নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

I have a dream...

নিরন্তর সত্যের উপর পথ চলি, দুমড়ে মুচড়ে দেই সব বাধা!

আব্দুল হালিম মিয়া

আব্দুল হালিম মিয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

অভিজিত হত্যাকারী যেই হোক, যে কারনেই হোক, খুনীর কঠিন সাজা চাই। আইনগত ভাবেই চাই।

০৪ ঠা মার্চ, ২০১৫ রাত ১১:২৬

হ্যাভিং সেইড দ্যাট, অল দোজ থিংস ইন লাষ্ট ফিউ ডেইজ, রিগার্ডলেস, অভিজিত রায়কে যারা নিশৃংসভাবে খুন করেছে তাদের পরিচয় শুধুমাত্র খুনি। অভিজিত কে হত্যার যে ছবি পত্রিকায় এসেছে তা দেখে আমি বাকরুদ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। বিগত কয়েকটা দিন, একটা দৃশ্যই শুধু কল্পনায় এসেছে সেটা হলো তার স্ত্রীর রক্তমাখা শরীরে অসহায় আকুতি আর কয়েক হাজার মাইল দুরে আমেরিকায় বসে তার একমাত্র মেয়ের প্রিয় বাবা হারানোর দৃশ্য দেখে তার যে যন্ত্রনা, তার যে অস্হিরতা, তার যে অসহায়ত্ব সেটা ভেবে আমি নিজেকে সামাল দিতে পারি নাই। মাঝে মাঝে আমার মেয়েটাও বলে, খবরদার, ঐ দেশে যাবার দরকার নেই। তাই ভাবি, হয়তো, অভিজিত যখন এবার আমেরিকা থেকে বাংলাদেশে আসছিলেন, এয়ারপোর্টে কিংবা বাসায় যখন মেয়েকে জড়িয়ে ধরে বিদায় নিচ্ছিলেন, মেয়েটা না জানি কতবার তার প্রিয় বাবাকে অনুরোধ করে বলেছিল, বাবা, না গেলেই কি হয় না !!!

বাবা কোন চক্রান্তের ফাদে পা দিয়েছিলেন কি না জানি না, বাবা প্রিয় দেশের, বাঙালীর সবচাইতে আকর্ষনীয় ইভেন্ট বই মেলায় যোগ দিয়ে প্রিয় পাঠকদেরকে অটোগ্রাফ দিয়ে বই বিক্রির স্মরনীয় মুহুর্ত ফ্রেম বন্দী করার লোভ সামলাতে না পেরে কি না জানি না, বাবা তার প্রিয় বাবা মা'র সান্নিধ্যের লোভ সামলাতে না পেরে কি না জানি না, যে কারনেই হোক, তিনি তার স্নেহের মেয়ের শেষ অনুরোধ রক্ষা করতে পারেন নি, জেনে অথবা না জেনে মৃত্যু উপত্যাকার দেশে পা দিয়েছিলেন। যে উপত্যাকায় প্রতি পদে পদে থাকে ষড়যন্ত্র আর কুটচাল, উগ্রবাদিতা, লোভ, হিংসা আর দুর্নীতির দানবীয় হিংস্র ভয়াল ধাবা।

একবার শুধু কল্পনা করুন, ঢাকা শহরের সবচাইতে সিকিউরড জায়গা ছিল বই মেলা, তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্হা, জাতীয় পত্রিকাগুলো ম্যাপ ড্র করে সকলকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে কি ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্হা ছিল, কোথায় কোথায় পুলিশ দাড়িয়ে ছিল, কোথায় কোথায় সিসি টিভি ছিল, আর হাজার হাজার লোকতো ছিলই, এমনকি একশ গজের মধ্যেও অস্ত্র হাতে পুলিশ দাড়িয়ে ছিল। তারপর অভিজিতকে কোপানো হচ্ছে, কল্পনা করি তার স্ত্রী তখন প্রাণপনে প্রিয়তম স্বামীর জীবন রক্ষার্থে ঝাপিয়ে পড়েছেন, ফলে কুপিয়ে তাকেও রক্তাক্ত করা হচ্ছে, মানুষ জন দাড়িয়ে দাড়িয়ে তামশা দেখছে, পুলিশ ভাবছে কেউ হয়তো মারামারি করছে, এই সবই গাজার কলকিতে দম দিয়ে বানানো উপমহাদেশের ফ্যান্টাসি ছবিগুলোকেও হার মানিয়েছে।

পুলিশকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করতে করতে অবস্হা এমন দাড়িয়েছে, যদি ঐ গল্পটা বিশ্বাষও করি, তাহলেও বলতে হয়, মারামারি হলেওতো পুলিশকে দৌড়ে অপরাধিদেরকে পাকরাও করার কথা। মিস ইউজ করতে করতে পুলিশ এখন কোনটা করা উচিত, কোনটা তার আইনগত দায়িত্ব আর কোনটা নৈতিক দায়িত্ব সেটাও আর জানে না, ভুলে গেছে, মানবিকতারতো প্রশ্নই উঠে না।

ষড়যন্ত্র হতে পারে। নাও হতে পারে। উগ্রপন্হীরা মারতে পারে, নাও পারে। তার মৃত্যুতে কে লাভবান হলো? কি কি বিষয়ে জনগনের চোখে দুলা দেয়া গেল, কি কি জনগুরুত্বপুর্ন বিষয় ধামাচাপা পড়লো, সেটার চেয়ে বড় কথা, খুনি যেই হউক, তার দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি চাই। বাঙালীকে শুধু দুই এর ঘরের নামতা শেখাবেন না দয়া করে। দুই অক্কে দুই, দুই দু গুনে চার, চার দু গুনে আট...., না, মনে করবেন না যে বাঙালী এতটাই বোকা! ভয়ে হয়তো কেউ কিছু বলবে না, কিন্তু তারা সবই বুঝে। এমনকি কঠিন কঠিন নামতাও কিন্তু তারা জানে, আট ষোলং একশত আটাশ, এটাও বাঙালী জানে, এগুলো জেনেই সবাই মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাশ করে।

আমেরিকা থেকে এফবিআই আসছে বলে শুনেছি। সম্ভবত, গল্প যাই হোক, তার একটা এন্ডিং থাকবে, আজ হোক আর কাল হোক। অভিজিত হত্যাকারী যেই হোক, যে কারনেই হোক, খুনীর কঠিন সাজা চাই। আইনগত ভাবেই চাই।

(এই লেখাটা যখন লিখছি, আমার চোখের কোনায় পানি ঠেকাতে পারি নাই। অভিজিতের স্ত্রীর আশু আরোগ্য কামনা করি, তার পরিবারকে জানাই অন্তরের অন্ত:স্হল থেকে সমবেদনা। মহান আল্লাহ যেন ওর পরিবারকে এই শোক সইবার ক্ষমতা দান করেন।)

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.