নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

গেন্দু মিয়া একজন সহজ সরল ভালমানুষ। তাকে ভালবাসা দিন। তার ভালবাসা নিন। ছেলেটা মাঝে মাঝে গল্পটল্প লেখার অপচেষ্টা করে। তাকে উৎসাহ দিন।

গেন্দু মিয়ার চরিত্র – ফুলের মতন পবিত্র!

গেন্দু মিয়া

কিছু জানার চেষ্টা থেকে ব্লগে আসা। সাহিত্য চর্চা করতে চাই।

গেন্দু মিয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্পঃ একজন মোটা মানুষ

৩১ শে মার্চ, ২০১৪ সকাল ৮:০০

------------------------------------



অনেকক্ষণ ধরে অভির মনটা খচখচ করছে। কাজটা করে ফেলা দরকার। কিন্তু মুশকিল হলো তাকে ইদানীং অনেক ভাবনা চিন্তা করে সব করতে হচ্ছে। সে অনেক বড় হয়ে গিয়েছে এই কথাটা তাকে সারাক্ষণ জানানো হয়। কাজেই হুট করে কিছু করে ফেলতে পারছে না। অনেক চিন্তা ভাবনা করে কার্যপদ্ধতি ঠিক করতে হবে।



প্রতিটা কাজের কিছু ফলাফল আছে, সেটা সবসময় তার ভালো নাও লাগতে পারে। আর ফলাফলের ওপর তার তো কোন হাত নেই, হাত আছে ফলাফলের আগে যে কাজ তার ওপর।



এখানে ঠিক কী হচ্ছে সে বুঝতে পারছে না। অনেকক্ষন ধরে অপেক্ষা করছে তারা। আরো কতক্ষণ থাকতে হবে সেটাও বুঝে ওঠা মুশকিল। একটু আগে তাকে জানানো হয়েছে "এইতো আর কিছুক্ষণ।" এর মানে অবশ্যই আরো অনেকক্ষন।



সব তথ্য সত্য হয় না। ইদানিং তাই অন্য কারো কাছ থেকে তথ্য না নিয়ে সে নিজে নিজেই যাচাই করার চেষ্টা করে। যেমন: "এইতো আর দুই মিনিট।" কথাটা সত্য নয়। এর মানে হচ্ছে কমপক্ষে দশ মিনিট। আর কারো কারো জন্য আরো বেশি। সে ঘড়ি দেখতে জানে না, কিন্তু সময় গুনতে পারে।সে একবারে এক দুই করে চারশো পর্যন্ত গুনে ফেলতে পারে। পদ্ধতিটা সে নিজে নিজে আবিস্কার করেছে, ডান হাতে এক থেকে বিশ পর্যন্ত গোনা যায়। বিশ হয়ে গেলে বাম হাতে এক গুনে। বিশবার বিশ হলে হয় চারশো। চারশো হয়ে গেলে সে টান দিয়ে মাথা থেকে একটা চুল ছিঁড়ে ফেলে, তারপর হাতে বা পকেটে রেখে দেয়। সে অংকে ভালো, তাই কয়টা চুল হলো গুনে সে বলে দিতে পারে কতক্ষন সময় অপেক্ষা করছে। আজকে ছয়টা চুল হবার পর বুকপকেটে রেখেছিলো, এখন খুঁজে পাচ্ছে না। আবার নতুন করে গোনার উৎসাহ পাচ্ছে না।



কাজটা করে ফেলা খুব প্রয়োজন। অভি চিন্তিত বোধ করে। একটু আগে রোদ উঠেছিলো। এখন তারা ছায়ায় এসে বসেছে। আস্তে আস্তে বাতাস দিচ্ছে। এতে তার অসস্তিটা আরো বেড়ে যাচ্ছে।



অভি আসেপাশে তাকালো। পাশে একটা মোটা লোক এসে বসেছে। চশমা পড়া, হাতে একটা মোবাইল ফোন, টেপাটিপি করছে। গেম খেলছে মনে হয়। এতক্ষণ অপেক্ষা করতে হবে জানলে সেও সময় পার করার জন্য কিছু না কিছু নিয়ে আসতো। তার একটু একটু রাগ উঠছে, তাকে কেউ ঠিকমতো তথ্য দেয় না কেন?



