নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভাব আসে; ছন্দ আসে না

হাবীব কাইউম

পোস্ট পড়িবার পূর্বে হাবীব কাইউমের ১ নম্বর ব্লগ দেখিয়া লইবেন

হাবীব কাইউম › বিস্তারিত পোস্টঃ

রেহাম খান : অধ্যায়-২, পার্ট-৩

২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ভোর ৬:৩৭



আগের অংশ পড়তে এখানে যান
তারও আগে থেকে এখানে

ক্লাশ এইটে থাকতেই অভিনেতা হিশাবে আমি নাম কুড়াই। আগের রাতের টিভি অনুষ্ঠানের ব্যঙ্গ করি এ সময়। তানহাইয়ান নামে একটা টিভি নাটকের ঝড়ে পুরো জাতি আক্রান্ত হয়। এতে মেরিনা খান নামে এক নতুন মুখের আবির্ভাব ঘটে। এই নতুন নায়িকার স্বভাবজাত অভিনয় দক্ষতার কারণে পুরো জাতি তার প্রেমে পড়ে যায়।
এক বান্ধবীর বাড়িতে আমি তাকে এক নজর দেখেছিলাম। পরে ষষ্ঠ পিটিভি অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে তার সাথে দেখা হয়। তখন আমি মাঝে মধ্যে স্কুল বাসে যাতায়াত শুরু করেছি। সকাল বেলা আমি নাটকে তার বোকা অভিনয় অনুকরণ করতাম। অ্যাওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পর সেলিব্রিটিদের বলয়ের দিকে যখন মানুষজন উপচে পড়তে শুরু করলো, মেরিনা খান আমার হাত ধরে গ্রিন রুমের নিরাপত্তার মধ্যে নিয়ে গেলো। আমি জানি না পেশোয়ারে আমার বান্ধবীর বাড়িতে দেখেছিলো বলেই সে আমাকে চিনতে পেরেছে, না কি একটা ছোট মেয়ে প্রেম নিবেদনকারী ছেলেদের আক্রমণের শিকার হচ্ছে দেখে এ কাজ করেছে। তখন আমি বুঝতে পারলাম, সফল লোকেরা এখনো সুন্দর মানুষ হতে পারে। তার মধ্যে নিজেকে জাহির করার প্রবণতা বা বাহুল্য নেই। সে যে পুরো জাতির প্রিয় অভিনেত্রী এ বিষয়েও মনে হলো সে সচেতন নয়।
তানহাইয়ানের পর টিভি স্ক্রিনে বেনজির ভুট্টো হাজির হলেন। তার ইংরেজ ধাঁচের ইংরেজি উচ্চারণ ছিলো খুবই আকর্ষণীয়, ভেঙানোর মতো নয়। ব্যাপারটা শুধু এই ছিলো না যে, তিনি প্রথম মুসলিম নারী এমপি ছিলেন, বরং তিনি গতানুগতিক কোনো পাকিস্তানী মহিলা ছিলেন না। মূলত তার সাথে আমার ব্যক্তিগত সাক্ষাৎ হয় আমার এক বান্ধবীর বড় বোনের বিয়েতে। আমার স্পষ্ট মনে আছে তুলনামূলক লম্বা মহিলাটা পুরুষদের সামনে দ্রুততার সাথে হেঁটে যাচ্ছেন। হলের দরজা থেকে স্টেজে পৌঁছতে তার এক মিনিটেরও কম সময় লাগলো। স্পষ্টত এ বিষয়টাই আমি নিজে পরে অনুসরণ করি। ২০১৭ সালে ট্যাক্সিলায় একটা অনুষ্ঠানে আমি নিরাপত্তায় নিয়োজিত বিশেষভাবে দক্ষ একজন লোককে দেখতে পেলাম। আমার কাছে আসার জন্য আমি তাকে ইশারায় ডাকলাম। সুতরাং সেও অন্যদের মতো আমার একটা ছবি তুলে নিলো। সে আমাকে ধন্যবাদ দেয়ার পর জানালো সে বেনজির ভুট্টোরও সেবা করার সুযোগ পেয়েছে। এরপর সে বললো, ‘ম্যাডাম, আপনি বেনজিরের চেয়েও দ্রুত হাঁটেন।’ পাকিস্তানের পুরুষেরা সব সময় অভিযোগ করে, আমি এত দ্রুত হাঁটি যে, তারা আমার ছবি তুলতে পারে না।
