নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কুকরা

একজন সতর্ক কুকরা।

কুকরা › বিস্তারিত পোস্টঃ

রেড বুল এবং অ্যানার্জি ড্রিংক সম্পর্কে .

১০ ই নভেম্বর, ২০১৭ সকাল ১১:৩২


রেড বুল অ্যানার্জি ড্রিংক একটি নন-অ্যালকোহলিক ব্রেভারেজ। কিন্তু অন্যসব সফ্ট ড্রিংকসের মতো এতেও কিছু পরিমান অ্যালকোহল পাওয়া যায়। যদিও সেটা খুবই সামান্য। ০.০৫% এর মতো। যে ফ্লেভারটা ব্যবহার করা হয়, অ্যালকোহলটা সেখান থেকেই আসে বলে ধারণা করা হয়

রেডবুলে ক্ষারের মাত্রা থাকে পিএইচ স্কেলে ৩ দশমিক ৩, যা ভিনেগারের কাছাকাছি। এই মাত্রার ক্ষার দাঁতের এনামেল গলিয়ে ফেলে দাঁতের স্থায়ী ক্ষতি করার জন্য যথেষ্ট। সফট ড্রিংক দাতেঁর এনামেল ক্ষয় করে।

২০১১ সালে ফ্রান্সে ১৮ বছর বয়সী এক কিশোর বাস্কেটবল খেলার পর ৪ ক্যান রেড বুল(এনার্জি ড্রিংকস) খেয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লে ফ্রান্স সরকার সেদেশে রেড বুলকে নিষিদ্ধ করে। ময়নাতদন্ত করে জানা যায়, কিশোরটির মৃত্যুর কারণ হচ্ছে উচ্চরক্তচাপের সঙ্গে এনার্জি ড্রিংকসের উচ্চমাত্রার ক্যাফেইন মিশে ‘গাডেন এডাল্ট ডেড সিনড্রোম’ থেকে মৃত্যু হয়েছে। উচ্চমাত্রার ক্যাফেইন মৃগীরোগ সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখে।

শরীরে ক্যাফেইন গ্রহণের একটি খারাপ উপায় হলো এনার্জি ড্রিংকস পান করা। বেশিরভাগ এনার্জি ড্রিংকসে আছে প্রচুর পরিমানে ক্যাফেইন এবং সুগার। সুগার ওজন বাড়াতে সহায়তা করে। শরীরে প্রয়োজনের অতিরিক্ত চিনি গ্রহণ ক্ষতিকর। এনার্জি ড্রিংকসে উচ্চমাত্রার চিনি থাকে, যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর। এই পরিমাণ চিনি সরাসরি গ্রহণ করলে যে কারো বমি হবে। তবে পানীয়তে থাকা ফসফরিক এসিড ও কার্বনেটের কারণে তা পান করতে পারে মানুষ। উচ্চমাত্রার এসিড ও কার্বনেটের গ্রহণও মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর। অতিরিক্ত চিনির কারণে অনেকের শরীরের ওজন বেড়ে স্থুলস্বাস্থ্যে পরিণত হয়। বাড়ে শরীরের চর্বি বা কোলেস্টেরলের পরিমাণও। শরীরের ক্যালসিয়াম মলিউকুল গঠন প্রক্রিয়া দুর্বল হয়ে পড়ে। হাড় দুর্বল ও নরম হয়ে যায়। এ ছাড়া জনন প্রক্রিয়ায় স্থায়ী ক্ষতিও হতে পারে।

আর অতিরিক্ত ক্যাফেইন অনিদ্রা, বিরক্তি, ক্রোধপ্রবণতা, মাথাব্যাথা, বমিভাব, হজমের সমস্যা, স্থূলতা, উদ্বেগ,খিচুনি, স্নায়বিক দুর্বলতা,
মনোযোগে ঘাটতি এবং বিষণ্ণতা উৎপন্ন করে। অ্যানার্জি ড্রিংকসে ৫০ থেকে ৫০০ মিলিগ্রামের মতো ক্যাফেইন থাকে। ক্যাফেইন কর্মক্ষমতা পরিবর্তন করে, আসক্তি বা নেশা সৃষ্টি করে, এবং অতি উচ্চ মাত্রায় এটা বিষাক্ত হতে পারে।
সফট ড্রিংকে ব্যবহার করা ইথিলিন গ্লাইকোল। যা আর্সেনিকের মতোই বিষাক্ত।

