নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যুক্তির মাঝেই সমাধান খুঁজি।

উড়ন্ত বাসনা

জীবন কে ভালবাসি।

উড়ন্ত বাসনা › বিস্তারিত পোস্টঃ

রাজনৈতিক সঙ্কটে দেশ

১১ ই মে, ২০২১ রাত ১:৪৩

রাজনৈতিক সঙ্কটে আছে দেশ। এই সঙ্কট বেশ অনেকদিন ধরেই। ক্ষমতাসীন দল একতরফা নির্বাচন দিয়ে ’১৪ সাল থেকে এই সঙ্কট সৃষ্টি করেছে। বল ও কুট কৌশলে একের পর এক ইস্যুতে বিপক্ষ শক্তিকে দমিয়ে রেখেছ। বিষয়টি সমাজ চিন্তকদের জন্য উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠার। দেশে স্বাধীন গণতন্ত্রের উপস্থিতি নিয়েও সংশয় সমাজ ও রাষ্ট্র বিশ্লেষকদের মাঝে। প্রধান বিরোধী দলগুলো কোণঠাসায় আছে। জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল ঘোষণা হবার পর দলটি সক্রিয় থাকলেও বিশেষ করে ’১৮ নির্বাচনের পর তাদের আর মাঠে দেখা যায়নি। অনেক রক্ত আর ক্ষয় গেছে ধর্মভিত্তিক দেশের বৃহত্তর দলটির ওপর দিয়ে। গণমাধ্যমে তাদের নিয়ে সংবাদ হলেও তারা তাদের শক্তিমত্তা আর দেখাচ্ছে না। অনেকটা কৌশলী পন্থা অবলম্বন করছে বলে সংবাদ মাধ্যমগুলি মাঝে মধ্যে প্রচার করে।

হেফাযত ইস্যু বিষয়টি গত মাসের প্রথম থেকে নতুন করে পত্রিকার লিড নিউজে ঠাই করে নিয়েছে। এর আগেও বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নিয়ে আলোচনায় এসেছিল। ইতোমধ্যে যদিও হেফাযতের নেতৃত্ব নিয়ে নানা মতানৈক্য সৃষ্টি হয়েছে। তবে তাদের উত্থানের বিষয়টি সরকারকে ভাবিয়ে তুলেছে। স্বাধীনতা সুবর্ণ জয়ন্তী ও মুজিব শত বার্ষিকী উপলক্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশে আগমনকে কেন্দ্র করে হেফাযত আবারও আলোচনায় আসে ‘১৩ সালের পর। গত জাতীয় নির্বাচনের আগে সরকার হাত করতে চেয়েছিল কওমি ঘরনার আলেমদের। তাদেরকে সরকারি সমমানের সনদের টোপ দিয়ে “কওমি জননী” খেতাবও বাগিয়ে নিয়েছিল সরকার প্রধান।

সরকারের বিরোধীতার দরুন আবারও রোষানলে হেফাযত! একের পর এক নেতা গ্রেপ্তার হয়েছেন লকডাউনের মধ্যে। তাদের অনেকেই রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। লকডাউনকে অনেকে ক্র্যাক ডাউন বলে অবিহিত করছেন। হেফাযতকে দমনের উপায় হিসেবে মনে করছেন নেটিজেনরা। ফেসবুকে এমন স্ট্যাটাস দেখা যাচ্ছে। এটা সত্য যে আলেমদের গণহারে আটকের ফলে এখন লকডাউন সত্যিই প্রশ্নবিদ্ধ! করোনা মহামারির সময়ে মানুষের জীবনযাত্রা যেখানে চরম দুর্বিষহ ও আতঙ্কে দিনাতিপাত করছে সেখানে আলেমদের হয়রানী নির্যাতন কোনক্রমেই মেনে নেওয়া যায় না। মাহে রমজানে গণহারে গ্রেপ্তার আর রিমান্ড সরকারের এই আচরণ আমানবিক ও ফ্যাসিবাদী কায়দা।

