নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কিছু কথা থেকে যায় পাতাতে, কিছু কথা রয়ে যায় মনেতে, লাভ কি বলো সব জানাতে ?

ফ্রেটবোর্ড

ফ্রেটবোর্ড › বিস্তারিত পোস্টঃ

সুতা কেটে হারিয়ে গেল আমার প্রিয় ঘুড়ি

০৮ ই মার্চ, ২০২৪ রাত ১:৫৭



আজ একটা লাইন দেখে মনে হলো লেখাটা আগেও পড়েছি কিন্তু আজকেই ভালো লাগলো, হয়তো নিজের সাথে মিলে গেছে, “আগে ১ টাকায় ৫টা চকলেট পাওয়া যেত আর এখন ৫ টাকায় ১টা, মাঝখানের এই সময়ে আমরা বুড়ো হয়ে গেছি”।

আমাদের বাড়ির দক্ষিণ দিকে প্রচুর জমি ছিল (নিজেদের না)। বর্ষাকালে কখনো পানি থাকতো অথবা ধান চাষ করা হতো। পানি থাকা অবস্থায় বাঁশের ১ফিট সাইজের কঞ্চিতে বরশি লাগিয়ে পানিতে রেখে আসতাম সন্ধ্যায়, পরদিন সকালে গিয়ে দেখি মাছ ধরে আছে। পানি যখন শুকিয়ে যেত আর ধান কাটা হতো তখন বিশাল এলাকাজুড়ে আমাদের দৌড়াদৌড়ি চলতো।

খেলাধুলায় আমি কখনো পারদর্শী ছিলাম না। বাড়ির পাশের বন্ধুরা লেখাপড়া করতো না তাই তাদের সাথে খেলা বারণ। তারপরও লুকিয়ে চুরিয়ে ওদের সাথেই থাকতাম। বন্ধুদের মধ্যে বাবু ছিল ঘুড়ি উড়ানোয় ওস্তাদ। সুতা কিভাবে মাজন করতে হয় তার তরিকা ওর নখদর্পণে। এক বড়ভাই ছিল যে আবার ঘুড়ি বানানোয় ওস্তাদ। বিভিন্ন এলাকা থেকে ছেলেরা কিনতে আসতো। এক কালার ঘুড়ি ১৫ পয়সা, দুই কালার ২৫ পয়সা আর চার কালার ৩০ পয়সা। বাবুরা যখন ঘুড়ি উড়াতো তখন আমি তাদের সাথে সাথে থাকতাম, মাঝে মধ্যে একটু ধরতে দিত, কিছুক্ষণ সুতা ছাড়তাম আবার একটু পেঁচতাম কিন্তু বেশিক্ষণ আমার হাতে থাকতো না কারণ অন্যরা আবার কাটাকাটি করার জন্য এগিয়ে আসতো। এভাবে ঘুড়ি উড়ানোর প্রতি একটা তীব্র নেশা তৈরি হলো কিন্তু ঘুড়ি কেনার পয়সা নাই আবার সুতাও কিনতে হবে। কি আর করা, দোকান থেকে রঙিন কাগজ কিনে আনলাম। নিজেদের বাঁশঝাড় ছিল তাই টুকরা বাঁশ বাড়িতেই ছিল। সেটা দিয়ে বানালাম নাটাই, আর চিকন করে দুটি তারের মতো স্টিক দিয়ে ঘুড়ি বানালাম। সুতা কিভাবে যোগাড় হয়েছিল মনে নেই এখন, হয়তো বাসাতেই ছিল।

