নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আইলস্যা ব্লগার

একজন ঘূণপোকা

ফেইসবুকেঃfacebook.com/ghunpokareturnঘূণেধরা সমাজের আমি এক ঘূণপোকা। ধ্বংশ করে চলেছি নিজের সমাজ, সংসার, প্রিয়জনের স্বপ্ন, রাষ্ট্র।মাঝে মাঝে নিজেকে কেবল সংখ্যা ছাড়া আর কিছুই মনে হয়না। ছোটকালে স্কুলের সামাজিক বিজ্ঞান বইয়ে পড়া অধিক জনসংখ্যা কুফলগুলোতে মনে হয় আমিও একটু মাত্রা যোগ করেছি।জীবনে কোন কিছুই সিরিয়াস মত করি নাই। না জীবন-যাপন,না পড়াশোনা, না প্রেম। আর ব্লগিং তো নয়-ই। এইজীবনে যেই জিনিসটা নিরলসভাবে করেছি তা হচ্ছে আইলস্যামি।আইডিয়া মাথায় কিলবিল করে, আমারও সামর্থ্য ছিলো সমাজ পরিবর্তনের। কিন্তু আইলস্যামির জন্য করা হয়নি কিছুই। না ফুল, না কাটা।

একজন ঘূণপোকা › বিস্তারিত পোস্টঃ

একজন রাস্তা বন্ধ কইরা, অফিসে যাইবো, আরেকজন এক মাইল ফাও হাটাইবো। আর এইসব কারনে দেরি কইরা অফিসে গেলে মালিক আমারে চুমাইবো? /:)/:)/:)

৩০ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:৩৬

বন্ধি হাতেও প্রতিবাদের শেষ আশা আর আমাদের উনাকে নিয়ে হাসাহাসি, হীনমন্যতা




আমেনা বেগমের মাথায় একটা চিন্তাই কেবল ঘুরছে।
৩৮০ টাকা।

এই তিনশ আশি টাকা দিয়ে সে অনেক কিছু করতে পারবে। সামনে শীত আসছে। তার ছেলেটার এমনিতেই ঠান্ডার বাতিক আছে। এই টাকা দিয়ে সে তার তিন বছরের বাচ্চার জন্য ঢাকা কলেজের সামনে থেকে অন্তত দুই সেট শীতের জামা কিনতে পারবে। যখন এক টানা অনেক দিন কুয়াশা থাকবে, তখন বাচ্চাদের কয়েক সেট শীতের জামা লাগে। কারন বাচ্চারা বড্ড তাড়াতাড়ি কাপড় নোংরা করে। রোদের দেখা থাকে না বলে, ধুয়ে দিলেও সহজে শুকাতে চায় না। তখন বাড়তি এক সেট জামা অনেক উপকারে দেয়।

কিন্ত সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে এই তিনশ আশি টাকার ভরসায়, সে অনেকগুলি বাড়তি খরচ করে ফেলেছে। তার এমনিতেই স্বামীবিহীন টানাটানির সংসার, একটা টাকা বাড়তি খরচ করার উপায় নাই।

যেমন প্রথমবার অফিস থেকে ফেরার পথে ফার্মগেইটে সুন্দর সুন্দর লাইট-জ্বলা প্লাস্টিকের খেলনা বল দেখে পছন্দ হয়ে যায় এবং বাচ্চার জন্য একটা কিনেও ফেলে। ভাবে, হাজিরা বোনাস ৩৮০ টাকা তো আছে।
দ্বিতীয়বার লাল বুড়িকে একটা কাপড় কিনে দেয় ২০০ টাকা দিয়ে, ফেরিওয়ালা বাসার সামনে নিয়ে আসছিলো। বুড়ির এমনিতেই ভালো কোন কাপড় নেই, তার উপর কাপড়টা বুড়ির অনেক পছন্দ হয়ে গেছে। কিন্তু টাকার অভাবে বুড়ি কিনতে পারছিল না বলেই সেই কিনে দেয়।
কারন সে যখন অফিসে চলে যায়, পিচ্চিটাকে তো এই বুড়িই দেখে রাখে, এই বুড়ির জন্যই তো সে চাকুরিটা করে খাচ্ছে। না হলে এই অপরিচিত ঢাকায় সে কার কাছে তার তিন বছরের বাচ্চটাকে রেখে চাকুরি করত? রক্তের সম্পর্কহীন এই বুড়ি যে যত্নের সাথে গত একটা বছর ধরে এই পিচ্চিটাকে দেখে রাখছে, সেই ঋণ কোনভাবেই শোধ করার না।

এইসব সাত পাচ ভেবে সে, বুড়িকে কাপড়টা কিনে দেয়। হাজিরা বোনাস থেকে শোধ করে দেয়া যাবে এই ভরসায়।

