নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

গেন্দু মিয়া একজন সহজ সরল ভালমানুষ। তাকে ভালবাসা দিন। তার ভালবাসা নিন। ছেলেটা মাঝে মাঝে গল্পটল্প লেখার অপচেষ্টা করে। তাকে উৎসাহ দিন।

গেন্দু মিয়ার চরিত্র – ফুলের মতন পবিত্র!

গেন্দু মিয়া

কিছু জানার চেষ্টা থেকে ব্লগে আসা। সাহিত্য চর্চা করতে চাই।

গেন্দু মিয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

ঐশীর জন্য ভালোবাসা অথবা ঘৃণা (পর্ব ২)

১৯ শে আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৫:২৮

ঐশীর জন্য ভালোবাসা অথবা ঘৃণা (পর্ব ১)



আমরা এখন একটা বিশ্বায়নের যুগে বসবাস করছি। আজকে যে আধুনিক মুঠোফোন সেটটি আমেরিকা কিংবা কানাডায় বের হচ্ছে, আগামিকাল সেটা এই তৃতীয় বিশ্বের আমাদের টিন এজার ছেলে মেয়েদের হাতে হাতে। আগে তাও নতুন হলিউডের চলচিত্র বাংলাদেশে বড় পর্দায় দেখার জন্য দু’তিন মাস অপেক্ষা করা লাগতো, এখন বসুন্ধরা সিটির স্টার সিনেপ্লেক্স এক সপ্তাহের মধ্যে নিয়ে আসছে। বড় বড় ব্র্যান্ডের দোকানগুলো, ফাস্ট ফুডের দোকানগুলো বাংলাদেশে আসছে - প্রমান করছে এখানে ভোক্তা শ্রেনী তৈরি হয়েছে। নতুন ভিডিও গেমস, স্মার্টফোনের নতুন অ্যাপ, কী নেই?



নতুন নতুন এই পণ্যের সাথে সাথে চলে আসছে নতুন নতুন মূল্যবোধ। প্রায়শক্ষেত্রেই এগুলো আমাদের, বাঙ্গালীদের (অথবা বাংলাদেশীদের), বহুদিন ধরে বয়ে আনা কৃষ্টি-সংস্কৃতি-ঐতিহ্যের সাথে সাংঘর্ষিক। প্রশ্ন হচ্ছে বিশ্বায়নের এই যুগে আমাদের সেই পুরনো ধ্যানধারণাগুলো, মতবাদ গুলো, মূল্যবোধগুলো আমরা ধরে রাখতে পারবো কিনা? পারলেও তা আঁকড়ে ধরে বাঁচা উচিৎ কিনা?



কয়েকদিন আগে মালয়েশিয়া গিয়ে এক ট্যাক্সি ড্রাইভারের সাথে পরিচয়। সে ব্যাটা দুই পুরুষ আগে তামিল নাড়ু থেকে মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমিয়েছে। পড়াশোনা করেছে, এখন কুয়ালালামপুরে ট্যাক্সি চালায়। বয়স ২৪। তার বাবা সরকারি চাকুরে, মা-ও। কোথায় থেকে জিজ্ঞেস করায় মুচকি হেসে বললো “হোটেলে।” সারাদিন ট্যাক্সি চালিয়ে কোনো সস্তা হোটেলের সামনে পার্ক করে অখানেই রাত্রি যাপন করে নেয় সে। অনেকটা ভবঘুরের মত। তার বাবা মা কোথায় থাকে এর উত্তর শুনে আরো অবাক হবার পালা। তারা থাকেন এই কুয়ালালামপুর শহরেই। কিন্তু এক শহরে থেকেও সে নিজস্ব সত্তায় প্রস্ফুটিত হচ্ছে।



এরকম আরো একটা উদাহরন দেখেছিলাম গত বছর দক্ষিন ভারতের মুম্বাই তে। আন্তর্জাতিক বস্ত্র সম্মেলনে যোগ দিতে গিয়ে পরিচিত হয়েছিলাম বছর খানেক আগে বস্ত্র প্রকৈশলে স্নাতক হয়ে আসা এক মেয়ের সাথে, তার বয়স-ও আন্দাজ আমার মতই ছিলো – ২৫/২৬। কিছুটা কম-ও হতে পারে, ভারতীয়রা তাড়াতাড়ি গ্রাজুয়েট হয়ে যায়। কথা বলে জানলাম তার বাবা মা থাকে উত্তর প্রদেশে, আর সে চাকুরি সূত্রে নয়াদিল্লীতে বাস করছে। মেস সিস্টেম বা গার্লস হোস্টেল ধরণের কিছু কিনা জিজ্ঞেস করে জানলাম – না। সে স্বাধীনতা পছন্দ করে তাই তার সাধ্যের মধ্যে ছোট্ট একটা এক রুমের অ্যাপার্টমেন্ট নিয়ে একা থাকে। তার বয়ফ্রেন্ড আবার থাকে এই মুম্বাইতেই।



