নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

I have a dream...

নিরন্তর সত্যের উপর পথ চলি, দুমড়ে মুচড়ে দেই সব বাধা!

আব্দুল হালিম মিয়া

আব্দুল হালিম মিয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

একটা কল্প কাহিনী--------------

২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১০:৪৩

হুজুর খুব কামেল আলেম। একটা মাদ্রাসা খুলেছেন। কোমলমতি ছাত্র ছাত্রীরা মনোযোগ দিয়ে পবিত্র কোরান পাঠ করে, হাদিস শিখে। এলাকার মানুষ জন উদার হস্তে দান করেন। পবিত্র শবে বরাত, শবে কদর কিংবা ডিসেম্বর মাসের হাড় কাপানো শীতের রাতে হুজুর বাৎসরিক ওয়াজ মাহফিল করেন। ধর্মপ্রাণ মানুষ সারা রাত জেগে হুজুরের ওয়াজ শুনেন, ভোরের দিকে আখেরি মোনাজাতে অংশ নিয়ে সারা জীবনের গোনাহর জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে কান্নাকাটি করেন। মাদ্রাসাটা একদিন সরকারি অনুমোদন পেল। সরকারী টাকায় মাদ্রাসার মাঠ ভরাট হলো। টিনের চাল থেকে কংক্রিটের ছাদ হলো।
হঠাত একদিন সরকারী অডিট অফিসের লোক জন এসে মাদ্রাসার খাতাপত্র জব্দ করলো। তদন্ত করে ধরা পড়লো সরকারী টাকার অর্ধেক পরিমান মাদ্রাসায় খরচ হয়েছে, বাকী টাকার কোন হিসাব নেই। যথারীতি হুজুরের বিরুদ্ধে মামলা হলো। হুজুরকে পিছমোরা করে বেধে পুলিশের গাড়ীতে ঊঠানো হলো। একদিন থানা হাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে কোর্টে চালান করা হলো। বিচার কাজ চললো টানা দু মাস। হুজুর দোষী সাব্যাস্ত হলেন। বাংলাদেশ দুদক আইনের বিশেষ ধারা মতে হুজুরের দশ বছরের জেল ও পন্চাশ টাকা জরিমানা করা হলো। যথারীতি হুজুরকে মাদ্রাসা থেকে বরখাস্ত করা হলো, হুজুরের জায়গায় নুতন হুজুরকে নিয়োগ দেয়া হলো। সমাজের অনেকেই বিস্মিত হলেন কিন্তু কোন প্রতিবাদ বা বিক্ষোভ হলো না। কারন, দেশের আইনের প্রতি সকলেরই রয়েছে অগাধ বিশ্বাষ ও শ্রদ্ধা।
মহান মুক্তিযুদ্ধের নয়মাস সম্মুখ যুদ্ধে অসীম সাহসের সাথে যুদ্ধ করে নঈমুদ্দীন প্রচন্ড বীরত্ব দেখিয়েছেন। হানাদার পাকিস্তানী মিলিটারী ও দেশীয় রাজাকাররা তার নাম শুনলেই কাপড় নষ্ট করে ফেলতো। স্বাধীনতার পর বহু জায়গায় তাকে সম্বর্ধনা দেয়া হয়েছে। পাঠ্য পুস্তকেও তার নাম অন্তর্ভুক্ত করা আছে। স্বাধীনতা বিরোধী ও সামরিক জান্তা স্বৈরশাসকদের আমলে দেশের কোন গুরুত্বপুর্ন দায়িত্ব তাকে দেয়া হয় নি। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সরকার আসার পর তাকে দেয়া হলো সরকারী ক্রয় সংক্রান্ত অডিট কমিটির চেয়ারম্যানের পদ। এতদিন তিনি বেশীরভাগ সময় গ্রামেই কাটাতেন। বাড়ী ঘরের অবস্হাও তেমন ভালো ছিল না। এবার সরকারী দায়িত্ব পাবার পর রাজধানীতে এসে সরকারী বাড়ীতে ঊঠতে হলো। একখানা সরকারী গাড়ী, পিয়ন, ড্রাইভার ও অফিসের ব্যবস্হাও হয়ে গেল।
মুক্তিযুদ্ধের সরকার বলে কথা। দেশে কোন স্বজন প্রীতি দুর্ণীতিকে প্রশয় দেয়া হয় না। বাপের উপর বাপ বসিয়ে সকল সরকারী প্রতিষ্ঠানে প্রচন্ড নজরদারীতে রাখা হয়েছে। হঠাত করেই তদন্তে এলো দুদকের স্পেশাল টিম। তন্ন তন্ন করে খুজে দেখা হলো সরকারী অডিট কমিটির এই অফিস ও তার কার্যাবলী। ধরা পড়লো মুক্তিযুদ্ধা নঈমের বউয়ের নামে গুনশান দুই নম্বরে দশ কাঠার উপরে একখন্ড জমি নেয়া হয়েছে। ছেলের নামে গ্রীনল্যান্ডস ব্যাংকে দশকোটি টাকার ফিক্স ডিপোজিট। নঈমের মাসিক বেতন ছিল বিশ হাজার টাকা। টিএ, ডিএ সহ সবকিছু মিলিয়ে পন্চাশ হাজার টাকা। তাতে কোন ভাবেই বিগত দুই বছরে গুলশানে এরকম একটা সম্পত্তি আর ব্যাংকে এত টাকার ফিক্স ডিপোজিট সম্ভব নয়। যথারীতি মামলা হলো।
নঈমের হাত দুটোকে পিছমোড়া করে বেধে পুলিশের গাড়ীতে উঠানো হলো। দু দিন জেল হাজতে যথারীতি জিজ্ঞাসাবাদ করে কোর্টে চালান করে দেয়া হলো। এরকম একজন মুক্তিযুদ্ধার বিচার করতে যেয়ে একজন বিচারক বিব্রত হলেন। ফলে মামলাটি দুই মাসের জায়গায় তিন মাসে শেষ হলো। যথারীতি তারও দশবছর কারাদন্ড ও এক লক্ষ টাকা জরিমানা করা হলো। কিন্তু কি আশ্চার্য্য, সরকারী দল বা কোন গ্রুপের পক্ষ থেকে নঈমকে বাচাতে একটা বিবৃতিও দেয়া হলো না।
দেশ আজ সত্যিই আইনের শাষনের দেশ হয়েছে। যেখানে অন্যায় করলে কোন মাওলানা, রাজাকার, মুক্তিযুদ্ধা বা পুরোহিতকে ক্ষমা করা হয় না। দেশ চলে শুধুই আইনের নিজস্ব গতিতে!

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১১:৩৯

চাঁদগাজী বলেছেন:


আপনার 'কল্প, গল্প বা মল্প"তে মুক্তিযোদ্ধার রূপক দেখানোর দরকার নেই; বেংগল রেজিমেন্ট ও ইপিআর মিলে ৩৫ হাজার সৈনিক যুদ্ধ করেছেন; ছাত্র-জনতা যুদ্ধ করেছেন ৮৫ হাজার।

প্রাণ দিয়েছেন ২২ হাজার।

এঁদের কেহ যায়গা পায়নি, কোন কিছুর মালিক হয়নি।

ধিক আপনার অসার মগজের গোবরীয় কল্প কাহিনীকে।

২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১:১৩

আব্দুল হালিম মিয়া বলেছেন: আপনি আপনার ধারনা, অভিজ্ঞতা, বয়স ও জ্ঞান অনুযায়ী মতামত দিতেই পারেন। মতামতের জন্য ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.