কিন্তু আজকে মনে হয়, ওর হাজিরা বোনাসটা মিস হবে। বিজয়-সরণির মোড়ে জ্যামে আটকে আছে দশ মিনিট ধরে। কি ঢঙ্গের ভিআইপি যাবে সে জন্য রাস্তা বন্ধ। এইসব ভিআইপি-রা জন দুর্ভোগ বাড়াতে পারে কিন্তু কমাতে পারে না। মাসে ত্রিশ দিনের মধ্যে একদিন এক মিনিট লেইট হলেই হাজিরা বোনাস পুরাটা মাইর।

সবাই আছে খালি গরীম মারার ধান্ধায়।

সার্ক ফোয়ারার সামনে বাস থেকে নেমেই আমেনা বেগমের মনে হলো, সে বড় একটা ভুল করে ফেলেছে। কিন্তু এত টুকু পিছনে গিয়ে ঘুরে আসতে গেলে দেরী হয়ে যাবে।

হাজিরা বোনাস মিস করা যাবে না, মনে মনে এইটা বলেই, আমেনা বেগম দৌড়ে রাস্তা পার হতে শুরু করলো। হঠাত কোথা থেকে যেন দুইজন পুলিশ এসে ওকে থামতে বলে। ও না থেমে দৌড় শুরু করে, অফিসে লেইট হয়ে যাচ্ছে।

কিন্তু একজন মহিলা পুলিশ ওকে ঝাপটে ধরে। সে প্রাণপনে ছোটার চেস্ট্রা করে।হাত আটকে থাকার জন্য তার সব চেস্টা ব্যর্থ হয়। শেষে সে পুলিশের হাত কামড়ে দেয়।

পুলিশের বড়কর্তা আমেনা বেগমের এহেন সাহস দেখে স্তব্ধ হয়ে যায়।
- এই মহিলা তুমি মানুষ না, বিচ্ছু? ওভার ব্রীজ দিয়ে পার হউ নাই। আবার পুলিশের হাতে কামড়? সাহস তো কম না!
- এখানে কি ওভার ব্রীজ আছে?? কী দিয়ে পার হব??
- কেন এটিএন এর সামনে আন্ডার পাশ আছে না?
সার্ক ফোয়ারার এখানে থেকে আধা মাইলে পিছে গিয়ে, আন্ডার পাশ দিয়ে রাস্তা পার হয়ে আধা মাইল আবার সামনে আসব? মজা করেন? একজন রাস্তা বন্ধ কইরা, অফিসে যাইবো, আরেকজন এক মাইল ফাও হাটাইবো। আর এইসব কারনে দেরি কইরা অফিসে গেলে মালিক আমারে চুমাইবো? আমি কি আপনের বাপের অফিসে চাকুরী করি?

মহিলার এমন কথায় এএসপি সাহেব, বাকরুদ্ধ হয়ে যান। তাদের ভয়ে যেখানে বিএনপির বড় বড় নেতারা এক ঘাটে পানি খায়। সেখানে কিনা এই মহিলা এমন করে কথা বলার সাহস পায়? মহিলার কথা শুনে উনার প্রায় স্ট্রোক হয়েই যাচ্ছিল। অনেক কস্টে স্ট্রোকটা আটকেছেন।

আইন অমান্য, সরকারী কাজে বাধা, দ্বায়িত্বরত পুলিশকে কামড়ানোর অপরাধে তার এক মাস বিনাশ্রম জেল হয়।

এদিকে সন্ধ্যা পার হয়ে রাত হয়ে যাচ্ছে। মাকে না পেয়ে আমেনা বেগমে ছেলেটার কাদতে কাদতে গলা ভেংগে গেছে।






--
বিঃদ্রঃ ঘটনাটা ইতিমধ্যে সবাই জেনে গেছেন । পুলিশের হাত কামড়ে এক মধ্যবয়স্ক নারী জেলে গিয়েছেন।
এই খবরটা দেখেই গল্পটা লিখতে ইচ্ছা হলো।বাস্তবটা এতটা খারাপ না হক, এমনটাই আশা করবো।

মন্তব্য ১৮ টি রেটিং +৭/-০

মন্তব্য (১৮) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:৫৭

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: প্রহসনের নির্বাচনে নির্বাচীত সরকারে প্রহসনের আইনের ভোগান্তি!!!

আরেক কথিত ফাটাকেস্ট মন্ত্রী ব্যাকআপ না রেখেই ফিটনেস অভিযানে নেমে পড়লেন!! ব্যাস সিটিং চিটং বাসেও মানুষ বাদুর ঝোলা হয়েও অফিস যাবার উপায় নেই।

দেরী করলে শোকজ খাও!!!

নবাব জাদারা অফিসগাশী প‌্যাসঞ্জার ভর্তি বা আটকায়া ২০-৪০ মিনিট লেট করায়... অথচ যেখানে একটা টিকিক ধরায়া দিয়া ফেরত আসার সময় বা অন্য সময় সেই জরিমানা আদায় করা খুবই সম্ভব!!!

যার যেমন খূশি তেমন সাজার খেলা চলছে যেন -এ দেশে!!!!

