নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

গেন্দু মিয়া একজন সহজ সরল ভালমানুষ। তাকে ভালবাসা দিন। তার ভালবাসা নিন। ছেলেটা মাঝে মাঝে গল্পটল্প লেখার অপচেষ্টা করে। তাকে উৎসাহ দিন।

গেন্দু মিয়ার চরিত্র – ফুলের মতন পবিত্র!

গেন্দু মিয়া

কিছু জানার চেষ্টা থেকে ব্লগে আসা। সাহিত্য চর্চা করতে চাই।

গেন্দু মিয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

আঁতেলীয় আলোচনা - সৌভাগ্য

১৮ ই নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:২০

সৌভাগ্য একটি আপেক্ষিক জিনিস।

কে যে কোন ঘটনায় নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করবে, তা কোন যৌক্তিক নকশায় ফেলা নিতান্তই মুশকিল। কেউ সব কিছু পেয়েও খুশি নয়। আবার কেউ কিছু না পেয়েও খুশি।

নাসিরুদ্দিন হোজ্জা, বীরবল বা গোপাল ভাঁড়ের গল্প পাল্টাপাল্টি করে প্রচারিত হয়। সেরকম একটা গল্প শুনলাম আমার সহধর্মিণীর কাছ থেকে। গল্পটা এরকম:

এক লোক ছিল, মহা বড়লোক। প্রচুর সহায় সম্পত্তি, পারিবারিক ব্যবসা, সবমিলিয়ে বেশ সচ্ছল অবস্থা। কোন কিছুর অভাব নেই। তো, ব্যাপার হল তার কিছুই ভাল লাগেনা। কোন কিছুতেই সে খুশি নয়। তার কথা হচ্ছে - সে কিছুতেই আনন্দ পায় না। শহর জুড়ে সবাই তাকে অসুখী একজন হিসেবে চেনে।

একদিন সে তার পুত্রকে নিয়ে বাজারে যাচ্ছিল। আমাদের নায়ক (হোজ্জা, বীরবল কিংবা গোপাল) তার পাশে পাশে হাঁটছিল। হঠাৎ সে করলো কি, লোকটার পুত্রকে কে কোলে তুলে নিয়ে দিল এক দৌঁড়। লোকটি হকচকিয়ে গেল। ইতিকর্তব্য ঠিক করতে না পেরে সে-ও পেছনে পেছনে দৌঁড়াতে শুরু করল। চেঁচাতে লাগল - 'চোর চোর, কেউ একে থামাও।'

তো, মাইলখানেক দৌঁড়ানো এবং ধাওয়ার পর লোকটি যখন অবশেষে ছেলেধরার নাগাল পেল তখন আমাদের নায়ক তাকে তার পুত্র ফেরৎ দিয়ে দিল। লোকটি তো পুত্র ফেরৎ পেয়ে মহাখুশি। সে সজোরে বলে ফেলল - 'আহ আমি খুশি। আমার ছেলেকে ফিরে পেয়েছি।'

আমাদের নায়কও মুচকি হাসতে হাসতে চলে গেল। মনে মনে ভাবল - 'যাক লোকটিকে কিছুটা হলেও খুশি দিতে পেরেছি।'

আমাদের সমাজে বেশিরভাগ লোকই এরকম। হাতের জিনিস না খোয়ানো পর্যন্ত কেউ উপলব্ধি করেন না যে 'খুশি' কী জিনিস!

