নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

গেন্দু মিয়া একজন সহজ সরল ভালমানুষ। তাকে ভালবাসা দিন। তার ভালবাসা নিন। ছেলেটা মাঝে মাঝে গল্পটল্প লেখার অপচেষ্টা করে। তাকে উৎসাহ দিন।

গেন্দু মিয়ার চরিত্র – ফুলের মতন পবিত্র!

গেন্দু মিয়া

কিছু জানার চেষ্টা থেকে ব্লগে আসা। সাহিত্য চর্চা করতে চাই।

গেন্দু মিয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমার ছেলেবেলা (১)

১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:২৮

(ছেলেবেলা আসলে বিরাট একটা ব্যাপার। বিনয় করার জন্য বলছি না, আমি আক্ষরিক অর্থেই নগন্য মানুষ। কয়েক বছর ধরে মাঝারী মানের চাকুরিজীবি। আমার পক্ষে গুছিয়ে লেখা অসম্ভব। কাজেই যে টুকরা টাকরা স্মৃতি আছে অগোছালো ভাবে আপাতত লিখে ফেলছি। বল তো যায় না, পরে কোন একদিন বিখ্যাত টিখ্যাত হয়ে গেলে কাজে লেগে যেতে পারে!

আপাতত শুরু করছি আমার বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের কিছু স্মৃতি নিয়ে।)



বিশ্ববিদ্যালয়ঃ শিল্প ও সংস্কৃতি

------------------



বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে আমাদের একটা ব্যান্ড ছিলো। ঐতিহ্যবাহী ব্যান্ড “মাইলস্‌” -এর চেয়েও আমরা বেশি পরিচিতি পাবো এই আশা নিয়ে প্রাথমিক ভাবে আমাদের ব্যান্ডের নাম হিসেবে প্রস্তাব করা হয়েছিল “লাইট-ইয়ার্‌স”। বয়সের সাথে মানুষের দুনিয়াদারীর জ্ঞান বাড়ে, আমাদের বেড়েছিলো। তাই আমাদের হবু ভক্তদের এক্সপেকটেশান ম্যানেজ করার জন্য আমরা নিজেরদের নাম দিলাম “কিলোমিটারস্‌”।



আমাদের ব্যান্ডের সবচে’ অনন্য বৈশিষ্ট ছিলো আমরা কেউই কোন রকম বাদ্য যন্ত্র বাজাতে পারতাম না। বাদ্য যন্ত্র বলতে আসলে সর্বস্বীকৃত বাদ্য যন্ত্র গুলোকে বোঝানো হচ্ছে, উদাহরনঃ গিটার, ড্রামস্‌, কীবোর্ড ইত্যাদি। আমাদের কেউ কেউ বগল বাজাতে পারতাম, কিন্তু ভদ্রসমাজে এর স্থান না থাকায় আমরা অনেকটা গোপনে গোপনে বাজাতাম। আমাদের মধ্যে দু’জন বিরল প্রতিভার অধিকারী কণ্ঠশিল্পী ছিলেন। তাঁদের গান শুনে গুণমুগ্ধরা ব্যপক আমোদিত হতেন। তবে, কেন যেন আর দ্বিতীয়বার শুনতে চাইতেন না। কিছু কিছু জিনিস বেশি ভালো হয়ে গেলে সেটার ডোজ কমিয়ে দিতে হয়। আমরা আবার আমাদের গুণমুগ্ধ ভক্তদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ব্যাপারে অনেক সচেতন ছিলাম।