অল্প বয়সী তরুণী হিশাবে আমি ছিলাম অদম্য। সব সময় স্কুলের সহপাঠীদের সাথে বাস্তব বিষয় নিয়ে কৌতুক করতাম। দ্রুত গতির এবং হালকা শরীরের কিশোরী হওয়াতে আমি অনেক ভারী সিনিয়রকে তাদের শাল নিয়ে দৌড়াতে বাধ্য করেছি। তারা আমাকে ধরার চেষ্টা করেছে। কিন্তু আমি তাদের চেয়ে অনেক দ্রুত চলতাম। আমি থামিয়ে রাখা স্কুল বাসের ছাদে উঠে শালটা ফেলে দিতাম। স্কুলের সবচেয়ে সেরা জিনিশ ছিলো অবশ্যই বিরতি। এই ত্রিশ মিনিটে সময়ের সর্বোচ্চ সদ্ব্যবহার করতে পারাটা ছিলো খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমার মতো ব্যস্ত ছাত্রীরা এক কামড় খাওয়া আর টেবিল টেনিস বা ব্যাডমিন্টন খেলার সময় বের করার জন্য ব্যাপক কোশেশ চালাতো। আমি বেসবল, বাস্কেটবল ইত্যাদিতেও কয়েক মিনিট দেয়ার চেষ্টা করতাম। গান অথবা নাটকের প্রতি আগ্রহও আমার বিরতির অনেকটা সময় নিয়ে নিতো। এ সব কারণে স্কুলের খাবারের দোকানের সামনে বিশাল লম্বা লাইনে দাঁড়ানোর মতো সময় আমার হাতে থাকতো না। নাটকের প্রতি ভালোবাসা খাওয়ার প্রয়োজনকে ম্লান করে দিতো।
খাবার খাওয়ার আরেকটা নিরাপদ বিকল্প আমি উদ্ভাবন করেছিলাম। আমি জানতাম মিশেল আর তার বাবা (যারা দোকানটা চালাতো) আমাকে পছন্দ করতো। স্কুলের খাবারের দোকানটা আমাদের কেন দরকার তা নিয়ে প্রিন্সিপ্যালের কাছে লেখা চিঠিতে ব্যাখ্যা করার মাধ্যমে প্রচারণা চালিয়েছিলাম। এতে তাদের এই ক্ষুদ্র ব্যবসা বন্ধ হওয়া থেকে রক্ষা পায়। তারা আমার জন্য নতুন ভাজা এক টুকরা মাদেইরা কেক আর পাতলা রুটির টুকরা দিয়ে বানানো মশুর ডালের স্যান্ডউইচ রেখে দিতো। এগুলো ক্লিয়ার করার জন্য থাকতো বরফ-ঠাণ্ডা কোকা-কোলার ঐতিহ্যবাহী বোতল।
স্কুলে বিখ্যাত মেয়ে হওয়ার সুবিধা ছিলো। অনেকেই আনন্দচিত্তে আমার হুকুম তামিল করতো। আমার ঘনিষ্ঠ বান্ধবীদের যে গ্রুপটা ছিলো, তাদের কেউই শুধু নিজের জন্য খাবার কিনতো না; আমার জন্যও নিয়ে আসতো কিংবা আমিই আমার ভাগ (খুব ভালোবাসা সহকারে) নিয়ে নিতাম। নাদিয়ার হাতে আবার এটা এড়ানোর উপায় ছিলো। সে বাড়তি অংশটা মুখের বাইরে বের করে রাখতো। আমাকে তার দিকে আগাতে দেখলে সে আবার সেটা পকেটে ঢুকিয়ে ফেলতো। তার পকেটে নাস্তা অথবা টাকা খুঁজতে গিয়ে এভাবে বেশ কয়েকবার মুখের লালা লাগা জিনিশ দেখতে পেয়ে আমি শিক্ষা পেলাম তার পকেটে আর হাত দেয়া যাবে না।
টিফিনের সময় আমি সবার সাথে মেশার কাজে ব্যস্ত থাকতাম। অনেকগুলো গ্রুপের সাথেই আমি জড়িত ছিলাম। টেলিভিশনে নতুন স্বীকৃতির সাথে ব্যাপক আত্মবিশ্বাস বেড়ে যাওয়ার কারণে আমার দাম অনেক বেড়ে গেলো। প্রত্যেকেই আমার বান্ধবী হতে চাইতো। কিন্তু সবার সাথে আমি বান্ধবী পাতাতে চাইতাম বলে মনে হয় না। ক্লাশ এইটে এসে নাদিয়া আর আমার উপরে অন্যদের চোখে ‘সেরা বান্ধবী’র লেবেল লাগলো। কারণ স্কুল ছুটির পর বেশির ভাগ সময়ই দুজন একসাথে কাটাতাম। কিন্তু টিফিনের সময় আবার সে আমার ব্যাপারে উদাসীন থাকতো। যখন দরকার হতো তখনি সে বান্ধবীর মতো আচরণ করতো। রাজনীতিবিদ এবং শিল্পপতিদের অতি ধনী মেয়েদের পাশে ঘেঁষার জন্য যখন সে আমাকে ডাকতো, আমাকে সে ডাকে সাড়া দিতে হতো।
