নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

প্রিয় বিবেক

প্রিয় বিবেক › বিস্তারিত পোস্টঃ

ডাক্তার, পুলিশ, ম্যাজিস্ট্রেট এবং মুক্তিযুদ্ধ!

১৮ ই এপ্রিল, ২০২১ রাত ১০:৫৮

ডাক্তার, পুলিশ, ম্যাজিস্ট্রেট এবং মুক্তিযুদ্ধ!

হোম পেইজে আজ একটি ভিডিও বারবার চোখে পড়ছে। ইতোমধ্যে অনেকেই হয়তো তা দেখেছেন। ভিডিওটি এক ডাক্তারের সাথে পুলিশ এবং ম্যাজিস্ট্রেটের বাকযুদ্ধের। আর সেই বাকযুদ্ধের শুরুটা বর্তমান লকডাউন পরিস্থিতিতে মুভমেন্ট পাস নিয়ে।

ভিডিওতে দেখা গ্যাছে, এক ডাক্তার মহিলার গাড়ি থামিয়ে মুভমেন্ট পাস ইস্যুতে পুলিশ তার আইডি কার্ড দেখতে চেয়েছে। তখন মহিলা বলেন তিনি একজন ডাক্তার এবং ডাক্তারের আবার কীসের মুভমেন্ট পাস? তাছাড়া করোনায় জীবন গ্যাছে কয়জন ডাক্তারের………!

আমরা জানি, করোনা মহামারীতে ডাক্তারদের ত্যাগ এবং ভালোবাসার কথা। করোনার এমন সংকটময় পরিস্থিতিতে যে পেশার মানুষ সবার সামনে থেকে দেশকে নেতৃত্ব দিয়েছে সে পেশার নাম ডাক্তার। দেশের মানুষকে সুস্থ করে তুলতে তারা যে আত্মত্যাগ করেছে তাদের সে অবদানের কথা জাতি কখনও ভুলবে না। তবে এটাও ভুলে গেলে চলবে না যে, প্রশাসন তথা আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও করোনা সিচুয়েশনে দেশের জন্য কম অবদান রাখেন নি। আমাদের নিরাপত্তার কথা ভেবে দীর্ঘদিন তারা সেবা দিয়ে গেছেন। এমন পরিস্থিতিতে ব্যাংকার থেকে শুরু করে আরও অনেকেই আছেন। কারও অবদানই ফেলে দেওয়ার মত নয়।
যে কথা বলছিলাম, পুলিশ ডাক্তার মহিলার গাড়ি থামিয়ে আইডি কার্ড দেখতে চেয়েছেন। তারপরই গন্ডগোল বাঁধতে শুরু করলো।

আমরা জানি লকডাউন পরিস্থিতিতে ১৮ শ্রেণির মানুষের কোন মুভমেন্ট পাস লাগে না। তার মধ্যে এক নম্বরে রয়েছে ডাক্তাররা। তার মানে, কোন ডাক্তার লকডাউনের মধ্যে বাইরে বের হলেও তার মুভমেন্ট পাস লাগবে না।

এখন কথা হচ্ছে, আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা কীভাবে বুঝবেন কেউ ডাক্তার কি না! কারও চেহারায় তো আর ডাক্তার লেখা থাকে না। অনেকেই হয়তো বলবেন গায়ে এপ্রোন পরা কিংবা গাড়িতে লগো থাকার মানেই তো সে ডাক্তার। আসলেও কি তাই? অন্য পেশার মানুষও তো গায়ে এপ্রোন পরতে পারে কিংবা গাড়িতে লগো লাগিয়ে নিতে পারে। তাই বলে কি তারা ডাক্তার? তা তো নয়! তার মানে লকডাউন সিচুয়েশনে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সহজে যেভাবে বুঝতে পারবেন যে ডাক্তার যাচ্ছে এবং তাদের যাওয়ার সুবিধা করে দিতে হবে, এর সহজ সমাধান হল তার আইডি কার্ড। রাইট? এক্সক্টলি!