মোটা লোকটা হাসি হাসি মুখ করে তাকাচ্ছে। আচ্ছা লোকটা কি বুঝে ফেলেছে? অভি দেখেছে অনেক এরকম করে তাকিয়েই বুঝতে পারে। তাদের দেখলে অভির রাগ লাগে। এই মোটা লোকটাকে দেখেও অভির রাগ লাগছে। উনি একটু পর পর তাকে দেখছেন আর মোবাইলে কি যেন টেপাটিপি করছেন। অদ্ভুত লোক!



হাতে বেশি সময় নেই। একটা কিছু প্ল্যান করা দরকার। কারো সাহায্য চাইতে ইচ্ছে করছে না। নিজে নিজে কী করা যায় তাই ভাবতে হবে। আচ্ছা উঠে দৌঁড় দিলে কেমন হয়? এক দৌঁড়ে ঐ বড় বিল্ডিংটার আড়ালে চলে যাবে, কেউ খুঁজে পাবার আগেই আবার ফেরত চলে আসবে। কেউ ধরতে পারবে না। নাহ। অনেক লোক বসে আছে এর মধ্যে কেউ একজন দৌঁড় দিলে সবাই তাকাবে। উদ্দেশ্যটা সফল হবে না।



আচ্ছা লোকটা এতো মোটা কেন? নিশ্চয়ই অনেক খায়। অভির খাওয়া দাওয়া একদম ভালো লাগে না। কিন্তু সে দেখেছে অনেকেই খাওয়া দাওয়া পছন্দ করে। তারা সাধারনত মোটা হয়। আচ্ছা মোটা লোকেরা খাওয়া এতো পছন্দ করে কেন? লোকটার পাশে একটা পানির বোতল। অভি এতক্ষণ লক্ষ করেনি। উনি বোতলটা হাতে নিতেই অভির নজরে পড়লো। লোকটা পানি খাবে।



এই সেরেছে! পানির কথা সে মনে করতে গেলো কেন? এখন বিপদ, সমূহ বিপদ। অভি ঠিক করে ফেলে, আর সম্ভব না। কালকে যে গল্পটা সে ঠিক করেছিলো, সেটা আজকে কাজে আসবে। যে নিচু পাঁচিলটাতে তারা বসেছিলো সে তার ওপর দাঁড়িয়ে যায়। তারপর উল্টো ঘুরে প্যান্টের চেইন নামিয়ে ছড়ছর করে ছেড়ে দেয়। মোটা লোকটা কৌতুহলী হয়ে তাকিয়ে আছে। থাকুক, কিছু করার নেই।

...................



মাহফুজ সাহেব তাঁর সাড়ে চার বছরের পুত্রের দিকে হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে আছেন: "কী করলা তুমি এইটা, আব্বু?"



অভি হাসি হাসি মুখ করে বললো: "আব্বু জানো হইসে কী? একটু আগে একটা এলিয়েন আসছিলো। আমাকে বলসে যদি এখনি পিপি না করি তাইলে আমাকে মারবে।"



মাহফুজ সাহেব উৎকন্ঠা বোধ করলেন। তার পুত্র অতি বুদ্ধিমান। হঠাৎ করে একটা কুকর্ম করে সাথে সাথে বানিয়ে বানিয়ে একটা গল্প বলে দেয়। মনোযোগ অন্যদিকে নিয়ে যাবার প্রচেষ্টা। এখন আধুনিক যুগ। আগের মত কষে চড় দেয়া যায় না।



বুয়েট ক্যান্টিনের সামনে নিচু পাঁচিলটাতে তারা বসে ছিলেন। দেড় ঘন্টার মধ্য এক ঘন্টা পার হয়েছে। আরো আধা ঘন্টা।



মাহফুজ চিন্তিত বোধ করেন। এই ছেলে কি বড় হয়ে রাজনীতিবিদ হবে নাকি!