আমি কখনো বিশ্বাস করে কাউকে গোপন কথা বলিনি, কারো সামনে কারো গোপন কথাও ফাঁস করিনি। ক্লাশ ফাইভে object নিয়ে সেই ঘটনা থেকে আমি বুঝতে পেরেছি মানুষ কাঁদুনে মেয়ের চেয়ে হাসিখুশি মেয়েকেই পছন্দ করে। আমার মায়ের মৃত্যুর খবর বাদে আমি কখনো নতুন কারো সামনে কাঁদিনি। ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের মধ্যে চোখের পানি ঝরানোয় আমি সব সময় দুঃখ বোধ করেছি। এটাকে এক রকম দুর্বলতা হিশাবে গণ্য করা হয়, যেটার সুযোগ তারা গ্রহণ করতে পারে। পৃথিবীটা একটা স্টেজ। এখানে আমাদেরকে অবশ্যই মেকাপ পরে থাকতে হবে। খুব কম লোকই আপনার বাস্তবতা বুঝতে পারবে। আর এই কম লোকেরা কখনো আপনাকে কাঁদাবে না।
আমি বিখ্যাত হয়ে গেলেও আমার প্রতি মানুষের ভালোবাসা কমিয়ে দেয়ার মতো সামান্য বিষয়ই করেছি বলে মনে হয়। আমি যতই খাই না কেন, কখনো মোটা হইনি কিংবা চেহারায় মেছতা পড়েনি। সুখের বিষয় হলো সে সময় আমি ঈর্ষা কী জিনিশ জানতাম না। কিছু মেয়ে আমার চেহারায় কোনো দাগ না থাকার কারণে আমাকে অভিশাপ দিতো। বাকিরা আবার আমার ক্ষীণ দেহের কারণে অপমান করতো। এ সব আমাকে আঘাত করতে পারতো না। কারো মতামত নিয়ে আমি মাথা ঘামাতাম না। বয়ঃসন্ধিকালের সেই সময়টাতে আমি চাইতাম আমার পরিবারের বয়স্কদের মতো বাঁকা না হই। ভারী, মেছতা পরা বুক ছিলো বিরক্তিকর। খোদা আমার কথা শুনেছেন। আমি জীবনের অধিকাংশ সময়ই বুক সোজা করে থাকতে পারলাম। ১০ বছর বয়সের আগে আমার মাকে ব্রা কিনে দেয়ার কথা বলতে হয়নি। এর মধ্যে স্কুলে আমার চতুরতা চলতে থাকে। কোনো ক্লাশের বিশেষ মুহূর্তে আমি বান্ধবীদের ব্রার ইলাস্টিক ফিতা ধরে টান মেরে তাদেরকে হতভম্ব অবস্থায় ফেলে দিতাম। আওয়াজটা হতো গুলতি মারার মতো। বলা বাহুল্য, পুরো ক্লাশে পাগলের মতো হাসির রোল পড়লেও যারা এর শিকার হতো তারা কিন্তু এটাকে সমর্থন জানাতে পারতো না।
আমার বান্ধবী হওয়ার কারণে নাদিয়া আমার আক্রমণ থেকে রক্ষা পায়নি। স্কুলে আমাদের ডেস্কগুলো তালা দিয়ে রাখা যেতো। আমি নাদিয়ার পিছনে বসতাম। এক দিন আমি তার লম্বা, ঘন, চুলের বিনুনির লেজ থেকে একটা তালা পিছলে এনে তাকে পিছন দিক থেকে আমার ডেস্কের সাথে বেঁধে ফেললাম। আমাদের গার্হস্থ্য অর্থনীতির ম্যাডাম ছিলেন তুলনামূলক বেশি স্নেহপরায়ণ আর সে কারণে অত্যাচারের শিকার। তিনি যখন নাদিয়াকে দাঁড়াতে বললেন, বেচারী উঠতে পারলো না। সে সত্যিই আমার ডেস্কের সাথে বাঁধা পড়ে গিয়েছিলো।
আমাদের গ্যাংয়ের বেশির ভাগ মেয়ের হাতে গার্হস্থ্য অর্থনীতি ম্যাডাম অত্যাচারিত হতেন। ইন্দ্রিয় সুখের দিকে তিনি একটু বেশি মনোযোগী ছিলেন। তিনি ফিনফিনে পোশাক পরে আসতেন। স্বচ্ছ পোশাকের নিচে তার ফিতাওয়ালা আন্ডারওয়ার আমাদের হাসির উদ্রেক করতো। তবে তার মন ভালো ছিলো। তিনি আমাদের হাসাহাসি সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে যেতেন। আমাদের ক্লাশ টিচারের প্রতি মোহাচ্ছন্ন ছিলাম বলে সে সময় আমরা সত্যিকার অর্থে কখনো এই ম্যাডামের প্রশংসা করিনি। আমাদের ক্লাশ টিচার নিগাত আফসান দেখতে সাধারণ ছিলেন, কিন্তু তার আচরণ ছিলো ব্যতিক্রমী সুন্দর। বিজ্ঞানের জ্ঞানের কারণে নয়, বরং আমাদের ব্যক্তিত্বের সকল দিকে তার সম্পৃক্ততা ছিলো বলে তিনি আমাদের বিনয় অর্জন করতে পেরেছিলেন। আমাদের প্রতি তার বিনিয়োগ ছিলো। তিনি যত্ন নিতেন। দুঃখজনকভাবে বিয়ের ঠিক আগ মুহূর্তে তার ক্যান্সার ধরা পড়ে। তার ক্যান্সার তখন চূড়ান্ত পর্যায়ে চলে গেছে। আমাদেরকে বিষয়টা জানানো হয়নি। তার বদলে অপরিহার্যভাবে যে ম্যাডামকেই দেয়া হয়, তাতে আমরা মারাত্মক প্রতিক্রিয়া দেখাই। কেউই মানের শিক্ষিকা ছিলেন না। এরপর আবার আমরা কাউকে সুযোগই দিইনি। ১৯৮৬ সালে আমরা ক্লাশ এইটের ছাত্রীরা মাত্র এক সপ্তাহে আটজন ম্যাডামকে দৌড়ানি দিই।
