নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কুকরা

একজন সতর্ক কুকরা।

কুকরা › বিস্তারিত পোস্টঃ

আলাউদ্দিন খিলজির উপর উগ্রহিন্দুরা এত ক্ষিপ্ত কেন?

২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ২:৫৯

সম্প্রতি আলাউদ্দিন খিলজির ইতিহাসের উপর নির্মিত একটা হিন্দি সিনেমা নিয়ে ভারতে গন্ডগোল হচ্ছে। রাজপুত নারীরা নাকি আগুনে ঝাপ দিয়ে আত্মহত্যার হুমকি দিচ্ছে। পুরো ব্যাপারটাই আসলে বিজেপিপন্থী উগ্র রাজনীতিকদের কারসাজি। নাইলে একটা সিনেমা, যেখানে একজন মুসলিম শাষককে ভিলেন হিসাবে দেখানো হয়েছে, সেখানে বরং মুসলমানদেরই প্রতিক্রিয়া দেখানোর কথা ছিল। গত কয়েকদিন বিষয়টা নিয়ে ঘাটাঘাটি করতে গিয়ে আলাউদ্দিন খিলজির শাসন আমলের চমৎকার কিছু ইতিহাস নিয়ে পড়ালেখা করলাম। এবং সেটা পাঠকদের সাথে কিছুটা শেয়ার করার লোভ সামলাতে পারলাম না।

আমার মতে মূলত দুইটা কারণে আলাউদ্দিন খিলজির উপরে উগ্রহিন্দুরা ক্ষিপ্ত:

১। দক্ষিন ভারতের বিশাল একটা অংশ আলাউদ্দিন খিলজি জয় করেন, যা মূলত অনেকগুলি হিন্দু রাজ্যের সমষ্টি ছিল। ১২৯০ সালে আলাউদ্দিন খিলজি যখন ক্ষমতা হাতে নেন, তখন খিলজি সম্রাজ্যের সীমানা নীচের ম্যাপের মত ছিল


১৩২০ সালে, আলাউদ্দিন খিলজি যখন মারা যান, তখন খিলজি সম্রাজ্যের সীমানা বেড়ে ভেসেল ষ্টেট সহ তিনগুনেরও বেশি আকৃতি ধারণ করেছে

অব্যাহত পরাজয়ের কারণে একজন সফল মুসলিম শাসককে উগ্রহিন্দুরা পছন্দ করার কোন কারণ নাই।

২। খিলজির তৈরি করা অর্থনৈতিক সংস্কারের কারণে উচ্চ শ্রেনীর হিন্দুদের কর সংগ্রহ করার ক্ষমতা রহিত করা হয়, ফলে তাদের বিলাসী জীবনযাত্রা ব্যহত হয়। খিলজি তার শাসন আমলের প্রথমদিকে বারবার বিদ্রোহের শিকার হন। তার রাজ্যের ভিতরের মুসলমানরা এবং বাইরের হিন্দুরা বিভিন্ন সময় বিদ্রোহ করে। প্রতিটা বিদ্রোহই আলাউদ্দিন খিলজি সফলভাবে দমন করেন। ভবিষ্যতে যাতে তার বিরুদ্ধে আর বিদ্রোহ না হয়, সেজন্য পয়শাওয়ালা এলিট মুসলিম এবং এলিট হিন্দু শ্রেনীর লোকজনের আর্থিক সক্ষমতা কমানোর জন্য খিলজি বিভিন্ন ধরণের স্কিম হতে নেন, স্পাই নেটওয়ার্ক তৈরী করেন। চিরাচরিত ভাবে উত্তর ভারতের হিন্দু কৃষকদের থেকে হিন্দু জমিদাররা খাজনা আদায় করত। তারা এই খাজনার কিছু অংশ সুলতানকে দিত। এরা কিভাবে কতটা খাজনা আদায় করত তা নিয়ে সুলতান মাথা ঘামাতেন না। কিন্তু সুলতান যখন এদের বিলাসি জীবন দেখলেন, এদের পয়শা বেশি হওয়ার কারণে বারবার নিজেদের মধ্যে বিরোধে জড়িয়ে পড়া এবং সেই সাথে মাঝে মাঝে সুলতানের বিরুদ্ধে বিদ্রোহে আন্জাম দেওয়া - ইত্যাদি সুলতানের নজরে আসল, তখন তিনি এদের কর আদায়ের ক্ষমতা রহিত করে দেন, এবং ভূমি মালিকদের ভূমির পরিমান অনুযায়ি খাজনা নির্ধারণ করে দেন। এতে পয়শাওয়ালা হিন্দু জমিদাররা অনেক বেশি সমস্যায় পড়ে যায় কারণ তাদের জমির পরিমান বেশি হওয়ায় খাজনাও বেশি ছিল। কথিত আছে কর বাড়ানোর সাথে সাথে দ্রব্যমূল্য যাতে মানুষের নাগালের মধ্যে থাকে সেজন্য সুলতানের পক্ষ থেকে পণ্যের মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়া হত। সুলতানের গুপ্তচরেরা বাজারে বাজারে ঘুরে নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দামে কাউকে পন্য বিক্রয় করতে দেখলে কঠোর শাস্তি দিতেন।