কিলোমিটারস্‌-এর সদস্য সংখ্যাও ছিলো চারজন। কারণ তাশ খেলতে হলে মোটামুটি চারজন হলেই চলে যায়। আমাদের ব্যান্ডের দৈনিক কার্যক্রম ক্লাস ফাঁকি দিয়ে ক্যান্টিনের মেঝেতে বসে তাশ পিটানোতেই সীমাবদ্ধ ছিলো। মাঝে মাঝে আমরা তাশ পিটানোর জন্য দেশের বিভিন্ন প্রত্যন্ত অঞ্চলের যেতাম। দিনের বেলা অর্ধনগ্ন হয়ে পানিতে ঝাপাঝাপি করে সন্ধ্যার পর থেকে হোটেলে বসে তাশ পিটাতাম। তাশের মাধ্যমে আমাদের ভাগ্য নির্ধারণ হতো, কে কার সাথে মোটর সাইকেল কিংবা লঞ্চের কেবিনে চিপা খাটগুলা শেয়ার করবে। আমাদের চার জনের মধ্যে কিছু মজার কম্বিনেশন ছিলো – তিন জন মোটা সোটা (আমি এর মধ্যে ছিলাম) আর একজন শুকনা পাৎলা। কাজেই লঞ্চের বেলায় ঐ শুকনা ব্যাটাকে নিয়ে টানাটানি পড়ে যেতো। এ ব্যাপারে আবার আমার ভাগ্য সুপ্রসন্ন ছিলো। লঞ্চের কেবিনের চিপা চিপা খাটগুলাতে বসে মাঝখানে টেবিল রেখে যারা তাশ খেলেছেন তারা দৃশ্যটা কল্পনা করতে পারবেন। আবার আমার পার্টনার যিনি হতেন (মোটাদের একজন) সে ব্যাটার প্রতিভা তাঁর গানের গলাকে ছাড়িয়ে তাশ খেলার ময়দানে বিকশিত হয়েছিলো – তিনি মাঝে মাঝে ভুলে যেতো যে তিনি কোন দলের হয়ে খেলছেন।



শিল্প ও সংস্কৃতির বিস্তৃত অঙ্গনে আমাদের ব্যপ্তি লোকচক্ষুর অন্তরালে থেকে গেলেও নিজেদের নিয়ে বড়াই করতে আমাদের তুলনা ছিলো না। সময়ে অসময়ে আমরা হেঁড়ে গলায় গান ধরতাম। আমি এবং পূর্বে উল্লেখিত শুকনা আর মোটা এই দু’জনকে বাদ দিয়ে যে চতুর্থজন ছিলেন তার অসামান্য প্রতিভা ছিলো ট্রান্সলেশনে। কাঠ খোট্টা কোন লেখার অনুবাদ নয়, তিনি বাংলা ফোক গানের সুর সহ অনুবাদ করে ফেলতেন। একটা উদাহরণ দিলামঃ



উদাহরণ একঃ

“সোনা দিয়া বান্ধাইয়াছি ঘর…

ও মন রে… ঘুনে করলো জর… হোওওও জর.

আমি কি করে বাস করিবো সেই ঘরে রে,

হায়রে,

তুই সে… আমার মন!”



“Golden plated o my dear house…

O my mind, termite has eaten it, may be a mouse.

How can live in this house after this tragedy…

Alas!

You are… my mind!”



উদাহরণ দুইঃ

“নিথুয়া পাথারে, নেমেছি বন্ধুরে,

ধরো বন্ধু আমার কেহ নাই!

তোলো বন্ধু আমার কেহ নাআআই,

ধরো বন্ধু আমার কেহ নাআআই।



চিকনো ধুতিখানি

পড়িতে না জানি,

না জানি বান্ধিতে কেশ,

নাআআ জানি বাধিতে কেশ… নাআআ জানি বাধিতে কেশ… ”



“I have fallen into, deep water sea,

Hold friend, I have no one.

Pull friend, I have no one….

Hold friend, I have no one.



I don’t know how to wear

Thin loincloth,

Don’t know how to tie hair….

Don’t know how to tie hair…. Don’t know how to tie hair….”



উদাহরণ তিনঃ



“বাবুরাম সাপুড়ে,

কোথা যাস বাপু রে।

আয় বাবা দেখে যা,

দুটো সাপ রেখে যা…!”



“Baburaam snake charmer…

Where do you go, my father…

Come father see me,

Leave some snakes for meeee…”



ব্যস্‌! যথেষ্ট হয়ে গেলো। আমাদের সংস্কৃতির দৌড় ছিল ঠিক ততটুকুই। :)

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.