আমাদের প্রিয় ম্যাডাম কেন আসছেন না অথবা তিনি আসবেন কি না সেটা কেউ আমাদের কাছে ব্যাখ্যা করলো না।
অবিশ্বাস্য গুজবের মধ্যে আমরা দিন পার করতে থাকলাম। সম্ভবত আমরা যখন খুব বেশি বিরক্ত হতাম, মাননীয়া শিক্ষিকা আশেপাশে থাকতেন। তার সাথে তর্ক-বিতর্কে আমরা প্রচুর মজা পেতাম। তিনিও ধৈর্য ধরে আমাদেরকে সহযোগিতা করার চেষ্টা চালাতেন। কার কার প্রতি আমার প্রচ-, অন্ধ আনুগত্য ছিলো, সেটা তিনি শুরুতেই ধরে ফেলেছিলেন, যদিও তারা নিজেরা এ ব্যাপারে ছিলো অসচেতন। এক দিন ক্লাশে আমি নাদিয়ার কথার জবাব দেয়ার জন্য দাঁড়িয়েছি, তিনি আমাকে বাইরে নিয়ে গেলেন। ভদ্রভাবে তিনি বুঝিয়ে দিলেন অন্য লোকদের জন্য কেন আমার ঝুঁকি নেয়ার দরকার নেই। তিনি আমাকে সাবধান করে দেয়ার চেষ্টা করলেন যে, সবাই আমার আন্তরিক সমর্থনের যোগ্য নয়। কিন্তু আমি তার কথা শুনলাম না। যে বান্ধবীর কথা বলা হচ্ছে, সে ভবিষ্যতে জীবনের বড় বড় সংকটে আমাকে পরিত্যাগ করতে পারে। আমার মাননীয়া শিক্ষিকার হয়তো নিজেরই এ অভিজ্ঞতা হয়েছিলো। আর সে কারণেই আমার সামনে কঠিন, বাস্তব ভাঁড়ের চেহারাটা চিনতে পেরেছিলেন। কিন্তু নিজেকে অন্যদের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ গণ্য করা শিখতে আমার ত্রিশ বছর লেগে গেছে। আমরা মানুষের কথা শুনি। কিন্তু তারা আশোলে কী বলছে সেটা কি শুনি?
১৯৯০ সালে আমি অনীহার সাথে জিন্নাহ কলেজ ফর উইমেন-এ ভর্তি হই। এটা ছিলো পেশোয়ার ইউনিভার্সিটির অধীনে। এটাকে শহরের সেরা কলেজ হিশাবে গণ্য করা হতো। তবে আমার মন পড়ে ছিলো লাহোরের কিনেয়ার্ড কলেজে। কিন্তু আমার মা আমাকে বড় শহরে পাঠানোর সাহস পাননি। এ কলেজ নিয়ে তিনি এমন কিছু গল্প শুনেছিলেন, যেগুলো তার মনে কিনেয়ার্ড কন্যাদের উদার এবং সাহসী চিত্র এঁকে দিয়েছিলো। বিদেশে থেকে আসা এই মা এ জন্য পাকিস্তান আসেননি যে, তার মেয়ে এ ধরনের ঝুঁকি নেবে। সে কারণে তিনি আমাকে লাহোর অথবা ইসলামাবাদের কোনো একটা কলেজে পাঠানোর সূক্ষ্ম কৌশল বের করলেন। আমার মন ভেঙে গেলো। আমি পেশোয়ারের কোনো কলেজে আবেদন করতে অস্বীকৃতি জানালাম। সত্যি কথা বলতে কী, জিন্নাহ কলেজের প্রিন্সিপ্যালের ওফিশে আমাকে তার টেনে আনতে হয়েছিলো। প্রিন্সিপ্যাল ছিলেন অবিশ্বাস্য রকম রূঢ় এক মহিলা। তার খারাপ ভাষার জন্য তিনি ব্যাপকভাবে ঘৃণিত ছিলেন। আমাদের আবেদন করতে দেরি হয়ে গিয়েছিলো। কিন্তু আমার মায়ের দারুণ সুখ্যাতি ছিলো। কলেজের ভাইস পিন্সিপ্যাল তাকে তখনি ডা. শের বাহাদুর খানের মেয়ে বলে চিহ্নিত করেন। আমার মা তাকে বলছিলেন এক দিন আমি হবো তাদের কলেজের সম্পদ। আমার কানে যখন কথাটা এলো, আমি অস্বস্তিতে মাথা নিচু করে ফেললাম।
