নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সত্য এবং শান্তিই সার্বজনীন

রেনেসাঁসী সক্রেটিস

পরিচয় দেয়ার মত কেউ হয়ে উঠতে পারিনি এখনো,তবে চেষ্টায় আছি ;)

রেনেসাঁসী সক্রেটিস › বিস্তারিত পোস্টঃ

রোজনামচা

২৪ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ১১:২৫

তাংঃ২৪/০৭/২০১৪



ঘটনা-১

গতকাল রাতে সাবেক প্রেমিকার সাথে লুতুপুতু খেলতে খেলতে রাত ৩.৩০ বাজায়া ফেললাম,অতঃপর যথারীতি সেহেরির সময়ে আমার জননীর কাছে ধরা পড়লুম এবং কিছু বাংলা সিনেমার শাসনমূলক ডায়লগ হযম করে ঘুমিয়ে পড়লুম :D :p অবশ্য মোবাইলের ব্যালান্সও শেষ হয়ে গেছিলো :3 যাক সকাল বেলা জননীর ডাকে ঘুম ভাংলো আঠালো চোখে তাকিয়ে দেখলুম আমার গৃহশিক্ষক চেয়ারে বসে আছে মোবাইল টিপুচ্ছে মনে হয় ফেবুতে ঘুরাঘুরি করতেছিল। :p আজকাল আবালবৃদ্ধবনিতা সবাই এই ফেসবুকীয় মাদকে আসক্ত :v আর এর ডিলার রা হচ্ছে সকল মোবাইল অপারেটর কোম্পানী এবং ঢাকার শহরের ইপা-চিপায় গড়ে ওঠা ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবাদাতা অফিসগুলো।যাকগে তো আমি আমার তন্দ্রালু চোখ ডলতে ডলতে বেসিনে গেলুম এরপরে দাতব্রাশ করতে লাগলুম আর ভাবলুম গতকাল সারাটা রাত সাবেক প্রেমিকার সাথে লুতুপুতু করতে গিয়ে স্যার যে ১৫টা অংক করতে দিয়ে গেছিলো একটাও করা হয়নি কিভাবে যুক্তিবাদী অযুহাত দাড় করানো যায় মাথায় ঘুরতেছিল।ভাবলুম আমার মতই মনে হয় এদেশের সকল তরুন-তরুণীদের একই অবস্থা।রাত জেগে জেগে লুতুপুতু খেলা খেলতে খেলতে এদের পড়ালেখা এভারেস্টের চূড়ায় ওঠে যে কারনে সকল পাবলিক পরীক্ষার আগে সিজনাল প্রশ্ন ব্যবসায়ীদের ব্যবসা চকবাজারের ইফাতারির বাজারের মতই রমরমা হয়ে উঠে।



