নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

গালীব পাশা (কবি ও ছড়াকার) লেখক নাম, মূল নামঃ মামুনুর রশীদ।

গালীব পাশা

মা কে ভাল বাসুন,মা'ই জান্নাত।

গালীব পাশা › বিস্তারিত পোস্টঃ

(ভ্রমণ)তেত্রিশ কোটি দেবতার দেশে (২য় কিস্তি)

৩১ শে মে, ২০১৮ সকাল ১১:২১


(৩) থাকার ব্যাবস্থা ; এ ব্যাপারে একা একার চেয়ে দলগত ভ্রমণেই ভালো। কারন ভারতে সিঙ্গেল থাকার ব্যবস্থা মোটেই সহনীয় নয়। দাম তুলনামুলক অনেক বেশী। আর সিঙ্গেল রুম প্রায়ই পাওয়াই যায়না। যে রুম আপনার একা হতে ৮০০/১০০০ টাকায় প্রতি রাতের জন্য ভাড়া নিতে হবে সে রুমে অনায়াসে ২/৩ থাকতে পারবেন। আর একবারে সিঙ্গেল রুমও আপনি কম করে হলেও ৪০০/৬০০ টাকার কমে পাবেন না। তাও আবার সব খানে নয়। কোন কোন স্থানে ১০০০ টাকার কমে কোন রুম পাওয়া যায়না। আজমিরে অবশ্য হোটেল ভাড়া কম দেখেছি.২০০/৩০০ টাকায়ও রুম পাওয়া যায়। কিন্তু শুনেছি সেগুলো থাকার মতো নয়। সারারাত জেগে জেগে মশা মারতে হয়। আর ভারতের হোটেল সার্ভিস বাংলাদেশের মতো নয়। কাছরা-অপরিস্কার। বাংলাদেশের মতো এতো তেল মালিশি অবস্থা তাদের নেই। অনেক দামী হোটেলেও এক টুকরা সাবান ও তোয়ালে দিতে ওদের ফেটে যায়,কিন্তু থাকতে তো হয় তাই থাকা। এ ব্যাপারে যা গুরুত্বপূর্ণ তা হলো বন্ধু-বান্ধব হলে দল বেঁধে যান, হোটেল ভাড়ায় অনেক অনেক শাশ্রয় হবে, না হয় হোটেল ভাড়ায় প্রচুর টাকা গুনতে হবে। আমাকে তাই করতে হয়েছে। ও হ্যা কলকাতায় অনেক হোটেলে বাংলাদেশী শুনলেই ফিরিয়ে দেয়, ভাড়া দেয় না। হাওড়া রেল ষ্টেশনের প্রায় পাশে এক হোটেল ম্যানাজারের সাথে এ নিয়ে আমার অনেক কথা কাটা-কাটি হয়েছে। অবশ্য আমি লেখক ও এক রকম আইন-টাইনের হুমকি দেখালে পরে থাকতে দেয়। এ ব্যাপারে যদি কেউ এ সমস্যায় পড়েন তা হলে কাগজ পত্র ঠিক থাকলে মাথা নত করে আসবেন না,অন্তত কিছু কথা শুনিয়ে আসবেন। অবশ্য পরে তাদের থেকে জেনেছি জঙ্গিবাদের কারনে এ সমস্যা তৈরী হয়েছে। ভেবে দেখলাম কথাটার সত্যতা আছে না হয় তারা যেখানে কাষ্টমার পেতে অনেক দুর থেকে ওত পেতে থাকে সেখানে ভাড়া দিবেনা কেন ?