কলেজের প্রথম দিন কিছুটা সেলিব্রেটির মতো আমাকে স্বাগত জানানো হলো। আমি আশ্চর্য হয়ে গেলাম। আমাকে কোনো রকম নির্যাতনের শিকার হতে হলো না, যেটা নতুনদের বেলায় প্রথম দিনে ছিলো অবধারিত। দিন যত যেতে লাগলো, আমার ভক্ত অনুসারী বাড়তে লাগলো। তবে এটা ছিলো ছাত্রীদের, বিশেষ করে জুনিয়র ছাত্রীদের ভিতরে; শিক্ষিকাদের ভিতরে নয়। অল্প কয়েক দিনের মধ্যেই কলেজের চোখে ধরা পড়লো, আমার মা তার আমলে যেমন উপযুক্ত নারী ছিলেন আমি মোটেও তেমনটা নই। আমার কাছে জীবন ছিলো সব সময় হাসি আর আনন্দের বিষয়। ঝলসানো রোদের মধ্যে বাধ্যতামূলক এনসিসি (ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর) ট্রেনিংয়ের খাটুনি আমাদের সবার যেখানে খাটার কথা, সেখানে আমাকে পাওয়া যেতো ক্যাফেটারিয়ার শীতল ছায়ায়। সেখানে আমি তাস খেলায় আমার পারদর্শিতা দেখাতাম। আমার বদলি হিশাবে ট্রেনিংয়ে খেটে আসার মতো অনেক ভক্ত ছিলো। বন্দুক নিয়ে খেলতে আমি ভালোবাসতাম, কিন্তু রোদের মধ্যে ঘাম ঝরানো সে সময় আমার ধাতে ছিলো না।
জুনিয়ররা শুধু আমাকে না, আমার গ্রুপটাকেই ভয় পেতো। লেখাপড়া থেকে শুরু করে খেলাধুলা, নাচ—আমরা ছিলাম সব কিছুতে সেরা। যদিও আমরা তখনো ভদ্রই ছিলাম, তবুও কলেজ প্রশাসনের সাথে আমাদের নিয়মিত ঝামেলা দেখা দিতো। এর ফলে অবশ্য তারা কিছু ক্ষুদ্র সমস্যা সৃষ্টি করতেন। স্কুলের স্টেজে চলমান নাচ প্রদর্শনীতে ব্যাঘাত সৃষ্টি করে আমরা তাদের উপর প্রত্যুৎপন্নমতিত্ব দেখাতাম বলে আমাদেরকে জরিমানা করা হতো। ক্লাশে যাওয়ার পথে জুনিয়ররা আমার ছবি এঁকে রাখতো। স্কুলের বাথরুমে আমাকে নিয়ে লেখা কবিতার দেখা মিলতো। অতীতের এ সব ঘটনা মনে করলে কিছুটা বাড়াবাড়ি বলেই মনে হয়।
শিক্ষিকাদের মধ্যে সবচেয়ে কঠিন ছিলেন মিস চাঁদ রেহমান। আমার স্বাধীনচেতা ভাব দেখে তিনি তার মুচকি হাসি চেপে রাখার কঠিন চেষ্টা চালাতেন। আমাদের সিনিয়ররা তাকে সবচেয়ে বেশি ভয় পেলেও আমার জন্য তিনি আবার কিছুটা সহৃদয় ছিলেন। প্রতিদানস্বরূপ তার সকালের ক্লাশে আমি কখনো দেরি করে যাইনি। আমাদের ইংরেজি সাহিত্য পড়াতেন মিস রুখসানা ইকবাল। তিনি আমার বর্ণনা দিতেন এভাবে, ‘রেহাম স্রোতের মতো বাধাহীন। তাকে বেঁধে রাখা যায় না।’ যদিও ভালো ছাত্রী হওয়ার কোনো আকাঙ্ক্ষা আমার মধ্যে ছিলো না (এবং হওয়ার জন্য সত্যিই কঠোর চেষ্টা চালাইনি), এদের মতো শিক্ষিকারাই আমার মধ্যে লেখাপড়ার উৎসাহ জাগিয়ে তুলেছেন। এটা নিয়ে আমাদের মূল গ্রুপে যে ছয়টা মেয়ে ছিলো, তাদের কারো কোনো মাথা ব্যথা ছিলো না। আমাদের কাছে নকল ছিলো ডাল-ভাত। আমার মতো মেয়েরা পরিস্থিতির বিপরীতে যেতে পারে না। সবাই ধরে রাখতো, ‘রেহাম সব কিছু পড়ে রাখবে। এটা ওর জন্যই রেখে দে।’ আর কারো পড়ার দরকার হতো না।
ক্লাশ টেনের শেষ দিকে এসে আমার বান্ধবীদের ধীরে ধীরে বিয়ে হতে শুরু করলো। প্রতি ছয় মাসের মতো সময় পর পর একজন একজন করে বিবাহিত জীবনে প্রবেশ করতে লাগলো। বিয়ের পর তারা যখন গর্ভবতী অবস্থায় পড়ালেখায় ফিরে আসে, কারো কারো জন্য নকল করাটা ফরজ হয়ে দাঁড়ায়। একবার ইন্টারমিডিয়েট লেভেলে আর্টস ফ্যাকাল্টির এক পরীক্ষায় পরিদর্শক আমাকে হলের শেষ প্রান্তে নিয়ে বসালেন। আমি যাতে শান্তিতে পরীক্ষা দিতে পারি, সে