২| ৩০ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:৫৭

দীঘল গঁাােয়র েছেল বলেছেন: পড়ে বেশ ভাল লাগল।

৩| ৩০ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:৪০

আল-শাহ্‌রিয়ার বলেছেন: বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। সত্যি কথা হল বলে কি'বা লাভ হবে!!

৪| ৩০ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:৫৮

কলাবাগান১ বলেছেন: এই আপনারা এখন যারা সমালোচনা করছেন যে এটা সরকারের দোষ কেন পথচারীদের ধরা হচ্ছে (ব্যাক আপ না রেখে), আপনারাই আবার যখন মানুষ মারা যাবে রাস্তা পার হতে তখন আবার বলবেন এই সরকারের আমলে কোন আইন নাই ...আইনের কোন প্রয়োগ নাই...পুলিশে টাকা খেয়ে লোক পার হতে দিচ্ছে

"Damned if you do, damned if you don't."

৫| ৩০ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:৫৬

মামুন রশিদ বলেছেন: ঠিক কথা, সবাই আছে শুধু গরীব মারার ধান্দায় ।


ভিআইপিদের জন্য যে দেশে পাবলিক রোড বন্ধ করে দেয়া হয়, সেই দেশে অবৈধ রাস্তা পারাপারের জন্য জরিমানা করা অন্যায় ।

৬| ০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:০২

প্রশান্ত মন বলেছেন: সবাই আছে শুধু গরীব মারার ধান্দায়।

৭| ০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:৩৬

আবু শাকিল বলেছেন: ব্লগার কাল্পনিক ভালবাসার ফেবু স্ট্যাটাস এইখানে কপি-পেস্ট দিলাম--

"সরকারের সবোর্চ্চ কর্মকর্তার নিরাপদ এবং টাইমমত অফিসে আসা নিশ্চিত করতে যখন সকল ক্ষমতার মালিক সাধারন জনগনকে প্রায় ৪০ মিনিট রাজপথে বসে থেকে নিজের অফিস টাইমের চৌদ্দটা বাজাতে হয়, তখন মনের গহীনে যে অভিব্যক্তি ফুটে উঠে ৫৭ ধারার আলোকে তা মনের গহীনে প্রকাশ করার সুশীল নাম বাকদায়িত্বশীলতা। এই দায়িত্বশীলতা জনগনকে বুঝতে বাধ্য করে যে - তারা সকল ক্ষমতা নয় বরং ক্ষমতার অপব্যবহার সহ্য করার একটি বৈধ মাধ্যম।"

৮| ০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:৫৪

আহসানের ব্লগ বলেছেন: কী বলমু বুঝতেসিনা।

৯| ০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:৩৯

অপূর্ণ রায়হান বলেছেন: এদের দায়িত্বজ্ঞানহীনতায় মুগ্ধ হয়ে যেতে হয় । সঠিক প্রচার প্রচারণা নাই । অনেক স্থানে আন্ডার পাস ও ওভার পাস নাই । থাকলেও তা বেশ দূরে দূরে । যেই প্রশাসনের নিয়মের বালাই নাই , তারা নিয়ম শেখাবে ! বিকল্প সু ব্যাবস্থা না রেখে জোড় করে পাবলিককে দিয়ে কিছু করানো যাবে না বলেই মনে করি ।

অনেক দিন পরে ব্লগে পোস্ট দিলেন ভ্রাতা । খুশি হলাম ।

ভালো থাকবেন :)

১০| ০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:৩২

সোহানী বলেছেন: কি বলবো বুঝতে পারছি না...... খুব খারাপ লাগছে লিখাটা পড়ে...

১১| ০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:৪২

পার্সিয়াস রিবর্ণ বলেছেন: সরকার এই বিষয়ে আরেকটু ভেবে-চিন্তে পরিকল্পনা নিতে পারতেন । সাধারণ মানুষের ভোগান্তি কোনভাবেই কমেনি বরং অনেকখানি বেড়েছে ।

লেখা ভালো লাগলো ।

১২| ০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:০৬

মুদ্‌দাকির বলেছেন:
ওদের টাকা কারো শত কোটি কারো হাজার কোটি কিন্তু ৩৮০টাকার মূল্য ওরা কোনদিনও বুঝবে না ।

১৩| ০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১:১৯

কলমের কালি শেষ বলেছেন: :( :(

১৪| ১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:১২

রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: বাস্তবটা এতটা খারাপ না হক, এমনটাই আশা করবো।

১৫| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:০৮

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: এই অবস্থার উত্তরণ কামনা করছি ।

১৬| ২৪ শে জুন, ২০১৫ ভোর ৬:৫৬

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: অনেক ভালো একটি লেখা পড়লাম।

১৭| ০৪ ঠা মার্চ, ২০১৬ রাত ৮:৩৬

বিজন রয় বলেছেন: নতুন লেখা দিন।

১৮| ১৪ ই জুন, ২০১৭ বিকাল ৪:২৯

বিজন রয় বলেছেন: ব্লগে ফিরে আসুন, নতুন পোস্ট দিন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.