মামুনুক হককে মানিব্যাগ চুরি মামলায় সাত দিনের রিমান্ড দিয়েছে আদালত! পুলিশ সাত দিনের আবেদন করেছিল।

মজার বিষয় হচ্ছে- মোহাম্মদপুর থানায় দায়ের করা মামলায় মারধর, হত্যার উদ্দেশে আঘাতে জখম, চুরি, হুমকিসহ আরও কয়েকটি অভিযোগ এনে স্থানীয় এক ব্যক্তি মামলা করেন।

এবার ভিন্ন প্রসঙ্গে আসি। সরকার কখনো বিরোধী পক্ষকে ভালো চোখে দেখেনি। ’৯৬ সালে যখন তারা ক্ষমতায় আসে তখনও দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক ছিল না। উদারতা তলানিতে তাদের। একটি উদার গণতন্ত্র বিদ্যমান দেশে যেসব গুণ সরকারের থাকার কথা তা অনুপস্থিত। দেশের গণমাধ্যমে মুক্ত কলম চর্চা হারিয়ে গেছে ১৪’সালের একতরফা নির্বাচনের পর থেকে। পত্রিকাগুলো আর্থিক সঙ্কটে যেমন ভুগছে তেমন মতপ্রকাশের স্বাধীনতাও হারিয়েছে। বিশেষ করে করুণ পরিস্থিতি শুরু ভোটারহীন ১৮’সালের নির্বাচনের পর। সরকারের সমালোচনা নিয়ে কথা বলা গেছে সেই সময়ে। এখন সেই অবস্থা নেই, লিখা যায় না আর বলাও যাচ্ছে না। টকশোগুলো একতরফা ক্ষমতাসীনদের দখলে, শুধু আ’ লীগের জয়গান আর উদার গণতন্ত্রের বুলি।

দৈনিক আমার দেশ পত্রিকাসহ বেশ কয়েকটি মিডিয়া সরকারের রোষানলে পড়ে বন্ধ হয়ে যাবার পর পর গণমাধ্যম অনেকটা সরকার ঘেঁষা হয়ে যায়। কলামগুলিতে শুধু একটি নির্দিষ্ট দলের গুণগান ব্যতীত আর কিছু থাকে না। অনেকটা পেইড ভিত্তিক মুক্ত চর্চা হয়ে গেছে। বিগত সময়ে সরকারের তুমল সমালোচনা করা গেলেও এখন আর সে পথ নেই ! এরশাদ সরকারের সময় রাতে পত্রিকা অফিসে যেমন ফোনকল আসতো এখনও আসে।

ভিন্নমতের ও দলের মানুষের ওপর শাসকযন্ত্রের নগ্ন হস্তক্ষেপ নমুনার আরেক নাম দৈনিক আমার দেশ ও সংগ্রাম পত্রিকার সম্পাদকসহ কার্টুনিস্ট কিশোর লেখক মুশতাক আহমেদ আরও অনেকে। মাহমুদুর রহমানের সাথে সরকারের আচরণ ছিল শত্রুর ন্যায়। নির্মম অত্যাচার আর জেল জুলুম তাকে বরণ করতে হয়েছিল ভিন্নমতের কারণে। সম্পাদক মাহমুদর রহমানকে নিয়ে কোনো পত্রিকা লিখেনি সম্পাদক পরিষদও তাকে নিয়ে কিছু বিবৃতি দেয়নি। নেপথ্যে কারণ সরকারের রোষানলের ভয়।

স্বাস্থ্য খাত নিয়ে বলার ভাষা নেই! ভেঙ্গে পড়েছে দেশের স্বাস্থ্যখাত। ১৯ এপ্রিল একটি জাতীয় পত্রিকায় তৃতীয় পাতায় একটি খবর বেশ ভাবিয়েছে আমায়। খবরটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। সন্তানকে বাঁচাতে রিকশায় শত মাইল! এ্যাম্বুলেন্সের ভাড়ার অভাবে শিশু সন্তানকে নিয়ে পিতা মোটর চালিত রিকশায় ১১০ কি.মি. পথ পাড়ি দিয়েছেন ঠাকুরগাঁও হতে রংপুর পর্যন্ত। লক ডাউন স্বাস্থ্য সেবার করুণ দশা। শুধু নাই নাই। হাসপাতালগুলো মানুষে ভর্তি নেই চিকিৎসা সামগ্রী পর্যাপ্ততা।