জন্য তিনি সেখানে আমাকে একা বসতে বললেন। আমার পিছনে বসা মেয়েরা যে অব্যাহতভাবে আমার চেয়ারে লাথি মেরে যাচ্ছে, সেটা তার চোখে পড়েছিলো। পনেরো মিনিট শান্তিতে কাটলো। এরপর হঠাৎ আমাকে আঁতকে উঠতে হলো। দেখলাম পিছনের মেয়েটা সত্যিই আমার সামনে চলে এসেছে। টমাস হার্ডির উপন্যাস ‘ফার ফ্রম দা ম্যাডিং ক্রাউড’ থেকে থেসমোথিটকে নিয়ে একটা প্রশ্ন এসেছিলো। সে আমার কাছে জানতে চাইলো এই থেসমোথিটের মানে কী। পরিদর্শক মেয়েটাকে আমার সামনে থেকে টেনে নিয়ে গেলেন। পুরো পরীক্ষার হলে হাসির রোল উঠলো।
একবার প্রিন্সিপ্যাল আমাকে একটা বার্তা দিলেন যে, আমার পিছনে এক ব্রিটিশ মেয়ে বসবে, আমি যেন তাকে পরীক্ষার সময় তাকে সাহায্য করি। দুর্ভাগ্যবশত মেয়েটাকে তার মা-বাবা অ্যারেঞ্জ বিয়ের জন্য পেশোয়ারে পাঠিয়ে দেয়। পেশোয়ারের রক্ষণশীল পরিবেশে খাপ খাওয়ানো তার জন্য কঠিন হয়ে পড়ছিলো। যে লোকটার সাথে তার বিয়ে হয়েছিলো সেই লোক এক বছর আগে আমার পরিবারের কাছে বিয়ের প্রস্তাব পাঠিয়েছিলো। আমি ভেবেছিলাম জারসাদার এই লোক বিয়ের পর আমাকে পড়ালেখা চালাতে অথবা ক্যারিয়ার শুরু করতে দেবে না। একজন পশ্চাদপদ পশতুন হওয়ার কারণে তাকে আমি প্রত্যাখ্যান করেছিলাম। কয়েক বছর পর সেই মেয়েটার সাথে হঠাৎ আমার দেখা হয়ে গেলো। সে তখন একজন বিচারক। সে তার প্রগতিশীল স্বামীর প্রেমে পাগল। আর আমি কি না তখন সুন্দর পুরান ইংল্যান্ডে বন্দী।
৮০-৯০’র দশকে পেশোয়ারকে বেশ রক্ষণশীল মনে করা হতো। তবে আমরা আন্ডারগ্রাউন্ডে সক্রিয়ভাবে ফ্যাশনের দৃশ্য চালাতাম। শুধু মেয়েদের জন্য ফ্যাশন সহ বিভিন্ন শো আয়োজন করা হতো প্রায়শ। অভিজাতদের জন্য বেশ কিছু লেডিস ক্লাব ছিলো। আমাদের সামাজিক সার্কেলের অন্য সব মেয়েদের মতো আমিও ১৩ বছর বয়স থেকে শুধু মহিলাদের জন্য আয়োজিত ফ্যাশন শোগুলোতে ক্যাটওয়াক করতাম। এটা ছিলো পশ্চিমের বল নাচে প্রথম আত্মপ্রকাশকারিণী তরুণীর মতো। একেবারে অভিজাতদের ছোট একটা গোষ্ঠী। যাদের মধ্যে পশ্চিমা প্রদর্শনী ছিলো, তারা নিজেদের জগতে বাস করতো। এই শ্রেণীটির মধ্যে আবার কূটনৈতিক সার্কেল ঢুকে গিয়েছিলো। সেখানে ক্রিসমাস পার্টিও হতো (আমরা সবাই ক্রিসমাসের ভক্তিগান এবং ঐতিহ্যের সাথে পরিচিত ছিলাম)। আমার কলেজ জীবনের এক বান্ধবী আবেগের সাথে স্মরণ করলো, স্ট্রাপলেস ব্রার অস্তিত্ব আছে কি না সেটা জানারও বহু আগে আমি তাকে এর পরামর্শ দিয়েছিলাম। অন্য দেশে বা সংস্কৃতিতে কী ঘটছে সে ব্যাপারে জানলেও আমি আমার নিজস্ব ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতি সম্পর্কে সচেতন ছিলাম।
কলেজে আমার নাম হয়ে গিয়েছিলো ঢাকনাওয়ালা দানবী। মেয়েদেরকে দেখার জন্য অসংখ্য ছেলে রাস্তায় লাইন ধরে দাঁড়িয়ে থাকতো। আমার পরিবার এবং বান্ধবীরা সুন্দরভাবে চাদরে জড়িয়ে দেয়। সে কারণে কেউ আমাকে এক লহমাও দেখতে পারে না। আমি বিশ্বাস করতাম প্রত্যেকটা পুরুষ ছিলো ভয়ঙ্কর বিকৃত রুচিসম্পন্ন। আমার বান্ধবীদের মধ্যে এ নিয়ে কোনো অস্বস্তি ছিলো না। কিন্তু আমার ব্যাপারটা ভিন্ন ছিলো। আমার তখনো বিয়ে হয়নি। এ চিন্তাটা ভুলও হতে পারে।