সুলতানের মূল উদ্দেশ্য ছিল, বড় সাইজের সেনাবাহিনী মেইনটেইন করা। দ্রব্যমূল্য কম রাখার সুবিধা ছিল, সৈন্যদের বেশি বেতন দিতে হত না। আলাউদ্দিন খিলজি তার শাসন আমলে দক্ষিন-ভারত দখল করার সাথে সাথে উত্তর দিক থেকে আসা মোংগল আক্রমন সমান তালে প্রতিহত করে গেছেন। ধারণা করা যায়, মোংগল আক্রমনের আশংকা না থাকলে তার সম্রাজ্যের সীমানা আরো বহু গুনে বৃদ্ধি পেত।

তথ্যসুত্র: উইকিপিডিয়া

মন্তব্য ২২ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (২২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৩:৪০

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: হিন্দু মৌলবাদের প্রত্যক্ষ প্রভাব ভারতবাসীর সাথে সাথে বিশ্ববাসীও প্রত্যক্ষ করছে!

২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৩:৫৪

কুকরা বলেছেন: সহমত

২| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৪:২১

সালাউদ্দীন খালেদ বলেছেন: ধন্যবাদ, পুরা ইতিহাস না পরেও কিছুটা ধারনা পেলাম

২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৪:৪৯

কুকরা বলেছেন: সম্প্রতি উগ্রহিন্দুরা ব্যাপক ভাবে ইতিহাস বিকৃতির মাধ্যমে নিজেদের উগ্রতার ভিপ্রকাশ ঘটাচ্ছে। এদের আগাও মিছা, গোড়াও মিছা - পুরাই মিছা।

৩| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৪:৩৮

রাজীব নুর বলেছেন: সবাই সবার উপর ক্ষিপ্ত।

৪| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৫:০৯

সাইন বোর্ড বলেছেন: এসব কর্মকান্ড ইন্ডিয়ার মত দেশেই কেবল সম্ভব !

২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৫:১৬

কুকরা বলেছেন: ইন্ডিয়ার মত দেশে এর থেকেও আজগুবি জিনিস সম্ভব। গরুর মুত্র, বাবা রামরহিম - এইগুলি তো সাম্প্রতিক উদাহরণ।

৫| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৫:১৬

গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: হিন্দুদের দ্বারা শাসিত রাস্ট্র হওয়ায় ভারত যুগ যুগ ধরে মুসলিম শাসকদের চরিত্র হরন করে ইতিহাস লিখেছে।
ভারতের দশম একাদশ শ্রেনীতে ২০১৪ সালে পাঠ্য ছিল এরকম একটি ইতিহাস গ্রন্থ স্পম্প্রতি আমার হাতে এসেছে। সেখানে লিখা হয়েছে সুলতান জালালুদ্দিন একজন হিন্দু বিদ্বেষী শাসক ছিলেন, তিনি হিন্দু ব্রাহ্মণদের জোর পুর্বক গো মাংস খাইয়ে মুসলমান বানাতেন। বাস্তবে প্রক্রিত ইতিহাস ছিল অতি চমকপ্রদ। এই নিয়ে একটা পোস্ট করার ইচ্ছা আছে।

২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৫:১৭

কুকরা বলেছেন: জলদি লিখে ফেলেন, ওদের ভন্ডামির মুখোস খুলে দেন।

৬| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৫:৩২

অনন্য দায়িত্বশীল আমি বলেছেন: @ গিয়াস উদ্দিন লিটন ভাই --- তাড়াতাড়ী লিখে ফেলেন আর উগ্র ও কট্টর মৌলবাদী হিন্দুদের মুখোশ উন্মচিত করুন। ধন্যবাদ।

৭| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:১৮

দিলের্‌ আড্ডা বলেছেন: মুসলিম শাসকদের চরিত্র হননের কাজে ওরা সিদ্ধহস্ত।

৮| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ১০:০১

উম্মু আবদুল্লাহ বলেছেন: ভারত বর্ষ মুসলিম শাসক কর্তৃক শাসিত হয়েছিল কারন তখনকার বেশীরভাগ হিন্দু রাজা বর্নবাদী মানসিকতা দিয়ে চালিত হতেন। যার ফলে মুসলিম সহ জনসাধারনের একটি বিরাট অংশ মুসলিম শাসকদের পক্ষ নেয়।

