নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

I have a dream...

নিরন্তর সত্যের উপর পথ চলি, দুমড়ে মুচড়ে দেই সব বাধা!

আব্দুল হালিম মিয়া

আব্দুল হালিম মিয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

জয় বাংলা। বাংলাদেশ জিন্দাবাদ। জয় বাংলাদেশ।

২২ শে জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১১:১৪

আমার অফিসের কলিগদের মধ্যে একজন কোরিয়ান, চারজন চাইনিজ, একজন ভারতীয়, একজন রোমানিয়ান, একজন ফিলিপিনো, একজন জার্মান, একজন নাইজেরিয়ান, দুইজন ইহুদি, দুইজন মিক্সড সাদা। একেক জনের মেজাজ, সংস্কৃতি, ভাষা ভিন্ন হলেও আমরা যখন অফিসে আসি আমরা একটা পরিবার হয়ে যাই। প্রত্যেকের পরিবারের, ব্যাক হোমের ভিন্ন ভিন্ন সমস্যা রয়েছে কিন্তু অফিসে এলে সব কিছু পিছনে ফেলে সকাল ৮ টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত আমাদের একটাই টিম, একটাই গোল। অফিসে এসেও থাকে নানা ধরনের হতাশা, স্ট্রেস, কিছুদিন পরপরই আমাদের কাছে আসে বিভিন্ন জটিল সব প্রকল্প যেগুলোর ধরন থাকে ভিন্ন ভিন্ন ন্যাচারের। আর এসব প্রকল্পের যারা ষ্টেইক হোল্ডার তারাও আসেন ভিন্ন ভিন্ন ব্যাক্তিত্ব নিয়ে, চিন্তার ভিন্নতা নিয়ে। তারপরও যুগের পর যুগ আমরা সকল প্রতিকুলতা কাটিয়ে একটার পর একটা প্রকল্প অত্যন্ত অরগানাইজড ওয়েতে বাস্তবায়ন করে চলেছি। প্রতিনিয়তই আমাদের বের করতে হয় যে আগের প্রকল্পটা করতে যেয়ে কি কি সমস্যা হয়েছিল যেটা পরের প্রকল্পতে আর না হয়। এর জন্য রয়েছে নানা ধরনের ট্রেনিং ও এক্সারসাইজের ব্যবস্হা। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ন এক্সারসাইজটা হলো, ভিন্ন ভিন্ন দেশ ও সংস্কৃতি থেকে আসা মানুষগুলো যেনো একে অপরের সাথে খুবই বন্ধুত্বপুর্ন সম্পর্ক অবস্হা বজায় রাখতে পারে সেটা। সন্ধ্যায় বাড়ীতে যেয়েই যখন টিভির নিউজ চ্যানেল ওপেন করি, কিংবা অফিসে এসেই যখন অনলাইনে ইংরেজী বাংলা পত্রিকা দেখি তখন রক্ত টগবগ করে উঠে অসহায় ফিলিস্তিনিদের উপর ইহুদিদের অত্যাচার দেখে। আর তখনই কাধে কাধ মিলিয়ে কাজ করতে হয় সেই ইহুদি ইয়াং মেয়েটার সাথে যে কিনা তার দেশ ইসরায়েলের সকল কর্মকান্ডের একজন সরাসরি এক্টিভিষ্ট। আমি ব্যাক্তিগতভাবে কিংবা মেয়েটি নিজে আমাকে মুসলিম হিসেবে পছন্দ না করলেও আমরা একে অপরের বন্ধু ও কলিগ। আমাদেরকে অত্যন্ত সৌহার্দপুর্ন সম্পর্ক বজায় রেখেই চলতে হয় এবং অফিসের লক্ষ্য পুরনে কাজ করে যেতে হয় বছরের পর বছর।
বলে রাখি যে আমাদের বস যিনি তিনিও সত্তর বছেরর বৃদ্ধা একজন ইহুদি এবং গে যেটা এতবছর একসাথে কাজ করলেও জানতাম না, জানলাম এই সেদিন।

আমাদের কলিগদের একে অপরের সাথে পারস্পরিক সম্পর্ক বাড়ানোর জন্য প্রতি মাসেই থাকে নানান ইভেন্ট। গত সপ্তাহে সিনিয়র ম্যানেজার আমাদের সকলকে কিছু কার্ড দিয়ে বললেন তোমরা লটারী করে নাম পিক করো, যার ভাগ্যে যার নাম পড়বে সে তার ঐ কলিগকে উদ্যশ্য করে এই শুভেচ্ছা কার্ডে ধন্যবাদ ও এপ্রিসিয়েশন জানিয়ে তিন চার লাইন পজিটিভ কথা লিখে আমার কাছে জমা দিবে। আমি সেগুলো সকলকে পড়ে পড়ে শোনাবো। আমার ভাগ্যে যার নাম উঠলো সে ঐ ইহুদি মেয়েটি। ধর্মীয় কারনে, ইসরাইলি বর্বরতার কারনে আমি ওদের উপর চরম বিরক্ত কিন্তু বাস্তবতা হলো সে আমার অফিসের কলিগ। আমরা একসাথে কাজ করি দীর্ঘদিন। এই অফিসে তার যেমন অধিকার রয়েছে আমারও রয়েছে। তাহলে আমরা একসাথে থাকতে হলে, অফিসের উন্নতির কথা চিন্তা করলে, যে অফিস থেকে আমার ও সেই মেয়েটির উভয়ের মাস গেলে বেতন আসে, যে বেতন দিয়ে আমি আমার পরিবার পরিজনের সংসার চালাই, নিত্য অভাব মেটাই, সেই অফিসকে টিকিয়ে রাখতে হলে, উন্নতি করতে হলে, আমার সাথে ঐ ইহুদি মেয়েটির ধর্মীয় ও অন্যান্য হিংসা বিবেদ ভুলে গিয়ে সহ অবস্হানই শুধু নয়, সৌহার্দপুর্ন সম্পর্ক বজায় রেখেই চলতে হবে। তা না হলে, হয় আমাকে, না হলে তাকে চলে যেতে হবে। এটাই বাস্তবতা। সে মেয়েটা যদি বিএনপি করতো, আমি যদি আওয়ামী লীগ করতাম তাহলেও একই কথাই প্রযোজ্য হতো।
সুতরাং বাংলাদেশের মানুষগুলোকেও এভাবেই ভাবতে হবে। যদি দেশের উন্নতি চান, তাহলে মেনে নিন যে আপনার দেশে বিএনপি যেমন আছে তেমনি আছে আওয়ামী লীগ। একজন আর একজনের অস্তিত্ব অস্বীকার করে কোন লাভ হবে না। ভাল চাইলে কাধে কাধ মিলিয়ে কাজ করুন, না হলে অন্য কোন দেশে চলে যেতে পারেন। যদিও জানি, অন্য দেশে চলে গেলে ঠিকই তখন সোজা হয়েই চলবেন, না হলে বাকী জীবন শ্রীঘরেই কাটাতে হবে! জয় বাংলা। বাংলাদেশ জিন্দাবাদ। জয় বাংলাদেশ।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১:০০

আব্দুল হালিম মিয়া বলেছেন: সবাইকে মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। আসলে কিছুদিন যাবত কেন জানি না, এখানে কোন মন্তব্য প্রকাশ করা যাচ্ছে না। কেনো জানি, মন্তব্য 'গ্রহন করুন' বা 'প্রয়োগ করুন' বাটন বার বার চাপলেও কাজ হচ্ছে না, এরর শো করছে। জানি না কতৃপক্ষ অবগত আছেন কি না!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.