(৪) ভারতের রেল ও রেল যাতায়াত ব্যাবস্থাঃ ভারতের রেল ও রেল যাতায়াত এক বিশাল কর্মযজ্ঞ ব্যাপার। আমাদের দেশের সাথে ভারতের রেলের ও তাতে যাতায়াতের কোন তুলনাই চলেনা। তাই হয়তো ভারতের লোকেরা যাতায়াতের বাহন হিসেবে ট্রেনই বেশী পছন্দ করে। তাদের রেল আমাদের থেকে অনেক অনেক উন্নত, আধুনিক, বিলাশ বহুল ও দ্রুততর। পুরো ভারতে রেল ব্যবস্থাপনা বিদ্যুতায়িত এবং পুরো দেশ জুড়ে বিশ্তৃত। এ ব্যাপারে ভারত ধন্যবাদ পাওয়ার উপযোগী। আপনি হাজার হাজার মাইল ঘুরতে পারবেন এ রেল যোগে। এমনকি প্রায় পুরো ভারতবর্ষটাই ঘুরতে পারবেন তাতে কোন অসুবিধা হবে না। যা বাস বা অন্য কোন যানবাহনে সম্ভব নয় ।
আর হওয়ার কথাও নয়, কারন বিশাল দেশ ভারতের এমনও প্রদেশ আছে যা আমাদের দেশ থেকে ২/৩ গুন বড়,আর পুরো ভারতবর্ষের কথা চিন্তা করলেই তো মাথা ঘুরে যাবার মতো অবস্থা। তদুপরি ভারতের রেল প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চল পযন্ত প্রসারিত। আপনি ইচ্ছে করলে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের রেল ষ্টেশন হতে অনায়াসেই কোন শহরে পাড়ি দিতে পারবেন। আর যেহুতু তাদের রেল ব্যবস্থাপনা বিদ্যুতায়িত তাই সাধারন মানের রেল গুলো ও অতিদ্রুত চলাচল করে। প্রত্যেকটি ষ্টেশনে আছে সুপেয় জলের ব্যবস্থাপনা, আপনি চাইলেই বোতল ভরে নিতে পারেন (তবে তা করতে হবে অতি দ্রুত, কারন ক্রশিং ব্যাতিত রেলগাড়ী বেশীক্ষন ষ্টেশনে অপেক্ষা করেনা)।
আর অতি দ্রুত গতির ট্রেন গুলি চোখের পলকেই আপনাকে নিয়ে যাবে অনেক দুর। সে ট্রেন গুলোতে খাওয়া, ঘূমানো, গোসল করার যাবতীয় ব্যাবস্থা আছে। আপনাকে অনেক ব্যাপারেই চিন্তা করতে হবেনা। কিন্তু সে সব ট্রেন ভ্রমণ অনেক ব্যয় বহুল। সে সাথে চলার পথে অতি দ্রুততার কারনে দু’ধারের প্রাকৃতিক দৃশ্যাবলির কিছুই দেখা যায়না। যেহেতু আপনি পয্যটক,আপনার ইচ্ছে চারপাশ দেখে দেখে আপনি সামনে এগুবেন এইরকম ইচ্ছে হলে হাতে প্রচুর সময় নিয়ে যদি যান তাহলে মধ্যমমানের ট্রেনে ভ্রমন করুন। দেখার মতো অনেক কিছুই দেখতে পাবেন। হরেক রকম মানুষ, ভাষা,রং, বর্ণ,খাওয়া-খাদ্য সহ অনেক অভিজ্ঞতা আপনার ঝুলিতে ভরপুর হবে। আর যদি রাজকিয় ভ্রমণ করতে চান তারও ব্যাবস্থা আছে; তথ্য কেন্দ্র থেকে খোঁজ নিয়ে টিকেট কেটে ভালো ট্রেনে উঠে পড়ুন তিন চারদিনের পথ আপনাকে এক দিনেই পৌঁছে দিবে। ভ্রমনের ক্লান্তি বলে কোন কিছুই অনুভব হবেনা।
ও হ্যা, ভারতের লোকাল ট্রেন হতে সাবধান। পারত পক্ষে এ সব ট্রেনে উঠবেন না। তাহলে পরান যায় যায় ত্রাহি অবস্থা হবে। এক সাথে এত মানুষ উঠে পড়ে যে তা আপনি ভাবতেই পারবেন না। প্রয়োজনে আপনার কাঁধে পা দিয়ে স্থান দখল করবে তাতে একটুও চিন্তা করবেনা। আপনি প্রতিবাদ করবেন তাও পারবেন না। চোখ বুঝে সব সহ্য করতে হবে। কিন্তু ভ্রমন জনিত কারনে আপনাকে কখনো কখনো হয়তো তা করতে হতে পারে তা হলে ট্রেনে উঠে দরজার পাশে বসতে চেষ্টা করুন অল্প দূরত্ব হলে দাঁড়িয়ে থাকুন আর আপনার ষ্টেশন আসার অপেক্ষায় প্রস্তুত থাকুন, ষ্টেশন আসলেই নেমে পড়ুন। দেরী করলেই ভিড়া-ভিড়ীর কারনে আর নামতে পারবেন না। ট্রেন অনায়সেই আপনাকে হয়ত আরো দুই-তিন ষ্টেশন পার করে নিয়ে যাবে। প্রথম প্রথম আমাকে একবার নিয়েছিল, এখন আর পারেনা, খুব হুসে থাকি। সবোপরি, ভারতের ট্রেন যাতায়াত তুলনামুলক ভাবে আমাদের দেশ থেকে অনেক আরামদায়ক, দ্রুততর, সাশ্রয়ী ও নিরাপদ। ভারত ভ্রমণে ট্রেন ব্যাবহার করুন,আরামে ও নিরাপদে থাকুন।