৯| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ১০:৩৮

আবু তালেব শেখ বলেছেন: জানা হল মুল কাহিনি

১০| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ২:২৫

কিরমানী লিটন বলেছেন: ইতিহাসের আড়ালে লুক্কায়িত সত্যের নির্যাস। অনেক ভালোলাগা।

১১| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ৩:৩৪

তপোবণ বলেছেন: মনের ভেতরে একটা খটকা ছিল তা নিবৃত হলো এই লেখায়। ধন্যবাদ

১২| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১০:১৩

হাঙ্গামা বলেছেন: দারুন লেখা। শিখলাম, জানলাম।

১৩| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১০:৫৩

অাব্দুল্লাহ অাল কাফি বলেছেন: ইতিহাস বলে ভারতবর্ষে হিন্দুরা উগ্র ছিল।সংখ্যালঘু মুসলিমদের উপর প্রায় দমন পীড়ন চলত।মুসলিমরা প্রতিবাদ করলে বেঁধে যেত দাঙ্গা।
আলাউদ্দিন খিলজির শাসনামলেও এমন নজীর পাওয়া য়ায়।

১৪| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১১:০৭

পদ্মপুকুর বলেছেন: অনেক ইতিহাস তো আমরাও অস্বীকার করছি, করতে শিখাচ্ছি।

১৫| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১১:১৭

জুন বলেছেন: আমিও ইতিহাসে আলাউদ্দিন খিলজির চিতোর বিজয় পড়েছি । রানী পদ্মীনির ঘটনাটি একটি কল্পনা মাত্র । এই পদ্মাবতী নিয়ে, গরু নিয়ে তারা যা করছে তাতে মনে হয়না পৃথিবীর বৃহত্তম এই গনতান্ত্রিক দেশে এত লক্ষ লক্ষ শিক্ষিত মার্জিত সংস্কৃতবান লোক রয়েছে।

১৬| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১:৫৮

এম এম করিম বলেছেন: আমি বরাবরই বিশ্বাস করেছি ইন্ডিয়া একটি সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র।

১৭| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১:৩৮

উম্মু আবদুল্লাহ বলেছেন: "অনেক ইতিহাস তো আমরাও অস্বীকার করছি, করতে শিখাচ্ছি। "

এটা ঠিক নয়। ইতিহাসকে তার নিজস্ব স্থান দিতেই হবে।


পরাজিতদের আত্মহত্যা করার রীতি অনেক আগেই প্রচলিত। সেকালের ক্লিওপেট্রা কিংবা একালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে পরাজিত জাপানিজরা - এরা সবাই আত্মহত্যা দিয়ে পরাজয়ের গ্লানি ঢাকতে চেয়েছে। যুদ্ধে পরাজিত হওয়ার পরে এই বিষয়টি বড়ই অমানবিক। সুতরাং চিতরের রানী যদি জহর পানে আত্মহত্যা করে থাকেন, তবে তা একেবারে অবিশ্বাস্য নয়। কিন্তু অবিশ্বাস্য হল এই দাবী যে, খিলজী রানীর কারনে চিতোর আক্রমন করেছেন। একজন তুর্কী যোদ্ধা বিবাহিত এক বিদেশিনী রানীর প্রতি এতটা আকর্ষন বোধ করবেন যে যুদ্ধ শুরু করে দেবেন - না, এটা প্রায় অসম্ভব। ট্রয় যুদ্ধের ঘটনা শুধু মিথেই সম্ভব। এখানেও কবি মালিক তার নিজস্ব কল্পনা দিয়ে একটি সাহিত্য রচনা করতে চেয়েছেন।

১৮| ০৫ ই মে, ২০১৮ রাত ১২:০৪

তানভীর আহমেদ দুর্জয় বলেছেন: উগ্র হিন্দু হিসেবে একজন সফল মুসলিম শাসকের ওপর ওরা ক্ষিপ্ত থাকবেই। বিশ্বের সবচেয়ে বড় গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও বিশাল শিক্ষিত সাংস্কৃতিমনা একটি দেশে এমন আচরণ কারোই কাম্য নয়। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে ভারতের শিক্ষিত এলিট ক্লাস থেকে শুরু করে অশিক্ষিত দরিদ্র সমাজ পর্যন্ত সব জায়গাতেই মুসলিম বিদ্বেষি মনোভাব প্রকট। তার ওপর এই বিজেপি আমলে এদের পালে বাড়তি হাওয়া পড়েছে। ইতিহাস এরা সবসময়ই বিকৃত করার চেষ্ঠা করেছে এবং করবে। আমার মনে হয় প্রায় ৮০০ বছর মুসলিম শাসনে থাকার গ্লানি চাপা দিতেই ইতিহাস বিকৃতির মতো কাজ করে এরা মানসিক শান্তি লাভের চেষ্ঠা করে। কিন্তু পরিশেষে ওদের মিথ্যে ইতিহাস ওরা ছাড়া আর কেউ খায়না।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.