খাতটি কতোটা দুর্বল ও নাজুক এর আসল চেহারা খুলে দিয়েছে চলমান পরিস্থিতি। দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থা বলতে গেলে একেবারে ভেঙ্গে পড়েছে। “করোনা হানা না দিলে জানা যেতো না দেশের স্বাস্থ্যখাতের গলদ” এমন শিরোনামে একটি আর্টিকেল লিখেছিলাম গতবছর। কিন্তু এই আর্টিকেল ছাপিয়েছে মাত্র দুটি পত্রিকা! সেখানে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর যোগ্যতা আর ব্যর্থতার ফিরিস্তি ছিল।

মানুষ করোনার চিকিৎসা পাচ্ছে না, পর্যাপ্ত আইসিইউ নেই সরকারি হাসপাতালগুলোতে। যদি বিচার বিশ্লেষণ করা হয় এর নেপথ্যে কারণ কী? উত্তর শুধু সাধারণ চোখে কম বাজেটই এর কারণ মনে হতে পারে, কিন্তু কি আসলে তাই? কিছুটা সত্য হলেও বৃহৎ অংশ কিন্তু না, এই খাত নিয়ে যারা ভাবেন বা সামান্য ঘাঁটাঘাঁটি করেন তারা আরো অনেক কারণ খুঁজে পান। সবার কাছ থেকেই একটি কথা ‘কমন' শোনা যায়, আর তা হলো দুর্নীতি।

গত জাতীয় বাজেটে এই খাতে বৃহৎ পরিমাণে বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। কিন্তু তারপরও মানুষের মনে আশা জাগছে না! চিন্তা একটাই যদি বালিশ-পর্দার মতো এই বরাদ্দ দুর্নীতির পেটে চলে যায়, তবে বাজেট বাড়িয়ে ফয়দা কি? বিভিন্ন বেসরকারি গবেষণা ও গণমাধ্যমের কাছ থেকে প্রাপ্ত পরিসংখ্যান বলছে স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়ন বরাদ্দের শতকরা ৮০ ভাগই দুর্নীতির পেটে চলে যায়।

এবার আসি সরকারের উদার গণতন্ত্রের জয়গান নিয়ে। রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে বিংশ শতাব্দীর শেষ পর্যন্ত গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা কার্যকরী ছিল পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে। চলতি সময়ে সে ধারা খানিকটা পাল্টে গেছে। একবিংশ শতাব্দীতে এসে সে চিত্র অনেকটাই বদলে গেছে। রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের মতে পৃথিবীর অনেকে দেশে গণতন্ত্র নামেমাত্র কার্যকর রয়েছে। যদি বাংলাদেশের কথা বলি তাহলে বলতে হবে দেশে গণতন্ত্র কফিনে মোড়া হয়ে গেছে। সংবিধান রক্ষায় ১৪’সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ও কেয়ারটেকার সরকার আদালতের মধ্য দিয়ে বাতিল ঘোষণা করে।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই মে, ২০২১ রাত ২:০৬

চাঁদগাজী বলেছেন:



আপনি বলছেন, "রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা এই বলেছে, রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা সেই বলেছে"।
কোন কোন রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা বললেন, উনাদের নাম ধাম আছে?

২| ১১ ই মে, ২০২১ রাত ২:১৫

নূর আলম হিরণ বলেছেন: বললেন সরকার বিপক্ষ দলকে দমিয়ে রেখেছে! বাংলাদেশে সঠিক বিপক্ষ দল কারা?

৩| ১১ ই মে, ২০২১ দুপুর ২:২৪

রাজীব নুর বলেছেন: আমাদের দেশের রাজনীতিবিদরা দক্ষ ও যোগ্য নয়। এমনকি পরিশ্রমীও নয়। এই আজ এই অবস্থা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.