সফট ড্রিংকের একটি বড় সমস্যা হচ্ছে, এটি আমাদের নাক, গলা এবং শ্বাসতন্ত্রের শুরুর দিকের অংশে থাকা সিলিয়াগুলো ক্ষতিগ্রস্ত করে। অথচ এ সিলিয়াগুলো শ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গে যে ধূলিকণা, ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাস গ্রহণ করি, তা শরীরে ঢুকতে বাধা দেয়। সফট ড্রিংক খেলে এই সিলিয়াগুলো নিস্ক্রিয় হয়ে পড়ে। শুরু হয় টনসিলাইটিস, ব্রংকাইটিস, নিউমোনিয়ার মতো শ্বাসজনিত রোগ।
আমাদের দেশে কয়েকটি এনার্জি ড্রিংকে বিপজ্জনক মাত্রায় রাসায়নিক পদার্থ (প্রিজারভেটিভ) সোডিয়াম বেনজয়েট উপস্থিতি পাওয়া গেছে। বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা এ বিষয়ে গভীর শংকা প্রকাশ করে জানিয়েছেন, এসব পানীয় পান করলে কিডনি ও লিভার বিকল হতে পারে, সোডিয়াম বেনজয়েট উচ্চমাত্রায় গ্রহণ করলে মানুষের পরিপাকতন্ত্র নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশংকা রয়েছে। এছাড়া নানা রকম জটিল রোগ যেমন আলসার হওয়া বা গর্ভবতী নারীর ক্ষেত্রে গর্ভপাত বা অটিস্টিক শিশু জন্মের আশংকা রয়েছে।

এক বোতল এনার্জি ড্রিংকস পানের ২৪ ঘণ্টা পর মানবদেহে রক্তচাপ বৃদ্ধি, ক্লান্ত অনুভব করা এবং কোষ্ঠকাঠিন্য, অন্তত এই তিনটি লক্ষণ প্রবলভাবে দেখা দেয়। এনার্জি ড্রিংকস পানের প্রথম ১০ মিনিটে হৃদস্পন্দন ও রক্তচাপ বেড়ে যায়। আর ১২ থেকে ২৪ ঘণ্টা পর মানবদেহ এনার্জি ড্রিংকস গ্রহণের প্রাথমিক প্রভাবগুলো প্রত্যাহার করতে শুরু করে। প্রত্যাহারের সময় মাথাব্যথা, বিরক্তিভাব প্রকাশ ও কোষ্ঠকাঠিন্যের লক্ষণ প্রকাশ পায়। পরের ১২ দিন পর্যন্ত এর প্রতিক্রিয়াগুলো থাকে।

দীর্ঘদিন ধরে এসব এনার্জি ড্রিংকস পানে খাদ্যনালির ভেতরের মিউকাস মেমব্রেন নষ্ট হয়ে যায়। নাড়ির সংকোচন ও সম্প্রসারণ ক্ষমতা কমে খাদ্য থেকে পুষ্টি শুষে নেওয়ার ক্ষমতা কমে যায়।

আমাদের দেশে আবার রয়েছে ভ্যাজালের ভাগাড়। এখানে রেক্টিফাইড স্প্রিট ব্যবহার করে দেদার তৈরি হচ্ছে এনার্জি ড্রিংকস। এনার্জি ড্রিংক বলতে কোনো পণ্যসামগ্রী উৎপাদন বা বাজারজাতের জন্য বিএসটিআই কোনো রকম অনুমোদন দেয় না। তা সত্ত্বেও অনুমোদন পাওয়ার জন্য একটি আবেদনপত্র বিএসটিআই কার্যালয়ে জমা দিয়েই কারখানায় দেদার উৎপাদন কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। দেখার কেউ নেউ।

বিশ্বের অনেক দেশেই এনার্জি ড্রিংকস নিষিদ্ধ। চীন, সিঙ্গাপুরসহ বিভিন্ন দেশে কোমল পানীয় বা এনার্জি ড্রিংকস বিক্রিও নিষিদ্ধ। ভারতে ল্যাবরেটরি পরীক্ষায় কয়েকটি বিশ্ববিখ্যাত কোম্পানির কোমল পানীয় বা এনার্জি ড্রিংকসে অত্যধিক মাত্রায় কীটনাশক পাওয়ায় মধ্যপ্রদেশ, গুজরাট ও কেরালায় এসব পানীয় বিক্রি নিষিদ্ধও করা হয়। ভারতে কোমল পানীয় বা এনার্জি ড্রিংকসের ওপর উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে।।

এনার্জি ড্রিংকসে থাকা রাসায়নিক উপাদানের কারণে বোতলে কোনো ব্যাকটেরিয়া, ফাঙ্গাশ জন্মাতে পারে না। পানিতে থাকা জুওপ্লাংকটন ও ফাইটোপ্লাংকটনও জন্মাতে পারে না।

ভারতে এসব এনার্জি ড্রিংকস জমিতে কীটনাশক হিসেবে ব্যবহার করা হয়। অতএব এগুলো যারা খাবে তাদের পেটে কোন পোকা-মাকড়(!) থাকবে না।

সূত্রঃ
ইন্টারনেট।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই নভেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১:০৯

সুমন কর বলেছেন: তথ্যবহুল। শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

২| ১০ ই নভেম্বর, ২০১৭ রাত ৯:১৩

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: বাংলাদেশী এনার্জি ড্রিংক খাইনা। কারণ, এর আগে অনেক রিপোর্ট এসেছে টাইগার, শার্ক সহ অন্যান্য এনার্জি ড্রিংকে বিয়ার বা এলকোহলের উপাদান আছে। মধ্যপ্রাচ্যের নন এলকোহল ট্যাগ বিয়ার খাই। বাংলাদেশী কোম্পানীকে বিশ্বাস নাই। এরা ব্যবসার জন্য অনেক মিথ্যা কথা বলে...

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.