টিকাঃ ভারতের ট্রেনে যাত্রীরা কিছু কাজ করে যা আমাদের দেশে অকল্পনীয়। যেমন আমাদের দেশে কেউ ঘুমিয়ে থাকলে পারতপক্ষে অন্য যাত্রী তাকে জাগায়না কিন্তু ভারতে এসবের ধার কেউ ধারেনা; গুমন্ত যাত্রীকে টেনে হিছড়ে জাগিয়ে দিয়ে অন্য যাত্রী বসে যাবে সে সাথে দু’কথা শুনিয়েও দিবে।
মান্যতা গন্যতার ধার তেমন নেই,যদি দেখে এক ইঞ্ছি যায়গাও খালি আছে তা হলে জোর করে ঠেলে বসে যাবে।
আমি এই,আমি সেই করে আমাদের দেশে তিনজনের সিট একজনে দখল করে বসে থাকে ভারতে তা নেই। আপনার এই সেই আপনি পকেটে তুলে রাখতে হবে অন্যজন বসে যাবনেই যাবে।
বিনা টিকেটে উঠবেন না, কারন তা হলে তা সন্মানহানির ব্যাপার হতে পারে। ভারতের রেলের টিকেট তুলনা মূলকভাবে আমাদের দেশ থেকে অনেক কম (চলবে)।

NB: এই লেখাটি কোন দল, মত, জাতি, গোষ্টি বা দেশকে হেয় করার উদ্দেশ্য নয়। একজন লেখক হিসেবে যা সত্য তা তুলে আনার চেষ্টা মাত্র। তবুও কেউ যদি কোনভাবে আহত হন সে জন্য ক্ষমা প্রার্থী। কোন ভুল তথ্য বা এই জাতীয় কিছু থাকলে ধরিয়ে দিলে সানন্দে শোধরে নিব। ভ্রমণ সংক্রান্ত কেউ যদি কিছু জানতে চান তাহলে এই নাম্বারে জানতে পারেন,০১৭১২৯৩৬৩৯৬। তবে অনুরোধ বেহুদা কেউ ফোন করবেন না। এ লেখার পরবর্তী কিস্তিতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ জানার বিষয় রয়েছে যা জানলে আপনার অনেক টাকা সেভ হতে পারে.........।

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ৩১ শে মে, ২০১৮ দুপুর ২:২৫

যুক্তি না নিলে যুক্তি দাও বলেছেন: ভ্রমন কাহিনী আমার বেশ ভালো লাগে বরাবরের মতো আপনারটাও খুব ভালো লাগলো

৩১ শে মে, ২০১৮ বিকাল ৩:৫০

গালীব পাশা বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ----কাহিনী কিন্তু এখনো শুরুই হয়নি---

২| ৩১ শে মে, ২০১৮ দুপুর ২:৩৮

অনন্য দায়িত্বশীল আমি বলেছেন: চমৎকার হয়েছে। চালিয়ে যান। অপেক্ষাতে...........

৩১ শে মে, ২০১৮ বিকাল ৩:৫১

গালীব পাশা বলেছেন: ্চেষ্টা করছি------

৩| ৩১ শে মে, ২০১৮ বিকাল ৩:০৯

মোস্তফা সোহেল বলেছেন: এবারের পর্বও ভাল লাগল।

৩১ শে মে, ২০১৮ বিকাল ৩:৫২

গালীব পাশা বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ----

৪| ৩১ শে মে, ২০১৮ বিকাল ৩:৩৭

রিফাত হোসেন বলেছেন: অভিজ্ঞতা পরিপূর্ণ হয়েছে কিনা জানি না, তবে আমার কিছু বাড়তি যোগ হয়েছে।
-- ভারত রেলের ক্যাটারিং কর্তৃপক্ষ বা কর্মচারীরা বাড়তি বকশিষ আদায় করে অনেকটা লজ্জা দিয়ে বা জোর করেও বলতে পারেন। তাও জনে জনে! একবার হলে কথা ছিল বা সামান্য চাওয়া হলেও কথা ছিল। রীতিমত দাঁড়িয়ে থাকে। সামান্য টাকা দিলেও চেয়ে থাকবে!
বেশীরভাগ ই করে থাকে বিদেশীদের ক্ষেত্রে।

।।।।।।
যা বাংলাদেশে আমি এখনো পাই নাই। তবে ক্যাটারিং সার্ভিস এত উন্নত না।

৩১ শে মে, ২০১৮ বিকাল ৩:৫৩

গালীব পাশা বলেছেন: সব কথা বলতে নেই------

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.