নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যুক্তির মাঝেই সমাধান খুঁজি।

উড়ন্ত বাসনা

জীবন কে ভালবাসি।

উড়ন্ত বাসনা › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ ও সরকারের সাঁড়াশি অভিযান এবং এর যথার্থতা

২৬ শে জুন, ২০১৬ রাত ৮:১২

বাংলাদেশের জঙ্গিগোষ্ঠীর রয়েছে বিভিন্ন রূপ। আইএস আছে কী নাই সেটা নিয়েও নানান প্রশ্ন, সরকারও এ নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দে আছে। জঙ্গিদের প্রাথমিক উত্থান আনুমানিক ভাবে নব্বইয়ের দশকে হয়েছে বলে আমরা জানি। নব্বইয়ের দশকে দেশের বিভিন্ন উপশহর ও কিছু শহরের অলি-গলির দেয়ালে একটি স্লোগান দৃশ্যমান ছিল। তাতে লেখা হতো ‘আমরা হব তালেবান বাংলা হবে আফগান।’ তখন প্রেক্ষাপট কিছুটা ভিন্ন ছিলো। রমণা বটমূলে উদিচী সাংস্কৃতিক মঞ্চে বোমা হামলা দিয়ে শুরু হয় জঙ্গিদের পথচলা। ২০০০ সালের পর এ পর্যন্ত কোন শ্লোগান বা কোন ধরনের বক্তব্য দেয়ালে লেখা দেখা যায়নি। তবে বিভিন্ন নামের জঙ্গিগোষ্ঠীর কর্মকাণ্ড দৃশ্যমান। এ বিষয়ে কোনো মৃত্যু বা সহিংস আক্রমণের পরেই আমরা তা জানতে পারি। তবে সব গুপ্তহত্যার পেছনে জঙ্গিগোষ্ঠী দায়ী কিনা এ বিষয়ে নিশ্চিত নয়। ২০০২-০৩ সালে জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি)-এর নেতা ‘বাংলা ভাই’ সংবাদমাধ্যমে একটি বহুল আলোচিত বিষয় ছিলো। তৎকালীন জোট সরকার এদের নির্মূলে সমর্থ হয়। এরপর জঙ্গি তৎপরতা বন্ধ ছিলো।

জুনের প্রথম সপ্তাহের শেষ দিন একটি জাতীয় পত্রিকার প্রকাশিত প্রধান খবর ছিল স্থানীয় সন্ত্রাসী গ্রুপের নীরবে সংখ্যা বৃদ্ধি হচ্ছে। সম্প্রতি পুলিশ কর্মকর্তারা একই সুরে কথা বলছেন। তবে প্রশাসন সন্ত্রাস নিধনে ব্যর্থ? দেশের জঙ্গিদের কর্মতৎপরতা দৃশ্যমান নয়, সব হত্যাকান্ডই জঙ্গি সম্পৃক্ততাও নয়। জুনের প্রকাশিত খবরে জানা যায়, ১৮ মাসে এসব সংগঠন দ্বারা ৪৭ জন ব্যক্তি প্রাণ হারিয়েছে। ২০০৪ সালের পর কিছু দিন অন্যান্য জঙ্গি সংস্থার নামও সময় সময় মিডিয়ায় প্রকাশ করা হয়। এদের বিভিন্ন নাম ছিল জামা’আতুল মুজাহিদীন, হরকাতুল জিহাদ ইত্যাদি। এদের কিছু বড় ধরনের নেতা গ্রেপ্তার হওয়ার পর এখন নতুন নামের তথ্য পাওয়া যায়। বর্তমানে সর্বাধিক আলোচিত নাম আইএস, যার কার্যকলাপ মধ্যপ্রাচ্যের কিছু দেশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ বলে আন্তর্জাতিকভাবে শোনা যায়। তবে বাংলাদেশে এর কোন সংগঠন কর্মতৎপরাতায় জড়িত আছে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ আছে।