ঘটনা-২

সকালে স্যার যাওয়ার পরে সারাদিন প্রায় যাযাবরের মত পুরো ফেবু চষে বেড়ানোর পর মগজের ক্লান্তি কাটানোর জন্য একটু বের হয়ে নিউ মার্কেটের দিকে গেলাম,যথারীতি পরিচিত মামার দোকানে ঢুকে এক কাপ কড়া লিকার মার্কা চা আর তিনটা ডার্বি সিগারেট চাইলাম।সিগারেট ধরিয়ে খেয়াল করলাম মামার দোকানকে কালো কাপড়ের বোরকা পড়ানো হইছে আশেপাশের সব দোকানেই তাই।রমজানে মাসে দিনের বেলা প্রতিটা দোকানকে বোরকা পড়ানো হয় মুসলিমদের সংযমে সাহায্য করার জন্য যাকগে ভালো লক্ষন সেটা।এককাপ চা আর তিনটা ডার্বি খেয়ে এগুলাম নিউ মার্কেটের ব্রিজের দিকে।বোরকা পরিহিত দোকানের ভিতরে দম আটকে আসছিলো তাই বাতাস খাওয়ার জন্য একটু নিউ মার্কেটের ব্রিজের উপরে গিয়ে বসলাম।যাকগে হাওয়া খাচ্ছি এমন সময়ে খেয়াল করলাম আমার সোজাসুজি বিপরীত দিকে বসে আছে ৬জন তরুন এবং ১জন তরুনী।সম্ভবত এই ৬জনের মধ্যেই কেউ এই মেয়ের বয়ফ্রেন্ড হবে।হলোও তাই,কথার ধরন শুনে বুঝতে পারলাম একটা ছেলে তার বয়ফ্রেন্ড,দেখতে একটু কালো করে সুঠাম দেহ যদিও।৬জনের মধ্যে ৩জনের গাত্রে বিদেশী মেটাল সঙ্গীতের রক ব্যান্ডদের ছবি দেয়া টিশার্ট পরিহিতি অবস্থায় দেখলাম একজন কে দেখলাম একটু ভদ্র বেশে নিরীহ ধরনের সবার কোনায় বসে আছে আরকি!! আর বাকি যে দুজন ছেলে ছিল তাদের পোষাক আশাক আর ভাব ভঙ্গিমা দেখে মনে হলো এরা একটু নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে।আর বাকি যে চারজন ছিলো তাদের সবাই উচ্চমধ্যবিত্ত পরিবারের তা বুঝা যাচ্ছিলো যাকগে এদের সাথে ওই দুজন কিভাবে মিলেছে তা ঠিক ধরতে পারলামনা হবে হয়তো বন্ধুত্বের টান।এখন আসি মেয়েটির বিবরনে।ছেলেগুলোর সমবয়সী মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে পোশাক আশাক আর ভাব ভঙ্গিমা দেখে তাই মনে হইলো যদিও ভাব ভঙ্গিমা দেখে চট করে বোঝার উপায় নেই এটা,অনেকক্ষন পর্যবেক্ষনের ফলে বুঝতে পেরেছি।পোশাক পড়েছে সালোয়ার কামিজ।যাইহোক তা তাদেরকে কিছুক্ষন দেখতে লাগলাম।দেখে যা যা বুঝলাম তা হচ্ছেঃ এরা উঠতি উগ্র মস্তিষ্কের মোটাবুদ্ধিসম্পন্ন যুবক যুবতী(যুবতী তুলনামূলক ভাবে চালু),যে তিনজন মেটাল ব্যান্ডদের গেঞ্জি তাদের গেঞ্জির পিছনে লেখা "BANGLADESH METAL ALLIANCE" এটা দেখে নিশ্চিত হলাম এরা আসলেই উগ্র মস্তিষ্কের মোটাবুদ্ধিসম্পন্ন ছেলেপিলে এবং এদের মধ্যে একজন মেয়েটির সামনে যতটা পারা যায় শো-অফ করে সিগারেট টানছিলো দেখতে তুলনামূলকভাবে ওখানকার সবার মধ্যে স্মার্ট।(উলেখ্য বিষয় এই যে আমার দেখা বেশিরভাগ মেয়েরাই উগ্র ধরনের ছেলেদের পছন্দ করে,হয়তো এরা মোটাবুদ্ধিসম্পন্ন এবং এদের ঘুরানো যায় নাকে রশি দিয়ে তাই এমনটা করে মেয়েরা) যাকগে কিন্তু ভবের এমনি কারবার মেয়েটির বয়ফ্রেন্ড সে জিনিসটি খেয়াল করেনি,যদিচ আমি একটু বেশি দেখি সে কারনেই হয়তো আমার চোখে পড়েছে।যাইহোক আবার মেয়েটির দিকে ফিরে আসি উনি নিম্নমধ্যবিত্ত ওই ছেলেদুটির সাথে বিদেশী কোনো এক মেটাল তারকার চুলের স্টাইলের বর্ননা দিচ্ছিলো শুনে যা মনে হলো এমন সময় পাশ থেকে স্মার্ট ছেলেটি তার কানে বলে উঠলো আমিও তো ব্যান্ড করি জানো? মেয়েটি এটি শুনে অন্ধকারে ভূত দেখার মত লাগিয়ে উঠে বললো ওয়াও!! তুমি ব্যান্ড করো? পাশের নিম্নমধ্যবিত্ত ছেলেদুটিও সায় দিল।এভাবে মেয়েটি তিনবার একই কথা বললো এবং তিনবারই তার বয়ফ্রেন্ড কথাটা শুনেও না শুনার ভান করছিলো হিংসার যাতনায়,ওদিকে আবার বাকী যে দুজন আছে তারা মেয়েটির পিছনে পিছনে একটা সাংকেতিক ভাষা ব্যবহার করে নিজেদের মধ্যে হাসিঠাট্টা করছিলো মেয়েটিকে পাগল বলে।আমি অনেকক্ষন ধরে এদের পর্যবেক্ষন করছিলাম যার ফলে তাদের দিকে ড্যাব ড্যাব করে তাকিয়ে থাকতে হয়েছিল আমাকে হঠাৎ করে মেয়েটির চোখে চোখ পড়ায় সে ওড়না দিয়ে তার স্তনযুগল ঢেকে দিলো।(মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়েদের এটাই বৈশিষ্ট্য এরা মদ খাবে কিন্তু কেউ গন্ধ পেতে পারবেনা,বিছানায় যাবে কিন্তু কেউ জানতে পারবেনা) যায়হোক এই বৈশিষ্ট্যটি দোষ নাকি গুন তা পাঠকরাই বিচার করবেন।সময়ের স্বল্পতার কারনে উঠে চলে আসলাম ওখানে থেকে।



