিছু হয়ত এ শব্দটির চেয়েও অন্য কোনো শব্দকে খানিকটা প্রিয় করে তোলে, কিন্তু খুব অচিরেই তা বড় ‘ভুল’ হিসেবে চিহ্নিত হয়। মা, মা, এবং মা। প্রিয় এবং মূল্যবান শব্দ একটিই, এবং একটিই মাত্র। শুধু প্রিয় শব্দই নয়, প্রিয় বচন -মা। প্রিয় অনুভূতি -মা। প্রিয় ব্যাক্তি –মা। প্রিয় দেখাশুনা –মা। প্রিয় রান্না -মা। প্রিয় আদর -মা। সব ‘প্রিয়’ গুলোই শুধুমাত্র মাকে কেন্দ্র করেই সব প্রিয় স্মৃতি। কারণ মা-ই পৃথিবীতে একমাত্র ব্যাক্তি যে কিনা নিঃশর্ত ভালবাসা দিয়েই যায় তার সন্তানকে কোন কিছুর বিনিময় ছাড়া, অথচ আমরাই সেই প্রিয় মা-কে সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে নিজের বিবেকের সাথে হার মেনে ভুলে যাই, যে মা আমাকে সেই ছোটো বেলা থেকে আদর যত্ন করে লেখা-পড়া শিখিয়ে মানুষের মত মানুষ হয়ে মাথা উঁচু করে সমাজের মানুষের সামনে কথা বলার সুযোগ করে দিয়েছেন সেই মা আজ কত অবহেলার পাত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে! যা মোটেও কাম্য ছিল না আমাদের প্রাণপ্রিয় “মা”। মায়ের এবং দেশের মাকে নিয়ে ইসলাম যত কথা বলেছে, অন্য কোনো ধর্ম তত কথা বলেছে কিনা জানি না। মাকে নিয়ে বলতে বলতে শেষ পর্যন্ত মাকেই জান্নাত, মাকেই জাহান্নাম বলে বসেছে ইসলাম। মাকে খুশি করলে জান্নাত, কষ্ট দিলে জাহান্নাম। এত সম্মান যে মানুষের, সে মানুষের প্রতি আমাদের কত না অবহেলা!অথচ যে বেহেশ্‌ত মায়ের পায়ের নিচে সেই বেহেশ্‌ত মাকে খুশি করা ছাড়া পাওয়া একেবারে অসম্বব।

ঘরে অসুস্থ হয়েছে, ওষুধটা পর্যন্ত এনে দিই না আমরা। বৃদ্ধা হয়েছে, বৃদ্ধাশ্রমে পাঠিয়ে দিই। অথচ এই আপন মানুষটা কী চান আমাদের কাছে? শুধু একটু আদর, স্নেহ, ভালবাসা।তাদের নাতি-নাতনিদের সাথে একটু খেলা করা এ ছাড়া আর কিছুই না। অসুস্থাবস্থায় হাসপাতালে নিতে চাইলে নিজেই যেতে চান না। কারণ সন্তানের টাকা খরচ হবে বলে। সন্তানের ওপর কোনো রকম বোঝা দিতে চান না তিনি। শুধু একটু মায়া চান। যে মায়া তিনি সারা জীবন করে এসেছেন, তার কিঞ্চিৎ তাঁকে ফেরৎ দিলেই তিনি খুশী। না, তার চাহিদা আমাদের মতো এত বড় নয়। তিনি প্রতিদান চান না, তিনি প্রাপ্য চান না, অধিকার নিয়ে কোনো কথা বলেন না তিনি। শুধু একটু মায়া চান। তাও কি আমরা দিতে পারি না ?

আল কুরআনে বলা হয়েছে:
আমি মানুষকে তাদের পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার করার জোর নির্দেশ দিয়েছি। যদি তারা তোমাকে আমার সাথে এমন কিছু শরীক করার জোর প্রচেষ্টা চালায়, যার সম্পর্কে তোমার কোন জ্ঞান নেই, তবে তাদের আনুগত্য করো না। আমারই দিকে তোমাদের প্রত্যাবর্তন। অতঃপর আমি তোমাদেরকে বলে দেব যা কিছু তোমরা করতে। (আনকাবুত:আয়াত- ৮)
আপনি বলুনঃ এস, আমি তোমাদেরকে ঐসব বিষয় পাঠ করে শুনাই, যেগুলো তোমাদের প্রতিপালক তোমাদের জন্যে হারাম করেছেন। তাএই যে, আল্লাহর সাথে কোন কিছুকে অংশীদার করো না, পিতা-মাতার সাথে সদয় ব্যবহার করো, স্বীয় সন্তানদেরকে দারিদ্রের কারণে হত্যা করো না, আমি তোমাদেরকে ও তাদেরকে আহার দেই, নির্লজ্জতার কাছেও যেয়ো না, প্রকাশ্য হোক কিংবা অপ্রকাশ্য, যাকে হত্যা করা আল্লাহ হারাম করেছেন, তাকে হত্যা করো না; কিন্তু ন্যায়ভাবে। তোমাদেরকে এ নির্দেশ দিয়েছেন, যেন তোমরা বুঝ। (আনআম: ১৫১)

পিতা-মাতা যদি তোমাকে আমার সাথে এমন বিষয়কে শরীক স্থির করতে পীড়াপীড়ি করে, যার জ্ঞান তোমার নেই; তবে তুমি তাদের কথা মানবে না এবং দুনিয়াতে তাদের সাথে সদ্ভাবে সহঅবস্থান করবে। যে আমার অভিমুখী হয়, তার পথ অনুসরণ করবে। অতঃপর তোমাদের প্রত্যাবর্তন আমারই দিকে এবং তোমরা যা করতে, আমি সে বিষয়ে তোমাদেরকে জ্ঞাত করবো। (লোকমান: ১৫)