সুতার গুটি থেকে সব সুতা নাটাইয়ে তুলে নিলাম এবার ঘুড়িতে সুতা লাগিয়ে রেডি করে রাখলাম। বিকালে যখন বের হই তখন মনে হচ্ছে যুদ্ধ জয় করতে চলেছি। সেদিন ঘুড়ি উড়ানোর জন্য দারুন বাতাস ছিল। বন্ধুদের গর্বকরে দেখিয়ে উড়িয়ে দিলাম ঘুড়ি। তারপর ঘুড়ি উড়ছে আর উড়ছে, আমি সুতা ছাড়ছি, একটু ধরে রাখি আবার ছাড়ি। ঘুড়ি উড়ছে নাকি আমি উড়ছি বুঝতে পারছি না, কিযে আনন্দ, কিযে সুখ! আমি আরো উঁচুতে যেতে চাই, আমি আরো সুতা ছাড়ছি। একটা সময় নাটাই হাতের মধ্যে দোল খেলো, চেয়ে দেখি সুতা শেষ। সর্ব্বোচ্চ উপরে উঠেছে আমার ঘুড়ি এই তৃপ্তি অনুভব করতে না করতেই দেখি কুট করে গোড়া থেকে সুতা ছিঁড়ে ঘুড়িটা উড়ে যাচ্ছে সাথে আমার হৃদয়টা।


Picture

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই মার্চ, ২০২৪ সকাল ৮:৫০

মিথমেকার বলেছেন: খুব সুন্দর লিখেছেন! শেষের অংশটা পড়ে মনে হল কিছুর ফোরশ্যাডোইং চলছে।
আমার শৈশবের কথা মনে পড়ল। ঘুড়ি ওড়ানোর কথা, ঘুড়ি তৈরির কথা, সুতায় মাঞ্জা দেয়ার কথা, কাটাকাটি খেলার কথা, ঘুড়ি ভক্সা হওয়ার কথা..

০৮ ই মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১২:৫১

ফ্রেটবোর্ড বলেছেন: জেনে গেলাম আপনার শৈশব মনে পড়েছে আর তাই অনেক স্মৃতিও হয়তো কিলবিল করছে, লিখে ফেলুন আপনার শৈশব। 

২| ০৮ ই মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৫

মিথমেকার বলেছেন: @ফ্রেটবোর্ড
লিখব হয়ত কোনোদিন..

০৮ ই মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:৪৬

ফ্রেটবোর্ড বলেছেন: ঠিক আছে অপেক্ষায় আছি।

যেহেতু লেখক এবং পাঠক আমাদের দুজনার মধ্যে কথা হচ্ছে তাই এখানে আর (@) দেয়ার প্রয়োজন নেই। এটা দেয়া হয় তৃতীয় পক্ষের উদ্দেশ্যে (আশা করি কিছু মনে করেননি)।

৩| ০৮ ই মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩

রাজীব নুর বলেছেন: ছেলেবেলা ফিরে আসে না।
যদি কোনোদিন টাইম মেশিন আবিস্কার হয়ে যায়, তাহলে আমরা অতীতে ফিরে যেতে পারবো। যেতে পারবো ভবিষ্যতেও।

০৮ ই মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:৪৬

ফ্রেটবোর্ড বলেছেন: এই আশায় গুড়েবালি, এটা শুধু স্বপ্নেই সম্ভব।

৪| ০৮ ই মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:১৯

জ্যাক স্মিথ বলেছেন: আমিও ছোট সময় প্রচুর ঘুড়ি উড়াতাম আমারও আছে অনেক স্মৃতি।

০৮ ই মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:৪৭

ফ্রেটবোর্ড বলেছেন: তাহলে আপনিও লিখে ফেলুন স্মৃতিকথা। কি কি দিয়ে সুতা মাজন করতেন জানা হয়ে যাবে, এলাকাভেদে প্রক্রিয়া হয়তো আলাদা হতে পারে।

৫| ০৮ ই মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:২২

ঢাবিয়ান বলেছেন: অনেক আগে ঢাকা শহরে ঘুড়ি উড়ানোর খুব চল ছিল। নাটাই হাতে ঘুড়ি উড়ানো দারুন এক অভিজ্ঞতা।

০৯ ই মার্চ, ২০২৪ রাত ২:১২

ফ্রেটবোর্ড বলেছেন: শুনেছি পুরান ঢাকায় আয়োজন করে ঘুড়ি উড়ানো হয়। কোভিডের সময় বিল্ডিং এর ছাদ থেকে প্রচুর ঘুড়ি উড়িয়েছে লোকজন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.