আমরা ভিডিওতে তো সেটাই দেখলাম, পুলিশ মহিলার আইডি কার্ড দেখতে চেয়েছেন। তারপর মহিলা বললেন, তিনি আইডি কার্ড নিয়ে আসেন নি। হয়তো ভুলে বাসায় ফেলে আসছেন। এটা হতেই পারে। খুব স্বাভাবিক ঘটনা। কিন্তু যেহেতু উনি আইডি কার্ড নিয়ে আসেন নি তাহলে পুলিশ সদস্য কিভাবে বুঝবেন উনি আসলেই ডাক্তার নাকি ভুল পরিচয় দিয়ে পার পেতে চাচ্ছেন! কিভাবে বুঝবে? কারণ, প্রতিদিন অহরহ এমন ঘটনা ঘটছে।

আর যদি ধরেই নিই, উনি সত্যিই একজন ডাক্তার তাহলে তিনি এই বিষয়টা পুলিশকে সফটলি বললেই তো পারতেন। উনি সফটলি বলার পরেও যদি পুলিশ সদস্য সেটা না বুঝতেন তাহলে না হয় মেনে নিতাম যে এখানেও পুলিশের দোষ। কিন্তু এখানে তো তা হয় নি। উল্টা ওই মহিলা পুলিশ সদস্যকে তুই তোকারি থেকে শুরু করে গালি গালাজ অবধি দিয়েছেন আর। তাহলে?

আমি বলছি না যে, পুলিশ মানেই ফেরেশতা। পুলিশের অনেক দোষ আমরা নানান সময় দেখেছি এবং আমি সেগুলো নিয়ে কথা অবধি বলেছি। তবে আজকের পরিস্থিতি ভিন্ন। তাই একদম নিরপেক্ষ জায়গা থেকে কথাগুলো বলার প্রয়োজন অনুভব করছি।

তারপর আমরা কী দেখলাম? মহিলা নিজেকে জাহির করার চেষ্টা করেছেন নানান ভাবে। এরপর আসলো ডাক্তার-পুলিশ-ম্যাজিস্ট্রেটের বাবার মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় প্রসঙ্গ। কেন রে ভাই? এখানেও কেন বাবার মুক্তিযুদ্ধের প্রসঙ্গ টেনে আনতে হবে? সন্তান দোষ করবে আর পার পাওয়ার জন্য টেনে আনা হবে বাবার মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গ? ইজন’ট ইট লেইম?

তারপর দেখলাম, মহিলা পুলিশকে লক্ষ করে বলছেন তিনি চান্স পেয়েছেন দেখেই তিনি আজ ডাক্তার আর পুলিশ চান্স পাননি দেখে তিনি আজ পুলিশ? ইতোমধ্যে অনেককেই দেখলাম এই লাইনকে লগ লাইন বানিয়ে পোস্ট দিতে। মানে কী এসবের বলতে পারেন? মহিলা যেভাবে বলছেন সেভাবে নাও তো হতে পারে। এমনও তো হতে পারে যে লোকটি আজ পুলিশ কিংবা ম্যজিস্ট্রেটের দায়িত্ব পালন করছেন তারা হয়তো কোনদিন ডাক্তার হতেই চান নি। পুলিশ কিংবা ম্যাজিস্ট্রেট হতে চেয়েছেন কেবল! হতেই তো পারে, তাই না? তাহলে কী প্রয়োজন এমন অহমের? দেশের সবচেয়ে মেধাবী মানুষগুলোর কথা হবে সর্বোচ্চ মেধাবীর মত। কিন্তু তা যখন ব্যক্তি অহমের পর্যায়ে পৌঁছে যায় তখন খুব আফসোস লাগে!

একজন পুলিশ খারাপ হলে সেটা দিয়ে যেমনিভাবে সকল পুলিশকে জাজ করা ঠিক না, একইভাবে একজন ডাক্তার খারাপ আচরণ করলে তা দিয়ে বাকি ডাক্তারদের জাজ করা ঠিক না। ব্যক্তিগত সম্পর্কের জায়গা থেকে নম্র, ভদ্র এবং অসম্ভব বিনয়ী ডাক্তার যেমনিভাবে দেখেছি তেমনিভাবে নম্র, ভদ্র এবং অসম্ভব বিনয়ী পুলিশ কিংবা ম্যাজিস্ট্রেটও দেখেছি। তাই বলি কী, ব্যক্তি দিয়ে প্রফেশনকে জাজ করা ঠিক নয়।