১৬ বছর বয়সী একটা মেয়ে হয়েও আমি টাকা উপার্জন আর ক্যারিয়ার গুছানোর পিছনে ছুটতাম। আমি আমার মাকে তার নিজের নানীর কথা মনে করিয়ে দিতাম। আমার অস্থিরতা আর অধৈর্য দেখে তিনি যখন বিরক্ত হয়ে যেতেন, আমাকে জোহরা জান বলে ডাকতেন। এটা ছিলো তার নানীর নাম। এই লেবেল লাগায় আমি অবশ্যই আনন্দিত হতাম। কারণ নানী ছিলেন আমার আদর্শ। আমার নানী ছিলেন প্রাণবন্ত মহিলা। শক্তিতে পূর্ণ। এমনকি শেষ বয়সে এসে তিনি যখন তেমন চলতে-ফিরতে পারছিলেন না, তখনো তিনি জানতেন কে কী করছে। বিছানায় থেকেই তিনি গার্হস্থ্য বিষয়াদি নিয়ন্ত্রণ করতেন। বিপরীত দিকে আমার মা এত ধীরে কথা বলতেন যে, বিদেশ থেকে তাকে ফোন করা ছিলো অসম্ভব। কারণ এতে বিমানের টিকিটের সমান খরচ হতো। আমার মা ছিলেন গৃহস্থালি কাজে বুদ্ধিমান কচ্ছপের মতো। চারদিকের জিনিসপত্র দেখে তার মাথা ঘুরাতো।
অন্য দিকে আমার ভিতর থেকে ব্যাপক উৎসাহ আর আইডিয়া বের হতো। ধীরে ধীরে শুরু করার বদলে ব্যবসার সা¤্রাজ্য বানাতে প্রস্তুত ছিলাম আমি। আমার মাথা থেকে মেয়েদের জিম থেকে শুরু করে হোম ডেলিভারি খাবারের ব্যবসার মতো নতুন আইডিয়া বের হতো প্রতি দিন। চলচ্চিত্রও বানাতে চেয়েছিলাম আমি। এক গ্রীষ্মে পুরো একটা স্ক্রিপ্ট লিখে ফেললাম। বিষয়বস্তু ছিলো কাতিয়ার গ্রীষ্মকাল, যেটা আমার মায়ের কাছে ছিলো আতঙ্ক। তবে আমার কাহিনীতে কোথাও ছেলেরা থাকতো না, থাকতো না বিয়ের কথাও।
কিন্তু জিয়ার শাসনাধীনে সব কিছু খুব দ্রুত বদলাতে শুরু করলো। এ ধারায় বদলালো আইনও। ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন দেয়ার যে ওয়াদা তিনি দিয়েছিলেন তার আর হলো না। ১৯৮৮ সালে তার বিমান বিস্ফোরিত হওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি দশ বছর ক্ষমতায় ছিলেন। তিনি বেড়ে ওঠেন আফগান যুদ্ধের সময়, যখন মুজাহিদিন, সাদ্দাম হুসাইন এবং বিন লাদেনদেরকে বীর হিশাবে গণ্য করা হতো। জিহাদকে সম্মানের চোখে দেখা হতো। ইসলামী হুদুদ অধ্যাদেশ জারি করা হলো। জিয়ার আমলে ইসলামীকরণের যে প্রভাব শুরু হয়েছিলো, সেটা তার রহস্যময় মৃত্যুর পরও চলতে থাকে। সামাজিক কাঠামো বদলে গেলো, বলা যায় অপরিবর্তনীয়রূপে।
আমার মা তার স্মৃতিচারণ করলেন : তারা যখন টিনেজার ছিলেন, তখন পেশোয়ারের বড় রাস্তায়ও তারা চাদর ছাড়া চলতে পারতেন। কিন্তু জিয়া পরবর্তী সময়ে সব কিছু ছিলো ভিন্ন। ইসলামাবাদ থেকে আমার ভাগ্নেরা জানতে চাইতো পেশোয়ারে কোনো মহিলা আছে কি না। কারণ ওদের চোখে কোনো মহিলা পড়েনি। আমাদের আমেরিকাপন্থী সার্কেলেও পরিবর্তনের হাওয়া ঢুকলো। আমার বড় বোনের বিয়ে হলো তার সহপাঠীদের মতো ২৬ বছর বয়সে। অন্য দিকে আমার এবং আমার প্রায় সব বান্ধবীর বিয়ে হলো অনেক কম বয়সে। মূলত আমার সব বান্ধবীর বিয়ে হয়েছে তারা টিনেজ বয়স পার করার আগেই। ১৫ বছর বয়সী কোনো মেয়ের বিয়েতে কেউ বিস্মিত হতো না। এর মধ্যে শিক্ষিত পরিবারের মেয়েরাও ছিলো। সে সময় মনে করা হতো সঠিক সময়েই তাদের বিয়ে হচ্ছে। আমি যদি দেখি লেখাপড়া শেষ করার আগেই কোনো মেয়ের বিয়ে হয়ে যাচ্ছে, আমার যে প্রতিক্রিয়া হয় তা হলো আমি আঘাত পাই এবং প্রতিবাদ করি।