................................



পাশের মোটা লোকটা মুঠোফোনে লেখা নোটটা সেভ করে হাসি হাসি মুখ করে উঠে পড়লেন। তার স্ত্রীর পরীক্ষা শেষ হতে দেরী আছে। এবার একটু হাঁটাহাঁটি করা দরকার। ছাত্রজীবনে প্রায়ই বুয়েটে আসতেন। একটু স্মৃতিচারণ করা যাক।



(শেষ)

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ৩১ শে মার্চ, ২০১৪ সকাল ১০:২০

মামুন রশিদ বলেছেন: আপনার গল্পের প্রথম পাঠক :-B


গল্প ভাল হয়েছে । একজন জনপ্রিয় সাহিত্যিকের ছায়া স্পষ্ট হলেও অবিরাম লেখালেখিতে স্বকীয় স্টাইল দাড়িয়ে যাবে বলেই আশা রাখি ।

আপনার কাব্য প্রতিভা নিয়ে কখনোই সন্দেহ ছিল না, গল্পেও তার প্রমান রাখবেন বলেই মনে হচ্ছে ।

৩১ শে মার্চ, ২০১৪ বিকাল ৩:৩১

গেন্দু মিয়া বলেছেন: মামুন রশিদ ভাই, আমি কিন্তু শফিক আফতাব নই। উনার তিনটা নিকের একটা আমার সাথে মিলে যায়। :(

উৎসাহ পেলাম ভাই। দোয়া কইরেন যেন একদিন এভারেস্ট ছুঁতে পারি। :)

বাই দ্য ওয়ে, হুমায়ূন আহমেদের কথা বলছেন? আমার খুব প্রিয়। উনার লেখা পড়ে পড়ে লেখার চেষ্টা করি। :)

২| ০১ লা এপ্রিল, ২০১৪ ভোর ৪:৩২

রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: ভালো হয়েছে, যদিও শেষটা একটু হঠাৎ হয়ে গেল মনে হচ্ছে। আরেকটু টানলে মন্দ হতো না।

০১ লা এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ৮:২৪

গেন্দু মিয়া বলেছেন: ধন্যবাদ! :)

৩| ০১ লা এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ৯:০০

এহসান সাবির বলেছেন: লেখক বলেছেন: মামুন রশিদ ভাই, আমি কিন্তু শফিক আফতাব নই।

তাহলে কে আপনি?

শফিক আফতাব আমার খুব প্রিয় কবি।

গল্পে +

০২ রা এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ১১:৪৩

গেন্দু মিয়া বলেছেন: আমি এক অভাজন ভাই। ওনার পায়ের নখের যোগ্যও নই।

আমি এই নিক নিয়ে মাস ছয়েক লেখার পর একদিন জানতে পারি, এই নামে আরেকজন ব্লগিং করেন। তার তিনটা নিকের একটা হচ্ছে গেন্দু মিয়া।

ওনার গেন্দু মিয়া নিক-এ গেলে উপরে অ্যাড্রেস বারে দেখবেনঃ gandu.miah.007

আর আমারটাতে দেখবেনঃ gendumia

আমি লেখালেখি শুরু করি এই নিক নিয়ে। এই একুশে বইমেলায় একটা গল্প সংকলনে আমার লেখা একটা ছোটগল্প স্থান পায়। এতো স্মৃতি এই নিকটার সাথে যে ছেড়ে যেতে ইচ্ছে করছে না।

গল্প পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ। নিক চেঞ্জ করার কোন উপায় থাকলে জানাবেন। মডারেটরদের কাছে ধর্না দিয়ে লাভ হয়নি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.