তবে কেউ ভুল করলে তার ভুল শুধরে দেওয়া প্রতিটি মানুষের দায়িত্ব সেটা যেই প্রফেশনের মানুষই ভুল করুক না কেন! সো, উই শুড স্পিক আপ! উই শুড রেইজ আওয়ার ভয়েস। এন্ড অফ দ্যা ডে, উই শুড বি নিউট্রাল হয়েন উই উইল টক।

-গোলাম রাব্বানী

মন্তব্য ৯ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৯) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই এপ্রিল, ২০২১ রাত ১১:১৬

নতুন বলেছেন: সবাইকেই নিয়ম মেনে চলতে হবে। পাশ লাগবেনা কিন্তু আইডি তো রাখতে হবে, নতুবা পুলিশের কথা মতন চলতে হবে।

২| ১৮ ই এপ্রিল, ২০২১ রাত ১১:২৬

রাজীব নুর বলেছেন: আসলে ঢাকা শহরের মানুষের মাথা গরম। কেউই নিয়ম মানতে চায়। সবাই ক্ষমতা দেখাতে চায়। ডাক্তার আর পুলিশ এই দুইজনের মধ্যে একজন যদি নমনীয় হতো তাহলে এই ঘটনা ঘটতো না। ''ছাড়'' দেওয়ার মানসিকতা থাকতে হবে। ''ছাড়'' দেওয়া মানে কিন্তু হেরে যাওয়া নয়।

৩| ১৮ ই এপ্রিল, ২০২১ রাত ১১:৪৪

খায়রুল আহসান বলেছেন: ভালো বলেছেন, আমি আপনার সাথে একমত।

"তবে আজকের পরিস্থিতি ভিন্ন" - আমি ভিডিও ক্লিপটি দেখিনি, তবে আপনি যেভাবে বলেছেন, তাতে মনে হচ্ছে আজ এখানে পুলিশের সত্যি কোন দোষ ছিল না, আই ডি কার্ড দেখতে চেয়ে পুলিশ তার কর্তব্য পালন করেছে মাত্র। ভুলবশতঃ কেউ আই ডি কার্ড সাথে বহন নাও করতে পারেন, সেখানে ভুলটা যেহেতু ওনারই, একটু নরমভাবে ভুল স্বীকার করে উনি যে ডাক্তার, তার প্রমাণ দেয়ার জন্য উনি অন্য কোন অপশন খুঁজতে পারতেন। তাহলে বোধকরি কোন ঝামেলাই হতো না।

কোন পেশাকেই অসম্মানের সাথে দেখা উচিত নয়। আজকের পরিস্থিতিতে একজন গোরখোদকও একজন ফ্রন্টলাইন ফাইটার। কারণ, করোনার ভয়ে তিনি তার পেশাগত কর্তব্যটি পালন না করলে আজ আকাশে বাতাসে মরদেহের পঁচা গন্ধ ভেসে বেড়াতো।ওরা তো করোনার ভয়ে পালিয়ে যায় নি!

মুক্তিযোদ্ধা শব্দটার বাণিজ্যিকিকরণ আজ ভয়ানক মাত্রায় চলে গেছে। এর প্রতিকার কে কিভাবে করবে জানি না, তবে আমি মনে করি এ ব্যাপারে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদেরকেই এগিয়ে আসতে হবে।

সব শেষ কথা, "অহংকার পতনের মূল"

৪| ১৯ শে এপ্রিল, ২০২১ রাত ১২:২৯

সিগনেচার নসিব বলেছেন: রমজান একটা সংযমের মাস আর আমাদের দেশের লোকের কাছে উত্তেজনার মাস। রোজা রেখে অল্পতেই দেখি মানুষের মাথা গরম হয়ে যায়। সোস্যাল মিডিয়ায় ক্ষমতাসীন দলের উপর ক্ষোভ প্রকাশ করতে গিয়ে কিছু পাবলিক মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে আজেবাজে কথা বলতেছে।