আইএস বাংলাদেশে আছে কী নেই সে বিতর্ক সরকার দলের মাঝেই। একটি পক্ষ জোর গলায় আছে বলে জানান দিচ্ছে অপর পক্ষ নেই বলে জানাচ্ছে। বিভিন্ন জঙ্গিগোষ্ঠীর অস্তিত্বের কোন ডিকলার নেই। গুপ্তহত্যা কেবল জঙ্গি আছে তা প্রমান করেনা। জঙ্গিদের আচরণের বৈশিষ্ট্যে এ গুপ্তহত্যা নেই বলে আমরা অনান্য দেশে দেখি। গুপ্তহত্যা নেপথ্যে যারা কাজ করে তারা অধিকতর শক্তিশালী হবে যদি সরকার তাদের কর্মকাণ্ড দমনের জন্য নতুন কোনো কৌশল গ্রহণ না করে। ২০০৪ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত সময়েও জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের পরামর্শ অনুযায়ী সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড প্রতিরোধ সংস্থা বা ইউনিট গঠনের সুপারিশ ছিল। ওই সময়ে এ সংস্থা বা ইউনিটের অবস্থান কোথায় হবে সে বিষয়েও কিছু তথ্য মিডিয়ায় প্রকাশ করা হয়। বর্তমানে আমরা জানি যে এ ধরনের ইউনিট পুলিশ বিভাগে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এ ইউনিটের শীর্ষ কর্মকর্তার বক্তব্যও মাঝেমধ্যে মিডিয়ায় দৃশ্যমান হয়। এর পরও কী ধরনের নতুন কৌশলের প্রয়োজন রয়েছে তা এখনো জানা যায়নি।

বর্তমানে সরকার ও বেসরকারি পর্যায়ের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু আইএস। বাংলাদেশে আইএস কী প্রবেশ করেছে? এই তথ্যের সঠিক উত্তর এখনো নেই সরকারের হাতে। বর্তমানে শুধুমাত্র আনসার-উল্লাহ-বাংলা টিম নামধারী প্রতিষ্ঠানের বিষয় আলোচিত হচ্ছে। ভারতীয় উপমহাদেশে এ নামের প্রতিষ্ঠানটির সদর দপ্তর পাকিস্তানে বলে জানা যায়। সদর দপ্তর প্রস্তাবিত নাম অনুমোদন না করে আনসার আল ইসলাম নাম ব্যবহারের অনুমতি প্রদান করে। প্রকাশিত তথ্যে বলা হয়েছে, এরা প্রোআল-কায়েদা। তাদের দুই নেতার নামও প্রকাশ করা হয়। তাদের ঘাঁটির অবস্থান উত্তরাঞ্চলে ছাড়াও ঢাকা বিভাগের মিরপুর, সাভার, টঙ্গী ও গাজীপুর বলে জানা যায়। তাদের জনবলের বা কর্মীদের নিয়োগ দুই সূত্র থেকে পাওয়া যায়। এক. দেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠী ছাড়া পূর্ববর্তী কিছু জঙ্গিগোষ্ঠীও এর মধ্যে রয়েছে। যেমন আহলে হাদিস, জেএমবি, হেফাজত, মাদ্রাসার ছাত্র। দুই. কিছু পেশাজীবী, ধনী ও শিক্ষিত পরিবারের সদস্য ও শিবির। গত ১৮ মাসে ৪৭ জনের হত্যার পর যে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট মহল থেকে শোনা যায় তা হলো, এখন টার্গেট বা চিহ্নিত করেই বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার ব্যক্তিদের হত্যা করা হচ্ছে। চিহ্নিত শ্রেণির মধ্যে রয়েছেন মুক্তমনা ব্যক্তি ও চিন্তাবিদ, ব্লগার, সমকামিতা সমর্থক। এগুলো সব অনুমান মূলক। মাদরাসা জঙ্গিদের উৎপাদন কেন্দ্র- এ ধরণের তথ্য পুরোপুরি সত্য নয়। সন্ত্রাসী কার্যক্রম ও জঙ্গিপণার সজ্ঞা কী তা আমার জানা নেই। তবে সন্ত্রাসী কার্যক্রম প্রকাশ্যে হয় আর জজ্ঞিপণা গোপণে হয় এটুকু জানি। মাদরাসা শিক্ষা ধর্মীয় শিক্ষা,এখানে জঙ্গিপণা তৈরী হয় এ প্রমান আদৌ করতে পারেনি কোন সরকার। তবে বিপথগামী কিছু পড়ুয়ার সাথে মিলে যেতে পারে।
মাদরাসা শিক্ষার ওপর একশ্রেণির বেশ ক্ষোভ ও রাগ আছে,তাদের অপপ্রচার মাত্র। সূত্রগুলো মিথ্যে তথ্য প্রদান করছে। আহলে হাদীস, ইসলামী ছাত্রশিবির,হেফাযত এই কর্মকান্ডে কখনো সম্পৃক্ততা ছিলো এটা প্রমান হয়নি। বর্তমানে এই জঘণ্য কর্মকান্ডে জড়িত হলে দ্রুত এর ব্যবস্থা নেওয়া জরুরী। ইসলামী ছাত্রশিবির জঙ্গিপণায় জড়িত এই তথ্য সরকার দীর্ঘ ক্ষমতায় পর্যন্ত প্রমান করতে পারেনি। বরং ছাত্রলীগের কর্মকান্ড হতে ওদের অবস্থা অনেক ভালো। ছাত্রলীগের দৌড়াত্বে স্বয়ং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ নিরুপায়। তাদের কাছে পুলিশ প্রশাসনও অসহায়।