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ভোর ৬:৫০

সনেট কবি বলেছেন: ভাল লিখেছেন।

২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৭:০৫

হাবীব কাইউম বলেছেন: আমি লিখিনি, রেহাম খান লিখেছেন, আমি বাংলায়িত করেছি।

২| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৮:১৫

নজসু বলেছেন: এগিয়ে চলুন ভাই।

২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:০১

হাবীব কাইউম বলেছেন: ধন্যবাদ।

৩| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:১৪

রাজীব নুর বলেছেন: অনুবাদ সুন্দর হয়েছে।
পড়তে ভালো লাগে।

২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:২২

হাবীব কাইউম বলেছেন: ধন্য করে বাদ দিলাম দাদা।

৪| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:০৬

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: অনুবাদ সুন্দর হচ্ছে।

২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:২৪

হাবীব কাইউম বলেছেন: ধন্যবাদ মাইদুল ভাই।

৫| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:৪১

করুণাধারা বলেছেন: যতই পড়ছি, ততই বইটা পড়ার আগ্রহ বেড়ে যাচ্ছে। জানিনা আপনি পুরো বই অনুবাদ করে দেবেন কিনা! যদি পুরোটা নাও করেন, অনুরোধ থাকলো অন্তত ইমরান খানের সাথে রিলেটেড অধ্যায়গুলো অনুবাদ করে দেবেন।

অসংখ্য ধন্যবাদ এই পর্বের জন্য।

২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:২৬

হাবীব কাইউম বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকেও, পড়ার জন্য। আপাতত এ বইটা নিয়ে আর আগানোর ইচ্ছা নেই। হ্যাঁ, কোনো প্রকাশক যদি সম্মানী প্রদান সাপেক্ষে চুক্তিতে আসে, তাহলে ভাবতে পারি। যে ৫ অধ্যায় অনুবাদ করেছি, সেটুকু উন্মুক্ত করে দেবো, দুশ্চিন্তা করবেন না।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.