নিজের অভিজ্ঞতা থেকে এই উদাহরণ গুলো এজন্য দিলাম – এই দেশগুলো আমাদের কাছাকাছি, সংস্কৃতিতে কিছুটা হলেও মিল আছে। ইউরোপ – আমেরিকায় এরকম উদাহরণ ভুরি ভুরি পাওয়া যাবে, একটু খুঁজলে আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলোতেও পাওয়া যাবে। এই স্বাধীনতার সংস্কৃতি চলে আসছে সিডি ডিভিডি তে করে, চলে আসছে ভিডিও গেমসের মাধ্যমে, চলে আসছে টিভি প্রোগ্রামের মাধ্যমে – চলে আসছে আমাদের কাছে। আমরা একে আনন্দচিত্তে গ্রহণ করি বা না করি, এটা আসতেই থাকবে।



এই স্বাধীনতা বনাম পরাধীনতার যুদ্ধে তৈরি হবে কিছু ঐশী, হবে কিছু ‘কোল্যাটেরাল ড্যামেজ’। এটাও ঠিক নয় যে যেকোন বয়সেই এই স্বেচ্ছাচারিতা চলতে পারে, অন্ততপক্ষে এই বৃত্ত থেকে বের হয়ে আসতেই হবে – প্রত্যেকটি মানুষ আলাদা – প্রত্যেকের চিন্তা ভাবনা আলাদা; একে সন্মান করতে হবে। এই আধুনিকতার যুগে আমাদের সেই পূরনো মূল্যবোধ গুলো যেন আমাদের দিক নির্দেশনা দিতে পারে সেই দিকে সজাগ দৃষ্টি রেখে খেয়াল রাখতে হবে এগুলো ব্যক্তিসত্তার বিকাশের পথে যেন বাধা হয়ে না দাঁড়ায়। সমাজ বদলাবেই, এটা অবশ্যম্ভাবী। কাজেই তাল মিলিয়ে চলাটাই শ্রেয়।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:৫৩

লুবনা ইয়াসমিন বলেছেন: সচেতন হবার সময় হয়েছে। যে যেখানে আছেন সেখান থেকেই কাজ করে যেতে হবে। আপনার লেখার সাথে সহমত ব্যক্ত করছি।

কাহলিল জিবরানের “ দি প্রফেট” এ অন চিলড্রেন কবিতাটিতে বলা আছে সন্তানদের কিভাবে মানুষ করতে হবে এবং ভবিষৎ (যুগ) ঠিক করে দিবে কিভাবে তারা বড় হবে। সন্তানদেরকে তাদের মতন করে বাড়তে দিতে হবে। আমার সন্তান বলে আমি তাদেরকে আমার চিন্তাধারা চাপিয়ে দিতে পারি না। লিংক দেওয়ার হলো সবার জন্য উপহার হিসাবে।

আমরা পিতা ও মাতা এবং বাংলাদেশি হিসাবে মূল্যবোধ গড়তে সাহায্য করতে পারি। সেটা পারিবারিক পরিবেশই সৃষ্টি করে দেয় বইকি! এরজন্য আলাদা করে ট্রিনিং এর দরকার আছে বলে মনে হয় না।দুনিয়াটা অনেক পিচ্ছিল জায়গা। সাবধানে চলতে হবে না হলে পরে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে। আমাদের সন্তানদেরকে আমাদেরই রক্ষা করা ও উন্নত জীবন দেয়ার দায়িত্ব নিতে হবে।

আপনার লেখাগুলো পড়ছি। দেশপ্রেম নিয়ে লেখাটি আমাকে মুগ্ধ করেছে। আপনার লেখাগুলো সাবলীল এবং সুন্দর ।

আমি সময় পেলেই ব্লগে ঢুকে লেখা পড়ার চেষ্টা করি। অনেকেই আছেন যাদের লেখা আমি নিয়মিত পড়ার চেষ্টা করি । আজকে থেকে আপনি সেই কজনার মধ্যে স্থান করে নিয়েছেন।
http://www.katsandogz.com/onchildren.html

২৫ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:২৭

গেন্দু মিয়া বলেছেন: এই লেখাটা লোকচক্ষুর অন্তরালেই পড়ে ছিলো, সময় নিয়ে পড়ার এবং মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।

কাহিল জিবরানের লেখাগুলো সময় করে পড়বো। শেয়ার দেয়ার জন্য অনেকানেক ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.