এর উল্টোটাও আছে। কিছু মানুষ যে কোন পরিস্থিতিতেই ভাল দিকটা খুঁজে নিতে পারে।

এ প্রসঙ্গে আমার এক ঘনিষ্ঠ বন্ধুর অভিজ্ঞতা বলি।

ছেলেটা সহজ সরল ভালমানুষ, বিরল কিছু প্রতিভার অধিকারী। আসেপাশের সবাইকে বিনোদন দিয়ে বিমোহিত করে রাখে সারাক্ষণ। ছেলেটার সব ভাল, কিন্তু কিছু কিছু বিষয়ে তার বেজায় ভয়। যেমন - রাস্তার কুকুর, ভুত ইত্যাদি।

ছেলেটা মাঝে মাঝে মোবাইল ফোন কেনে এবং হারায়। তো একবার হল কি, সে নতুন একটা মোবাইল ফোন কিনে বাসায় নিয়ে গেল এবং রাতে বিছানায় শুয়ে সেটা নিয়ে নাড়াচাড়া করতে করতে ঘুমিয়ে গেল। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, তার বাসা দোতলায় এবং তার শোবার খাটিয়াটা জানালার পাশে। জানালায় যথারীতি গ্রিল, লোহার জাল ইত্যাদি লাগানো আছে, এবং ঘুমানোর সময় মশারীও টাঙানো থাকে। মোবাইল ফোনটা জানালা যেদিকে তার উল্টোদিকে রাখা ছিল।

তো, সে সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে লক্ষ করল যে জানালার গ্রিল কাটা, লোহার জালে নিখুঁত বৃত্তাকারে ছিদ্র করা, এবং একই রকম আরেকটা বৃত্তাকার ছিদ্র তার মশারীতে। মাথার উল্টোপাশ থেকে মোবাইল ফোনটা নেই।

পরদিন আমরা শুনে আফসোস করে বললাম, - 'বন্ধু হে, গ্রিল কাটার সময়, লোহার জালটি ফুঁটো করার সময়, কিংবা মশারী ছেঁড়ার সময়, নিদেন পক্ষে তোকে ডিঙিয়ে ফোনটা নেবার সময় যদি তোর ঘুম ভাঙতো, তাহলে হাতেনাতে চোর ব্যাটাকে ধরতে পারতি। সদ্য কেনা ফোনটাও বেঁচে যেত।'

শুনে সে বলে, - 'আরে আরে বলিস কী? ব্যাটা নিশ্চয়ই মাঝরাতে এসেছিল। আর যদি মাঝরাতে উঠে দেখতাম একটা মুশকো কালো হাত জানালা দিয়ে বেরিয়ে এসে আমার ওপর দিয়ে গিয়ে কিছু একটা হাতিয়ে নিচ্ছে তা'হলে আমি জায়গামতো হার্টফেল করেই মারা যেতুম। ভাগ্য আমার নিতান্তই ভাল।'

আমরা বুঝলাম, কথা ঠিক। সে এক ভয়ানক দৃশ্যই হত বটে!

তার কথা তখনো শেষ হয়নি। '... এই যে এত কিছু ঘটে গেল, আর আমি টেরটুকু পেলুম না, এর অর্থ কী, জানিস?'

দারুণ প্রশ্ন। উত্তরের অপেক্ষায় উত্তেজনাকর কিছু মুহুর্ত কাটলো।

উত্তর এল - 'এর অর্থ হচ্ছে, গতরাতে ঘুমটা হয়েছে জম্পেস।'

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৪:৪০

মামুন রশিদ বলেছেন: আলোচনা ভালো লেগেছে । অতোটা আঁতেলীয় নয়!

১৮ ই নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:১৬

গেন্দু মিয়া বলেছেন: ধন্যবাদ ভ্রাতা! :)

২| ১৮ ই নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৪:৫৪

এহসান সাবির বলেছেন: ভালো লিখেছেন।


ঐ সময় ঘুমটা জম্পেসই হয়....!!

১৮ ই নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:১৬

গেন্দু মিয়া বলেছেন: সেটাই।

অন্যান্য সময় ঘুমই আসতে চায়না।

৩| ১৮ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:৫৬

অন্ধবিন্দু বলেছেন:

খোয়াতে খোয়াতে শিক্ষা পাওয়া উত্তমতর শিক্ষা।

১৯ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:২৬

গেন্দু মিয়া বলেছেন: অতীব চমৎকার বলেছেন ও অন্ধবিন্দু।

আপনার সুস্বাস্থ্য কামনা করছি। :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.