৫| ১৯ শে এপ্রিল, ২০২১ রাত ১:১৫

শায়মা বলেছেন: আমি ভিডিওটি দেখেছি। এবং আমার মনে হয়েছে মহিলাটি ডক্টর তাতে সন্দেহ নেই। কিন্তু তার নিজেরই মানসিক ডক্টরের কাছে যাবার সময় হয়েছে। শর্ট টেম্পর্ড বোকা মানুষের মত লাফ দিয়ে রেগে গিয়ে যা তা বলে ফেললো। অপরিনামদর্শী বোকা মানুষ ছাড়া আজকালকার দিনে কেউ এমন করতে পারে জানা নেই আমার।

সবচেয়ে ফানি লেগেছে আমি চান্স পাইসি তাই ডক্টর হইসি তুই পুলিশ আর ম্যাজিস্ট্রেট চান্স পাস নাই তাই পুলিশ হইসস, ম্যাজিস্ট্রেট হইসস। হা হা হা এমন কথা তো ৫ বছরের বাচ্চাও আজকাল আর বলে না......

সে ভাবে দুনিয়ায় আজও তার মত মান্ধাতার আমলের ধারনা নিয়ে মানুষ শুধু জীবনের লক্ষ্য ডক্টর ইঞ্জীনিয়রই করে।

এটা বর্তমান যুগে মহা ভুল।

আর আমি কে জানোস???? হা হা এই কথা দিয়ে আরও বড় নির্বুদ্ধিতার পরিচয় মিলালো সে।

আসলেই হয় সে নাবার ওয়ান বোকা নয় সে মানসিক রোগী যার এঙ্গার ম্যানেজমেন্টের চিকিৎসা নেওয়া প্রয়োজন।

৬| ১৯ শে এপ্রিল, ২০২১ সকাল ১০:৩০

নেওয়াজ আলি বলেছেন: ডাক্তার, পুলিশ, ম্যাজিস্ট্রেট
তিনজনই কোটাধারী।

আর মুক্তিযোদ্ধা সার্টিফিকেট ছাড়া সবাই রোহিঙ্গা। এভাবেই চলছে প্রিয় বাংলাদেশ! !

৭| ১৯ শে এপ্রিল, ২০২১ সকাল ১১:৫৫

জুন বলেছেন: আপনার লেখায় পড়লাম সর্বোচ্চ মেধাবীরাই সবাই ডাক্তার হয় :| আমিতো অনেক অনেক মেধাবী দেখলাম তারা অন্য প্রফেশনে প্রথম থেকেই নিজের ইচ্ছায় গিয়েছে। এমন না যে ডাক্তারি পড়ায় চান্স না পেয়ে।
আর ডাক্তার মহিলার আচরণ দেখে আমার সেই নীল গেঞ্জি পরা ইতালি প্রবাসীর কথা মনে পরলো যিনি কোয়ারেন্টাইন না থাকার জন্য পুলিশের সাথে এমন উন্মাদের মত আচরণ করেছিলেন :P
শায়মার মন্তব্যে একগুচ্ছ লাইক

৮| ১৯ শে এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ১২:৪৫

শাহ আজিজ বলেছেন: এবং আমার মনে হয়েছে মহিলাটি ডক্টর তাতে সন্দেহ নেই। কিন্তু তার নিজেরই মানসিক ডক্টরের কাছে যাবার সময় হয়েছে। শায়মাই ভাল বলেছ । কার্ড হীন ডাক্তারকে ৩০০০ হাজার ফাইন অবশ্যই করা উচিত ছিল । না হলে দুই ঘণ্টা রোদে দাঁড়াইয়া রাখা । তারপর ফেয়ার অ্যান্ড লাভলি দিলেই খালাস ।

এই ডাক্তারের মেজাজে তো করোনা পি জি থেইকা বাইরাইয়া যাওয়া উচিত ।

হারামজাদা বলার জন্য তাকে নোটিশ করা উচিত পুলিশের ।

মামুনুল ইস্যু চাপা পইড়া গেল ডাক্তারের নিচে X((

৯| ২০ শে এপ্রিল, ২০২১ রাত ১২:০৩

রাজীব নুর বলেছেন: চারিদিকে করোনা। লকডাউন। কড়া রোদ। ইত্যাদি সব মিলিয়ে দেশের পরিস্থিতি খারাপ। তাই মানুষের মন মেজাজও ভালো নেই। অল্পতেই রেগে যাচ্ছে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.