সাম্প্রতিককালে বিদেশি নাগরিক ছাড়াও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ধর্মযাজক,হিন্দু পুরোহিত পুলিশ সুপারের স্ত্রী ও ব্যবসায়ীকেও হত্যা করা হয়েছে। ৭ জুন প্রকাশিত খবরের যে লেখচিত্র পাওয়া যায় তার মধ্যে প্রো-আল-কায়েদা দল, অর্থাৎ আনসার আল ইসলাম ৪৭ জন নিহত ব্যক্তির মধ্যে মোট আটটি হত্যার দায় স্বীকার করেছে। অন্যদিকে প্রো-আইএস গোষ্ঠী ২৮ জনের দায় স্বীকার করে। এদের শ্রেণিবিন্যাসে দেখা যায় প্রথমোক্ত গোষ্ঠীর চিহ্নিত ব্যক্তিরা হলেন মুক্তমনা, ব্লগার ও সমকামিতা সমর্থক। দ্বিতীয় গোষ্ঠীর হাতে নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে সম্প্রদায়ের পুরোহিত ও ধর্মযাজক, বিদেশি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রয়েছেন। অতীতেও আইএসআইয়ের কর্মকাণ্ডের কথা শোনা গিয়েছিল। এখন এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে মোসাদ।

বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার ব্যক্তির হত্যার পর বিষয়টি সংসদেও আলোচনা করা হয়। আলোচনার প্রধান বিষয় হলো—এক. সরকারের কাছে সাক্ষ্যপ্রমাণ রয়েছে যে বিএনপি-জামায়াত সাম্প্রতিক হত্যার সঙ্গে যুক্ত; দুই. আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হত্যাকারীদের ধরার জন্য সক্রিয়; তিন. পাকিস্তানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক অক্ষুণ্ন রইবে; চার. গুপ্তহত্যা দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার লক্ষ্যেই করা হচ্ছে; পাঁচ. সন্ত্রাসীরা সন্ত্রাসী বৈ কিছু নয়, তাদের কোনো দয়া দেখানো হবে না এবং ছয়. জনগণকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সহযোগিতা করতে হবে। এ থেকে বলা যায় অতীতে গুপ্তহত্যা নিয়ে এ ধরনের আলোচনা সংসদে হয়নি। আলোচনা হওয়া শুভ লক্ষণ, কারণ বিষয়টি শুধু জনগুরুত্বপূর্ণ নয় বরং জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবেও গুরুত্বপূর্ণ।

সংবাদমাধ্যমে গত কয়েক দিনের পত্রিকার বিভিন্ন খবর থেকে এখন পর্যন্ত যে ধারণা পাওয়া যায় তা হলো মোসাদসহ আইএসআইয়ের এজেন্টদের এখনো চিহ্নিত করা সম্ভব হয়নি। গুপ্তহত্যার আশঙ্কা এর ফলে থেকেই যাবে। জঙ্গি দমনে কঠোর সরকার। এখন চলছে পুলিশের সাঁড়াশি অভিযান, এ অভিযানের প্রথম দিনেই এক হাজারের বেশি ব্যক্তি গ্রেপ্তার বা আটক হয়েছে। প্রথম সাতদিনে তেরো হাজার আটশত তেরোজন সন্দেহবশে গ্রেফতার হয়। তাদের বেশির ভাগ বিএনপি-জামায়াত কর্মী, বিভিন্ন মামলার আসামি ও মাদক ব্যবসায়ী। তবে লিস্টমার্ক কোন জঙ্গি নেই,জঙ্গিদের কোনো তথ্য নেই। তবে কী ভেস্তে যাবে এ অভিযান?

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে জুন, ২০১৬ রাত ৮:৫৮

রায়হানুল এফ রাজ বলেছেন: সর্ষের মধ্যে ভূত থাকলে তো এমন হবেই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.