ঘটনা-৩

ওখান থেকে বাসায় ফেরার পথে মার্কেটের ভেতর দিয়ে যাচ্ছিলাম এমন সময় খেয়াল করলাম কয়েকজন হিজড়া মার্কেটের মধ্যে এসেছে শপিং করতে তাদের গায়ে ভারতীয় সিরিয়ালের নায়িকাদের মত পোশাক কিন্তু এরা হিজড়া দেখে দোকানীরা কিছুটা কাচুমাচু করছে তবে একটা বিষয় আমার কাছে আশ্চর্য লেগেছে যে ওদের মধ্যে একটা কিশোরী মেয়ে এবং তাকে দেখে স্বাভাবিক কিশোরী মেয়েই মনে হয়েছে হিজড়ার সাথে তার কোনো মিল দেখলাম না কিন্তু তারপরেও সে তাদের হাত ধরে হাটছে।হয়তো এই মেয়েকে এরা কোথাও কুড়িয়ে পেয়েছিল এবং এনে লালন পালন করেছে অথবা কোনো পাপের ফসল হিসেবে ডাস্টবিনে ফালানো পেয়েছে দয়া করে এনে লালন পালন করেছে( দুটো কাহিনীই বাংলা সিনেমার সাথে মিলে তবে সিনেমা যে একেবারেই অবাস্তব এমন নয়) আবার এমনও হতে পারে এ আমার চোখের ভ্রম হয়তো মেয়েটা আসলেই হিজড়া।



ঘটনা-৪

আরেকটু এগুতেই এক শিশু বয়সী ছেলে তার বাবার(বাবা একজন ধার্মিক লোক পোশাকে সেরকমি পরিচয় পেয়েছি) সাথে কেমন জানি একটু মনোমালিন্য ধরনের আচরন করছে কিছুক্ষন সাইডে দাড়িয়ে খেয়াল করে বুঝলাম ছেলেটা একটা গেঞ্জি কিনতে চাচ্ছে কিন্তু গেঞ্জিতে ক্রুশ আকা তাই বাবা কিনে দিতে চাচ্ছেনা,কিন্তু ছেলে তা বুঝতে চাইছেনা।ছোটবেলায় আমারও এমন প্রায়ই হতো মাঝে মাঝে ক্রুশ পরে ঘুরতামও হলিউডের নায়কদের দেখাদেখি :P বাবা বাসায় ফিরলে লুকিয়ে রাখতাম।ছেলেকে দেখে নস্টালজিক হয়ে গেছিলাম এই যা আরকি।



পরিশিষ্টঃআজকের রোজনামচাটা আগেরদিনেরটার থেকে অনেক বড় হয়ে গেছে অবশ্য।কিছু করার নেই।প্রতিদিনকার আমার সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনা এবং আমার দেখা ঘটনার বিবরন এই রোজনামচা সুতরাং বড় ছোট হওয়াটাই স্বাভাবিক এবং এর লেখা সম্পূর্ন বাস্তব সুতরাং কারও সাথে কাকতালীয় ভাবে মিলে গেলে লেখক দায়ী নয় আর লেখার মধ্যকার ছোটখাটো ভুলসমূহ ক্ষমাসুলভ দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রইলো।



ধন্যবাদ।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.