তোমার পালনকর্তা আদেশ করেছেন যে, তাঁকে ছাড়া অন্য কারও এবাদত করো না এবং পিতা-মাতার সাথে সদ্ব-ব্যবহার কর। তাদের মধ্যে কেউ অথবা উভয়েই যদি তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হয়; তবে তাদেরকে ‘উহ’ শব্দটিও বলো না এবং তাদেরকে ধমক দিও না এবং বল তাদেরকে শিষ্ঠাচারপূর্ণ কথা। (বনী ইসরাইল: ২৩)

আর আমি মানুষকে তার পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহারের জোর নির্দেশ দিয়েছি। তার মাতা তাকে কষ্টের পর কষ্ট করে গর্ভে ধারণ করেছে। তার দুধ ছাড়ানো দু বছরে হয়। নির্দেশ দিয়েছি যে, আমার প্রতি ও তোমার পিতা-মতার প্রতি কৃতজ্ঞ হও। অবশেষে আমারই নিকট ফিরে আসতে হবে। (লোকমান: ১৪)

আমি মানুষকে তার পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহারের আদেশ দিয়েছি। তার জননী তাকে কষ্টসহকারে গর্ভে ধারণ করেছে এবং কষ্টসহকারে প্রসব করেছে। তাকে গর্ভে ধারণ করতে ও তার স্তন্য ছাড়তে লেগেছে ত্রিশ মাস। অবশেষে সে যখন শক্তি-সামর্থে, বয়সে ও চল্লিশ বছরে পৌছেছে, তখন বলতে লাগল, হে আমার পালনকর্তা, আমাকে এরূপ ভাগ্য দান কর, যাতে আমি তোমার নেয়ামতের শোকর করি, যা তুমি দান করেছ আমাকে ও আমার পিতা-মাতাকে এবং যাতে আমি তোমার পছন্দনীয় সৎকাজ করি। আমার সন্তানদেরকে সৎকর্মপরায়ণ কর, আমি তোমার প্রতি তওবা করলাম এবং আমি আজ্ঞাবহদের অন্যতম। (আল আহক্বাফ: ১৫)

আর উপাসনা কর আল্লাহর, শরীক করো না তাঁর সাথে অপর কাউকে। পিতা-মাতার সাথে সৎ ও সদয় ব্যবহার কর এবং নিকটাত্নীয়, এতীম-মিসকীন, প্রতিবেশী, অসহায় মুসাফির এবং নিজের দাস-দাসীর প্রতিও। নিশ্চয়ই আল্লাহ পছন্দ করেন না দাম্ভিক-গর্বিতজনকে। (আননিসা :৩৬)

হাদীস (সিহাহ সিত্তাহ) :

এক ব্যক্তি নবীজীর স. কাছে এসে বলল, সদ্ব্যবহার পাওয়ার অধিকার বেশি কোন মানুষের? তিনি বললেন, তোমার মা। লোকটা বলল, এরপর কে? তিনি বললেন, এরপরও তোমার মা। লোকটা বলল, এরপর কে? তিনি বললেন, এরপরও তোমার মা। লোকটা বলল, এরপর কে? তিনি বললেন, এরপর তোমার বাবা। -বুখারী, মুসলিম, তিরমিযী।
এক ব্যক্তি নবীজীর স. কাছে এসে জিহাদের জন্য অনুমতি চাইল। নবীজী স. বললেন, তোমার পিতা-মাতা ‌জীবীত নাকি? লোকটা বলল,হ্যাঁ। তিনি বললেন, তাহলে তাদের জন্যই পরিশ্রম করো (এতেই তুমি জিহাদের সওয়াব পাবে)। -বুখারী, মুসলিম।

এক ব্যক্তি নবীজীর স. কাছে এসে বলল, আমি আল্লাহর কাছে সওয়াবের আশায় আপনার হাতে হিজরত ও জিহাদের ব্যাপারে শপথ করছি। নবীজী স. বললেন, তোমার পিতা-মাতার কোনো একজন ‌জীবীত নাকি? লোকটা বলল,হ্যাঁ, বরং উভয়ই। তিনি বললেন, তুমি তো আল্লাহর কাছে সওয়াব আশা করো। লোকটা বলল, হ্যাঁ। তিনি বললেন, তাহলে তোমার পিতা-মাতার কাছে ফিরে যাও এবং তাদের সাথে সদ্ব্যবহার করো। – মুসলিম।

একদা নবীজী স. বললেন, ধ্বংস হোক। ধ্বংস হোক। পুনরায় ধ্বংস হোক। বলা হলো, ইয়া রাসূলাল্লাহ! কার কথা বলছেন? তিনি বললেন, যে তার পিতা-মাতা উভয়কে বা কোনো একজনকে বৃদ্ধাবস্থায় পেয়েছে, অথচ এরপরও সে (তাদের খিদমত করে) জান্নাতে যেতে পারে নি। -মুসলিম।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই জুন, ২০১৬ বিকাল ৩:২১

আব্দুল্লাহ তুহিন বলেছেন: মাকে নিয়ে অসাধারণ একটি পোস্ট!
ধন্যবাদ ভাইয়ু.....

২| ১৪ ই জুন, ২০১৬ বিকাল ৩:৪২

বিপরীত বাক বলেছেন: ভুল্
ছেলেদের জন্যে শাশুড়ী।
মেয়েদের জন্যে মা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.